মিসেস_চৌধুরী #Part_11,12

0
978

#মিসেস_চৌধুরী
#Part_11,12
#Writer_NOVA
11

সারাটা দিন ভাবনার মাঝে ডুবে চলে গেল ফিহার।কোন কেক কাটা বা পার্টি করেনি।নিজের জীবন একটা গোলক ধাঁধায়। সবকিছু এখন ঘোরের মাঝে মনে হয়।টেবলেটের গলার বেল্ট একহাতে ধরে আরেক হাতে অনিকে কোলে নিয়ে সদর দরজা দিয়ে চৌধুরী বাড়িতে প্রবেশ করলো ফিহা।সোফায় আরাম করে পায়ের ওপর তুলে বসে আছে সাফান।ক্লান্ত শরীরে বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালো ফিহা।
সাফানকে সে খেয়াল করে নি।হঠাৎ সাফানের গলা পেয়ে চোখ দুটো ছোট ছোট করে ওর দিকে তাকালো।

সাফানঃ শুভ পয়দা দিবস ফিহু,বান্দরনী,শয়তাননি।
জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ফিহাঃ যেই না জীবন তার আবার জন্মদিন।
(তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে)

কথা না বাড়িয়ে ফিহা উপরে উঠে গেল।সাফান বেশ বুঝতে পেরেছে ফিহা ওর সাথে রাগ করে আছে।থাকাটাই স্বাভাবিক।এমন একটা দিনে সবাই চায় তার প্রিয় মানুষটার সাথে কাটাতে।কিন্তু সাফান আজ সারাদিন খুব ব্যস্ত ছিলো যার কারণে ফিহার জন্মদিনের কথা প্রায় ভুলতেই বসেছিলো।হঠাৎ বেকারীর সামনে দিয়ে আসতে গিয়ে কেক দেখে মনে পরে যায়।তাই দেরী না করে চৌধুরী বাড়ি চলে এলো।আসার সময় ফিহার খুব প্রিয় একটা জিনিস নিয়ে এসেছে।যেটা ওর প্যান্টের পকেটে আছে।

সাফানঃ মহারাণী মনে হচ্ছে বেশ রেগে আছে আমার ওপর। এখনি যেতে হবে নয়তো আরো রাগবে।আজকে যে আমার কি হবে আল্লাহ জানে?আল্লাহ আমার পিঠ আজ সাথে থাকবে না।পিঠে আজ বস্তা বেঁধে আসলে ভালো হতো।আল্লাহ, আমার মতো মাসুম একটা কিউট বাচ্চাকে ফিহার মারের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিও।

আল্লাহের নাম নিতে নিতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলো সাফান।ফিহা অনিয়াকে দোলনায় খেলনা দিয়ে বসিয়ে রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেল।দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতেই টেবলেট সাফানকে দেখে ঘেউ ঘেউ শুরু করলো।

সাফানঃ কি রে তুই কি শুরু করলি?চুপ কর মেরি বাপ।তুই এভাবে চিৎকার, চেঁচামেঁচি করলে সবাই আমাকে চোরভেবে গণপিটুনি দিবে।দাঁড়া তোকে আমি ঘুষ দিচ্ছি।

সাফানের পকেট হাতিয়ে একটা ছোট বিস্কুটের প্যাকেট পেলো।কি মনে করে জানি কিনেছিলো।এখন কাজে লাগছে।বিস্কুটের প্যাকেট খুলে দুটো বিস্কুট ছুঁড়ে মারলো সাফান।টেবলেট এগিয়ে এলো বিস্কুটের দিকে।
সাফানঃ তোমাদের কি করে হাত করতে হয় সেটা এই সাফান জানে?।ভাগ্যিস,বিস্কুটের প্যাকেট ছিলো।

কিন্তু টেবলেট বিস্কুটের সামনে গিয়ে কিছু সময় ঘ্রাণ শুকলো।তারপর বিস্কুট দুটোকে পাশ কাটিয়ে দৌড়ে সাফানের দিকে আসতে শুরু করলো।সেটা দেখে সাফানও উল্টো দিকে দৌড়।সাফান তো জানে না টেবলেট যেই সেই কুকুর নয় ভি.আই.পি কুকুর। যার কারণে সে অচেনা মানুষের খাবার মুখে দেয় না। টেবলেট সাফানের পিছু নিলো।যদিও সাফান কুকুর ভয় পায় না।কিন্তু টেবলেটকে ওর কেন জানি অনেক ভয় করে।ওর বিশ্বাস টেবলেট ওকে কাছে পেলে কামড় দিবে।সারা বাড়ি দৌড়াচ্ছে সাফান।তার পেছন পেছন টেবলেট ঘেউ ঘেউ করছে।

সাফানঃ বাপ, এবারের মতো ছেড়ে দে।এই কানে ধরছি আর কখনও তোর সামনে আসবো না।এভাবে দৌড়ালে আমার শক্তি সব ফুরিয়ে যাবে।এবার তো থাম রে।ফিহু কই তুই? এবারের মতো বোইন তোর কুত্তার থেকে আমাকে বাঁচা।

কিন্তু টেবলেট ওর কোন কথায় গলছে না।হিংস্রভাবে ওর পিছনে ধাওয়া করছে।আসলে সারাদিন ফিহার মন খারাপ ছিলো।যার কারণে টেবলেটের সাথে কোন কথা বলেনি।যাতে করে টেবলেটের মনও ভীষণ খারাপ।এখন সাফানকে দেখে সে চোর ভেবেছে।তাই ওর পিছু নিয়ে সারাদিনের রাগ কমাবে।

সাফানঃ ফিহা কোথায় তুই? আমাকে বাঁচা বোন।আমি আজকে শেষ। টেবলেট আজ ওর সব দাঁত আমার ওপর প্রয়োগ করবে।তারপর আমাকেই বস্তা বস্তা টেবলেট গিলতে হবে। ফিহু?????

ফ্রেশ হয়ে ফিহা তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে ডেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। অনি এখনো খেলনা নিয়ে একা একা খেলছে।ফিহা ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে তোয়ালেটা বেডে রাখলো।অনিয়ার কাছে গিয়ে ওর মাথায় হাত রাখলো।অনি ওর মাকে দেখে খুশি হয়ে হাত দুটো ফিহার দিকে বাড়িয়ে দিলো।ফিহা অনিকে কোলে তুলে নিলো।তখনি ওর কানে সাফানের চিৎকার ভেসে এলো।

ফিহাঃ এরকম করে ষাঁড়ের মতো চিৎকার করছে কে?গলাটা সাফানের মতো লাগছে।টেবলেট গেল কোথায়?(একটু ভেবে)এই রে টেবলেট আবার সাফানকে চোর ভেবে দৌড়ানি দিচ্ছে না তো।গিয়ে দেখে আসি তো।

অনিয়াকে কোলে নিয়ে এক প্রকার তাড়াহুড়ো করে রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে এলো ফিহা।
ফিহাঃ যা ভেবেছিলাম তাই হলো।টেবলেট আজ সাফানকে আচ্ছা শিক্ষা দিয়ে দিবে।

সাফানের কান্ড দেখে ফিহার হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার জোগাড়। সারা ড্রয়িং রুমে চক্কর কাটছে সাফান।ওর পিছনে পিছনে ঘেউ ঘেউ করতে করতে দৌড়াচ্ছে টেবলেট। ফিহাকে দেখে সাফান চিৎকার করে বলে উঠলো।
সাফানঃ বোইন আমারে বাঁচা। আমি আজকে শেষ।আর দৌড়াতে পারতাছি না।ঐ জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁত না কেলিয়ে তোর এই কুত্তা সরা আমার পেছন থেকে।
ফিহাঃ একদম ঠিক আছে।এবার বোঝ ঠেলা।এটায় তোর শাস্তি। শয়তান একটা।
সাফানঃ ফিহু ওকে সরা।আমাকে একটু পর হসপিটালে ভর্তি পাবি।(দৌড়াতে দৌড়াতে)
ফিহাঃ টেবলেট চলে আয়।টেবলেট ওর নাম সাফান।আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।

এই কথাটা পুরো ম্যাজিকের মতো কাজে লাগলো।টেবলেট চুপচাপ সাফানের পিছু ছেড়ে ফিহার সাথে ঘেঁষে দাঁড়ালো। সাফান হাঁটুতে দুই হাত রেখে হাঁপাতে লাগলো।অবাক চোখে টেবলেট ও ফিহার দিকে তাকিয়ে আছে সাফান।

সাফানঃ শালার কুত্তা। তোকে আমি দেখে নিবো। শালার শয়তান।আমি এতখণ ধরে এতো কিছু বললাম তোর গায়ে লাগলো না।শুধু তোর পায়ে ধরার বাকি ছিলো।তাও আমার ওপর তোর দয়া হলো না।আর ফিহু যেই তোকে সরতে বললো সেই সরে গেলি।তোকে শালা একদিন একলা পেলে যে আমি কি করি তুই দেখে নিস।আজকে আমাকে দিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতা করালি না তোকে দিয়ে সেদিন হয় কাবাডি খেলবো নয়তো তোকে ফুটবল বানাবো।

সাফানের কথা শুনে ফিহা হাসি কিছুতেই থামাতে পারছে না।পেট ব্যাথা হয়ে গেছে ওর।অনিয়াকে কোলে নিয়ে পেট ধরে সোফায় বসে পরলো ফিহা।
সাফানঃ হাসো হাসো বেশি করে হাসো। কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ।সত্যি আমি যদি তোর এই কুত্তাকে একদিন পাই তাহলে ওর খবর আছে।শালা,আমায় আজ যে দৌড়ানি দিয়েছে তা আমি জীবনেও ভুলবো না।
ফিহাঃ সাফান ভাই আমার, কেমন লাগলো আজ??
(মুখ টিপে হেসে)
সাফানঃ তুই তো এখন মজা নিবিই।আমার ইচ্ছে করছে এটাকে উল্টো করে চার পা ধরে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আসতে।
ফিহাঃ টেবলেটের কোন বোন নেই। তাই তুই ওর দুলাভাই হতে পারছিস না।থাকলে নিশ্চয়ই তোর মতো একটা ষাঁড়ের সাথে বিয়ে দিতাম।
সাফানঃ মানে কি বলছিস তুই??
ফিহাঃ মানেটা খুব সিম্পল। তুই যেভাবে বারবার টেবলেট কে শালা বলছিস আমার তো মনে হচ্ছে ওর কোন বোন থাকলে তাকে বিয়ে করে নিতি?।
সাফানঃ তুই আবার আমাকে নিয়ে মজা করছিস।একগ্লাস পানি দে ফিহু।
ফিহাঃ আমি পারবো না।নিজেরটা নিজে এনে খা।
সাফানঃ কেন?
ফিহাঃতোর সাথে আমি কোন কথা বলবো না।তুই সারাদিনে আমাকে একবার কলও দিসনি।
সাফানঃ বোন তোকে আমি সব বলছি।এবার জলদী করে আমাকে একগ্লাস পানি খাওয়া।
ফিহাঃ আনতে পারি একটা শর্তে।
সাফানঃ আবার কি শর্ত।এমনিতে তোর কুত্তার ধাওয়া খেয়ে আমার সব এনার্জি লস হয়ে গেছি। আবার তুই কোন শর্ত দিবি।তুই যে আমার হাল বেহাল করবি সেটা আমি ভালো করেই জানি।
ফিহাঃ আচ্ছা তুই বকবক কর।আমি পানি এনে দিবো না।ভেবে দেখ কোনটা করবি?
সাফানঃ বল কি শর্ত?
ফিহাঃ এখন ১০০ বার কান ধর উঠবস করবি তুই। যদি রাজী হোস তাহলে পানি এনে দিবো।নইলে নিজেরটা নিজে নিয়ে আয়।
সাফানঃ হাতি ফাঁদে পরলে চামচিকায়ও লাথি মারে।এমনিতে তোর টেবলেট আমায় বেশ নাকানি-চুবানি খাইয়েছে।আবার তুই আমাকে শাস্তি দিতে চাইছিস।
ফিহাঃ এটা আমাকে সারাদিন ফোন না দেওয়ার শাস্তি। ??
সাফানঃ একগ্লাস পানির জন্য এমন করলি না।মনে রাখিস তুই। আল্লাহর কাছে ঠেকা থাকবি তুই। হাশরের ময়দানে আল্লাহ তোকে পানি দিবো না।হু হু মনে রাখিস কথাটা।এই সাফানের কথা কখনও ভূল হয় না।
ফিহাঃ কি বললি তুই? তোর ছোট বেলার এই অভ্যাসটা এখনো যায় নি।দাঁড়া তোর একদিন কি আমার একদিন।

ফিহা অনিয়াকে কোলে নিয়েই সাফানের পিঠে দুড়ুম দাড়ুম তাল ফেলতে লাগলো।সাফানকে মারতে দেখে অনিয়া খিলখিল করে হাসছে।
সাফানঃ বোন এবার আমাকে ছেড়ে দে।আমি টেবলেটের হাতে যে ধাওয়া খেয়েছি তাতে হাঁপিয়ে উঠেছি।এখন তুই যদি এই মাসুম বাচ্চাটাকে এভাবে মারিস তাহলে মরেই যাবো।তোরা কি শুরু করলি বলতো।প্রথমে এই টেবলেট তারপর তুই। আহ্ ফিহু লাগছে।এবারের মতো মাফ কর বোন।এই জীবনে ২য় ভূল হবে না।যত কাজ থাকুক তোর জন্মদিনে আমিই প্রথম উইশ করবো।হু হু তুই দেখিস।
ফিহাঃ মনে থাকবে তো।
সাফানঃ আলবাত থাকবে।আজকে যেই ধাওয়া খেয়েছি সেটা কি ভুলতে পারি।এই ধাওয়ার কথা মনে হলেই তোর জন্মদিনের কথা মনে পরে যাবে।
ফিহাঃ মনে রাখিস কথাটা। যদি ভুলে যাস তাহলে তোকে আমি আবার টেবলেটের ধাওয়া খাওয়াবো।
সাফানঃ ছাইরা দে বোইন,কাইন্দা বাঁচি। এমন ভূল কখনও করিস না তুই ।আমার আজ ঢের শিক্ষা হয়েছে।

ফিহা হাসতে হাসতে ডাইনিং টেবিল থেকে গ্লাস ভর্তি পানি নিয়ে এলো।সাফানের হাতে দিতেই ঢকঢক করে পুরো গ্লাস পানি এক নিশ্বাসে খেয়ে ফেললো।ফিহা গ্লাসটা ডাইনিং টেবিলে রাখতে গেল।সাফানের চোখটা টেবলেটর ওপর পরতেই রেগে বললো।
সাফানঃ তোকে একদিন হাতে পাই শুধু। আজ শরীরে শক্তি নেই বলে বেঁচে গেলি।যেদিন তোকে হাতে পাবো সেদিন তোর বাপ,দাদা চৌদ্দ গুষ্ঠির নাম ভূলিয়ে দিবো। নয়তো আমার নামও সাফান হাসান নয়।

টেবলেট মুখ গুজে চুপচাপ সোফার পাশে বসে আছে।টেবলেট মনে হয় বুঝতে পারলো সাফান ওকে বকছে।তাই মুখ তুলে সাফানকে দুই বার ঘেউ ঘেউ করে প্রতিবাদ করে আবার মুখ গুঁজে রাখলো।
সাফানঃ আবার ঘেউ ঘেউ করিস।দাঁড়া তোকে তে–

কথাগুলো বলে সাফান আশেপাশে কিছু খুঁজতে লাগলো। একসময় টি-টেবিলে থাকা ফুলদানি হাতে নিয়ে টেবলটকে ছুরে মারতে নিলো।ফুলদানি হাতে নিয়ে উঁচু করে যেই ছুঁড়ে মারবে সেই ফিহা চলে এলো।
ফিহাঃ কি করছিলি তুই?
সাফানঃ কই কিছু না তো।আমিতো ফুলদানিটা হাতে নিয়ে দেখছিলাম কি রকম দেখতে।
ফিহাঃ ??
সাফানঃ অমন করে তাকাস না।আমি সত্যি বলছি।
ফিহাঃ তোকে কি বলেছিলাম?
সাফানঃ এবারের মতো মাফ করে দে।আর জীবনে ভুল হবে না।
ফিহাঃ আমি মানছি না।নে শুরু কর।
সাফানঃ কানে ধরে উঠবস করতেই হবে?।
ফিহাঃ হুম ?।
সাফানঃ না করলে হয় না।
ফিহাঃ তুই যদি এখন ১০০ বার কান ধরে উঠবস না করিস তাহলে তোর সাথে কথা বলবো না।আর তুই ভালো করে জানিস আমি যা বলি তাই করি।
সাফানঃ আজ সকালে যে কার মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছিলাম কে জানে?আমার দিনটাই খারাপ গেলো

সাফান চুপচাপ কানে ধরে উঠবস করা শুরু করলো। যদি এই শাস্তি মেনে না নেয় তাহলে নিশ্চয়ই ফিহা কথা বলবে না।আর ফিহা ওর কথা না বললে তো ওর কিছু ভালো লাগে না।সোফায় বসে মিটমিট করে হাসছে ফিহা।আনিস চৌধুরী এই সময় রুম থেকে বের হয় না।তাছারা তার রুম সাউন্ড প্রুফ করা।যার কারণে তিনি এতো হুলস্থুলের কিছুই জানেন না।

সাফানঃ আর পারছি না।এবারের মতো মাফ করে দে।তুই যদি এখন আমাকে এভাবে শাস্তি দিস তাহলেতোর জন্য যে গিফট এনেছি তা কিন্তু দিবো না।
ফিহাঃ কি এনেছিস?(খুশি হয়ে)
সাফানঃ আমার শাস্তিটা মাফ করে দে।তাহলে দিব।
ফিহাঃ(একটু ভেবে) আচ্ছা যা মাফ করে দিলাম।এবার আমার গিফট দে।
সাফানঃ চোখ বন্ধ কর।

ফিহা চোখ বন্ধ করতেই সাফান ওর মাথায় একটা গোলাপি কালার কি জানি কি ফুল হবে,সেটা মাথায় পরিয়ে দিলো।পকেটে এত সময় থাকার কারণে অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। কাঁচা ফুল এত সময় থেকেছে এই তো বেশি। ফিহা খুব খুশি হলো।

সাফানঃ সরি বেলি ফুলের মালা পাই নি।তাই এটা গিফট করলাম।তোর নিশ্চয়ই পছন্দ হয়নি আমার এই সামান্য উপহার।এখন তো তোর অনেক টাকা।আমার মতো গরীবের এই সামান্য উপহার তোর পছন্দ হবে না।
ফিহাঃ একটা চড় দিবো।আমি কি বলেছি আমার পছন্দ হয়নি।খুব সুন্দর হয়েছে।আমার ভাই ভালোবেসে আমার জন্য একটা চকলেট আনলেও সেটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

ফিহার কথা শুনে সাফানের মুখে হাসি ফুটলো।ফুলের কারণে ফিহাকে খুব সুন্দর লাগছে।মা ও মেয়ের দুজনের পরনে হালকা গোলাপি কালার ড্রেস।ফিহার মাথায় গোলাপি ফুল আর অনিয়ার মাথায় ছোট গোলাপি ফুলের রাউন্ড বেন।ফিহাকে অনেক সুন্দর লাগছে।অনিয়ার মুখে ছোট বেবী চুষনি।এটা থাকার কারণে অনিয়া এত সময় শান্ত ছিলো।ওদের দুজনকে এভাবে দেখে অনেক খুশি হলো সাফান।

#চলবে

#মিসেস_চৌধুরী
#Part_12
#Writer_NOVA

কেটে গেল বেশ কিছু দিন।আজ অফিসে বেশ বড় করে মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ক্লায়েন্ট থাকবে আজ মিটিংয়ে। ফিহার আজও বেশ ভয় ভয় করছে।যদিও সেদিনের মতো নয়।আকশি, আদিয়াতও আজ থাকবে মিটিংয়ে। সকাল থেকে ফিহার মনটা কু-ডাকছে। মনে হচ্ছে আজ কোন খারাপ কিছু ঘটবে।কিন্তু কি ঘটবে সেটাই বুঝছে না।অনিকে কোলে তুলে নিয়ে কেবিনের আবছা সবুজ রঙের কাচের দিকে তাকিয়ে আছে। আজও মনটা ছটফট করছে। কোনকিছু ভালো লাগছে না। অনিয়া তার মায়ের মুখে চোখে হাত দিয়ে খেলছে।ফিটারে দুধ গুলে অনিয়ার মুখে দিলো।কিন্তু অনি ফিটার খাওয়া নিয়ে দুষ্টুমী করছে।চুষনি মুখে নিয়ে বসে আছে।

ফিহাঃ মাম্মাম তুমি কিন্তু বেশ দুষ্টু হয়ে গেছো।খাবার খাওয়ার সময় তোমার দুষ্টুমী বেড়ে যায়।সকাল থেকে কিছু খাওনি।এখন একটু খেয়ে নেও। আজ আমার মিটিং আছে।অনেক সময় সেখানে থাকতে হবে।তুমি তো টেবলেটের সাথে এখানে থাকবে।টেবলেট তো তোমাকে খাওয়াতে পারবে না।আমি তোমায় না খাইয়ে গেলে মিটিংয়ে মনোযোগ দিতে পারবো না।এমনিতেই মনটা আজ খারাপ কিছু হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। মা-মণি জলদী গিলো।মুখে চুষনি কামড় দিয়ে বসে থাকলে কি হবে?দুধ গিলতে হবে তো।এই টেবলেট আবার কোথায় গেলো?

অনিয়া দুষ্টুমী করছে।মুখে তার মিষ্টি হাসি।মায়ের সাথে দুষ্টুমী করে সে বেশ মজা পাচ্ছে। ফিহা নিরাশ চোখে ওর মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।তবে সে চাহনীতে নেই কোন রাগ, নেই কোন অভিমান।আছে একরাশ মায়া,স্নেহ,ভালোবাসা।আবদুল আজিজ সাহেব দরজায় টোকা দিলো।

আবদুলঃ আসবো ছোট বউমা।
ফিহাঃ চাচা আমিতো বলেছি আপনি আমার কেবিনে আসলে অনুমতি নিবেন না।আরেক দিন এমন করলে আমি কিন্তু আপনার সাথে কথা বলবো না।

ফিহা ঠোঁট উল্টে গাল ফুলিয়ে কথাটা বললো।যেটা দেখে আবদুল সাহেবে না হেসে পারলো না।কেবিনে ঢুকে মুচকি হেসে ফিহার মাথায় হাত রাখলো।

আবদুলঃ পাগলী মেয়ে।এতবড় হয়ে গেছো একটা মেয়ের মা তুমি। তারপরও বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টিয়ে রাখো। কেউ দেখলে বিশ্বাস করবে না তো। তোমার যে একটা মেয়ে আছে।
ফিহাঃ আমি এমনি চাচা??।টেবলেট কোথায় চাচা?ওকে অনেক সময় ধরে দেখছি না।
আবদুলঃ টেবলেটকে দেখলাম বাইরে ঘুরঘুর করছে।
ফিহাঃ ওহ আচ্ছা।আপনি কিছু বলবেন চাচা?
আবদুলঃ আজলের ফাইলগুলো কমপ্লিট করেছো বউমা।তোমাকে যেগুলো চেক করতে ও সিগনেচার করতে দিয়েছিলাম।
ফিহাঃ হ্যাঁ,চাচা। সব রেডি করে রেখেছি আমি।
আবদুলঃ ফাইলগুলো আমাকে দেও বউমা।আমি আজকের মিটিংয়ের প্রেজেন্টেশন রেডি করে ফেলি।
ফিহাঃ আপনি একটু অনিয়াকে ধরুন।আমি ডেস্ক থেকে ফাইল বের করে দিচ্ছি।
আবদুলঃ দেও বউমা,আমার অনি দিদিভাইকে।

ফিহা অনিয়াকে আবদুল সাহেবের কোলে দিয়ে ডেস্কে ফাইল খুঁজতে লাগলো। আকশি ও আদিয়াত চলে এসেছে। হল রুমে অপেক্ষা করছে তারা দুজন।টেবলেট মালিকের শরীরে ঘ্রাণ পেয়ে আকশির আশেপাশে ঘুরঘুর করছে। আবদুল সাহেব অনিয়ার সাথে কথা বলা শুরু করলো।

আবদুলঃ কেমন আছো অনি দিদিভাই?মাম্মিকে একদম জ্বালাবে না।তুমি তো ভালো মেয়ে। মাম্মি সারাদিন কত কাজ করে?এখন মাম্মিকে জ্বালালে মাম্মি কোথায় যাবে বলতো?তুমি কি মাম্মিকে বিরক্ত করো।ওহ,তুমি বিরক্ত করো না।তুমি ভদ্র মেয়ে তাই না।কোন দুষ্টুমী করো না। আমি জানিতো তুমি খুব ভালো মেয়ে।অনেক লক্ষ্মী, শান্ত, ছোট কিউট বেবি।

ফিহাঃ হুম অনেক ভালো মেয়ে। এভাবে কোন জ্বালাতন করে না।তবে খাওয়ার সময় ও ঘুমের সময় তার পাঁজিপানা শুরু হয়ে যায়।আমি আপনাদের নাতনির এক দন্ডও চোখের আড়াল হতে পারি না।ওয়াশ রুমে গেলেও শান্তি নেই। খাবার খাওয়ার সময়ও তাকে কোলে নিয়ে খেতে হবে।নয়তো হাত-পা ছুঁড়ে, চিৎকার করে কেঁদে সারা বাড়ি মাথায় তুলে ফেলবে।যত বড় হচ্ছে তত বজ্জাতপনা বেড়ে যাচ্ছে। এক মিনিটের জন্যও কোথাও গিয়ে শান্তি নেই। যা করবো সব ওকে কোলে নিয়েই করতে হয়।

আবদুলঃ এখনকার বাচ্চারা তো একটু বেশি দুষ্টু হয়।খাবার খেতে তাদের সবচেয়ে কষ্ট। বাচ্চারা তো মায়ের পাগল থাকবেই।ওরা তো জানে কে তাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে?নিজের মাকে ভালবাসবে না তো কাকে বাসবে?সারাদিন তো তোমার কাছেই থাকে।তুমি ওর খেয়াল রাখো,আদর করো,ওর যত্ন নেও।সেটা তো দিদিভাই বুঝে।যার জন্য তোমাকে চোখের আড়াল করতে চায় না।ও মনে করে তুমি কাছে থাকলে ওর সব দুঃখের অবসান।

ফিহাঃ হয়তো এমনটাই। আমারতো মা ছিলো না। তাই মায়ের আদর কিরকম হয় সে ব্যাপারে কোন ধারণা নেই। তবে জানি মায়ের অভাবটা কিরকম?আঁচল দিয়ে চোখের পানি,মুখ মুছার ভাগ্য আমার হয়নি।

আবদুলঃ মন খারাপ করো না বউমা।আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখো।তিনি যা করেন সব আমাদের ভালোর জন্য করেন।আমাদের জন্য কোনটা মঙ্গলজনক সেটা একমাত্র আল্লাহ জানে।তাই নিজের জীবনের ওপর নিরাশ হয়ো না।বরং আল্লাহর ওপর আস্থা রাখো। নিশ্চয়ই দুঃখের পর সুখ আছে।

ফিহাঃ হুম। আপনি ঠিক বলেছেন।থাক,এসব বাদ দিন।এখন এসব কথা বললে মিটিংয়ে দেরী হয়ে যাবে।
এই নিন আপনার ফাইল।আমি সব দেখে নিয়েছি।তারপরেও আপনি একটু চেক দিয়ে নিয়েন।

আবদুলঃ আচ্ছা, আসি বউমা।নেও ধরো দিদিভাইকে।সাবধানে রেখে, খাবার খাইয়ে তারপর মিটিংয়ে জলদী করে চলে এসো।

আবদুল আজিজ সাহেব অনিয়াকে কোলে দিয়ে ফাইল হাতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।ফিহা অনিয়াকে কোলে নিয়ে ঘুম পারানোর চেষ্টা করতে লাগলো।অনিয়াকে জাগনা রেখে যাওয়া যাবে না।চোখের সামনে ফিহাকে না দেখলে তো কান্না করে সারা অফিসের কর্মচারীদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাবে।জেগে থাকলে ফিহা মিটিংয়েও অনিয়ার জন্য চিন্তা করবে।কিছুতেই মন দিতে পারবে না।

???

হল রুমে যে যার যার নির্ধারিত সিটে বসে আছে। আকশি ও আদিয়াত সামনের সারিতে বসেছে।আকশি কিছু সময় পর পর এদিক সেদিক তাকিয়ে ফিহাকে খুঁজছে। আদিয়াত যে ওর সাথে কথা বলছে সেদিকে তার মোটেও খেয়াল নেই। শুধু কথার মাঝে হু হা বলে উত্তর দিচ্ছে।

আদিয়াতঃ আমি তোকে কিছু বলছি?।তুই কি শুনছিস?এদিক ঐদিক কি দেখছিস।
আকশিঃ হু হু শুনছিতো বল।(এদিক সেদিক চোখ ঘুরাতে ঘুরাতে বললো)
আদিয়াতঃ আমার মাথা শুনছিস?।কখন থেকে এদিক সেদিক তাকিয়ে যে তুই ফিহাকে খুঁজছিস সেটা আমি ভালো করেই জানি।ফিহা একটু পরে আসবো।
আকশিঃ পরে আসবে মানে।এটা কোন কথা নাকি।কোম্পানির ওনারকে এতো দেরী করে আসলে কি হয়?সামান্য কোমন সেন্স কি নেই?সবাই কত সময় ধরে অপেক্ষা করছে।আর ফিহা ওনার হয়ে এখনো আসলো না।এদিকে নজর না দিলে যে কত কত টাকার টেন্ডার লস হয়ে যাবে তুই জানিস।

আকশি রেগে কথাগুলো এক নিশ্বাসে বলে ফেললো।আদিয়াত দুই গালে হাত দিয়ে মনোযোগ সহকারে ওর দিকে তাকিয়ে কথাগুলো শুনছিলো।

আকশিঃ এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? আমি কিছু ভূল বলি নি।

আদিয়াতঃ কেউ অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করছে না।একমাত্র তুই ওর জন্য অপেক্ষা করছিস।মিটিং শুরু হতে আরো ১০ মিনিট সময় বাকি আছে। তুই তো দেখছি ফিহার জন্য দিনকে দিন পাগল হয়ে যাচ্ছিস।এতো ভালবাসা রাখবি কোথায় দোস্ত?

আকশিঃ মিটিং তো শুরু হয়ে গেল।তাই এসব বলছিলাম।(শুকনো হাসি দিয়ে)

আদিয়াতঃ দাঁত বের করে লাভ নেই। তুমি যে ফিহার ভালোবাসায় বুদ হয়ে আছো, আমি তা ভালো করেই বুঝতে পারছি।মিটিং এখনো শুরুই হলো না।এদিকে তুই কত শত কথা বলে ফেললি।

আকশিঃ কত দিন ধরে ওকে দেখি না তুই জানিস।

আদিয়াতঃ হুম জানি।বেচারী তো তোর মতো হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় না।অনেক কাজ করতে হয় তার।তোর ভাতিজীকে সামলাতে গিয়ে হিমশিম খায়।তারপরেও অনিয়ার যত্নের কোন ত্রুটি করে না।অফিস,সংসার,তোর বাবা,বাচ্চা, মিটিং,আজ এই ঝামেলা, কাল ঐ ঝামেলা।এগুলো সামলিয়ে যে ফিহা বেঁচে আছে, ভালো আছে তাতেই আলহামদুলিল্লাহ বল।আমার তো মনে হয় না তুই এসব একা সামলাতে পারতি।ফিহা কাঁচা হাতে সবদিকে সমান নজরে চালাচ্ছে। ভাই নামাজ পড়ে দোয়া করিস এমন একটা মেয়ে তোদের সবকিছু চালানোর জন্য পেয়েছিস।

আকশিঃ হয়েছে আর জ্ঞান বিতরণ করতে হবে না।তুই না একটু আগে বাইরে গিয়েছিলি।ফিহা কেন আসছে না সেটা বল।নিশ্চয়ই ফিহার কেবিনে উঁকি ঝুঁকি মেরেছিস।অবশ্য মারবি না কেন?তোর তো অভ্যাসই অন্যের রুমে উঁকি ঝুঁকি মারা।

আদিয়াতঃ কি বললি তুই? আবার আমার মান-সম্মান নিয়ে টান দিস।ঐ কার রুমে উঁকি ঝুঁকি মারতে দেখেছিস তুই? বল জলদী বলবি।যদি না বলতে পারিস তাহলে তোকে এখন মেরে ছাদে শুকাতে দিবো।উল্টো পাল্টা কথা না বললে কি তোর পেটের খাবার হজম হয় না।

আকশিঃ কেন তুই অনন্যার রুমে উঁকি ঝুঁকি মারিস নি।সেবার যে তোকে হাতে নাতে ধরলাম। পা টিপে টিপে যে অনন্যার রুমে গিয়েছিলি।সেটা ভূলে গেছিস।

আদিয়াতঃ হারামী, অনন্যা আমার হবু বউ।সেই কবের থেকে ওর সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে।ওর রুমে উঁকি ঝুঁকি মারলে তোর সমস্যা কি?

আকশিঃ বিয়ে ঠিক হয়ে আছে বাট বিয়ে এখনো হয়নি।তাহলে তুই ওর রুমে উঁকি মারতে গিয়েছিলি কেন?এখন আমায় বলবি।নয়তো তোর হবু বউকে গিয়ে বলবো তোর চরিত্রে দোষ আছে,রাতে বারে গিয়ে ড্রিংক করিস,তোর অনেক গার্লফ্রেন্ড আছে।ব্যাস তোর বিয়ে ক্যান্সেল।

আদিয়াতঃ এগুলো তো ডাহা মিথ্যা কথা।
আকশিঃ সেটা তুই আর আমি জানি।কিন্তু দিনা তো নয়।সো চুপ হো যা মেরি দোস্ত ?।

আদিয়াতঃ ব্যাপারটা কিন্তু ভালো হবে না আকশি।

আকশিঃ কেন রে এখন জ্বলে কে?আমারও সেম এমনি লাগে।যখন তুই ফিহাকে নিয়ে বলিস।

আদিয়াতঃ তুই ব্যাটা সুবিধাবাদী।তোর কপালে শনি আছে।সময় সবসময় সবার এক যায় না।আমারও সময় আসবে।তখন দেখবি কত ধানে কত চাল?

আকশিঃ যত ধান থাকবে ততই চাল হবে।তোর এসব নিয়ে চিন্তা না করলেও চলবে।তুই শুধু অনন্যাকে নিয়ে ভাবতে থাক।নয়তো তোর হবু বউ কিছু দিন পর অন্য কারো বউ হয়ে যাবে।

আদিয়াত চুপ হয়ে গেলো।অনন্যা, আদিয়াতের খালাতো বোন।ছোট বেলা থেকে ওদের দুজনের বিয়ে ঠিক করে রেখেছে ওদের দুই পরিবার।অবশ্য অনন্যা,আদিয়াত দুজন দুজনকে ভীষণ ভালোবাসে।টেবলেট বেশ কয়েকবার আকশির আশেপাশে ঘুরে গেছে। যেই আকশি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো অমনি খুশি মনে ফিহার কাছে চলে গেল।

অন্য দিকে ফিহা বেশ কষ্টে অনিয়াকে ঘুম পারালো।ঘুমের ঘোরেও অনিয়া শক্ত করে তার মা-কে ধরে রেখেছে। অনিয়াকে নিজের থেকে ছারিয়ে দোলনা শুইয়ে দিলো ফিহা।কি ভেবে জানি আবার অনিকে দোলনা থেকে উল্টো করে তুলে নিলো।নিজের সাথে শক্ত করে ধরে রাখলো বেশ কিছুখন।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here