#চেরি_ব্লসমের_সাথে_এক_সন্ধ্যা,১০,১১
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ১০
_____________
সারারাত মিতুলের দুই চোখের পাতা এক হয়নি। মনে কেবল ঘুরেছে জঙ্গলের ব্যাপারটা। কালকে রাতে কীসব সিরিয়াল কিলার নিয়ে ভেবেছে, যেটা অযৌক্তিক মনে হচ্ছে এখন। কিন্তু কোনো না কোনো গড়বড় তো অবশ্যই আছে। আর সেটা জানতে হলে ওকে ওই জঙ্গলের ভিতর ঢুকতে হবে। ও রাতেই মনস্থির করেছিল সকাল হলেই একবার ওই জঙ্গলে ঢুকে ব্যাপারটা দেখবে। যতই ভয় করুক না কেন একবার বিষয়টা দেখতেই হবে।
মিতুল ব্যাক ডোর থেকে গার্ডেনে নেমে পড়েছে। বাইরে শীতল পরিবেশ। বসন্ত কালেও এখানে বেশ শীত পড়ে। মিতুল গায়ের বেগুনি রঙের সোয়েটারটা ভালো করে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে চলছে। ঘাসের উপর জমে থাকা শিশির বিন্দু পায়ের সাদা কেডস জোড়া ভিজিয়ে দিচ্ছে। জঙ্গলের ভিতর দুই একটা পাখি ডাকছে অচেনা সুরে। ওর কাছে ভয়ংকর লাগছে ওই সুর। যেন ওকে জঙ্গলে ঢুকতে সাবধান করছে। কিন্তু ওই সাবধান বাণী শুনবে না ও। দেখবেই ব্যাপারটা। চারপাশটা অদ্ভুত রকমের নিস্তব্ধতায় ঘেরা। কেমন ভুতুড়ে মনে হচ্ছে। বাতাসের শীতল পরশ সোয়েটার ভেদ করে ভিতরে ঢুকে গায়ের লোম খাড়া করে দিচ্ছে। মিতুলের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে বার বার। ঢোক গিলে গলাটা ভিজিয়ে নিতে চাইছে।
সূর্যের আলোয় চারিপাশ আলোকিত হলেও জঙ্গলের ভিতরে আলোর বিচরণ দেখা যাচ্ছে না ভালো করে। বড়ো বড়ো গাছের ফাঁক ফোকর দিয়ে একটু-আধটু আলো কোনো রকমে ঢুকেছে। যা জঙ্গলকে আলোকিত করতে পারছে না বললেই চলে।
মিতুল জঙ্গলে ঢোকার রাস্তা থেকে এখনও অনেক কদম পিছনে। জঙ্গলে ঢুকতে ভয় করছে ওর। হাত-পা একটু একটু কাঁপছেও বোধহয়। জঙ্গলে ঢুকতে চেয়ে কি ঠিক করছে? না কি ভুল?
হলে হোক ভুল। দেখতেই হবে কী আছে ওই গভীর জঙ্গলে। মিতুল ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত মন নিয়ে এগিয়ে চললো। কিন্তু রাস্তা পর্যন্ত যেতে পারলো না। একটা গম্ভীর পুরুষ কণ্ঠ যেমনি ওর চলন রোধ করলো, তেমনি থামিয়ে দিলো ওর হৃদস্পন্দন। শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল ভয় স্রোত নেমে গেল। পিছন ঘুরে তাকানোর সাহস পাচ্ছে না। কেন এত ভয় করছে জানে না ও। ভীতু মন নিয়ে পিছনের গম্ভীর কণ্ঠের মানুষটির দিকে ফিরলো ও।
ব্যাক ডোরে গম্ভীর কণ্ঠের মানুষ, অর্থাৎ জায়িন দাঁড়ানো।
মিতুল কী বলবে, কী করবে বুঝতে পারছে না। ও হঠাৎ জায়িনকে এত ভয় পাচ্ছে কেন?
“জঙ্গলে ঢোকার দরকার নেই। ওখানে বিশেষ কিছু নেই। গাছপালা এবং একটা উটকো জিনিস ছাড়া অন্যকিছুই দেখতে পাবে না। ওখানে না যাওয়াই ভালো।”
কথাগুলো বলে ঘরে ঢুকে গেল জায়িন।
মিতুল ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে ব্যাক ডোরের দিকে। জায়িন সরাসরি ওকে জঙ্গলে ঢুকতে নিষেধ করেছে? কেন?
আগের থেকে ভয় আরও বেড়ে গেল ওর। জঙ্গলে যাই থাকুক না কেন, তার সাথে জোহান একা জড়িত নয়। জায়িনও যে এর সাথে জড়িত বিষয়টি খুব ভালো করেই বুঝতে পারলো মিতুল। এই দুই ভাই মিলে কী করছে এই জঙ্গলের ভিতর? সত্যি সত্যিই কি কোনো মার্ডার…
মোবাইলে রিংটোনের শব্দে মিতুলের ভাবনায় ছেদ পড়লো। পকেটে ফোন বাজছে।
মোবাইল স্কিনে মা নামটা দেখে মিতুলের মন হঠাৎ কেঁদে উঠলো।
“হ্যালো মা!”
“উঠে পড়েছো ঘুম থেকে?”
“হ্যাঁ মা। তোমায় অনেক মিস করছি মা! লাভ ইউ।”
মিতুলের মা হঠাৎ করে মিতুলের এত ভালোবাসার কারণ বুঝতে পারছেন না। তিনি আশঙ্কা করলেন মিতুল কিছু একটা ঝামেলা বাঁধিয়েছে।
“কী ঝামেলা করেছো তুমি?”
“আমি মরে গেলে তুমি খুব কষ্ট পাবে তাই না?” কথাটা বলতে মিতুলের নিজের মনই কষ্টে জর্জরিত হয়ে গেল।
“কী বলছো এসব আবোল-তাবোল?”
“দোয়া করো, আমি যেন একটি দীর্ঘ জীবন পাই…”
“হঠাৎ করে এসব কী বলছো তুমি? কী হয়েছে?”
মিতুল জোর করে মা’কে নিজের হাসি কণ্ঠ শোনালো।
“না, কিছু হয়নি। এমনি বললাম। দেখতে চাইছিলাম তুমি ঠিক কতটা চিন্তা করো আমাকে নিয়ে। সত্যিই মা, তুমি অনেক অনেক বেশি চিন্তা করো আমাকে নিয়ে। ঠিক আছে, তোমার সাথে পরে আবার কথা বলবো আমি। ব্রেকফাস্ট করবো এখন। রাখছি তাহলে।”
মিতুল ফোন কেটে দিয়ে ফোন সাইলেন্ট করে রাখলো। জানে মায়ের দুশ্চিন্তা একেবারে দূর করে দিতে পারেনি। এরপর মা অনেক বার কল দেবে ওকে। মায়ের সাথে কথা বলার মন নেই এখন। কিন্তু মাকে ও এরকম কথা কেন বললো? নিজেই বুঝতে পারছে না সেটা! জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে মিতুলের দু চোখ অশ্রু ভরাট হলো। না জানি কত মানুষের আত্মচিৎকার এই জঙ্গলের অন্ধকার রাজ্যের ভিতরই আটকা পড়ে আছে!
_____________
আজ সারাদিনে তুলতুলকে কোথাও দেখতে পায়নি। কোথায় উধাও হলো মেয়েটা? সকাল থেকে একবারও চোখে পড়েনি। এতক্ষণ ব্যাপারটা নিয়ে ভাবেনি। কিন্তু এখন না ভেবে উপায় পেল না। কোথায় গেল মেয়েটা? কার্লের কাছে গেছে না কি আবার? কার্লের কথা মনে উঠতেই জোহানের মেজাজ চরমে উঠলো। গাড়ির চাবি নিয়ে গ্যারেজে এসে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো দ্রুত বাড়ি থেকে।
কার্লের রেস্টুরেন্টে এসে খুঁজলো। কার্লকে পেল, কিন্তু মিতুলকে দেখলো না কোথাও। এখানে আসেনি? কোথায় গেল তাহলে? অন্য কোনো ছেলের পিছনে ঘুরছে না কি?
জোহান আশেপাশের আরও কয়েকটা রেস্টুরেন্টে খুঁজলো। কিন্তু পেল না।
পার্কেও খোঁজ করলো, তবে পাওয়া গেল না মিতুলকে।
সন্ধ্যা নামার খানিক আগে বাসায় ফিরলো জোহান। এর মাঝে রিকার্ডো ফোন করে লং ড্রাইভে যাওয়ার কথা বলেছিল। জোহান না করে দিয়েছে। কালকে সকালে যাবে বলেছে। মিতুলকে খুঁজে বের করতে হবে আগে। এই বোকা মেয়েটা কোথায় চলে গিয়েছে কে জানে! কোনো ছেলের সাথে ডেট করছে? বয়ফ্রেন্ড জুটিয়ে ফেলেছে? নিজের বয়ফ্রেন্ডের সাথে লং ড্রাইভে চলে গেছে দূরে কোথাও? এই নাকফুলো মেয়েটা…
জোহান ঘরে ঢোকা দিয়ে আবার থামলো। ক্যামিলা লনে আগাছা পরিষ্কার করছে। মেশিন দিয়ে আগাছাগুলো কাটছে। জোহান দরজায় দাঁড়িয়েই ডাকলো,
“সিস…”
“হ্যাঁ, বলো।”
“মিতুলকে দেখেছো কোথাও?”
“হ্যাঁ…”
জোহান অবাক। ও নিজে বাইরে এত এত জায়গায় খুঁজেও পেল না, তাহলে ক্যামিলা কোথায় দেখলো?
“কোথায় দেখেছো ওকে?”
“মিতুল তো নিজের রুমে।”
জোহানের চোখ কপালে উঠলো।
“নিজের রুমে?”
“হ্যাঁ। সকালে ব্রেকফাস্ট করতে না আসায় ডাকতে গিয়েছিলাম রুমে। তখন বললো ব্রেকফাস্ট করবে না, ঘুমাবে। চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল রাতে ঘুমায়নি, তাই ভাবলাম ঘুমাক। সেই যে ঘুমালো আর ওঠেনি। হয়তো ক্লান্ত সেই জন্যই এভাবে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। আমি ওর ঘুমে ডিস্টার্ব করিনি আর।”
জোহান সব শুনে মিতুলের রুমে চলে এলো। মিতুলের রুমের দরজা আনলক ছিল। একটু ঠ্যালা দিতেই খুলে যায়।
মিতুল উপুড় হয়ে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। সাদা কম্বল কোমর পর্যন্ত টেনে দেওয়া। মুখ নরম বালিশে কাত হয়ে ডুবে আছে। মুখে অসংখ্য চুল এসে পড়ে মুখটা অনেকখানি আড়াল করে রেখেছে।
জোহান ভাবতে পারছে না মিতুল নিজের রুমে ছিল, আর ও বাইরে বাইরে খুঁজে বেরিয়েছে ওকে! কেন সারাদিন রুমের ভিতরে থেকে ঘুমিয়েছে? জোহানের ইচ্ছা হলো সারাদিন ঘুমানোর অপরাধে মিতুলকে একটা কঠিন শাস্তি দেয়। জোহান মিতুলের কাঁধে আস্তে আলতো করে কয়েকটা চাপড় দিয়ে ডাকলো,
“মিতুল!”
মিতুল ঘুমের ঘোরেই বলে উঠলো,
“হুহ?”
“তুমি এখনও ঘুমাচ্ছ? ওঠো।” কড়া গলায় আদেশ দিলো জোহান।
মিতুল নিদ্রা অবস্থাতেই বিড়বিড় করে বললো,
“ওঠো? কে ওঠো? আমি মিতুল! আমি রাবা!”
“হেই ব্যাঙ্গলি গার্ল! কীসব বলছো তুমি?”
“বেঙ্গল? আমি রয়েল বেঙ্গল টাইগার খাবো না। আমি ভাত চাই। রুই মাছ দিয়ে ভাত খাবো আমি।”
অস্পষ্ট জড়ানো বাংলা শব্দগুলো কিছুই জোহানের বোধগম্য হলো না। তাছাড়া মিতুলের ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কথা বলা জোহানের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেল। জোহান হাত দিয়ে জোরে মিতুলের পিঠে আঘাত করে বললো,
“এই ওঠো তাড়াতাড়ি।”
মিতুলের চোখের পাতা কম্পিত হয়ে খুলে গেল। সামনে ঝাপসা করে একটা বিদেশি ছেলেকে বসে থাকতে দেখতে পেল। বিদেশি ছেলেটার মুখে যখন জোহানকে খেয়াল হলো, তখন মিতুলের হুঁশ ফিরলো। জোহানকে দেখে মিতুলের চোখে আতঙ্ক ভর করলো। চকিতে শোয়া থেকে উঠে জোহানের থেকে অনেকটা দূরে ছিটকে এলো ও।
“তু-তুমি এখানে?”
মিতুলের মুখে আতঙ্কের গাঢ় ছায়া।
জোহান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
রুমের খোলা দরজায় চোখ পড়তে মিতুলের মুখ হা হয়ে গেল। দরজার দিকে অঙ্গুলি করে বললো,
“দরজা খুললে কীভাবে তুমি? দরজা তো আমি বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলাম। কীভাবে খুললে তুমি?”
জোহান নির্বিকার তাকিয়ে বললো,
“দরজা যদি তুমি বন্ধ করেই ঘুমাও তাহলে কি আমি অলৌকিক শক্তির মাধ্যমে সেটা খুলে ভিতরে ঢুকেছি? সারাদিন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে তোমার মাথা কি ড্যামেজ হয়ে গেছে? লিসন, তোমার রুমের দরজা খোলাই ছিল। খোলা রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছো।”
মিতুল একটু সময় ভেবে বললো,
“থাকুক খোলা। সেটা বিষয় না। তুমি কেন চোরের মতো আমার রুমে ঢুকেছো সেটা বলো? কী করতে চাইছিলে তুমি?”
জোহান একটু হেসে দুষ্টুমির সুরে বললো,
“তোমার কী মনে হয়? কী করতাম আমি?”
মিতুল রেগে গিয়ে একটা বালিশ ছুঁড়ে মারলো জোহানের উপর। জোহান ক্যাচ ধরে ফেললো।
“বেরিয়ে যাও এখান থেকে।”
“তোমার রুমে থাকতে আসিনি আমি। আমার থাকার অনেক জায়গা আছে। নিজের পানিশমেন্টের জন্য রেডি হও।” বলে বালিশটা ছুঁড়ে মিতুলের কাছে পাঠিয়ে দিলো আবার। মিতুলও জোহানের মতো ক্যাচ ধরলো।
“পানিশমেন্ট মানে?” অবাক কণ্ঠে জানতে চাইলো মিতুল।
জোহান রুম থেকে যেতে যেতে বললো,
“রুমে বসে থেকে আমাকে বাইরে বাইরে ঘুরিয়েছো তুমি, খুঁজিয়েছো তোমায়।
বুঝলে, এডমন্টনের এক প্রান্ত ঘোরা শেষ! আমার শক্তি অপচয় হয়েছে, কারের অয়েল ফুরিয়েছে। এর পানিশমেন্ট নেবে না তুমি?”
“কী বলছো এসব?” জোহানের কথার মাথা মুন্ড কিছুই বুঝলো না।
জোহান দরজার কাছে গিয়ে থামলো। মিতুলের দিকে ফিরে বললো,
“রাতে সুন্দর করে রেডি হয়ে থাকবে। তোমায় নিয়ে পার্টিতে যাব আমি। নিয়ে যাব মানে যাবই। আমার কথা অমান্য করার চেষ্টা করো না একদম। যদি চেষ্টা করো, তাহলে তোমার ওই ফুলো নাক কেটে জঙ্গলের হিংস্র প্রাণীগুলোকে খাওয়াবো আমি।”
মিতুল হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। কী সাংঘাতিক কথাবার্তা! গা শিউরে উঠছে।
জোহান ফিচেল হেসে চলে যায়।
মিতুলের জঙ্গলের কথা মনে পড়ে গেল। চিন্তার রাজ্য এসে নিমেষেই ওর মাথাতে ভর করলো। কী আছে ওই জঙ্গলে? সত্যিই কি কোনো হিংস্র প্রাণী আছে?
(চলবে)
#চেরি_ব্লসমের_সাথে_এক_সন্ধ্যা
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ১১
_____________
জায়িনের নীল পোরশে কারটি ওয়েস্ট এডমন্টন মলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এখন বিকেল। বিকেলের নিস্তেজ রোদ গাড়ির উপর এসে পড়ছে। বেশ ভালো লাগছে মিতুলের। কিন্তু জায়িনের পাশে বসে থাকতে ঠিক স্বস্তি অনুভব করছে না। জোহান যতই বদমাইশ হোক না কেন, ওর সাথে থাকলে এই অস্বস্তি বোধটা হয় না। আচ্ছা, জোহান ওকে বাড়িতে না পেয়ে কী করবে? বাড়ি ফিরলে জোহান ওকে জ্বালাতন করে করে মাথাটা খারাপ বানিয়ে দেবে নিশ্চয়ই!
গতকাল রাতে জোহানের ওকে পার্টিতে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও পরে আবার তা ক্যানসেল করেছিল। সেই পার্টির ডেট দিয়েছিল আজ সন্ধ্যার পরে। বলেছিল বিকেল নাগাদই বের হবে পার্টিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দুপুরে খাওয়ার সময়ও এসে বলে গিয়েছিল তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে থাকতে। মিতুল জানতো জোহান যখন বলেছে ওকে নিয়ে পার্টিতে যাবে, তখন যেতই। তাই ও বাধ্য হয়ে সেজেগুজে রেডি হয়েছিল। জোহানের সাথেই পার্টিতে যেত ও। কিন্তু দোতলা থেকে নিচে নামার পর রেশমী আন্টি জায়িনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা বললেন।
রেশমী আন্টি ওকে দেখেই বললেন,
“কোথাও যাচ্ছ তুমি?”
“হ্যাঁ আন্টি, জোহান এসে বাইরে…”
রেশমী আন্টি পুরো কথা শেষ করতে দিলেন না। তার আগেই বললেন,
“জায়িনের সাথে যাও।”
“কিন্তু…”
“কোনো ব্যাপার না মিতুল। জায়িন এখন বাইরে বের হবে। ওর সাথে ঘুরে আসো।”
রেশমী আন্টির কাছে কেন যেন জোহান পার্টিতে নিয়ে যাবে কথাটি বলতে পারেনি। রেশমী আন্টির কথা অনুযায়ী বাধ্য মেয়ের মতো জায়িনের সাথেই বের হলো।
কিন্তু বের হয়ে ভুলই করেছে বোধহয়। দেখো, কেমন নিশ্চুপ রোবটের ন্যায় বসে আছে! চেহারাতেই কেমন যেন অহংকারী অহংকারী ছাপ দেখা যাচ্ছে। এই মানুষটার পাশে বসে নিজেরও এখন রোবটের মতো ফিল হচ্ছে।
মিতুলের ব্যাগে ফোন বেজে উঠলো। মিতুল ধারণা করলো জোহান ফোন করেছে। নিশ্চয়ই বাড়িতে দেখছে না বলে ফোন করেছে। ও ফোন বের করলো।
ঠিক যা ভেবেছিল। জোহান ফোন করেছে। জায়িনের পাশে বসে ফোনে কথা বলতেও কেমন অস্বস্তি হচ্ছে। ও কল রিসিভ না করে উল্টো কল কেটে দিলো। তারপর একটা ম্যাসেজ লিখতে চাইলো জোহানকে।
কিন্তু জোহান আবারও কল দিলো। মিতুল কলটা আবারও কেটে দিয়ে দ্রুত ম্যাসেজ টাইপ করে সেন্ড করে দিলো।
‘আমি তোমার ভাইয়ের সাথে আছি।’
পরপরই জোহানেরও ম্যাসেজ এলো,
‘তোমার সাহস তো কম না! তুমি আমার কল কেটে দিয়ে ম্যাসেজ পাঠাচ্ছ?’
‘আরে আজব তো! ম্যাসেজ পাঠানো কি দোষের?’
‘আমি এখনই কল দেবো আবার। রিসিভ না করলে তোমার নাক সত্যিই জঙ্গলের প্রাণীগুলোর পেটে যাবে।’
ম্যাসেজটা পাঠিয়েই জোহান কল করলো।
মিতুলের ফোন সাইলেন্ট করা যার কারণে কোনো শব্দ হলো না। জোহান প্রথম বার কল দেওয়ার পরে মোবাইল সাইলেন্ট করে রেখেছিল।
জোহানের লাস্ট ম্যাসেজটা দেখে জোহানের প্রতি ভীষণ রাগ অনুভব হলো মিতুলের। জোহান কে ওকে এভাবে অর্ডার করার? ধরবে না ও ফোন। দেখবে কী হয়। ফোন সুইচ অফ করে আবার ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখলো। সাহস কত! বলে কি না নাক সত্যিই জঙ্গলের প্রাণী গুলোর পেটে যাবে! বদমাইশ একটা!
কিছু সময় পর অবশেষে জায়িনের মুখে কথা ফুঁটলো,
“আমরা এখন ওয়েস্ট এডমন্টন মলের দিকে যাচ্ছি।”
মিতুল জানতো না যে জায়িন ঠিক কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা জানতে চেয়ে প্রশ্নও করেনি। মিতুল সহজ ভাবেই বললো,
“ও তাই?”
“হুম। এটা বিশাল একটা মল। এই মলটি এডমন্টন শহরের মূল আকর্ষণ। এই মল প্রায় ৫৩ লাখ স্কয়ার ফিট স্থান জুড়ে আছে। যা প্রায় নব্বইটি ফুটবল মাঠের সমান…”
“এই মল সম্পর্কে জানি আমি। উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বৃহত্তম শপিং মল এটা। এই মল ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ মল হিসেবে পরিচিতি ছিল।”
মিতুলের কথার পর জায়িন আবার নিশ্চুপ হয়ে গেল। কেন যেন মিতুলের সাথে ঠিক কথা বলতে পারে না। শুধু মিতুল নয়, অনেক মানুষই আছে যাদের সাথে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না ও। তবে এই মিতুলের ক্ষেত্রটি ঠিক ভিন্ন। মমের বাধ্য ছেলে বলে মমের আদেশ মেনে মিতুলকে মলে নিয়ে যাচ্ছে। মম বাড়ি থাকতে পই পই করে বলে দিয়েছে মিতুলকে ভালো করে মল ঘোরাতে, পার্কগুলো ঘুরিয়ে দেখাতে এবং শপিং করে দিতে। তা না হলে কাউকে মল ঘুরিয়ে দেখানো, শপিং করা, এসব বিরক্তিকর কাজ ওকে দিয়ে হতো না। এগুলো ওর কাছে জাস্ট বিরক্তিকর!
প্রায় ত্রিশ মিনিটের ব্যবধানে ওয়েস্ট এডমন্টন মলে এসে পৌঁছলো ওরা। মিতুলের চক্ষু চড়ক গাছ। এত দিন কেবল শুনেই এসেছিল, কিন্তু আজ নিজের চোখে দেখলো। কী বিস্ময়কর! এখানে প্রায় আটশটিরও বেশি দোকান এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আউটলেট রয়েছে। বিনোদন ব্যবস্থারও কমতি নেই কোনো অংশে। রয়েছে একটি থিম পার্ক, ইন্ডোর বিচ, মুভি থিয়েটার, আইস স্কেটিং গ্রাউন্ড এবং আরও অনেক কিছু। আইস স্কেটিং গ্রাউন্ডে সাধারণত বাচ্চাদের স্কেটিং শেখানো হয়। বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য আরও রয়েছে ইন্ডোর ট্রেন ও ফান রাইড। ইন্ডোর ট্রেনে বাচ্চাদের শপিং মলের পুরো চক্কর দেওয়া হয়। ফান রাইডে বাচ্চারা নিজেরা নিজেদের মতো রাইড চালিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বাচ্চাদের জন্য এখানে আলাদা গলফ কোর্সও রয়েছে।
জায়িন ওকে অনেক কিছু ঘুরিয়ে দেখালো। শপিং করে দিলো।
শপিং করার মাঝে মিতুলের হঠাৎ শাড়ির কথা মনে পড়লো। কার্লকে শাড়ি পরে দেখাতে চেয়েছিল ও। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে নিজের সাথে কোনো শাড়ি তো আনেনি। এখানে কি শাড়ি পাওয়া যাবে?
মিতুল জড়তা নিয়ে জায়িনকে প্রশ্ন করলো,
“আচ্ছা, এখানে কি শাড়ি পাওয়া যাবে?”
“শাড়ি?” বিস্ময়ে জায়িনের কপালে কয়েকটা ভাঁজ পড়লো।
“শাড়ি পরো তুমি?”
মিতুল একটু হেসে বললো,
“পরি মাঝে মাঝে। বলতে পারো শখের বশে।”
মিথ্যা বললো মিতুল।
জায়িন মাথা নাড়িয়ে বললো,
“আছে শাড়ি। মম এখান থেকে শাড়িও কিনে থাকে।”
মিতুলের হঠাৎ রেশমী আন্টির কথা মনে পড়লো। রেশমী আন্টিকে এখনও শাড়ি পরতে দেখেনি ও। থ্রি পিস, গাউন, ফতুয়া এসব পরতে দেখেছে। হয়তোবা মাঝে মাঝে শাড়িও পরেন শখের বশে।
জায়িন মিতুলকে একটা শাড়ির শপে নিয়ে এলো। অনেক ধরনের ইন্ডিয়ান শাড়ি আছে এখানে। মিতুল ভাবতে পারেনি যে এত সুন্দর ভাবে এখানে শাড়ি পেয়ে যাবে। মিতুল ঘুরে ঘুরে শাড়িগুলো দেখছে।
জায়িন দূরে দাঁড়িয়ে মিতুলকে লক্ষ করছে। ভাবছে, এই পিচ্চি, অর্থাৎ খাটো মেয়েটাকে শাড়ি পরলে কেমন লাগবে? কোন রং টা মানাবে গায়ে?
মিতুল বুঝতে পারছে না ও কী রঙের শাড়ি নেবে। কোনটায় ভালো লাগবে দেখতে? আচ্ছা, কার্লের ফেভারিট কালার কী?
ইশ, কার্লের ফেভারিট কালারটা জানা উচিত ছিল। বড়ো ভুল হয়ে গেল! এখন কোন রঙের শাড়ি চুজ করবে? গোলাপি, নীল, লাল আরও বিভিন্ন কালারের শাড়ি আছে। মিতুল মিররে একেকটা শাড়ি গায়ে ধরে দেখছে।
জায়িন দূরে দাঁড়িয়েই লক্ষ করে যাচ্ছিল মিতুলকে। মিতুলের পাগলামি দেখছিল। একটা শাড়ি দুই তিন বার করে গায়ে ধরে দেখছে মিতুল। একটা শাড়ি এই রাখছে তো এই আবার উঠিয়ে দেখছে।
জায়িনের ঠোঁটের কোণ প্রশস্ত হলো মিতুলের কাণ্ড দেখে। জায়িনের কেন যেন মনে হলো হলুদ রঙের শাড়িটায় মিতুলকে বেশি সুন্দর লাগবে। যা অন্য কোনো রঙে হয়তো লাগবে না। কিন্তু মিতুলের যেন হলুদ রং টাতেই বেশি অবহেলা। একবার দেখে শাড়িটা আর ধরেনি।
মিতুল অনেক বাছাই করে একটা শাড়ি চুজ করলো। হ্যাঁ এটাই একটু ভালো লাগছে। নেভি ব্লু রঙের একটা শাড়ি অবশেষে নির্ধারিত করলো। নেভি ব্লু শাড়ির সঙ্গে গোলাপি ব্লাউজ।
জায়িন মিতুলের কাছে এগিয়ে এলো।
“এই শাড়িটা নেবে তুমি?”
“হুম। কেন সুন্দর লাগছে না এটা?”
“সুন্দর লাগছে। তবে একটা শাড়ি নেবে কেন? আরও একটা নাও। এই হলুদ শাড়িটা নিতে পারো তুমি।”
মিতুল হলুদ শাড়িটার দিকে তাকালো। হলুদ রং খুব একটা পছন্দ নয় ওর। তবে শাড়িটা দেখতে সুন্দর। কী করবে? জায়িন যেহেতু বলছে তাহলে কি নেওয়া উচিত? মিতুল ভাবতে ভাবতেই বললো,
“ঠিক আছে, এটাও নেবো।”
মিতুলের শপিং শেষ হলো। ও একাই শপিং করেছে শুধু। জায়িন কিছুই নেয়নি নিজের জন্য। মিতুল ভেবেছিল ওর শপিং এর বিল ও নিজে দেবে। কিন্তু জায়িন কিছুতেই দিতে দিলো না। জায়িন বিল মিটিয়ে দিলো।
বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেল। ডিনারও বাইরে থেকে সেরে এসেছে ওরা। বাইরে থাকতে জায়িনকে ভালোই মনে হয়েছিল, কিন্তু বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই কেমন আবার অহংকারী মনে হলো। শপিং ব্যাগগুলো ঘরের ভিতরে নিয়ে ঢুকতে কোনো সাহায্য করলো না জায়িন। আচ্ছা, তার কি উচিত ছিল না শপিং ব্যাগ গুলো নিজ হাতে ধরে একেবারে ওর রুম পর্যন্ত নিয়ে দেওয়া? রুম তো দূরের থাক, শপিং ব্যাগে একটু হাতও লাগিয়ে দেখেনি সে। থাক, কী আর বলবে এদের? অহংকারের পরিচয় তো শুধু এই প্রথম দিলো না!
মিতুল দুই হাতে শপিং ব্যাগ নিয়ে প্যাসেজ ওয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাড়িটা ভীষণ নীরব। কাউকে দেখাও যাচ্ছে না। সবাই কি ঘুমিয়ে পড়েছে? জোহান… জোহান কোথায়? ভেবেছিল বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই জোহানের জ্বালাতন শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু না, কোথাও তো দেখা যাচ্ছে না বদমাইশটাকে। কোথায় গেছে? জঙ্গলে না কি? জঙ্গলের কথা মনে হতেই মিতুলের গা শিউরে উঠলো। না ওই জঙ্গল নিয়ে ভাববে না এখন। চুলোয় যাক জোহান!
ফুরফুরা মন নিয়ে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে চললো ও।
দরজা খুলে রুমে পা রাখতে আতঙ্কে মিতুলের পা থমকে গেল, হাত থেকে শপিং ব্যাগগুলো পড়ে গেল ফ্লোরে।
প্রথমে বিছানার উপর এক কালো পোশাকধারী মানুষ দেখে ভয়ে জান যায় যায় অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু কালো পোশাকধারী মানুষটি জোহান দেখে ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে পেল আবার। মিতুল বুকে এক হাত রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো। তারপর অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালো জোহানের দিকে।
জোহান বিছানায় লম্বালম্বি ভাবে শুয়ে আছে এক হাতে মাথা হেলান দিয়ে। পরনে কালো ফুল হাতার গেঞ্জি এবং কালো ট্রাউজার। মিতুলের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,
“ইউ আর ব্যাক!”
মিতুলের মাথায় রক্ত উঠে গেল। তেড়ে এলো জোহানের দিকে।
“তোমার সাহস তো কম না তুমি আমার রুমে ঢুকে আমার বিছানায় শুয়ে আছো! একটা মেয়ে মানুষের রুমে কীভাবে তুমি এভাবে ঢুকতে পারো? কীভাবে এমন ভাবে শুয়ে থাকতে পারো? লজ্জা নেই তোমার?”
জোহান ভাবলেশহীন কণ্ঠে বললো,
“নিজেকে মেয়ে বলে দাবি করো?”
“কী? কী বললে তুমি? কী মিন করলে এই কথা দ্বারা? আমাকে কি তোমার ছেলে মনে হয়?”
জোহান উঠে বসলো। বললো,
“তোমাকে ছেলেও মনে হয় না, মেয়েও মনে হয় না। যা মনে হয় তা হলো―পিচ্চি একটা এলিয়েন!”
“হোয়াট?”
জোহান মিতুলের কাছে এগিয়ে এলো। গলার স্বর হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে গেল ওর। রাগের প্রতিফলন ঘটলো কণ্ঠে,
“তোমার সাহস কী করে হয় আমার কল রিসিভ না করে ফোন সুইচ অফ করে রাখার? তোমার দেখছি সত্যিই তোমার এই নাকটার জন্য কোনো মায়া নেই।” বলতে বলতে এক আঙুলে মিতুলের নাকে আলতো করে একটা গুঁতো দিলো।
“তুমি কিন্তু ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছ!”
“সেটাই স্বাভাবিক। কারো ধৈর্যে থাকার ইচ্ছা আমার নেই। আমি সবার ধৈর্যের বাইরে থাকতেই পছন্দ করি! কিন্তু তুমি আগে বলো, তুমি এটা কেন করলে আমার সাথে? তুমি যাবে না কি যাবে না আগে বলতে। কেন তুমি আমার সম্মান, আমার বন্ধুদের সম্মানে এত বড়ো আঘাত হানলে? হোয়াই? টেল মি!” চাপা রাগের গর্জন টের পাওয়া গেল জোহানের কণ্ঠে।
মিতুলের হালকা ভয় করছে। কিন্তু না, নিজের ভীতু ব্যক্তিত্ব কিছুতেই দেখাবে না ও। মিতুল জোহানের রাগের প্রলেপ আঁকা মুখে তাকালো। চোয়াল শক্ত করে দুই হাতে ঠ্যালা দিয়ে জোহানকে সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে বললো,
“বেরিয়ে যাও। এই মুহূর্তে বেরিয়ে যাও এখান থেকে। নইলে কিন্তু…”
“নইলে কী? কী করবে? শোনো, আমার সম্মানে আঘাত হানার জন্য পানিশমেন্ট পেতেই হবে তোমাকে। তোমাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো আমি। একদিন…হ্যাঁ, পুরো একদিন কোনো কথা বলবো না আমি তোমার সাথে।”
মিতুল হেসে দিলো।
“একদিন আমার সাথে কথা বলবে না তুমি? এটাকে পানিশমেন্ট বলছো? আরে এটা তো আমার জন্য পানিশমেন্ট নয়, বরং লাকি পুরস্কার।”
“হোয়াট ডু ইউ মিন?” জোহান এক পা এগিয়ে এলো মিতুলের দিকে।
মিতুল এই বদমাইশটার সাথে আর কোনো কথা বাড়াতে চাইছে না। এখন সুন্দর একটা ঘুম প্রয়োজন ওর। কালকে সকাল সকাল কার্লের সাথে দেখা করতে যাবে একবার। না ঘুমালে চেহারার অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে। মিতুল জোহানের সাথে বিবাদ থামানোর জন্য বললো,
“ঠিক আছে, তোমার এই কঠিন শাস্তি মেনে নেবো আমি। কালকে কোনো কথা হবে না আমাদের মাঝে।”
“সেটাই!”
মিতুলের রুম থেকে বের হতে গিয়েও আবার সামনে পড়ে থাকা শপিং ব্যাগগুলো দেখে থামলো জোহান। ত্যাড়া চোখে তাকিয়ে বললো,
“শপিং করতে যাওয়া হয়েছিল বুঝি?”
মিতুল কিছু বললো না।
জোহান শপিং ব্যাগগুলো ঢিঙিয়ে চলে গেল।
মিতুল কটমট করে বললো,
“বদমাইশ একটা!”
(চলবে)