অস্পষ্ট_সে (১০ম পর্ব শেষ)

0
1763

গল্পঃ #অস্পষ্ট_সে (১০ম পর্ব শেষ)
লেখাঃ #তাজরীন_খন্দকার

চিত্রা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
___কিসের সেগুলো? বলুন কিসের?

দ্বীপ উঠে দাঁড়ালো, এবং চিত্রার হাতে ধরে বললো
___ চলো তাহলে।

চিত্রা দ্বীপের সাথে সাথে হেঁটে চলেছে, এক রাস্তা পেরিয়ে অন্য রাস্তা। রাস্তা পার হওয়া তারপর এক গলি থেকে অন্য গলি দ্বীপ চিত্রার হাতেই ধরা। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ একটা জায়গায় এসে থেমে গেলো।
চিত্রা হাঁফাতে হাঁফাতে বললো,
___ এখানে নিয়ে আসার কারণ কি? সামনে তো বড় বড় বিল্ডিং ছাড়া কিছুই নেই।

দ্বীপ আঙুল দিয়ে তাদের সামনের দশতলা একটা বিল্ডিং দেখিয়ে বললো..
___ এটার ৩য় তলা আমার টাকায় গড়ে উঠেছে।

চিত্রা দ্বীপের কথায় হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে একদম নুইয়ে পড়ার অবস্থা। হাসির মধ্যেই বললো
___ আপনার টাকায় হাহাহাহা, তাহলে তো আপনাকে মধ্যবিত্ত বলা যাবেনা। এতো সুন্দর একটা বাড়ির একটা ফ্ল্যাট থাকলে তাকে বড়লোক বলবে সবাই।আর আপনার মতো সাধারণ একজন যে কিনা মাত্র কয়েক বছর ধরে চাকরি করে, সে বলছে এটা তার, ও মাই গড। এতো জোকস কেমনে সম্ভব? আপনি আমাকে কি বলবেন বলে এখানে এনে পাগলের মতো উল্টা পাল্টা বলছেন কেন? সত্যি আপনার মাথা ঠিক আছে?

দ্বীপ মুখ ঘুরিয়ে বললো..
___ চিত্রা আমার মাথা ঠিক আছে, কিন্তু আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে তার মাথা ঠিক থাকতো না।

___ মানে কি? অন্য কারোর মাথা ঠিক থাকতো না কেন? সে কি এই ফ্ল্যাটের মালিককে গিয়ে বলে বসতো, এই যে এটা আমার এখানে আপনার থাকা চলবে না।

বলে চিত্রা আবারও হাসতে শুরু করলো। দ্বীপ ধমক দিয়ে বললো..
___চিত্রা আমি সিরিয়াস।

ধমক শুনে চিত্রা হাসি বন্ধ করে অবাক চোখে দ্বীপের দিকে তাকালো। দ্বীপ এবার নরম স্বরে বলতে লাগলো..
___ তুমি সবসময় জানতে চাইতে না আমি অথৈ এর উপর এতো দূর্বল কেন? সেটার কারণও এটা। এটা অথৈ এর নামে দলিল করা। সেদিন তুমি যেসব কাগজ বাবাকে দেখাতে যাচ্ছিলে সেগুলো এই জায়গারই কাগজপত্র। তুমি হয়তো দেখতেছো এটা শহরের ভেতরে, এবং এই জায়গা অনেক উন্নত, তাই আমার মতো একজন সাধারণ চাকুরী করা মানুষের পক্ষে এতো তারাতাড়ি কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তাই অবিশ্বাস করাটা স্বাভাবিক।

চিত্রার কপালে ততক্ষণে মিহি ঘাম, চোখ দুটো কেমন জানি ছলছল করছে। দ্বীপের কথার ফাঁকে সে মিরমির করে বললো
___ তার মানে এটাই সত্যি? কিন্তু এতো টাকা একসাথে কিভাবে পেলেন? জায়গা কিনা তারপর আবার বাড়ি বানানো, উফফ আমার মাথা ঘুরাচ্ছে।

___ এই জায়গাটা চার বছর আগে ৮ জন মিলে কিনেছিলাম। তখন এখানে এতো বড় বড় বিল্ডিংগুলো ছিল না। ইদানীং এগুলো হয়েছে। আর চার বছরের ব্যবধানে এই জায়গার দামও এখন দ্বিগুণ। কারণ চারপাশে মিল ফ্যাক্টরি, স্কুল কলেজ মার্কেট হয়ে গেছে। জায়গাটাতে আমি আর অথৈ মিলে এক ভাগ ছিল। বাবার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা এনেছিলাম চাকরির জন্য লাগবে বলে। কিন্তু অথৈ আমাকে তার চাচার কোম্পানিতে এমনিতেই চাকরিটা পাইয়ে দিয়েছিল। বাবার থেকে আনা টাকার কিছু এখানে দিয়ে এবং কিছু অথৈও দিয়েছিল, এভাবে মিলিয়ে ৮ জন আমরা চুক্তি করে জায়গাটা কিনি এবং সেখানে ১০ তলা বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করি। এই আটজন সবাই-ই আমরা প্রায় মধ্যবিত্ত শ্রেণির। তবে উনারা অনেক বছরের সঞ্চিত টাকা নিয়ে নেমেছেন।
এখানের নিচের তলায় গাড়ী রাখার জন্য আলাদা জায়গা এবং একটা রুম আছে। আর ১০ তলা পুরোটাই ভাড়া দেওয়া, যেটার টাকা একটা ফান্ডে জমা থাকে সেই টাকা, লিফট কিংবা পুরো বাড়িতে কোনো সমস্যা হলে সেগুলো মেরামত করার জন্য ব্যয় হয়। আর বাকি যে আটটা ফ্ল্যাট সেগুলো একটা চুক্তিতে আটজনের মধ্যে ভাগ হয়েছে। যার ভাগ্যে যেটা আসছে সেটাই নিতে হয়েছে। আমাদের ভাগ্য খুব ভালো ছিল, যার জন্য ৩য় তলাটাই পেয়েছি, তবে আমার ভাগ্য নয়। সেটা অথৈ এর।

এইটুক বলেই দ্বীপ থামলো।

চিত্রা বললো..
___আপনি বাবাকে এই সম্পর্কে কিছুই জানান নি? এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত একটা মেয়ের সাথে মিলে করে ফেললেন? এতো সাহস আপনার।! এই জন্যই এমন হয়েছে।

দ্বীপ আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললো
___ বাবাকে বললে আমাকে এক ধাক্কায় বাসা থেকে বের করে দিবে। আর এসবকিছু শুনলে তো সাথে সাথে হার্টঅ্যাটাক করবে উনি।
আর অথৈ এর উপর আমার আকাশসমান বিশ্বাস ছিল চিত্রা। সে যা বলতো আমি তাই মানতাম। রিলেশনের প্রথম থেকেই সে আমাদের ভবিষ্যৎ ভাবতো। আমারও মনে হয়েছিলো আসলেই তো নিজের জন্য কিছু করা উচিত। তুমি হয়তো জানো না, বাবা অনেক আগেই তার সম্পত্তি আমি এবং তোড়ার নামে যা পাওনা সব লিখে দিয়েছে। এবং আমাদের বাড়িটা আমাকে দিয়েছে। তখন বাবা অসুস্থ ছিল আর সবকিছুর দলিলসংক্রান্ত বিষয়াদি আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলো।
আর অথৈ এর দেওয়া সেই চাকরিটায় প্রথম পোস্ট ছিল আমার। সারাদিন রাত আমি কাটতাম। অনেক টাকা বেতন পেতাম। যা কিনা আমাদের মধ্যবিত্তদের জন্য বিরাট কিছু। আর তখনি ছিল বাড়ির কার্যক্রম। অথৈ বলেছিল তার নামে এক ফ্ল্যাটটা হোক, আমিও ভাবলাম আমরা দুজনেই তো এক, সমস্যা কোথায়?তাছাড়া আমার চাকরিটাও তো শুধুমাত্র তার জন্য হয়েছে। যে মেয়ে আমার জন্য এতকিছু করতে পারে আমি তো তাকে এটা দিতেই পারি তাইনা? তাই আমি অমত করিনি।
তারপর যখন ঘরের কাজ শুরু হলো তখন একসাথে অনেক টাকা দরকার। এতো টাকা একসাথে আমি কোথায় পাবো, সেই জন্য আমাদের বাড়ি এবং আমার যত জায়গাজমি ছিল সবকিছুর দলিল জমা দিয়ে ৪ বছরের জন্য ৩০ লাখ টাকা তুলেছিলাম। প্রতিমাসে লাভে আসলে ৮০ হাজার টাকা ব্যাংকে দিয়ে আসছি। সামনে আরো চারমাস দিলে সেটা শেষ হবে।
এসব কিছু বাবা বুঝতে পারেনি, কারণ বাবা জানে আমি বেশি হলে প্রতি মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করি, আর সেখান থেকে অল্প টাকা ঘরে দেই। সেটাতেই বাবা খুশি। কিন্তু তিনি তো জানতেন না, আমার আয় প্রতি মাসে এক লাখেরও উপরে ছিল।

চিত্রা দ্বীপের সামনে গিয়ে বললো..
___ আপনি এতো বড় ভুলটা কেন করলেন? বিয়ে হয়নি যেখানে সেখানে একটা মেয়ের নামে এতো বড় লেনদেন, এতো বিশ্বাস হুহহ। তা কখন থেকে খেলেন এই নাকানিচুবানিটা? আর একটা কোম্পানি থেকে এতো টাকা বেতন পাওয়াটা অসম্ভব ব্যপার৷

___ হ্যাঁ অসম্ভব কিন্তু এখানে অনেক পণ্যতেই দুনম্বরি চলে, অবৈধভাবে অনেককিছুর আদান-প্রদান হয়। তবে তার জন্য ধরা পড়লে আমার কিছুই হতোনা। সবকিছু মালিকের উপর।
আমার কাজ ছিল সবকিছুর হিসাবনিকাশ ঠিকঠাক রাখা।

___ওহহ আচ্ছা, তারপর অথৈ এর আসল রূপ কবে দেখলেন?

___ দুই বছর পর, যখন বাড়ি করা সম্পন্ন হয়ে গেছে। এবং অথৈ নিশ্চিত এই ফ্ল্যাট তার নামে আর আইনগতভাবেও সেই পাবে এটা। আমি তো মাত্র প্রমাণ ছাড়া টাকা-ই দিয়ে আসছি। এমনও নয় যে আমি এরপর না দিলে বেঁচে যাবো, আমার পৈতৃক বাড়ি,জমি এবং বাবাকে কি জবাব দিবো চিন্তায় আমি এখনো পর্যন্ত সেই ঋণ দিয়ে যাচ্ছি। আর তাকে ফোনে ওয়েটিং পেতাম, প্রায়ই ছেলেদের সাথে দেখতাম। প্রথমে আমাকে অনেক মিথ্যা বলে বুঝাতো, আমিও বিশ্বাস করতাম। কিন্তু পরবর্তীতে সবকিছু আমার কাছেও ক্লেয়ার হয়ে যায়।

চিত্রা দু হাত ভাজ করে জিজ্ঞাসা করলো,
___ তাহলে সে আপনাকে ভালোবাসেনা? কিন্তু বিয়ে ভেঙে দিতে চেয়েছিল কেন?

___ নাহহ অথৈ আমাকে ভালোবাসেনা, ভালোবাসলে কি আর আমার বিয়েতে সে তোড়জোড় করে বিয়েটা ভেঙে দিতোনা? ফোনে যেটা বলেছে সেটা আমার সামনে দেখানো বলা বলেছে। সেসময় তাকে আমি জানিয়েছিলাম আমি বিয়ে করছি। তাই সেটা জাস্ট অভিনয় ছিল। তবে অথৈকে আমি জোর দিয়ে বললে আমাকে বিয়ে করতেই হতো, কারণ তার চাচা এবং তার মা আমার ব্যপারে সব জানে। অথৈ এর বাবা নেই, তার চাচাও তার তেমন দেখাশোনা করেনা। তবে সে নিজে থেকে কিছু চাইলে সেটা দেওয়ার চেষ্টা করে।
আর আমার চাকরির জন্য সে তার চাচাকে অনুনয় করেছিল। বাবা ছাড়া একটা ভাইজির সেই আবদার তিনি ফেলতে পারেননি। ভাতিজীর ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমাকে উচ্চ পোস্টে নিয়েছেন। তিনি ভেবেছেন আমার সাথেই বুঝি সে সারাজীবন থাকবে। তবে আমার চাকরির আবেদনটা গ্রহণ হয়েছিল আমার যোগ্যতাতেই। সেখানে অথৈ একটা মাধ্যম ছিল, আর সেটার জন্য আমি অথৈ এর কাছে কৃতজ্ঞ।
তবে চিত্রা তুমিই বলো আমি গত দুই বছরে যেই মেয়েকে এত এত ছেলের সাথে নিজ চোখে দেখেছি এবং তাদের সাথে তার সম্পর্ক আছে এমন কিছুর প্রমাণও পেয়েছি তাকে আমি কি করে বিয়ে করবো? নিজেই নিজের বিবেককে হাজারবার প্রশ্ন করেছি, আচ্ছা ৪ বছর নাহয় কষ্ট করলাম কিন্তু বেঁচে থাকলে জীবনের ৪০ টা বছর এমন একটা প্রতারকের সাথে কিভাবে কাটাবো?
তাই মা-বাবা যখন খুব করে বলছিল ভালো একটা মেয়ের সন্ধান পেয়েছে আমাকে মেয়ে দেখতে যেতে।সেদিন আমি জীবনের সবকিছু বিসর্জন দিয়ে হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম। সেদিন মনে হয়েছিল আমার সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে কিন্তু বাবা-মা যা চায় তা হয়তো ভুল হবেনা। আর আমার তাই হলো, আমার সেই সিদ্ধান্তটা ছিল আমার জীবনের সেরা সিদ্ধান্ত। আমি তোমার মতো একজনকে পেয়ে সত্যি সুখী চিত্রা৷ আমার এসবের কোনো দরকার নেই। এখন যে চাকরিটা পেয়েছি সেটাতে আমি তেমন ভালো বেতন পাবোনা, চারমাসের টাকা শোধ করতে হয়তো আমাকে টাকা ধার করতে হবে। তারপর নাহয় আরো কয়েকমাস আমরা কষ্ট করলাম, তারপর তো আমরা সুখী হবো তাইনা?

চিত্রা কাঁদতে কাঁদতে দ্বীপের হাতটা শক্ত করে ধরে বললো..
___ হ্যাঁ আমরা সুখী হবো। আমরা অনেক ভালো থাকবো। ওই পুরনো বাড়িটাতেই আমরা ভালো থাকবো। আচ্ছা আপনি অথৈ এর সাথে এখনো কথা বলেন? মানে ইদানীং বলতে শুনিনি আমি।

___ না, ওর সাথে গত সপ্তাহ থেকে কথা হয়না। এতদিন আমি ওর সাথে ভালো ব্যবহার করতাম কারণ সে চাইলে আমার সে চাকরিটা দু মিনিটেই খেয়ে দিতে পারতো। আমি বিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে করেছি সেটা তার চাচাকে বললেই আমার চাকরিটা হারাতাম। আমি এরপর আমার অবস্থার কথা চিন্তা করেছি, কিভাবে ঋণ শোধ করবো আর বাবাকেই কি জবাব দিবো। এরপর যদি আর কোনো চাকরি না পাই তখন আমার কি হবে? এসব ভেবে আমি অথৈকে মিথ্যা বলে বলে খুশি রাখতে চাইতাম। তবে আজকে ওর সাথে আমি কথা বলবো, শেষ কথা। আজ আমার কোনো ভয় নেই। এরপর আর কখনো ভুল করেও মনে করবোনা অথৈ নামে আমার জীবনে কেউ ছিল। আমি তার কাছে আজ ঋণী না , কারণ আমি তার দয়ার সেই চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমার মাধ্যমে এবং আমার যোগ্যতায়ই চাকরি পেয়েছি। তাকে কোনো প্রয়োজন নেই আমার। কিন্তু সে আমার কাছে আজীবন ঋণী থাকবে। থাকতেই হবে তাকে।

দ্বীপ ৩য় তলার দিকে তাকিয়েই ফোনটা বের করে অথৈকে ফোন করে বললো,
___ বারান্দায় আসো তো।

চিত্রা বুঝতে পারলো, অথৈ এখানেই থাকে। সেও বারান্দায় তাকালো, এক মিনিটের মধ্যেই দেখলো অথৈ এখানে এসে দাঁড়িয়েছে।
অথৈকে দেখেই দ্বীপ চিত্রার কাঁধে হাত রেখে জোরে জোরে বলতে লাগলো..
___ দেখেছিস তুই, আজকে তুই ফ্ল্যাট পেয়েছিস কিন্তু আমি একটা বিশ্বস্ত মানুষ পেয়েছি। এতদিন সব জেনেও তোকে কিছু বলতাম না, শুধুমাত্র তোর দেওয়া একটা চাকরির খাতিরে। খবর পেয়েছিস চাকরিটা আমি ছেড়ে দিয়েছি যে? আমার স্বল্প আয়ের নতুন চাকরিটা নিয়ে আমি আর আমার বউ ভালো থাকবো বুঝেছিস? পেছনের এই চারটা বছরের জন্য আফসোস হলে আমার বউয়ের দিকে তাকিয়ে মনে করবো সবকিছুর বিনিময়ে আমার কাছে ভালোবাসা আছে। দরকার নেই তোর মতো প্রতারকের সঙ্গ! তোকে এসব কিছু আমি দান করে দিয়েছি যাহ, তুই পারলে আরো অসংখ্য ছেলের মাথা খেয়ে এমন আরো আরো বাড়ি বানাহ। আই ডুন্ট কেয়ার।

দ্বীপের জোরে জোরে চিল্লানোতে আশে পাশের বিল্ডিং থেকে কিছু মানুষ দেখার চেষ্টা করছে এখানে কি হয়েছে। আর যএই বিল্ডিংয়ের কিছু মানুষ যারা ওদেরকে চিনে তারা বলাবলি করছে. আরে এরা না একে অন্যকে খুব ভালোবাসতো। কি হলো তাদের মধ্যে?

তার মধ্য থেকে অথৈ বললো..
___দ্বীপ আমাকে ভুল বুঝোনা, আমার কথা শুনো। সবাই এসব শুনতেছে।

___ কোনো কথা বলবিনা তুই। আমি তোকে ঘৃণা করি। থাক তুই তোর অন্য বয়ফ্রেন্ডদের নিয়ে। সারা দুনিয়া নিয়ে থাক তুই। শুধু তোকে ছাড়া আমি ভালো থাকবো।

বলেই দ্বীপ চিত্রা হাতে ধরে এখান থেকে পা বাড়ালো। চিত্রা দ্বীপের দিকে হাঁ হয়ে তাকিয়ে আছে।
এই মানুষটাকে নিয়ে তার কতো ভাবনা ছিল, কতো চিন্তা ছিল, কতো প্রশ্ন ছিল। আজ সবকিছুর সমাধান হয়ে গেলো, সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলো সে। তার মধ্যে আর কোনো অস্পষ্টতা নেই, চিত্রার চোখে আজ সবকিছু স্পষ্ট, আর দ্বীপের চোখে চিত্রার জন্য প্রবল থেকে প্রবলতর ভালোবাসা! একজীবন কাটিয়ে দেওয়ার জন্য এর চেয়ে বেশি আর কি লাগে?

(সমাপ্ত)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here