“কাজের বেটি রহিমা”
পর্ব- ১১
(নূর নাফিসা)
.
.
রহিমার রাত আজ অর্ধেক ঘুমে কেটেছে আর অর্ধেক নির্ঘুম! ভেতরটা কেমন যেন ভারি হয়ে আছে! তারউপর সায়মাকে কাল কিভাবে গ্রিন ল্যান্ডে নিয়ে যাবে সেই চিন্তা! এভাবেই কেটে গেছে অর্ধেক রাত। আর শেষ রাতে চোখে ভীড় জমিয়েছে ঘুম।
পরদিন আয়ানের বাড়িতে কাজ করতে গিয়েও সে অন্যমনস্ক! আজ কোনো কথা বলছে না। চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছে সে। কয়েকবার কাজে গোলমালও করে ফেলেছে! লাল মিয়া বাজার করে এনে দিয়েছে। মারিয়া কাইয়ুম তাকে মাছ কাটতে বললে সে আস্ত মাছের প্যাকেট ফ্রিজে রাখতে যাচ্ছিলো! মারিয়া কাইয়ুম দ্বিতীয়বার বললে তার ধ্যান ভাঙলো। পরক্ষণে আবার মাছ কেটেকুটে ফ্রিজে রাখার বদলে ডাইনিং টেবিলে ফলের ঝুড়িতে রেখে এসেছে! আয়মান ধমক দেওয়ায় তার হুশ হয়েছে!
পিংকি বাবুর জামাকাপড় ধুয়ে দিতে বললে সে ধুয়েছে ঠিকই। কিন্তু বারান্দায় শুকাতে দিয়ে ক্লিপে আটকাতে ভুলে গেছে! যার ফলে জামাকাপড় সব বাতাসে উড়ে নিচে পড়ে গেছে! লাল মিয়া দুইটা কুড়িয়ে এনেছে বিধায় পিংকি জানতে পেরেছে রহিমার কাণ্ড। অত:পর রহিমাকে খেতে হলো আচ্ছা রকমের ঝাড়ি! কিন্তু আজ রহিমা কোনো বিপরীত প্রতিক্রিয়া করেনি। চুপচাপ নিচে এসে কিছু জামাকাপড় খুঁজে খুঁজে কুড়িয়ে এনেছে। যদিও দু চারটা নিখোঁজ!
রহিমার এমন অন্যমনস্কতায় মারিয়া তাকে জিজ্ঞেস করেছিলো যে, তার কি হয়েছে! কিন্তু কোনো জবাব দেয়নি রহিমা। আজ চুপচাপ কাজের পর কাজ করে বেরিয়ে গেছে।
দুপুরে ভাবতে ভাবতেই রাস্তা অতিক্রম করে চলে এলো হক মঞ্জিলে। কলিং বেল বাজালে আজ দরজা খুলে দিলো ফারহানা হক। সে সালাম দিয়ে চুপচাপ ভেতরে প্রবেশ করলো। এমনি চুল খোপা করতে করতে ইশতিয়াকের রুম থেকে বেরিয়ে এলো সায়মা। সায়মাকে দেখে কয়েক সেকেন্ড নিষ্পলক তাকিয়ে ছিলো রহিমা। এই মুহূর্তে তার চেহারা দেখে যে কেউ বলে দিবে সে মনে মনে কিছু ভাবছে। কিন্তু তেমন কিছু বললো না কেউই! নিষ্পলক তাকিয়ে থাকতে দেখে সায়মা খুব শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করলো,
“মন খারাপ?”
রহিমা মলিন মুখে মৃদু হাসির রেখা ফুটিয়ে মাথা দু’দিকে নাড়লো। অত:পর কিচেনে চলে গেলো। প্রথমে সে সকালের এটো থালাবাটি ধুয়ে নিলো। অত:পর ঘর মুছে দিলো। অত:পর সবাই ঘরে এলে সে টেবিলে প্লেট ও খাবারদাবার এনে গুছিয়ে দিলো। সবাই একসাথে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলো। রহিমা নিত্যদিনের মতো মেঝেতে বসেছে। তা-ও প্লেটে আজ অল্প খাবার! তার খেতেই ইচ্ছে করছিলো না। ফারহানা জোরাজুরি করাতে সে অল্প নিয়েছে। আর সায়মা! কাল থেকে যেন তার সকল কর্মকাণ্ডই বন্ধ হয়ে আছে! কাজিনরা থাকতে দুপুরে জোরপূর্বক মজার সাথে খাওয়াদাওয়া করেছিলো। কিন্তু এরপর থেকে বিষন্নতা ও খাবারে অনিহা! রাতে খায়নি কিছুই আর সকালে এক টুকরো রুটি খেয়েছে শুধু! ফারহানা হক বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন মেয়ের অবস্থায়! বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করার পরেও মুখ ফুটলো না তার মেয়ের! সায়মা অপেক্ষা করছিলো রুমেল কোন কাণ্ড ঘটায় কি-না তা দেখার জন্য। কিন্তু কাল থেকে আজ পর্যন্ত এমন কোনো কিছু হয়নি। হয়তো এদিক থেকে শিক্ষা হয়ে গেছে রুমেলের। এটাই সায়মার ধারণা। পরিস্থিতি যেহেতু নিরব সেহেতু আর কাউকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি সে। কারণ জানাজানি হলে দুই পরিবারের সেই সুমধুর সম্পর্কে ঝামেলা সৃষ্টি হবে। আল্লাহ রুমেলকে সুবুদ্ধি দান করুক এটাই সায়মার প্রত্যাশা।
একাধারে কাজকর্ম করে রহিমা সায়মার রুমে এসে বসে আছে। সায়মা ও মনমরা হয়ে বসে ছিলো। রহিমাকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে খুব বড়সড় নিশ্বাস ছাড়লো। অত:পর দুজনেই নিরব! কয়েক মিনিট অতিক্রান্ত হওয়ার পর সায়মা জিজ্ঞেস করলো,
“এমন চুপ করে আছিস কেন? কি হয়েছে তোর? বল আমাকে?”
“কিছু না আপা।”
“কিছু তো হয়েছেই। বলবি না আমাকে? আমিও তো কত কিছুই শেয়ার করি তোর সাথে। আমার সাথে শেয়ার কর, দেখবি মন হালকা হবে এবং বিষন্নতা কেটে যাবে।”
“ভার্সিটি গেছেন আজকা?”
“উহুম।”
“আমারে ঘুরতে নিয়া যাইবেন আপা?”
“চল, ছাদে যাই।”
“ছাদে না। বাইরে কোথাও চলেন।”
“বাইরে যাবো না আমি।”
“ক্যা?”
“এমনি।”
“চলেন না যাই।”
“না, ভালো লাগছে না বাইরে যেতে। চল ছাদে যাই।”
“না থাক তাইলে।”
রহিমা বসা থেকে উঠে চলে যাচ্ছিলো। পেছনে ফিরে আবার বললো,
“আপনেরও মন খারাপ। আমারও মন খারাপ। চলেন বাইরে কোথাও যাই। নিরব পরিবেশে খোলামেলা জায়গায় একটু ঘুইরা চইলা আসমুনে। যাইবেন?”
সায়মা কয়েক সেকেন্ড ভেবে বললো,
“আচ্ছা, রেডি হয়ে আসছি।”
পাঁচ সাত মিনিটের মধ্যে সায়মা তৈরি হয়ে গেলো। গালের লম্বা দাগ গুলোর জন্য মুখে মাস্ক ব্যবহার করলো। অত:পর রহিমাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। নিরব পরিবেশে হাটবে তাই রহিমাই অফার করলো গ্রিনল্যান্ডে যাওয়ার জন্য। সেটা কোনো পার্ক নয়। কোনো এক ভদ্রলোক বাড়ি করার জন্য জমি কিনেছে। কিন্তু বাড়ি করেনি এখনো। যার ফলে ঘাস লতাপাতা জন্মে সবুজে আচ্ছাদিত। পরবর্তীতে মালিক ঝোপঝাড় কেটে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়েছে সেখানে। এখন সেগুলো বৃহৎ আকৃতির বৃক্ষ হয়েছে। মানুষজন যায়, আড্ডা দেয়, খোলামেলা পরিবেশে ঘুরেফিরে সময় কাটায়। পরিধি ছোট হলেও বেশ মনোরম জায়গা।
রহিমার কথায় সায়মা এখানেই এলো। দুপুর বেলায় মানুষ নেই। তবে আসরের আযান পড়লেই লোকজন আসতে শুরু করবে। কথা বলতে বলতে শুরু থেকে শেষ প্রান্তে এসেছে তারা। সায়মা ঢালুর দিকে আয়ানকে বসে থাকতে দেখে রহিমার হাত ধরে টানতে লাগলো। রহিমা একটু জোর গলায়ই বললো,
“আরে আপা! টানেন ক্যা? কই যান!”
সায়মা ফিসফিসিয়ে বললো,
“রহিমা চল এখান থেকে। অন্যকোথাও যাই।”
“ক্যা? কি হইছে?”
“যেতে বলেছি।”
এদিকে রহিমার গলা শুনে আয়ান পেছনে ফিরে তাদের দেখতে পেয়েছে। সায়মাকে চলে যাওয়ার জন্য রহিমার হাত ধরে টানতে দেখে আয়ান এক প্রকার দৌড়ে উঠে এলো তাদের কাছে। সায়মার চোখ ইতিমধ্যে ভেজা হয়ে এসেছে। ধাধানো কন্ঠে সে রহিমার উদ্দেশ্যে বলেই যাচ্ছে,
“রহিমা চল এখান থেকে।”
আয়ান কিছু না বলে সায়মার মাস্ক খুলতে গেলে সায়মা বাধা দিয়ে বললো,
“হচ্ছে কি এসব!”
আয়ান কোনো কথা না বলে সায়মার হাত টেনে সরিয়ে মাস্ক খুলে দিলো। রহিমা সায়মার হাত ছাড়িয়ে তাদের থেকে দুই ফুটের মতো পিছিয়ে গেছে। আয়ান সায়মার গালের দিকে তাকিয়ে আবার চোখে তাকাতেই সায়মা দৃষ্টি নামিয়ে নিলো। আয়ান খুব শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করলো,
“কাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কতবার ফোন দিয়েছি, রিসিভ করনি কেন? সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত ফোন সুইচঅফ কেন?”
রহিমার সামনে আয়ান তার সাথে কথা বলছে বিধায় সায়মা একবার রহিমার দিকে তাকাচ্ছে আবার আয়ানের দিকে। কি জবাব দিবে সে, কিছুই বুঝতে পারছে না! এভাবে বারবার রহিমার দিকে তাকাতে দেখে আয়ান কিছুটা ধমকে বললো,
“তার দিকে কি দেখো! আমার দিকে তাকিয়ে জবাব দাও। ফোন সুইচ অফ কেন তোমার?”
“আপনি কি বলছেন এসব!”
“তোমার গালের অবস্থা এমন হলো কি করে?”
“রহিমা, চলতো।”
আয়ান সজোরে এক থাপ্পড় বসিয়ে দিলো সায়মার দাগ পড়া গালে! সায়মা স্তব্ধ আর রহিমা হতবাক! আয়ান রাগান্বিত গলায় বললো,
“গালের এই অবস্থা করেছো কেন? ওই পিশাচটা ঠোঁট ছুয়ে দিয়েছে বলে?”
সায়মা কঠোর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো রহিমার দিকে! তার বুঝতে বাকি নেই রহিমা জানিয়েছে ব্যাপারটা! আয়ান হাত বাড়িয়ে তার মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে এনে বললো,
“তার দিকে কি দেখো। আমি কথা বলছি আমাকে দেখো। সে জানে আমাদের ব্যাপারে সব। আমি জানিয়েছি তাকে। আর আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখায় গতকালের ঘটনা জানতে আমিই বাধ্য করেছি তাকে এতোসব বলতে।”
সায়মা রহিমাকে বললো,
“আমাকে মার খাওয়ানোর জন্য ইচ্ছে করে এনেছিস না এখানে?”
রহিমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আয়ান ধমকে বললো,
“তার সাথে না, কথা আমার সাথে বলো। তোমাকে মাইর দেওয়ার জন্য এখানে নিয়ে আসতে তাকে থ্রেড দিয়েছি আমি। তুমি আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করেছো কেন? সেই ছেলের জন্য? গালের উপর এমন অত্যাচার করেছো কেন? শুধুমাত্র সেই ছেলের জন্য?”
“হ্যাঁ, করেছি সেই ছেলের জন্য। যেখানে আমার হাসব্যান্ড আমাকে এভাবে স্পর্শ করলো না সেখানে পরপুরুষ কেন স্পর্শ করবে! তাই করেছি এসব। বিশ্বাস করো, আমি কখনোই তাকে প্রশ্রয় দেইনি। সে জবরদস্তি এমন করেছে আমার সাথে। পারলে এই গালটাই কেটে ফেলে দিতাম আমি!”
কথা বলতে বলতে সায়মা কেদে উঠেছে! আয়ান থাপ্পড় দেওয়ার ভঙ্গিতে হাত দেখিয়ে বললো,
“আরেকটা লাগাবো এখন। গালে স্পর্শ করেছে তো কি হয়েছে? আগুন ধরে গেছে? ঠোসা পড়ে গেছে? বলদি কোথাকার! সে তোমার সাথে জবরদস্তি করেছে যেহেতু তুমি তার হাত ভেঙে দিতে পারলে না! সে গালে স্পর্শ করেছে যেহেতু তার ঠোঁট কেটে দিতে পারলে না! নিজের গাল কেন কাটলে এভাবে! এগুলো কি করেছো! মেজাজটা তো বিগড়ে যাচ্ছে এখন!”
সায়মা ছলছল চোখে তার দিকে তাকিয়ে কথা শুনছিলো। আয়ান থামতেই সে আশেপাশে তাকিয়ে রহিমাকে বললো,
“রহিমা, তুই অন্যদিকে যা।”
রহিমা তার কথায় পা বাড়াতেই আয়ান মেজাজী গলায় আবার বললো,
“না, যাবে না রহিমা। কালকের ঘটনা তো তার সামনেই ঘটেছে না? তাহলে মাইর তো তার সামনেই দেওয়া দরকার। এই রহিমা! দাড়িয়ে থাক তুই এখানে! একটুও নড়বি না!”
সায়মার রাগ হলো আয়ানের উপর। কারণ এই প্রথম তার ইচ্ছে করছিলো আয়ানকে একবার জড়িয়ে ধরতে। কেননা সে ভাবতেও পারেনি বিষয়টা আয়ান এতোটা সহজভাবে গ্রহণ করবে! আয়ানের প্রতি আজ বড্ড সম্মান জেগেছে মনে। কিন্তু আয়ান জড়িয়ে ধরার সুযোগটা যে তাকে দিলো না। সে দু’হাতে চোখ মুছে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলো। আয়ান আবার সায়মাকে বললো,
“রুমেলের বাসার ঠিকানা দাও।”
“কেন?”
“আমি চেয়েছি, তাই।”
“না।”
“এখন আমার মেজাজ খারাপ করো না, বলে দিলাম।”
“এমন করছো কেন তুমি! এই মাত্র না ইজিলি নিলে ব্যাপারটা! তাহলে আবার তার বাড়ির ঠিকানা কেন! আমি কিন্তু কোনো ঝামেলা চাইছি না।”
“আমি তো ইজিই আছি। তুমি কেন এমন হয়ে আছো! তোমাকে ইজি করতে হলেও আমাকে যেতে হবে তার কাছে। বাসার ঠিকানা দাও। নয়তো ফোন নম্বর দাও আর ছবি দেখাও। এমন অবস্থা করবো এরপর থেকে যেন মেয়েদের বদলে ছেলেদের অফার করতে হয়।”
“পাগলামো করো না। আমি যথেষ্ট ইজি আছি।”
আয়ান চিৎকার করে বললো,
“তাহলে আমার সাথে কথা বলোনি কেন কাল থেকে! তুমি জানো, কাল রাতের বেলা আমি তোমার বাসার সামনে থেকে ঘুরে এসেছি। টেনশনে আমার মাথা কাজ করছিলো না। সেই রাতের বেলাই আবার রহিমার বাসায় ছুটে গিয়েছি তাকে বিরক্ত করতে!”
তার চিৎকারে রহিমা কেপে উঠেছে আর সায়মা চোখ বন্ধ করে হজম করে নিলো তার রাগ। আয়ান নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টায় দুমিনিট নিরবে হাটাহাটি করলো। সায়মা ও রহিমা এক জায়গাতেই দাড়িয়ে আছে। অত:পর আয়ান তাদের নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে এলো। দুইটা রিকশা নিলো। একটাতে সায়মা ও রহিমা অন্যটায় আয়ান একা। চলে এলো রেস্টুরেন্ট। আয়ান নিজের ইচ্ছেমতো খাবার অর্ডার করলো। তারপর সবাই খেয়ে নিলো। বাসা থেকে খেয়ে আসায় তারা দুজন তেমন খেতে পারেনি। বেশিরভাগ আয়ানই শেষ করলো। খাওয়া শেষে যখন ওয়েটার বিল নিতে এলো তখন আয়ান তার ওয়ালেট বের করলো। অত:পর ওয়ালেট ফাঁক করে সায়মার দিকে ধরলো। তার ওয়ালেটে শুধুমাত্র একটা দশ টাকার নোট! সায়মা রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকালো আর রহিমা হা করে আছে! খেয়েদেয়ে এখন ফাঁকা ওয়ালেট দেখায়!
অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করলেও ওয়েটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকায় কিছুই বললো না সায়মা। চুপচাপ তার পার্স থেকে টাকা বের করে বিল দিয়ে দিলো। ওয়েটার চলে গেলো আর আয়ান মুখে হাসি ফুটিয়ে বোতল থেকে গ্লাসে কোকা কোলা ঢেলে নিলো। এতোক্ষণ চুপ থাকলেও রহিমা এবার হুট করেই বলে উঠলো,
“আপা, এই রহিমার একটা কথা মাথায় রাইক্ষেন! আপনে মনে কইরেন না যে, কপাল কইরা একটা রাজপুত্র পাইছেন! আসলে, আপনে কপাল কইরা একটা ফকির পুত্র পাইছেন।”
আয়ান দাতে দাত চেপে বললো,
“রহিমা, কথা কম বল। না হলে বোতল দিয়ে আজ মাথা ফাটাবো!”
“ক্যা? কথা কম বলমু ক্যা? উচিত কথা কইলেই খালি আমার শাস্তি? এহন যে গদগদ কইরা খাইলেন, আপায় যদি টাকা না আনতো তাইলে তার বিল দিতেন ক্যামনে? এইটাও তো সম্ভব না যে, বমি কইরা পেট থেইকা সব বাইর কইরা ফেরত দিয়া যামু ব্যাডাগো!”