খুন সিরিজ তৃতীয় সিকুয়েন্স,পর্ব-০৬,০৭

0
232

খুন সিরিজ তৃতীয় সিকুয়েন্স,পর্ব-০৬,০৭
গল্প:- মাস্টার অব মাইন্ড গেম
লেখা:- যাবেদ খান আবু বকর
ষষ্ঠ পর্ব

চৌদ্দ.
ফারহান ফরেনসিক অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েন। রওনা দেন থানার উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষণের মাঝেই গাড়ি নিজে চালিয়ে পৌঁছে যান থানার পেছনে। দূর থেকেই দেখতে পান, অফিসারদের গোল একটা জটলা পাকিয়ে আছে। তার গাড়ি দূর থেকে আসতে দেখে ভীড় ঠেলে বাহিরে বেরিয়ে আসে সাইমুন। তার সামনে গিয়ে গাড়ি থামান ফারহান। গাড়ির ভেতর থেকে বের হয়ে দ্রুত হাঁটতে হাঁটতে প্রশ্ন করলেন সাইমুনের উদ্দেশ্যে,
” কীভাবে কী হলো? এখানে এমপি রজবানের ছেলের মৃত দেহ এলো কী করে? আর প্রথমে কে দেখেছে? তদন্ত কতদূর এগিয়েছে?”
একদমে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করলেন তিনি। সাইমুন তার পিছুপিছু অনেকটা দৌড়েই এগিয়ে এলো। প্রশ্নের জবাবে বলল,
” আজকে আমি তাড়াতাড়ি এসেছিলাম অফিসে। এরপর কল আসে থানার অফিসিয়াল নাম্বারে। কল তুলতেই একজন জানায়, এখানে কারও মৃত দেহ পড়ে আছে। এরপর এখানে ছুটে আসি। এসে সনাক্ত করতে পারি, এটা এমপি রজবানের ছেলের লাশ। ”
সাইমুন তার কথা শেষ না করতেই পালটা প্রশ্ন রাখেন ফারহান,
” কল দেওয়া লোকটি এখন কোথায়? তার থেকে জবানবন্দি নিয়েছ?”
প্রত্যুত্তরে সাইমুন জানায়,
” না স্যার। আপনার অপেক্ষা করছিলাম। ”
ফারহান আর কিছু বললেন না। দ্রুত পায়ে হেঁটে ভীড়ের ভেতরে যেতে লাগলেন। তাকে দেখে ভীড় ছেড়ে দিয়ে ভেতরে যাবার যায়গা করে দিচ্ছে সাধারণ মানুষ এবং পুলিশ কর্মকর্তারা। তিনি ভেতরে ঢুকতেই একটি লোকের দিকে ইশারা করে বলল সাইমুন,
” স্যার, উনি কল দিয়েছিলেন। ”
সাইমুনের কথা শুনে সেদিকে তাকান ফারহান। লোকটিকে হাতের ইশারায় নো এন্ট্রি এরিয়ার ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়ে ডাকেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে লোকটিও ও এন্ট্রি এরিয়ার ভেতরে প্রবেশ করে। কাছে এসে উপস্থিত হতেই ফারহান প্রথম প্রশ্ন রাখেন,
” আপনি এদিক দিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন? আর কীভাবে এই মৃত দেহটি দেখতে পান? ”
লোকটি তার এরকম গরম গরম প্রশ্ন শুনে খানিক ভড়কে যায়। তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে জবাব দেয়,
” স্যার, আমি প্রতিদিন সকালেই এই রাস্তা দিয়ে মর্নিং ওয়াল্কে বের হই। প্রতিদিনের মতো আজকেও বের হয়েছিলাম। কিন্তু আজকে আসতেই দূর থেকে রাস্তার পাশে কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখি। সচারাচর এই রাস্তার পাশে বড় কিছু পড়ে থাকতে দেখিনি। কাছে আসতেই দেখি, একটা মৃত লাশ। ভয় পেয়ে গেছিলাম। ভয়ে ভয়ে আপনাদেরকে কল করে জানাই। ”

ফারহান চুপচাপ লোকটির পুরো কথা শুনলেন। কিছু একটা ভাবছেন তিনি। ঘাড় ঘুরিয়ে থানার দিকে তাকালেন। এখান থেকে থানার এড়িয়া খুব বেশি দূরেও না আবার কাছেও না। তবে থানার এরিয়ার আন্ডারে যেই সিসিটিভিগুলো আছে। তার ফুটেজ এ অবধি আসবে না তা সে নিশ্চিত। ভাবনা বাদ দিয়ে লোকটির দিকে গম্ভীর দৃষ্টি নিয়ে তাকালেন। লোকটির চোখে চোখ রেখে বুঝতে পারলেন, লোকটি মিথ্যে বলছে না। সাইমুনের দিকে ইশারা করে লোকটির উদ্দেশ্য করে বললেন,
” আপনার নাম্বারটি ওর কাছে দিয়ে যাবেন। যদি কখনো প্রয়োজন পড়ে। তদন্তের খাতিরে কল করলে আশা করছি বিলম্ব না করে থানায় চলে আসবেন। নয়তো আমরা আপনাকে তুলে আনতে বাধ্য হবো। ”

আজ যেন ফারহান একটু কড়া করেই কথা বলছেন। সকাল সকাল এরকম একটা খবর তিনি একদমই আশা করেননি। তবে তার কেন জানি মনে হচ্ছে, পূর্বের কেসের সাথে এই কেসেরও কোনো না কোনো সংযোগ আছে। পা বাড়ান এমপি রজবানের ছেলের মৃত দেহের দিকে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ক্লু খোঁজার চেষ্টা করছেন তিনি। আরেকটু এগিয়ে গেলেন লাশটার দিকে। পুরোনো স্মৃতিগুলো জড়ো করার চেষ্টা করলেন। ইন্সপেক্টর রবিন এবং এমপি রজবানের দেহে গুলি লেগেছিল ঠিক বুকে ও কপালের ঠিক মধ্য বরাবর। এমপি রজবানের ছেলে রায়ানের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটনা লক্ষ্য করা যায়। তারও একটি গুলি কপালের মধ্য বরাবর। অপর একটি গুলি বুকের বাম পাশে। প্রমাণ যা পেয়েছেন এতেই তার পুরোনো কেসের সাথে শনাক্তকরণ করতে কষ্ট হয়নি বিন্দু পরিমাণ। কাছে ডাকলেন সাইমুনকে। এগিয়ে এলো সাইমুন।
” বডিটা পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠিয়ে দাও। আর এখানে তেমন কোনো ক্লু পাবে না। তাই অযথা সময় নষ্ট না করাই উত্তম হবে। ”
তার এরকম কথায় যেন সাইমুন ভীষণ রকমে অবাক হলো! একটা মার্ডার স্পটে কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই তিনি কীভাবে বলতে পারেন, এখানে কোনো ক্লু পাওয়া যাবে না? সাইমুনের চেহারা খানিকটা রাগচটা ভাব ফুটে উঠল। কিন্তু প্রকাশ করার মতো অবকাশ খুঁজে পেল না। শত হলেও তার চেয়ে বিজ্ঞ, তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। আদেশ পালন করার প্রয়াস করল। উপস্থিত কর্মকর্তাদের উপর দায়িত্ব দিয়ে ফারহানের পিছুপিছু ছুটল। মিডিয়ার লোকজন ইতোমধ্যে এসে হাজির হয়ে গেছে। তাদের দুজকে ভীড় ঠেলে বাহিরে আসতে দেখে হুমড়ি খেয়ে পড়তে লাগল। কিন্তু ফারহান তাদেরকে কোনোরকমে পাত্তা না দিলেন না। গম্ভীর ভাব চেহারায় ফুটিয়ে নিজের গাড়িতে বসে পড়েন। ভেবে পায় না সাইমুন, স্যার কেন মিডিয়া থেকে এত পরিমাণে দূরত্ব বজায় রাখে! মনের মাঝে প্রশ্নটা ঘুরপাক খেতে থাকে। কখন সে প্রশ্নটা করবে সেই ভাবনা নিয়েই গাড়ির চালক সিটে আরোহন করে। মিডিয়ার কর্মীরা গাড়ির আশেপাশে ভীড় করলেও তাদেরকে পাত্তা না দিয়ে গাড়ি চালানোর নির্দেশ দেন ফারহান।

পনেরো.
থানার পেছন থেকে সম্মুখে আসতে গাড়ি দিয়ে বেশি সময় লাগেনি। গাড়ি থানার ভেতরে প্রবেশ করতেই দরজা খুলে দ্রুত নেমে পড়েন ফারহান। সাইমুনও গাড়ি পাশে রেখে দৌড়ে তার পিছু নেয়। অনেকটা কাছাকাছি গিয়ে পেটের ভেতরে থাকা নড়চড় করতে থাকা প্রশ্নটি বের করে দেয়।
” স্যার, আমি সবসময় লক্ষ্য করেছি, আপনি মিডিয়াকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলেন। কিন্তু আমি না এর সঠিক কারণটা আজও বুঝতে পারলাম না। ”
হাঁটার গতি সমান রেখে কণ্ঠ খানিক খাঁদে নামিয়ে প্রত্যুত্তর করলেন ফারহান,
” তুমি যখন আমার পর্যায় আসবে, তখন বুঝতে পারবে। এই মিডিয়া তোমার কী পরিমাণ প্যাড়া দিতে পারে তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। ”

দ্রুত হেঁটে নিজের কক্ষে চলে গেলেন ফারহান। ইশারায় সাইমুনকেও বললেন আসতে। তিনি তার ডেস্কের চেয়ারে বসে পড়লেন। সাইমুনের দিকে তাকিয়ে বললেন,
” বসো। ”
তার আদেশ পেয়ে সাইমুন চেয়ারে বসে পড়ল। নীরবতা বিরাজ করছে দুজনের মাঝে। ফারহান কোনোকিছু নিয়ে গভীর চিন্তিত। অপরদিকে তার থেকে কিছু শোনার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে সাইমুন। চলে গেল এভাবেই কিছু মুহূর্ত। আচমকা ফারহান গম্ভীর কণ্ঠে বলতে লাগলেন,
” আগামী আধঘণ্টার মাঝে রায়ানের ফোন কলের যাবতীয় তথ্য আমি চাই। আর তার স্ত্রীকে কল করে দ্রুত থানায় আসতে বলো। কেস প্রতিনিয়ত জটিল হয়ে যাচ্ছে। ”
তাকে পেরেশানিতে দেখে কথা বাড়ালো না সাইমুন। ধীর পায়ে হেঁটে রুম ত্যাগ করল। রুম থেকে বেরিয়েই প্রথমে কল দিল রায়ানের স্ত্রীকে। কল করে দ্রুত থানায় আসার জন্য বলে। পাশাপাশি তার উপর আসা পরবর্তী আদেশটির উপরেও কাজ শুরু করে দেয়। প্রিন্ট হচ্ছে রায়ানের গত এক সপ্তাহের যাবতীয় কল রেকর্ড। অপরদিকে ফারহান আহমেদ গম্ভীর হয়ে চেয়ারে মাথা হেলিয়ে বসে আছেন। এ পর্যন্ত পাওয়া সকল তথ্যগুলো একত্র করে ধরতে চাচ্ছেন একটি ফ্রেমে। ঘোর ভাঙে দরজার বাহির থেকে কড়া করার শব্দে। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসেই ভেতরে আসার অনুমতি দিলেন। সাইমুন ভেতরে প্রবেশ করে হাতে কিছু কাগজ নিয়ে। ডেস্কের সামনে এসে দাঁড়াতেই সোজা হয়ে বসেন ফারহান। হাতের ইশারায় পাশের চেয়ারে বসার আদেশ দেন। বাম হাতটা উঁচু করে ঘড়ির দিকে তাকান। আধঘণ্টার সময় দিয়েছিলেন সাইমুনকে। কিন্তু ছেলেটা যথেষ্ট দ্রুত কাজ করে। মাত্র সতেরো মিনিটেই কাজ সমাপ্ত করে টেবিলে উপস্থাপন করেছে। মাঝে-মাঝে তার এরকম দ্রুত কাজের জন্য আপ্লুত হয়ে পড়েন। মুখ ফুটে কখনো প্রশংসা না করলেও মনে মনে ঠিকই খুশি হন।

হাতে তুলে নেন কাগজটা। সাথে কলমদানি থেকে তুলে নেন হাইলাইটারটাও। চমকে ওঠেন সর্বশেষ কলটি থেকে! দ্রুত কিছু মনে করার চেষ্টা করেন তিনি। থতমত খেয়ে পকেট থেকে ফোনটা বের করে আনেন। কিছু খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছেন কল লিস্টে ঢুকে। নাহ, কোনোভাবেই মিলছে না! সামনে বসে তার কার্যকলাপ দেখে হতভম্বের সর্বোচ্চ স্তরে উঠে গেছে সাইমুন। ভেবে পাচ্ছে না, স্যার এরকম আচরণ করছে কেন! কৌতূহল চেপে রাখা বড্ড কষ্টকর। এই কৌতূহলের ফলেই নতুন সকল কিছুর উদ্ভাবন হয়েছে। প্রশ্ন চেপে রেখে রাখার প্রয়াস চালালো না সে। প্রশ্ন করেই ফেলল,
” স্যার, এরকম করছেন কেন? কী হয়েছে? ”

সাইমুনের প্রশ্ন শুনে থতমত খেয়ে যান ফারহান। কথা না বাড়িয়ে কাগজটা আর ফোনটা এগিয়ে দেন তার দিকে। কাগজ আর ফোন নিজের দিকে পেয়ে একটু ভড়কে যায় সে। তবুও নিজের দিকে নিয়ে বুঝার চেষ্টা চালায় মূল বিষয় বস্তু! প্রথমে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না সে। আচমকা কিছু মনে হতেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে লাস্ট কলটার দিকে তাকায়। লাস্ট কলটা এসেছে তার ফারহান স্যারের নাম্বার থেকে। কিন্তু ফারহানের ফোন থেকে রায়ানের নাম্বারে কোনো কল যায়নি। এমন কি নাম্বারটি ফোনের কোত্থাও নেই! চোখ বড় বড় করে তাকায় ফারহানের দিকে। তিনি তাতে পাত্তা না দিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে হাতের আঙুলগুলো নাচাতে নাচাতে ভাবতে থাকে। কেসের পুরোনো সূত্র নিয়ে ভাবতেই মনে পড়ে যায়, এমপি রজবান এবং ইন্সপেক্টর রবিনকে কল দেওয়ার বিষয়টা। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টাও অসম্ভব প্রায়। অপরদিকে তিনি দুজনেরই ফোন ঘেটেছেন। দুজনের কারও ফোন থেকেই আউট গোয়িং কোনো কল নেই। বরং দুজনের ফোনেই একে অপরের নাম্বার থেকে ইন কামিং কল আছে। সাধারণত একটি ফোন থেকে আরেকটি ফোনে কল দিলে যে ফোন থেকে কল করেছে সেই ফোনে আউট গোয়িং কল প্রদর্শন করবে। এবং যেই ফোনে কল এসেছে, সেই ফোনে ইনকামিং কল প্রদর্শন করে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে অর্ধেক আছে আর অর্ধেক নেই! এমপি রজবানের ফোনেও ইন্সপেক্টর রবিনের নাম্বার থেকে ইনকামিং কল আছে। ইন্সপেক্টর রবিনের ফোনেও এমপি রজবানের ফোনে ইনকামিং কল আছে। দুজনের ফোনেই ইনকামিং কল আছে কিন্তু আউট গোয়িং কোনো কল নেই! অর্থাৎ, কল তাদের ফোন থেকে নয়। বরং অন্য কেউ নাম্বার হ্যাক করে করেছে। বিষয়টি মস্তিষ্কে আসতেই নিশ্চিত হয়। গম্ভীর কণ্ঠস্বর নিয়ে সাইমুনের বিভ্রান্ত মনের উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন,
” আমার নাম্বার হ্যাক করে কাজটি করেছে। ”

ফারহানের কথাটি শুনে চমকে ওঠে সাইমুন। পুরোনো জের ধরে হিসেব করলে খুব সহজেই নিশ্চিত হওয়া যায়, কাজটি কোনো হ্যাকারের কর্ম। নিজেকে নিজেই তিরস্কার দিতে লাগে। মনে মনে নিজেকে বলতে লাগে, অথচ আমার মতো মাথামোটার মাথায় এই সহজ একটা বিষয় আসেনি। খামোখাই কি আর উনি আমার উচ্চপদস্থ? উনার চিন্তাশক্তির প্রশংসা করতেই হয়। তার দিকে তাকিয়ে নেই ফারহান। তিনি ভাবনায় ব্যস্ত পুনরায়। ভেবে পাচ্ছেন না, নাম্বারটির লাস্ট লোকেশন পুরোনো খুন দুটোর স্থানেই! তাহলে রায়ানের খুন সেখানেই করা হয়েছে। তবে মরদেহ সেখানে না থেকে বরং থানার পেছন দিকে এলো কী করে? খুনি কি অনির্দিষ্টভাবে তার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে না তো? একদিক থেকে চিন্তাভাবনা করলে বিষয়টি চ্যালেঞ্জিংই হয়ে যাচ্ছে। প্রথমত তারই নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে। অপরদিকে খুন করে থানার পেছনেই ফেলে গেছে। বিষয়টার ভাষা হিসেবে ধরা যায়, এতকিছু করলাম। পারলে ধরে দেখাস! পরক্ষণে নিজেই নিজেকে বললেন, যদি বিষয়টা এমনই হয়। তবে সত্যিই নিজের কপালে নিজেই দুর্ভোগ টেনে এনেছে খুনি।

ভাবনায় বিঘ্ন ঘটায় সাইমুন। নিচু স্বরে বলল,
” স্যার, রায়ানের স্ত্রী এসেছে। ”
ঘোর ভেঙে যায় ফারহানের। একটু চমকে ওঠেন। কিন্তু পুরোনো দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নেন। আদেশ বাচক বাক্য ছুঁড়ে দেন তার উদ্দেশ্যে।
” উনাকে ভেতরে নিয়ে এসো। ”
চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বলল সাইমুন,
” জি স্যার! ”

– চলবে —

‘ খুন সিরিজ ‘
তৃতীয় সিকুয়েন্স
গল্প:- মাস্টার অব মাইন্ড গেম
লেখা:- যাবেদ খান আবু বকর
সপ্তম পর্ব

ষোলো.
সাইমুন কক্ষ থেকে চলে গেছে। ফারহান আহমেদ চেয়ারে হেলান দিয়ে মাথা পেছন দিকে ঠেকিয়ে রেখেছেন। চোখ বুজে কিছু ভাবার চেষ্টা চালাচ্ছেন যেন। সামনেই বসে আছে মৃত রায়ানের স্ত্রী লাইবা। চোখ-মুখ ফুলে গেছে তার। পরপর দুটো মর্মান্তিক ঘটনা শোনার পর একটা মেয়ে যে এতটা শক্ত হয়ে আছে সেটাই বেশি। তার শ্বশুরের মৃত্যুটাকে কষ্ট হলেও মানিয়ে নেওয়াএ চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু একমাত্র স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে নিজেকে সুস্থ রাখা বড় বিশাল ব্যাপার। ইতোমধ্যে তার চোখ-মুখের ভাবের বদল দেখা দিয়েছে। বিরক্তির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে রাগ-ক্ষোভ। কঠিন কণ্ঠে নিজের সর্বোচ্চ রাগ ঢেলে দিয়ে বলতে লাগল লাইবা,
” প্রথমত আমার শ্বশুর এবং একজন ইন্সপেক্টর মারা যাবার পরে এখন অবধি কোনো কিছুই করতে পারনি। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আজকে রায়ানকে হারালাম! আদতে আপনারা কী করছেন আপনারা? এই চেয়ার কি শুধু আপনার হেলান দিয়ে বসে আরাম করার জন্যই দেওয়া হয়েছে? কেন খুনিকে ধরছেন না? কেন পারছেন না? কেন?”
উচ্চস্বরে কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। এতক্ষণ নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শত চেষ্টা করার পরেও সে ব্যর্থ। আজকের পর থেকে আর তার সবচেয়ে কাছের, প্রিয় মানুষটা আর তাকে নাম ধরে ডাকবে না। আর আসবে না তার কাছে। আর তার জন্য চকলেট আনবে না। আর কখনো কোলে করে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলবে না। এরকম হাজারও স্মৃতিতে ভাসতে লাগল! কান্নার পরিমাণ যেন বেড়েই চলেছে। ফারহান চোখ মেলে একবার তাকালেন তার দিকে। তাকে কাঁদতে দেখে চোখ বন্ধ করে রইলেন আবারও। এই মুহূর্তে তার কাছে দেওয়ার মতো কোনো রিপোর্ট নেই। এখন অবধি কেস যেখানে শুরু হয়েছিল, সেখানেই থেমে আছে। সাইবার এক্সপার্টদেরকে ইতোমধ্যে হায়ার করেছিল, এই রহস্য ভেদ করার জন্য। কিন্তু তারাও ব্যর্থ। তারা পারেনি দেয়ালের পেছনে থাকা লোকটির একটি তথ্যও বের করতে। এসব কথা চিন্তা করে লাইবাকে কান্না থামাতে বলেননি ফারহান। আসলে তিনি কী বলে আশ্বাস দেবেন? কী বলে কান্না থামাতে বলবেন? তার কাছে তো এই কেসের কোনো তথ্যই নেই! লাইবার কান্নার বেগ কিছুটা কমে আসতেই চোখ বন্ধ অবস্থায় প্রথম প্রশ্ন রাখেন ফারহান,
” আপনাদের পরিবারের সাথে কারও শত্রুতা আছে? যেই শত্রুতার জের ধরে খুন পর্যন্ত করা সম্ভব? ”
প্রত্যুত্তরে কিছু বলল না লাইবা। সে এখনও কান্নাই করছে। তা দেখে ফারহান নরম কণ্ঠে বলে উঠলেন,
” দেখুন মিস, আমরা কেস নিয়ে অনেকভাবেই আগানোর চেষ্টা করতেছি। কিন্তু কোনোভাবেই কিছু করতে পারছি না। এখন আপনি যদি আমাদের সাথে একটু কো-অপারেট করেন। তবে হয়তো আমরা কেস সমন্ধে নতুন কিছু জানতে পারব। যা আমাদেরকে কেসকে এগিয়ে নিয়ে সাহায্য করবে। ”

তার এরূপ কথায় মাথা তুলে তার দিকে তাকায় লাইবা। চোখ থেকে অশ্রু ফোটায় ফোটায় গড়িয়ে পড়ছে গাল বেয়ে। ওড়নার আঁচল দিয়ে চোখ মুছে বলতে আরম্ভ করল,
” তেমন কারও সাথেই তো শত্রুতা নেই। বাবার প্রতিপক্ষের লোকেদের সাথেও শত্রুতা নেই তেমন। এতটা কার সাহস হলো ভেবে পাচ্ছি না। ”
পুনরায় কাঁদতে আরম্ভ করল। ফারহান কী যেন ভেবে আচমকা প্রশ্ন করলেন,
” আচ্ছা আপনাদের বিয়ের বয়স কত বছর হয়েছে?”
কাঁদতে কাঁদতেই লাইবা উত্তর দিল,
” চার বছর। ”
প্রত্যুত্তর পেয়েই ফারহান পুনরায় ভয়ানক প্রশ্ন করলেন,
” এই চার বছরের মাঝে কখনো মনে হয়েছে, রায়ানের চারিত্রিক কোনো দুর্বলতা আছে? মানে কোনো মেয়েলি ঘটনা? যা আপনার শ্বশুর আব্বা পর্যন্ত কানেক্টেড? ”
মাথা নিচ দিকে করে ছিল এতক্ষণ লাইবা। প্রশ্ন শুনে অগ্নি চক্ষু করে তার দিকে তাকায়। কঠিন স্বর নিয়ে বলতে থাকে,
” সাবধানে কথা বলুন ইন্সপেক্টর। ”
” দুঃখিত ম্যাম, আপনি ভুল বুঝবেন না। অনেক সময় খুনের কারণ এরকম হয়ে দাঁড়ায়। তদন্তের খাতিরে একটু কো-অপারেট করুন ম্যাম। ”
দুজনের মাঝে নীরবতা বিরাজমান। মাথার উপরে ফ্যান চলছে। এসি চলছে ১৮° সেলসিয়াসে। তবুও মনে হচ্ছে, রুমটা গরমে তপ্ত হয়ে পড়েছে। আচমকা লাইবা কঠিন স্বরে বলতে থাকে।
” নাহ। এরকম কখনো কোনো ব্যাপারে ঘটেনি। বা ঘটলেও আমি জানি না। ”
চটপটে জবাব দিল ফারহান,
” ঠিক আছে ম্যাম। আপনি তাহলে এখন আসুন। তবে বাসায় গিয়ে একটু ভাববেন। কোনো বিষয়ে রায়ান, রাজবান স্যার এবং ইন্সপেক্টর রবিন স্যার জড়িত ছিল কি না। একদম ছোটো কোনো ব্যাপারে মনে পড়লেও অবশ্যই জানাবেন। এই নিন আমার কার্ড। আমরা সর্বাবস্থায় খুনিকে ধরে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করব। ”

লাইবা কোনো কথা না বলেই কার্ডটা হাতে নিয়ে দরজা ঠেলে বাহিরে বেরিয়ে যায়। বাহিরেই তার মা বসে আছে। ভেতরে তার মাকে আসার অনুমতি দেয়নি সাইমুন। এরজন্য খানিকটা বিরক্তও সে। তার মাকে নিয়ে থানার বাহিরে রাখা নিজেদের গাড়িতে চড়ে বসে। এরপর রওনা দেয় বাড়ির পথে। অপরদিকে ফারহান চেয়ারে হেলান দিয়ে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে মাথায় আলতো করে ছোঁয়াচ্ছে আবার উপরে তুলে নিচ্ছেন। তিনি ভেবে পাচ্ছেন না, এই কেসটা এত জটিল কেন? এর আগে তো কখনো কোনো কেস এতটা জটিল মনে হয়নি। এই কেসে কোনো ক্লু-ই পাচ্ছেন না। আচমকা ডেস্কের উপর থাকা টেলিফোনটি বাজতে আরম্ভ করে। সোজা হয়ে বসে টেলিফোনটি কানে তুলে নেন। ওপাশ থেকে ভেসে আসে ডিআইজির কণ্ঠ।
” কেস কতদূর চলছে ফারহান? এখনও কোনো খুনিকে পেলে? কিংবা খুনের মোটিভ?”
প্রত্যুত্তরে খুব দ্রুত বলতে লাগলেন ফারহান,
” স্যার, কেসটা একের পর এক রহস্য ছেয়েই যাচ্ছে। কোনোভাবেই এই কেসটার কোনো ক্লু পাচ্ছি না। যাও-বা পাচ্ছি। তার কোনো লুপ নেই। যেন ক্লুটা দেওয়াই হয়েছে আমাদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাবার জন্য। ”
একটু সময়ের জন্য থামেন ফারহান। এরপর আবার বলতে লাগেন তিনি,
” স্যার, আপনি তো জানেনই, ইন্সপেক্টর রবিন স্যার আর এমপি স্যারকে একত্র করার মাধ্যম ছিল কল। আর তা হ্যাক করার মাধ্যমেই করেছে। রায়ানের খুনটাও সেম একইভাবে হয়েছে। তবে এবার নাম্বার হ্যাক করেছে আমার! আমার নাম্বার হ্যাক করে রায়ানকে সেই আগের যায়গায় নিয়ে খুন করে আবার থানার পেছনে ফেলে রেখে গেছে। খুনের ধরন ইত্যাদি সবই একই রকম। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, বুলেট অবধি একই ছিল। ”
ওপাশ থেকে কিছু শোনার জন্য থামলেন ফারহান। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দই ভেসে এলো না। ডিআইজি মারুফকে উদ্দেশ্য করে ডাক দিলেন তিনি,
” স্যার!”
” হ্যাঁ! খুনির শেষ খুনের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, তোমাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাচ্ছে। সে যাই হোক, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে খুনিকে ধরে জেলে আটক করে কেস ক্লোজড করবে এটাই শেষ কথা। আমাকে আইজি স্যার বারবার কল দিচ্ছেন। তার উপর পার্টির চাপ আসতেছে। আর তা আমার উপর ঢেলে দিচ্ছেন। ”

আর কিছু বলার সুযোগ দিলেন না ফারহান। কান থেকে টেলিফোনটা একপ্রকার রেগেই আগের স্থানে রেখে দিলেন। মেজাজ তার পুরোপুরি চড়ে গেছে। কেসের ছোট থেকে ছোট কোনো ক্লু খুঁজে পাচ্ছে না তারা। আর উপর থেকে কর্তা হিসেবে কতৃত্ব ফলাচ্ছে কর্তারা। এ যেন তাদের পুরোনো অভ্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি অভ্যাস। তাদের এই কাজগুলো কখনো পূরণ হবে কি না তিনি জানেন না। তবে আপাতত তাদের ব্যাপার নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করছে না তার। কেস নিয়ে পুনরায় ভাবতে বসেন। ঘটনার একদম প্রথম থেকে ভাবতে শুরু করেন তিনি।

সতেরো.
” এভাবে মূর্তির মতো বসে কী ভাবছেন শুনি? তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে, কবে যেন দিন-দুনিয়া ছেড়ে ভাবনার রাজ্যের রাজা হয়ে যাবা। ”
ফারহান আহমেদকে এক ধ্যানে কোনো ভাবনায় ব্যস্ত দেখে এক প্রকার বিরক্ত হলেন রাহেলা। মানুষ কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারে। তাই বলে পরিবার-পরিজন ফেলে রেখে কাজের মাঝেই বুদ হয়ে থাকবে। এটা মোটেও একজন ভালো পুরুষের গুণ নয়। রাহেলা অবাক হলেন বেশ। অন্যান্য দিন ফারহানকে এরকম কিছু বললে যে-কোনো ধরণের উত্তর দিত। কিন্তু আজ যেন তার কথা শুনেও শুনতে পাননি। সাফা পাশের রুমে ঘুমোচ্ছে। ফারহানের পাশে বসে পড়লেন তিনি। হাতে হাত রাখতেই ফারহান যেন এক প্রকার চমকে উঠলেন। তার এভাবে চমকানোটা নজর এড়ালো না রাহেলার। ভীষণ নরম কণ্ঠে বললেন,
” কী হয়েছে আপনার? কী নিয়ে এত চিন্তা করছেন? আমাকে বলবেন না? ”
তার কথায় কোনো প্রত্যুত্তর করেন না ফারহান। তিনি তার মতো বসে রইলেন। আচমকা গম্ভীর কোণ্ঠে বলতে লাগলেন,
” কেসটা যবে থেকে নিয়েছি, রহস্য যেন পিছু ছাড়ছে না কোনোভাবে। তোমাকে তো এর আগে ইন্সপেক্টর রবিন আর এমপি রজবানের মৃত্যুর যাবতীয় বিষয়গুলো বলেছিলাম। আজকে এমপি রজবানের ছেলে খুন হয়েছে। কিন্তু ওর ফোনে সর্বশেষ কল গেছে আমার নাম্বার থেকে। তবে সবচেয়ে অবাক বিষয় হলো, আমার ফোন থেকে না কল গেছে আর না কল এসেছে। অথচ ওর নাম্বারে কল এসেছে। এই নাম্বার সম্পর্কে কোনো তথ্য পাইনি। তদন্ত যেখানে শুরু হয়েছিল, এখনও সেখানেই থেমে রয়েছে। তার উপরে চাপ প্রয়োগ করছে ডিআইজি স্যার। কেসটা এমন এক পর্যায় আটকে গেছে, না এর কোনো কূল আছে আর না আছে কিনারা। আমি ভেবে পাচ্ছি না, এতটা পারফেক্ট মার্ডার কীভাবে সম্ভব হতে পারে! ”
কোনো প্রত্যুত্তর দিলেন না রাহেলা। তিনি ভাবনায় ডুব দিলেন স্বল্প সময়ের জন্য। তার দিকে ফারহান এক নজর তাকিয়ে আনমনে বলতে লাগলেন,
” খুনি মোটেই একজন নয়। একাধিক জন এই খুনের সাথে জড়িত। আর খুনগুলোও করা হয়েছে নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্যের জন্য। নয়তো এভাবে পরপর তিনজনকে একইভাবে খুন করা অসম্ভব। ”
তার আনমনে বলা কথা শেষ হতেই পাশ থেকে উৎসুক হয়ে রাহেলা বললেন,
” তুমি কি আর মার্ডার স্পটে গেছিলে? ”
একটু ঘাবড়ে যান ফারহান। কেমন যেন অনুভব হয়।
” না। ”
রাহেলা পুনরায় বলতে শুরু করলেন। তবে এবার কণ্ঠে চাপ প্রয়োগ করেছেন।
” এরজন্যই তুমি ক্লু মিস করে গেছ। যেখান থেকে ঘটনার উৎপত্তি, সেখানে তদন্ত করলে কোনো না কোনো ক্লু অবশ্যই পাবে। ” তার কণ্ঠে বিজ্ঞতার ভাব। বাবা পুলিশ হওয়াতে খুনের ক্লু খোঁজ করা তারও পক্ষে সহজ হয়ে গেছে।
” ঠিক আছে। তবে আজকেই সন্ধ্যার সময় স্পটে গিয়ে একবার ঘুরে আসব। ”
” তা এসো। এখন খেতে আসো। তোমার জন্য কিন্তু আমি এখনও না খেয়ে আছি। ”
অবাক হন ফারহান। পরক্ষণেই তার মনে হয়, যেদিন অফিস টাইম চারটায় শেষ হয়ে যায়, সেদিন রাহেলা তার জন্য না খেয়ে অপেক্ষা করেন। তিনি আর দেরি করলেন না। চলে গেলেন ফ্রেশ হতে। রাহেলাও নিচে চলে গেছেন। টেবিলে খাবারগুলো পরিবেশন করায় ব্যস্ত তিনি।

আঠারো.
কালো আলখাল্লা পরিহিত লোকটি একটি মৃদু আলোকিত রুমে দাঁড়িয়ে আছেন। তাকে এখানেই সবসময় দেখতে পাওয়া যায়। ডান পাশে একটি বোর্ড দেখা যাচ্ছে। সেখানে সিরিয়ালি টাঙিয়ে রাখা হয়েছে এমপি রজবান, রবিনসহ আরও দুটো ছবি। তন্মধ্যে তিনটি ছবিতেই লাল মার্কার দিয়ে ক্রস চিহ্ন আঁকা। সর্বশেষ ছবিটি এখনো স্বাভাবিক অবস্থাতেই আছে। তবে অদ্ভুতভাবে এই চারটি ছবির মাঝে সেই ছবিটিই একটি মেয়ের। এই মেয়েটি আর কেউ নয়, এমপির ছেলে রায়ানের স্ত্রীর। অজ্ঞাত লোকটি টেবিলের উপর থেকে পুরোনো কাল মার্কারটি হাতে তুলে নেয়। আঙুলে ঘুরাতে ঘুরাতে এগিয়ে যায় বোর্ডের দিকে। ঠোঁটে একটি ক্রুর হাসি তুলে মার্কারের নিপ খুলে। এরপর টান দেয় ছবির দুই পাশে আড়া-আড়িভাবে। উচ্চস্বরে হেসে ওঠেন লোকটি। আচমকা কঠিন স্বর করে বলতে লাগেন,
” আমি আসছি, আমি আসছি। প্রস্তুত হও তুমি। আমি আসছি। ”

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here