রহস্যময়_অদৃশ্য_ধর্ষন পর্বঃ০২

0
2020

রহস্যময়_অদৃশ্য_ধর্ষন পর্বঃ০২
লেখকঃ-কৌশিক আহমেদ

[সম্পূর্ণ কাল্পনিক ভাবে লেখা]
…….

প্রায় ঘন্টা খানেক পরে ডাক্তার আর নার্স বেরিয়ে আসলো।
অদির আগ্রহ নিয়ে সামনে এগিয়ে গেলাম।
ডাক্তার নার্সদের চোখে মুখে আতংক আর ভয়ের ছাপ স্পষ্ট।
তাদের এমন অবস্থা দেখে আমি নিজেও ভয় পাচ্ছি।
ডাক্তার জানালো তারা অনেক চেষ্টা করেও মেয়েটাকে বাঁচাতে পারে নি।??
আর রিপোর্টে যা যা এসেছে তা শুনে পায়ের নিচ থেকে মাটি সড়ে গেল।আর আমার সাথে থাকা কনস্টেবল আর ড্রাইভার দুইজনেই নড়েচড়ে উঠলো।
উনারা জানালেন,,
ডাক্তারঃ- মেয়েটাকে বাঁচাতে পারলাম না,,আপনার উনাকে লাস্ট স্টেজে নিয়ে এসেছেন,,এ সময় আমাদের কিচ্ছু করার ছিল না।
তবে হে হয়তোবা আগে আনলেও পারতাম না।
মেয়েটার শরীরে অনেক বিষাক্ত সাপের বিষ পাওয়া গেছে।
আমার ডাক্তার জীবনে এমন বিষাক্ত বিষের নজর পাই নি।
জানা শোনা কোন সাপের বিষ নয় এটা।
আর হে সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে মেয়েটাকে ধর্ষন করা হয়েছে,, যতটা বুঝতে পারছি একজনে ধর্ষণ করেছে,,কিন্তু আরো অবাক করা বিষয় হচ্ছে যে বা যার মাধ্যমে ধর্ষন হয়েছে মেয়েটা তার নিদর্শন কোন মানুষের সাথে মিলে না।
মোট কথা বলতে যদিও কথাটা শুনতে খারাপ শুনা যাচ্ছে তবুও বলি,,যে লিঙ্গ বা যা দ্বারা ধর্ষণ হয়েছে সেইটা মানুষের লিঙ্গ হতে পারে না।
আর একটা কথা,, হয়তো-বা আপনারা মেয়েটার বিষয়টা খেয়াল করেন নি,,মেয়েটার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কামড়ের দাগ ছিল,, আর সব গুলা কামড়ের দাগ কোন বিষাক্ত সাপের।
আমি একজন ডাক্তার,,সব কিছু বিজ্ঞান দিয়েই বিচার বিশ্লেষণ করি,,কিন্তু আজ আমার জীবনে প্রথম এমন কেস পেলাম এমন রোগী দেখলাম যেটা বিজ্ঞান দ্বারা বিশ্লেষণ করা সম্ভব না।
আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি এটা অলৌকিক ঘটনা ছাড়া আর কিচ্ছু না।
আমি আমার ডাক্তার ক্যারিয়ারে এমনটা এর আগে কখনো দেখি নি,,শুনিও নাই।
জাস্ট এতটুকুই বলবো,,মেয়েটার সাথে যা হয়েছে তা সবটা অস্বাভাবিক।
বাকিটা ময়নাতদন্তের পর জানাতে পারবো।
আপনারা আপাতত মেয়ের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার ব্যবস্খা করেন।

কথা গুলো শুনে মাথা হ্যাং হয়ে গেল।
এদিকে ড্রাইভার আর কনস্টেবল দুইজনেই নড়েচড়ে উঠলো ভয়ে,,এতক্ষণে এদের অন্তরে ভয় নামক শব্দটা বাসা বাঁধতে শুরু করছে।
আগে তো বিশ্বাস করে নি যখন মেয়েটা বলেছিল কিন্তু এখন ডাক্তারের কথা শুনে ওরাও হ্যাং হয়ে গেছে।
ভয়ে কাঁপছে,, কোন কথা বলতে পারছে না।
নিজের কান আর চোখ কে বিশ্বাস করা ওদের জন্য কষ্টের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
হয়তো এটা ভাবছে,, এমনটাও হয় নাকি..?
আধো কি সম্ভব নাকি এই আধুনিক যুগে এসে..?
যাইহোক আমি চিন্তা করছি মেয়ে টা শুধু নিজের নামটাই বলেছিল,, এত রাতে কিভাবে খোজ নিবো এই নামে,,কিভাবে বের করবো তার পরিবারকে.?
কোথায় বাড়ি কোথায় থেকে এসেছে তা কিচ্ছু জানি না।
একে তো পাহাড়ি এলাকা তার মধ্যে জনবসতি একদম কম,,একেকটা বাড়ি অনেক দূর দূর।
আমিও এলাকায় নতুন এসেছি,,পথ ঘাট ঠিক মতন চিনি না।
আর আমার কনস্টেবল আর ড্রাইভারের যে অবস্থা দেখতে পাচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে না এরা আর রাতের বেলায় বের হওয়ার সাহস দেখাবে।
আপাতত রাতটা কাটুক, দিনে যে কোন একটা কিছু করতে হবে।
যদি এমনিতেই না পারি তাহলে প্রয়োজন বোধে স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে বিষয়টা।
এর জন্য আগে মেয়েটার পিক তুলতে হবে।
নার্সকে ডেকে আমার মোবাইল দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম মেয়েটার পিক তুলতে।

আমরা সবাই বসে কথা বলছি আর নার্স গেল মর্গের রুমটাতে যেখানে লাশ রাখা হয়েছে।
একটু পরেই বিকট শব্দে চিৎকার ভেসে আসলো মর্গের রুমটার দিক থেকে।
দৌড়ে গেলাম সবাই,,দরজার কাছে গিয়ে দেখি দরজার একটা পাট্রা খোলা আরেকটা লাগানো,,আর নার্সটা রুমের বাহিরে পরে আছে।
অজ্ঞান হয়ে গেছে নার্স।
ডাক্তার পালাস চেক করলেন,,প্রথমে তো ভয় ই পেয়ে গেছিলাম,, পরে দেখি না শুধু অজ্ঞান হয়ে গেছে।
তড়িঘড়ি করে ডাক্তার কনস্টেবল আর ড্রাইভার সহ চারজনে মর্গের রুমে প্রবেশ করলাম।
লাশটার দিকে তাকাতেই কনস্টেবল মিজান বমি করে দিলো,,আর ড্রাইভারের অবস্থাও ভয়াবহ।
ডাক্তার আর আমি নিজেদের মুখ বন্ধ করে ফেললাম রুমাল দিয়ে।
চোখ সবার কপালে উঠে গেছে।
মিজান আর ড্রাইভার দুইজনেই বেড়িয়ে গেল।
আমি আর ডাক্তার বড়বড় চোখ করে এক জন আরেকজনের দিকে তাকাতাকি করছি একবার,,আরেকবার লাশটার দিকে।
কল্পনার বাহিরে,,চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন করা সম্ভব নাকি আমার জানা নেই।
মাত্র কয়েক মিনিট হয়েছিল ডাক্তার আর নার্স মেয়েটার লাশ এই রুমে রেখে গেছে,, আর এই অল্প সময়ের মধ্যে লাশের সারা শরীর নীল রঙ ধারন করছে,,নীল বলতে একদম কালচে নীল,,সারা শরীর ফুলে ফেঁপে উঠছে,, কোন কোন জায়গায় ফেটে মাংস রক্ত বেরিয়ে এসেছে,মুখটা ঠোসা পড়ার মতন ফুলে ব্রাস্ট হয়ে গেছে।
নীল রঙের হওয়ায় আরো বিশ্রী লাগছে,,এতটা বিশ্রী যে, যে কেউ প্রথম দেখাতেই অজ্ঞান না হলেও বমি করে দিবে।
আমার চেয়ে ডাক্তার সাহবে বেশি চিন্তায়,,উনি বিজ্ঞান দিয়ে যাচাই-বাছাই করেন,,উনার লজিকে হয়তো কোন ভাবেই মিলছে না।
এদিকে আমিও যদিও এসবের মধ্য দিয়ে পার হয়েছি কোন এক সময়,, কিন্তু এবারের বিষয়টা আমাকেও ভাবিযে তুলছে।
কোন মতেই হিসাব মিলাতে পারছি না।
আস্তে আস্তে আমাদের চোখের সামনেই মেয়েটার লাশ গলে পঁচে খসে পড়তে শুরু করলো,, মূহুর্তের মধ্যেই লাশটা একটা কঙ্কালে পরিনত হল,,শরীরে এক ফুটো মাংস নেই।
এমন দৃশ্য যে কারোর মাথা নষ্ট করে দিবে।
কি ভয়ানক ভয়াবহ দৃশ্য যা নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে পিকটাও তুলা হল না।
খোজ নিবো কি করে.??
কষ্ট লাগছে এটা ভেবে কোন মায়ের বুক যে খালি হল আর সেই মা কিচ্ছু জানতেও পারলো না।
লাশ বলতে তো কিচ্ছু নেই,,যা ছিল হাড় কঙ্কাল,, ডাক্তার সাহেবকে অনেক অনুরোধ করলাম যাতে অন্তত পক্ষে একটা দিন দেয়,,কঙ্কালটা এখানেই থাকুক আমি মেয়েটার পরিচয় বের করি,,কিন্তু ডাক্তার সাহবে এতকিছু দেখার পর কোন ভাবেই আমাকে একটা মিনিটও দিচ্ছেন না,,যেভাবেই হোক কঙ্কাল সরাতে হবে,,আর এই খবর বাহিরে গেলে হাসপাতালের বদনাম হবে,,সাধারণ রোগীরা ভয় পাবে,তাই আমাকে উল্টো অনুরোধ করলেন আমি যাতে খবরটা লিক না করি আর আজকের এই রাতটুকু ছাড়া ভোর হওয়ার সাথে সাথে কঙ্কালের দাফন করি।
আমার স্যারকে ফোন করলাম,,উনি জানালেন সকালের মধ্যেই যেন কঙ্কাল দাফন করে দেই।
আর এই বিষয়টা যেন এখানেই সিমাবধ্য থাকে,,
এলাকার পরিস্থিতি এমনিতেই ভালো না,,তার মধ্যে এমন খবর বাহিরে গেলে লোকে হাসাহাসি করবে,,আর কিছু মানুষ বিশ্বাস করলেও ভয়ে আতংকে বাড়ি থেকে বের হবে না।
তবে স্যারের সাথে কথা বলে এতটুকু শিউর হলাম যে উনি আমার কথা বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করেন নি।
যদিও বিশ্বাস করার মতন কথা নয় তবুও এভাবে অভগ্যা করাটা আমার কাছে লজ্জা জনক।

সকালে লাশ দাফন করে বাড়ি চলে গেলাম।
সারারাত যা ঘটলো তাতে নিজের চোখ কানকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।
কিন্তু পৃথিবীতে আমাদের কল্পনার বাহিরেও অনেক কিছু ঘটে যা না চাইলেও বিশ্বাস করতে হবে,,বিশ্বাস না করলেও তাতে কারোর কিচ্ছু যায় আসে না,, কিন্তু ঘটনা ঘটনার মত ঘটেই যাবে।
কনস্টেবল মিজানের অবস্থা বেশি ভালো না,,তাই তাকে একদিনের ছুটি দিয়ে দিলাম।
রাতে আবার ডিউটি আছে,,কিন্তু বাসায় এসে গোসল করে প্রতিদিনের মতন খেয়ে ঘুমাবো তা হচ্ছে না,,কোন ভাবেই চোখে ঘুম আসছে না,,বারবার মেয়েটার করুন মৃত্যু,, করুন আর্তনাদ,, অপলক ভয়ংকর দৃষ্টি, চোখে মুখে ভয়ের ছাপ,সব আমার চোখের সামনে ভেসে আসছে,,চোখ বন্ধ করলেই মেয়েটার ছবি ভেসে আসে।
এমন একটা চাকরি করি যেখানে নিজের কিচ্ছু করার থাকে না,,উপর লেভেলের কথা মতন চলতে হয়,,নিজের ইচ্ছার কোন দাম নেই।
আমার ইচ্ছা ছিল অন্তত পক্ষে মেয়েটার পরিবারকে লাশ না থাকলেও কঙ্কালটা ফিরিয়ে দিতে,,উনারা উনাদের মতন দাফন করুক,,তবুও তো শান্তি পাবে,,কিন্তু তা হল না।
এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া আমার জন্য হারাম করে দিয়েছে,,আমি এ বিষয়ে কোন কথাই বলতে পারবো না।
খুবই কষ্ট হচ্ছে,,
অনেকক্ষণ এপাশ-ওপাশ করে ঘুম হল না।
শেষমেশ ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমালাম।
ঘুমের ঘোরে আবোলতাবোল স্বপ্ন দেখলাম।
যা সব অস্পষ্ট,, কোন কিচ্ছু বুঝতে পারলাম না তবে এতটুকু টের পাচ্ছি আমার জন্য সামনে বড় কোন বিপদ অপেক্ষা করছে,,,আমার না হলেও এই এলাকার মানুষের জন্য।
এলাকাতে কালো ছায়া নেমে এসেছে।

রাতে আবার ডিউটিতে বের হলাম।
১০-৬ টা পর্যন্ত ডিউটি।
থানায় হাজিরা দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।
আজ আর সাথে কনস্টেবল নেই।
আমি আর ড্রাইভার,, ড্রাইভার ভয়ে কাঁপছে,, ঠিক মতন গাড়ি চালাতে পারছে না।
আজকে শীতের প্রভাবটা বেশিই পরেছে,,
কনকনে ঠান্ডায় এমনিতেই হাত কাঁপছে শীতে,,তার মধ্যে ড্রাইভারের ভয়,,সব মিলিয়ে আমি নিজেও ভয়ে আছি কখন জানি গাড়ি পাহাড়ের খাদে ফেলে দেয়।
তারমধ্যে ঘন কুয়াশা, দশ হাত সামনের কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না,,
পরিবেশটাও ছমছমে, থমথমে,, তার মধ্যে গতকাল রাতের ঐ ঘটনার পর রাস্তাটাকেই ভৌতিক মনে হচ্ছে, মনে হচ্ছে মৃত্যু কুপ।

আশেপাশে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করছি,,কি জানি কালকের মতন আজকেও যদি কোন অস্বাভাবিক ভাবে কোন মানুষের আবির্ভাব ঘটে।
একবার ঘুরে গেলাম পুরো রাস্তাটা,,
মেইন রাস্তা পার হয়ে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ঢুকলাম,,
ঘন কালো কুয়াশা,,থমথমে পরিবেশ,, জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে গাড়ি।
চারপাশের পরিবেশ কিছু একটা ইঙ্গিত বহন করে যাচ্ছে,, কিছু একটা বুঝাতে চাচ্ছে।
ড্রাইভার বার বার মানা করছে সামনের দিকে না যেতে,,কিন্তু আমি আমার দ্বায়িত্বে অটল।
আমার যতটুকু কাজ ততটুকু নিষ্ঠার সাথেই করে যাবো।
গাড়ি অনেক স্লো চলছে,,কুয়াশার জন্য।
গাড়ির গ্লাসে কুয়াশা পড়ে গোলা বানিয়ে দিচ্ছে।
হঠাৎ করেই রাস্তার ঠিক সাথেই একটা ঝোপের আড়ালে কোন কিছুর নড়াচড়া করতে দেখলাম।
ড্রাইভারকে বলে হার্ড ব্রেক করালাম,,

আমিঃ-Stop,,,

কথাটা আমার নিজের অজান্তেই অনেক বেশি আওয়াজে বের হয়ে গেছে যার কারনে ড্রাইভার আরো বেশি ভয় পেয়ে থমকে গিয়ে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে ফেলে।

ড্রাইভারঃ- সা সা সা স্যার,,,
কি হইছে স্যার এভাবে,,

কথাটা শেষ করার আগেই ইশারা দিয়ে চুপ করতে বললাম,,
ড্রাইভার আরো বেশি আতংকে পড়ে গেছে, রীতিমতো কাঁপতে শুরু করছে।
কোন কিছু বলার সাহস দেখাচ্ছে না।
আমি আস্তে আস্তে গাড়ি থেকে নেমে আসলাম,,
ঝোপের ভেতর উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম।
যদিও এটা নিতান্তই পাগলামি,, জঙ্গলে ঝোড়ঝাড়ে নাড়াচাড়া,, স্বাভাবিক ব্যাপার।
কিন্তু আমার কেমন জানি কৌতূহল হচ্ছে,, কৌতুহল মেটাতে হাতে একটা লাঠি তুলে নিয়ে ঝোপের ভেতর খুঁচা দিলাম,,কয়েকটা আগাছা সড়ে গেল,, আর তাতে দেখতে পেলাম,,,.??
।।।
।।।।।
।।।।।।।
।।।।।।।।।
চলবে????????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here