শ্রাবণ_আঁধারে #পর্ব_১৪ (অন্তিম পর্ব)

0
1254

#শ্রাবণ_আঁধারে
#পর্ব_১৪ (অন্তিম পর্ব)
#নিশাত_জাহান_নিশি

রুদ্ধশ্বাস ছেড়ে চিএা অস্ফুট কন্ঠে পুনরায় বলল,,

“আমার বালিশের তলায় একটা চিরকুট আছে আরাধ্য। আমার সমস্ত জবানবন্দি এই চিরকুটটায় স্পষ্ট ভাবে লিখা আছে। প্রমাণ হিসেবে এই চিরকুটটা তোর কাজে লাগবে। আর শোন, আমার বাবাকে দেখে রাখিস। একটু আগলে আগলে রাখিস, যতোদিন পর্যন্ত বাবা বেঁচে থাকবে, দয়া করে বাবার ঔষধ খরচটা তুই বহন করিস। এই গুরু দায়িত্বটা আমি তোর উপর সোঁপে গেলাম আরাধ্য। যদি ও জানি আমার গর্ভের সন্তানটা নিষ্পাপ, তাও আমি তাকে এই পৃথিবীতে আনতে চাই না। আমার গর্ভে বেড়ে উঠা এই সন্তান সহ আমি স্ব-ইচ্ছায় সুইসাইড করলাম আরাধ্য৷ “বিষ খেয়েছি আমি।” বিশ্বাস কর, এই পোঁড়া মুখ নিয়ে আমি বাবার মুখোমুখি হতে পারব না। বাবার দেওয়া সু-শিক্ষায় কোনো খামতি ছিলো না আমি জানি, তবে আমার চরিএে হয়তো কোনো খামতি ছিলো! বাবার দেওয়া শিক্ষাকে অপমান করে আমি অপবিএ রূপে বাবার সম্মুখীন হতে পারব না। আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা ও করিস না আরাধ্য৷ আমি চাই না এই কলঙ্কনী মেয়েটার জন্য তুই সমাজের কাছে, তোর পরিবারের কাছে, তোর বিবেকের কাছে প্রতিনিয়ত অনুতপ্ত হোস। তোর নামে সমাজে কেউ কটু কথা রটাক আমি মোটে ও চাই না। তুই তো ভগবান শ্রী কৃষ্ণের পবিএ এক অবতার আরাধ্য। বিশ্বাস কর, তোকে বিন্দুমাএ অপবিএ করতে চাই না আমি। তাই আমি নিজের জীবন দিয়ে তোর চরিএ থেকে আমার পাপের বোঝা দূর করলাম। আবারো বলছি, “আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করিস না আরাধ্য। আমি মরতে চাই, শান্তিতে মরতে দে আমায় প্লিজ। এই মৃত্যুতেই আমি শান্তি খুঁজে পাচ্ছি।” বেঁচে থাকলে এই শান্তিটা আমার ভাগ্যে সইত না বিশ্বাস কর! মৃত্যুর মতো শান্তি আসলেই আর কিছুতেই হয় না। জানি না, আমার মৃত্যুর পর তোর অথবা বাবার শেষ পরিণতি কি হবে, তবে আমার একটা আর্জি আছে তোর কাছে, “আমাদের দাহ যেনো একই স্থানে হয় আরাধ্য। মৃত্যুর পর স্বর্গলোকে অথবা নরলোকে তোর জন্য আমি অপেক্ষা করব আরাধ্য। সঠিক সময়ে তুই আমার কাছে পৌঁছে যাস প্লিজ। তোকে ছাড়া আমি বেশি দিন থাকতে পারব না বিশ্বাস কর। এই জন্মে না হলে ও আগামী সাত জন্মে আমি তোর হয়ে তোর জন্য অপেক্ষা করব আরাধ্য৷ বাকি জন্ম গুলোতে যেনো আমাদের পুনরায় মিলন হয়। এভাবে যেনো মাঝপথ থেকে নিদারুন আক্ষেপ, যন্ত্রণা, মরে যাওয়ার সদ্বিশ্বাস নিয়ে তোদেরকে ছেড়ে আমায় চলে যেতে না হয়। আমাদের মিলনের মাঝখানে পুনরায় কোনো শুকলা নামের নরপশুর আবির্ভাব না ঘটুক। ঈশ্বরের কাছে এটাই আমার শেষ এবং করুন মিনতি। আমাদের অসম্পূর্ণ ভালোবাসা আগামী ৬ জন্মে পূর্ণ হোক। আরাধ্য জনম ভর চিএার থাকুক।”

চিএা কথা বলা থামিয়ে দিলো। পুরো দমে নিশ্চুপ হয়ে গেলো। অনুভূতি শূণ্য কাঠের পুতুল হয়ে আমি চিএাকে অতি যত্নে বুকে আগলে রেখেছি৷ আর্তনাদ করার শক্তিটা পর্যন্ত কুলিয়ে উঠতে পারছি না আমি। ভেতর থেকে হুহু আওয়াজ নিঃসৃত হলে ও চিবুক দ্বারা তা প্রকাশ করতে পারছি না আমি। চিএার নির্লিপ্ত ভঙ্গি দেখে যদি ও বুঝতে পারছি “আমার চিএা আর নেই।” তবু ও আমি চিএাকে বুক থেকে উঠিয়ে চিএাকে জাগানোর বৃথা চেষ্টা করছি না পর্যন্ত। ইতোমধ্যেই মনে হলো আমার কর্ণকুহরে কাকুর গলার স্বর ভেসে এলো। পাশ ফিরে তাকাতেই দেখলাম কাকু চোখ ভরা আতঙ্ক নিয়ে চিএাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে হাত নাড়িয়ে আমাকে কি যেনো বলছেন। শ্রবণ শক্তি লোপ পেয়েছে আমার। চোখ দুটো ও ঝাপসা হয়ে আসছে। পুরো দুনিয়া অন্ধকারে নিমজ্জিত লাগছে। কাকুর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমি বুকের পাজর থেকে পরম আদরে চিএাকে তুলে অশ্রুসিক্ত চোখে চিএার নিস্তেজ হয়ে আসা মুখের আদলটায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম। নাক, মুখ বেয়ে গড়গড়িয়ে রক্ত পড়ছে চিএার। মুহূর্তের মধ্যে কাকু “চিএাএাএা” বলে চিৎকার করে চোখ দুটো প্রকান্ড করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। বুকে হাত রেখে কাকু বড় বড় শ্বাস নির্গত করে হয়তো মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। মনুষ্যত্ব জলাঞ্জলি দিয়ে আমি অস্ফুটে দৃষ্টিতে এক ধ্যানে কাকুর মৃত্যু যন্ত্রণা দেখছি। একবারের জন্য ও কাকুকে বাঁচানোর প্রয়োজনটা বোধ করছি না আমি। কাকুর শরীরটা পুরোপুরি নিস্তেজ হয়ে আসতেই আমি নির্বিকার দৃষ্টিতে চিএার বিভৎস মুখটার দিকে তাকিয়ে ম্লান কন্ঠে বললাম,,

“তোর চোখে আমি মৃত্যুর স্বাদ দেখেছি চিএা! মৃত্যু অতি যন্ত্রণার হলে ও তোর চোখে আমি সেই নির্মম মৃত্যুর অপর এক স্নিগ্ধ রূপ দেখেছি। সেই স্নিগ্ধতার স্বাদ আস্বাদন করতে আমি ও খুব দ্রুত আসছি চিএা। বড়জোর কয়েক ঘন্টা সময় দে আমায়। এই কয়েক ঘন্টা আমাকে ছাড়া একটু ম্যানেজ করে নে প্লিজ। তোর কথাই আমি রাখব চিএা। আমাদের দাহ একই স্থানে, একইভাবে, একই সময়ে হবে চিএা। তোর সাথে করা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেই তোর আরাধ্য তোর কাছে ফিরছে! পুনরায় যখন আমাদের জন্ম হবে না? তখন তোকে একা রেখে এই আরাধ্য কোথাও নড়বে না। তোকে কোনো কীট বা নরপশুর স্বীকার হতে হবে না বিশ্বাস কর। তোর আশেপাশেই ছাঁয়ার মতোন ঘুড়ঘুড় করবে। একটা মুহূর্তের জন্য ও তোকে চোখের আড়াল করবে না। তুই ঠিকই বলেছিস চিএা, ” আরাধ্য জনম ভর চিএারই রবে।”

_______________________________________________

পরের দিন।
সকাল ১০ টা৷ চিএা এবং কাকুর মুখাগ্নি সেরে আমি ক্লান্ত এবং টালাটাল শরীরে মা এবং বাবার রুমে প্রবেশ করলাম। মা মনমরা হয়ে বিছানার উপর হাঁটু গুজে বসে আছেন। চিএার আত্নহত্যা এবং কাকুর মৃত্যুতে মা খুব গভীর শোকে তলিয়ে আছেন। যদি ও তাদের আত্নহত্যা এবং মৃত্যুর কারণ আমি এখনো অব্দি কাউকে অবগত করি নি! ঐ দিকে বাবা আমার উপর রাগে ক্ষীপ্ত হয়ে আছেন। কাকু এবং চিএার দাহের খরচ এবং মুখাগ্নি করার জন্য। বাবার রাগকে কোনো রকম প্রশয় না দিয়ে আমি ব্যালকনীতে বাবার মুখোমুখি দাঁড়ালাম। বাবা আমাকে দেখা মাএই চোখে, মুখে প্রবল রাগান্বিত ভাব নিয়ে মুখটা অন্যপাশে ঘুড়িয়ে নিলেন। আগ পাছ না ভেবে আমি ফুঁফিয়ে কেঁদে পিছন থেকে বাবাকে ঝাপটে ধরে বাবার পিঠের মাঝখানটায় দীর্ঘ এক চুমো এঁকে বললাম,,

“আমি আসছি বাবা!”

বাবাকে কোনো রূপ প্রতিত্তুর করার সুযোগ না দিয়ে আমি দ্রুত পায়ে হেঁটে বিছানায় মায়ের মুখোমুখি বসলাম। মায়ের অশ্রুসিক্ত দুচোখে এক পলক তাকিয়ে আমি মায়ের কপালে দীর্ঘ একটা চুমো খেয়ে মায়ের সম্মুখ থেকে উঠে রুম থেকে প্রস্থান নিচ্ছি আর আধো কন্ঠে মাকে উদ্দেশ্য করে বলছি,,

“আমি আসছি মা।”

মা রুম থেকে দৌঁড়ে আমার পিছু নিলেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে পিছন থেকে চিৎকার করে বললেন,,

“কোথায় যাচ্ছিস বাবা? একবার তো পিছু ফিরে তাকা।”

মায়ের বুক ফাঁটা আর্তনাদকে অগ্রাহ্য করে আমি চোখ থেকে বেয়ে পড়া জল গুলো হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুছে রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে ছুটে চললাম “শুকলা সেনের বাড়িতে।” বিশ্বের কোনো কঠোর আইনই ঐ নরপশুদের শাস্তি দিতে পারবে না। আইনের কোনো না কোনো ফাঁক ফোঁকড় দিয়ে ঠিক তারা বেরিয়ে যাবে। আবারো লালসা নিয়ে পূর্বের ন্যায় নতুন কোনো চিএাকে খুঁজবে। আমি বেঁচে থাকতে অন্তত আর কোনো চিএার জীবন নষ্ট হতে দিবো না আমি। আরাধ্যের চিএাকে যারা আরাধ্যের হয়ে বাঁচতে দেয় নি তাদের ও বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। ঐ নরপশুদের শাস্তি তো হবে একমাএ মৃত্যু। তাদের যমরাজ হয়ে এই আরাধ্য সেনগুপ্ত মৃত্যুর স্বাদ তাদের আস্বাদন করাবে।

আধ ঘন্টার মধ্যে আমি শুকলা সেনের বাড়ি এসে পৌঁছে গেলাম। দরজার কলিং বেল চাপতেই শুকলা দরজা খুলে বের হয়ে এলো। হাসিমুখে আমি শুকলা সেনের দিকে তাকাতেই জানোয়ারটা শুকনো ঢোক গিলে প্রশ্নবিদ্ধ কন্ঠে বলল,,

“আরাধ্য। তুমি?”

আমি মৃদ্যু হেসে বললাম,,

“ভেতরে বসে কথা বলি?”

শুকলা সেন উত্তেজিত কন্ঠে বললেন,,

“বিশ্বাস করো আরাধ্য, চিএার আত্নহত্যার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।”

“এতো ঘাবড়ে যাচ্ছেন কেনো স্যার? আমি তো আপনার সাথে অন্য কোনো বিষয়ে কথা বলতে এসেছি। বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

শুকলা স্বস্তির শ্বাস ছেড়ে আমাকে নিয়ে রুমের ভেতর প্রবেশ করলেন। পায়জামার পেছন থেকে পেপসির বিশাল ক্যানটা বের করে আমি সোজা ডাইনিং টেবিলে থাকা মোট ছয়টা গ্লাসে পেপসিটা ভাগ করে নিলাম। শুকলা কৌতুহলী কন্ঠে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন,,

“পেপসি? হঠাৎ পেপসি কেনো?”

বাঁকা হেসে আমি পেপসির প্রথম গ্লাসটা শুকলার দিকে এগিয়ে বললাম,,

“খেয়ে নিন। তেষ্টা মিটবে।”

দু হাতে দুটো পেপসির গ্লাস নিয়ে আমি প্রতিটা রুমের দরজায় চোখ বুলিয়ে অস্থির কন্ঠে শুকলাকে বললাম,,

“আপনার বন্ধুরা কোথায় স্যার? তাদের সবাইকে ডাকুন প্লিজ। একসাথে বসে একটু ড্রিংক করি, আড্ডা দেই।”

শুকলা গলা খাঁকিয়ে অস্থির চাহনীতে বলল,,

“আআআছে। তাতাতারা রুমে।”

আমি ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে বললাম,,

“ডেকে দিন। একটু মজ মাস্তি করি। উনাদের সাথে একটু পরিচিত হই।”

কথা গুলো শেষ করেই আমি পেপসি ভর্তি একটা গ্লাস গড়গড় করে শেষ করে নিলাম। শুকলা আচমকা স্বস্তির শ্বাস ছেড়ে মিহি কন্ঠে বলল,,

“কিছু মিশাও নি তাহলে। উফফ বাঁচা গেলো। আমি তো ব্যাপক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম!”

ব্যতিব্যস্ত হয়ে শুকলা আনন্দে প্রফুল্লিত হয়ে তার মতো আরো চারটে নরপশুকে বসার রুম ডেকে নিয়ে এলো। আমি চেয়ে ও তাদের দিকে তেজী দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে পারছি না। রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের গলা টিপে মারতে পারছি না। উল্টে হাসি মুখে তাদের দিকে চেয়ে আছি। হাল, চাল জিগ্যেস করছি। চারটা পেপসি ভর্তি গ্লাস শুকলা নিজেই ঐ নরপশুদের হাতে তুলে দিলো। হাসি মুখে তারা পেপসিতে চুমুক দিতে আরম্ভ করল। ঐদিকে আমি ফোনের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে সুনীল দা কে ম্যাসেজ করে বললাম, “১ ঘন্টা পর আমার বাবা-মাকে নিয়ে শুকলার বাড়িতে পৌঁছে যেতে।” ঐ পাশ থেকে কোনো ফিডব্যাক আসে নি এখনো। হয়তো সুনীল দা ম্যাসেজটা দেখেন নি। নয়তো দেখে ও খামখোয়ালী করছেন।

প্রায় আধ ঘন্টা পর শুকলার দুজন সহচর খুকখুক শব্দে কেশে নাক, মুখ দিয়ে রক্ত নিঃসৃত করতে আরম্ভ করল। ক্রমান্বয়ে আরো দুজন রক্ত বমি করতে আরম্ভ করল। শুকলা এইবার ব্যাপক ভয় পেয়ে আমার দিকে তাকালো। অলরেডি আমার নাক দিয়ে ও রক্ত বাহিত হতে আরম্ভ করল। শুকলা অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে বলল,,

“তুই বিষ মিশিয়েছিস পেপসিতে?”

ঘাঁড়ের রগ গুলো টান টান করে আমি শরীরের বেঁচে থাকা সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে শুকলার মেইন পয়েন্টে জোরে এক লাথ বসিয়ে বললাম,,

“মাদার** তুই আমার চিএাকে শেষ করে দিয়েছিস। তোর মৃত্যু তো ঈশ্বর আমার হাতেই লিখে রেখেছিলেন। এই সুন্দর পৃথিবীতে তোর বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তোর বাসস্থান তো কেবলমাএ নরলোকে।”

শুকলার মেইন পয়েন্ট থেকে অঝড়ে রক্ত বাহিত হতে আরম্ভ করল। নাক, মুখ বেয়ে ও রক্ত ঝড়ছে তার। বাঁচার জন্য শুকলা করুনভাবে তাড়পাচ্ছে। শুকলার বেঁচে থাকার আকুতি দেখে আমি ঝাপসা চোখে ও ভেতরটায় মৃত্যু যন্ত্রণা নিয়ে হু হা শব্দে হেসে বললাম,,

“তোর চোখে আমি ঠিক মৃত্যুর এই যন্ত্রণাটাই দেখতে চেয়েছিলাম শুকলা। চিএার পবিএ চোখে আমি মৃত্যুর স্বাদ দেখেছি৷ আর তোর অপবিএ চোখে আমি মৃত্যুর গভীর যন্ত্রণা দেখছি। মরতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আমার বিশ্বাস কর। তবু ও আমি মৃত্যুকে দু চোখ বুজে আলিঙ্গন করে নিলাম। চিএা আমার জন্য ওপারে অপেক্ষা করছে যে!”

শুকলা মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ল। তার চার সহচর রা ও মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছে সেই অনেকক্ষন পূর্বে। একটু একটু করে আমার শরীরটা ও অসাড় হয়ে আসছে। ভেতরের সমস্ত অঙ্গ প্রতঙ্গ আমার নিংড়ে আসছে। এক নিদারুন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি আমি। মৃত্যুর মতোন এই প্রখর যন্ত্রনাটা আমি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারছি না আসলে। শুধু বুঝতে পারছি, “মৃত্যুর মতোন যন্ত্রণা পৃথিবীতে আর কিছুতেই হয় না।” একটু একটু করে মরে যাচ্ছি আমি। মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করছি। মৃত্যুকে খুব নিকট থেকে উপলব্ধি করতে পারছি। ইসস, না জানি আমার চিএা মৃত্যু যন্ত্রণায় আমার ‘চে কতোটা কষ্ট পেয়ে মরেছে! পেরেছে তো এই নিদারুন যন্ত্রণা সহ্য করতে? যেখানে আমার মতোন কঠোর মনের মানুষের ভেতরটা ও দুমড়ে মুচড়ে আসছে।

চোখ দুটো নিস্তেজ হয়ে আসতেই মনে হলো চিএা সাদা থান পড়ে হাসি মুখে আমার সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলছে,,

“পরলোকে তোকে স্বাগতম আরাধ্য। ভাবতে পারি নি, তুই এতো জলদি আমার কাছে পৌঁছে যাবি!”

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here