কনফিউশন,২৬,২৭

0
468

#কনফিউশন,২৬,২৭
লেখকঃ মৌরি মরিয়ম
পর্ব ২৬

আরশি ঘরে ঢুকে বুকে বালিশ চেপে বসে রইলো। ভয়ঙ্করভাবে বুক কাঁপছে তার। কাব্য কী বলবে? কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে এক্স গার্লফ্রেন্ডের কথা বলবে। কাব্যর মতো ছেলের এক্স থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই এক্সের কথা সে আরশিকে বলতে চাচ্ছে এটা অস্বাভাবিক। তাহলে কি কাব্য কোনো সম্পর্কে যাওয়ার আগে পুরোনো সব বলে নিতে চায় যাতে পরে ঝামেলা না হয়? এ কথা ভাবতেই আরশির প্রচন্ড ভালো লাগলো। কাব্যর অনেক বদ অভ্যাস আছে এটা ঠিক কিন্তু সব ছাপিয়ে এই ছোটো ছোটো গুণগুলোই যে বারবার মুগ্ধ করে ফেলে আরশিকে!
যাক অবশেষে তনিকার কথা আরশিকে বলার সুযোগ পাওয়া গেলো। ফোনে বলার সুযোগ হয় অহরহ। কিন্তু কাব্য সামনাসামনি বলতে চায়। সব শুনে আরশির প্রতিক্রিয়া দেখতে চায় কাব্য। যেটা ফোনে বললে সেটা সম্ভব না। বারান্দায় দাঁড়িয়ে চা খেতে খেতে এ কথাই ভাবছিলো কাব্য। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে বিকেল থেকে সন্ধ্যা হতে একটু বেশিই সময় নিচ্ছে। অপেক্ষা করা মুশকিল, যতটুকু হালকা লাগছে ততটুকুই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। আরশি হয়তো এখন তাকে একরকম ভাবছে। তনিকার কথা শোনার পরে আরেকরকম ভাববে। তা ভাবুক। কাব্য যেমন মানুষ, তেমনটা স্পষ্ট থাকা উচিৎ আরশির কাছে।
সন্ধ্যার পর রশ্নি ও আরশি দুজনে একসাথে বসে চা খেলো। এরপর আরশি ছাদে গেলো। যেহেতু আরশি প্রায়ই ছাদে বা বাগানে হাঁটে তাই রশ্নি আর এ ব্যাপারে ভাবলো না। ছাদে যেতে যেতে আরশি কাব্যকে ফোন করতেই সে চলে এলো। আরশি বললো,
“এতো তাড়াতাড়ি এলে কীভাবে?”
“বাগানে ছিলাম।”
“ও আচ্ছা।”
আরশিদের ছাদে ছোটো একটা বসার ব্যবস্থা আছে। সেখানেই বসলো দুজন। কাব্য বললো,
“আজকের চাঁদটা সুন্দর।”
“হ্যাঁ।”
জোৎস্নার ভেসে যাওয়া আলোয় শুভ্রের মতো আরশিকে দেখে কাব্য বিমোহিত হয়ে গেলো। মেয়েটাকে একেক সময় একেক রকম সুন্দর লাগে। এইযে আরশির হাসি হাসি সুন্দর মুখ, এটা তো একটু পরেই মিলিয়ে যাবে। তখন কি জগৎ সংসারের আর কিছু ভালো লাগবে কাব্যর? আজ কি তবে বাদ দেবে তনিকার কথা? কিন্তু আজ তো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলো, আরশিকে বলেছেও সে কথা। তবে কি আরেকদিন বলবে? কাব্য যখন এসব ভাবনায় বিভোর ছিলো তখন আরশি বললো,
“কী ভাবছো?”
“কিছু না।”
“কী যেন বলবে বলেছিলে?”
কাব্য ভাবলো যা হবার হবে, বলে দিক আজ। কাব্য বলতে শুরু করলো,
“হুম বলবো। ভাবছি কোনদিক থেকে শুরু করবো! সব এতো এলোমেলো!”
আরশি হেসে বললো,
“একদিক থেকে শুরু করলেই হয়।”
“আচ্ছা এলোমেলোভাবেই বলি৷ এসব গুছিয়ে বলা সম্ভবও না বোধহয়।”
“বলো।”
“মেয়েটার নাম তনিকা। গতবছর ওর সাথে আমার সম্পর্ক হয়। এর আগে আমার কারো সাথে কিছু ছিলো না, এটাই আমার প্রথম প্রেম বলতে পারো।”
“আচ্ছা।”
“তনিকার সাথে আমার পরিচয় এক বন্ধুর মাধ্যমে।
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*
আমাদের বন্ধুদের আড্ডায় আসতো। ছেলেদের সাথেই তার ওঠাবসা বেশি, মেয়েদের সাথে তার যায় না। মেয়েটা প্রচন্ড সাহসী ও জেদি। প্রকাশ্যে সিগারেট খায়, স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড, কোনো ন্যাকামি নেই, ভনিতা নেই, লজ্জা নেই, জড়তা নেই, একদম বোল্ড। আই লাইক দ্যাট টাইপ অফ গার্ল। আড্ডায় আসতো, প্রায়ই দেখা হতো, কথা হতো। এভাবেই ভালো লাগার শুরু। বুঝতাম সেও আমাকে পছন্দ করে। অল্প কয়েক মাসের পরিচয়েই আমাদের প্রেম হয়। পয়েন্ট টু বি নোটেড, আমিই তাকে প্রোপোজ করেছিলাম।”
আরশি হেসে বললো,
“এরকম মেয়ে সিনেমায় দেখা যায়।”
কাব্যও হেসে বললো,
“বাস্তবেও আছে তবে রেয়ার।”
“তারপর কী হলো?”
“মা আমার বেস্টফ্রেন্ড। মার কাছে আমি কিছুই লুকাই না। জীবনের প্রথম একটা প্রেম করছি, লুকানোর তো প্রশ্নই আসেনা। তনিকার ব্যাপারটা মায়ের সাথে শেয়ার করি। মা আবার অতি উৎসাহী। সে তনিকার সাথে কথা বলতে চাইলো। আমি কথা বলিয়ে দিলাম দুজনার।”
“বাহ।”
“ভালোই চলছিলো। তবে ঝামেলাটা হলো কিছুদিন পর। যখন আমরা লিভ টুগেদার শুরু করলাম।”
এবার আরশি চমকে গেলো। কি বলবে বুঝতে পারলো না। কিছু কি বলা উচিৎ? নাকি চুপচাপ শুনে যাওয়া উচিৎ? অবশেষে আরশি বললো,
“কিন্তু আমাদের দেশে দুজন অবিবাহিত ছেলেমেয়ে একসাথে কীভাবে থাকতে পারে? এটা কি সম্ভব?”
“তনিকা হুট করে এসে থাকতে শুরু করে। জেদ ধরে সে যাবেনা। শেষে উপায় না দেখে বাড়িওয়ালাকে বলি বিয়ে করে ফেলেছি।”
আরশি এবার আর কিছু বললো না। কাব্য বলতে লাগলো,
“ধীরে ধীরে তনিকা আমার ব্যাপারে একটু বেশিই ক্রেজি হয়ে যাচ্ছিলো। ব্যাপারটা প্রথমে আমার ভালো লাগলেও পরে অস্বস্তিতে রূপ নিলো যখন সে আমার বাসায় এসে উঠলো।”
“তোমার ফ্যামিলির কেউ কখনো তোমার বাসায় আসতো না?”
“না, কক্সবাজারে বাবার কিছু হোটেল আছে তারই একটার ব্রাঞ্চ ঢাকায় আছে। কেউ এলে সেখানেই ওঠে।”
“ওহ আচ্ছা।”
“সমস্যা ফ্যামিলি বা পারিপার্শ্বিক কোনো দিক থেকে ছিলো না। সমস্যাটা আমাদের মধ্যেই তৈরি হয়েছিলো। কিংবা বলা ভালো আমার মধ্যে।”
আরশি চুপ। কাব্য বললো,
“মাসখানেক একসাথে থাকার পর আমি একটা জিনিস আবিস্কার করলাম তা হলো প্রতিবার ওর সাথে পারসোনাল টাইম স্পেন্ড করার পর আমি খুব বিষণ্ণবোধ করি। তখন আমার কিছু ভালো লাগে না। এরপর থেকে কিছুটা দূরে থাকার চেষ্টা করি।”
আরশি এবারো কিছু বললো না। কাব্য বললো,
“ব্যাপারটা তনিকাকে বলবো কিনা বুঝতে পারছিলাম না। সে কষ্ট পাক এটা আমি চাচ্ছিলাম না। সে হ্যাপি ছিলো আমার সাথে।”
আরশি এসবের সাথে পরিচিত না। কি বলবে জানেনা তাই চুপ করেই রইলো। কাব্য বললো,
“কিছুদিনের মধ্যে আরো কিছু জিনিস আবিস্কার করলাম যেমন, তনিকা যখন বাইরে থাকে এবং আমি একা থাকি তখন খুব ভালো থাকি৷ আবার আমি যখন বাইরে থাকি তখনও খুব ভালো থাকি। এরপর আমি ইচ্ছে করে লেট নাইট পর্যন্ত অফিস করতাম বা আড্ডা দিতাম যাতে আমি ফেরার আগে সে ঘুমিয়ে পড়ে। এভাবে আসলে আমি পারছিলাম না। এরমধ্যেই সেমিস্টার গ্যাপ এলো, তখন কক্সবাজার গিয়ে এক মাসের বেশি থাকলাম। এদিকে তনিকা পাগল হয়ে যাচ্ছিলো কবে ফিরব বলে আর আমি ওদিকে অযুহাত খুঁজতে থাকলাম কীভাবে আমার ঢাকা আসা আরো পেছানো যায়।”
আরশি বললো,
“খুবই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি।”
কাব্য একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
“প্রচন্ড।”
কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ। এরপর কাব্য বললো,
“যাই হোক, এরপর এক্সাম কাছাকাছি আসায় ঢাকা ফিরতে হলো। কিছুদিন পর আমি যা বুঝলাম তা হলো আমি তনিকাকে ভালোবাসি না, ভালোলাগে ওকে আমার। আর এই ভালোলাগাকেই ভালোবাসা ভেবে ভুল করে ফেলেছি আমি৷ তোমাকে বলেছি প্রপোজ আমি করেছিলাম। ভুলটা যেহেতু আমার সেহেতু এতদিন একসাথে থাকার পর সম্পর্কটা ভাঙতে চাচ্ছিলাম না। আমাদের দেশে অনেক স্বামী স্ত্রী তো ভালো না বেসেও একসাথে থাকে আমিও সেরকমই থাকার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু সেভাবেও আমি পারছিলাম না, হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। আমি শুধু এই অভিনয়, পালিয়ে বেড়ানো এসব থেকে মুক্তি চাচ্ছিলাম। তাই তনিকার সাথে সব কথা শেয়ার করার সিদ্ধান্ত নিই। তার সব জানা দরকার। সব শুনে সে যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। সে কো-অপারেট করে থাকতে চাইলে থাকবে, চলে যেতে চাইলে চলে যাবে। তবে আমি সবকিছুর আগে তার কাছে মাফ চেয়ে নেই ভুলটা তো আমারই ছিলো।”
“তারপর?”
“তারপর আর কী! সব শুনে তনিকা খুব বাজেভাবে রিয়্যাক্ট করে।”
“কিরকম?”
“ভুল বোঝে, রেগে যায়। ওর হাতের কাছে টেবিলে একটা কাচি ছিলো সেটা ছুঁড়ে মারে। ব্রেকাপ করে। তারপর ওর সব জিনিসপত্র নিয়ে চলে যায়।”
“তোমার গালের কাটা দাগটা কী সেই কাচিতে কাটা?”
“হ্যাঁ।”
“এরপর আর যোগাযোগ করেনি?”
“করেছে তবে আমার সাথে নয়, আমার মায়ের সাথে।”
“আন্টির সাথে কেন?”
“মাকে সব বলেছে। মা আমাকে ভুল বোঝে এখনো। যতোবার দেখা হয় ততবারই সেসব কথা তোলে। তনিকার বিয়ে হয়েছে গতবছরই আমাদের ব্রেকাপের পর। কিন্তু তারপরেও আমার উপর ওর রাগ এখনো মেটেনি। তিরার বিয়ে থেকে আমি সোজা বাড়ি চলে গেলাম না?”
“হ্যাঁ।”
বাড়ি যাওয়ার পর কী হয়েছে তা সব বললো কাব্য। সব শুনে আরশি বললো,
“আন্টিকে কেন সব বললো?”
“জিজ্ঞেস করিনি?”
“কেন?”
কাব্য মৃদু হেসে বললো,
“কারণ সে চায় আমি তাকে ফোন করি, সে কেন এসব করছে জিজ্ঞেস করি। কিন্তু আমি তা করবো না।”

চলবে…

#কনফিউশন
লেখকঃ মৌরি মরিয়ম
পর্ব ২৭
.
কাব্য মৃদু হেসে বললো,
“কারণ তনিকা চায় আমি তাকে ফোন করি, সে কেন এসব করছে জিজ্ঞেস করি। কিন্তু আমি তা করবো না।”
কাব্যর হাসি দেখে আরশির খটকা লাগলো। প্রশ্ন করে বসলো,
“কিন্তু কেন করবে না?”
“কারণ আছে। আমি তনিকাকে ভালোবাসি না এ কথা জানার পর কিন্তু সে তার আত্মসম্মানের কারণেই আমাকে ছেড়ে চলে যায়। সে চলে যাওয়ার পর আমার সাথে আর একবারো যোগাযোগ করেনি। আমার সামনেও আসেনি। কখনো একটা ফোনও করেনি। এরপর শুনলাম সে বিয়ে করেছে। আমি তার এই আত্মসম্মানবোধকে শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু শ্রদ্ধাটা সেদিন চলে গেলো যেদিন সে বিবাহিত হওয়া স্বত্তেও আমার মাকে ফোন করে আমাদের কথা বলে দিলো। এখানেই তো সে তার আত্মসম্মান টা বিসর্জন দিলো। অথচ আত্মসম্মান টা যদি একটু অন্যভাবে বিসর্জন দিতো তাহলে হয়তো আরো সুন্দর সমাধান হতে পারতো। ধরো সেদিন যা ঘটেছিলো তার পরেও সে যদি সব ভুলে ফিরে আসতো, আমি যে তাকে গ্রহণ করতাম এটা সে জানতো। কিন্তু সে আসেনি। সে চাইলে পারতো আরেকটু সময় নিয়ে সবটা গোছাতে। আমি শুধুই নিজের অনুভূতিটুকু তার কাছে ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলাম, তাকে ছাড়তে চাইনি। যেহেতু আমাদের সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিলো সেহেতু আমি তাকে বিয়েও করতাম। সব বিয়েতে ভালোবাসা জরুরি নয়। কিন্তু সে খুব বিশ্রীভাবে তার আত্মসম্মান টা বিসর্জন দিলো।”
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*

আরশি চুপ। কাব্য একটু থেমে আবার বললো,
“তনিকার প্রেগন্যান্সি চলছে। মনমতো স্বামী পেয়েছে। সে তার মতো করে ভালো আছে, কিন্তু আমি ভালো নেই। কারণ আমার মায়ের মনে অনেক কষ্ট তার ছেলেটা খারাপ বলে। ছোটোবেলা থেকে মায়ের কাছে আমি খারাপই ছিলাম। ক্লাস সিক্স থেকে সিগারেট খাই, কথা শুনিনা, নিজের মতো চলি। একমাত্র মেয়েঘটিত কোনো কেলেঙ্কারি আমার ছিলো না। এবার সেটাও যোগ হয়ে গেলো।”
আরশি চুপ। কাব্য একটু থেমে আবার বললো,
“তনিকা যদি বিয়ের আগে মাকে বলতো তাহলে আমি তার সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাইতাম কেন এমন করলো। কিন্তু বিয়ের পরে যখন বলেছে তখন আর জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন পড়েনি। উত্তরটা আমার জানা।”
“উত্তরটা কী?”
কাব্য আরশির চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
“বলো তো কী হতে পারে?”
আরশি চোখ ফিরিয়ে নিলো। ছাদের কোনায় রাখা ফুলের টবের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলো। তারপর বললো,
“ঠিক বুঝতে পারছি না।”
“আমাকে শাস্তি দেয়ার জন্য এসব করেছে। ভুল যেহেতু আমার শাস্তিটা আমি মেনেই নিয়েছি।”
এ কথার পর আরশি আর কোনো কথা বললো না। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ। একসময় আরশি নীরবতা ভাঙলো,
“তোমার এসব কথা কে কে জানে?”
“মা আর তুমি।”
“আন্টিকে তো আর তুমি বলোনি?”
“না তনিকা যতটুকু বলেছে মা শুধু ততটুকুই জানে।”
“দোষ তো তোমার একার ছিলো না কাব্য। আন্টি তো সবটা না জেনে তোমাকে ভুল বুঝছে, তার ভুলটা ভেঙে দিচ্ছো না কেন?”
“জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ ভুল বুঝলে ভুলটা ভাঙাতে ইচ্ছে করে না আমার।”
আরশি খানিক অবাক হয়ে চেয়ে রইলো। কাব্য জোৎস্নাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো যার অর্থ আরশি অনেক ভেবেও বুঝতে পারলো না। এই দীর্ঘশ্বাসের কারণ জিজ্ঞেস করবে করবে করেও করলো না আরশি। জিজ্ঞেস করলো অন্য কথা,
“তার মানে তুমি এসব গোপন কথা শুধু আমাকেই বলেছো?”
“হ্যাঁ।”
“হঠাৎ আমাকে কেন বললে?”
কাব্য এই প্রশ্ন শুনে আবারো আরশির চোখের দিকে তাকালো। আরশি চোখ নামিয়ে অন্যদিকে তাকালো। কাব্য বললো,
“যার কন্ঠ শুনে আমার ঘুম ভাঙে, যার সাথে দিনের অনেকটা সময় কাটে, যার কথা শুনতে শুনতে ঘুমাই, তাকে আমার জীবনের অন্ধকার দিকটা জানানোর প্রয়োজন মনে করেছি।”
“তোমার কথায় মনে হচ্ছে আমি তোমার গুরুত্বপূর্ণ কেউ?”
“সন্দেহ আছে?”
“স্পষ্ট উত্তর দাও কাব্য। হ্যাঁ বা না।”
“হ্যাঁ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কেউ। নাহলে এতোকিছু তোমাকে বলতে যাবো কেন?”
“তাহলে যদি কখনো আমি তোমাকে ভুল বুঝি, আমার ভুলটাও ভাঙাবে না?”
কাব্য খুব স্বাভাবিকভাবেই মাথা নেড়ে বললো,
“নাহ।”
আরশি কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বললো,
“তুমি তো সাংঘাতিক মানুষ!”
“সেটাও তোমার জানা প্রয়োজন আরশি।”

চলবে.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here