অন্তরালে_তুমি
পর্ব_৪
#প্রত্যাশা
❤
ফ্লাশ ব্যাক_____——-____
—-হ্যালো!! কই তুই .?
—-কই আবার বাসায়
—-তুই এখনো বাসায় ..উফফ আল্লাহ আর কতক্ষন লাগবে তোর
—-ধুরর শাড়ি সামলানোটা একটা প্যারা ..এইদিকে পিন লাগাই তো ঐদিকে খুলে ওই দিকে লাগাই তো আবার অন্য দিকে খুলে ..ভাবছি পুরো অনুষ্ঠানে কিভাবে সামলাবো এটাকে ..
—-ওকে ওকে আমি তোর বাসায় আসছি
—-ওকে তাড়াতাড়ি আয়।
কিছুক্ষন পর কলিং বেল বেজে উঠলো ..
—-আম্মু একটু দেখো না রিমি আসছে বোধ হয়
—-আচ্ছা দেখছি
—-ঐই পেত্নী তুই এখনো শাড়ি নিয়েই পরে আছিস ..
—-হুম কি করবো বল দেখ না পারছি না তো ..
—-দেখি আমার কাছে দে ..
!!!!!
—-নে এবার হয়েছে ..
—-খুলে যাবে নাতো?
—-আজব তো তোর শাড়ি ধরে কি কেউ টানাটানি করবে নাকি যে খুলে যাবে ..
—-না মানে হাটতে গেলে
—-উফফ না খুলবে না এবার তাড়াতাড়ি হিজাব বাধ ..লেইট হয়ে যাচ্ছে তো
—-হুম এক্ষনি বাঁধছি..
হিজাবটা বেঁধেই তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেলাম ভার্সিটির উদ্দেশে ।
—-দোস্ত একটু তাড়াতাড়ি হাট না .
—-আরে না জোরে হাঁটলে শাড়ি খুলে যাবে ..
—-আল্লাহরে কোন দুঃখে যে তোকে শাড়ি পড়তে বলেছিলাম আল্লাহই জানে ..
—–হুম এবার বুঝছো তো কেন আমি শাড়ি পড়তে চাইনি ..
—-আচ্ছা তো চল একটা রিক্সা নিয়ে নেয়
—-না এইতো সামনে ভার্সিটি এইটুকু জায়গা রিক্সা নিয়ে যেতে হয় নাকি .
—-আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে তুই তাড়াতাড়ি হাঁট ..নয়তো আজকের প্রধান অথিতিকে আর আমরা বরণ করতে পারবো না ..
—-ওকে চল .
রিমির সাথে কথা বলে হাটছিলাম হঠাৎ কোথা থেকে একটা গাড়ি খুব স্পিডে আমাদের ক্রস করে গেলো ..
—-হায় খোদা এটা কি করলো ।।আমার শাড়ি.ওই গাড়ি থামান ..থামান বলছি ..
গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে একজন সুদর্শন পুরুষ নেমে এলো ..উম্ম না না এখন ক্রাশ খেলে চলবে না আগে এই বেটার সাথে ঝগড়া করতে হবে..
—-এই মি. চোখে দেখেন না ..নাকি চোখ গুলা গার্লফ্রেন্ডের ব্যাগে রেখে আসছেন ..হুম রাস্তায় মানুষ গুলাকে চোখে লাগে না ..এমন একটা ভাব নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে মনে হচ্ছে গাড়ি না প্ল্যান চালাচ্ছে ..
মি. সুদর্শন এতক্ষন ধরে আমার কথা শুনে চোখের সানগ্লাসটা নাক পর্যন্ত নামিয়ে একবার আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে আবার সেটা চোখে পরে গাড়িতে গিয়ে বসে..
—-এই এটা কি হলো আপনি কি কানে শুনেন না ..এই যে মি. আপনাকে বলছি
ওমা উনি গাড়ি স্টার্ট দিয়ে আমাকে ক্রস করে চলে গেলেন..
—-দেখিছিস রিমি কি অসভ্য ছেলে ..কিভাবে আমাকে ইগনোর করলো ..বেটা শয়তান ..আসলে কি বলতো আমাকে বোধ হয় ভয় পেয়েছে তাই তাড়াতাড়ি কেটে পড়েছে..কি বল ঠিক বলছিতো ..এই রিমি কথা বলছিস না কেন ?
—-যাই বল দোস্ত ছেলেটা যা হট না ..
—-ছি ছি!!তুই তো নারী জাতির কলঙ্ক. লজ্জা করে না মেয়ে হয়ে এভাবে বলিস ..
—-না করে না ..আমি কি তোর মতো নিরামিষ নাকি ..
—-ধুরর চুপ কর তো দেখ শয়তানটা কি করেছে ..আমার শাড়িতে কত কাদা লাগলো ..আমার এবার কান্না পাচ্ছে ..
—-আচ্ছা চুপ কর এই নে পানি আর টিস্যু টা দিয়ে পরিষ্কার কর ..
—-ওই খবিশটাকে আমি দেখে নেবো ..
কিছুক্ষন পর ..
—-তোমাদের এতক্ষণে আসার সময় হলো ..
—-সরি স্যার একটু লেট হয়ে গিয়েছে ..
—-হয়েছে তাড়াতাড়ি ওই ফ্লাওয়ার বুকেট গুলা নাও ..মেইন চিফ চলে এসেছে ..তারতারি স্টেজে গিয়ে বরণ করো..
—-ঠিক আছে স্যার .
ফুল গুলা নিয়ে আমি আর রিমি স্টেজের উপরে গেলাম ..প্রধান অথিতিকে ফুল দেয়ার সময় উনার দিকে তাকিয়ে আমি শকট সাথে রিমি ও ..কোনোরকমে বরণ করে নিচে নেমে এলাম ..
—-রিমি এ তো সেই ..
—-হুম ..তার মানেই উনিই আজকের প্রধান অথিতি ..
—-উফফ আর কি মানুষ পাইলো না ..এই শয়তানকেই প্রধান অথিতি বানাতে হলো ..
—-আচ্ছা দোস্ত তোকে কি স্যার চিনে নাই ..
—-মনে হয় নাতো ..দেখলি না কি ভাব নিয়ে বুকেটটা নিলো যেন আমাকে দেখেই নাই .
.
—-ভালো হয়েছে চিনে নাই ..তুই যা কথা শুনিয়েছিলি তখন এখন যদি উনি রেগে প্রিন্সিপাল স্যারকে বিচার দিতো তখন কি হতো ভেবে দেখেছিস ..
—-কি হতো ..তখন কি আমার কোনো দোষ ছিল নাকি ..উনারই সব দোষ..
—-আচ্ছা হয়েছে হয়েছে এবার চল ঐদিকে গিয়ে বসি।
—-হুম চল ..
এখন তোমাদের সামনে শুভেচ্ছা বক্তব্য নিয়ে আসছেন আমাদের আজকের ফাংশনের প্রধান অথিতি মি. আদিত্য চৌধুরী ..
—-বাহ্ কি সুন্দর নাম আদিত্য!!
—-রিমি চুপ কর ..
—-ওকে চুপ ..
আদিত্য চৌধুরী মাইকের সামনে বক্তব্য দিচ্ছে কিছু কথা বুঝছি তো কিছু বুঝছি না ..বুঝবো কি করে উনি তো ইংলিশ এ বক্তব্য দিচ্ছে..হু ঢং বাঙালি বাংলায় বললেই তো পারে ঢং করে ইংলিশ বলতে আসছে ..
উফফ প্রায় ৩০. মি .উনি ইংলিশ এ বক বক করে উনার সিটে গিয়ে বসলেন ..
—-আল্লাহ ফাইনালি উনার ইংলিশ মারা শেষ হলো ..
—-উফফ দোস্ত দেখেছিস কি সুন্দর ইংলিশ বলে আমি তো পুরা ফিদা
..
আশপাশের মেয়ে গুলা ও দেখি উনাকে নিয়ে গুণগানে ব্যাস্ত ..হু সুন্দর পোলা দেখলেই কি পাগল হয়ে যেতে হয় নাকি .
—-আজব তো তুই এমন করছিস কেন ..
—-এমনি আমার মনে চাচ্ছে ..এই উঠ ..
—-কোথায় যাবি?
—-কেন্টিনে.
—-কেন্টিনে কেন..?
—-ওই মানুষ কেন্টিনে কেন যায় ..
—-খেতে
—-তো আমি কি নাচতে যাবো নাকি আমিও খেতে যাবো ..চল আমার সাথে কফি খেয়ে আসি ..
—-আচ্ছা চল ..
—-মনে হচ্ছে মন খারাপ করে ফেললি ..
—-না চল ..
কেন্টিনে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছি আর স্টেজের ফাংশন দেখছি ..হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখি জিসান আমার দিকে তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসছে ..উফফ একে দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায় ..আমাদের ক্লাস মেট সেই প্রথম দিন থেকে জ্বালিয়ে যাচ্ছে ..
—-জান তোমাকে যা লাগছে না .
.
—-ওই কে তোর জান ?
—-কেন তুমি ..
—-তোকে যে এতো অপমান করি তোর কি গায়ে লাগে না
—-না জান ঐসব তোমার ভালবাসা আমি বুঝি
—-দেখ জিসান লিমিট ক্রস করবি না নয়তো খারাব হয়ে যাবে ..
—-কি করবে জান ।। আম আমিও দেখতে চাই
—-দাড়া! দেখাচ্ছি ..
আমি রেগে আমার হাতের কফিটা ওর দিকে ছুড়ে মারি আর ও সাথে সাথে সরে যায় যার ফলে ওই দিক দিয়ে আদিত্য স্যার আর প্রিন্সিপাল স্যার ক্রস করার ফলে কফিটা গিয়ে পড়লো আদিত্য স্যাররে গায়ে ..আদিত্য স্যার চোখের সানগ্লাসটা খুলে আমার দিকে তাকায়..বাপরে এমন ভাবে তাকিয়ে আছেন মনে হচ্ছে আমাকে আস্ত গিলে ফেলবে ..আল্লাহ রুপা তু তো আজ গেয়া।।
চলবে ..
(আল্লাহকে ভয় করো.পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ো)