#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ২২,২৩
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
পার্টঃ২২
১৪৭.
সোহেল অন্ধকার জগতে পা রেখেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট কর্ম যেইটাকে বলে।
‘ আছে নাকি কোনো সুন্দরী?
‘ভাই আমি এই শহরে একটা মাইয়ার লাই আইছি। মাইয়াডা হেব্বি সুন্দরী।
‘তাই নাকি? কাস্টমারদের মন ভরাইতে পারবোতো?
‘পারবো মানে ১০০% পারবো। তবে ওরে খুজঁবার লাই কিছু সময় লাগবার পারে।
‘সমস্যা নাই। ততদিন তুমি এইখানেই থাকো।
‘আইচ্ছা।
১৪৮.
অর্ষা প্রিয়ন্তি অফিসের সামনে এসে প্রিয়ন্তি বললো,
‘তুই যা আমি গাড়িতে বসে ফেইসবুকিং করি।
‘পাগল নাকি? আমাকে দারোয়ান চিনে? ঢুকতে দিবে? আর তোকে কি এনেছি গাড়িতে ঢং করার জন্য?
‘যানা বইন আমার। প্লিজ প্লিজ।
‘ওফ থাক তুই আমি গেলাম।
এইটা বলে অর্ষা গাড়ি থেকে নেমে বড় গেইট টার ভেতরে ঢুকে। এরপর আরেকটা সুন্দর কারুকাজ করা গেইট দেখে অবাক হয় সে। এইসব গেইট কোনো কোম্পানীর অফিসে সে আগে কখনোই দেখেনি। এইসব ভাবতেই একটা সিকিউরিটি গার্ড এসে বলে,
‘এই মেয়ে এইখানে কি চায় হুম? যাও বের হও।
‘আ আস আসলে চাচা আমি প্রান্তিক ভাইয়াকে খাবার দিতে এসেছি।
‘প্রান্তিক স্যারকে? আজবতো। না না তোমাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া যাবেনা। হঠাৎ দারোয়ানের ফোনে একটা কল আসে। কলটা ধরতেই,
ওপাশঃ…….
দারোয়ানঃ না মানে ইয়ে
ওপাশঃ…..
দারোয়ানঃ ওকে। ওকে স্যার পাঠিয়ে দিচ্ছি। দারোয়ান কলটা রাখতেই অর্ষাকে নরম কন্ঠে বললো,
‘আসুন মেডাম আসুন। স্যারের কেবিনে আমি আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি।
আচমকা দারোয়ানের এমন আচরণ কিছুটা ভাবাই অর্ষাকে। সে এতো সেতো না ভেবে দারোয়ানের পিছু পিছু হাঁটতে থাকে।
১৪৯.
প্রান্তিক চেয়ারে মাথা হেলান দিয়ে বসে। সে কফি খেতে খেতে বাইরের দিকে না তাকালে হয়তো অর্ষাকে ঢুকতেই দিতোনা সিকিউরিটি। অর্ষাকে দেখে দারোয়ানকে কল দিয়ে রেগে বললো,
‘ওকে দাড় করিয়ে রেখেছো কেনো? তাড়াতাড়ি ভেতরে নিয়ে আসো।
ব্যাস হয়ে গেলো। এরপর আর কি? দারোয়ান অর্ষাকে সাথে নিয়ে আসছে।
এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ অর্ষাকে সামনে দেখে প্রান্তিক। মুচকি হেসে বললো,
‘আসো। এইখানো বসো।
অর্ষা প্রান্তিকের একদম পাশে বসে টিফিনবাক্সটা খুলতে খুলতে বললো,
‘আলোর পরোটা আর মাংস নিয়ে এসেছি তাড়াতাড়ি খেয়ে নিনতো।
‘আমি খাবোনা। এখন অনেক কাজ.. তুমি বসে বসে খাও আমি কাজ করছি। ফাইল হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে কথাটা বললো প্রান্তিক। আড়ঁচোখে একবার অর্ষার দিকে তাকালো সে। বুঝতে চাইছে অর্ষার রিয়াকশন। অর্ষা রুটি ছিঁড়ে মাংস নিয়ে প্রান্তিকের মুখের সামনে ধরলো। প্রান্তিক অবাক হয়েছে তবে ঘাবড়ায়নি। কারণ সে এইটাই চাইছিলো।
‘কি হলো খান।
‘বললাম তো খাবো….প্রান্তিক কে পুরো কথা শেষ করতে না দিয়েই প্রান্তিকের মুখে খাবার তুলে দিয়েছে অর্ষা। প্রান্তিক খাবার খেতে খেতে মিনমিনিয়ে বললো,
‘ওফ বউ আমার পুরো বউগিরি করছে।
‘এই এই কি বললেন?
‘ক ক্ কই কিছুনাতো।
‘দারোয়ানকে আপনি কল করেছিলেন?
‘হুম। সম্ভব হলে নিজেই যেতাম। মাথা পেইন করছিলো তাই ওকে বলেছি নিয়ে আসতে।
‘মাথা পেইন করবেনা? না খেয়ে কাজ করলে। আচ্ছা যাইহোক আমি যাই। প্রিয়ন্তি গাড়িতে ওয়েট করছে।
‘প্রিয় এসেছে?
‘হুম।
‘এইখানে আসেনি কেনো? আসলেইতো দারোয়ান কিছু বলতোনা।
‘আপনার বোন বলে কথা সেতো গাড়িতে ফেইসবুকিং করছে।
‘এই খোঁচা দিলে আমায়? আমার বোন যেমন আমি তেমন নাকি?
‘ওমা ভাইয়ের মতোইতো বোন হবে।
‘এই..প্রান্তিক কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে অর্ষা উঠে টিফিন বাটি ঠিক করতে করতে বললো,
‘আমি যাচ্ছি। আর সম্ভব হলে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবেন। যেহেতু মাথা পেইন করছে।
‘এই কোথায় যাচ্ছো বসো।
‘আরে হাত ছাড়ুন কেউ দেখবে।
‘ছাড়বোনা। এইখানে বসো।
প্রান্তিক অর্ষার হাত ধরে এক টান দিয়ে নিজের কাছে মিশিয়ে নেই। এক ধ্যানে অর্ষার দিকে তাকিয়ে বললো,
‘মেয়ে তুই আমার আশা, তুই ভালোবাসা
তোর চোখে আমার সব ক্লান্তির সর্বনাশা’।
অর্ষা হচকিয়ে উঠে। অর্ষার বার বার মনে হচ্ছে প্রান্তিকের কথায় আর তার চাহনিতে কিছু একটা ছিলো যাতে করে যে কাউকে ঘায়েল করা হবে যায়। অর্ষা কিছু না বলে তাড়াতাড়ি প্রান্তিকের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে চলে যেতে লাগলো। আর এইদিকে প্রান্তিক অর্ষার যাওয়ার পানে এক ধ্যানে তাকিয়ে বললো,
‘আজকে যা হবে তা কিভাবে নিবে তুমি হৃদয়মোহনী! এইটা ভাবতেই প্রান্তিক একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
১৫০.
আসসালামু ওয়ালাইকুম। এইখানে তাইফা আছে?
‘হুম আছে। কে তুমি মা?
‘আসলে আন্টি আমি রিমি। তাইফার বেষ্ট ফ্রেন্ড। ওহ আসতে বললো তাই এসেছি।
‘ওমা তাই? আসো আসো ভেতরে আসো।
মনিশা চৌধুরী রিমিকে ভেতরে নিয়ে তাইফার রুমের সামনে এনে বললো,
‘এইটা তাইফার রুম। তুমি ডাকো আমি যায়। আবার কোনো এক সময় এসে না হয় গল্প জুড়ে দিবো।
রিমি মুচকি হেসে বললো, ‘অবশ্যই আন্টি।
১৫১.
অর্ষা প্রিয়ন্তি বাসায় ফিরতেই নাফিস সরদার আর রাহেলাবানুর সাথে আফ্রাকে দেখে জড়িয়ে ধরে অর্ষা৷ রাহেলা বানুকে প্রিয়ন্তি জড়িয়ে ধরে বলে,
‘খালামনি তুমি আসবে আর আমিই জানিনা?
‘মারে হঠাৎ আসা পড়লো তাই আর কি। আপা তুই কেমন আছিস?
‘মনিশা চৌধুরী হেসে জবাব দেয় ভালো। আয় ভেতরে আয় বস।
‘তা প্রান্তিক কই?
‘খালুজান ভাইয়া অফিসে। একটু পরই চলে আসবে।
জমে গেলো বসার রুমে আড্ডার আসর।
১৫২.
রিমি তুই!
‘হুম এসে পড়েছি।
“আসতে কোনো সমস্যা হয়নিতো?
‘আরে না। তুই যে কি বলিস। চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রির ফরহাদ চৌধুরীকে কে না চিনে! তাই আসতে কোনো সমস্যাই হয়নি।
রিমির লাস্ট কথাটা শুনে থমকে যায় তাইফা। তড়িঘড়ি করে আবার বললো,
‘রিমি তুই কার নাম বললি?
‘কার নাম আবার। ফরহাদ চৌধুরীর।
তাইফা ধপ করে বিছানায় বসে পড়ে। মনে মনে বলে,
‘লক্ষের এতো কাছে আমি ছিলাম? যেই মানুষটাকে এতোদিন খুঁজছি সেই মানুষটা আমার সামনেই ছিলো!
চলবে…
#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ২৩
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ
১৫৩.
তাইফা এই তাইফা তোর কি হয়েছে? হঠাৎ এইভাবে বসে পড়লি কেনো?
রিমির কথায় তাইফা মনে মনে ভাবনার তাড়না করে যে তাকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক থাকতে হবে। তবে সে কল্পনাও করেনি যে সে তারই আপন মানুষগুলোর চারিপাশে। রিমি পুনরায় তাইফার কাঁধে হাত দিয়ে ধাক্কা দিলো।
‘এই তাইফা
‘হুম হুম বল।
‘কি হয়েছে তোর বলতো?
‘না না কিছু হয়নিতো। আসলে হঠাৎ কি যেনো হলো শরীর টা খারাপ লাগছে ভীষণ।
‘কি বলছিস জ্বর টর হয়েছে নাকি? [ কপালে গলায় হাত রেখে ]
‘নারে তেমন কিছু হয়নি। চল শুয়ে পড়ি দুপুরতো তাই চোখ টানছে।
‘হুমরে। আমারো ক্লান্ত লাগছে শরীরটা রেস্ট দরকার। চল ঘুমাই।
এরপর রিমি আর তাইফা কাথা মুড়িয়ে দুজন দুজনাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে। কিন্তু তাইফা! সেতো আর ঘুমাতে পারছেনা। সে বুঝতেই পারছেনা হাসবে না কাঁদবে।
১৫৪.
প্রান্তিক অফিস থেকে এসেই দেখে পুরা বসার রুম আড্ডার মজলিস বসেছে। প্রান্তিক কে দেখেই মনিশা চৌধুরী বললেন,
‘কিরে দেখ কারা এসেছে।
‘খালুজান কেমন আছেন?
‘ভালো বাবা তুমি?
‘আলহামদুলিল্লাহ। খালামনি আপনি?
‘ভালা আছি বাপজান। প্রান্তিক ব্লেজার টা সোফায় রেখে আফ্রাকে কোলে নিয়ে বসে পড়ে তাদের সাথে। ফরহাদ চৌধুরী হঠাৎ বললেন,
‘প্রান্তিক সব ব্যবস্থা শেষ?
‘জ্বি আব্বু। প্রান্তিক অর্ষার দিকে এক পলক তাকিয়ে প্রিয়ন্তিকে বললো,
‘প্রিয়ন্তি….
‘হুম ভাইয়া যাচ্ছি যাচ্ছি।
প্রিয়ন্তি অর্ষার হাত টেনে বসা থেকে তুলে রুমপ যাচ্ছে।
‘আরে ক কি করছিস প্রিয়..আহ ব্যথা পাচ্ছি ছাঁড়।
‘অর্ষা কোনো কথা না বলে চল আমার সাথে।
‘আরে কোথায়?
প্রিয়ন্তি অর্ষাকে প্রান্তিকের রুমে এনে দরজা বন্ধ করে দেয়। অর্ষা প্রান্তিকের রুমটা একবার দেখে নিয়ে অবাক সুরে বললো,
‘আরে আমরা এই রুমে কি করছি প্রিয়? চল এই রুম থেকে।
অর্ষার কথার পাত্তা না দিয়ে প্রিয়ন্তি প্রান্তিকের কাভার্ড থেকে ওইদিনের কেনা গাঢ় লাল রংয়ের শাড়ীটা বের করে। অর্ষা অবাক হয়ে বললো,
‘তুই শাড়ী বের করছিস কেনো? আর এইটা ওই শাড়ীটা না? যেইটা প্রান্তিক ভাইয়া আমাকে কিনে দিয়েছে।
প্রিয়ন্তি অস্ফুটে উত্তর দেয় ‘হুম’
‘বের করছিস কেনো? আর ওনার রুমেই বা এই শাড়ী কেনো?
প্রিয়ন্তির চোখে পানি। ছলছল চোখে বলে,
‘অর্ষা আজ তোর বিয়ে।
অর্ষা হেসে বলে, মজা নিচ্ছিস?
‘না সত্যি বলছি আমি। প্রিয়ন্তির মুখের সিরিয়াস ভাব দেখে রুহ কেঁপে উঠে অর্ষার। ঠোঁটজুড়া ঈষৎ কেঁপে উঠে তার। জোরে বললো,
‘কিই? কার সাথে?
‘ভাইয়ার সাথে।
প্রিয়ন্তির মুখের ‘ভাইয়ার সাথে’ কথাটা যেনো অর্ষার কানে ধোঁয়া বের করছে। অর্ষা বিছানা থেকে দাঁড়িয়ে হাতের মুঠোয় দুটা শক্ত করে তড়িঘড়ি করে দরজা খুলতে যায়। বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় প্রিয়ন্তি।
‘তুই না সেজে যেতে পারবিনা অর্ষা।
‘সর বলছি..আমাকে যেতে দে।
‘আজ তোর কথা রাখতে পারবোনা অর্ষা। এইটা ভাইয়ার আদেশ। এইবার অর্ষা যেনো নিজেকে আর সামলাতে পারেনি। সামনে থাকা ফুলদানিটা সজোড়ে ফেলে চিৎকার করে বলে,
‘তোর ভাই নিজেকে ভাবেটা কি? ওনার যা ইচ্ছে ওনি তাই করবে? আর আমি চুপ থাকবো? কেউ কি জানতে চেয়েছে আমি এই বিয়েতে রাজি কিনা? তাহলে কোন অধিকারে তিনি এই বিয়েতে মত দিয়েছেন? আমি এই বিয়ে কিছুতেই করবোনা। কিছুতেই না..এইটা বলেই কান্নায় ফ্লোরে লুটিয়ে পরে অর্ষা।
প্রিয়ন্তি নিরব দর্শক। আপাতত তার কিছুই করার নেই। সে জানে যা হচ্ছে অর্ষার ভালোর জন্যই৷ প্রিয়ন্তি চোখের পানিটুকু মুছে অর্ষাকে টেনে তোলার চেষ্টা করে কিন্তু সে ব্যর্থ। হঠাৎ তাদের রুমে প্রবেশ করে নাফিস সরদার।
১৫৫.
লাল রঙা শাড়ীতে রুম থেকে বেরিয়েছে অর্ষা। তাকে ধরে ধরে নিচে নিয়ে আসছে প্রিয়ন্তি। প্রান্তিক অর্ষার দিকে আড়ঁচোখে এক পলক তাকিয়ে চোখ নামিয়ে ফেলে। এখন তাকে স্ট্রং থাকতে হবে। কারণ সে জানে অবশ্যই অর্ষা তাকে একটা নয় হাজারটা প্রশ্ন করবে।
‘আমার আম্মাডারে কি সুন্দর লাগছে।
‘আব্বা জানেন? মেয়েদেরকে যখন অন্যের ঘরে পাঠানো হয় তখন মা-বাবাদের এক অদ্ভুত ক্ষমতা মহান আল্লাহ তায়ালা দিয়ে দেন। আর তা হলো মেয়েটির নামে সুন্দর প্রশংসার বহিঃপ্রকাশ করা।
মেয়ের মুখের এই কথাটি যেনো নাফিস সরদারের বুকে গিয়ে বিঁধেছে। তাও নিজেকে অনেক কষ্টে সামলান তিনি। রাহেলা বানু নিরবে চোখের পানি ফেলছে। মনিশা চৌধুরী বোনের চোখের পানি মুছতে ব্যস্ত। প্রিয়ন্তি ফরহাদ চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
‘প্রান্তিক কাজী আসবে কখন?
‘আব্বু এইতো কিছুক্ষনের মাঝেই চলে আসবে।
অর্ষা প্রান্তিকের এই হেলদোলহীন ব্যাপারগুলো সহ্য না করতে পেরে মনে এক ঘৃণার দাগ কেটে নেয়। এক পলক অশ্রু জড়া আখিঁ পল্লবে প্রান্তিকের দিকে তাকায়। ভায়োলেট কালারের পান্জাবি,হাতে ঘড়ি। চুলগুলো সিল্ক এর মধ্যে অনেকটা উঠা উঠা। সোফায় বসে বার বার দরজার সহিত ব্যস্ত হয়ে তাকাচ্ছে হয়তো কাজীর জন্য। এইসব ভাবতেই অর্ষার কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে। অর্ষা তার মায়ের দিকে এক পলক তাকিয়েছে। করুন দৃষ্টিতে হয়তো এই করুন দৃষ্টি বার বার বলছে, ‘আম্মা কিছু করেন’ কিন্তু একি! তার মা যে অসহায় ভঙ্গিতে চোখের পানি ফেলছে। হঠাৎ প্রিয়ন্তির মুখ থেকে অর্ষা শুনলো,
‘কাজী এসেছে’।
১৫৬.
অর্ষাকে প্রিয়ন্তি বার বার জোর করছে কবুল বলতে কিন্তু অর্ষা পাথরের ন্যায়।
হঠাৎ অর্ষার বাবা অর্ষাকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো, ‘কবুল বল’
‘আব্বা আপনি আমারে মাইরা ফেলান তাও আমারে কবুল বলতে বলবেন না৷ কান্না করতে করতে কথাগুলো বলছিলো অর্ষা। প্রান্তিক রেগে অর্ষার হাত দুটো শক্ত করে ধরে বলে,
”Say Kobol..নয়তো যেই থাপ্পড়টা খালুজান দিয়েছে সেইটা আবার তোমার অপর গালে আমি রিপিড করবো।
অর্ষা……নিশ্চুপ
‘অর্ষা বলো কবুল.. চিৎকার করে কথাটা বলতেই অর্ষা ঈষৎ কেঁপে উঠে। আস্তে করে তিনবা এক নাগারে কবুল বলে ফেলে এরপর সাথে সাথে সেন্সল্যাস হয়ে যায় অর্ষা।
১৫৭.
ছোট ছোট চোখ খুলে তাকায় অর্ষা। চোখ খুলো কপালে এক হাত রেখে উঠতে গেলে কারো কন্ঠে
‘কষ্ট করে উঠতে হবেনা রেস্ট নাও’
এই কথাটি শুনে সামনে তাকায় অর্ষা। দেখে প্রান্তিক হাতে সুপের বাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুহুর্তেই কিছুক্ষণ আগের ঘটনা মনে পড়তেই চোখে পানি এসে জমা হয় তার। রাগে জেদে প্রান্তিকের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে হাতের মুষ্টি আবদ্ধ করে এক ধ্যানে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে সে। তার বাবার মাথা ছুঁয়ে কথা না দিলে হয়তো সে বিয়েটা মরে গেলেও করতোনা।
‘সুপটা খেয়ে নাও’
‘খাবো নাআআআআ’
‘আমি জোর খাটাতে চাচ্ছিনা অর্ষা’
‘বললামতো খাবোনা। আর আপনি এই রুমে কি বের হোন এইখান থেকে’।
‘আমাদের রুম এইটা আজ থেকে।
‘আমি এই বিয়ে মানিনা।
‘মানতে তুমি বাধ্য..এইটা বলেই প্রান্তিক অর্ষার দুই গাল চেপে হা করিয়ে সুপের চামচটা মুখে ঢুকিয়ে দেয়।
‘সরুন বলছি আমার কাছ থেকে সরুন। ভুলেও আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করবেন না।
‘যদি করি?
‘করবেনা নাআআ বললামতো।
‘যদি করি তাহলে?
‘যানতো এইখান থেকে।
প্রান্তিক বিছানা থেকে উঠে চলে যায়। অর্ষা ভেবেছে প্রান্তিক হয়তো রুম ছেড়ে চলে যাবে কিন্তু প্রান্তিক রুম ছেড়ে না গিয়ে দরজা বন্ধ করে অর্ষার দিকে এগোচ্ছে। প্রান্তিক একদম অর্ষার সামনে যেতেই অর্ষা ভয়ে ঘাবড়ে বলে উঠে,
‘দে দেখুন…
হঠাৎ প্রান্তিক অর্ষার পাশে শুয়ে পরে।। আচমকা এমনটা করাতে অর্ষা বেশ অবাক হয়। অর্ষা উঠতে যাবে এমন সময় প্রান্তিক নেড়েচেড়ে অর্ষার দিকে তাকিয়ে বলে,
‘শুয়ে পড়ো। বিছানা থেকে উঠলে….
‘কি?
‘খবর আছে। প্রান্তিকের শেষ কথাটা অতিরিক্ত গম্ভীরর্য বলেই অর্ষা আর কথা না বাড়িয়ে বিছানাতেই বসে রইলো। চুপ হয়ে আছে সে। তার কোনো কথা বাড়ানোর ইচ্ছে বা আগ্রহ কোনোটায় নেই এখন।
চলবে…