#অভ্র_নীল,০২,০৩
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_০২
ওইদিকে কফি শপে অভ্র……
বসে বসে শুধু নীলের কথাই ভাবছে….
আর নিজের অজান্তেই মুখ ফসকে বলে উঠলো নীল।
আকাশ আর শুভ ওহো দোস্ত নামও জেনে ফেলেছিস
দেশে ফিরতে না ফিরতেই প্রেমে পরে গেলি
( হ্যাঁ বন্ধুরা তোমরা একদম ঠিক ভাবছো এই হচ্ছে আমাদের গল্পের নায়ক অভ্র চৌধুরী যার Entry গল্পের কিছুক্ষণ আগেই হলো তাও একদম নায়িকার সাথে ধাক্কা খেয়ে অভ্র আজ-ই দেশে ফিরেছে আমেরিকা থেকে পড়াশুনা শেষ করে আর এসেই বন্ধুদের সাথে দেখা করতে এসে মন হারিয়ে ফেলে অভ্র হচ্ছে Business Man রাজ চৌধুরীর ছেলে আর একটি মেয়ে আছে ক্লাস 9 এ পড়ে নাম তোয়া চৌধুরী এখন চলেন বাস্তবে ফিরে আসি মানে গল্পে)
অভ্র — তোরা চুপ করবি,,, আর খোঁজ নে তো কে এই নীল ওর সম্পর্কে আমি সব জানতে চাই..
আকাশ— ওকে দোস্ত এই প্রথম তোর কোনো মেয়েকে পছন্দ হয়েছে আর আমরা ওর সব খবর এনে দেবো তোকে,,, তুই টেনশন করিস না বাড়ি যা আন্টি আঙ্কেল ওয়েট করছে হয়তো…
শুভ– হুম হুম আকাশ ঠিক বলেছে…
সবাই চলে গেলো
অভ্র বাড়িতে যাওয়ার পর বাড়িতে আনন্দ আর খুশির ডল নেমেছে সবাই অনেক খুশি
নীল– রাতে পড়া কমপ্লিট করে ওর আম্মুর সাথে ডিনার টেবিলে ওয়েট করছে ওর আব্বুর জন্য আজও নীলের আব্বু টাইম মতো বাড়ি ফিরলো না,,,
( নীলের আম্মু কতবার বললো নীল কে খেয়ে নিতে কিন্তু নীল খেলো না রাগ করে রুমে গিয়ে দরজা আটকে শুয়ে পরে আর আব্বুর প্রতি এক বুঝা অভিমান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে নীল)
রায়হান সরকার– নীল কোথায়,, খেয়েছে ও???
ও তোমার মেয়ে তোমার মতোই হয়েছে এতবার বললাম খেয়ে নে কিন্তু কিছুতেই খেলো না দরজা আটকে শুয়ে পরেছে,,,
রায়হান সরকার — কি বললে তুমি আমার একমাত্র মেয়ে না খেয়ে ঘুমিয়েছে
রায়হান সরকার নীলের রুমে গেলেন লাইট অন করলেন সাথে সাথেই আব্বু তুমি এসেছো( একদম বাচ্চা মেয়ের মতোন )
নীল মামনি আমি খাবার নিয়ে আসছি নাও খেয়ে নাও মা ( মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো )
নীল– আমি এখন খাবে না আব্বু
রায়হান সরকার — তুমি হা করো আমি খাইয়ে দিচ্ছি নীল হা করে আর রায়হান সরকার তাকে খাইয়ে যাচ্ছে
দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মিসেস রায়হান সরকার দেখছেন আর মুচকি হাসছেন ( মনে মনে বলছেন) বড্ড বেশি ভালোবাসে লোকটা মেয়েটাকে একদম বাবার চোখের মনি
মিসেস রায়হান — এই তোমার নীলকে খাওয়ানো হলে নিচে এসো আমি তোমার জন্য খাবার রেডি করছি
রায়হান সরকার — ওকে যাও আসছি..!
রায়হান সরকার নীলকে খাইয়ে দেওয়া শেষ হলেই নীল ধপাস করে শুয়ে পরে আর ঘুমিয়ে যায়
রায়হান সরকার মেয়ের কান্ড দেখে হেঁসে মেয়ের কপালে একটা চুমু দিলো আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো তারপর লাইট অফ করে নিচে চলে গেলো,,
মিস্টার এন্ড মিসের রায়হান Dinner শেষ করে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন…!
ওই দিকে…
অভ্র Dinner শেষ করে সবাইকে Good Night বলে নিজের রুমে চলে আসে আর শুয়ে শুয়ে নীলের কথা চিন্তা করে,,, চিন্তা করতে করতে অভ্র যেনো অজানায় হারিয়ে গেছে এই প্রথম অভ্র কোনো মেয়ের জন্য এতটা ফিল করছে
নীল এর সাথে তার ধাক্কা লাগা কফি গুলো পড়ে যাওয়া নীল মাথা নিচু করে থাকা আর বকবক করা ওর দিকে একবারও না তাকানো
নীলের বাচ্চা বাচ্চা চেহারা মায়াবী চোখ
আর ভাবতে পারছে না সে হয়তো এখন পাগলই হয়ে যাবে… মুখের কোণে মিষ্টি হেসে তুমি শুধু আমার নীল
কিছুক্ষণ পরে অভ্র ঘুমিয়ে যায়,,,,
সকালে,,,!!
.
.
.
.
চলবে….???
#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_০৩
মুখের কোণে মিষ্টি হেসে তুমি শুধু আমার নীল
কিছুক্ষণ পরে অভ্র ঘুমিয়ে যায়,
সকালে,
তোয়া– ভাইয়া উঠো আম্মু তোমাকে ডাকছে নাস্তা করার জন্য আর আব্বু তোমাকে কিছু বলবে
তাই আমাকে ডাকতে পাঠাইছে উঠো.!
অভ্র — উঠছি আমি তুমি যাও আম্মু কে বলো.
পুচ্কি বুড়ি… ( কপালে চুমু দিয়ে)
অভ্র ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলো নাস্তা শেষ করে ওর আব্বুর পাশে বসলো
রাজ চৌধুরী– অভ্র তোমার পড়াশোনা শেষ তাই আমি চাই তুমি এখন থেকে আমার Business এ হাত দাও আমার বয়স হচ্ছে এখন থেকেই সবটা বুঝে নাও বাবা… কাল সবে ফিরেছো কয়েকদিন ঘুরো বন্ধুদের সাথে গল্প করে তারপরে Business a ডুকবে…
অভ্র — ওকে বাবা তুমি যা বলবে…
ওই দিকে…..
নীল উঠ আম্মু কলেজে আজকেও লেট হবে তোর
নীল — আর একটু ঘুমাই না মা বলতে বলতেই নীলের মনে পরলো স্যার এর লাস্ট Warning এর কথা লাফ দিয়ে উঠে পরলো নীল,,, তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
মিসেস রায়হান— কি হলো ব্যাপার টা আজ এক ডাক দিতেই উঠে গেলো সূর্য কোন দিক দিয়ে উঠছে আজ যাক ভালোই হইছে
নীল রেডি হয়ে নিচে নাস্তা করে কলেজে চলে গেলো,,,
তানজুম — কিরে আজ টাইমলি কিভাবে আসছি তুই
তানিয়া — কাল স্যার ওকে যা warning দিছিলো না এসে যাবে কোই,,,
নীল– আর বলিস না,,, স্যার এর কথা
কাজল– কিরে তোদের কালকের ওই ছেলের কথা মনে আছে Handsome ছেলেটার কথা
নীল তানজুম তানিয়া,,, কোন ছেলে??
কাজল– ওইযে নীল যে ধাক্কা খেলো
তানজুম,, তানিয়া — ওই ছেলের কথা তুই কেনো বলছি বুঝেছি তোর বিএফ কাছে বলতে হচ্ছে ব্যাপার টা
নীল– আমি তো ওই ব্যাপারে ভুলেই গেছিলাম
কাজল– তুই কি দিয়া তৈরি হুহহহ
আনরোমান্টিক একটা মাইয়া
ক্লাসে স্যার– Very good,,, নীলাঞ্জনা আজ কারেক্ট টাইমে আসছো দেখি ক্লাসে,,,
নীল– জি স্যার।
যা ভয় দেখাই ছিলেন কাল না এসে কি আর থাকতে পারি.. ( আসতে আসতে বলে)
কলেজ ছুটি হওয়ার পর,,, সবাই বাহিরে চলে আসে…
আর কাজল খেয়াল করে কফি শপের ছেলেটা বাইকে হেলান দিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে,,,
কাজল এর অভ্র কে চিনতে অসুবিধা হয়নি কারণ সে অনেক বার দেখছে ওকে …
কাজল– দেখ তোরা ওই কাল কফি শপের ছেলেটা দাঁড়িয়ে এদিকেই দেখছে সবাই তাকালো শুধু নীল ছাড়া।
সবাই বললো– সত্যিই তো ছেলেটা অনেক কিউট আর হ্যান্ডসাম ও তবুও নীল তাকালো না…
( অভ্র ব্লাক ট্রি-শার্ট পরেছে আর ব্লাক কালার প্যান্ট হাতে ঘড়ি শার্টের কলারে ঝুলানো সানগ্লাস আর বড় বড় সুন্দর চুল হেবি লাগছে অভ্র কে দেখতে)
অভ্র নিজেই বিরবির করে বলছে যার জন্য আসলাম সে একবার ও তাকাচ্ছে না
(সকালে ফিরে যাই অভ্র কলেজের সামনে কিভাবে আসলো জেনে আসি,,, রাজ চৌধুরীর কথা শেষ হতে সে চলে যায় আর অভ্রর ফোনে একটা কল আসে কল রিসিভ করতেই ভাই নীলের সম্পর্কে সব জানতে পেরেছি তুই কফি শপে আয়)
নীল সঙ্গে সঙ্গে মিসেস রাজ কে বিদায় দিয়ে চলে আসে…
কফি শপে…
অভ্র — হুম বলল কি জানতে পেরেছিস
আকাশ — নীলের পুরো নাম হচ্ছে ” নীলাঞ্জনা নীল ” Business Man রায়হান সরকার এর একমাত্র মেয়ে আর নীল যে কলেজে পরে সেই কলেজের নাম বললো… তাছাড়া আরও বললো নীল খুব চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে, মনের দিক দিয়ে খুব ভালো, দুষ্টামি ফাজলামি করতে ভালোবাসে আর সব চাইতে Important কথা ছেলেদের একদমই Tolerate করতে পারে না… ছেলেরা যেমন ওর কাছে চোখের বিষ
সব শোনার পর অভ্র… হুম চল
আকাশ,, শুভ– কোথায়?
অভ্র– নীলের কলেজের সামনে
আকাশ শুভ এক সাথে– কিহহহহহ
তারপর কফি শপ থেকে বেরিয়ে এক পর্যায়ে জোর করেই ওদের দুজন কে নিয়ে আসে নীলের কলেজের গেইটের সামনে,,
নীল সব কিছু শুনেও না শোনার মতো করে গাড়িতে উঠে চলে গেলো
অভ্র — ইসসসস একবারও কি তাকানো দরকার ছিলো না ওর বলেই ওদের তিন জনের কাছে গেলো আর ওদের হেল্প চাইলো ওরাও হেল্প করে রাজি হয়ে গেলো।
পরের দিন সেইম ভাবে অভ্র নীলের কলেজের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে নীল ফিরেও তাকায় না..!
অভ্রের খুব কষ্ট হতো নীলের এই ভাবে Ignore করাতে…
আকাশ,, শুভ,, তানজুম, তানিয়া,, কাজল
মিলে প্ল্যান করলো ওদের দুজনের পার্কে একা সামনা সামনি দেখা করাবে….
এইভাবে আজকের দিনটাও চলে যায়,,,,,
রাতে,,,,,
নীলের দিন গুলো স্বাভাবিক দিনের মতোই যায় আগে যেভাবে যেতো নীল একবারও ভাবে না অভ্রর কথা..
ওই দিকে…
অভ্র সারারাত ঘুমাতে পারে না সারাদিন বাবার ব্যবসা সামলানো সময় বের করে নীলের সাথে দেখা করতে যাওয়া নিরাশ হয়ে ফিরে আসা
অভ্র শুয়ে শুয়ে শুধু নীলের কথাই ভাবছে,,
আর বলছে অনেক ভালোবেসে
ফেলেছি আমি তোমাকে নীল,,,
নিজের থেকেও বেশি কিন্তু কেনো নীল কেনো তুমি বুঝো না কেনো বুঝো না আমার ভালোবাসা… ( অভ্রর চোখের কার্নিশ বেয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে)
.
.
.
.
চলবে….????।