এক_তুমিতে_আসক্ত #পার্টঃ১৪,১৫

0
2559

#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৪,১৫
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
পার্টঃ১৪
৯৯.

অর্ষা প্রান্তিক পাশাপাশি হাঁটছে আর আভেশের পাশে হাঁটছে প্রিয়ন্তি। আভেশ আড়চোখে প্রিয়ন্তিকে দেখছে। দেখেই মনে হচ্ছে মেয়েটার মুখটা মন খারাপে শুকনো হয়ে আছে। আভেশ হোট করে প্রিয়ন্তির হাত ধরে হাঁটতে লাগলো। আচমকা আভেশ এমনভাবে হাত ধরাতে কিছুটা অবাক হলো প্রিয়ন্তি কিন্তু তাও কিছু বললোনা কারণ তার ভালো লাগছে আভেশের এই স্পর্শ। আর অন্যদিকে প্রান্তিক অর্ষার হাসি হাসি মুখ দেখছে। হঠাৎ অর্ষা প্রান্তিকের হাত ধরে লাফিয়ে বললো,”ফুচকাআআআআ…অর্ষার এমন বাচ্চামো কান্ডে উপস্থিত আভেশ আর প্রিয়ন্তিও প্রথমে চমকে উঠলো পড়ে ফিক করে প্রান্তিক সহ সবাই হেসে ফেললো। অর্ষা এতোক্ষণে খেয়াল করলো যে সে অতিরিক্ত আনন্দে প্রান্তিক কে ঝাপটে ধরেছিলো তাই ঠোঁট উল্টিয়ে বললো, “সবাই হাসছেন কেনো এইভাবে? প্রিয়ন্তি পাশ থেকে বললো,” এইসব পরে হবে আগে চল গিয়ে ফুচকা খায়। প্রান্তিক আড়চোখে অর্ষার দিকে তাকিয়ে বললো,”বুঝিনা মেয়েরা এতো ফুচকা ফুচকা করে কেনো? কি আছে এই ফুচকাতে? এর জন্যই মানুষ অসুস্থ হয়ে পরে। প্রান্তিকের কথায় আভেশ ফোঁড়ন কেটে বললো,”আরে ভাই প্রান্তিক আমরা এইসব বুঝবোনা। সব ওই ফুচকা ওয়ালা মামাস ম্যাজিক। আভেশ এমনভাবে কথাটা বললো, যে অর্ষা আর প্রিয়ন্তি না হেসে পারলোনা।

১০০.

“ইশশ মেয়েরা কিভাবে যে এইসব কুখাদ্য খায় সৃষ্টিকর্তায় জানে। প্রান্তিকের এই কথায় অর্ষা মুখ চোখ কালো করে বললো,” প্রান্তিক ভাইয়া এইসব ফুচকা সবাই খেতে পারেনা বুঝলেন? ঝাল কিনা!
প্রান্তিক দেখছে অর্ষা ফুচকা খেতে খেতে চোখ বুঝে দুই হাত দিয়ে ওয়াও দেখিয়ে আঁড়চোখে তাকে উদ্দেশ্য করেই কথাটা বলছে। কারণ প্রান্তিক ফুচকা একটাও খায়নি প্লেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ প্রান্তিক বললো,”Challenge ধরবে? আমি তোমার আগে এই এক প্লেট ফুচকা খাবো কিন্তু এরপর আমি যা চাইবো তোমাকে তাই দিতে হবে। রাজি? অর্ষা মনে মনে ভাবলো,”ওনিতো খেতেই পারবেনা। যে ঝাল…। তারপর বললো, হুম রাজি।

১০০.

আভেশ আর প্রিয়ন্তি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। একটু দূরেই প্রান্তিক আর অর্ষা ফুচকা ওয়ালার কাছে। অর্ষা ফুচকা খেয়েই যাচ্ছে তা এইখান থেকে বেশ ভালোই দেখতে পাচ্ছে আভেশ। আভেশ সামনে দৃষ্টি দিয়ে দুই পকেটে হাত গুঁজে প্রিয়ন্তির দিকে না তাকিয়ে প্রিয়ন্তিকে বললো,”কি হয়েছে তোর? প্রিয়ন্তি আনমনে বললো আমার আবার কি হবে? কিছুই হয়নি।
“তোর যদি কিছু নাই হয় তাহলে মুখটা এমন পেঁচার মতো করে রাখলি কেনো? প্রিয়ন্তি এইবার আভেশের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আভেশকে বললো,” আভেশ ভাই আদৌ কি আমার ভালো মুড থাকার কথা?
“মানে?
” মানে কিছুনা। জানিনা তুমি বুঝেছো নাকি বুঝেও না বুঝার ভান করছো।
“দেখ প্রিয় আমি তোর কথার মানে কিছুই বুঝেনি আর বুঝতে চায় ওনা। সো পাগলামো কম কর। যা করছিস ঠিক নয়। প্রিয়ন্তি তাচ্ছিল্যের একটু মুচকি হাসি দিয়ে বললো,” মন কি বেঁধে রাখার জিনিস আভেশ ভাই? আভেশ কিছুটা গম্ভীর মুখে বললো,”প্রিয় তুউ ভুলে যাসনা আমি তোর বড় হয় সো একটু হলেও রেসপেক্ট কর।
“ভালোবাসা কি বড় ছোট বুঝে আভেশ ভাই? সবার একটা ছোট মন আছে। আর সবারই ভালোবাসার অধিকার আছে তুমি আমার থেকে সেই অধিকার বঞ্চিত করতে পারোনা। হঠাৎ দূর থেকে অর্ষার চিৎকার কানে আসলো এদিকে। অর্ষা চিৎকার করে ডাকছে,” আভেশ ভাই আপনারা তাড়াতাড়ি এদিকে আসুন।

১০১.

আভেশ আর প্রিয়ন্তি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাশেই বার বার পানির বোতল মুখে দিচ্ছে প্রান্তিক৷ অতিরিক্ত ঝাল খেয়ে চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে তার। অর্ষা পাশে চুপসে আছে। কারণ একটু আগে প্রিয়ন্তি দৌঁড়ে এসে তাকে বলেছে যে “অর্ষা তুই এইটা কি করলি? অর্ষা হাসতে হাসতে তখন বলেছিলো,ওমা কি করলাম? ভাইয়া আমার সাথে ফুচকা খাওয়ার বাজি ধরেছে। এরপর প্রিয়ন্তি তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে পানি এনে দেয় প্রান্তিকের হাতে। প্রান্তিক গটগট করে খেতে শুরু করে। এরপর অর্ষাকে বললো,” আরে ভাইয়া একদম ঝাল খেতে পারেনা। ভাইয়ার প্রবলেম আছে। ব্যাস হয়ে গেলো চুপ অর্ষা। সব শেষে অর্ষা আর প্রান্তিক বসে সামনে আর আভেশ প্রিয়ন্তি বসে পেছনে। আভেশ প্রিয়ন্তির দিকে না তাকিয়েও এতটুকু বুঝতে পারছে যে প্রিয়ন্তি তার দিকে তাকিয়ে আছে। আভেশ কিছুতেই তাকাবেনা প্রিয়ন্তির দিকে তা পণ করলো। তাকালেই যেনো সর্বনাশ। আর প্রান্তিকের ঝাল কিছুটা কমলেও তার মুখের লাল আভা চলে যায়নি। অর্ষা ঘাবড়ে আছে সে আসলেই না জেনে কি একটা অপরাধ নায় করে ফেললো। মনে মনে ভীষণ অনুতপ্ত প্রকাশ করছে।

১০২.

“তাইফা তুই আমার আলমারি ধরেছিলি? সাহেরা বেগমের কথায় চমকে যায় তাইফা। সে আমতা আমতা করে বললো, ” আমি কেনো আলমারি ধরতে যাবো মামনি? সাহেরা বেগম আর কিছু বললেন না। পা বাড়ালেন রান্নাঘরে। তাইফা সর্বদাই চুপচাপ স্বভাবের মেয়ে। সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকে। বই পড়া এক কথায় তার নেশা। গম্ভীরর্যের জন্য মাঝে মাঝে তাইফাকে এক প্রকার টিচারের মতো লাগে।

১০৩.

গাড়ি থেকে প্রিয়ন্তি আভেশ নেমে যাওয়ার পর অর্ষা নামতে যাবে এমন সময় প্রান্তিক অর্ষার হাত ধরে ফেলে। অর্ষা ঘাবরে তাকায় প্রান্তিকের দিকে। প্রান্তিক বাঁকা হেসে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই অর্ষার ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দেয়। ক্ষানিক পর প্রান্তিক অর্ষাকে ছেড়ে দিয়ে নেমে পরে গাড়ি থেকে৷ হোট করে কি থেকে কি হয়ে গেলো! অর্ষা এখনো একটা ঘোরে রয়েছে। হঠাৎ প্রান্তিক গাড়ির গ্লাসে কড়া নেড়ে অর্ষার দিকে একভাবে চেয়ে বললো,”তুমি বলেছিলে বাজিতে জিতে গেলো আমি যা বলবো তাই হবে। তাই আমি আমার জিনিস করে নিয়েছি। অর্ষা অবাক.. এর জন্য এতো ঝাল জিনিস খেয়েছে! এমন জানলে সে কখনোই বাজি ধরতেনা।

১০৪.

“অর্ষা তোর কি হয়েছে? শুয়ে শুয়ে অর্ষার দিকে তাকিয়ে বললো প্রিয়ন্তি।
” কই কিছুনাতো।
“মন খারাপ? কাল চলে যাবি বলে?।
” হুমরে।
“আচ্ছা মন খারাপ করিসনা ঘুমিয়ে পর। এরপর প্রিয়ন্তি অর্ষাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে। অর্ষার চোখে ঘুম নেই। রাতের ঝিঁ ঝিঁ পোকা ডাকছে। প্রান্তিক এইটা কেনো করলো এইটা ভাবতেই অর্ষার মুখ মলিন হয়ে যায়।

১০৫.

রাহেলা বানু সকাল থেকে বিভিন্ন রকম পিঠা বানাচ্ছে। অর্ষাদের সাথে দিয়ে দিবে বলে। নাফিস সরদার বাজার থেকে বড় বড় দুইটা কাতলা মাছ আর ইলিশ মাছ এনেছে মেয়েকে ইলিশ মাছের মাথা আর কাতলা মাছের কালিয়া খাইয়ে দেওয়ার জন্য। অর্ষা এসে রাহেলা বানুকে জড়িয়ে ধরে। রাহেলা বানু উনুনে ভাত বসাতে বসাতে হেসে বললো,” কি মা আমার মন খারাপ তোর?

“হুম মা।
কেনো?
” তোমাদের ছাড়া ভালো লাগেনা আম্মা।
“এইসব কইলে হইবে মা? পড়াশোনা করতে হবেতো। অর্ষা তার মাকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে বললো, ” হুম মা সেইতো।

চলবে…

#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৫
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ

১০৬.

আফ্রা কান্না করতে করতে শেষ৷ অর্ষার চোখেতো আগে থেকেই পানি টপটপ করে পড়ছে। মা বাবা বোনকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে বলে। কিন্তু তাকেতো যেতেই হবে। পড়াশোনার জন্য।

“আম্মা তুমি কাঁদো ক্যান? তুমি কাইন্দোনা তুমি কাঁদলে আমরা আরো বেশি কষ্ট পামু। অর্ষা এইবার কেঁদে তার মাকে জড়িয়ে ধরলো৷ প্রান্তিক প্রিয়ন্তিকে ইশারা করতেই প্রিয়ন্তি গিয়ে কোনোরকম অর্ষাকে টেনে নিজের কাছে মিশিয়ে সামলানোর চেষ্টা করছে। প্রান্তিক নাফিস সরদারকে আলাদা নিয়ে এনে বললো,” খালুজান জানিনা আমার মন কেনো এতো কুহু ডাকছে তবে আমার মন বলছে সাহিল ও তার বাবা কিছু না কিছু করবেই। সাবধানে থাকবেন।
“হুম বাবা কিন্তু তুমি আমাদেরকে নিয়ে চিন্তা করোনা। আমার মেয়েটারে দেইখা রাইখো। প্রান্তিক নাফিস সরদারের হাত মুঠো করে নিয়ে ধরে বললো,” অর্ষা আমারিতো আমানত।

১০৭.

প্রিয়ন্তি অর্ষাকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ির বাহিরে এলো। প্রিয়ন্তির মনটা কষ্টে ছিঁড়ে যাচ্ছে । কারণ এইখানে দুইটা গাড়ি। একটা তাদের আরেকটা আভেশের। আভেশ যে পাড়ি জমাবে দেশের বাইরে। প্রিয়ন্তি আভেশের সামনে যেতেই আভেশ অন্যদিকে চোখ সরিয়ে নেই। কারণ সে জানে এখন প্রিয়ন্তি তাকে নানাধরণের প্রশ্ন করবে।

“এসেছিলাম একসাথে গাড়ির পিছু বসে কিন্তু কি কপাল দেখো যেতে হবে একা” প্রিয়ন্তি আভেশের দিকে এক ধ্যানে চেয়ে বললো। আভেশ এইবার প্রিয়ন্তির চোখ রেখে কিছু বলতে যাবে তার আগেই চোখ সরিয়ে নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে ফেললো। মনে মনে বলছে, “আমি কি করে বলবো তোকে প্রিয় যে,তোর চোখে চোখ রেখে কথা বলার মতো সাহস আমার নেই। আবার প্রিয়ন্তি বলতে লাগলো,

” বুঝিনা আল্লাহ আমার মনটাকে অন্য কারো কাছে রাখতে দিলোইবা কেনো? আর দিলোই যখন তাহলে একটা মানুষকে কেনো দিলো? যেই মানুষটার মনে আমার জন্য একটু জায়গা পর্যন্ত নেয়…এইসব বলেই প্রিয়ন্তি নিরবে চোখের পানি ফেলতে থাকে। আভেশের এইসব সহ্যই হচ্ছেনা কেনো যেনো। আভেশ অস্ফুটে বললো, “প্রিয় প্লিজ কান্না স্টপ কর প্লিজ।

” কেনো আভেশ ভাই আমার চোখের পানিটাকেও কি এখন নাটক আর বিষ লাগছে?
“প্রিয়……
” ঠিকিতো বলেছি আভেশ ভাই। ঠিক আছে কাঁদবোনা কারো জন্য কাঁদবোনা। কথা দিচ্ছি আজ থেকে কখনো এই অসহনীয় প্রিয়ন্তি তোমার সামনে আসবেনা। এইটা বলেই প্রিয়ন্তি চোখের পানি মুছে চলে যায় গাড়ির ভেতরে। আর এইদিকে আভেশের মুখে মিনমিনিয়ে বেরিয়ে এলো,”হে আল্লাহ এখন কি যে করবো। হঠাৎ আভেশ কি একটা ভেবে যেনো হেসে ফেলে আর মনে মনে বলে,”অতি নিকটেই আছি তোর।

১০৮.

তাইফা ট্রলি গুচাচ্ছে। সাহেরা বেগম মন খারাপ করে ওর পাশে বসে আছে।

“মামনি তুমি এমন মন খারাপ করে থাকলে আমি কিভাবে যাবো বলোতো?
” নারে মা মন খারাপ নয় আমার। আসলে তোকে ছাড়াতো কখনো একটা দিন ও থাকেনি তাই…
“মামনি তুমি মন খারাপ করিওনা প্লিজ৷ কলেজ যখনি ছুটি দিবে তখনি আমি চলে আসবো।
” হুম সেতো আসবিই। শুন..ওইখানে গিয়ে বাইরের খাবার একদম খাবিনা। আর আইসক্রিম ভুলেও খাবিনা। আর হোস্টেলের বুয়াকে বলিস ঝাল কম দিয়ে রান্না করতে। দরকার হলে টাকা একটু বেশি দিবে ওনাকে। মায়ের এতো সতর্কবাণী শুনে তাইফা ফিক করে হেসে বলে,”মামনি তুমিতো দেখছি আমাকে একদম করলা বানিয়ে দিবে। এইটা খাবিনা ওইটা খাবিনা। সাহেরা বেগম মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বললো,”তোর বাবা থাকলে হয়তো তোকে কখনো যেতেই দিতোনা। তাইফা একটা গোপন দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

১০৯.

আভেশ চলে যাওয়াতে প্রান্তিকের তেমন খারাপ লাগেনি কারণ সে জানে বিদেশে কাজ মানেই অলরাউন্ড। সেইখানে ইমিডিয়েট বলে একটা কিছু থাকবে এইটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রিয়ন্তির মনটা আকাশ ছোঁয়া মেঘ। তার একদম ভালো লাগছেনা৷ আর এইদিকে অর্ষা কান্না করেই যাচ্ছে। প্রান্তিক একটার পর একটা টিস্যু পেপার দিয়ে যাচ্ছে। প্রান্তিক আড়ঁচোখে অর্ষার দিকে তাকালো। ইশ নাক মুখ লাল হয়ে গেছে কান্না করে। এইবার প্রান্তিক একটু পিছে তাকালো দেখলো প্রিয়ন্তি সিটে মাথা হেলান দিয়ে চোখ বুজে আছে। তাই তড়িঘড়ি করে অর্ষাকে নিজের কাছে মিশিয়ে নেই। অর্ষার মাথা প্রান্তিকের বুকে। অর্ষা কান্না চোখে তাকিয়ে আছে প্রান্তিকের দিকে। প্রান্তিক ঠোঁটে আঙুল চেপে ফিসফিসিয়ে বললো,”চুপ”

১১০.

প্রান্তিকের বুকে মাথা রেখে সেই কখন ঘুমিয়ে পড়েছে অর্ষা সে হয়তো নিজেও জানেনা। প্রান্তিক অর্ষার ঘুমন্ত চেহারা দেখে মুচকি হেসে ড্রাইভিং করতে লাগলো। প্রিয়ন্তি বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। হঠাৎ প্রান্তিকের সামনে কেউ হাত নাড়াচ্ছে দেখে তাড়াতাড়ি গাড়ির ব্রেক কষে সে। আর একটুর জন্য বড় কিছু হয়নি। গাড়ি ধাক্কার ফলে প্রিয়ন্তি অর্ষা ঘুম থেকে উঠে যায়। অর্ষা প্রান্তিকের বুকে ঘুমিয়ে ছিলো ভাবতেই হুড়মুড় খেয়ে তাড়াতাড়ি নিজেকে সামলায়। প্রিয়ন্তি পেছন থেকে বিরক্ত নিয়ে বললো,”আরে ভাইয়া কি হয়েছে দিলেতো ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে?। প্রান্তিক রেগে বললো,”তোরা একটু গাড়িতে বসতো আমি আসছি। প্রান্তিক গাড়ি থেকে নেমে মেয়েটির সামনে গিয়ে বললো,”সামান্যতন ম্যানার্স নেই? রাস্তার মাঝে এসে দাঁড়িয়ে আছেন।
“প্লিজ আমাকে হেল্প করুন প্লিজ। প্রান্তিক হঠাৎ খেয়াল করলো যে মেয়েটির পায়ে ভীষণ আঘাত পেয়েছে। প্রান্তিক বিচলিত হয়ে বললো,” ওহ মাই গড আপনার পায়ে কি হয়েছে? পায়েতো রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
“আসলে একটা গাড়ি এক্সসিডেন্ট এ এমন হয়ে গেছে। প্লিজ আমাকে ঢাকা অব্দি ছেড়ে দিন প্লিজ৷ প্রান্তিক প্রিয়ন্তি আর অর্ষাকে হাক ছেড়ে ডাকলো। প্রান্তিকের ডাক শুনে তড়িঘড়ি করে ওরা নেমে প্রান্তিকের কাছে আসলো৷ এসে মেয়েটির এমন অবস্থা দেখে বলল,” ওহ মাই গড। ভাইয়া ওনার কি হয়েছে?
“ওফ প্রিয় এতো প্রশ্ন না করে আগে ওনাকে ধরে গাড়িতে নিয়ে বসা। অর্ষা আর প্রিয়ন্তির কাঁধে দুই হাত রেখে মেয়েটি আস্তে আস্তে গাড়িতে গিয়ে বসলো৷ অর্ষা বললো,” ওনাকে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন ওনার পায়ের অবস্থা সুবিধার নয়। প্রান্তিক বললো,”হুম আচ্ছা চলো সামনে একটা হসপিটাল আছে ওইখানে নিয়ে যায়। এরপর গাড়ি গিয়ে থামলো হসপিটালের সামনে। মেয়েটির পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

“আপু গাড়ি অব্দি হেঁটে যেতে পারবেন? নাকি আমরা নিয়ে যাবো।
” হেল্প লাগবে বোধহয়। তারপর অর্ষা আর প্রিয়ন্তি মেয়েটিকে ধরে নিয়ে গাড়িতে উঠায়। প্রান্তিক অর্ষার সিট বেল্ট লাগাতে লাগাতে বললো,”ঢাকা কি আপনাদের নিজের বাসা?
“না ওইখানে বন্ধুর বাসায় যাচ্ছি।
” ওহ। প্রান্তিক গাড়ি ড্রাইভ স্টার্ট করলো।

“ইশশ কি গরম” অর্ষার মুখে এই কথা শুনে প্রান্তিক গাড়ি থামিয়ে দেয়। অর্ষা প্রান্তিকের দিকে তাকিয়ে বললো,”আরে আবার গাড়ি থামালেন কেনো? প্রান্তিক কোনো উত্তর না দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে কোথায় যেনো গেলো। মিনিট ক্ষানিক পরে প্রান্তিক হাতে ৫টা আইসক্রিম নিয়ে আসে। অর্ষার হাতে তিনটা দিয়ে বললো,”এই নাও খাও। আরেকটা প্রিয়ন্তি কে দিলো। বাকি একটা মেয়েটিকে দিলো। যদিও সে বারংবার মানা করেছিলো। অর্ষা অবাক হয়ে দেখছে প্রান্তিক কে। আর মনে মনে ভাবছে,”লোকটা এমন কেনো? না চাইতেও বুঝে যায় যে কি চায় আমার। অর্ষা মনের কথা মনে রেখে বললো,”আপনি খাবেন না? প্রান্তিক ড্রাইভ করতে করতে বললো,”গাড়ি চালাচ্ছিতো। অর্ষার যেনো কি হলো সে আইসক্রিম এর প্যাক খুলে নিজের হাত দিয়ে প্রান্তিকের মুখের সামনে ধরলো। প্রান্তিক যেনো এইটাই চাইছিলো সে কোনো কথা না বলে চুপিসারে আইসক্রিম খেয়ে নিলো। ঢাকা এসে পৌঁছাতেই মেয়েটি নেমে গেলো৷ নেমে বললো,”ধন্যবাদ সাহায্য করার জন্য। প্রান্তিক হেসে বললো,”আরে না ধন্যবাদের কিছু নেই। এইটাতো আমাদের দায়িত্ব। অর্ষা পাশ থেকে বললো,”আরে আপু তোমার নামটাইতো জানা হলোনা। তোমার নাম কি?
“আমার নাম মিফতাহুল তাইফা।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here