অভ্র_নীল (সিজন-০২) #পর্ব_০১

0
1473

#অভ্র_নীল (সিজন-০২)
#পর্ব_০১
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা

শহর থেকে দূরে গ্রামে যাচ্ছি। আমি, তানজু আর তানিয়া আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড কাজলের বিয়ে। গ্রামে বিয়ে হচ্ছে বলে আমরা যেতে চাইনি কাজল বলে আমরা না গেলে ও বিয়েই করবে না। কাজল তো আমাদেরই ফ্রেন্ড তাই আমরা ওকে ভালো করেই চিনি যা বলে বেচারী সেটাই করে তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে।
দেখুন কথা বলতে বলতে গ্রামে চলে এলাম। গাড়ি প্রবেশ করলো গ্রামের কাঁচা রাস্তায় কিছুদূর পর্যন্ত ঠিক চললেও এখন আর সামনে এগোতে পারছে না।
কারণ গাড়ির টায়ার আটকে গেছে কাঁদায়। এই রাস্তা দেখেই আমার কেমন কেমন জানি লাগছে। রাস্তা এই জায়গায় গোরত ওই জায়গায় কাঁদা উফফ।
তানজু: তুই গ্রামে প্রথম বার আসছিস তাই এমন লাগছে।
তানিয়া: এই গাড়ি আজকে উঠবে বলে তো আমার মনে হচ্ছে না চল হেঁটে যাই আর একটু গ্রামের ভেতরে গেলেই পেয়ে যাবো ওর বাড়ি।
তানজু: কিন্তু আমরা তো চিনি না।
ড্রাইবার: মামনি রা দাওয়ান ভিলা বললে যে কেউ তোমাদের চিনিয়ে দিবে তোমরা যাও আমি গাড়ি নিয়ে আসছি।
আমি: এই দাওয়ান ভিলা টা আবার কোথায়?
তানিয়া: এত প্যারা নিচ্ছিস কেন আশে পাশের মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করতে করতে চলে যাবো।
আমি: তা না হয় ঠিক আছে কিন্তু আমি এই পঁচা রাস্তা দিয়ে যাবো না।
তানজু: তো যাবাই না যখন এখনো সিঙ্গেল আছো কেনো একটা বয়ফ্রেন্ড জোগার করতে পারো নাই এতদিন?
তানিয়া: হুহহ ঠিক তোর একটা বয়ফ্রেন্ড থাকলে তোরে এখন কোলে কইরা নিয়া যাইতো তাহলে তোর আর হেঁটেও যাওয়া লাগতো না।
আমি: হইছে হইছে আমাকে জ্ঞান দিতেছিস তোদের ও তো বয়ফ্রেন্ড নাই।
তানিয়া: ওই আমরা বানাই নাই তাই নাই।
আমি: হইছে ড্রামা কুইন এখন চলো যাওয়া যাক।

আমি: আর কত হাঁটবো হাঁটতে তো মনে হয় গ্রামের শেষ প্রান্তে চলে আসছি।
তানজু: আমার তো কলিজা শুকিয়ে গেছে রে।
তানিয়া: আমি আর হাঁটতে পারবো না।
আমি: কাউকে জিজ্ঞেস কর ওই কি জানি হ্যাঁ দাওয়ান ভিলা কোথায়? তানজু: তুই কর।
তানিয়া: আমাদের জান চলছে না তুই জিজ্ঞেস কর প্লিজ।
আমি: হয় হয় তোদের জান চলছে না আর আমার জান তো দৌঁড়াচ্ছে যত্তসব নাটকবাজ বন্ধু কপালে জুটছে। বলেই মুখ ভেংচি দিলাম।
কাকে এখন জিজ্ঞেস করি হ্যাঁ ওই তো একটা আঙ্কেল দেখতে পারছি ওই আঙ্কেল কেই গিয়েই জিজ্ঞেস করি দাওয়ান ভিলা কোথায়। যেই কথা সেই কাজ হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম আঙ্কেল লোকটার পেছনে।
কার সাথে জেনো বেশ রেগেই কথা বলছে যাক গা তাতে আমার কি আমি যে জন্য আসছি সেটাই করি।
আমি: Excuse me uncle.! (ঠিক উনার পেছনে দাঁড়িয়ে বললাম উনি সামনের দিকে তাকিয়ে আরও রাগী কন্ঠে বললেন)
আঙ্কেল: What do you mean by uncle?
সামনের দিকে তাকিয়ে প্যান্টের পকেটে মোবাইল গুঁজতে গুঁজতে বলল। আমিও বললাম
আমি: আঙ্কেল কে আঙ্কেল বলবো না তো কি বলবো?
এবার আঙ্কেল আরও রেগে গেলেন। সামনের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে বলতে আমার দিকে তাকালেন আর তাকাতেই চুপ হয়ে গেলেন।
আঙ্কেল: কোন দিক দিয়ে আপনার আমাকে আঙ্কেল মনে হচ…….
:প্রথম নজরেই প্রেমে পরে গেছি আমার মনে রাজকুমারী তোমাকেই তো এতদিন ধরে খুঁজছি আজ বন্ধুর বিয়েতে এসে তোমাকে পেয়ে গেলাম আহ কি সুন্দর লম্বা লম্বা চুল ঠিক আমার মনের মতো আর চোখ বাঘিনীর চোখের মতো মনে তো হচ্ছে এই চোখের অতল সাগরে ডুবে হারিয়ে যেতে আর ঠোঁট……. (মনে মনে) আমার কথায় উনার হুসসস ফিরলো।
আমি: হহহহহহহহচচচচচচচ কি?
আঙ্কেল: আহহ হচ্ছে? আমি কি দেখতে আঙ্কেলের মতো নাকি জানো আমাদের ভার্সিটির সব মেয়েদের ক্রাশ আমি আর তুমি আমাকে আঙ্কেল ডাকছো।
আমি: আইছে ভার্সিটির ক্রাশ এতক্ষণ ছিলো দুইটা ড্রামাকুইন এখন এসে জুটছে চাপাবাজ। (মনে মনে)
আমি: আঙ্কেল ডাকবো না তো কি ডাকবো জামাই বলে ডাকবো নাকি?
আঙ্কেল: ডাকতে পারো আমার কোনো সমস্যা নেই।
আমি: অসভ্য লোক লজ্জায় মরে যাওয়ার মতো করছে মিটিমিটি হাসছে আর সাথে রং করছে।
দূর থেকে তানজু: ওই ছেলেটার সাথে ও এত কি কথা বলছে রে?
তানিয়া: কথা বলছে নাকি ঝগড়া করছে।
তানজু: চল গিয়ে দেখি।
তানিয়া: চল যাই।
আমি: ইইহহহহ আমি আপনাকে জামাই ডাকমু কেন?
আঙ্কেল: কারণ তুমি আমাাকে আঙ্কেল ডাকছো তাই।
আমি: আঙ্কেল ডাকছি বেশ করেছি আরও বেশি বেশি ডাকমু।
আঙ্কেল: তাহলে আমিও তোমাকে বউ ডাকমু।
আমি: মাইর চিনেন?
আঙ্কেল: চিনি তো খুব টেস্ট।
আমি: উফফ।
তানজু: কি হচ্ছে এখানে?
আঙ্কেল: আপনি কে আন্টি?
তানিয়া: আপনার কি ওকে দেখে আন্টি আন্টি লাগছে নাকি?
উনি: উনার আমাকে দেখে আঙ্কেল মনে হয়েছে তাই আমার আপনাদের দু’জনকে দেখেই আন্টি মনে হচ্ছে।
তানজু: ওও আচ্ছা ভাইয়া ওর তরফ থেকে আমরা সরি বলছি।
উনি: হুমমম গ্রামের কেউ তো দেখে মনে হচ্ছে না কোথায় আসছেন আপনারা।
তানিয়া: ভাইয়া আমাদের একটু হেল্প করবেন প্লিজ।
উনি: ওর জন্য তো কুছ বি। কি হেল্প?
আমার দিকে তাকিয়ে ওদের বলল।
তানজু: আমরা আসলে।
আর কিছু বলার আগেই আমাদের গাড়ি চলে এলো আর হন বাজাচ্ছে আমাদের পাশে।
তানিয়া: আল্লাহ বাঁচলাম গাড়ি টা তো আসলো কাঁদা থেকা উইঠা।
তানজু: ওই চল চল।
তিনজনেই হেঁটে গাড়িতে উঠতে যাবো চাপাবাজ ছেলেটা ডাক দিলো।
আঙ্কেল ছেলে: এই যে মিস হ্যালো নাম কি আপনার হ্যালো নাম না বললে খুঁজবো কোথায়?
শুনেও না শোনার ভান করে গাড়িতে উঠতে যাবো ওমনি আবারও ডাক দিলো।
মিস্টার চাপাবাজ: ও বউ……!
এই ডাক শুনে আর পেছনে না তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। চোখ গুলো গোলগোল আর বড়বড় করে রাগী লুক নিয়ে পেছনে তাকালাম।
মিস্টার চাপাবাজ: এইভাবে গোলমাটোল ভাবে তাকিও না স্টোক করবো তো আশেপাশে কিন্তু হাসপাতাল ও নেই।
ইচ্ছে করছে গিয়ে এক ধাক্কা মেরে পেছনে কাঁদায় ফেলে দেই অসভ্য চাপাবাজ ছেলে। বলেই গাড়িতে উঠে পরলাম আর ছেলেটা মাথার চুলে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।
মিস্টার চাপাবাজ: তোমাকে তো আমি খুঁজে বের করবোই রাজকুমারী আমার মনের রানী করে রাখবো। বলেই হাঁটতে শুরু করে আর কাকে জেনো কল দিচ্ছে তারপর….

চলবে?

অভ্র নীল সিজন ০১ এর সাথে ০২ এর কোনো মিল হবে না,,, যারা ০১ পড়েননি তারাও গল্পটি পড়তে পারবেন। আশা করি গল্প টি আপনাদের ভালো লাগবে।ভালো থাকুক সুস্থ থাকুন।
হ্যাপি রিডিং!?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here