রহস্যময়_অদৃশ্য_ধর্ষন পর্বঃ-০৮

0
1409

রহস্যময়_অদৃশ্য_ধর্ষন পর্বঃ-০৮
লেখকঃ-কৌশিক আহমেদ

এতগুলো মানুষের জীবন নষ্ট করেছে সে তো অল্পতেই নিজের রাস্তা ছেড়ে যাওয়ার পাত্র না,,এবার আমি একশ পার্সেন্ট শিওর সে নিজের চাল পরিবর্তন করেছে,,
হতে পারে অন্য কোন থানায় আমার থানার মতন মেয়েদের ধর্ষন করে খুন করছে।
এসব ভাবতে ভাবতেই রাত প্রায় ৪ টা,,ভোর হবে হবে ভাব এমন সময় থানা থেকে আমার নাম্বারে একটা কল আসে আর যা শুনি তাতে অবাক,,হতবাক হতভম্ব হয়ে যাই,,
ওপাশ থেকে জানায় হাসপাতাল থেকে ফোন এসেছিল সেখানে নাকি অস্বাভাবিক কিছু ঘটনা ঘটছে,,,উনারা দ্রুতই পুলিশ প্রটেকশন চাচ্ছে।
কিন্তু কি ঘটছে কি কাহিনি কি তা থানায় জানানো হয় নি,,সেখানে গিয়ে জানতে বলেছে।

আমি বুঝে গেছি পিশাচটা এবার তার স্থান পরিবর্তন করেছে,,
আর হয়তোবা হাসপাতালের ভিতর যে অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে তা ঐ পিশাচটারই কাজ হবে।
তড়িঘড়ি করে গাড়ি ঘুরিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা দিলাম,,
পাহাড়ি রাস্তা,, চাইলেও দ্রুত যাওয়া সম্ভব না।
প্রায় আধঘন্টা পরে হাসপাতালের সামনে গাড়ি থামালো ড্রাইভার।
কতৃপক্ষের সাথে দেখা করলাম,,,
উনারা যা জানালেন তাতে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না,,
যা কখনো কল্পনা করি নি,কেউ করবেও না তেমনি নিকৃষ্ট কাজ করছে পিশাচটা।
ছিহহহহ কি করে মানুষ হোক বা জ্বীন,,এমন নিকৃষ্ট কাজ করতে পারে.?? এদের কি আল্লাহর প্রতি একটুও ভয় নেই.??
যা শুনি,,,
কতৃপক্ষের একজনঃ-স্যার আমাদের এখানে অনেকের লাশ আসে,,কেউবা আবার হাসপাতালেই মারা যায়,, কিছু থাকে দূর্ঘটনা কিছু থাকে স্বাভাবিক।
কিছু আবার বেওয়ারিশ লাশ থাকে,,
স্বাভাবিক মৃত্যু ছাড়া বাকি গুলা পোস্টমর্টেম করার জন্য মর্গের ফ্রিজারে রেখে দেওয়া হয়।
ডোম কম থাকার জন্য কখনো কখনো তিন চার দিন পরে থাকে লাশ,,,
আর বেওয়ারিশ হলে তো কথাই নেই,,৭-৮ দিন রেখে যদি পরিবারের কাউকে ন্ পাই তাহলে নিজেরাই দাফন কাফনের ব্যবস্থা করি।
যাইহোক এসব তো আপনাদের জানাই আছে,,
কিন্তু গত পরশু রাতে মর্গে মোট ৭ টা লাশ ছিল,, তার মধ্যে একটা লাশ ছিল মেয়ের লাশ।
মেয়েটার বয়স ১৬-১৭ হবে।
পারিবারিক জের ধরে খুন হয়েছে মেয়েটা।
পরের দিন সকালে পোস্টমর্টেম করে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে এমনটাই কথা ছিল।
কিন্তু সকালে এসে ডোম আর সেই লাশটা খুজে পায় না,,,এমনকি সেখানে থাকা কোন গার্ডও নাকি লাশ চুরি করার ঘটনা দেখে নি,,সবচেয়ে অবাক করা বিষয় যেভাবে তালা ছিল সেইভাবেই তালা লাগানো,,কিন্তু রুম থেকে লাশ উদাও,,
প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তোবা গার্ডরা মিলে বিক্রি করে দিয়েছে লাশটা।কারন এমন কাহিনি অনেক জায়গায় হয়।
গার্ড বা ডোমরা অপমৃত্যুর লাশ বিক্রি করে দেয় আর তা কিনে নেয় তান্ত্রিক টাইপ লোকেরা যারা লাশ গুলো দিয়ে তাদের কুফরি কাজে লাগায়।
যদিও আমাদের হাসপাতালে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি তবুও তেমনটা ভেবেছিলাম আমরা আর গার্ডকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আটক করে রেখেছি,,পুলিশ কেস করি নি হাসপাতালের রেপুটেশন নষ্ট হবে বলে।
নতুন গার্ড নিয়োগ দেই গত রাতের পাহাড়ারা জন্য আর এক্সট্রা একটা তালা লাগিয়ে তার চাবি আমরা কতৃপক্ষের কাছে রেখে দেই,,,দুইটন তালার একটা কতৃপক্ষের কাছে আরেকটা গার্ডদের কাছে যাতে গার্ড ছাড়া কতৃপক্ষের সম্ভব না মর্গে প্রবেশ করা,,আর গার্ডদের সম্ভব না কতৃপক্ষ ছাড়া মর্গে প্রবেশ করা।
কিন্তু গত রাতেও সেম ভাবে একটা লাশ উদাও হয়ে গেছে।
আর তালাটাও সেম ভাবেই লাগানো।
এটা কোন ভাবেই সম্ভব না,,, ভয়ে পুরো হাসপাতালের কতৃপক্ষ সহ গার্ডরা ভয়ে আতংকে জড়সড় হয়ে গেছে।
এবার আর গার্ডদের দোষ দিয়ে লাভ নেই তাই বাধ্য হয়েই আপনাদের জানাতে হল।
প্লিজ আপনারা কিছু একটা করুন,,লাশ গুলা উদ্ধার করার চেষ্টা করুন,,না হয় কারোর চাকরি থাকবে না।
কেউ তো বিশ্বাস করবে না যে লাশ উদাও হয়ে গেছে।

মাথাটাই নষ্ট করে দিল,,,এত ঘটনা ঘটছে পুরো এলাকায়।
এত নিউজ হচ্ছে,, এত আন্দোলন,, তবুও এরকম একটা অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটার পরেও বিষয়টা নাকি স্কিপ করে রেখেছে,,কেমনডা লাগে.??
রাগের মাথায় অনেক কথা শুনাইলাম তাদের।
সবাই চুপচাপ শুনছে,,কিন্তু কিচ্ছু বলছে না।
এক পর্যায়ে রাগারাগি করার পর শান্ত হওয়ার চেষ্টা করলাম।
মূলত সুমিত সাগর আমাকে চুপচাপ বিষয়টা সামলাতে বললো,,
সুমিতঃ- দেখো ভাইয়া যা হবার তা তো হয়েই গেছে,, এখন রাগারাগি করে সময় নষ্ট না করে এর প্রতিকার করার চেষ্টা করো।

বিষয়টা ভেবে দেখলাম কথায় যথেষ্ট যুক্তি আছে তাই তাদের উদ্দেশ্যে বললাম,,

আমিঃ- আপনাদের হাসপাতালেই কিন্তু প্রথম একটা ঘটনা ঘটছিল যা পুরাই অস্বাভাবিক,, সেই ঘটনার পরেও আপনাদের স্কিপ করে যাওয়াটা ঠিক হয় নি।
প্রথম দিনই বিষয়টা আমাকে জানানো উচিত ছিল।
কিন্তু যাইহোক আপাতত আপনারা লাশের পরিবারকে সামলানোর চেষ্টা করুন,,আমি খোজা খুজি করি কোন তথ্য সংগ্রহ করতে পারি নাকি।

খোঁজা খুঁজি শুরু করলাম কোন কিছু পাওয়া যায় নাকি লাশের,,খুজতে খুজতে হাসপাতালের স্টোর রুমের মতন একটা রুমে পেলাম যেটা মর্গের সাথে এটাস্ট ছিল,,
রুমের দরজা খুলে দেওয়ার সাথে সাথেই বিকট দূর গন্ধ ভেসে নাকে বারি দিচ্ছে।
রুমাল বের করে নাক মুখ বন্ধ করলাম।
গন্ধটা এতটাই বিকট যে বমি চলে আসছে,,
গন্ধটা লাশ পঁচার গন্ধ,,
কারোরই বুঝতে বাকি রইলো না যা হবার তা সব এই রুমের ভিতরেই হয়েছে।
আস্তে আস্তে ফোনের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়ে আশেপাশে দেখতেছি,,হঠাৎ একজায়গায় চোখ আটকে গেল,,
কাফনের কাপড় পরে আছে আর কাপড়ে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ,,
গন্ধ এতটা তিব্র যে রুমাল দিয়ে মানছে না,,নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।
কিন্তু কিচ্ছু করার নেই,,ইনবেস্টিকেশন চালিয়ে যেতেই হবে।
হাতে একটা লাঠি জাতীয় কিছু তুলে নিয়ে কাফনের কাপড় সড়াতেই দেখতে পেলাম কিছু হাড়গোড় ভেঙ্গে পড়ে আছে।
বেশির ভাগই খসে গিয়েছে মিশে গেছে ফ্লোরের সাথে আর মাংস গুলো শরীর থেকে খসে পড়ে ফ্লোর ভিজিয়ে দিয়েছে।
কি মর্মান্তিক ভয়ংকর সেই দৃশ্য ??
রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম,, কতৃপক্ষকে নির্দেশ দিলাম কোন লাশ বা কোন যুবতি মেয়ে রোগী যেন একা না থাকে,,সব সময় কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে,,প্রয়োজন হলে গার্ড বারাতে হবে।

তারাও ভয় পেয়ে রাজি হয়ে গেল।
থানায় চলে আসলাম।
এসে গোসল করে খেয়ে একটু রেস্ট নিলাম তিনজনই।
মিজান আর ড্রাইভার বাসায় চলে গেছে।
শুয়ে শুয়ো চিন্তা করছি পিশাচটা কতটা নিকৃষ্ট।
কতটা নিকৃষ্ট হলে লাশের সাথে শারিরীক সম্পর্ক করতে পারে.??
ছিহহহহ একে দমন করতেই হবে।
সুমিত সাগর কে জানালাম সেদিন স্বপ্নে দেখছি পাহাড়ের চূড়ায় পিশাচটার আস্থানা,,
আমার মনে হচ্ছে ঐখানে গেলে কিছু একটা ক্লু পেলে পেতেও পারি।
ওরা প্রথমে রাজি হচ্ছে না,, এতবড় রিস্ক নেওয়া ঠিক হবে না।
কিন্তু আমি আমার চিন্তা ভাবনায় অটল,,ওরা না গেলেও আমি যাচ্ছি তা পরিষ্কার জানিয়ে দিলাম।
এমন কথা শুনে ওরাও বাধ্য হয়েই রাজি হল।

দুপুরের পর ঘুম থেকে উঠে দুপুরের খাবার খেয়ে থানার কিছু কাজ করে আবার রাতে বেরিয়ে গেলাম।
রাতের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে ১২ টার পর বের হলাম।
আজকে মিজান আর ড্রাইভারকে সঙ্গে নিলাম না।
তিনজনেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম সেই স্বপ্নে দেখা পাহাড়ের উদ্দেশ্যে,,,
যাওয়ার আগে স্নেহার বাবা মানে আমার শশুর মশাই এর কাছের এক জ্বীনকে যে কিনা জাদুবিদ্যায় পারদর্শী,, তাকে সরন করলাম।
তাকে বিস্তারিত সব জানালাম,,
সে নিজেও আমাকে ঐ জায়গায় যেতে বারন করছে,,ঐ জ্বীনটা খুব ভাল করেই জানে পিশাচটা কতটা নিকৃষ্ট আর ভয়ংকর।
সে কোন ভাবেই আমাদের তার আস্তানায় যেতে দিবে না।
কিন্তু আমি আমার উদ্দেশ্যে অটল,,
অনেক বুঝানোর পরেও যখন আমাকে আটকাতে পারলো না তখন কিছু ট্রিকস দিয়ে দিলো যাতে করে শয়তানটার জাদু থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি,,শরীর বন্ধ রাখতে পারি যাতে সে কোন ক্ষতি না করতে পারে।

সব জেনে নিয়ে বের হলাম।
রাত তখন প্রায় ১.২৫,,,

আজকে কি আমাবস্যা নাকি.??
সুমিত জিগ্যেস করলো।

আমিঃ- তা তো জানি না তবে এই এলাকায় এমনিতেই অনেক অন্ধকার থাকে।
তবে আজকের মতন অন্ধকার আগে কখনো দেখি নি,,হতে পারে আমাবস্যা রাত তাই এমন অন্ধকার।

আমাবস্যা শব্দটা শুনতেই সবার বুকে চিনচিন করে ব্যাথা অনুভব হচ্ছে ভয়ে।
যে কাজে যাচ্ছি সেইটা এমনিতেই জীবনের সবচেযে ভয়ংকর কাজ।
চারপাশে নিকোশ কালো অন্ধকার,, থমথমে পরিবেশ,, নেই কোন মানুষের আনাগোনা।
পরিবেশটাও কেমন জানি কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলছে,,ওরে তোরা যাস না,,যাস না ঐ মৃত্যু কুপে।
ফিরে আসতে পারবি না কিন্তু।
বাতাস কিছু বলার চেষ্টা করছে,,গাছগাছালিও আমাদের বাধার সৃষ্টি করছে।
গাড়ির হেডলাইটের আলোয় সামনের ১০ হাত দূরের কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না।
কুয়াশা আজ একটু বেশিই পরেছে।
একটু গাড়ি এগিয়ে যেতেই হুট করেই ধাম করে শব্দ,, বিকট সেই আওয়াজ, বুকটা ধুকপুক করে উঠে,, গাড়ি থামিয়ে নেমে দেখি গাড়ির চাকা ফেটে গেছে
গাড়ি তো প্রতিদিন চেক করেই বের হই,,তাহলে হঠাৎ চাকা ব্লাস্ট হওয়ার কারনটা কি.?
তাছাড়া কিছু দিন আগেই চাকা প্লাটাইছি,,,
জানি না কি হচ্ছে এসব,,
সুমিত সাগর দুইজনেই ভয়ে কাচুমাচু হয়ে গেছে।

একস্ট্রা একটা চাকা ছিল তা লাগিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলাম,,
কিছু দূরে যেতেই আশেপাশে থেকে কেমন জানি অজানা অনেক শব্দ ভেসে আসছে,,
কুকুর আর শেয়ালের হাঁক ভেসে আসছে সেই শব্দ গুলার পাশাপাশি যা সব মিলিয়ে হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে।

হঠাৎ করেই কালো একটা ছায়া গাড়ির সামন দিয়ে রাস্তার এপাশ থেকে ওপাশে চলে গেল,, হার্ড ব্রেক করতে বাধ্য হলাম,,,পিছনে থাকা সুমিত সাগর দুইজনে হার্ড ব্রেকের কারনে সামনে ছিটকে পড়ে সামনের ছিটের সাথে আগাত পায়।
কারন জিগ্যেস করছিল কেন এভাবে হার্ড ব্রেক করছি,,হয়তো ওরা দেখে নি বিষয়টা তাই মিথ্যা বলে কাটিয়ে নেই যে সামনে গর্ত ছিল তাই এমন ভাবে ব্রেক করছি,,

আবার স্টার্ট দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
একটু পর পর ই কুকুর বিড়াল গাড়ির সামনে এসে পড়ে কোথায় থেকে জেনো।
আমার জানা মতে এই রাস্তায় অন্তত কোন কুকুর বিড়াল নেই,,,সুমিত সাগর এবার সজাগ দৃষ্টি রাখছে,,ওদের কথা মতন কুকুর বিড়ালকে সাইট নন দিয়ে ওদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিচ্ছি,, আশ্চর্য বিষয়,, চাকায় কোন কিছু পরার শব্দ বা উচু টের পাচ্ছি না।
মানে সবটাই শুধু চোখের বেলকি,,এটা আমাদের দেখানো হচ্ছে,, ভয় পাওয়ানোর ।
না ভয় পেলে চলবে না,,
এগিয়ে যেতে হবে গন্তব্যে,,
আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছি,, এরকম ভবে শত শত কুকুর বিড়ালের উপর দিয়ে চাকা উঠিয়ে দিচ্ছি,,হঠাৎ করেই গাড়ির ছাদে ধুপধাপ শব্দ হচ্ছে,, মনে হচ্ছে কেউ উপর থেকে লাফ দিয়ে ছাদের উপর পরছে আর তার পায়ের নুপুরের শব্দ শুনতে পাচ্ছি।
লাফালাফি করছে অনেকেই মিলে।
ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে,, মনে পরে গেল জ্বীনটার বলা কথা গুলো।
সুমিতঃ- ভাইয়া তাড়াতাড়ি নিজেদের শরীর বন্ধ করে নাও,,,
গাড়িতে জমজমের পানি ছিটিয়ে দাও।

সুমিতের কথা মত নিজেরা জ্বীনটার বলা নিয়ম মাফিক শরীর বন্ধ করে নিলাম।
সাগর সুমিত দু’জনে গাড়িতে জমজমের পানি ছিটিয়ে দিল।
আস্তে আস্তে ছাদের উপরে নুপুরের শব্দ গুলা হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো।
গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছি,, হঠাৎ চোখ পরে লুকিং গ্লাসে,,চোখ পড়তেই ছানাবড়া হয়ে গেছে।
দেখি বিশাল আকৃতির একটা প্রাণি বলবো নাকি মানুষ বলবো জানি না,,যার মাথা নেই তবে শরীরটা প্রাণি আর মানুষের মতন,,কাটা গলা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে,, বুকের ভেতর একটা বড় চোখ যা গাড়ির হেডলাইটের চেয়েও বেশি আলো দিচ্ছে,,আর পুরো শরীরে ছোট ছোট চোখ,, প্রানিটা গাড়ির গতির সাথে তাল মিলিয়ে শূন্যে ভেসে ভেসে আসছে,আর বিকট শব্দ করতেছে যা শুনে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না।
গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে রাখতে পারছি না।

সুমিতঃ- ভাইয়া তুমি সাহস হারিও না,,,কিচ্ছু করতে পারবে না পিশাচটা,,আমাদের সকলে শরীর বন্ধ করা আছে,,সাথে গাড়িও,,তুমি নির্দিধায় গাড়ি চালিয়ে যাও,,,লুকিং গ্লাসে চোখ দিও না।
দরকার হলে গ্লাস ভেঙে ফেলো।
ঐটা জাস্ট ভয় দেখাতে চাচ্ছে,,

কথা গুলো বলতে বলতে বারবার ঢুক গিলছে সুমিত,,জানি সুমিত আমার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভয় পাচ্ছে,,,কিন্তু আমার হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং,, যদি এদিক সেদিক হয় তাহলে একদম পাহাড়ের খাদে পড়ে যাবো।
জানালার গ্লাসটা নামিয়ে একটা লাঠি হাতে নিয়ে লুকিং গ্লাসটা ভেঙে ফেললাম যাতে ভয়টা একটু হলেও কমে,,
কেউ পিছনের দিকে তাকালাম না,,পিছনে যা হবার হোক,,সমস্যা নেই,,কিন্তু আমাদের গন্তব্যে পৌঁছাতেই হবে।
স্বপ্নে দেখা জায়গা অনুযায়ী যথাযথ স্থানে গাড়ি ব্রেক করলাম।
পাহাড়ে উঠতে হবে এখন,,,মোবাইলের ফ্লাস অন করলাম,,টর্চ লাইট জ্বালিয়ে নিলাম,,আর একটা মর্শাল সাগরের হাতে ধরিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে উঠছি উপরের দিকে,,
চারপাশ থেকে ভেসে আসচে ভয়ংকর সব শব্দ।
কুকুর বিড়াল এই কামড় দিলো দিলো অবস্থা,, কখনো বা বিশাল আকৃতির সাপ,কখনো বা বাঘ,,কখনো হাতি সামনে চলে আসছে,,যদিও এই পাহাড়ে বাঘ হাতি তো দূরের কথা গরু ছাগলও থাকে না।
আস্তে আস্তে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে গেলাম।
স্বপ্নে দেখা স্থানে আগের মতনই আলো জ্বালানো,,
আর ধুপ সহ আগর বাতি মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা।
মনে হচ্ছে পূজা করার জন্য সব রেডি করে রেখেছে।
হুট করেই একটা মানুষের মতন তান্ত্রিক টাইপের কেউ হুরমুর করে বেরিয়ে আসলো।
বিকট বিদঘুটে তার চেহারা,,বয়স কম করে হলেও ১০০ ছাড়িয়ে যাবে,, কুঁজো হয়ে গেছে,, দাড়ি চুল প্রায় পা সমান,,কোন দিন গোসল করে বলে মনে হচ্ছে না।
হাতে মাথার খুলি,,কি আজব তার চালচলন কাজকর্ম,, আমাদেরকে দেখেই জোরে জোরে মন্ত্র পড়তে শুরু করলো,, কোন ভাষায় পাঠ করছে তা আমি জানি না।উনার সাথে তো কোন শত্রুতাও নেই,,তাহলে উনি আমাদের শত্রু ভাবছেন কেনো.?
উনার চোখে মুখে আমাদের মেরে ফেলার ক্রোধ।
মন্ত্র উচ্চারণের সাথে সাথেই আশেপাশে কালো ধোঁয়া ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশটা,,
ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা আকৃতির বামন মানুষ কোথায় থেকে যেনো ছুটে আসছে আমাদের দিকে,,সবার হাতে দাঁরালো ছুরি,, এক আগাতে শরির থেকে মাথা আলাদা করে দিবে এমন একটা ভাব তাদের মধ্যে।
আর কালো ধোঁয়া গুলো আস্তে আস্তে একত্রিত হয়ে আমাদের চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে,,একটা সময় ধোঁয়াল কুন্ডলী পাকিয়ে বিরাট একটা সাপে পরিনত হল,,
আমি পরিস্থিতি বেগতিক দেখে জ্বীনটার কথা অনুযায়ী মাটি হাতে নিয়ে মন্ত্র পড়ে তা বৃত্তাকারে ছিটিয়ে দিলাম আর তার মাঝে দাড়িয়ে আছি তিনজনে।
তান্ত্রিক আমাদের এমন বন্ধ করা দেখে ক্রোধে গর্জন করছে,,উল্টো কি যেনো মন্ত্র উচ্চারণ করতে শুরু করলো,,
চারপাশটা ছায়া মুর্তি দিয়ে ছেয়ে যাচ্ছে,, কি বিশ্রী তাদের হাসি,,এতটা ভয়ংকর একেকটার চেহারা যা ভাষায় প্রকাশ করার মতন না।
প্রতিটা ছায়া মুর্তির হাতেই একটা করে বাচ্চা শিশুর লাশ,,ডাইনি গুলা সেই বাচ্চাদের পেটের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে তা চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে,, রক্ত মুখ দিয়ে ভেয়ে পরছে,,,নিজেদের আর ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।সাগর সেখানে সেন্সলেস হয়ে মাটিতে পরে যায়,, এদিকে আমাদেরো অবস্থা খারাপ,,কিন্তু বৃত্তের ভেতরে কোন অশরীরী বা জাদু শক্তি কাজ করছে না,,আপাতত আমরা সেভ এখানে,,কিন্তু এটু পরেই তান্ত্রিকটা একটা মেয়েকে কোথায় থেকে যেন বের করলো,,,হাতে থাকা রাম দা দিয়ে মেয়েটার গলা কাটতে যাচ্ছে এক কুপে,,আমি আর তা সহ্য করতে পারলাম না,,দৌড়ে বেরিয়ে গেলাম মেয়েটাকে বাঁচাতে আর সাথে সাথে তান্ত্রিকটা মেয়েটাক ছেড়ে আমাকে আটকিয়ে ফেলে,,
সব অশরীরীরা আমাকে ঘিরে ধরেছে,, সুমিত আমার অনিবার্য মৃত্যু দেখে চিৎকারে পুরো এলাকা কাপিয়ে তুলছে,,আমি জানি আমি আর এখান থেকে বেঁচে ফিরবো না,,অশরীরী গুলো আমাকে এখানেই তাজা গিলে খাবে,,যদি তাও না পারে তান্ত্রিকটা তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে আমার শরীর থেকে মাথাটা আলাদা করে ফেলবে,,
তাই সুমিতকে শুধু এতটুকুই বললাম,
আমিঃ- সুমিত আমার এখানে যা হবার হবে কিন্তু তুমি ঐ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসবে না,,সাগরকেও আসতে দিবে না।
এ লড়াই তোমাদের চালিয়ে যেতে হবে,,আমি মরলেও সমস্যা নেই,, তোমরা আছো তো।

সুমিত শুধু হা করে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে।
অশরীরী গুলো আমাকে আকড়ে ধরে,,অশরীরী হাত দিয়ে আমাকে লেপটে ধরে,,কোন ভাবেই ছোটাতে পারছি না,,একজন এসে আসার ঘাড়ের দিকে মুখ দিয়ে কামড় বসিয়ে দেয় রক্ত চুষে খাওয়ার জন্য,, তান্ত্রিক সেই অশরীরীটাকে সড়িয়ে নিজের হাতে থাকা রাম দা এর গোড়ালি দিয়ে মাথায় আগাত করে রক্তে চোখ মুখ ডেকে যায় আমার আর আমি আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পরি,,মাটিতে লুটিয়ে পরি,,,,,ওরা আমাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারবে,,আগুনের কাছে নিয়ে যায়,, জলন্ত আগুন দে নিক্ষেপ করে,,,
সবাই মিলে অট্র হাসিতে ফেটে যাচ্ছে,, হো হো করে হাসছে সবাই মিলে,, তাদের হাসির সামনে সুমিতের কান্না স্থান পাচ্ছে না,,মিলিয়ে যাচ্ছে অতলগর্তে,,,
এমন সময়..??
।।
।।।।
।।।।।।।
।।।।।।।।।।
।।।।।।।।।।।।।
।।।।।।।।।।।।।।।।।
গল্পের পরের পর্ব আগামীকাল দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
মতামত জানিয়ে পাশে থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here