রেড কেইস-২০২,পর্বঃ ০২

0
817

#রেড কেইস-২০২,পর্বঃ ০২
লেখকঃ আবির খান

আবির ওর জিপ নিয়ে ওর বানানো সিক্রেট বেইসে রওনা হয়। যা ওর টিম মেম্বার ছাড়া অন্যকেউ জানে না। ও খুব চিন্তায় আছে। কারণ এই রেড কেইসটা আগের সব কেইস থেকে অনেক ডেঞ্জারাস। তবে ওর মাঝে অন্যরকম একটা উত্তেজনাও ফিল হচ্ছে। এবার খুব বড়ো একটা ধামাকা হতে যাচ্ছে শহরে। এক ঘণ্টার মধ্যে সবাই আবিরের সিক্রেট বেইসে পৌঁছে যায়। গোল টেবিলে ওরা পাঁচ জন বসে আছে। আবির মাঝখানে আর বাকিরা ওর দুইপাশে। রাহাত প্রথমে বলে উঠে,

— স্যার এবার বলুন আমাদের মিশনটা কি নিয়ে।

আবির গম্ভীরমুখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সবাই ওর এই গম্ভীরতার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না। তাই ওদের একটু চিন্তা হচ্ছে। আবির এখনো কিছু বলছে না দেখে ওর টিম মেম্বাররা একে অপরের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছে? কিন্তু কেউ কিছুই বুঝতে পারছে না। তাই রাহাত একটু জোর গলায় স্যার বলে ডাক দেয়। আবির রাহাতের দিকে তাকিয়ে আবার সবার দিকে তাকিয়। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে সোজা হোয়াইট বোর্ডের কাছে যায়। মার্কারটা নিয়ে খুব সুন্দর করে বাংলাদেশের মানচিত্র এঁকে ফেলে। এবং মানচিত্রের ভিতর প্রতিটি বিভাগও আলাদা করে ফেলে। এবং তাদের নাম লিখে দেয়৷ এরপর আবির সবার দিকে তাকিয়ে বলে,

— আমাদের এবারকার মিশন এই মানচিত্রের পুরোটা অংশ জুড়ে। এমনকি মানচিত্রের বাইরে জুড়েও।

ওর কথা শুনে বাকি সবাই পুরো স্তব্ধ। আবির এটা বলল কি! এ পর্যন্ত যত মিশন বা রেড কেইসগুলো ছিল তা একটি নিদিষ্ট বিভাগের মধ্যে ছিল। কিন্তু এবারের মিশন নাকি পুরো দেশ জুড়ে! রাহাত অবাক কণ্ঠে বলে উঠে,

— স্যার কি বলছেন! পুরো দেশ জুড়ে মিশন? প্লিজ একটু ভেঙে বলুন।
— বলছি। আমাদের দেশে গত কয়েকবছর যাবৎ কোন ক্রাইমটা বেশি হচ্ছে বলে তোমাদের মনে হয় বলো তো?

ওরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে রাহাত সবার পক্ষ হয়ে বলে,

— স্যার আমাদের মতে ড্রাগস রিলেটেড ক্রাইমগুলো এখন বেশি হচ্ছে।
— ইয়েস। সাব্বাশ। এই না হলো আমার ক্রিমিনাল হান্টাররা। একদম সঠিক বলেছো তোমরা। উপর থেকে এবার এই মিশনটাই আমি পেয়েছি। মানে দেশ থেকে মাদকের গোড়াটাকে উপড়ে ফেলতে হবে।
~ ওয়াও স্যার! এটা তো তাহলে অনেক বড়ো একটা মিশন। (রুনা)
— ইয়েস। শুধু বড়োই না একটা মোস্ট ডেঞ্জারাস মিশন। তাই অনেকটা চিন্তায় ছিলা।। কেননা উপর থেকে যে ইনফরমেশন পেলাম তা হলো, বিদেশের কোন একটা মাফিয়া তার আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিদেশি এবং দেশি মাদক দ্রব্য দেশে সাপ্লাই দিয়ে দেশের বারোটা বাজাচ্ছে। কিন্তু কে সেই মাফিয়া বা তার হয়ে কারা কাজ করছে তা কেউ নাকি এখনো জানে না।
— তারমানে আমাদের কাজ হলো সেই মাফিয়াকে ধরা? (রাহুল)
— শুধু ধরা নয় ওর যত ধরনের সদস্য আছে তাদেরকেও ধরে শেষ করা। তাহলেই দেশে মাদকের বিস্তার কমবে।
— ওকে স্যার। আমরা আমাদের সবটা দিয়ে চেষ্টা করবো।
— গুড। তবে আমাদের এই ছোট টিমের পক্ষে ওদের ধরা কখনো সম্ভব হবে না। তাই আমাদের টিমটাকে অনেক বড়ো করতে হবে৷
~ তা কিভাবে স্যার? (মিশিতা)
— দেখাচ্ছি।

আবির আবার হোয়াইট বোর্ডের কাছে গিয়ে একপাশে রাহাত, রুনা, মিশিতা আর রাহুলের নাম লিখলো। তারপর ও ওদের দিকে তাকিয়ে বলল,

— রাহাত তুমি নিজে একটা টিম বানাবে। যেখানে পাঁচজন সদস্য থাকবে৷ আবার সেই পাঁচ জন তোমার মতো করে একেক জনে তাদের নিজস্ব পাঁচ জনের একটা টিম বানাবে। এভাবে চলতে থাকবে৷ তবে যখন মোট তোমার আন্ডারে ৩০০ জন হবে তখন থেমে যাবে৷ এবং এই ৩০০ জন দেশের পূর্ব দিকে ছড়িয়ে যাবে৷ তুমি সহ তারা সবাই খুচরা, পাইকারি, হোটেল, মোটেল, বার, রেস্টুরেন্ট, চিপাচাপা, পাড়া, মহল্লা সব জায়গায় ছড়িয়ে যাবে এবং কে বা কারা, কি পরিমাণ মাদক সেল করে এবং কোথা থেকে কার কাছ থেকে কিনে তা খুব গোপনে ইনফরমেশন গুলো কালেক্ট করবে৷ লাগলে ওদের সাথে মিশে যাবে৷ এভাবে রাহাতের মতো রুনা, মিশিতা এবং রাহুল তোমরাও করবে। রুনা যাবে পশ্চিম দিকে, মিশিতা যাবে উত্তরে আর রাহুল তুমি দক্ষিণে। তোমাদের ২ মাস সময় দিলাম। সব ডাটা কালেক্ট করে আমার কাছে জমা দিবে৷ আর তোমাদের টিম মেম্বারদের সাথে আমি কালই পরিচয় করিয়ে দিবো। আমাদের মোট ১২০০ জনের বিশাল একটা টিম হবে৷ যারা পুরো দেশের আনাচে কানাচে থেকে সকল প্রকার মাদক সংক্রান্ত তথ্য কালেক্ট করবে৷ তাহলে আগামী দুমাস পর আমাদের আবার এখানে মিটিং হবে৷ আর হ্যাঁ এই মিশনটা পুরো সিক্রেট ভাবে চালাবে৷ যাতে কোন ভাবে ওরা খবর না পায়৷
— ওকে স্যার। আমরা এখনি প্রস্তুতি নিচ্ছি।
— আর হ্যাঁ ঢাকার পুরো অংশটা আমি নিজেই দেখবো। দেখি এবার কিভাবে ওরা ধরা না পড়ে।

এরপর মিটিং শেষ হলে আবির হেড কোয়াটারে কল করে ১২০০ জন সোর্স কালেক্টর অফিসার রেডি করতে বলে। যাদের সবার ইনফরমেশন ওকে পাঠাতে বলে। এরপর হেড কোয়াটার থেকে রাত ১০ নাগাদ সময়ে ১২০০ জনের ইনফরমেশন দেওয়া হয়। আবির তাদের সব ডিটেইলস দেখতে থাকে। দেখা শেষ হলে ১২০০ জনকে ৩০০ জন করে চার ভাগ করে। প্রথম ৩০০ জনকে একটা ম্যাসেজ পাঠায়। পরের ৩০০ জনকে আরেকটা ম্যাসেজ। এভাবে চার ভাগে ৪ ধরনের ম্যাসেজ চলে যায়। এবার এই চারটা ম্যাসেজ এর মেইন ম্যাসেজ আবিরের বাকি চারজন টিম মেম্বারকে পাঠিয়ে দেয়। এই ম্যাসেজ এর ফলে রাহাত, রুনা, মিশিতা আর রাহুল খুব সহজে ওদের ৩০০ জনের টিম বানাতে পারবে৷ আবির ওর কাজ শেষ করে একটু ঘুম দেয়। কারণ সকালে আরও অনেক কাজ আছে।

চলবে…?

কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here