সেই_রাতে,পর্ব_7,8

0
1128

#সেই_রাতে,পর্ব_7,8
#ইসরাত_জাহান_তানজিলা
#পর্ব_7
.
-” অনেক রাতে ঘুমাতে বলছে কে তোকে? তুই নাকি 11 টার সময় অফিস থেকে বের হয়েছিস,জানিস তো তোর বাবা কেমন এত রাত পর্যন্ত বাইরে থাকার কি দরকার?”
-” হুম জানি তো বাবা খুব রাগী। তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।”
-” এত নার্ভাস দেখাচ্ছে কেন তোকে? ”
-” আম্মু তুমি ইদানিং বেশী কথা বলো। তুমি গিয়ে নাস্তা রেডি কর আমি আসছি। ”
-” নবাবজাদা নাস্তা অনেক আগেই রেডি। শোন বাবা ,আজকে অফিসে একটা জরুরী মিটিং আছে তোকে একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে।”
-” সে না হয় যাব,যাও তো তুমি এখন।”
-” তোর প্রোবলেম কি বল তো? বারবার যেতে বলছিস কেন?”
-” আরে আমার আবার কিসের প্রোবলেম? ধুর!”
প্রিতম যথারিতী ঘামতে শুরু করল। কপালে আজকে কি আছে কে জানে? আর মেয়ে টাও মরার মত ঘুমাচ্ছে। বলল যে সকালে চলে যাবে । তা এখনও ঘুম থেকে ই উঠে না। আল্লাহ যা করে বান্দার মঙ্গলের জন্য করে। এটা কেমন মঙ্গল?
-” এই তুই কি ভাবছি এত?যা ফ্রেশ হ।এত বড় ছেলে বিছানা টাও ঠিক ভাবে গুছিয়ে রাখতে পারিস না? বালিশ একটা সোফায় আর একটা খাটে ,বিছানার চাদর ফ্লোর পর্যন্ত করে রাখছিস । নিজের রুম টাও গুছিয়ে রাখতে পারিস না।”
প্রিতম জোরপুর্বক একটা হাসি দিয়ে বলল,
-” কে বলছে আমি গুছাতে পারি না? তুমি যাও দেখো পাঁচ মিনিটের মধ্যে রুম পুরো ঝকঝকা- ফকফকা করে ফেলব ।”
-” হয়েছে তোর আর ঝকঝকা- ফকফকা করতে হবে না। তুই দ্রুত ফ্রেশ হয়ে খেয়ে অফিসে যা। বল্লাম না জরুরী মিটিং আছে কানে যাচ্ছে না নাকি? ”
-” আম্মু এই বয়সে তোমার কাজ করা একদম ঠিক না। এখন রেস্ট নেওয়ার বয়স। তোমার গুছাতে হবে না আমি ই গুছাচ্ছি।”
-” বাব্বাহ! আমার ছেলের মাথায় এত জ্ঞান হল কবে থেকে? এত ই যদি আমার কথা ভাবতি তাহলে বিয়ে টা অন্তত করতি।”
-” আম্মু বিয়ে- টিয়ে ওসব আমায় দিয়ে হবে না।”
-” ছ্যাকা খেয়ে দেবদাস হয়ে বসে আছিস। ওসব ভন্ডামি বাদ দে। মেয়ে টা তো তোকে ছাড়া দিব্যি আছে।”
-” প্লীজ আম্মু পুরানো কথা তুলো না।”
নিঝুমের কিছু টা হুশ ফিরে। চোখ মেলে ঠিক বুঝতে পারে নি যে সে কোথায় আছে। রাতে তো খাটে ছিল। না কিছু ভাবতে পারছে না। প্রচন্ড মাথা ব্যাথা,শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে ।
.
প্রিতম নিজেই বিছানা গুছাতে শুরু করল। প্রিতমের মা প্রিতম কে উদ্দেশ্য করে বলল,
-” বাহ্! আমার ছেলে টা তো দেখছি খুব লক্ষ্মী হয়ে গেছে।”
প্রিতম বিড়বিড় করে বলল,
-” হু। এমন সিচুয়াশনে সবাই ই লক্ষ্মী হয়।”
-” কি বলছিস বিড়বিড়িয়ে?”
-“কই কিছু না?”
নাস্তার টেবিলে বসে ওয়েট করছে প্রিতমের বাবা। ছেলে কে ডাকতে গিয়ে নিজেই নিঁখোজ হয়ে গেছে । এদের আর সময়জ্ঞান হলো না। শেষ পর্যন্ত মা ছেলে কে ডাকতে আমার ই যেতে হবে।
-” তোমাদের প্রোবলেম টা কি বল? ছেলে কে ডাকতে এসে নিজেই নিঁখোজ হয়ে গেলে? আজকে তাড়াতাড়ি অফিসে যেতে হবে আর তোমরা মা- ছেলে গল্প শুরু করলা।”
-” আব্বু ঠিক বলছো আম্মু এসে গল্প জুড়ে দিছে। সেই কখন থেকে বলছি ,”তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ” তা আম্মু আমার কথা শুনল ই গল্প করে ই যাচ্ছে ।”
-” আমি গল্প শুরু করছি? আমি তো তোকে সেই কখন থেকে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে বলছি তুই তো বিছানা গুছাচ্ছিস। দেখলা তোমার ছেলে হুদাই আমার দোষ দিল?”
-” আমি কি বলল? যেমন মা তেমন ছেলে।”
-” বাবা আর ছেলে মিলে ভালো ই আমার দোষ দিচ্ছিস। আর কখনো যদি তোর হয়ে সুপারিশ করছি… ”
-” এই চুপ কর! চলো,ও ফ্রেশ হয়ে আসবে। তুমি এখানে থাকলে এখানে থাকলে মা-ছেলের ঝগড়া ছাড়া আর কিছু হবে না।”
প্রিতম মনে মনে ওর বাবা কে অসংখ্যা ধন্যবাদ দিল। বাবা ঠিক সময় এসে রক্ষা করছে। হাপ ছেড়ে বাচল!
কিন্তু এই মেয়ে টা কে নিয়ে কি করবে? এ কোন বিপদে পড়ল? ভাবলাম রাত পোহালে ই মেয়ে টা চলে যাবে কিন্তু এখন মেয়ে টা জ্বরে অসুস্থ হয়ে পরে আছে। প্রিতম দরজা লাগিয়ে খাটের নিচে তাকিয়ে দেখে মেয়ে টা এখনো সে ভাবে ই আছে। এখনও হুশ ফিরে নি?
মেয়ে টার তো হুশ ই নেই এখন কি করব আমি?
অফিসেও যেতে হবে। আর ডাক্তারের আছে কিভাবে নিব? বাসায়ও ডাক্তার আনা যাবে না। মেয়ে টা কে রুমে রেখে অফিসে যাব কিভাবে?
জ্বরে শরীর পুড়ে যাচ্ছে ফ্লোরে আরও ঠান্ডা লাগবে। প্রিতম বেলকুনিতে একটা চাদর বিচিয়ে নিঝুম কে খাটের নিচ থেকে বের করল।
পাজা কোলে নিয়ে বেলকুনিতে চাদরের উপর শুইয়ে দিল। মেয়ে টার ওয়েট বেশী হলে 37-38 কেজি হবে। হাইট 5 ফিট হবে মনে হয়। মেয়ে টা কিসে পড়ে ? ঠিকানা কোথায় কিছুই জানা হল না?
এমনও হুশ ফিরছে না কেন? রুমে জ্বরের ওষুধ আছে,হুশ না ফিরলে কিভাবে খাওয়াবো? মেয়ে টার নাক- মুখ সব ফুলে গেছে কান্না করতে করতে। কোথায়ও যাওয়ার জায়গা নেই? এই অবস্থায় চলে যেতে বলা টা ঠিক হবে না। এত পিচ্ছি একটা মেয়ে কি সাহস! কোথায় যাবে, কি করবে, কিছু জানে না অথচ বাসা থেকে পালিয়ে আসছে।রাতে হয়ত খুব খারাপ ব্যবহার করে ফেলছি।
ডাইনিং রুম থেকে মায়ের ডাকের শব্দ পেয়ে তাড়াহুড়া করে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে গেল।
-” এই তোর তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হওয়া?”
-” তোমরা এখনও খাওয়া শুরু কর নি?”
-” তোকে রেখে কখনও খেয়েছি নাকি?”
-” আমি কি বলছি খেয়েছ আমায় রেখে?”
-” আম্মু আমি নাস্তা নিয়ে যাই রুমে বসে খাব। নাস্তা বেশী করে দিও।”
প্রিতমের মা অবাক হয়ে বলল,
-” নাস্তা রুমে বসে খাবি কেন? জোর করেও তো বেশী করে খাওয়ানো যায় না আর আজকে বেশী নাস্তা চাচ্ছিস?”
-” উফ আম্মু! অফিসের একটা ফাইল রেডি করতে হবে। কালকে রাতে রেডি করতে পারি নি। খেতে খেতে ফাইল টা রেডি করে ফেলব। কালকে অত রাতে খেতে ইচ্ছে করে নি তাই খাই নি শুধু একটা ডিম খেয়েছি। ক্ষুদা লাগছে খুব।”
প্রিতমের বাবা প্রিতম কে উদ্দেশ্য করে বলল,
-” যা তুই ফাইল রেডি কর ,নাস্তা রুমে নিয়ে যা। তোর মা তো সব সময় দুই লাইন বেশী বুঝে ।”
.
চলবে…..

#সেই_রাতে
#ইসরাত_জাহান_তানজিলা
#পর্ব_৮
.
প্রিতমের মা ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলল,
-“কি আমি দুই লাইন বেশী বুঝি?”
-“না তুমি দুই লাইন কম বুঝো। এখন চুপ-চাপ নাস্তা খাও। খাওয়ার সময় বেশী কথা বলতে নেই।
প্রিতম নাস্তা নিয়ে রুমে চলে আসল। রুমের দরজা- জানালা সব আটকে দিল। তারপর বেলকুনিতে গেল। গিয়ে দেখে মেয়ে টার এখনো জ্ঞান ফিরে। প্রিতম খুব টেনশনে পরে গেল। প্রিতম নিঝুমের পাশে বসে আবার নাকের কাছে হাত নিল।না! মেয়ে টা শ্বাস নিচ্ছে।
ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ারও উপায় নেই। কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর টাও কমে নি বরং আগের চেয়ে বেড়েছে মনে হচ্ছে ।
কি নিষ্পাপ দেখাচ্ছে ওর মুখ টা! পৃথিবীর সমস্ত মায়া,মুগ্ধতা,স্নিগ্ধতা যেন ওর মুখে। নড়াচড়াও করছে না। বারান্দা থেকে দড়ি বেয়ে নিচে নামা যাবে। ওই পাশের বিল্ডিং বেয়ে আবার এখানে আসা যাবে। কিন্তু ডাক্তার কি বিল্ডিং বেয়ে রোগী দেখতে আসবে? ধুর! কি সব ছেলে মানুষি ভাবনা ভাবছি।
প্রিতম হাতে একটু পানি নিয়ে নিঝুমের নাক-মুখে ছিটিয়ে দিল। তাও জ্ঞান ফিরছে না । আবার হাতে পানি নিয়ে মাথায় দিল একটু।
এই তো মেয়ে টা চোখ খুলছে! প্রিতমের সত্যিকারের একটা ভাবনা ঘুচল। যা ই হোক জ্ঞান তো ফিরছে।
প্রিতম কিছু বুঝে উঠার আগেই নিঝুম ওকে জাপটে জড়াই ধরল। প্রিতম কি করবে বুঝতে পারছে না। এই টুকু মেয়ে এত শক্তি কোথায় পায়? প্রিতম চাইলেও নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে পারল,নিঝুম ওর গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে ওকে জড়াই রাখছে। প্রিতমের বুকে মুখ গুজে বাচ্চা দের মত ডুকরে কেঁদে উঠল নিঝুম। প্রিতম বুঝতে পারল মেয়ে টা জ্বরের ঘোরে এমন করছে।
-” তুমি আমার সাথে এমন টা কেন করলে? আমায় কেন ঠকালে? এত টা প্রতারনা করতে পারলে আমার সাথে? একবারও ভাবলে না আমার কি হবে? তোমার জন্য ফ্যামিলি প্রত্যেক টা মানুষ কে কষ্ট দিছি। কেউ আমায় বুঝল না, তুমিও আমায় বুঝলে না। এমন টা তো কথা ছিল না। তোমায় পাওয়ায় জন্য সব হারালাম কিন্তু তবুও তোমায় পেলাম না।”
এসব বলতে বলতে নিঝুম প্রিতমের বুকে এলোপাথরি কিল-ঘুষি দিতে লাগল।
প্রিতম ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। এবার নিশ্চিত হল জ্বরের ঘোরে আবল-তাবল বকছে। নিঝুম এবার যথারিতী জোরে জোরে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগল ,
-” কেন ?কেন? এমন করলে আমার সাথ? কি ভুল ছিল আমার? তোমায় নিজের থেকে বেশী ভালোবাসি এটাই ভুল।”
প্রিতম বুঝতে পারল এ মেয়ের মাঝে নিশ্চই অন্য কোন রহস্য আছে । কিন্তু এখন রহস্য খোঁজার সময় না। মেয়ে টা যে পরিমানে চিল্লাচ্ছে তাতে বাবা-মায়ে শুনে যাবে।
প্রিতম এবার নিঝুমের মুখ চেপে ধরল যাতে আর চিৎকার করতে না পারে। তারপর আস্তে আস্তে নিঝুমের কানে কাছে মুখ নিয়ে বলল,
-” নিঝুম চিল্লাপাল্লা কর না,প্রোবলেম হবে তো।”
নিঝুম বাচ্চা দের মত গাল ফুলিয়ে বলল ,
-” চিল্লাবো না তো কি করব? তুমি আমায় ঠকালে কেন?”
প্রিতম এবার মহা বিপদে পরে গেল। এই মেয়ের মেন্টালিটি কোন প্রোবলেম নেই তো আবার?
না! কালকে রাতে তো স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলছে। জ্বরের ঘোরেই আবল- তাবল বকছে।
নিঝুম এবার প্রিতম কলার ধরে আস্তে আস্তে কান্না জড়ানো গলায় বলল
-” কি কথা বল না কেন? আমায় ঠকালে কেন? আমি কিন্তু আবার চিল্লাবো।”
প্রিতম মনে মনে ভাবল মেয়ে টার সাথে তাল মিলিয়ে কথা বলতে হবে নাহলে আবার পাগলামী শুরু করবে।
-” না ,না আমি আর তোমায় ঠকাব না। এই যে কান ধরছি আর ঠকাবো না তোমায়।”
-” তুমি খুব পঁচা হয়ে গেছ। একবারও চিন্তা করলে না আমার কষ্ট হবে। ”
-” আর ঠকাবো না তোমায়। প্লীজ চিল্লাপাল্লা কর না।”
-” বল আগের মত ভালোবাসবে। জানো,আমি কখনও ভাবতে পারি নি তুমি এমন করবে আমার সাথে।”
প্রিতম নিরুপয় হয়ে বলল,
-” হ্যাঁ ,হ্যাঁ আগের থেকে বেশী ভালোবাসবো তোমায় । আর এমন করব না।”
-” নাক ধরে প্রমিস কর আর ঠকাবে না।”
প্রিতম ঠিক বুঝে উঠতে পারল না কি বলল,
-” আবার বল বুঝি নি।”
-” আরে বোকা টা তোমার এত ভুলোমন কেন বলো তো? আগে তো আমি রাগ করলে আমার নাক ধরে বলতে,”নিঝুম পাগলী তোমায় আর এমন হবে না।”
প্রিতম বুঝতে পারল মেয়ে টা ওর বয়ফ্রেন্ড ভেবে তাকে এসব বলছে। মেয়ে টার কথা বাইরে যাওয়া যাবে না,তাহলে আবার চিল্লাপাল্লা শুরু করবে।
প্রিতম নিঝুমের নাক ধরে বলল,
-” নিঝুম পাগলি আর ঠকাবো না তোমায়।”
নিঝুম এবার মুচকি হেসে দিল। প্রিতম মনে মনে ভাবল,এ কেমন রাগ ভাঙানোর সিস্টেম?” মেয়ে টার জ্বর না কমলে পাগলামিও কমবে না। যেভাবে হোক জ্বরের ওষুধ খাওয়াতে হবে।
-” নিঝুম ছাড়ো এখন । নাস্তা খাবে না?”
-” না,না পরে নাস্তা খাবো এখন তোমার বুকে থাকব।”
কি মহা মসিবত! প্রিতমের কেমন জানি অজানা এক অনুভূতি হচ্ছে । এমন অনুভূতির সাথে কখনো ও পরিচিত ছিল না। মেয়ে টা কিভাবে আকড়ে ধরে আছে! বুকে যে এলোপাথরি কিল-ঘুষি দিয়ে তাতে প্রিতমের অবস্থা খারাপ। কি বিচ্ছু মেয়ে! এত শক্তি কোথায় পায়?
অফিসের টাইম হয়ে যাচ্ছে ,একটু এর অফিসে যাওয়ার জন্য চিল্লাপাল্লা শুরু হবে,
-” নিঝুম ছাড়ো এখন প্লীজ।”
-” না,না ছাড়ব না। তোমার বুকে অনেক শান্তি ।”
প্রিতম এবার লজ্জা পেয়ে গেল। জ্বরের ঘোরে কিসব বলছে!
-” আমার অফিসে যেতে হবে ছাড়ো তো।”
-” না যেতে হবে না অফিসে। তোমার অফিস আজ ছুটি।”
প্রিতম এবার কড়া গলায় বলল,
-” ছাড়ো বলছি।”
নিঝুম এবার ওর বুকে থেকে মাথা সরিয়ে ফেলল। বাচ্চা দের মত ঠোট বাঁকিয়ে কেঁদে দিল,
-” তুমি আবার আমার সাথে খারাপ বিহেভ করলে? আসলে ই তুমি বদলে গেছ।”
ও মাই গড! এই মেয়ে টা রে নিয়ে কি করব?
প্রিতম নিঝুমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
-” না ,আমি মোটেও বদলে যাই নি।”
-” বদলে না গেলে আমার সাথে কড়া গলায় কথা বললে কেন? ”
-” সরি ভুল হয়েছে। তুমি নাস্তা খাবে না?”
গাল ফুলিয়ে বলল,
-” না খাব না। তুমি আমার সাথে কড়া গলায় কথা কেন বললে সেটা বল?”
-” সরি আর বলল না।”
-” সরি তে কাজ হবে না। ”
-” তো কিসে কাজ হবে?”
-” জানো না কিসে কাজ হয়?”
প্রিতম অস্ফুট স্বরে বলল,
-” তোমায় এখন কয়েক টা থাপ্পর দিলে ই কাজ হবে ।”
-” কি বললে?”
-” না,না কিছু বলি নি? নাস্তা খেয়ে নেও।”
-” কান ধরে সরি বল নয়তো নাস্তা খাব না।”
-” কি বললে? আমি কান ধরব কেন? ”
-” ইস এমন ভাব করছ মনে হয় আমার সামনে কখনো কান ধর নি ।”
প্রিতম যেন আকাশ থেকে পড়ল। কি সব বলছে এগুলো!
-” আমি কান ধরতে পারব না, তুমি নাস্তা খাও তো।”
-” কান না ধরলে নাস্তা খাব না।”
আচ্ছা মেয়ে তো এটা। আমায় নিজের বয়ফ্রেন্ড ভেবে কি সব বলতেছে। হয়ত ওদের রিলেশনশিপে দু জন এমন টা করত ।
প্রিতম নিরুপয় হয়ে কান ধরে বলল,
-“এই যে কান ধরছি এবার নাস্তা খাও দয়া করে । ”
-” আজব! তুমি তোমার কান কেন ধরলে?”
-” তো আমি কার কান ধরব?
প্রিতম অস্ফুট স্বরে বলল,
নিজে একটা আজব প্রানী। আর আমায় আজব বলছে! ইচ্ছে হচ্ছে চিড়িয়াখানায় রেখে আসি।”
-” এই তোমার হয়েছে টা কি বল তো? আগে তো আমার কান ধরে মাফ চাইতে এখন নিজের কান ধরে মাফ চাও কেন? ”
প্রিতম এবার বুঝতে পারল। উনার ভালোবাসার মানুষ উনার কান ধরে মাফ চাইত। হায়রে ঢং! ঢংয়ের চাপে পরে আজ আমার জীবন টা তেজপাতা।
প্রিতম এবার নিঝুমের কান ধরে বলল,
-” সরি।”
-” হুম এবার ঠিক আছে।”
-” এবার নাস্তা খেয়ে নেও।”
-” আজব তো! ফ্রেশ না হয়ে নাস্তা খাব বুঝি।”
-” তাহলে যাও ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসো।”
নিঝুম উঠতে চাইলেও জ্বরের জন্য উঠতে পারছে না। হাত-পা কাঁপছে।
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here