এক_চিলতে_রোদ,Part_10,11

0
1248

#এক_চিলতে_রোদ,Part_10,11
#Writer_Nondini_Nila
#Part_10

দেখতে দেখতে আমার সব গুলো পরিক্ষা শেষ হলো মোট আঠারো দিন লাগলো শেষ হতো মাঝে কঠিন পরীক্ষার আগে বন্ধ ছিলো সাথে শুক্রবার ও পরেছে দুইটা। সমস্ত ঝড় ঝাপটার মধ্যে টেস্ট পরিক্ষা শেষ করলাম এবার স্কুল অফ। এমনিতেও খুব একটা স্কুলে যেতে পারতাম না এখন তাও নেই। শুনেছি পনেরো দিন পর এক্সটা ক্লাস হবে এস এসে সির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কিন্তু তাতে বাড়তি খরচ লাগবে তাই সেটার আশা বাদ দিলাম। চাচী কিছু তেই আমাকে বাড়তি খরচ দিবে না আরো বললে ঝামেলা হবে।তাই ওইসব এক পাশে ফেলে রাখলাম।
পরিক্ষা শেষ হয়েছে চারদিন হলো আজকে শুক্রবার বার।সবাই বাড়িতে আজ সকালে উঠেই সবাইকে চা কফি দিয়ে এলাম।ইলা আপু আমাকে দিলো এক ধমক তার রুমে নক করেছি বলে।
“এই তুমি এই সাতসকালে আমার ঘুম নষ্ট করলি কেন?”
“আপু তোমার দুধ চা।”
“দেখছিস না আমি ঘুমিয়ে ছিলাম তাহলে কেন আনলি অসহ্য।”
আপু বকছে আমি মাথা নিচু করে আছি বিরক্ত হয়ে চায়ের কাপ রেখে আসতে বললো।
আমি ট্রি টেবিলের উপর রেখেই তারাতাড়ি চলে এলাম এটা আজ নতুন না তাই আমার অতটাও খারাপ লাগে নি। আপু বলেছে তার চা যেন সকালে দেয় বন্ধের দিন ও তাও কারণ না হলে নাকি তার মাথা ব্যাথা করে কিন্তু তবুও প্রতিবার ই এই ধমক আমার শুনতে হয়।
ইমা আপু খাবে না জানি তাই তাকে না দিয়ে চাচীকে দিয়ে এলাম সাথে চাচার টাও। এবার এলায় ইহান ভাইয়ার রুমে কফি নিয়ে সবাই চা খায় শুধু ভাইয়া বাদে।
ভাইয়ার কফি নিয়ে গেলাম ভাইয়া ও উঠে নি বিছানায় শুয়ে আছে। খালি গায়ে বুকে ভর দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। পিঠ দেখা যাচ্ছে ফর্সা পিঠ আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। কাঁপতে কাঁপতে ভাইয়ার কাছে গিয়ে ডাক দিলাম না হলে কফি ঠান্ডা হয়ে যাবে তাই।
লজ্জায় কাঁচুমাচু হয়ে ভাইয়ার ডাকছি ভাইয়া শেষমেষ উঠলো। বিছানায় বসে পরলো ভাইয়ার সিল্ক চুল গুলো কেমন এলোমেলো হয়ে কপালে ছড়িয়ে আছে আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার মুখের দিকে ভাইয়া ঘুম ঘুম চোখে আমার দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো কফি নেওয়ার জন্য। আমি কফির মগ এগিয়ে দিলাম ভাইয়া নিয়েই চুমুক দিলো সাথে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আমি ভাইয়ার দিকে এক বার তাকিয়ে পেছনে ঘুরে চলে এলাম।
বিকেলে শুনলাম বাড়িতে মেহমান আসবে। ইমা আপু কে দেখতে সেই তোরজোর শুরু হলো। দুপুর থেকে। বিকেলে তারা এলো দুজন পুরুষ একজন মহিলা আর একটা ইয়াং ছেলে যাকে দেখেই চিনে ফেললাম এ তো ইমা আপুর ফ্রেন্ড। আপুর সাথে আগেও দেখা করতে এসেছে। তারাই এসেছে ইমা আপু মেরুন রঙের সুন্দর একটা শাড়ি পড়েছে আপু দেখতে এমনিতেই সুন্দর তার উপর আজকে সেজেছে খুব সুন্দর লাগছে।আমি আপুকে গিয়ে বললাম আপু তোমার সেই ফ্রেন্ড এসেছে। আপু শুনে শুধু লজ্জায় লাল নীল বেগুনী হতে লাগলো।
তারা এসে হালকা খাবার খেলো তারপর আপুকে নেওয়া হলো আমি খুশি মনে তাকিয়ে আছি ছেলেটার নাম শুনেছিলাম রিফাত। আপুর সাথে খুব মানাবে আপুকে রিফাত ভাইয়ার পাশে বসানো হলো।আমি দূরে থেকে কথা শুনতে পারলাম না। কিন্তু তারা যে আপুকে পছন্দ করেছে সিউর কারণ রিফাত ভাইয়ার মা আপুকে আংটি আর গলায় চেন পরিয়ে দিয়ে গেল। তারপর আপু কে নিয়ে আসা হলো তারা আর কিছু ক্ষন কথা বলে চলে গেল।
শুনলাম বিয়ে ঠিক হয়েছে। আপুর ও অনেক খুশি তারা এতো দিন চুটিয়ে প্রেম করেছে। বিয়ে তারাতাড়িই ঠিক হয়েছে এক মাস পর।
রাতে আপুর পাশে বসে আমি রিফাত ভাইয়ার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছি আপু লজ্জা লাল নীল হয়ে সব বলল,
কলেজে থেকে তাদের রিলেশন শুরু হয় তারপর একসাথে মেডিকেলে পরে। তাদের ভালোবাসার সাত বছর পূর্ন হয়েছে বাড়িতে আপু এক সপ্তাহ আগে জানিয়ে ছে কিন্তু কি অদ্ভুত আমি কিছু জানতে পারিনি‌। তাও মনখারাপ করলাম না যাই হোক আপুর তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে এর থেকে ভালো কি হতে পারে।
আপুর রুমে দুই রুম পরে ইহান ভাইয়ের আমি সেদিকে তাকিয়ে কি মনে করে যেন সেদিকে পা বাড়ালাম।
একটা ইলা আপুর রুমে সেটা ভেতরে থেকে লক করা আরেকটা খালি রুম। আমি ধীর পায়ে রুমের কাছে আসতেই থমকে গেলাম। কান খাড়া করে দরজার কাছে দাঁড়ালাম। খুব স্লো ভয়েজ এ গান শুনা যাচ্ছে। ভাইয়া গান গাইছে আমি দরজা ফাঁকা করে ভিতরে উঁকি দিলাম কেউ নাই কিন্তু গিটারের আওয়াজ আসছে ভাইয়া কি বারান্দায় দাঁড়িয়ে গান গাইছে নাকি হবে হয়তো।
কি মিষ্টি কন্ঠস্বর ভাইয়ার এই নাও আমি দুবার গান শুনলাম কিন্তু আফসোস এটাও হিন্দি গান। তবুও শুনছি মুগ্ধ হয়ে কি অপূর্ব কন্ঠ মনটা নিমিষেই আনন্দে ভরিয়ে দেয়।আমি দরজার কাছে থেকে আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকে পরলাম আমার বুকের ভেতরে তোলপাড় করছে। হার্টবিট বেড়ে গেছে দ্রুত গতিতে তবুও এগিয়ে গেলাম বারান্দায় দরজার দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে গান শুনছি।
গান শেষ হতেই থমকে গেলাম আমি ভেতরে চলে এসেছি হায় হায় ভাইয়া দেখলে আমাকে কি মনে করবে? তারাতাড়ি পেছনে ঘুরে ছুটে চলে এলাম বাইরে এসে বুকে হাত চেপে ধরে হাপাচ্ছি।

দেখতে দেখতে আরো এক সপ্তাহ চলে গেল।আজকেও শুক্রবার সকালেই জানতে পেরেছি আজ সবাই ঘুরতে যাবে আমার স্পেশাল গেস্ট রিফাত ভাইয়া। বিয়ের সময় ঘনিয়ে আসতে তাই তার আগে সবাই মিলে ছোট একটা পিকনিক করবে।
এখানে বিবাহিত কেউ যাবে না যাবে ইলা আপু, ইমা আপু , ইহান ভাই, রিফাত ভাইয়ার ও তার দুই ফ্রেন্ড।
ইমা আপুর এক মেয়ে ফ্রেন্ড ও যাবে মোট আট জন। এখানে আবার ইমা আপু আমাকে ও রোগ করেছে সেটা শুনেই আমি হতভম্ব চাচী আমাকে কিছুতেই যেতে দেবে না আমি সিউর।
তাই হলো চাচী শুনেই চেঁচামেচি করতে লাগলো কথাটা তুলেছিলো সকালের খাবার টেবিলে আর শুরু হলো ঝামেলা।আমি চুপ করে রান্নাঘরে থেকে দেখছি আপু আর চাচীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছে বিষয়টি আমার একটু ও ভালো লাগছে না আমার জন্য ঝামেলা হচ্ছে।
“মা প্লিজ ঝামেলা করো না এটা শুধু আমার সিদ্ধান্ত না রিফাত ও চায় ও যাতে যায় আমার সাথে।”
‘কেন ও এমন চায় কেন?
“কারণ ও জানে ঊষা আমাদের বোন কাজের লোক না। প্লিজ নিজেকে জামাইয়ের কাজে ছোট করো না আর ঊষা কখনো কোথাও যায় এইভার না হয় গেল। বেশিদিনের ব্যাপার না তো মাত্র তিন দিন একদিন যাব দুইদিন মাঝে থাক দেন চলে আসবো প্লিজ।”
চাচী খাবার ছেড়েই উঠে গেল রেগে গমগম করতে করতে রাজি হলো না।
খাবার শেষ করে ইমা আপু আমাকে নিয়ে শপিং মলে এলো আমাকে দুইটা ড্রেস কিনে দিলো একটা লং ফ্রক কালো সাদা মিক্স কালো ওরনা সাথে। আরেকটা কামিজ আমি নিব না এতো বললাম শুনলো না এসব নিয়ে তাদের সাথে বেড়াতে যেতে হবে। শুনে আমি চমকে উঠলাম।
“আপু কি বলছো চাচি তো রাজি হয়নি।”
“সেসব তোকে ভাবতে হবে না আমি সব ম্যানেজ করবো।
“কিন্তু আপু।
“কোন কথা না আমি তোর বড় তাই আমার কথায় প্রেক্ষিতে কথা বলবি না।”
আপুর কড়া কথা শুনে আর কিছু বললাম না।

#চলবে

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_11

গাড়িতে বসে আছি। আমার পাশে বসেছে ইমা আপু আর পাশে রিফাত ভাইয়ার গাড়ির সামনে বসেছে ইহান ভাইয়ার ও রিফাত ভাইয়ার এক ফ্রেন্ড মে ড্রাইভ করবে। আমাদের পেছনের সিটে বসেছে ইলা আপু ইমা আপুর ফ্রেন্ড ও রিফাত ভাইয়ার আরেক ফ্রেন্ড।
মোট আট জন নিয়ে আমরা গাড়ি ফুল করলাম। পেছনে দুই সিটের প্রাইভেট কার এটা ভাড়া করা হয়েছে। চাচীদের মাইক্রো গাড়ি আছে একটা সেটায় পাঁচ জন যাওয়া যেত সবার হতো না এজন্য এটা আনা হয়েছে। নিজেরাই ড্রাইভ করতে পারে তাই ড্রাইভার আনে নি।
আমি জানালার পাশে বসেছি না হলে আবার বমি হবে গাড়িতে বেশি থাকার অভ্যাস নাই।
আপুর কিনে দেওয়া সাদা কালো মিক্সড করা লং ফ্রক পরেছি জামাটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ওরনা গলায় পেঁচিয়ে রেখেছি যেটা আপু করে দিয়েছে। নীল চুড়ি পরেছি দুই হাত ভর্তি করে চুড়ি পরতে আমি খুব ভালোবাসি। কোথাও কখনো অনুষ্ঠানে গেলে আমি ওতো সাজগোজ করি না চুড়ি পরলেই হয়।
নীল চুড়ি কিনেছিলাম অনেকদিন আগে পরে আপু লাল কিনে দিয়েছিলো আজকে ড্রেসের সাথে ম্যাচ হয়নি তবুও পরেছে। নাহলে আমার খালি খালি লাগতো‌।
চুল কপালের কাছে বিনির মতো করে পেছন টেনে নিয়েছি আর পেছনে খোলা।আমার চুল খুব বড় না আবার ছোটও না কোমর পর্যন্ত আছে। সাজগোজ বলতে পাউডার দিয়েছি আর হাল্কা লিপস্টিক ঠোটে।
ইমা আপুকে সুন্দর লাগছে শাড়ি পড়ে এসেছে আপু । লাল রঙ রিফাত ভাইয়ার নাকি পছন্দ।

গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে।
অনেক কষ্টে চাচি কে রাজি করিয়েছে তার কেডিট হলো ইহান ভাই। কারো কথাই চাচী রাজি হচ্ছিল না আমি তো যাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। তখন ইহান ভাইয়ার গিয়ে চাচী কে বলল,
“আম্মু তুমি যদি ঊষাকে যেতে না দাও আমিও যাব না।”
“ওই ফকিন্নির বাচ্চার জন্য তুই কেন যাবি না।”
“আম্মু প্লিজ বাজে ভাষা ইউজ করো না।আর ঊষা কিন্তু আমাদের রক্ত। আর কাকার অবস্থা কিন্তু আমাকে থেকে ও ভালো ছিলো। ওকে তুমি অনেক কিছু করাও তাতে কেউ তোমায় বাধা দেয়না আর না ঊষা না করে তাহলে একটু আনন্দ কেন তুমি ওকে দিতে চাও না।ও তো তোমার কোন কথায় না করে না।”
“তুই নিজের মার বিরুদ্ধে গিয়ে ওই মেয়ের হয়ে কথা বলছিস?
“আমি কারো হয়ে কথা বলছি না। আমার যেটা ঠিক মনে হচ্ছে আমি তাই বলছি।
“আমাকে ভুল।
“তুমি যেতে দিবে কিনা বলো।
“আচ্ছা! নিয়ে যা।

চাচি ভাইয়ার কথা মানবে ভাবতেই পারিনি। তারপর বের হয়েছি।কথাটা ভাবতেই আমার সারা শরীর শিহরণ খেলে গেল।‌আমি চোখ জানালার বাইরে থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ইহান ভাইয়ার দিকে তাকালাম।ভাইয়া রিহান ভাইয়ের সাথে কথা বলছে তিনি রিফাত ভাইয়ার ফ্রেন্ড। আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি আজকে ভাইয়াকে ও খুব সুন্দর লাগছে। ভাইয়ার নীল শার্ট পরেছে ক্রিম প্যান্ট বুকের কাছে সানগ্লাস। ইশ কি সুন্দর হাসি ভাইয়ার ‌হাসলেই গালে টোল পড়ে। এক সাইট দেখা যাচ্ছে আমি ভাইয়ার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছি। তখনই ভাইয়ার আমার দিকে তাকালো আচমকা ভাইয়ার তাকানো দেখে আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলি‌।
একটু পর আবার তাকিয়ে দেখি ভাইয়ার সামনে তাকিয়ে আছে।
আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি। ঠান্ডা বাতাস ব‌ইছে চোখ বন্ধ করে বাতাস অনুভব করছি। কতোদিন পর বেরাতে বের হলো মনটা খুশিতে নেচে উঠছে। আমরা সিলেট যাচ্ছি আরেকটা কথা শুনেই চমকালাম আমরা এক সপ্তাহের জন্য যাচ্ছি বাসায় তিন বলে এসেছে সব মিথ্যে না হলে নাকি কেউ আসতে দিতো না।
আমি বড় বড় চোখ করে সবার দিকে তাকিয়ে ছিলাম তখন।
ঊষা কেমন লাগছে তোর।
আমি হাসি মুখ করে বললাম, খুব ভালো আপু।
আমি কথা বলতে বলতে সামনে তাকাতেই দেখি ইহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
এক দৃষ্টিতে ভাইয়ার তাকানো দেখে আমি নড়েচড়ে বসলাম।
এক ঘন্টার মধ্যে রাত নেমে এলো। আমার পাঁচটার বের হয়েছিলাম। তো রাত নামতে সময় লাগলো না রাত বড় জানি করে যেতে হবে। দুইঘন্টা যেতেই রিহান গাড়ি থামিয়ে ফেলল সে আর ড্রাইভ করতে পারবে না তাই ইহান ভাই ড্রাইভ করতে লাগলো। এবার ভাইয়া আমার সামনে এখন সোজা সোজা।
রাত হ‌ওয়ায় এখন বাতাস বেশি হচ্ছে এজন্য জানালা অফ করে দিলো।
আপু জানালা খুলতে বলো না প্লিজ।
আমার কথা শুনেই সামনে থেকে ইহান ভাইয়া বলল,, না জানালা খুলা যাবে না এখন ঠান্ডা বাতাস আসছে অসুস্থ হবি।
কিন্তু আমার তো খারাপ লাগছে আমি জানালা না খুললে থাকতে পারবো না আমার কিছু হবে না খুলুন না।
ইম্পসিবল।
আমি গোমড়া মুখে বসে আছি ভাইয়া খুললো না দশ মিনিট যেতেই জানালা খুলে দিলো আমি অবাক হয়ে ঘাড় বাঁকিয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
ভাইয়ার ড্রাইভ করতে করতে বললো,, বেশিক্ষণের জন্য না কিছু ক্ষন থাকবে‌ খোলা।
আমি খুশি হয়ে বললাম, থ্যাংকু ভাইয়া।

ভাইয়া ও হাসলো আমি নিজের জায়গায় বসে পরলাম। মুখে আমার হাসি অন্ধকারের রাস্তায় দিকে তাকিয়ে আছি গাড়ি শো শো শব্দ করে চলে যাচ্ছে জায়গায় জায়গায় মৃদু আলোর রেখা পেছনে ইলা আপুর কথার আওয়াজ পাচ্ছি পাশে সবাই কথা বলছে আমি একাই বাইরে অন্ধকার রাস্তা দেখছি ঠান্ডা বাতাসে শরীর কাঁটা দিয়ে উঠছে। শীত লাগছে তবুও ভালো লাগছে।
আরো একঘন্টা পেরিয়ে গেল তখন গাড়ি থামিয়ে ফেলল ভাইয়া।
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি সবাই নেমে যাচ্ছে আমরা কি এতো তারাতাড়ি চলে এসেছি সিলেট এতো কাছে।
আপু আমরা এতো তারাতাড়ি চলে এসেছি।
না তো।
তাহলে গাড়ি থামলো কেন?
আরে বোকা খাবি না। রেস্টুরেন্টে এ যাব এখন ওই যে চল।
সবাই নেমে গেল আমিও নামলাম।
খাবার টেবিলে আমি আর ভাইয়ার পাশা বসলাম। আমি একটু পর পর ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি।
খাবার চলে এলো সবাই খাবার খেয়ে আস্তে গেলে আমার বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলো ইমা আপুকে বলবো তার উপায় নেয় সে তো চলে গেছে।এখন আমি আর ইহান ভাইয়া আছি শুধু আমার খেতে লেট হয়েছে আর ভাইয়ার টাকা দিতে গেছে। আমি কাচুমাচু মুখ করে দাঁড়িয়ে আছি ওয়াশরুম খুঁজছি বুঝতে পারছি না। তখন ভাইয়ার এসে আমাকে এমন করে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এসে আমার সামনে দাড়িয়ে জিগ্গেস করলো ভ্রু কুঁচকে,
কি হলো তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
আমি চমকে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।
কি হলো সবাই চলে গেছে তুই এখানে কেন?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি।
কথা বলছিস না কেন? প্রবলেম কি?
আমি আমতা আমতা করে বললাম, ওয়াশরুমে যাওয়া লাগতো।
ভাইয়া আমার কথা শুনে বলল, এতো সময় নিলি কেন চল দেখাচ্ছি।
আমি ভাইয়ার পেছনে এলাম।

রেস্টুরেন্টে থেকে বেরিয়ে হাঁটতে লাগলাম গাড়ি একটু দূরে থামানো হয়েছে। তাই গাড়ি পর্যন্ত হাঁটতে লাগলাম।
তোর কি শীত করছে।
ভাইয়ার কথা শুনে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
না তো বাতাসে একটু একটু।
আচ্ছা চল।
আমরা রোডের ডান পাশে গাড়ি ওপরপাশে বাম পাশে। তাই রোড পার হতে হবে। গাড়ি আসছে আমরা দাড়িয়ে আছি হুট করে ভাইয়া আমার বাম হাত শক্ত করে ধরে নিলো নিজের হাতের মুঠোয়। ভাইয়ার স্পর্শ পেয়ে আমি কেঁপে উঠলাম।
ভাইয়ার আমাকে নিয়ে গাড়ির মাঝেই পার ড়য়ে গেল আমি ভাইয়ার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলাম।
গাড়ির কাছে এসে হাত ছেড়ে দিলো।
গাড়ির কাছে এসেই শকড রিফাত ভাইয়া ড্রাইভিং সিটে আর ইমা আপু তার পাশে পেছনের সিটে জানালায় পাশে রিহান ভাইয়া বসে আছে।
ইহান ভাইয়া বলল, এসব কি আমরা কোথায় বসবো?
এখানে ইমা আপু দুই সিট দেখিয়ে দিল।
তোরা ওখানে কেন?
আমার এখন এখানেই থাকবো তুই তারাতাড়ি উঠে বসে জানালার কাছে ঊষাকে বসতে দে।
হোয়াট আমি ওই ভেতরে বসবো না। তোরা পেছনে আয় আমাকে আর রিহানকে সামনে যেতে দে।
কিন্তু ইহান ভাইয়ের কথা যেন কানেই নিলো না রেগে ভাইয়া আমার দিকে তাকালো আমি ঢোক গিলে বললাম,
আমি কি করবো?
তুই ভেতরে বসো।
ভেতরে বসার কথা শুনে চমকালাম রিহান ভাইয়ার কাছ ঘেঁষে বসতে আমার আন‌ইজি ফিল হতে লাগলো।
কি হলো যা?
ভাইয়া আমার তো বমি হয়। ভেতরে বসলে তো গাড়ি নষ্ট হবে‌।
ভাইয়া রাগে গজগজ করতে করতে ভেতরে ঢুকে গেল।আমিও ঢুকলাম ভাইয়ার গায়ের সাথে লেগে গেলাম ইশ লজ্জা লাগছে আমার। ভাইয়ার শরীর থেকে একটা মিষ্টি সুগন্ধি কানে এলো। আমি জানালার সাথে লেপ্টে গেলাম আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here