রহস্যময়_অদৃশ্য_ধর্ষন পর্বঃ-০৩

0
1864

রহস্যময়_অদৃশ্য_ধর্ষন পর্বঃ-০৩
লেখকঃ-কৌশিক আহমেদ

যদিও এটা নিতান্তই পাগলামি,, জঙ্গলে ঝোড়ঝাড়ে নাড়াচাড়া,, স্বাভাবিক ব্যাপার।
কিন্তু আমার কেমন জানি কৌতূহল হচ্ছে,, কৌতুহল মেটাতে হাতে একটা লাঠি তুলে নিয়ে ঝোপের ভেতর খুঁচা দিলাম,,কয়েকটা আগাছা সড়ে গেল,, আর তাতে দেখতে পেলাম মেয়ের দেহ কোন মতন নড়াচড়া করছে।
এটাও আগের মতন নগ্ন শরীরে কোন কাপড় নেই,,
আর আগেরটার মতন সেম অবস্থা, রক্ত ঝড়ছে।
আজকে সত্যি ঘাবড়ে গেলাম,,পর পর দুই দিন একই কাহিনী।
আমি জানি এই মেয়েটাকেও বাঁচাতে পারবো না।
নিজের চোখের সামনে আরেকটা মেয়ে মারা যাবে আমার কিচ্ছু করার থাকবে না।
ভাবতেই চোখে জল এসে গেল,,আশেপাশের কোন কিছু দেখা যাচ্ছে না ঘন কুয়াশার জন্য।
কে বা কারা এই কাজটা করছে সেইটা দেখার মতন কোন অপশন নেই,,তবে বেশিক্ষণ হয় নি ঘাতক পালিয়েছে,,সে যেই হোক,,মানুষ কিংবা অশরীরী।
কারন একটু আগেও নড়াচড়া করতে দেখেই গাড়ি থামিয়েছি,,মূহুর্তের মধ্যে উদাও,,,
যাইহোক জানি বাচাতে পারবো না তবুও শেষ ট্রাই করলাম,,ড্রাইভার কোন ভাবেই সাহস পাচ্ছে না মেয়েটাকে ধরে গাড়িতে তুলতে,,আজকে আবার কনস্টেবলটাও নেই,,নিজে একাই তুললাম গাড়িতে,
কোন রকম ধুকপুক জান বেঁচে আছে মেয়েটার,,তবে কোন কথা বলার মতন অবস্থাতেই নেই।
তাই বৃথাই কোন প্রশ্ন করলাম না,,ড্রাইভার গাড়ি টান দিলো হাসপাতালের দিকে,,কিন্তু একটু এগিয়ে যেতেই মেয়েটা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলো আমার চোখের সামনে।
চোখ দিয়ে আমার অঝোরে বৃষ্টির মতন পানি পড়ছে,,নিজেকে আর সামলাতে পারছি না।
কেনো হচ্ছে এসব.?
কে বা কার করছে.?
কি স্বার্থে..?
এদের উদ্দেশ্য কি.??
মনের ভিতর হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো।
কেনোই বা আমার সামনেই হচ্ছে এসব.?
আমি কি এসবের সাথে কোন ভাবে জড়িত.??
না নিজেকে কোন ভাবেই স্থির রাখতে পারছি না।
আমি জানি ঐ মেয়েটির মতন এটারো একই অবস্থা হবে,,গলে পঁচে যাবে।
তাই সেই জঙ্গলের ভেতরেই দাফনের ব্যবস্থা করলাম।
কিছুটা দোয়া কালাম জানি,,জানাজা পড়ানোর যোগ্যতা আছে,,জানি না মেয়েটা হিন্দু নাকি মুসলিম তবুও জানাজা পরে সেখানেই দাফন করলাম একটা গর্তে।
জানি হয়তো ইসলামিক সব নিয়ম কানুন যথাযথ ভাবে পালন করতে পারি নি,,কিন্তু এ ছাড়া কিচ্ছু করবার ছিল না আমার।
দাফনের আগে আগের বারের ভুলটা করি নি,,মোবাইলে পিক তুলে রাখলাম,,অন্তত পক্ষে মেয়ের খোজটা নিয়ে যাতে তার পরিবারকে জানাতে পারি বিষয়টা,,

ভারাক্রান্ত মন নিয়ে সে রাতের মতন ডিউটি শেষ করলাম,,
ডিউটি শেষ করে থানায় গিয়ে স্যারকে ফোন দিলাম,,কিন্তু স্যার আগের বারের মতনই সেম কথা জানালেন,,উল্টো আরো আমাকে পাগল বলে আক্ষায়িত করলেন,,আমি নাকি পাগল হয়ে গেছি,,দরকার হলে চারপাঁচ দিন ছুটি দিবে কিন্তু এ বিষয়ে কোন কথা শুনতে রাজি নন তিনি।
রাগ আর অভিমান সব মিলিয়ে মাথা হ্যাং হয়ে গেছে,, কষ্ট তো আছেই।
যাইহোক মনটাও ভালো ছিল না,, স্নেহার কথা বারবার মনে পড়ছে,,,যেহেতু ছুটি দিয়েই দিছেন,,তাই কনস্টেবল মিজান আর ড্রাইভারকে পিকটা দিয়ে বলে আসলাম মেয়েটার পরিবারের খোজ নিতে আর দুঃসংবাদটা দিতে,,আমি সেই দিনই চলে আসলাম টাঙ্গাইল।
সোজা বাড়ি,,দুপুরের পরে বাড়ি এসে পৌছালাম।
কাউকে কোন কিছু না জানিয়েই চলে এসেছি,,হুট করে আমাকে দেখে সবাই বেশ অবাক হয়েই গেল।
বিশেষ করে স্নেহা,,ও কখনো কল্পনা করে নি ওরে না জানিয়ে আমি বাড়ি আসবো,,,
সবাই বিভিন্ন প্রশ্ন করছে,,কিন্তু আমি কোন উত্তর দিচ্ছি না,,কি ই বা উত্তর দিবো,.??
অযথা টেনশনে পড়ে যাবে সবাই।
রুমে গিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে পড়লাম,,শরীরটা বেশ ক্লান্ত লাগছে,,একে তো সারারাত নাইট ডিউটি তারমধ্যে জার্নি,,,এদিকে চিন্তা আর চোখের সামনে এতকিছু ঘটে যাওয়া।
সব মিলিয়ে দিশেহারা অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছি।

কিন্তু স্নেহার চোখ ফাকি দিতে পারলাম না।
হাজার হলেও পরী বউ,,এত সহজে ফাকি দেওয়া সম্ভব না।
স্নেহাঃ- কি হইছে তোমার সত্যি করে বলতো। (রুমের দরজা লাগিয়ে আমার পাশে বসে)

আমিঃ- কই কি হবে কিচ্ছু না।

স্নেহাঃ- দেখো আমাকে যতটা বোকা ভাবো ততটা বোকা কিন্তু আমি নই,,,

আমিঃ-সত্যি কিচ্ছু হয় নি,,,
আচ্ছা তুমি না বলেছিলে তোমাদের রাজ্যে ঘুরতে যাবে,,.?
কবে যাবে বল…??

স্নেহাঃ- তুমি কি ছুটি নিয়ে আসছো..?

আমিঃ- হুমমম চার দিনের।

স্নেহাঃ- আচ্ছা তাহলে আজ রাতেই চলে যাবো,,,ওকে..?(মূলত পরীরাজ্যে যেতে হলে দিনের আলোতে তো যাওয়া সম্ভব না তাই রাতেই যেতে হবে)

আমিঃ- আচ্ছা ওক্কে,,আব্বু আম্মুকে তাহলে বিষয়টা জানাতে হবে।

স্নেহাও আমার সাথে উঠে দুইজনে গিয়ে খাবার টেবিলে বসলাম,,আব্বু আম্মুও আসলেন।
উনারা যদিও সবাই আগেই খেয়েছেন,,তবে আমি তখন কথা বলি নি তাই কি হইছে তা জানতে এসেছেন,,,কি জন্য হুটহাট বাড়ি আসলাম।

খাবার খেতে খেতে স্নেহাদের বাড়ি যাওয়ার কথাটা জানালাম,, উনারা নির্দিধায় রাজি হলেন,,তবে উনাদেরো সেম প্রশ্ন আমার কি হয়েছে, কেন হুট করে না জানিয়ে বাড়ি আসলাম,, কোন বিপদ আপদে পড়লাম নাকি ইত্যাদি।
মিথ্যা সাত পাঁচ বুঝিয়ে খাবার খেয়ে কেটে পড়লাম।
এসেই ঘুম,,
ঘুম থেকে উঠি সন্ধার দিকে, উঠে দেখি স্নেহা আমার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে,,
ঘুমন্ত পরীটাকে এতটা সুন্দর লাগছে যা বলে বুঝাতে পারবো না।
মুখটা একটু উচু করে কপালে কিস করে উঠতে যাবো তখুনি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,
তারমানে দুষ্টু বইউটা আমার জেগে আছে হিহিহিহি
আমিঃ-ওরে দুষ্টু বউ আমার,,তাহলে তুমি ঘুমাও নি.?

স্নেহাঃ-ঘুমালে কি জানতে পারতাম আমা৷ রোমান্টিক বরটা এভাবে চুপিচুপি লুকিয়ে কিস খাচ্ছে ??

আমিঃ-ওকে তাহলে তো আগেরবার লুকিয়ে দিয়েছিলাম,, এবার জেনে শুনে দেই???

স্নেহাঃ- ঐ না না,,,একদম কাছে আসবে না বলছি।

(আমাকে বলছে কাছে আসবে না অথচ নিজেই আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে??
এবার তো তাহলে ফায়দা লুটতেই হয়??
এমনিতেই অনেক দিন পরে এসেছি??
কতদিন এমন সুন্দরী বউ থাকতেও,,, ???
সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আগেই একধাপ,, ??হিহিহিহি
যেমন কথা তেমন কাজ,,স্নেহাকে শক্ত করে জড়িয়ে
আমার নিচে নিয়ে নিলাম,,তারপর শুরু হলো এলোপাতাড়ি কুপ,,হিহিহিহি চুমুর কুপাকুপি??
এক পর্যায়ে নিজেদের কন্ট্রোল হাত থেকে ফসকে গিয়ে ভালবাসার গভীর থেকে গভীরে পৌঁছে গেলাম??)

যাইহোক,, বিছানা থেকে উঠে দুজনেই গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।
স্নেহা রান্না করতে রান্না ঘরে চলে গেল,,আমি একটু বের হলাম,,অনেক দিন যাবদ সুমিত সাগরের সাথে দেখা করা হয় না,,যদিও কথা হয় ফোনে কিন্তু তাও কম কম।

বাড়ি থেকে বের হয়ে ওদের ফোন করে আসতে বললাম দেখা করার জন্য,,
দুইজনেই ইচ্ছা মতন কথা শুনালো,,শুনানোরই কথা।
আমি বাড়ি এসেছি অথচ ওদের জানাই নি।
যাইহোক একত্রিত হয়ে খেলার মাঠের এক পার্শে ঘাসের উপর বসলাম তিনজন।
কথায় কথায় দিনকাল কেমন যাচ্ছে সে বিষয়ে জিগ্যেস করলো।
মুখ ফসকে বের হয়ে গেল আমার সমস্যার কথা।
আমিঃ- আর দিন কাল,আবার সেই পুরোনো সমস্যা মাথা চারা দিয়ে উঠছে।

সুমিতঃ- মানে.?

আমিঃ- না মানে ইয়ে কিচ্ছু না এমনিতেই বললাম।

সাগরঃ- দেখো তুমি আমাদের কাছে কোন দিন কথা লুকাতে পারো নি আর পারবেও না,,সো তাড়াতাড়ি বলে ফেলো,,
তুমি যখন আমাদের না জানিয়ে বাড়ি এসেছো শুনলাম,,তখনই বুঝা শেষ কোন না কোন সমস্যা নিশ্চিত হইছে,,
তা সমস্যাটা কি,,??
নতুন কোন পরী টরির ক্ষপ্পড়ে পড়লা নাকি??
এবার যদি পরীর আছড় হয়,,সেইটা যে করেই হোক আমার কাচে ট্রান্সফার করবা ওকে??

সুমিতঃ-আমি বয়সে সবার ছোট বলে কি বসে বসে আঙুল চুষবো আর তোমাদের রং তামাশা দেখবো??
আমার কি মন চায় না পরীর সাথে একটু অন্তরঙ্গ হয়ে গল্প করা,,একটু?????

বাল,,,দল মনমেজাজটা নষ্ট করে,, সব কিছুতেই সব সময় দুষ্টামি ভালো লাগে না।
সিরিয়াস বিষয়ে তো আরো না।
কিন্তু কে শুনে কার কথা,, ওরা তো আমার কথা শুনার মতন পাবলিক না।
তাই মন খারাপ করে বসা থেকে উঠে হেটে চলে আসতে যাবো তখুনি টেনে ধরলো ওরা,,

সুমিতঃ- সরি ভাইয়া,,বুঝতে পারি নি রাগ করবা,,
আচ্ছা যাও এবার বল কি হইছে।
আমরা তো শুধু মজা করতেছিলাম

আমিঃ- কই কি হবে কিচ্ছু না তো,,

সাগরঃ- সরি বললাম তো ভাইয়া,,এই যে কান ধরছি(সুমিতের কান ধরে)

ওদের এমন কাহিনি দেখে না হেসে পারলাম না।
হো হো করে হেসে দিলাম।
তারপর আস্তে আস্তে সব কাহিনি খুলে বললাম।
আর সব শুনে,,

সুমিতঃ-তোমার কথা শুনে আর আগের অভিজ্ঞতা থেকে যা বুঝতে পারছি তাতে এটা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব না,, কোন মানুষের দ্বারা এমন ধর্ষন আর তারপর হত্যা…কোন ভাবেই সম্ভব না।
এটা অশরীরীদের কাজ,,সে পৃথিবীতে এসেছেই এইসব করতে,মানুষের ক্ষতি করতে,,কিন্তু একটা প্রশ্ন আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে,,
আর সেইটা হচ্ছে,, এখানে শুধু শারীরিক কামনা বাসনা মিটানোটাই প্রধান উদ্দেশ্য না।
এইসবের পিছনে রয়েছে গভীর কোন প্লান,,
সে তার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এসব করে বেড়াচ্ছে।

সাগরঃ- এটাকে কি থামানো বা দমনের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া যায় না..?
তুমি তো আইনের লোক,,, তুমি কিছু একটা তো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারো নাকি.??

আমিঃ- বিষয়টা আইনের হাতে তুলে দেওয়ার মতন কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না,, এটা তো কোন মানুষ নয় যে তাকে খুজে খুজে বের করে তুলে এনে কয়েক গা বেত মেরে আসল কাহিনি কি সেইটা বের করবো আর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারবো,,নাকি.??
তাছাড়া যতটা করা সম্ভব ততটাও তো করতে পারছি না,,আমার উপরেও তো কেউ একজন আছেন পোস্টে,,আর তার কথা শুনতে তার আদেশ মানতে আমি বাধ্য নাকি.??
এ বিষয়ে জানি না কেনো আমার ওসি সাহবে কোন পদক্ষেপ তো দূরের কথা,, এ বিষয়ে কোন কিছু বলতে পর্যন্ত দিতে রাজি নন।
আমি দুইবার বলাতে আমাকে ছুটিতে বাড়ি পাঠিয়ে দিছেন,,যদি আরেকবার বলি তাহলে হয়তোবা বরখাস্ত করে দিবে,,না হয় অন্য কোন শাস্তি।

সাগরঃ- তাহলে তোমার ওসি তো আবার এ বিষয়ে জড়িত না??
আমার কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছে ভাইয়া।

আমিঃ- তা তো আর জানি না,,কিন্তু এটা তো বের করতেই হবে।

সুমিতঃ- ভাইয়া একটা কাজ করো,,ভাবির আব্বু,,মানে তোমার শশুড় মশাইকে বিষয়টা জানাও,,উনিও তো একজন জ্বীন,,শুধু জ্বীন না,, একটা গুষ্টির সর্দার,,আমার মনে হচ্ছে উনি তোমাকে সাহায্য করতে পারবেন।

আমিঃ- হুমম তাই করতে হবে,,কিন্তু এটাও ভাবছি এখুনি জানানোটা কি ঠিক হবে.??
আচ্ছা যাইহোক আমি স্নেহাদের বাড়ি যাবো আজ,,
তোমরা কি কেউ যাবে আমার সাথে.?

বলতে লেট হলেও লাফ দিতে লেট হল না দুইজনের।
খুশিতে বাক-বাকুম করতেছে দুইজনে।
এর আগেও দুইবার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম ওদের,,
এবারো যাবে,,আমি জানি ওদের যাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য সুন্দরী সুন্দরী পরী,,আরেকটা উদ্দেশ্য আছে তা হচ্ছে ভালো নাম না জানা হরেক রকমের সুস্বাদু মজার মজার খাবার??
যাইহোক ওদের দুইজনকে নিয়েই বাড়ি গেলাম।
রাতের খাবার এতক্ষণে রান্না হয়ে গেছে।
সবাই মিলে খেয়ে রাত ১২ টার মধ্যেই রেডি হয়ে নিলাম।
১২ টা ১০ মিনিটে অদৃশ্য ভাবে কিছ একটা ছাদের দিকে সো সো শব্দ করে আসতেছে,,
যতটা কাছে আসছে ততটা পরিষ্কার হচ্ছে জিনিসটা।
আস্তে আস্তে ক্লিয়ার হল,,যদিও আগেই জানতাম আমাদের জন্য পালকি পাঠিয়ে দিয়েছেন শশুড় মশাই।
পালকিতে উঠে বসলাম চারজন।
পালকি চলতে শুরু করলো কোন বাহন ছাড়াই শূন্যে ভেসে ভেসে।
আস্তে আস্তে উপরে উঠতেছে,,প্রথম বার বিষন ভয় পেয়েছিলাম,,কিন্তু এবার আর ভয় পাচ্ছি না।
ভাসতে ভাসতে একদম মেঘের উপরে উঠে গেল পালকি,,জোছনা রাতে,,আকাশ ভর্তি তারার ঝিলিমিলি,, গোল হয়ে আলো দিচ্ছে চাদটা,,মাঝে মাঝে দুই একটা মেঘের পাল চাদটাকে ঢেকে দিচ্ছে।
ওফ্ফ কি সুন্দর দৃশ্য,,
উপরে থেকে নিচের দিকে তাকালে যদিও ভয় লাগে কিন্তু যে দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় তা অকল্পনীয় সুন্দর।
নিচে থেকে তারা গুলো যেমন দেখা যায়,, ঠিক তেমনি উপর থেকে তাকালে পৃথিবীতে মনে হয় আকাশ আর আকাশ ভর্তি তারা খেলা করছে।

একটা সময় বুঝার আগেই স্নেহাদের বাড়ির সামনে এসে পৌঁছাই,,
স্নেহাদের বাড়ি না,, পুরো রাজ্যটাই অমায়িক সুন্দর, কল্পনাতিত,,যা কল্পনাতেও সৌন্দর্য অনুমান করা সম্ভব না।
এ যেন রুপকথার রাজ্য।
বাড়ির সামনে বিশাল আকৃতির গেইটে দাঁড়িয়ে আছে অনেকেই আমাদের আমন্ত্রণ অব্যর্থনা জানাতে,,
এদের অব্যর্থান সিস্টেমটাও ভিন্ন,, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীকেও এতটা সন্মান আর ভালবাসা জানিয়ে অব্যর্থনা জানানো হয় না।
এখানে আসলে কেমন জানি নিজেকে রাজা বাদশা বলে মনে হয় ????

বাড়ির ভিতর প্রবেশ করলাম,,শশুর, শাশুড়ী, শালা,শালি সবাই এগিয়ে আসলো,,আমি আসার আগে অনেক মিষ্টি কিনছিলাম সেগুলো এতক্ষণ সুমিত সাগরের হাতে ছিল,, তা একজন কাজের লোককে ইশারায় নিতে বললাম।
তারপর কুশল বিনিময় আর শালা শালিদের সাথে দুষ্টামি ফাইজলামিতে মেতে উঠলাম,,এদিকে সুন্দরী পরী বউটা নিজের বাড়ি এসে আমাকেই ভুলে গেছে,, বান্ধবীদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠেছে।
সুমিত সাগর দুইজনে ঝগড়াঝাটি বাঁধিয়ে দিয়েছে কে পরীদের মধ্যে কোনটার সাথে প্রেম করবে তা নিয়ে।
হাসাহাসি রংতামাশায় ভুলেই গেলাম দুইটা মৃত্যুর কথা।
দুইটা অস্বাভাবিক,, ধর্ষন প্লাস মৃত্যুর কথা।
এভাবে তিন দিন কেটে গেল।
সুমিত সাগর দুইজনেই এর মধ্যে পটিয়ে ফেলেছে নিজের মতন করে আমার দুইটা পরী শালিদের??

যেদিন চলে আসবো পরী রাজ্য থেকে সেদিন হুট করেই মনে পরে গেল সেই কথা,,মূলত আমি যা জানার জন্য এসেছিলাম।
মানে অস্বাভাবিক ধর্ষন আর রহস্যময় মৃত্যুর পিছনে কে বা কারা থাকতে পারে সে সম্পর্কে জানতে।কিন্তু এত আনন্দ আর হই হুল্লোড়ের মধ্যে পরে সব ভুলেই গিয়েছিলাম,
না ভুলে গিয়ে কাজটা ঠিক করি নি,,আমার ভুলে যাওয়াটা মোটেও উচিৎ হয় নি,,কি করে এত বড় একটা কথা ভুলে গেলাম.?
যেভাবেই হোক আমাকে জানতেই হবে এর পিছনে রহস্য কি.?
শশুড় মশাই কিছু জানেন নাকি.?
বা উনি কিছু জানতে পারবেন নাকি.?

পুরো বাড়ি খুঁজতেছি পাগলের মত, কিন্তু শশুড় আব্বাকে খুঁজে পাচ্ছি না।
শেষে একজনকে জিগ্যেস করতে বাধ্য হলাম উনি কই আছেন,,আর উত্তর সে জানালো উনি(শশুড়) নাকি একটা জরুরি মিটিং এ আছেন,,(কোন একটা জায়গায় নাম বলে দিল)

যদিও জ্বীন পরীর রাজ্যের সবকিছু আমি চিনি না তবুও একজনের সাহায্য নিয়ে লোকটার বলা ঠিকানা অনুযায়ী শশুড় মশাইকে খুজতে বেরিয়ে গেলাম,,যে করেই হোক উনার সাথে কথা বলা জরুরি।
গিয়ে পৌঁছালাম,, যেখানে আছেন উনি সেইটা বিশাল বড় প্রসাদ,,যা দেখেই বুঝা যাচ্ছে কোন রাজ প্রসাদ হবে এটা।হয়তো-বা এই পরী রাজ্যের রাজার প্রসাদ হবে।
প্রথমে ঢুকতে সাহস পাচ্ছিলাম না,,কিন্তু মনের ভিতর সাহস নিয়ে প্রবেশ করলাম আর দরজার কাছে গিয়ে যা শুনতে পেলাম তাতে আমার মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো,,
শুনতে পেলাম..??
।।
।।।।
।।।।।।
।।।।।।।।
গল্পের পরের পর্ব আগামীকাল দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
মতামত জানিয়ে পাশে থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here