ধৈর্য,২০
Tahmi_Chowdhury
:
-মা তুমি ব্যাগ প্যাক করছো কেন?
মায়ের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো তনয়া!
জাহানারা বেগম কপালে বিরক্তির ভাজ তুলে বললেন,
-আমরা এখুনি চলে যাব তাই!
-কি বলছো মা, চলে যাব মানে?
আমরা না বিয়ে উপলক্ষ্যেই এসেছি,,বিয়ের আগেই চলে যাবা,,,কি হয়েছে মা কিছুই তো বুঝলাম না!
জাহানারা বেগম মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে বললেন,,
-তোর কিছু বুঝার ও প্রয়োজন নেই! চল……
তনয়ার হাত টেনে বের হয়ে যেতে লাগলেন জাহানারা বেগম!
মায়ের দিকে তখনো বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে রইলো তনয়া!
সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতেই জহুরা হোসেন,আয়াত,মিতিশা,নিলাশা,,নিলাশার বর নওয়াফ সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে!
জাহানারা বেগম নিচে নামতেই আয়াত তাকালো তনয়ার দিকে…
হিজাবে আবৃত তনয়াকে দেখতে বেশ ভালো লাগলো আয়াতের!
আয়াতের চাহনিতে কি যেন থাকে,,নিজের হাত দুটো মুঠ করে ঘার এদিক ওদিক করে বড় করে নিঃশ্বাস নিলো তনয়া!
আয়াত তনয়ার অবস্থা বুঝে মুখ টিপে হাসলো!
জহুরা হোসেন বোনের দিকে হাসি হাসি মুখে এগিয়ে এসে বললেন,,
-আয়াত কি তোমাকে দিয়ে আসবে আপা!
জাহানারা বেগম বিরক্তি নিয়ে না বোধক মাথা নাড়ালেন!
মিতিশা নিলাশা সবাই খুব হেসে হেসেই বিদায় জানালেন তনয়াদের!
তনয়া যেন বিস্ময়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে!
ওরা কি করে এতো হেসে হেসে বিদায় জানালো,,
কাল বিয়ে স্বাভাবিক আজ আসার ব্যাপারটায় তাদের আমাদের আটকানোর কথা!
কিন্তু তা না করে………
মায়ের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো তনয়া……
-মা ওরা আমাদের আটকালো না কেন?
-আশ্চর্য আটকাবে কেন?
বিরক্তিপ্রকাশ জাহানারা বেগমের কন্ঠে!
-মা তুমি এতো বিরক্ত হচ্ছো কেন?
ওখানে কি হলো কিছুই মাথায় ঢুকলো না,,আমরা বিয়েতে এসেছিলাম আর বিয়ের আগেই আমাদের চলে যাচ্ছি,
তার উপর এখন তোমার এমন বিহেভিয়ার…আশ্চর্য!
-বিয়ে খেতে চাস তো,,কাল যত খুশি খাস! এখন চুপচাপ গাড়িতে উঠে বস?
মায়ের ধমকানোতে তনয়া চুপ হয়ে গাড়িতে উঠে বসলো!
★
দরজার সামনে মহেশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মেহরাব অবাক হলো ভীষণ!
এগিয়ে গিয়ে বললো,,
-আসসালামু আলাইকুম!
কে চিনতে পারি নি তো?
মহেশ থতমত খেয়ে বললো,,
-আ…আমার দি,,ও……ঠিকানা এটাই দিয়েছিলো!
-বোন?
ভ্রু কুচকালো মেহরাব!
পেছন থেকে সারাহ বললো,,
-ও প্রিয়ন্তির ভাই!
ভেতরে আসো মহেশ!
গুটিগুটি পায়ে মাথা নিচু করে ভেতরে ঢুকলো মহেশ!
চারপাশের এতো আয়োজন দেখে কিছুটা চমকালো ও মহেশ!
সারাহ মহেশকে বসতে বলে চলে গেলো রান্নাঘরের দিকে!
মেহরাব মহেশের বসা সামনের সোফাটিতে বসলো,,
মহেশ মেহরাবের দিকে তাকিয়ে বললো,,
-দি কে যদি একটু আসতে বলতেন……
-হু হ্যাঁ,,আপনি বসুন!
মেহরাব গুটিগুটি পায়ে প্রিয়ন্তির রুমের দিকে এগিয়ে গেলো…
দরজার ওপাশ থেকে আওয়াজ দিলো মেহরাব!
বসে বসে চিন্তায় মগ্ন ছিলো প্রিয়ন্তি,,
মেহরাবের আওয়াজ শুনে ঝট করে উঠে দাঁড়িয়ে দরজার পাশে গেলো!
মাথায় ঘোমটা টেনে দরজা আলতো ঠেলে খুলে দিয়ে বললো প্রিয়ন্তি,,
-আপনার সাথে আমার কথা ছিলো,,,আপনি কি সত্যি………
প্রিয়ন্তির গলার স্বর ভারী হয়ে এলো!
আয়াতের সাথে কেন জানি মানতে কষ্ট হচ্ছে প্রিয়ন্তির!
তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেহরাবের সাথে একবার কথা বলবে সে……
মেহরাব কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,,
-তোমার ভাই অপেক্ষা করছে বাহিরে,,আমি কি তাকে পাঠিয়ে দিবো?
-মহেশ এসেছে,,,?
-হু
-আমার যে কিছু জানার ছিলো আপনার থেকে……?
মেহরাব কথা ঘুরিয়ে বললো,,
-রাত পোহালেই তুমি অন্য কারো বউ,,, আমি আসছি……
মেহরাব আর একমুহূর্ত ও দাঁড়ালো না!
দ্রুত পায়ে প্রিয়ন্তির সামনে থেকে চলে এলো নিজ ঘরে!
গায়ের জড়িয়ে থাকা পাঞ্জাবিটা খুলে বিছানায় ছুড়ে ফেললো!
প্রিয়ন্তিকে সে চেয়েছিলো,,
হ্যাঁ প্রিয়ন্তিকে সে চেয়েছিলো!
কিন্তু ও তো অন্য কারো আমানত……
বিছানায় মাথা ঠেকিয়ে বসে মেঝেতে বসে পড়লো মেহরাব!
এমন পাগলামো সে নিয়ামাহ যেদিন তাকে তালাক দেয় সেদিন করেছিলো!
আজ আবারও এমন পাগলামোতে মেতে উঠেছে মেহরাব!
নিজেকে কিছুতেই শান্ত করতে পারছে না…
এই কয়েকদিনের পরিস্থিতিতে মেহরাবের দম বন্ধ হওয়ার যোগাড় হচ্ছে!
চোখের সামনে এসব সহ্য করতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে মেহরাবের!
-আল্লাহ……
আর্তনাদ করে উঠলো মেহরাব!
এই প্রিয়ন্তি মেয়েটাকে হঠাৎ করে সেদিন দেখার পর পুরনো ক্ষত যেন সেড়ে যেতে নিচ্ছিলো মেহরাবের!
মনের অঘোচরেই কখন কিভাবে মেয়েটিকে এত্ত পছন্দ হয়ে গেলো মেহরাবের অজানা।
মেয়েটার দিকে কখনো তো সজ্ঞানে তাকায় নি সে,,,
তাহলে কেন এতো টান?
বিছানায় চাদর একটানে মাটিতে ফেলে দেয় মেহরাব!
তারপর উঠে দাঁড়ায়!
দু হাতে মাথা চেপে ধরে!
প্রতি পদে পদে শয়তানের ওয়াসওয়াসা বেড়ে চলেছে!
মেহরাব দম নেয়,,
আবার ঘরে জোরে জোরে পায়চারী করে!
হঠাৎ করে জায়নামাজের দিকে চোখ যায়!
একমুহূর্তেই ওযু করে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে যায় মেহরাব!
অন্তেরর শান্তির দরকার এখন,,খুব দরকার মেহরাবের…
মেহরাব জানে প্রিয়ন্তি কি জানতে চেয়েছিলো এ ও জানে প্রিয়ন্তি তাকে পছন্দ করে,,প্রিয়ন্তিও জানে মেহরাব তাকে……
কিন্তু দুজন জেনেও কিছু করার নেই,,,একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা করা ছাড়া!
:
সারাহ প্রিয়ন্তিকে এসে দেখে ঠায় দরজার সামনে তাকিয়ে আছে,,,
প্রিয়ন্তিকে ডাক দিতেই সারাহকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো প্রিয়ন্তি!
কান্না করতে করতে হেচকি উঠে গেছে প্রিয়ন্তির!
প্রিয়ন্তিকে ছাড়িয়ে নিজের সামনে দাড় করিয়ে বললো সারাহ……
-তুই না আত্মসমর্পণকারী!
তুই না মুসলিম প্রিয়ন্তি?
তুই না আল্লাহকে ভালোবেসে ইসলাম গ্রহণ করেছিস?
তাহলে তুই এসব কি করছিস প্রিয়ন্তি?
মুমিনদের চোখের পানি আল্লাহর ভালোবাসার জন্য ঝড়ার কথা,,,আর তুই কি না?
তুই খুব বড় গলা করে বলিস তুই ভেঙ্গে পড়বি না,,
তুই ধৈর্য ধরবি,,তুই হতাশ হবি না!
তার এই ধরণ প্রিয়ন্তি?
তুই না কি ধৈর্য ধরছিস,,,এই তোর ধৈর্য?
নিজেকে যাচাই কর প্রিয়ন্তি,,
মুমিন হতে হলে অনেক ত্যাগের প্রয়োজন,,,নিজের জীবনকে আল্লাহর জন্য বিলিয়ে দেওয়াই মুমিনের কাজ!
মুমিনের লক্ষ্য চোখের পানি সব আল্লাহর জন্য!
বিচ্ছেদের কষ্টে মুমিন কাঁদে না!
মুমিনরা” আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন” এটা মনে রেখেই দাতেদাত চাপে বুঝেছিস!
বলা যত সহজ না প্রিয়ন্তি,,নিজের জীবনে তা বাস্তবায়ন করা ঠিক ততোটাই কঠিন!
মাথা তুলল প্রিয়ন্তি!
সারাহর দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকালো……
মুখ ফিরিয়ে নিলো সারাহ!
বোনের থেকে কম নয় এই প্রিয়ন্তি!
প্রিয়ন্তির চোখের জল সহ্য করাও যে দায়!
কিন্তু এখন প্রিয়ন্তির জন্য নিজেকে শক্ত করা বড্ড প্রয়োজন,,ভাবলো সারাহ!
মাথা নিচু করে দু হাত কচলাতে লাগলো প্রিয়ন্তি!
সারাহ তাকালো প্রিয়ন্তির দিকে!
চোখ মুছে নিজেকে সংযত করে বললো সারাহ…
-তুই এখানে দুঃখবিলাস করছিস,, আর তোর ভাইটা সেই কখন থেকে বসে আছে!
এতোটা স্বার্থপর হোস নে!
আল্লাহ দুনিয়াতে মানুষদের কষ্ট দেন পরীক্ষার জন্য মানুষককে!
বান্দা যদি কষ্টগুলো ধৈর্যসহকারে সহ্য করে নেয়,,
দুনিয়া হোক বা আখিরাতে ধৈর্যশীলদের পুরস্কার আল্লাহ নিজ হাতে দেন!
“ইন্নাল্লাহা মায়াস সবিরিন(নিশ্চয় আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন)
প্রিয়ন্তি মুখে জোর করে হাসির রেখে ফুটিয়ে তুলে বললো,,
-বড্ড কষ্ট হচ্ছেরে সারাহ!
প্রিয়ন্তির দু হাত জড়িয়ে ধরে বললো সারাহ,,,
-এই কষ্টের পরিত্রাণ আছে প্রিয়ন্তি!
জানিস প্রিয়ন্তি জান্নাতে থাকবে না কোন কষ্ট!
সেখানে থাকবে না বিচ্ছেদের মতো অসহ্য যন্ত্রণা……
থাকবে না ধৈর্য্যের কোন পরীক্ষা!
এতোকিছু সহ্য করে নিয়েছিস,,আর তো একটুখানি!
একটু পথই বাকি,,তারপর চিরস্থায়ী গন্তব্য!
সয়ে নে বোন!
আর আয়াত তোকে ভালো রাখবে রে বোন!
প্রচণ্ড ভালো মানুষ আয়াত ভাই। ইন শা আল্লাহ আয়াত ভাই………
সারাহকে থামিয়ে দিয়ে বললো প্রিয়ন্তি,,
-চল ভাইটা সেই কখন থেকে বসে আছে!
.
ভাইয়ের ঘরে এসে অবাক হলো সারাহ!
তার গোছালো ভাইটি হঠাৎ করেও অগোছালো হয়ে উঠলো কি করে,,,
বিছানার চাদর বালিশ সারা ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে!
বিছানা থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে মেঝের দিকে চোখ গেলো সারাহর!
তার ভালোবাসার ভাইটি সিজদায় পড়ে রয়েছে!
চাপা নিঃশ্বাস নিলো সারাহ!
প্রিয়ন্তির আর মেহরাবের অবস্থা দেখে নিজেকে কতোক্ষণ আটকে রাখতে পারবে সারাহ জানেনা!
কান্নাগুলো ভীষণ রকমের জ্বালাতন করছে যে!
★
ডেকোরেশনগুলো হেটে হেটে ঘুরে দেখতে লাগলো মেহরাব!
নিজেকে যতেষ্ট সামলে নিয়েছে!
রবের সন্তুষ্টিইই সব!
আল্লাহ তো উত্তম ফয়সালাকারী,,
মনের মাঝে একদম করে গেঁথে নিয়েছে মেহরাব!
দীর্ঘশ্বাস নিয়ে সামনে তাকাতেই মা রেহনুমা বেগমকে দেখতে পেলো মেহরাব!
ছেলের দু হাত জড়িয়ে ধরে বললেন তিনি,,,
-আজ তুই প্রিয়ন্তিকে বিয়ে করবি বাবা!
না করিস না বাবা! তোর মা টা বড্ড আশা নিয়ে এসেছে তোর কাছে!
মেহরাব মায়ের এমন অদ্ভুত কথায় তৎক্ষণাৎ নিজের হাত গুটিয়ে নিয়ে বললো,,
-কি বলছো এসব মা?
তুমি জানো না ও আয়াতের বাগদত্তা হতে যাচ্ছে!
তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে মা!
শান্ত হয়ে কয়েকমুহূর্ত ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন রেহনুমা,,
-এই নে গোসল সেরে পাঞ্জাবিটা পড়ে একদম রেডি হয়েই নিচে নামবি! যা……
মেহরাব অবাক হয়ে মায়ের হাত থেকে কাপড়ের ব্যাগটা নিয়ে হনহন করে নিজের রুমে চলে আসলো!
.
-তুমি আমার না জানিয়ে এতোবড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে মা?
তুমি এটা কি করে করতে পারো?
বলা নেই কওয়া নেই হুট করেই বিয়ে,,,কি পেয়েছ মা!
বিয়েটা কি ছেলেখেলা?
আর কার সাথেই বা হচ্ছে বিয়ে কিছুই তো জানলাম না……
জাহানারা বেগম মেয়ের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঝাঁঝালো কন্ঠে বললেন,,
-তোমার কিছু জানতে হবে না,,
আমি জেনে বুঝেই এগিয়েছি!
তোমার বাবা মারা গেছেনন,,তুমাকে কে দিবে বিয়ে আমি মারা গেলে?
আর কোন কিছু প্রশ্ন না করে চুপচাপ রেডি হও!
হনহন করে বেড়িয়ে গেলেন জাহানারা বেগম!
মায়ের যাওয়ার পাণে বোকার মতো তাকিয়ে রইলো তনয়া……
★
অবশেষে বরযাত্রীরা বেড়িয়ে পড়লো!
লাল টুকটুকে শাড়িটায় ভীষণ মানিয়েছে প্রিয়ন্তিকে!
আজ ও বেশি সাজে নি প্রিয়ন্তি,,,হালকা মেকাপ করে বসে আছে!
পার্লারের কাউকে এলাও ও করে নি সারাহর অনেকবার বলা সত্যেও!
একজন বয়স্ক লোক রুমে ঢুকলেন,,যাকে সোজা কথায় বলে কাজী!
মুখের উপর হিজাব টেনে নিলো প্রিয়ন্তি!
শক্ত হয়ে বসে আছে প্রিয়ন্তি!
অনেক চেষ্টা করছে কাঁদবার কিন্তু কেন জানি কান্না আসছেই না!
শুধু হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে!
কাজী সাহেব কি বলছেন কিছুই শুনছে না প্রিয়ন্তি!
মাথাটা ভনভন করছে প্রিয়ন্তি!
কাজী সাহেব যখন উচ্চস্বরে বললেন,,
-বলো মা কবুল!
প্রিয়ন্তি থমকে গেলো,,,
নিস্তেজ হয়ে এলো শরীর!
সারাহর গায়ের উপর নিজের শরীর এলিয়ে দিলো প্রিয়ন্তি!
জ্বলে যাচ্ছে ভেতর প্রিয়ন্তির!
এখন কোথা থেকে জানি প্রিয়ন্তির চোখে বন্যা বয়ে যাচ্ছে!
কাঁদতে চাচ্ছে না প্রিয়ন্তি!
ধৈর্য ধরতে চাচ্ছে,,,মনে মনে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছে!
সারাহ প্রিয়ন্তিকে দিকে মুখ করে বললো,,,
-এভাবে হয় না প্রিয়ন্তি,,
তুই না খুব শক্ত মেয়ে!
তুই না প্রিয়ন্তি,,যে না আল্লাহর জন্য নিজের মা-বাবা ছেড়ে এসেছে,,
যে আল্লাহর জন্য এখন নিজের পছন্দটাকে ছাড়তে পারবে!
আল্লাহর জন্য সব করতে পারবে প্রিয়ন্তি!
আল্লাহর জন্য ধৈর্য ধরবি না প্রিয়ন্তি?
জান্নাতে কিন্তু আর এমন ধৈর্য ধরতে হবে না প্রিয়ন্তি!
বল কবুল বল……
সারাহর গায়ের উপর থেকে আস্তে আস্তে সরে আসলো প্রিয়ন্তি!
আল্লাহর জন্য দুনিয়ার সব ত্যাগ করতে পারবে প্রিয়ন্তি!
হ্যাঁ পিও তোকে তো পারতে হবে!
শয়তানের ওয়াসওয়াসা এটা পিও,,শক্ত হো,,বলে ফেল কবুল!
নিশ্চয়ইই আল্লাহ তোর জন্য ভালো কিছুই রেখেছেন!
নিজের মনে নিজেই কথা বললো প্রিয়ন্তি!
কাজী সাহেব আরো একবার তাগাদা দিলে ঝট করে প্রিয়ন্তিও কবুল শব্দটা ছোট্ট করে উচ্চারণ করে নেয়!
কাজী সাহেব আলহামদুলিল্লাহ বলেই চলে যান!
প্রিয়ন্তি দম ধরে কিছুক্ষণ বসে থাকে!
তারপর সারাহর দিকে মাথা ঘুরিয়ে নেয়!
সারাহ তখন প্রিয়ন্তির মনের অবস্থা বুঝার চেষ্টায় ব্যস্ত!
ঠোঁটেরর কোণে হালকা হাসি ফুটিয়ে তুলে বলে প্রিয়ন্তি…
-আমার না অনেক হালকা লাগছে সারাহ!
ভালো লাগছে আমার!
একটু আগের দম বন্ধ হওয়া কষ্টটা যেন উবে গেছে!
এটাই বুঝি আল্লাহর রহমত সারাহ!
অন্তরটা কেমন জানি প্রশান্তিতে চেয়ে যাচ্ছে……
প্রিয়ন্তির মুখে এমন কথা শুনে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সারাহ……
#চলবে ইন শা আল্লাহ