গল্পঃ কিশোরী_বউ Part_৩

0
2151

গল্পঃ কিশোরী_বউ Part_৩
#Writer_কাব্য_আহম্মেদ

. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
শার্ট খুলব কেনো?
– আমার খুব ইচ্ছে করছে আপনার লোমশ বুকখানা দেখতে। একবার ছোয়ে দিতে।
আমি চোখ বড় বড় করে তাকালাম তিথির দিকে। তিথি ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
– তিথিমনি, এখন তো আমি বাইরে যাবো। রাতে দেখে নিও কেমন?
– না, আমি এখন দেখতে চাই।
– পরে দেখলে হয় না।
– না।
তিথি জেদ ধরে বসল। কি আর করা শার্ট খুলে সেন্টো গেঞ্জিটাও খুললাম। তিথি এগিয়ে আসল আমার দিকে। নেশাগ্রস্ত চোখে তাকিয়ে আছে।
উনাকে শার্ট খুলতে বলতে আমার একটুও লজ্জা করল না? বিষয়টা আমারও কেমন জানি লাগছে। জানি না কি হচ্ছে আমার? আমার শুধু উনার লোমশ বুকটা একবার ছোয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে।
– শুধু তাকিয়েই থাকবে? নাকি অন্যকিছুও করবে।
মিটমিট করে হেসে বলপেন উনি।
জানিনা কেনো তখনও আমার লজ্জা লাগেনি। তিথি একটু একটু করে এগিয়ে এলো আমার দিকে। বুকে হাত বুলাতে লাগল। আমি তাকিয়ে দেখছি আমার পিচ্ছি বউটার দিকে।
দিনদিন বেশ রোমান্টিক আর পাকনা হয়ে যাচ্ছে।
তিথি বুকে হাতাতে হাতাতে হঠাৎ করেই চুমু দিয়ে বসল। ঘটনার দ্রুততায় আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম। বুঝতে পারিনি তিথি এমন করবে।
তিথি ভাবছে, হায় হায় একি করে বসলাম? বুঝতেই পারিনি এমন কিছু করে ফেলব। আর আমি বুঝব কি করে? আমিতো উনার উপর নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ঘোর লেগে গিয়েছিল আমার। এখন উনার দিকে তাকাব কি করে? উফফ কি লজ্জাটাই না করছে।
আমি তাকিয়ে দেখলাম তিথি লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। গাল দুটো রক্তিম হয়ে গেছে।
তিথি দৌড় দিবে তার আগেই আমি হাত ধরে নিলাম। ঠান মেরে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলাম। কোমড়ে ধরে জরিয়ে রাখলাম। তাকিয়ে থাকলাম তিথির দিকে।
– কি করছেন? ছাড়ুন না। ( লজ্জা পেয়ে বলল।)
– উহু, ছাড়ব কেনো?
– ছাড়ুন না। আম্মু এসে পড়বে…।
– আসুক।
তিথির ঘারের দিকে মুখ এগিয়ে নিলাম। বাম কাধে চুমু একে দিলাম। তিথি কেপে উঠল। নিশ্বাস ঘন হয়ে আসল তিথির।
– একটা আগে যেটা করলে সেটা আবার করো না।
– কি?
তিথি চোখ বুজা অবস্থায় বলল।
– কেনো? মনে নেই একটু আগে কি করেছিল?
তিথির একটু আগের কথা মনে পড়ল। উনি বুকে চুমু দেয়ার কথা বলছেন না তো। ইশ কি লজ্জা করছে আমার? কথাটা মনে হলেই তিথি লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।
– কি হল মনে নেই? আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি। আমার বুকে কিস কর…
– পারব না।
– কেনো? আগেতো ঠিকই পেরেছিলে।
তিথির নাকে নাক ঘসে বললাম।
– আগেতো আমি এমনিই করে ফেলেছিলাম..।
– তোমার নিজের ইচ্ছেতে করোনি?
– না, হ্যা, না মানে আসলে..
– হয়েছে বলতে হবে না। বুঝে গেছি।
– তা, আমার বুকে কি এমন আছে যে তুমি দেখার জন্য উতলা হয়ে গেলে? **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

– জানিনা..।
ব্লাশিং হয়ে বলল তিথি।
– বলোনা..।
মিনতি করে বললাম তিথিকে। কোমড়ে ধরে আরেকটু নিজের কাছে নিয়ে এলাম। শক্ত করে ধরলাম,
– ভালো লাগে।
– কি?
– আপনার বুকটা দেখতে…।
– কেনো? দেখো তাহলে।
তিথি কোনো কথা বলল না। আমি তিথিকে ঘুরিয়ে নিলাম। আলতো করে কোমড়ে জরিয়ে ধরলাম। ঘাড়ে মুখ গুজে দিলাম। কানের লতিতে কামড় দিলাম আস্তে করে।
নিজেকে কন্ট্রোল করা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছিলো প্রায়। নেশাগ্রস্ত হয়ে পরছিলাম তিথি চুলের অতিব সু-ঘ্রানে।
তিথি হাত-পা শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। বুকের ভিতর ধিরিম ধিরিম করে হাতুড়ি পিটাচ্ছে তিথির। লজ্জায় মুখ তুলে তাকাতে পারছে না। আবার স্পর্শ অনুভুতিতে সরে যেতেও পারছে না।
,
মোবাইল বেজে উঠল। দুজনেই বাস্তবে ফিরে এলাম। আমি ছেড়ে দিলাম তিথিকে। তিথি এক দৌড়ে চলে গেলো রুম থেকে। আমি বসে পড়লাম। কি করছিলাম এটা?
আমি এতোটা কন্ট্রোললেস কি করে হতে পারি? একবারও মনে পড়ল না তিথির কথা। তিথি এখনো পিচ্ছি। ওও এসবের জন্য প্রস্তুত না এখনো। তিথি পড়াশুনা করছে এখনো। ওর ক্যারিয়ার পড়ে রয়েছে। রয়েছে অনেক স্বপ্ন। আর সবচেয়ে বড় কথা তিথি এখনো পিচ্ছি। আর আমি কি না? উফফ কি করছিলাম এটা?
ফোনটা অনবরত বেজেই চলছে। হাতে নিয়ে দেখলাম রিয়ে ফোন করেছে। ফোন রিসিভ করলাম,
– কিরে, এসব কি শুনছি আর দেখছি?
– ঠিক দেখছিস, ঠিক শুনছিস।
– মেয়েটাতো দেখতে যেমন পিচ্ছি স্বভাবেও পিচ্ছি।
– হুম। দেখলিই তো..।
– হ্যা, দেখলাম।আর সব কিছুও বুঝলাম।
– আচ্ছা, এখন রাখি।
– হুম। বাই।
– বাই।
তিথি এক দৌড়ে মিসেস সাবিনার রুমে গেলো। গিয়েই কোলে শুয়ে পড়ল। বারবার অজান্তেই হাসতে লাগল।
– কিরে কি হয়েছে?
তিথি শাশু মা বললেন।
– জানো, কি হয়েছে? উনি আমাকে জরিয়ে ধরে…
– আরে থাম, থাম। এতো পিচ্ছি কি করে হতে পারিস তুই?
– মানে!
– মানে! বুঝিস না। এসব তোদের স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার। এসব কাউকে বলতে নেই বুঝলি।
– কিন্তু, আমিতো তোমাকেই বলছি। তুমি তো আর পর নও।
– ইশ! বোকা মেয়ে। এসব নিজ পরের বিষয় না। তুই এগুলো কাউকে বলবি না। এসব নিজেদের ব্যাপার বুঝলি। একটু লজ্জাও নেইরে বাবা।
– আচ্ছা, বলব না। কিন্তু..
– কোনো কিন্তু না। এখন রুমে যা।
– না, আমি পারব না।
– কেনো?
– উনিতো জরিয়ে ধরলে আমার দম আঠকে আসে। কেমন যেনো লাগে?
– এটা অনুভুতি বুঝলি। এটা তোর স্বামীর প্রতি টান।
– ওও। কিসের টান?
– ভালোবাসার।
– কিন্তু, উনিতো আমায় ভালোবাসেন না।
– কে বলল? তাহলে একটু আগে কি করল এটা? ভালোবেসেই তোকে জরিয়ে ধরেছে বুঝলি।
– তাহলে, আমিতো বলেছিলাম আমার একটা বাবু চাই। উনি এনে দেননি কেনো?
– তুইতো এখনো পিচ্ছি তাই।
– না, আমি পিচ্ছি না। পরের বার কিন্তু, আমি উনার কাছে এটাই চাইবই চাইব।
– আচ্ছা, চেয়ে নিস। এখন রুমে যা।
তিথি আনমনা হয়ে রুম থেকে বের হচ্ছিলো তখনই আমি গিয়ে রুমে উপস্থিত হচ্ছিলাম। আমার সাথে ধাক্কা খেলো। পড়ে যাচ্ছিলো ধরে ফেললাম।
– আউউ..
তিথির মনে হলো এই বুঝি কোমড় ভেঙে গেলো। কিন্তু, পড়ার আগেই কেউ ধরে ফেলল। তাকিয়ে অবাক। আরে এতো আমার উনিই..
– দেখে চলতে পারো না। পড়েইতো যাচ্ছিলে।
– আমি কি করব? আপনার এতো বিশালদেহী শরীর। ( হাত দিয়ে দেখিয়ে)। তার উপর জিরাফের মতো লম্বা। ধাক্কা খেয়ে আমিতো মনে করেছিলাম দেয়াকের সাথে ধাক্কা খেয়েছি।
– কি বললে? আমি জিরাফের মতো লম্বা। দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
কিছু বলল তার আগেই তিথি দৌড়ে ডুকে গেলো। আমি ডুকেই দেখলাম আম্মু শুতে আছে।
– কি রে কি হলো?
– না, কিছুনা আম্মু। আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। একটু পরেই ফিরে আসব।
– হুম, তাড়াতাড়ি ফিরিস।
– আচ্ছা, তিথি এদিকে এসো একটু।
– না, আসব না আমি।
– কেনো?
– আপনি গেলেই মারবেন।
আমি থতমত খেয়ে গেলাম।
– মারব কেনো?
– আপনার কাছে গেলেই আপনি জরিয়ে ধরবেন আমাকে। আর আপনি জরিয়ে ধরলে আমার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। কেমন কেম্ন জানি লাগে।
আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে আছি বড় বড় চোখ করে। আর আম্মুর ও একি অবস্থা। তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। মুখে মুচকি হাসি নিয়ে।
– আচ্ছা, আমি যাচ্ছি আম্মু।
আমি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়লাম। না হয় ইজ্জতের বারোটা বেজে যেতো। এই আমার বউটাও না। যেমন দেখতে পিচ্ছি স্বভাবেও পিচ্ছি।
,
রাতে এসে খেয়ে দেয়ে রুমে শুয়ে পড়লাম। তিথি আস্তে আস্তে করে হেটে পাশে শুয়ে পড়ল। আমি কোনো ভাবান্তর দেখালাম না। অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে থাকলাম।
,
ব্যাপারটা তিথির হজম হলো না। তিথি ভাবছে উনি কি রেগে আছেন? নাকি আমাকে দেখতে পাননি। দেখার তো কথা তাহলে আমার দিকে একবার তাকালেও না।
– এই, এই।
তিথি আমাকে ডাকতে লাগল।
– এই শুনুন না।
আমি কোনো কথা বললাম না। তিথির এবার কেঁদে ফেলার অবস্থা।
– এই তাকাননা আমার দিকে। এই..
– কি? আমি ঘুরে তাকালাম।
– আপনি রাগ করেছেন আমার উপর?
– নাহ।
বলে অন্যদিকে ঘুরে পড়লাম।
– প্লিজ ক্ষমা করে দিন আমায়। আমি জানি আপনি রেগে আছেন।
আমি কোনো কথা বললাম না।
তিথি পিছন থেকে জরিয়ে ধরল আমাকে। কেঁদে দিলো ।
– প্লিজ ক্ষমা করে দিন আমাকে। একবার বউ বলে ডাকেন না।
আমি মুচকি মুচকি হাসতে লাগলাম কোনো কথা বললাম না।
– আমিতো পিচ্ছি। একটা ভুলই না হয় করে ফেলেছি। ক্ষমা করে দিন প্লিজ।
– ওকে, ওকে। আর কাদতে হবে না।
ঘুরে তাকালাম আমি। চোখের পানি মুছে দিলাম তিথির। কপালে চুমু দিয়ে জরিয়ে ধরলাম। **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
তিথির কান্না থামল। চুপচাপ শুয়ে থাকল বুকে।
– আচ্ছা, একটা কথা বলি?
– হুম, বলো।
– আচ্ছা, আপনি আমাকে জরিয়ে ধরলে আমার এমন লাগে কেনো? এর আগেওতো সবসময় মেঘ আমাকে জরিয়ে ধরতো তখন এমন লাগেনি কেনো?
আমি হকচকিয়ে গেলাম।
– মেঘা মানে! কে মেঘ? ওও তোমাকে জরিয়ে ধরবে কেনো?
মেঘ মানে! কে মেঘ? আর ওও তোমাকে জরিয়ে ধরবে কেনো?
ভ্রু কুঁচকে বললাম।
– আরে এতো প্রশ্ন একসাথে করলে আমি কোন প্রশ্নের জবাব দিবো বলুন?
– যেটা জিজ্ঞেস করেছি সেটা বলো। এই মেঘটা কে?
– কে আবার? আমার বন্ধু।
– ওও, তোমাকে জরিয়ে ধরবে কেনো?
– বন্ধু বন্ধুকে জরিয়ে ধরতে পারে না নাকি? আজব।
– না, জরিয়ে ধরতে পারবে না। ওও তোমাকে জরিয়ে ধরবে কেনো? তোমাকে জরিয়ে ধরার অধিকার শুধু আমার, শুধু আমার।
রেগে গিয়ে বললাম।
– আরে, আপনি রেগে যাচ্ছেন কেনো?
আমার দুগালে হাত রেখে বলল।
– রেগে যাবো না। আর তুমি ওকে মানা করতে পারো না? খুব ভালো লাগে তাই না। ঐ মেঘ তোমাকে জরিয়ে ধরলে।
– হুম, লাগে তো। লাগবে না কেনো? আমার বন্ধু আমাকে খুশি হয়ে জরিয়ে ধরলে তো আমার ভালো লাগবেই।
তিথি হাসি মুখে বলল।
আমার রাগ তখন চরমে। অন্য একটা ছেলে ওকে জরিয়ে ধরে। আর ওও বলছে কিনা ওর ভালোও লাগে।
ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলাম তিথির গালে। ঘটনার দ্রুততায় তিথি গালে হাত দিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। টপ করে এক ফোটা পানি পড়ল।
আমি রাগে কি করব? খুঁজে পাচ্ছি না।
– আপনি আমাকে মারলেন?
তিথি গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল।
– হুম, মারলাম। অন্য একটা ছেলে তোমাকে জরিয়ে ধরবে। তুমি বলছ সেটা তোমার ভালো লাগে। আর সেটা আমি মেনে নিবো।
রেগে গিয়ে বললাম।
– ছেলে মানে! কোন ছেলে?
অবাক হয়ে বলল তিথি।
– কেনো? মেঘ।
– ও ছেলে হতে যাবে কেনো? ওতো আমার বান্ধুবি মেঘা।
– তাহলে মেঘটা কে?
– ঐ মেঘাকেইতো আমি মেঘ বলে ডাকি। আর ওতো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। মেঘা আমাকে জরিয়ে ধরতেই পারে। তার জন্য আপনি আমাকে চড় মারলেন।
ঠোঁট কামড়ে কাঁদতে লাগল। আমি কি বলব খুঁজে পাচ্ছি না? হাসব নাকি কাঁদব। মেঘ মেয়ে। এটা আগে বললে কি হতো? আমিতো ভেবেছিলাম ছেলে। ইশ! কি করলাম এটা? আমার পিচ্ছি বউটাকে চড় মারলাম। ধ্যাৎ, বিষয়টা আগে জানা উচিত ছিল। এভাবে চড় মারাটা ঠিক হয়নি। কতো জোরে মেরেছি?
,
তিথি ভাবতেই পারছে না এটা। উনি আমাকে চড় মারলেন। এই সামান্য একটা বিষয়ের জন্য এতো জোরে চড় মারলেন। আমি বেশ বুঝতে পারছি। উনি যে আগে আমার উপর রেগে ছিলেন সেটাই প্রয়োগ করেছেন। আমি তো পিচ্ছি। একটা ভুলই না হয় করে ফেলেছিলাম। তার জন্য উনি আমাকে কষ্ট দিবেন। আমিতো ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছিলাম। তারপরও চড় মারলেন।
তিথি যেনো এটা মেনে নিতে পারছে না। চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে।
আমার নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। কি করলাম এটা? এতোটা গাধার মতো কাজ করতে পারলাম কি করে?
– তিথি, আই এম সরি। আমি বুঝতে পারিনি যে, মেঘ একটা মেয়ে। আমি ভেবেছিলাম…
আমি তিথির গালে হাত দিতেই। তিথি ঝটকা মেরে আমার হাত সরিয়ে দিলো। তারপর বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগল।
আমার খুব খারাপ লাগল। খুব রাগ হচ্ছে নিজের উপর।
আমি তিথিকে জরিয়ে ধরলাম।
– প্লিজ ক্ষমা করে দাও আমায়। সত্যি আমি ভুল করে ফেলেছি।
কিন্তু, তিথি কেঁদেই চলছে।
– তিথি, প্লিজ তাকাও আমার দিকে।
তিথি আমাকে জোর করে ঠেলে ছাড়িয়ে নিলো। বিছানা থেকে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলো।
আমি পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম,
– প্লিজ, তিথি আমার কথাটাতো শুনো। তোমার বুড়ো বরকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ।
তিথি মুখ ফুলিয়ে কাঁদতেই থাকল।
– প্লিজ, তিথি কান্না করো না। আচ্ছা তোমার যতো ইচ্ছে আমাকে মারো। তবুও ক্ষমা করে দাও প্লিজ।
তিথিকে ছাড়তেই তিথি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আমি পিছন পিছন বেরিয়ে পড়লাম।
– তিথি, শুনো। তিথি..
তিথি আম্মুর রুমের দিকে গেলো। দরজা খুলাই ছিল গিয়ে ডুকে পড়ল। আমি ডাকতে ডাকতে আম্মুর রুমের সামনে গেলাম।
– কিরে তিথি কাঁদছিস কেনো? ( আম্মু)
তিথি কোনো কথা না বলে কেঁদেই চলছে।
– তিথি, কি হয়েছে? তো। কাঁদছিস কেনো? আর তোর গালে এটা কিসের দাগ? কেউ মেরেছে তোকে।
তিথি কোনো কথা বলল না। ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদতে লাগল। আম্মু দরজার দিকে তাকাতেই দেখল আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি।
– তিথি, কাঁদছে কেনো কাব্য? ( আম্মু)
আমাকে জিজ্ঞেস করলেন।
আমি কি বলব? বুঝতে পারছি না।
– আসলে আম্মু..
আমতাআমতা করতে দেখে আম্মু বিষয়টা টের পেয়ে গেলো কিছুটা।
– কে চড় মেরেছে তিথিকে?
আমি কোন কথা না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
– তুই?
– হুম।
আম্মু দরজার সামনে এলো।
– মানে! কেনো মেরেছিস? কি করেছে তিথি?
– আসলে, আম্মু। আমি প্রচন্ড রেগে গিয়েছিলাম। তিথিকে ভুল বুঝে..
আম্মু ঠাস করে আমার গালে একটা চড় মেরে দিলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম,
– আম্মু, আমি..
– আর একটা কথাও বলবি না। পিচ্ছি মেয়ে ভুল করতেই পারে। তার জন্য চড় মেরে দিবি।
– আম্মু, আমি সত্যি বুঝতে…
আমাকে আঠকিয়ে দিলো আম্মু।
– তোর কোন কথা শুনতে চাইনি আমি। কি করেছিস এটা? তুই। এরকম করে কেউ মারে। দাগ বসিয়ে দিয়েছিস।
– আম্মু, আমি সত্যি মারতে চাইনি। রেগে গিয়েছিলাম।
– চুপ কর! তিথিকে তোর কাছে রাখাটাই ভুল হয়েছে।
– মা, কি বলছো এসব?
– হ্যা, ও তোর কাছে সেফ না। এরকম পিচ্ছি মেয়েকে কেউ মারে। ভুলতো স্বাভাবিক করতেই পারে।
– কিন্তু, আম্মু।
– তুই এখন রুমে যা।
আমি একবার তিথির দিকে তাকালাম। মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে কাঁদতে কাঁদতে। ফর্শা গালে চড়ের দাগ বসে গেছে। ইশ! এতোটা খারাপ আমি। ঘুরলাম রুমে যাওয়ার জন্য। আবার আম্মুর দিকে তাকালাম।
– আম্মু, তিথি।
অসহায়ের মতো তাকালাম আম্মুর দিকে।
– যেতে বলছি না তোকে। তিথি আজ থেকে আমার কাছেই থাকবে।
আমি নিরীহ প্রাণীর মতো পোষ মেনে নিলাম। রুমে চলে এলাম। দূর! ভালো লাগছে না কিছু। খুব খারাপ লাগছে। কি করে মারতে পারলাম তিথিকে? হাতটা ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে। ইশ! ঘুমও আসছে না। বারবার পিচ্ছি বউটার মুখ ভেসে আসছে সামনে। কি যে করি? **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
ফোনটাওতো রেখে গেছে এখানে। না হয় ফোন দিয়ে আমার কাছে আসতে বলতাম।
উফফ! ছটফটানি করতে লাগলাম। ঘুম আসছে না মোটেই বারবার তিথির কান্না করার কথা মনে পড়ছে। বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আমারও কান্না পাচ্ছে খুব।
,
মিসেস সাবিনা অনেক কিছু করছেন তিথির কান্না থামানোর জন্য। কিছুতেই হচ্ছে না। গল্প বলছেন, মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছেন, আদর করছেন।
তিথি কান্না করার মাঝেও হঠাৎ ফিক করে হেসে দিলো। মিসেস সাবিনা তিথির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
– কিরে হাসছিস কেনো?
– আপনি এতো বড় ছেলেকেও মারেন? হিহি।
তিথি হাসতে লাগল। মিসেস সাবিনাও হেসে দিলাম।
– পাগলী মেয়ে! একদিকে কাঁদছে আবার হাসছেও।
– ইশ! উনি চড় খাওয়ার পর কি দৃশ্যটাই না ফুটে উঠেছিল। কি ইনোসেন্ট ভাবে দাঁড়িয়ে থেকেছিলেন। হিহি।
– মারব না। আমার মেয়েকে মেরেছে। কতো সাহস?
– বেশ করেছেন।
কিন্তু, তিথির খারাপও লাগছে। কতো জোরে চড় খেলেন উনি। ইশ! মনে হয় দাগ বসে গেছে।
– কিরে কি হলো?
– নাহ, কিছু না।
– কাব্য, আরো অনেকবার আমার হাতের মার খেয়েছে। শুনবি..
– হুম, বলুন। বলুন..
তিথি নড়েচড়ে শুলো। মিসেস সাবিনা তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে গল্প বলতে শুরু করলেন। যাক, শেষ পর্যন্ত মেয়েটার মুখ হাসি ফুটল।
– আম্মু, আমার না উনার কাছে যেতে ইচ্ছে করছে।
– কি বললি? থাপ্পড় খাবি। কাব্য তোকে চড় মেরেছে। তারপরও ওর কাছে যাবি…
– উনাকেও তো মেরেছেন।
– বেশ করেছি।
– কিন্তু, আমার তো উনার কাছে যেতে ইচ্ছে করছে। ইশ! কতো জোরে চড় খেয়েছেন।
– চুপ করবি? চুপচাপ ঘুমা। একদম যাবি না ওর কাছে বুঝলি। তোকে কষ্ট দিয়েছে ও। এখন বুঝুক মজা..
– কিন্তু..
– কোনো কিন্তু না।
– আচ্ছা।
বেশ তো। কষ্ট পাক উনি। কতো জোরে মেরেছেন আমাকে। উনি একটুও ভালো না। খারাপ লোক। খারাপ বুড়ো। খারাপ স্বামী উনি।
,
(সকালে)
রাতে একটুও ঘুমুতে পারিনি। বারবার তিথির কথা মনে পড়ছিল। রুমটা খালি খালি লাগছিল।
তিথি নাস্তার টেবিলে এসে বসল। ঠিক আমার অপজিটে।
তিথি একবারও আমার দিকে তাকালো না। খুব কষ্ট দিয়ে ফেলেছি ওকে।
– কিরে না খেয়ে তাকিয়ে আছিস কেনো?
আম্মুর কথায় ঘোর কাটল।
– খাচ্ছি তো।
মিসেস সাবিনা বেশ বুঝতে পারছেন উনার ছেলে মেয়েদের মনের অবস্থা। হাসি আঠকে রেখেছেন কোনোমতে। ভাবছেন কাব্যর আব্বু থাকলেতো বেশ হতো। উনি সব ঘটনায় গণ্ডগোল পাকিয়ে দিতেন। হো হো করে হেসে দিতেন।
মিঃ রাকিব। বিজনেস ডিলের জন্য বাইরে গেছেন কয়েদিনের জন্য।
তিথি ভাবছে, ইশ! কি অবস্থা হয়েছে উনার? মনে হয় রাতে ঘুমাননি। উনার কাছে যেতে ইচ্ছে করছে খুব। কিন্তু, আম্মুতো বকা দিবেন। মারবেন বলেছেন। না থাক বাবা যাওয়ার দরকার নেই।
অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে গেলাম। আম্মু তিথিকে বাসার গাড়ি দিয়ে কলেজে পাঠিয়ে দিয়েছেন। মন খারাপ হয়ে গেলো। ভাবছিলাম কলেজে নিয়ে যাওয়ার সময় সরি বলে দিবো তিথিকে। কিন্তু, সেটা আর হলো না।
,
অফিস শেষ গাড়ি নিয়ে সোজা তিথিদের কলেজে গেলাম। গিয়ে যা দেখলাম রাগে আমার মাথা গরম হয়ে গেলো। কয়েকটা ছেলে দাঁড়িয়ে তিথিকে ডিস্টার্ব করছে। একটা ছেলে হাতও ধরে আছে তিথির।
– ভাইজান, শুনুন। ভুল জায়গায় হাত দিচ্ছেন।
ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বললাম। তিথি অবাক হয়ে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিলো।
– কেরে তুই?
– তোর যম।
– মানে!
– মানে, ওর হাত ছেড়ে দে। ( আমি)
– না, ছাড়লে। কি করবি তুই?
– জানি না।
রাগে ফুসতে ফুসতে অন্যদিকে তাকিয়ে বললাম।
– তা, মালটা তোর কি হয়রে। তুই এতে নাক গলাচ্ছিস কেনো?
– বউ হয় ওও আমার। নাক গলানোর তো কথাই তাই না।
বলেই পাঞ্চ করলাম ছেলেটার মুখ বরাবর।
.
#_____________চলবে________________
.

#কোনো গল্পের পর্ব খুজে না পেলে সর্বশেষ পোস্ট কমেন্ট করে জানাবেন।



#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। আসা করি সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here