“রূপগঞ্জের রূপসী”
সূচনা পর্ব
(নূর নাফিসা)
উৎসর্গে – Imran Mahmudul
.
.
কোনো এক শীতের সকালে ইমরান কম্বল মুড়ে ঘুমাচ্ছে। ইমরানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রিসাদ এসে রুমের এসি টা অন করে দিলো। তারপর কম্বলটা টেনে ফেলে দিলো। আর এদিকে প্রচন্ড ঠান্ডায় ইমরানের ঘুম ভেঙে গেলো। ইমরান চোখ বন্ধ রেখেই বিরক্তসহিত বললো,
“কার বুদ্ধি এতোটা লোপ পেয়েছে যে শীতের সকালে এসি অন করে!”
রিসাদ পাশের বালিশটা তার উপর ঢিল মেরে বললো,
” তোর দুশমনের। ওঠ!”
ইমরান চোখ খুলে বিস্ময়ের সাথে বললো,
“রিসাদ…..! তুই এখানে কি করে! দেশে ফিরলি কবে?”
রিসাদ খাটে বসে এসিটা অফ করে বললো,
“আগে ফ্রেশ হয়ে আয়। তারপর বলছি।”
“না, এখন বল।”
“কাল রাতে এসেছি। আর আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই তোর বাসায় চলে এলাম। ৯টা বাজে আর তুই এখনো ঘুমাচ্ছিস! আন্টি রান্না করে বসে আছে। আমার ক্ষুধা লেগেছে, যা ফ্রেশ হয়ে আয়। না হয় আজ তোকে না খেয়ে থাকতে হবে।”
ইমরান হেসে চলে গেলো বাথরুমে। ইমরান ফ্রেশ হয়ে এলে তারা দুজন একসাথে খেতে বসলো। সাথে ইমরানের মা ও। রিসাদ ইমরানের মায়ের উদ্দেশ্যে বললো,
“আন্টি খাবার কিন্তু অনেক টেষ্ট হয়েছে। কতোদিন পর তোমার হাতের রান্না খেলাম।”
মিসেস হক হেসে বললেন,
“খারাপ হলেও কি বলবি নাকি, যে খারাপ হয়েছে!”
“না সত্যি বলছি, খুব খুব ভালো। দেশের বাইরে থাকলে মায়ের রান্নাটাও খুব মিস করি।”
“সে তো হবেই। এবার এসেছিস যখন যাওয়ার আগে কিছুটা তৃপ্তি মিটিয়ে বেশি বেশি খেয়ে যা।”
ইমরান রিসাদকে বললো,
” কতোদিনের জন্য এসেছিস?”
“৯দিন পর চলে যাবো। তোর গানের রেকডিং কেমন চলছে?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো।”
” ভালো হলেই ভালো। তুই তো একেবারে ফেমাস । এবার বিয়েটাও করে ফেল। ক্রাশিত মেয়েদের একটু জেলাসি হতে দে। আর কতো ক্রাশ হবি!”
রিসাদের কথায় মিসেস হকের মুখে লেগে আছে হাসি। ইমরানও ঠোঁটের এক কোনে হাসি ফুটিয়ে বললো,
“আরে তোর আগে না।”
“আচ্ছা দেখা যাক! তা এখন কি ফ্রী আছিস?”
” কেন?”
“খালার বাসায় বেড়াতে যাবো। চার পাঁচ দিনের জন্য। এই শহরের পরিবেশ ভালো লাগে না। বিরক্তিকর! গ্রামের সতেজ প্রকৃতি দেখতে ভালো লাগে। তা না হলে মনে হয় না যে নিজ দেশে আছি।”
“তোর আবার খালা আছে নাকি!”
“আপন না। একটু দূর সম্পর্কেরই আরকি! মায়ের মামাতো বোন। তবে আপনের চেয়েও কম না কোনদিক থেকে!”
“অহ, আচ্ছা। বাসা কোথায়?”
“রূপগঞ্জে।”
“আচ্ছা যাবো।”
“ওকে চল তাহলে আজই রওনা দিবো। আমি বাসায় যাই, দুপুরের দিকে রেডি থাকিস। আন্টি আসি, আল্লাহ হাফেজ।”
“আল্লাহ হাফেজ, আবার আসবি। আর তোর মাকে বলিস এসে ঘুরে যেতে। একদমই আসে না এখন!”
“আচ্ছা।”
রিসাদ চলে গেলো। ইমরান তার মাকে বললো,
” মা তুমি বাসায় একা থাকবে? সুমি আপুর বাসায় চলে যাও।”
” কেন? মনে হচ্ছে আমি একা থাকি না। আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না। তুই যা।”
“না, তুমি আপুর বাসায় যাও। অনেক দিন হলো যাও না। আরোশিকেও দেখে এসো।”
“আচ্ছা। দেখি।”
দুপুরের দিকে ইমরান তার মাকে আপুর বাসায় রেখে রিসাদের সাথে বেরিয়ে গেলো রূপগঞ্জের উদ্দেশ্যে।
ঢাকার পাশেই নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ নামক এলাকা। এর পরিসর বৃহৎ হলেও তারা যাবে কেন্দ্রীয় এলাকায়। সৌন্দর্যে ভরপুর এ অঞ্চলটি। যেন প্রকৃতির সব মায়া এসে ঘিরে রেখেছে এই অঞ্চলকে। নদীনালা, বিস্তর ফসলের মাঠ, কাঁচাপাকা রাস্তাঘাট, ঝোপজঙ্গল, সবুজ বৃক্ষ দ্বারা ছেয়ে আছে তার প্রকৃতি।
এখানে পৌছাতে প্রায় ৩ঘন্টা লেগেছে ইমরান আর রিসাদের। রিসাদ ইমরানকে নিয়ে তার খালার বাসায় উঠলো। তার খালা তাদের দেখে ভিষণ খুশি হয়েছে। আর সাথে রকমারি আপ্যায়ন তো আছেই। বিকেলে রিসাদের ৯বছর বয়সের খালাতো ভাই শাওনকে সাথে নিয়ে তারা আশেপাশের জায়গাগুলো দেখতে বের হয়। বেশ কিছু দূরত্ব বজায় রেখে ছোপ ছোপ বাড়িঘর, চারিদিকে ফসলের মাঠ, আর পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে শীতলক্ষ্যা নদী। বিকেলের পরিবেশটা খুবই শান্ত, সাথে পাখিদের কলোরব আর মুগ্ধ বাতাস, যা মুহুর্তে মন ছুয়ে যেতে বাধ্য। বিস্তর ফসলের মাঠে কিছুক্ষন হেটে তারা ঘরবাড়ির দিকে একটা বড় আম গাছের নিচে ঘাসের উপর বসে পড়লো। ইমরানের অনুভূতি জানতে রিসাদ জিজ্ঞেস করলো,
“কিরে কেমন লাগছে রূপগঞ্জ?”
ইমরান প্রশান্তির নিশ্বাস ফেলে জবাব দিলো,
“নামটাই তো রূপে ভরপুর, জায়গাটা ও ভীষণ সুন্দর। এসেছিলাম একবার এখানে কন্সার্টে। কিন্তু রাতে আসায় কিছু দেখতে পাড়িনি।”
“তাই নাকি!”
“হুম।”
“রাতের পরিবেশও বেশ সুন্দর। সেটাও লক্ষ্য করিস নি?”
“উহুম। তারাহুরোর মাঝে আসা আবার কন্সার্ট শেষে ক্লান্ত হয়ে ফেরা।”
হঠাৎ ইমরানের মাথায় কিছু পড়লো,
“আহ!”
তার মাথায় ড্রপ খেয়ে ঢালুতে গড়িয়ে পড়লো পেয়ারা! ইমরান মাথায় হাত রেখে বললো,
” কিরে এখানে কি ভূত ও আছে নাকি! বসেছি আম গাছের নিচে, পড়লো পেয়ারা!”
শাওন শব্দযোগে হেসে উঠলো, সাথে আরও একজন খিলখিল করে হেসে উঠলো! সাওনের বিপরীতে সেটা মেয়েলি কন্ঠ। তারপর আশেপাশে তাকালো কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। শাওন বললো,
“আরে উপরে চাইয়া দেখো।”
এবার দুজনেই উপরে তাকালো, দেখলো একটা মেয়ে আম গাছের মোটা ডালে পা ঝুলিয়ে বসে আছে আর পেয়ারা খাচ্ছে।
ইমরান বিস্মিত হয়ে বললো,
” এটা কি পেত্নী নাকি!”
শাওন হেসে জবাব দিলো,
” আরে না, আমাগো রূপসী আপু। আপু নিচে নামো।”
মেয়েটি নেমে আসতে আসতে বললো,
“খাড়া, আইতাছি।”
রূপসী নিচে নেমে এলো। পরনে তার সুতি শাড়ি। এমন ভাবে পড়েছে যে দেখলেই বুঝা যায় সে গ্রামের মেয়ে। গায়ের রঙ শ্যামলা। দেখতে ও অপূর্ব লাগছে তাকে। পরিবেশের সাথে মানিয়েছে খুব । আচলে তার পেয়ারা৷ শাওন একটা পেয়ারা চাইলে রূপসী এগিয়ে দিয়ে বললো,
“এই নে। এই বেডারা কারা?”
ইমরান ও রিসাদের কাছে তার মুখের ভাষা ভালো লাগলো না। তবে রিসাদ কিছুটা অবাক হয়েছে ইমরানের মতো ফেমাস লোককে এই মেয়ে চিনলো না বলে! ওদিকে শাওন জবাব দিলো,
” আমার খালাতো ভাই। আর ভাইয়ের বন্ধু।”
রূপসী তাদের উদ্দেশ্যে বললো,
“এই মিয়ারা, হা কইরা আছেন ক্যা? পেয়ারা খাইবেন?”
রিসাদ জবাব দিলো,
” না। তুমিই খাও। আমাকে না হয় না চিনলে, কিন্তু ইমরানকে চেনো না?”
“ক্যা? উনি কেডা।”
শাওন জবাব দিলো,
“আপু, উনি বাংলাদেশের বিখ্যাত গায়ক।”
” অ…. আইচ্ছা! তাইলে একটা গান হুনান তো।”
ইমরান থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর অবাক হচ্ছে এই মেয়ের কথা-বার্তা, আচার-আচরণ দেখে। যেটা মোটেও সৌহার্দপূর্ণ না! ইমরানকে এমন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে রূপসী বললো,
” কি হইছে? গান হুনান। নাকি টাকা লাগবো! আগেই বলে নেই, টাকা দিতে পারতাম না।”
এবার ইমরান জোরে হেসে উঠলো এবং বললো,
“টাকা লাগবে না। গান গাওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও সুন্দর মন মানসিকতার প্রয়োজন। যা এখন নেই।
“ও আইচ্ছা। আপনের মানসিকতা যহন সুন্দর হইবো তহন হুনাইয়েন।”
“আচ্ছা।”
রূপসী হঠাৎই উৎফুল্লতার সাথে শাওনের উদ্দেশ্যে বললো,
“অই শাওন, কাল সকালে তৈরি থাকিছ। আমি অহন বাড়ি যাই। সন্ধ্যা হইয়া যাইতাছে, আম্মা আবার বকা দিবো।”
“আইচ্ছা।”
তারপর রূপসী হেলেদুলে লাফাতে লাফাতে চলে গেলো। এদিকে ইমরান আর রিসাদ তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। মেয়েটা নিশ্চিত অর্ধ পাগল। মাথার তার নিশ্চয়ই কিছুটা কাটাছেঁড়া আছে। নতুবা এমন আচরণ করে কেউ অপরিচিত লোকদের সাথে! সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে তাই শাওন বললো,
“ভাই সন্ধ্যা অইছে তো। বাড়ি যাইবা না।”
রিসাদ- হুম চল।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে রিসাদ শাওনকে দেখতে না পেয়ে খালাকে জিজ্ঞেস করলো,
“খালা শাওন কোথায়?”
“কই জানি গেছে! তোরা আবার কোনোদিকে যাইস না।ইমরান বাবারে নিয়া ঘরে বয়। ভাপা পিঠা বানাইতাছি।”
সকালের পরিবেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইচ্ছে হচ্ছে ইমরানের। তাই সে বললো,
“খালা আমরা একটু ঘুরে আসি।”
“কুয়াশা পড়ছে তো। ঠান্ডা লাগবো। যাইয়ো না।”
” কিছু হবে না। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবো।”
তারপর ইমরান আর রিসাদ শীতের কাপড় পড়ে বেরিয়ে গেলো। উত্তর দিক থেকে হিমেল হাওয়া বইছে৷ ঠান্ডা লাগছে তবুও মন্দ লাগছে না। বরং বেশ ভালো লাগছে৷ কাঁচা রাস্তা ধরে দুজন দক্ষিণে হাটতে হাটতে পুকুরের দিকে চলে এলো। পুকুর পাড়ে অনেক গাছ লাগানো আছে। তারা দেখতে পেল ছোট ছোট কতগুলো ছেলেমেয়ে খেজুর গাছের নিচে দাড়িয়ে আছে। তারাও সেখানে গেলো। শাওন ও আছে তাদের মাঝে। তাকে দেখে একটু দূর থেকেই রিসাদ বললো,
” কিরে, এখানে কি করছিস?”
“খেজুরের রস নামাই।”
ইতিমধ্যে তাদের দৃষ্টি গাছের অগ্রভাগে চলে গেছে। উপরে তাকিয়ে দেখে রূপসী গাছে উঠে খেজুরের রস নামাচ্ছে! দুজনেই বিস্মিত! ইমরান বিস্ময়ের সাথে বললো,
” এ তো দেখছি একেবারে গেছো মেয়ে!”
রিসাদ হাসির সাথে বললো,
“ভাই, বিশ্বাস কর। ছোট বেলায় যা ই একটু আধটু গাছ বাইতে জানতাম, এরপর ক্লাস সিক্সে থাকতে একদিন আম গাছ থেকে পড়ে হাত ভেঙেছি। এরপর থেকে আর গাছে চড়িনি। স্কুল লাইফ শেষে আরেকবার ট্রাই করেছিলাম৷ দেখলাম আগে যতটুকু পারতাম সেটাও হচ্ছে না! একেবারেই ভুলে গেছি! আর এই মেয়ে এতো বড় হয়েও গাছে চড়ে! মাথা নষ্ট! সে যে বড় হয়েছে সেই খেয়ালও নেই! তার বাবা মা নিশ্চয়ই কিছু বলে না তাকে!”
রূপসী ৩ হাড়ি রস নামিয়ে আনলো। তাদের দুজনকে এখানে উপস্থিত দেখে বললো,
“কি? আপনারা রস খাইবেন?”
রিসাদ ইচ্ছে দমিয়ে না রেখে বলে ফেললো,
” দিলেতো খাবোই।”
“আইচ্ছা। ধরেন, এই হাড়ি আপনারা ২ জনে খান।
শাওন, মিমি, রিমি, ইমন তোরা এই হাড়ি নে।
আর ইশা, আছমা তোরা আমার সাথে খাবি।
শাওন বিষন্নতার সাথে বললো,
” আমরা ৪জন এক হাড়ি ক্যা?”
রূপসী খিলখিলিয়ে হাসির সাথে বললো,
“তোরা ছোট, তোদের পেটও ছোট তাই।”
পরক্ষণে আবার বললো,
” যা কাল তোগো বেশি দিমু।”
এবার শাওন খুশি। এই শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাসের উপর বসে খেজুরের রস! ওফ! অন্য রকম ভালো লাগছে ইমরানের কাছে! সে এবং রিসাদ টানাটানি করে এক হাড়ি রস শেষ করে ফেললো। বাকিরা অন্যদিকে চলে গেছে। হাড়ি নিয়ে কমবেশি সব গ্রুপেই ঝগড়া চলছে সে কেন বেশি খেলো! সে কেন কম পেলো!
অত:পর ইমরান ও রিসাদ বাসায় ফিরে গরম গরম ভাপা পিঠা খেয়েছে। সাথে রূপসী ও এসেছে। শাওন তাকে টেনে নিয়ে এসেছে। কারণ শাওনের মা বলে দিয়েছে রূপসীকে খবর দিতে। রূপসী পিঠার স্বাদ উপভোগ করে বললো,
” খালা, তোমার পিডা কিন্তু দারুণ মজা।”
“আইচ্ছা? তোর আম্মার লাইগা দুইডা লইয়া যা। আর তোর আম্মারে কইছ আইতো।”
” আইচ্ছা।”
রূপসী চলে গেলো। ইমরান, রিসাদ ও শাওন ঘরে বসে কিছুক্ষণ দুষ্টুমি করলাম। কিছুক্ষণ ফোনে খেলাধুলা সাথে মিডিয়াতে সময় ব্যয়। কাজ থেকে কয়েকদিনের জন্য দূরেই আছে ইমরান।দুপুরের দিকে শাওন চলে গেলো খেলতে। ইমরান আর রিসাদ ঘরে বসে ছিলো। সময় ব্যয় করছে ফোনে। বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না তাই ইমরান বললো,
“রিসাদ চল বাইরে যাই। বোরিং লাগছে।”
“এই রোদের মধ্যে! বিকেলের দিকে যাই।”
“না এখন চল, পুকুরের দিকে যাই। সেখানে রোদের তাপ কম হবে।”
“আচ্ছা।”
কুয়াশা কেটে দুপুরে উঁকি দিয়েছে ঝিলমিলে রোদ। তাপ বেশি না হলেও আলোটাই যেন বিরক্তিকর। দুজন হাটতে হাটতে পুকুর পাড়ে এলো। দেখলো রূপসী পানির উপরে পেয়ারা গাছের আধ মরা ডালে পা ঝুলিয়ে বসে পেয়ারা খাচ্ছে। যখনই এই মেয়েকে দেখে তখনই কোনো না কোনো গাছে তার অবস্থান! মাটিতে বসে থাকলেও তো পারে! মেয়ে মানুষ এতো গাছে চড়ে কেন! তাও আবার দুপুর সন্ধ্যা মানে না! লোকজনও কি কিছু বলে না! আর বলবেই কি করে! এদিকে তো তেমন লোকজনও দেখা যায় না!রিসাদ রূপসীর উদ্দেশ্যে বললো,
“এই রূপসী, এই দুপুরে এখানে বসে আছো কেন?”
রূপসী ঘাড় ঘুরিয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে বললো,
” কানা নাকি! দেহেন না, পেয়ারা খাইতাছি!”
” হ্যাঁ তা তো দেখছি। একা একা বসে আছো ভূতে ধরবে তো!”
রূপসী ভেঙচি কেটে পা ঘনঘন পা নাচাতে নাচাতে বললো,
” হুহ! ভূত আমারে কিছু করতে পারবো না, আমি ভুতের ঘাড় মটকাইয়া….. আ..আ…. !
ডালটা মচকানো ছিলো বিধায় ঘনঘন পা নাচানোর কারনে ঝুলে ঝুলে আরও মচকে গেছে ডাল! তাই হঠাৎ ডাল ভেঙে রূপসী পানিতে পড়ে গেলো! ইমরানও রিসাদ প্রথমে ভয় পেয়ে গেলো তাকে পড়ে যেতে দেখে! রূপসী যখন পানিতে ডুবে আবার ভেসে ওঠে হতবাক হয়ে দাড়ালো তখন তারা উভয়েই উপরে থেকে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো! রূপসী রেগেমেগে তাকালো তাদের দিকে! এবং পানিতে দাড়িয়ে রেগে তাদের দিকে হাতের ১টা পেয়ারা দিয়ে ঢিল মারলো। আর ইমরান সেটা ধরে ফেললো। সে আরও রাগিয়ে দিতে হাসতে হাসতে বললো,
“আমরা তো দুজন। ছোট পেয়ারা ভাগ করে খেতে পারবো না। আর একটা দাও।”
রূপসী দাত কিড়মিড়িয়ে তাকালো! অত:পর পানি থেকে উঠে বাড়িতে চলে গেলো। আর ইমরান রুমালে পেয়ারা মুছে তা খেতে খেতে রিসাদের সাথে সামনের দিকে হাটতে লাগলো।
.
.
.
[গল্প বিনা প্রিয় এলাকা ঘুমন্ত মনে হচ্ছে। নতুন গল্প লেখা নিয়ে আমি এখনো মেন্টালি প্রিপেয়ার হতে পারিনি। তাই পুরোনো থেকেই একটা এডিট করে নতুন করে দিচ্ছি। প্লট ঠিকই আছে তবে লেখায় ভিন্নতা এনেছি। একসময় ইমোজি সহিত লিখতে খুব ভালো লাগতো। এখন সেটা দেখে আমি নিজেই বিরক্ত হয়ে যাই! তাই পরিবর্তন করতে চাইলাম।
ইনশাআল্লাহ, নতুন প্লট নিয়ে লিখলে পোস্ট করে দিবো….]