#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১২,১৩
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
পার্টঃ১২
৮৪.
ইউ বাসটার্ড তোর সাহস কি করে হয় তুই অর্ষার দিকে বাজে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিস? পা দিয়ে এলোপেথোরিভাবে মারতে মারতে রাগে গজগজ করতে করতে উপোরোক্ত বাক্যটি বললো প্রান্তিক। প্রান্তিক কে থামানোর যথাযথ চেষ্টা করছে আভেশ আর নাফিস সরদার। অবশেষে অর্ষা গিয়ে সামনে দাঁড়াতেই থেমে যায় প্রান্তিক। সাহিল কোনোরকম উঠে পালিয়ে যায় এইখান থেকে। প্রান্তিক এখনো রাগে ফুঁসে আছে। নাফিস সরদার আভেশের মুখ থেকে সব কথা শুনে হাতের মুঠোয় শক্ত করে ফেলে।
“আমার মেয়েকে বিরক্ত করা! এর এক ভাই জেলে আজ ১৮ বছর অব্দি পঁচছে তা কি ভুলে গেলো? এখন এই পোলায় আমার মেয়েকে বিরক্ত করছে। এই ছেলের জন্যইতো আমি আমার মেয়েকে ঢাকায় পাঠায়ছি। কয়েকদিনের জন্য আইসাও শান্তি নাই? অর্ষা অবাক হয়ে যায় এইটা শুনে যে সাহিলের বড় ভাই আছে। আজ পর্যন্ত সে নামতো দূরের থাক শুনেওনি যে সাহিলের বড় কোনো ভাই আছে। অর্ষা অবাক চেয়ে বললো, ” আব্বা সাহিলের বড় ভাই আছে? নাফিস মিয়া এইবার চুপ হয়ে যান। তিনি বুঝতে পেরেছেন যে ভুল জায়গায় ভুল কমেন্ট করে ফেলেছে। প্রান্তিক এতোক্ষণ চেয়ারে বসে মাটির দিকে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু অর্ষার এই জানার কৌতুহলে সে ভীষম খেলো। নাফিস সরদারকে চোখে ইশারা করলো এইখান থেকে চলে যেতে। নাফিস সরদার তড়িঘড়ি কাজ আছে বলে কোনোরকম এই জায়গা ত্যাগ করেন।
“আব্বা আব্বা কোথায় যাচ্ছেন? বলে যান না… অর্ষা পেছন থেকে বার বার ডাকছে নাফিস সরদারকে কিন্তু ওনাকে আর পাই কে!।
” অর্ষা রুমে যাও। আর এখন থেকে এইখানে যতোদিন আছো বাইরে একা যাবেনা আমাকে নিয়ে যাবে মাইন্ড ইট? প্রান্তিকের হঠাৎ এমন গম্ভীর্য কথার কোনো বোধগম্য হলোনা অর্ষার। কিন্তু সে বুঝতে পারছে যে প্রান্তিক তার ভালোর জন্যই বলছে। তাই সে নিচু স্বরে বললো,”আচ্ছা ভাইয়া”.
৮৫.
“কিরে অর্ষা কি এতো ভাবছিস? অর্ষার কাধে আলতো একটা ধাক্কা দিয়ে কথাটা বললো প্রিয়ন্তি। অর্ষা জানালায় তাকিয়ে বললো,” আমি অবাক হয়ে গেছি প্রিয় এইটা কিভাবে সম্ভব? সাহিলের ভাই আছে আর আমি জানিইনা? হাউ?
“এইটা নিয়ে তুই ইবা এতো ভাবছিস কেনো অর্ষা?
” না ভাবার কোনো কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছিনা প্রিয়ন্তি। আমিতো এই গ্রামেই থাকি তাহলে আব্বা আর আম্মা জানলে আমি কেনো জানবোনা? অদ্ভুত না ব্যাপারটা?
“প্রিয়ন্তি ভাবশীল হয়ে বললো,” হুম তা ঠিকি বলেছিস। আচ্ছা বাদ দে। চল আফ্রার কাছে যায়। দেখি ঘুম থেকে উঠেছে কিনা।
“হুম চল।
৮৬.
প্রান্তিক আমি লন্ডনে ব্যাক করতে চাচ্ছি। আভেশের কথা শুনে প্রান্তিক ভ্রু কুচকে বললো,” কেনো? কি এমন দরকার পড়লো যে তোকে ওইখানেই যেতে হবে তাও এতো ইমিডিয়েটলি!। আভেশ প্রান্তিকের মুখোমুখি হয়ে হাত দুটো মুঠো করে ধরে বললো,” প্রান্তিক মামনি আর বাবাইকে তুই কিছু বলিসনা প্লিজ। আমি এইখান থেকেই চলে যেতে হবে। একটা ইম্পরট্যান্ট কাজ পড়ে গেছে।
“আভেশ আর ইউ ক্রেজি? তুই জানিস তুই কি বলছিস? আর তুইতো একেবারের জন্য দেশে এসেছিস তাহলে ব্যাক কেনো করতে চাইছিস? আর আম্মু আব্বুকে কেনো বলে যাবিনা? আর আমিই বা কি জবাব দিবো তাদেরকে?
” প্রান্তিক আমি কথা দিচ্ছি আমি এক মাসের মধ্যেই ব্যাক করবো প্রমিস। প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,”আচ্ছা ঠিক আছে। তবে হুম তোকে কিন্তু এক মাসের মধ্যেই আসতে হবে আর তুই আমাকে প্রমিসও করেছিস..এইটা বলেই প্রান্তিক আভেশকে জড়িয়ে ধরে।
৮৭.
“প্রিয়ন্তি তুই এইভাবে মুখ ফুলিয়ে বসে আছিস কেনো? ট্রলি গোছাতে গোছাতে বললো আভেশ।
” আভেশ ভাই তুমি সিরিয়াস?
“কেনো আমাকে দেখে কি এখন তোর ফানি কমেডিং লাগছে?
” ওফ তা না আভেশ ভাই তুমি এইভাবে চলে যাবে? না মানে যাওয়াটা কি খুবই দরকার?
আভেশ এইবার সব কাপড় গুছিয়ে প্রিয়ন্তির দিকে তাকালো। তাকিয়ে বললো,”কি হয়েছে প্রিয়ন্তি কিছু বলবি? প্রিয়ন্তি আর নিজেকে সামলাতে পারলোনা। চোখের পানি গাল বেয়ে পড়ছে। আভেশ তা দেখেও না দেখে থাকলো। এখন এইসবে মন দিলে সে ওইক হয়ে পড়বে। যা আভেশ চায়না।
৮৮.
খালু..অর্ষার মনে হয়তো অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু ভুলেও ওকে ছোটবেলার কিছু মনে করাবেন না তা নয়তো ও ভেঙে পড়বে একদম।
“হুম বাপ ঠিকি বলছো। কিন্তু অর্ষা কি করে মেনে নিবে তোমাকে বলোতো? কি করে সত্যিটা জেনে তোমাকে ওর জীবনে জড়াবে? প্রান্তিক শব্দ করে মিনমিনিয়ে হেসে বললো,” আপাদত আমি থাকতে অর্ষা কিছুই জানতে পারবেনা।
“তাহলেতো হলোই।
” কি জানার কথা বলছেন ভাইয়া? অর্ষার কন্ঠ শুনে প্রান্তিক আর নাফিস সরদার চমকে উঠেন। পেছনে তাকিয়ে দেখে অর্ষা আর অর্ষার হাত ধরে আছে পিচ্চি আফ্রা। প্রান্তিজ প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললো,”আরে কিছুনা। আফ্রা ভাইয়া কেমন আছো? আসো আসো কোলে আসো..প্রান্তিক আফ্রাকে কোলে তুলে নেয়। চেয়ারম্যান… আরে ওই চেয়ারম্যান.. কারো গলা হাক ছেড়ে ডাক শুনে প্রান্তিক আর নাফিস সরদার একে অপরের দিকে তাকিয়ে দরজার বাইরে গেলো। অর্ষা যেতে নিলে,,প্রান্তিক অর্ষার কাছে আফ্রাকে দিয়ে বললো,”তুমি ভেতরেই থাকো। বাহিরে একদম আসবেনা।
৮৯.
সাহেরা বেগম কলিং বেল বাজাতেই তাইফা সোফা থেকে উঠে দরজা খুলতে গেলো। সাহেরা বেগম শাড়ীর আচল দিয়ে মুখের ঘাম মুছতে মুছতে মুচকি হেসে বললো,”মা কিছু খেয়েছিস?
“হুম মামনি। এসেই খাবার খেয়েছি৷ তাইফা গিয়ে পুনরায় সোফার বসে পাকন মুখে দিয়ে টিভিতে মন দিলো।
” মন খারাপ?
“না মামনি”
“ঢাকায় কখন যাবি?
” মামনি এইতো কাল পরশু।
“আমাকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হবেনা তোর? তাইফা এইবার টিভিটা রিমোর্ট দিয়ে অফ করে মাকে জড়িয়ে ধরে বললো,” হুম হবেতো। কিন্তু মামনি মাঝে মাঝে অনিচ্ছা থাকা শর্তেও অনেক কিছু করতে হয়। তাইফা মনে মনে বললো,”আমাকেতো যেতেই হবে মামনি। তোমার মুখে হাসি ফোঁটাতে।
৯০.
“আপনাগো বাড়ির এই ছ্যামড়া আমার পোলাগে মারছে ক্যান? চেয়ারম্যান ওইছেন দেইহা কি মাথা কিইনা হালাইছেন? প্রান্তিকের দিকে এক পলক তাকিয়ে নাফিস মিয়ার দিকে তাকাতে তাকাতে কথাটা বললো আমির মিয়া। বেশ নাম আছে এই গ্রামে তার। তবে ভালো মানুষ হিসেবে নয় সুদখোর হিসেবে। চড়া সুদে মানুষকে টাকা দেন আমির মিয়া। পরবর্তীতে কেউ তাকা দিতে না পারলে তার জমি নিয়ে নেন। প্রান্তিক বাঁকা হেসে বললো,” তা আপনার ছেলে কে কি কুত্তা বানিয়ে রেখেছেন নাকি যে মেয়েদেরকে দেখলেই জিবে পানি চলে আসে। প্রান্তিকের এমন কথায় বেশ ক্ষিপ্ত হয় আমির মিয়া। তিনি কিছু বলতে যাবে তার আগেই নাফিস সরদার হাক ছেড়ে বললে,” এক ছেলেকে জেলে দেখে শান্তি পাচ্ছোনা? এখন কি তোমার পোলা সাহিলকেও জেলে দেখতে চাও নাকি আমির মিয়া? নাফিস সরদারের কথা শুনে আমিরা মিয়া রাগে গজগজ করতে করতে বললো,”আমার পোলারে পড়ালেহা করাইছি কি জেলে জায়বার লাই? প্রান্তিক রেগে বললো,”তো আপনার ছেলে কে কি গ্রামে রেখেছেন বখাটে ছেলেদের মতো মেয়েদের দিকে উত্ত্যক্তের হাত বাড়িয়ে দিতে? আমিরা মিয়া ক্ষিপ্ত চোখে চেয়ে আছে প্রান্তিকের দিকে। তিনি বেশ বুঝতে পারছে এই ছেলের সাথে কথায় পেড়ে উঠবেনা। নাফিস সরদার আবার বললেন,”তোমাদের কপাল ভালো যে এখনো এইখানে আছো। নয়তো ১৮ বছর আগেই তোমাদেরকে গ্রাম ছাড়া করাতাম। আমির মিরা রাগে গটগট করতে করতে চলে যেতেই প্রান্তিক তাকে হাত দিয়ে সামনে গিয়ে দাঁড় করালেন। আর চোখ রাঙিয়ে বললো,”আপনার ওই অসভ্য ছেলেকে বলে দিবেন নেক্সট টাইম অর্ষার দিকে হাত বাড়ালে ওর ওই হাতের আমি এমন অবস্থা করবো যে সারাজীবন পঙ্গু উপাধি নিয়ে বাঁচতে হবে।
চলবে…..
#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৩
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
৯১.
ওই পোলার কতো বড় সাহস আমার পোলারে মারে” হাক ছেড়ে ছেড়ে কথাগুলো বলছে আমির মিরা। সাহিল পাশ থেকে ক্ষিপ্ত ভঙ্গিতে বললো,বাবা তুমি চিন্তা কইরোনা। ওই অর্ষার জন্য এতোকিছুতো? দেইখো ওই অর্ষাকেতো আমি ছাড়বোইনা।
“কি করবা বাপ?
সাহিলা বাঁকা হেসে বলে,” আব্বা এমন কাজ করুম যে ওই মাইয়া আর সমাজে মুখ দপ্তরের দেখাইবার পারবোনা।
“কিন্তু…
” আব্বা কোনো কিন্তু না।
৯২.
বাইরে কি হয়েছিলো? অর্ষার প্রশ্নে প্রান্তিক অর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,”কিছুনা। প্যাক করে নাও কালকেই আমরা ঢাকা ফিরে যাবো। অর্ষা অবাক হয়ে বলে,মানে? এতো তাড়াতাড়ি কেনো? আমরাতো এইখানে ঘুরতে এসেছিলাম।
“সামনে এক্সাম অর্ষা। এতে ঘুরাঘুরির দরকার নেই। আর তোমাকে বললামইতো যে আভেশ চলে যাচ্ছে। তাই আমরা আজকে বিকেলে ঘুরাঘুরি করে কাল সকালেই রওনা দিবো ঢাকার উদ্দেশ্যে আর আভেশ..আভেশ নাম নিতেই একটা দীর্ঘশ্বষ ছাড়ে প্রান্তিক। অর্ষা বুজতে পারে যে প্রান্তিকের মন খারাপ হয়ে গেছে তাই এইটা নিয়ে আর কিছু বলেনি।
” আচ্ছা আমি তাহলে যায় প্যাক করি। প্রান্তিক মুচকি হেসে অর্ষার দিকে তাকিয়ে বললো, “হুম যাও।
৯৩.
” মামনি…মামনি….ডাকতে ডাকতে তাইফা যায় তার মায়ের রুমে। মিসেস সাহেরা বেগম তাইফাকে দেখেই চোখের পানি মুছে ড্রয়ারে হাতে থাকা ছবিটা রেখে হেসে বললো,”কি হয়েছে আম্মু?
“মামনি তুৃমি আবার কাঁদছিলে? সাহেরা বেগম হেসে বললেন,কই নাতো।
” আমার থেকে লোকাতে পারবেনা তুমি মামনি”। আমার ক্ষুধা লেগেছে খেতে দাও। সাহেরা বেগম হেসে বললেন,”হুম আয়। তাইফা মনে মনে ভাবছে,”আর কতোবার মামনি এইভাবে একা একা কষ্ট পাবে?
৯৪.
অর্ষা যেতেই প্রান্তিকের ফোনে টুং টুং শব্দ বেজে উঠলো পকেটে। পকেট থেকে ফোনটা বের করে দেখলো শৈবাল নামটা ভাসছে। প্রান্তিক কল ধরতেই উপাশ থেকে হোহো করে হেসে শৈবাল বললো,”প্রান্তিক জানিস? ছারিন শাঁকচুন্নিটার বিয়ে ঠিক হয়েছে। প্রান্তিক আনমনে হেসে বললো,”সেতো আমার আগেই জানা ছিলো। এইবার শৈবাল অবাক কন্ঠে বললো,”মানে?
“কিছুনা। আচ্ছা শোন আমি কাল ব্যাক করছি ঢাকায়। তখন সব বলবো। এখন রাখি। কলটা কেটে প্রান্তিক পা বাড়ায় আভেশের কাছে।
৯৫.
” কিরে প্রিয়ন্তি কাপড়চোপড় গুছাচ্চিসনা কেনো? ট্রলিতে কাপড় রাখতে রাখতে প্রিয়ন্তির দিকে চেয়ে আছে অর্ষা উত্তরের আশায়। কিন্তু প্রিয়ন্তির কোনো হেলদোল নেই। প্রিয়ন্তির মুখে স্পষ্ট মন খারাপের ছায়া। অর্ষা প্রিয়ন্তির কাছে গিয়ে প্রিয়ন্তির কাঁধে হাত রেখে আদুরে কন্ঠে বললো,”কিরে প্রিয় তোর মন খারাপ? কি হয়েছে তোর কখন থেকে দেখছি চুপচাপ। প্রিয়ন্তি জোরপূর্বক হেসে বললো,”নারে আমি ঠিক আছি। ঘুম পাচ্ছে। আমি যাই বিছানায় শুয়ে পড়ি..প্রিয়ন্তি যেতেই অর্ষা মনে মনে বিলাপ করছে,”হাসিখুশি মেয়েটার হঠাৎ কি হলো?
৯৬.
আভেশ আরেকবার ভালোভাবে ভেবে দেখ।
“আমি ভেবেই ডিসাইড নিয়েছি প্রান্তিক।
” ছারিনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। প্রান্তিকের কথা শুনে আভেশ অবাক হয়ে বললো,কিইই?
“হুম ঠিকি বলছি।
” কিন্তু প্রান্তিক আমি যতটুকু জানি ছারিনের বাবা এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবার মানুষতো নন। প্রান্তিক ডেবিল স্মাইল দিয়ে বললো,”মেয়ের আর নিজেদের মানসম্মান বাঁচাতেতো এমনটা করারই ছিলো।
“মানে? প্রান্তিক বিছানায় বসে আভেশের কাঁধে হাত রেখে বললো, “ইশতিয়াক কে চিনিস?
” হুম ওইতে আমাদের বেইচের ছিলোনা?
“হুম ওই ইশতিয়াকই।
” ইশতিয়াকের সাথে ছারিন কোথথেকে আসলো? প্রান্তিক হেসে বললো,”ওইটাইতো ব্যপার। ইশতিয়াকের সাথে ছারিনের শারীরিক সম্পর্ক ছিলো। আভেশ অবিশ্বাস্য চোখে বললো,”কি!
“হুম। তো ছারিনের এই সম্পর্কে আমি জেনে যায়। তাই ছারিনের সাথে ঘনিষ্ট অবস্থায় একটা ভিডিও আমাকে পাঠায় একজন। আর ওইটা আমি ছারিনের বাবা আর ইশতিয়াকের বাবাকে পাঠায়। এছাড়া কিছু করার ছিলোনা আমার। কারণ ছারিন প্রেগন্যান্ট। আর আমি চাইনা ওদের ভুলের মাশুল বাচ্চাটা দিক। আভেশ প্রান্তিকের কথা শুনে অবাকের শেষ পর্যায়। তাও অতি কষ্টে কথাগুলো হজম করে নিয়ে বললো,” অথচ লোক কে দেখাতে ছারিন তোর পিছে ঘুরঘুর করতো। প্রান্তিক শব্দ করে হেসে বললো,”লোক দেখানো নয়। আবেগ।
৯৭.
তাইফা কলেজ থেকে এসে বাসায় তন্ন তন্ন করে একটা এলবাম খুঁজছে কিন্তু সে পাচ্ছেইনা। তাইফার হঠাৎ মনে হলো যে তার মায়ের পার্সোনাল আলমারিতে থাকবে বোধহয়। তাইফা তড়িঘড়ি করে আলমারির চাবি খুঁজতে লাগলো। অবশেষে বালিশের নিচে পেলো৷ মুখে অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে এলে,”Thank God” তাইফা আলমারি খুলতেই সবকিছু নাড়িয়ে এলবামটা খুঁজলো হঠাৎ চোখ যায় লাল পট্টি বাঁধা একটা কাপড়ে। কাপড় না ঠিক বলতে গেলে একটা ব্যাগ। তাইফা ব্যাগটা খুলতেই দেখলো কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি। তাইফা এলবামে থাকা প্রত্যেকটা মানুষের ছবিতে হাতিয়ে হাতিয়ে বললো,”কতে সুন্দর ছিলো পরিবারটা” এইভাবে না ভাঙ্গলেওতো পারতো। কতো মিশুক আর ভালোবাসা দিয়ে ঘেরা ছিলো ভাই বোনের সম্পর্ক। এইভাবে তারা আলাদা না হলেও পারতো। তাইফা বিরক্তকর কন্ঠে ভাবলো,”ইশশ এইখানেতো একটাও বড় হওয়ার পরের ছবি নেই ওদের তাহলে কিভাবে চিনবো?
৯৮.
প্রান্তিক ছাঁদে যাবে হঠাৎ মনে হলো অর্ষা কি করছে একবার দেখে আসি। প্রান্তিক অর্ষার রুমের সামনে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলো প্রিয়ন্তু ঘুমাচ্ছে আর অর্ষা রুমে নেই। প্রান্তিক রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়াবে হঠাৎ দেখলো অর্ষা ওয়াশরুম থেকে ভেজা সদ চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বের হচ্ছে। মুখে পানির শিশির। চুল বেয়ে টুপটুপ করে পিছে পানি পড়ছে৷ যার ফলে জামাটা ভিজে কিছুটা লেপ্টে গেছে৷ এ যেনো এক কেশবতী। প্রান্তিক আনমনে হেসে অস্ফুটে বললো,”মাশাল্লাহ”
চলবে….