এক_তুমিতে_আসক্ত #পার্টঃ১৮,১৯

0
2324

#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৮,১৯
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
পার্টঃ১৮

১২৫.

কি হয়েছে আম্মু স্টোর রুম পরিষ্কার করছো কেনো?

“আসলে কি বলতো একটা মেয়ে রুমটা ভাড়া নিয়েছে।

” হোয়াট? তাও স্টোর রুম? ছাঁদে চিলেকোঠার রুমটা দিলেইতো পারতে।

“আরে রেগে যাচ্ছিস কেনো? আসলে একা একটা মেয়ে উপরে একা দেয়নি। বিপদে পড়েছে। এই শহরে নতুন। আজকে মেয়েটার জায়গায় প্রিয়ন্তি হলে কি এমন করতাম?

” আম্মু মেয়েটাকে আমরা চিনিনা জানিনা হোট করে এমনভাবে বাসায় উঠতে দেওয়া ঠিক হবে?

“তুই এতো চিন্তা করিসনাতো। দেখলামতো মেয়েটা ভালোই৷ শান্ত সৃষ্ট।

” আম্মু তোমার না একটাই প্রবলেম মানুষের উপর দেখে ভেতর বুঝো। তুমি থাকো ভাড়াটে নিয়ে আমি গেলাম। অর্ষা প্রিয়ন্তি তাড়াতাড়ি নিচে নেমে বাইরে এসো।

প্রান্তিক হাক ছেড়ে ওদেরকে ডেকে বেরিয়ে গেলো বাইরে। মনিশা চৌধুরী কপালে হাত রেখে বলে,”হয়ে গেলো! ছেলেটা রেগেই গেলো অবশেষে আমি জানতাম ও এমন করবে কিন্তু একটা মেয়ের অনুরোধ ওতো ফেলতে পারিনা এইসব ভেবেই তিনি আবার স্টোর রুমের কাজে মন দিলেন।

১২৬.

অর্ষা তাড়াহুড়ো করে প্রান্তিকের পাশে বসে দ্রুতগতিতে বললো,”তাড়াতাড়ি চলুন লেইট হয়ে গেছে অলরেডি।

“প্রিয় কোথায়?

” যাবেনা।

“কেনো?

” ওর নাকি ভালো লাগছেনা। তাড়াতাড়ি চলুন আজ ইমপরটেন্ট ক্লাস আছে”।

অর্ষা জানালার বাইরে মুখ দিয়ে এক মনে বাইরে তাকিয়ে আছে। অর্ষার অবাধ্য চুলগুলো বার বার প্রান্তিকের চোখে মুখে পড়তেই আঁড়চোখে অর্ষার দিকে তাকায় প্রান্তিক। প্রান্তিক মনে মনে বিড়বিড় করতে থাকে,”মেয়েটা আসলেই নিষ্পাপ”।

“অর্ষা…

বাইরের প্রকৃতি দেখতে অর্ষা এতোটাই ব্যস্ত ছিলো যে প্রান্তিকের অস্ফুট ডাক তার কান অব্দি পৌঁছায়নি। প্রান্তিক অর্ষার দিকে আবার তাকিয়ে ড্রাইভ করতে করতে বললো,” অর্ষা….

“ক্ কিই কই কি হয়েছে?

” আরে হচকাচ্ছো কেনো? কিছু হয়নি। তোমার কি ফুল বেশি পছন্দ?

“আমার! কেনো বলুনতো?

” বলো”

“আরে গম্ভীর হচ্ছেন কেনো? বলছি। আমার বেলীফুল ভীষণ পছন্দ “।

” মানুষের গোলাপ পছন্দ আর তোমার বেলী! কেনো বলতো?

“জানিনা কেনো পছন্দ। তবে বেলী ফুলে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে আমার। বেলী ফুলের নামটার সাথে এক গভীর সম্পর্ক যেনো খুঁজে পাই। কেমন একটা সাহিত্য পাওয়া যায় লাগে।

” গোধূলি লগ্নে প্রকৃতিতে মিশে থাকা একটু আদো আদো ক্লান্ত মোরে দিও,
সাথে তুমি থেকো মোর প্রিয়”

অর্ষার মুখে সাহিত্য ভাষায় এমন ছন্দ মাখা কথা শুনে প্রান্তিক বললো,”বাহ্ কি সুন্দর গভীর কথা। ক্লান্তি হোক তবে বেলী ফুল দিয়েই সব ক্লান্তি মুছে দিও” অসাধারণ।

“আপনি অর্থ বুঝে গেছেন?

” হুম কি মনে হয় আমাকে আমি পারিনা কিছু?

“আরে তা মনে হবে কেনো? আপনি হলেন মিস্টার…. প্রান্তিক ভ্রু কুঁচকে বললো,” কি? অর্ষা আমতা আমতা করে বললো,”না না কিছুনা। গাড়ি থামান ভার্সিটি এসে গেছি।

১২৭.

“কিরে মুখ এমন কালো করে আছিস কেনো?

” এমনি”

“শৈবাল তুই আবার মেয়েদের মতো ঢং করা কখন শুরু করলি গার্লফ্রেন্ড প্যারা টেরা দিছে নাকি?

শৈবাল প্রান্তিকের দিকে অসহায় ফেইস নিয়ে বললো,” প্রান্তিক তুইও? প্রান্তিক হেসে বললো,”আচ্ছা বলতো ব্যাপারটা কি? মন খারাপ কেনো?

“মন খারাপ হবেনা? বাসা থেকে মেয়ে দেখছে ”

“হুম তো? বিয়ে করে নে। আর সত্যিইতো বয়সতো কম হয়নি এখনতো বিয়ে করাই উচিৎ। নয়তো আর দাদা ডাক শুনতে পারবিনা। প্রান্তিকের এমন গা ছাড়ানো কথা শুনে শৈবাল একটু বিরক্ত নিয়ে বললো,” প্রান্তিক হয় কোনো সলিউশন দে নয়তো চুপ থাক। আর আমার বয়স হয়ছে তুমি কি ফিডার খাও বাবু? শৈবালের এমন কথা শুনে প্রান্তিক হো হো করে হেসে বলে,”নাগো তবে খাবে আমি না ছারিন এইটা বলেই প্রান্তিক আর শৈবাল অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। হঠাৎ শৈবাল হাসি থামিয়ে বললো,”কিরে প্রান্তিক তুইতো এখনো বলিসনি যে তুই কিভাবে জানতি যে ছারিনের বিয়ে হবে।

এরপর প্রান্তিক সব খুলে বলে শৈবাল হা হয়ে তাকিয়ে অবাক সুরে বললো,”কি!

“হুমরে এইটাই আসল কথা”। আমি যদি ভিডিওটা না পাঠাতাম তাহলে একটা নিষ্পাপ বাচ্চা পৃথিবীর আলো দেখতে পেতোনা।

” যাক বাবা ভালোই করেছিস। তবে ছারিন এমন আমি ভাবতেও পারিনি।

“মানুষের উপর দেখে কি আর ভেতর যাচাই করা যায় শৈবাল?

” না তা যায়না ঠিকি বলেছিস। চল অনিকদের কাছে যায়।

১২৮.

‘এই যে মিস চাশমিস লুক এট মি’ এইটা বলেই কোনো এক ছেলের শিষ দেওয়ার আওয়াজ শুনে থমকে যায় তাইফা। পাশ থেকে রিমি মাথা নিচু করে হাঁটতে হাঁটতে বললো,’তাফু কোনো জবাব দিসনা। সোজা হেঁটে যা।

“কেনো? ওনারা অন্যায় করবে আর আমরা প্রতিবাদ করবোনা?

” আরে ওনারা আমাদের সিনিয়র ভাইয়া’

“এই যে মিস এতো ভাব কেনো দেখাও? একটু ছোঁয়ে দিলেইতো ঝড়ে যাবে। এমন নোংরা কথা শুনে হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে দাঁড়িয়ে যায় তাইফা। রিমি হাত ধরে বলছে,’প্লিজ তাফু কিছু করবিনা চল প্লিজ। তাইফা হাত দিয়ে চশমাটা উপর করে ছেলেগুলোর দিকে এগিয়ে বললো,” কে বলেছপ কথাটা? ছেলেগুলোর মধ্যে একটা বিশ্রী হাসি দিয়ে আরেকটাকে বললো,”দেখ মামনির রাগ হয়েছে। তাইফা আবার রেগে চিৎকার করে বললো, “আমি জানতে চাইছি কথাটা কে বলেছে। অতঃপর একটা ছেড়ে বুক ফুলিয়ে বললো,” আমি বলেছি কি করবিরে?

ঠাসসস…ভার্সিটির প্রত্যেকটি দেয়ালে এই থাপ্পড়ের আওয়াজটা প্রতিধ্বনিতো হচ্ছে। ছেলেটা গালে হাত দিয়ে ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে উঠলো,” তোর এতো বড় সাহস আমাকে মারলি? এইটা বলে যেই ছেলেটা তাইফাকে মারতে গেলো হোট করেই ছেলেটির হাত ধরে ফেলে শৈবাল। ছেলেটি শৈবালকে দেখেই বললো,”ভাই ওনি আমারে থাপ্পড় মারছে।

“শৈবাল মেইরি সব সহ্য করতে পারে কোনো মেয়ের অসম্মান নয়। এইটা বলেই শৈবাল ছেলেটাকে মারতে লাগলো। সে একটু দূর থেকে সব লক্ষ করছিলো তাই তাইফাকে মারার আগেই হাত ধরে ফেলেছে। হঠাৎ দৌঁড়ে প্রান্তিক এসে বললো, ” আহা শৈবাল কি করছিস ছেড়ে দে’

প্রান্তিক শৈবালকে থামাতেই ছেলেটা পালালো৷

‘শৈবাল তুই কি করতে যাচ্ছিলি? ছেলেটাতো মরেই যেতো।

‘ওর সাহস কি করে হয় ইভটিজিং করার? শৈবালের কথা অনুসারে প্রান্তিক পাশে তাকায় প্রান্তিক আর তাইফা একে অপরের দিকে বিষ্ময় নিয়ে বললে,’আপনি?

চলবে…..

#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৯
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ

১২৯.

শৈবাল একবার প্রান্তিকের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার তাইফার দিকে। শৈবাল প্রান্তিক কে বললো,

‘এই প্রান্তিক তুই ওনাকে চিনিস নাকি?

‘হুম চিনিতো ওইদিন… তাইফা মুচকি হেসে বললো, ‘ভাইয়া আপনি এইখানে? আসলে আমি এই ভার্সিটিতে নিউ আর এই হচ্ছে আমার বন্ধু রিমি [ রিমিকে দেখিয়ে ] রিমি হেসে বললো,’ আরে প্রান্তিক ভাইয়াকে আমি আগে থেকেই চিনি। আমাদের সিনিয়র অনেক। প্রান্তিক তাইফার দিকে তাকিয়ে বললো,’সরি আমাদের ভার্সিটিতে প্রথম এসেই এমন যার্গ এর শিকার হওয়ার জন্য। তাইফা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,

‘ইটস ওকে ভাইয়া। আসলে ভালো যেমন আছে খারাপও আছে।

‘আপনার পা ঠিক আছে?

‘হুম এখন অনেকটা ভালো আছে। আর ভাইয়া প্লিজ আমাকে আপনি বলবেন না। আমি আপনার অনেক জুনিয়র।

‘আচ্ছা তা না হয় আর বললাম না৷ তবে কোনো প্রবলেম নেক্সট টাইমে হলে অবশ্যই আমাকে অথবা শৈবাল মানে আমার ফ্রেন্ড ‘ও’কে জানাবেন। ওর নাম শৈবাল।

প্রান্তিক শৈবালের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলতেই শৈবাল মুচকি হেসে বললো,’হুম অবশ্যই বলবা। ইতিমধ্যেই ইরফান,অনিক এসে পড়েছে।

১৩০.

রাহেলা শুনছো? সাহিলের ভাই বলে জেল থেইকা পালাইছে? ঘরে ডুকতে ডুকতে চিন্তিত হয়ে কথাটা বললেন নাফিস সরদার। রাহেলা বানু আফ্রাকে ঘুম পাড়াচ্ছিলেন। এমন কথা শুনে আতকে উঠেন তিনি৷

‘কি বলেন কিভাবে?

‘জানিনা কিভাবে তবে আমি জানি আমাদের বিপদ আসছে।

‘আপনি চিন্তা কইরেন না। আপনি প্রান্তিকরে কল দিয়া বইলা দেন অর্ষাকে সাবধানে রাখতে।

‘হ ঠিকই কইছো। তুমি দরজা বাড়ি বন্ধ কইরা ঘুমাই থাহো। আমি যায় একটু। এইটা বলেই নাফিস সরদার পায়চারি করতে করতে বেরিয়ে গেছেন বাড়ি থেকে।

১৩১.

প্রান্তিক বলছিলো তাইফার সাথে কিভাবে দেখা হয়েছে তা শুনে শৈবাল অবাক হয়ে বলে,’সব কেমন কাকতালীয়। হঠাৎ প্রান্তিকের ফোনে কল আসে।

‘শৈবাল তোরা সবাই এইখানে বস। আমি একটু আসছি।

‘ওকে।

প্রান্তিক একটু দূরে এসে কল ধরে বললো,

‘আসসালামু ওয়ালাইকুম খালুজান’

‘ওয়ালাইকুম সালাম বাবা’।

‘কেমন আছেন খালুজান? সবকিছু ঠিক আছেতো?

‘না কোনো কিছু ঠিক নেই সব এলোমেলো হয়ে গেছে।

‘মানে? কি হয়েছে খালুজান?

‘সাহিলের ভাই জেল থেকে পালিয়েছে’।

‘কিইই!

‘জানিনা বাপ এখন আমি কি করমু তুমি অর্ষাকে দেইখা রাইখো।

‘খালুজান আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।

‘কি?

‘পরে বলবো আপনারা আগে আসুন ঢাকায়’। কালকেই রওনা দিন আপনারা বাকি কথা আসার পর হবে।

‘কিন্তু…

‘না খালুজান আর কোনো কিন্তু নয়৷ অলরেডি অনেক রিস্কে আছে অর্ষা। আর আমি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করছি যেইভাবেই হোক সাহিলের ভাইকে ধরতে হবে’।

‘আচ্ছা বাবা। সাবধানে থেকো।

‘আপনারাও সাবধানে থাকবেন। ওরা আপনাদের ক্ষতি করার কোনো কমতি রাখবেনা।

প্রান্তিক কলটা কেটে হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে। প্রান্তিক মনে মনে ভাবছে, ‘জানেনা এরপর যা যা হবে তার কোনোটা সহ্য করতে পারবে কিনা অর্ষা। কি জানি এরপর কি রিয়েক্ট করবে অর্ষা।

১৩২.

১০ মিনিট হয়ে গেছে সব স্টুডেন্ট বের হয়ে গেছে ভার্সিটির ক্লাসগুলো থেকে৷ অর্ষার দেখা নেই। বাইকে হেলান দিয়ে বার বার হাত ঘড়িটা দেখছে। এইবার প্রান্তিক কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলো। হঠাৎ মনে পড়ে যায় সাহিলের ভাইয়ের বিষয়টা৷ প্রান্তিক আর এক মুহুর্তও ওয়েট না করে অর্ষার ক্লাসের সামনে গেলো ক্লাসে উঁকি দিয়ে দেখে কেউ নেই৷ প্রান্তিক এইবার পাগলের মতো অর্ষাকে খুঁজতে লাগলো। অর্ষা অর্ষা বলে চিৎকার করছে যা বার বার দেয়ালে প্রতিশব্দ হচ্ছে। হঠাৎ চোখ যায় অর্ষা আসছে বিড়বিড় করতে করতে মাঠ দিয়ে হাঁটছে। প্রান্তিক রেগে চোয়াল শক্ত করে অর্ষার দুই হাতের দুই কাঁধ ঝাঁক দিয়ে বললো,’এই মেয়ে তোমার কোনো ম্যানার্স নেই হুম? সবাই বেরিয়ে এসেছে। তুমি! তুমি কই ছিলে হ্যাঁ? আনসার মি…… প্রান্তিকের চিৎকার শুনে ঘাবরে যায় অর্ষা। সে প্রিন্সিপালরুমে গিয়েছিলো বেতন দিতে। কিন্তু প্রান্তিক হঠাৎ এমন করবে সে ভাবেনি নয়তো বলেই যেতো।

‘এই মেয়ে শুনছোনা আমি কি বলছি? আনসার দাও..

‘আ আস্ আসলে…প্রিন্সিপাল স্যারের কাছো গিয়েছিলাম।

‘বলে গেলে খুব কষ্ট হয়ে যেতো তোমার তাইনা? মানুষকে টেনশনে ফেলে কি শান্তি পাও তুমি হুম?

প্রান্তিক এমনভাবে রেগে কথা বলছে যে অর্ষার মুখে কোনো কথায় আসছেনা। সে কি বলবে ভেবেই পাচ্ছেনা। আসলেই তার বলে যাওয়া উচিৎ ছিলো। কি বলবে এখন কিছুই অর্ষা ভেবে পাচ্ছেনা। প্রান্তিক হেলমেট লাগিয়ে রাগী লুক নিয়ে গম্ভীর ভাবে বললো,’উঠো’

অর্ষা বাইকে উঠতেই প্রান্তিক বাইক স্টার্ট দেয়। কিন্তু প্রান্তিকের গাড়ি চালানো দেখে অর্ষার প্রাণ যায় যায় অবস্থা। বার বার প্রান্তিক কে অনুরোধ সুরে বলছে,

‘আস্তে চালান প্লিজ ভাইয়া আস্তে চালান। এক্সসিডেন্ট হবে।

কে শুনে কার কথা? প্রান্তিক হাই স্পিডে বাইক চালাচ্ছে।

‘ভাইয়া প্লিজ…. অর্ষা অস্ফুটে বললো। প্রান্তিক হঠাৎ বাইক থামিয়ে দেয়। আচমকা বাইক থেমে যাওয়াতে অর্ষা বড় বড় চোখ করে চারপাশটা তাকিয়ে একবার দেখে নেই৷ প্রান্তিক বাইক থেকে নেমে হেলমেট খুলতে খুলতে বললো,’বাইকেই বসে থাকবে নাকি নামবে?

‘ভাইয়া আমরা শপিংমলে এসেছি কেনো?

‘মানুষ শপিংমলে কি করতে আসে? খেতে???

‘না সেইটা বলিনি। মানে আমাদেরতো বাসায় যাওয়ার কথা এইখানে কেনো?

‘আগে নামো পরে বলবো। প্রান্তিক অর্ষার হাত ধরে তাকে নামিয়ে লিফটে উঠে পড়ে। লিফট থামে ৫তলায়।

‘বেশ সুন্দর শপিংমলটা তাইনা?

‘হুম তার জন্যইতো তোমাকে আনলাম। এক দোকানের স্টাফ বললো,’স্যার কি লাগবে বলুন।

‘শাড়ী দেখান। অর্ষা অবাক হয়ে বললো,’শাড়ী কেনো?

‘তোমার জন্য’

‘ভাইয়া আমিতো শাড়ী পড়িনা।

‘ওফ অর্ষা চুপ থাকোনা। আপাতত দেখো কোন শাড়ীটা বেশি পছন্দ হয়।

স্যার এইটা আপনার ওয়াইফকে বেশ মানাবে। একজন দোকানের স্টাফ এইটা বলাতে থতমত খেয়ে যায় অর্ষা। সে প্রান্তিকের দিকে তাকাতেই চোখাচোখি হয় দুজনের। অর্ষা লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে ফেলে। অর্ষা কি বলবে ভাবতে পারছেনা। অর্ষা দোকানিকে বলতে যাবে..যে আমি ওনার… অর্ষাকে সম্পূর্ণ কথা শেষ না করতে দিয়েই প্রান্তিক বললো, ‘হুম জানি। কারণ ও’কে সব কিছুতেই মানায়। অর্ষা পুরাই থ ‘। আর প্রান্তিকের মুখে সবার অগোচরে মুচকি হাসি।

১৩৩.

প্রিয়ন্তি মনিশা চৌধুরী এতো শপিং দেখে হতভম্ব। প্রিয়ন্তি লাফিয়ে যায় অর্ষার কাছে।

‘এই অর্ষা এতো শপিং কে করলোরে? ভাইয়া?

‘হুম।

‘কি কি এনেছেরে?

‘সবার জন্য এনেছে। নে খুলে দেখে নে। আচ্ছা চল রুমে যায়। অর্ষা আর প্রিয়ন্তি রুমে যেতেই মনিশা চৌধুরী বললো,’কিরে বাবা এতো শপিং!

‘আম্মু রাতে আব্বু আসার পর আমার রুমে দুজন একটু এসো। কিছু কথা আছে। এইটা বলে প্রান্তিকে পা বাড়ালো নিজের রুমের দিকে। মিসে মনিশা চৌধুরী মনে মনে ভাবলেন,’ আল্লাহ মালুম’ই’ জানেন ছেলেটার মাথায় আবার কি ঘুরঘুর করছে।

১৩৪.

নতুন বাসায় উঠেছে তাইফা। থাকার মতো একটা৷ চৌকি দিয়েছেন বাড়িওয়ালী খালামনি। রিমি কল করছে বার বার ব্যস্ততার জন্য কিছুতেই কল ধরতে পারছেনা সে। গুছ গাছ বাকি সব। তাইফা ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ে একটা চাঁদর বিছিয়ে।

১৩৫.

‘অর্ষা প্রিয়ন্তি স্টোর রুমে যে ভাড়াটে টা এসেছে তাকে খাবারটা দিয়ে আয়তো।

‘কেনো মা? সে রান্না করেনি?

‘দেখো মেয়ের কথা। মেয়েটা একা মানুষ। তাও আজ মাত্র উঠেছে। রান্না বান্না হয়তো কিছুই হয়নি। যা দিয়ে আয়।

‘অর্ষা চল। প্রিয়ন্তি আর অর্ষা স্টোর রুমের দিকে গেলো।

১৩৬.

‘দরজায় ঠকঠক আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় তাইফার। সে চশমাটা চোখে দিয়ে ওড়না দিয়ে মাথা ঢেকে দরজা খুলতেই অর্ষা আর প্রিয়ন্তি ভূত দেখার মতো চমকে উঠে। আর অবাক সুরে দু’জনেই বলে উঠে,’আপু আপনি?

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here