এক_চিলতে_রোদ,Part_14,15

0
1184

#এক_চিলতে_রোদ,Part_14,15
#Writer_Nondini_Nila
#Part_14

বাসায় আসার পর থেকে দিয়া আপু মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে বসে আছে। ওই সময়ের কথাটার জন্য তিনি একটু সন্তুষ্ট না‌। আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছি।
তারপর এগিয়ে গিয়ে বললাম,,
আপু আপনার কি মন খারাপ?
উনি আমার কথা শুনে বিরক্ত হয়ে তাকালো কারন কথা বলার সময় আমি ছিলাম।
দেখলে না ইহান আমাকে কিভাবে বড় আপু বলল। তার পর আমার মন খারাপ থাকবে না তো কি ভালো থাকবে। তুমিই বলো আমাকে দেখে কি ওর থেকে বড় লাগে।
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি কি বলবো ভাবছি? মনে মনে বলছি দেখতেই তাই লাগুক আপনি তো বড়। তাই বড়‌ই লাগে কিন্তু মুখে অন্য কথা বললাম,
না না আপু আপনাকে একদম বাচ্চা লাগে মনে হয় আপনি আমার ছোট হবেন।
আমার কথা শুনে আপু হাঁ করে তাকালো অবুঝ মুখ করে বলল,
এতো ছোট লাগে?
চরম অবাক হয়ে বলল।
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। আপু হাঁ করে তাকায় র‌ইলো আমি কোন মতে হাসে চেপে লাফিয়ে বেরিয়ে এলাম। তখন ঠাস করে ইহান ভাইয়ার সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে নিলাম কিন্তু ভাগ্য ভালো এবার ও ভাইয়া আমাকে ধরছে। আমার ডান হাত ধরে টেনে সোজা করে ধমক সুরে বলল,
এতো লাফালাফি করিস কেন এখন‌ই তো যেতি পরে।
ভাইয়ার কড়া গলায় কথা শুনে চুপ করে মাথা নিচু করে আছি।
আচ্ছা মন খারাপ করতে হবে না। আমার একটা কাজ কর‌।
আমি মাথা উঁচু করে বললাম কি?
আমার জন্য কফি করতে পারবি?
আমি কিছু একটা ভেবে আচ্ছা বলতেই ভাইয়া কফি নিয়ে আসতে বলে চলে গেল।
আমি বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নিলাম তারপর নিচে এসে রান্না ঘরে চলে গেলাম। একটা কাজের লোক আছে নাম ঝুমা খুব ভালো। তার সাথে আমার সাক্ষাত হয়েছে তার থেকে রান্না ঘরের সব চিনে নিয়েছি। তাই কফা করতে টাইম লাগলো না‌। ইমা আপু রিফাত ভাইয়ার রুমে গেছে। সবাই যার যার আছে রাতে আর কোথায় বা থাকবে।
ভাইয়ার রুমে এসে দেখি বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে আছে। হাতে ফোন। আমি না করতেই উঁচু গলায় ভেতরে আসতে বললো।
আপনার চা ভাইয়া।
ভাইয়া আমার হাত থেকে কফি নিয়ে উঠে বসলো।
আমি চলে আসতে গেলে পেছনে ডাকলো,
ঊষা……
ভাইয়ার ডাক শুনে থমকে দাঁড়িয়ে পরলাম।
তারপর পেছন ঘুরে বলল,
জি আর কিছু লাগবে?
ভাইয়ার আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল না যা তুই।
আমি আচ্ছা বলেই ছুটে চলে এলাম। বাইরে এসে হাঁপাতে লাগলাম ভাইয়ার কাছাকাছি থাকলে আমার এমন কেন লাগে যেন দম বন্ধ হয়ে মারা যাব। হার্টবিট এতো জোরে জোরে লাফায় যেন বেরিয়ে আসবে।
হাত পা কাঁপে কেন এমন হয় কেন?
আমি লজ্জায় লাল নীল হতে হতে আসছি তখন কেউ বলল,
হাই ঊষা কোথায় গিয়েছিলে?
মাথা উঁচু করে দেখি আমার সামনে রিহান ভাই দাঁড়িয়ে।
আমি হকচকিয়ে গেলাম। উনার হাবভাব আমার ভালো লাগে নে কেন করে তাকায় থাকে।
আমি জরোসরো হয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,,
ভাইয়াকে কফি দিতে গেছিলাম।
উনি এগিয়ে এসে মুখ গোমড়া করে বলল,
তুই কেন বাসায় ঝুমা নাই।
আমি বললাম, আছে কিন্তু আমিই দিয়েছি সমস্যা নাই।
উনি বললেন, সমস্যা আছে তুমি কেন এসব করবে
কাজের লোক থাকতে আর ইহান বা কেমন তোমাকে কেন এসব করতে বলেছে।
আমি উনার ব্যস্ত হ‌ওয়া কন্ঠ শুনে হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। উনি এমন করছে কেন আমার মা খুশি তাই করুম উনার কি?
বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি।
আমার অবাক হওয়া দেখে থেমে বলল,,
আসলে তুমি কাজ করবে কেন তাই বলেছে ডোন্ট মাইন্ড।
আমি আস্তে বললাম,
কতো কাজ করি এটা তো তার কাছে কিছুই না।
উনি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,কি বললে?
আমি কিছু না বলে কেটে পরলাম।

পরদিন আমার গেলাম রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। রাতারগুল চৌরঙ্গী ঘাট থেকে সোয়াম্প ফরেস্ট ঘুরে দেখতে লাগে ৭৫০ টাকা নৌকা ভাড়া। উত্তরে গোয়াইন নদী দক্ষিণে বিশাল হাওর। মাঝখানে জলার বন রাতারগুল যা বাংলাদেশের অ্যামাজন নামে পরিচিত।
আমি মুগ্ধ হয়ে এই প্রকৃতি দেখছি কি অপূর্ব সুন্দর এই স্থান। চারদিকে ঘন নির্জনতা। আর ঝি ঝি পোকার ডাক ইশ ।চোখ ধাঁধানো সুন্দর আমার চোখে মুখে অসম্ভব মুগ্ধতা বিরাজ করছে। মনে হচ্ছে প্রকৃতি যেন তার মায়াবী রুপের সবটাই এখানেই ঠেলে দিয়েছে এখানে। আমার পাশে ইহান ভাইয়ার দাঁড়িয়ে ছিলো আমি উজ্জ্বল মুখ করে তাকিয়ে বলল,
কতো সুন্দর নিস্তব্ধতা।
দুটো নৌকা নেওয়া হলো একটায় আমি ইমা আপু ইলা আপু আর রিফাত ভাই।
আরেকটায় দিয়া ইহান ভাই রিহান ভাই ও রাজিব।
এটা দেখেই ইমা আপু নেমে পরলো আর ইহান কে আমাদের টায় দিয়ে নিজে রিফাত ভাইয়াকে নিয়ে চলে গেল ওইটায়।
আমি জানি কেন করেছে ওই দিয়ার আশেপাশে ভাইকে রাখতে চায়না আপু তাই।দিয়া মুখটা ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে র‌ইলো‌।
রিহান ও চলে এলো আমি অস্থি নিয়ে আছি কিন্তু ভাইয়ার জন্য স্বস্তি বোধ করলাম ভাইয়া আমার পাশে দাঁড়ালো।
এটা দেখে রিহান কটমট করে তাকালো।
নৌকা চলতে থাকে সবাই মুগ্ধ চোখে দেখছে সব কিছু কি অপূর্ব এই রুপ।
একটা দুইটা কথা বলছে ইলা আপু ছবি তুলছে। ইমা আপু রাও আর দিয়া মলিন করে তাকায় আছে আমাদের নৌকায়।
গাড়ি ঘাটে এসে থামলো একটা। আমি ইহান ভাইয়ের দিকে তাকালাম।ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
একটু হাঁটতে হবে চল।
কোথায় যাচ্ছি।
গেলেই দেখতি পাবি।
সবাই হাঁটতে লাগলাম মাটির উপর দিয়ে। কিন্তু ইলা আপু করলো ঝামেলা হাঁটাহাঁটি পছন্দ না আপুর তাই বিরবির করছে।
হাঁটতেছি সবাই মিলে হঠাৎ আমার মনে হলো কিছু আমার পায়ে কাপড়ে ধরছে।আমি মাথা নিচু করে পায়ের দিকে তাকাতেই এক চিৎকার করে উঠলাম নিজের সবশক্তি দিয়ে।
কি যেন আমার পা কামড়ে ধরে আছে ভয়ে আমি ঘেমে গেলাম মূহুর্তে। আমার হাত পা কাঁপছে সবাই আমার চিৎকার শুনে আমার দিকে তাকালো।
দিয়া আপু চিৎকার করে বলল,
ও মাগো জোঁক।
আমি তার ভয় পাওয়া দেখে আরো ভয়ে মিইয়ে গেলাম কেঁদে উঠলাম।ইহান ভাইয়া আগে ছিলো দৌড়ে এসে আমার কাছে দাড়ালো আর বললো,
কি হয়েছে কাঁদছিস কেন?
আমি দুই হাতে ভাইয়ার বাহু খামচে ধরে ঠোঁট কামড়ে ধরে কাঁদছি। ইমা আপু বলল ওকে জোকে ধরেছে পায়ে।
কথাটা শুনে ভাইয়া আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে নিচে বসে পরলো আর আমাকে কান্না করতে মানা করলো।
আমি শুনছি না। ভাইয়ার টেনে জোঁক পা থেকে নিয়ে ফেলে দিলো পা দিয়ে গলগল করে রক্ত পরছে নিজের পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে পায়ে বেঁধে দিলো।
ইমা আপু এসে বলল,
কাদিস না এটা সামান্য ব্যাপার এখানে এসব থাকেই।
আমি কাঁদছি না ফুপাচ্ছি এখনো ভাইয়ার বাম হাত শক্ত করে ধরে আছি।
ইলা আপু মুখ বেঁকিয়ে বলল,
ঢং না করে চল তো তোর জন্য এখানেই থাকতে হবে দেখছি।
সবাই হাঁটতে লাগলো আমি ভাইয়ার হাত ছেড়ে দিলাম যদি ভাইয়া বিরক্ত ড়য় তাই। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে ভাইয়া আমার হাত শক্ত করে ধরে হাঁটতে লাগলো।

#চলবে

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_15

পরদিন আমরা এলাম পান্থমাই ঝর্না। বাংলাদেশ ও ভারতের মেঘালয় সিমান্তের কোল ঘেষে অসম্ভব সুন্দর একটি গ্ৰাম তার নাম পান্থমাই। আর এই পান্থমা‌ই এর মূল আকর্ষণ হচ্ছে পান্থমাই ঝর্না। সম্ভবত এই গ্ৰামটি হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্ৰাম। এক পাশে ভারতের মেঘালয় এ উঁচু উঁচু পাহাড় আর অন্য পাশে বাংলার মায়াময় ছায়াময় শান্ত সবুজ এই পান্থমাই।
এটি ভারতের সীমানায় পরলেও খুব কাছ থেকে দেখা যায়। ছবি তোলা ভিডিও এসব তো লেগেই আছে। সবাই মুগ্ধ নয়নে সব দেখলাম।
সেখানে থেকে আমরা জাফলং জিরো পয়েন্ট।
ওপারে সারি সারি পাহাড় এপারে সচ্ছ জলের স্নিগ্ধ নদী। পাহাড়ের বুকে অবিরাম ভাবে ভয়ে চলেছে ঝর্না। নদীর বুকে স্তরে স্তরে নানা রঙের নুরি পাথর।
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে দেখছি। হাঁটু ভাঁজ করে বসে একটা পাথর ও হাতে নিলাম কি সুন্দর পাথর।
সেখানে থেকে আমরা গেলাম সংগ্ৰামপুঞ্জি ঝর্না দেখতে। জাফলং থেকে পনেরো মিনিট লাগে।

ক্লান্ত হয়ে সবাই বাসায় এসে বিছানায় কাত হয়ে পরে আছে।
আমার একটুও ক্লান্ত লাগছে না খুব ভালো লাগছে কতো কতো জায়গায় ঘুরলাম। আনন্দে আমার মুখ উজ্জ্বল হয়ে আছে ঘুরাঘুরি করে ক্লান্ত থাকলেও পাত্তা দিচ্ছিনা।
আজকে রাতের আগেই ফিরেছি তাই দিন আছে এখনো।আপুর ফোন বালিশের কাছে রেখেই ঘুমিয়ে আছে।আমি ফোনটা নিয়ে দেখলাম কতো বাজে। এখন সারে পাঁচ টা বাজে আমি বিছানায় থেকে উঠে পরলাম। রুমে থেকে বেরিয়ে কি করবো ভাবছি হঠাৎ আমার চোখে পরলো ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি কি ভেবে যেন সেদিকে যেতে লাগলাম। গিয়ে দেখি একটু । এখানে এসেছে তিনদিন হয়ে গেল ছাদে যাওয়া হয়নি।আমি গুটি গুটি পায়ে ছাদে চলে এলাম। ছাদে পা রাখতেই একটা ঠান্ডা বাতাস ছুঁয়ে দিলো। কি বাতাস হচ্ছে ঝড় বৃষ্টি হবে নাকি ভ্রু কুঁচকে সারা ছাদে তাকালাম। কোন ফুল গাছ নে‌ই একদম ফাঁকা কোনায় একটা এ্যালভেরা গাছের টব আছে আর কিছু নাই।
খালি পায়ে আসায় পায়ে ধূলা অনুভব করলাম।
ওইভাবেই ছাদের কোনায় চলে গেলাম। তারপর রেলিং এ হাত রেখে নিচে তাকালাম।
হাত দিয়ে কোন রকম চুল খোঁপা করেছিলাম। বাতাসের জন্য অবাদ্ধ চুল খুলে পিঠে জরিয়ে গেল। বাধার চেষ্টা করছি পারছিনা ওরনা উড়ে যাচ্ছে। কোন রকম ওরনা গায়ে জরিয়ে দাঁড়িয়ে আছি এই বাতাস সব অবাধ্য করে দিলেও আমার খুব ভালো লাগছে।

হঠাৎ পেছন তাকালাম মনে হচ্ছে কেউ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে দেখি ইহান ভাই ছাদে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেমন করে যেন আমি তাকাতেই হকচকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো তারপর এগিয়ে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললো,
এখানে কি করছিস?
আমি বললাম, এমনি কিছু না।
কতো বাতাস হচ্ছে তাও এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
ভালো লাগছে বাতাস।
ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে তাকালো সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিলো। আমি ওরনা ঠিক করছি খালি। একা ভালোই লাগছিলো ভাইয়ার সামনে ওরনা হলে যাচ্ছে এখন ভালো লাগছে না।
বাতাসে ধূলা আসছে দেখছিস না।
হুম।
তাহলে নিচে যা চোখে যাবে।
সাথে সাথে আমি চিৎকার করে উঠলাম। চোখে কিছু গেছে চোখ ধরে চেঁচিয়ে যাচ্ছি। ভাইয়ার তারাতাড়ি আমার দিকে ফিরে বলল,
কি হয়েছে?
চোখে কিছু পরলো।
চোখ ডলতে ডলতে। ভাইয়া আমার কথা শুনে আমার হাত ধরে টেনে কোথাও নিয়ে এলো আমার চোখ বন্ধ তাই দেখতে পাচ্ছি না।
হাত সরা।
ভাইয়ার কথা ও স্পর্শ পেলাম। ভাইয়া আমার হাত সরিয়ে দিচ্ছে আমি শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছি।
ইহান ঊষার ওরনার কোণা দিয়ে চোখের ময়লা বের করলো।চোখ আমার জ্বলে যাচ্ছে।
হয়েছে তাকা।
আমি বললাম, না আমার চোখ জ্বলছে খুব।
একটু তো জ্বলবেই তাকা।
না।
ভাইয়া নিরাশ হয়ে আমার চোখ খুলে নিজের মুখটা কাছে এনে ফূ দিতে লাগলো। আস্তে আস্তে আমার চোখের ঝালাপুরো কমে এলো। আমি চোখ মেলে তাকিয়ে আছি। ভাইয়া এখনো আমার চোখে ফূ দিচ্ছে খুব কাছ থেকে। এখন আমার বুকের ভেতরে তোলপাড় করছে। ভাইয়া কে এতো কাছে দেখে আমার সমস্ত ধানধারনা শূন্য হয়ে গেল। ভাইয়ার দিকে বিস হয়ে তাকিয়ে আছি। বুকের ভেতর টিপটিপ করছে। ভাইয়ার গরম নিঃশ্বাস আমার মুখে বাড়ি খাচ্ছে।
হুট করেই ঝরঝর শব্দ করে বৃষ্টি নেমে এলো তাতে ভাইয়া ফূ দেওয়া অফ করে আমাকে বললো,
কমেছে।
আমি মাথা নিচু করে হুম বললাম।

ভাইয়ার কথায় চমকে উঠলাম।
ইশ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এখন কি হবে?
আমি ও এগিয়ে দেখি অনেক জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে ঝড় আকাশে ঘুরুম ঘুরুম করছে। বাজ পড়ল বলে। আমি ছাদে এসেছিলাম সারে পাঁচ টায় তখন দিনের আলোই ছিলো এখন অন্ধকার হয়ে এসেছে। আমরা কোথায় এটা?
ভাইকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম এটা চিলে কোঠার ঘর। ঝরের জন্য ভাই এখানে এনে আমার চোখের ময়লা ফেলেছে।
ছোট একটা রুমে খালি একদম কিছু নেই। ভাইয়া খোঁজ করে অন্ধকারে এর মাঝে লাইট জ্বালালো‌।
এতোক্ষণ ভয়ে জরোসরো হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম এখন একটু স্বস্তি পেলাম।
ভাইয়া দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।আমি ভেতরে তখনি ফট করে সব অন্ধকার হয়ে গেল। কারেন্ট চলে গেলো বোধহয় অন্ধকার হতেই আমি ভয়ে কুঁকড়ে ওঠে ভাইয়াকে বলল,
ভাইয়া আপনার ফোনের আলো জ্বালান আমি অন্ধকারে এ ভয় পায়।
বলতে বলতে এগিয়ে এলাম দরজার দিকে ভাইয়া সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলো।
ভাইয়া ঘাড় বাঁকিয়ে বললো ফোন তো রুমে রেখে এসেছি।
ভাইয়া কথা শুনে আমার মাথায় বাজ পরলো।
তখনই বিদ্যুৎ চমকালো ভয়ে আমি চিৎকার করে ভা‌ইয়াকে জরিয়ে ধরলাম।
আমার কাজে ভাইয়া হতদম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমার যেদিকে খেয়াল নেই। আমি শক্ত করে ভাইয়াকে জড়িয়ে কাঁপছি। ভয়ে আমার জান বের হ‌ওয়ার উপক্রম।‌বাইরে বাজ পরছে আবার বিদ্যুৎ চমকে চমকে দিন হয়ে যাচ্ছে।
মরে গেলাম আমি?

আমাকে ছাড়াতে চেয়েও পারলো না ভাইয়া তাই ওইভাবেই আমাকে নিয়ে ভেতরে এসে দাঁড়ালো।
তারপর আমার মাথায় হাত দিয়ে বলল,
এতো ভয় পাচ্ছিস কেন আমি আছি তো তোর সাথে?
আমি কাঁপতে ছি।
ভাইয়া আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমি পারছিনা। পারবো কি করে বাজ পরা থামছেই না।শেষে ইহান ঊষাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
এটা ছাড়া আর কিছু করার নেই ও থামছেই না কাঁপছে ফুপাচ্ছে।
ইহান ঊষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।ঊষা ওর বুকের সাথে মিশে আছে।এতে ইহানের বুকে ভেতরটা কেমন যেন করে উঠছে। ঊষার গরম নিঃশ্বাস আমার বুকে পরছে। আস্তে আস্তে ঊষার ফুপানি কাঁপা কাঁপি কমে এলো ঝড় থেকে এখন বৃষ্টি হচ্ছে।
ঝড় থেকে যেতেই আমি সম্মতি পেলাম।ভাইয়ার বুকে আছি ভেবেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম তারাতাড়ি ভাইয়ার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। লজ্জা অন্ধকারে দাঁড়িয়ে র‌ইলাম অন্যদিকে ঘুরে।
তখনি বৃষ্টির ঝাপটা এসে পরলো আমার চোখে মুখে। চমকে উঠলাম । বাইরে দিন হচ্ছে তো রাত তাতে দেখলাম জানালা দিয়ে পানি আসছে।
আমি পেছাতেই ভাইয়ার সাথে ধাক্কা খেলাম।
ইহান সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলো হঠাৎ ঊষার পিঠের সাথে ঠেসা খেয়েছে এক পা পিছিয়ে গেলাম।
কি হয়েছে?
পানি আসছে জানালা দিয়ে।
ইহান কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো না ওর নাকের কাছে ঊষার চুল। যা থেকে মাতাল করা গন্ধ আসছে। ও চোখ বন্ধ করে সেই গন্ধ অনুভব করছে হুট করেই এক পা এগিয়ে এসে ও উষার কোমর জড়িয়ে ধরলো। ঊষা নিজের কোমর এ কারো স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো।
ইহান যেন নিজে কন্ট্রোল হীন হয়ে গেছে ওর একটা ইচ্ছা জেগে উঠলো ও নিজের মুখ ডুবিয়ে দিলো ঊষার চুলের মাঝে। ঊষা স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওর সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। কি হচ্ছে কিছু ই বুঝতে পারছেনা।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here