ভালোবাসায়_বন্দিনী #পর্ব_১৫

0
2480

#ভালোবাসায়_বন্দিনী
#পর্ব_১৫
#জান্নাতুল_নাঈমা

— হ্যাঁ আপনি একটা হৃদয়হীন। মনে দয়া,মায়া,ভালোবাসা কিচ্ছু নেই। থাকলে কি এভাবে বিয়ে করতেন? ভালোবেসে আদর মেখে বিয়ে করতেন। আমার মতো এত্তো কিউট মেয়েকে যে এভাবে হুমকি, ধমকি দিয়ে বিয়ে করে তাঁর মতো পাষাণ দুনিয়াতে আর দুটি নেই। আর আপনি শুধু পাষাণই না কিপ্টার মহা রাজা। বলেই চোখ কটমট করে নাক ফুঁসতে লাগলো হৈমী।

দাদু মিটিমিটি হাসছে সে বেশ বুঝতে পারছে হৈমী কেনো এসব বলছে। রুদ্র হৈমীর দিকে বিরক্তি মুখে চেয়ে বললো,

— মুখটা কিছুক্ষণ বন্ধ রাখো।

সাদমান, আবির কাজিকে নিয়ে বেরিয়ে গেছে৷ রুদ্রর কথা অনুযায়ী তাঁকে বেশ টাকা দিয়ে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসতে গেছে।

— মুখ বন্ধ রাখবো মানে কি ভেবেছেন কি বিয়ে করেছেন বলে মাথা কিনে নিয়েছেন৷ কিপ্টা, নিরামিষ ব্যাটা আপনি।

দাদু বললো,

— এসব কি কথাবার্তা হৈমী?যাও রুমে গিয়ে দুজন নামাজ পড়ে নাও। একসাথে খাবো সবাই মিলে জমিলা কে রান্না বসাতে বলেছিলাম৷ আমার সামর্থ অনুযায়ী যা করার করেছি বাচ্চা রা মিলে জমিলাকে সাহায্য করেছে ৩০জনের খাবার হয়ে গেছে।

রুদ্র চুপচাপ বসে আছে যেনো সে গভীর কোন ভাবনায় মগ্ন৷ দাদুর কথা শুনে হৈমী একদমে বেশ রাগ নিয়ে বলতে লাগলো,

— কেনো তোমার টাকা খরচ করেছো কেনো? এই লোকটার কি হুশ আক্কাল নাই। কিপ্টামিই যখন করবে বিয়ে করতে বলেছে কে? বিয়ে করলে বউকে লাল টুকটুকে ল্যাহেঙ্গা কিনে দিতে হয় গা ভর্তি গয়না দিতে হয় তা কি এই ব্যাটা জানে না।

রুদ্র গম্ভীর মুখে শীতল দৃষ্টিতে তাকালো হৈমীর দিকে। হৈমী মুখ ভেঙচি কেটে বললো,

— এভাবে তাকাচ্ছেন কেনো? আমাকে দেখে ক্রাশ খেয়েছেন ভালো কথা। আমাকে প্রপোজ করেছেন?একটা মেয়ে কে পছন্দ হলে তাঁর সাথে কিভাবে মিশতে হয় সেটা শিখেছেন না জেনেছেন কোনটা?বাংলা সিনেমা দেখেন তো নাকি? আপনার ফোন টা দিন আমি কয়েকটা মুভি শেয়ার করে দিচ্ছি কিভাবে ক্রাশ খেলে মেয়ে পটাতে হয় শিখে নিবেন। আর হ্যাঁ বিয়ে যে করলেন আমার ষোল টা বান্ধবী কে ট্রিট দিয়েছেন?আমাকে সাজগোজের জিনিস কিনে দিয়েছেন? সুখনীড়ের সকল বাচ্চা দের দুলাভাই আর এই হৈমীর বর হওয়া কি অতোই সহজ। তারাতাড়ি ট্রিট দিন আমাকে কিন্তু আবার বাদ দিবেন না এতো সুন্দরী বউ পেলেন আর ট্রিট দিবেন না সেটি হচ্ছে না। বলেই চোখ পিটপিট করতে লাগলো হৈমী। এক ঢোক চিপে আরো বলা শুরু করলো।

দাদু হৈমীকে চুপ করাতেই পারছেনা৷ রুদ্র পায়ের ওপর পা তুলে আয়েশ করে বসে আছে। ডানহাতের শাহাদৎ আঙুল গালে রাখা, বুড়ো আঙুল দিয়ে নিজের নিচের ঠোঁট স্লাইড করছে আর এক ধ্যানে চেয়ে শুনছে তাঁর সদ্য বিয়ে করা কিশোরী বউ এর বকবকানি। ইতিহাসে বোধ হয় এই প্রথম কোন বউ নিজের বিয়ে উপলক্ষে নিজের বরের কাছে ট্রিট চাইছে।

হৈমী কথার ছলে রুদ্রর হাত, ঠোঁটের দিকে খেয়াল হতেই হঠাৎ করে চুপ মেরে গেলো। ডার্ক রেড ঠোঁট জোরাতে বুড়ো আঙুলে স্লাইড করছে রুদ্র। কুচকুচে কালো দাঁড়ির মাঝে ঠোঁট জোরায় চোখ আঁটকে গেলো তাঁর। লোকটার ঠোঁট জোরায় কি যেনো আছে কি কি ভাবতেই মনে পড়লো নিশ্চিত সিগারেট খায় হুমহ মাতাল কোথাকার! এক ঢোক গিলে নিয়ে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে বললো,

— দাদু আমি গেলাম আমার খুব খিদে পেয়েছে।
— নামাজটা পড়ে নিও তারাতাড়ি রুদ্র তুমিও যাও৷ বললো দাদু।

রুদ্র দাদুর দিকে চেয়ে বললো,

— কালকে বাচ্চা দের খাওয়াবো আমার বন্ধু রা আজ রাতে এ বাড়ির ছাদে থাকবে। বাবুর্চিরা সকালেই এসে যাবে। বলেই ওঠে গেলো রুদ্র।
.
বিয়ের খবড় শুনতেই মাহের থমকে গেলো। মাথা তার খারাপ হয়ে গেলো যেনো। মাহেরের মা সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছে ছেলেকে। নয়ন বললো,

— হৈমী রাজি না থাকলে তো আর কবুল বলতো না ভাইয়া৷ আমার মনে হয় হৈমীর আপত্তি ছিলো না।
— হৈমী ছোট কি বোঝে ও রুদ্র শেখ নিজের পাওয়ার খাটিয়ে হৈমীকে নিজের করে নিতে পারে না।

মনিকা বেগম বললেন,
— বিয়ে তো হয়ে গেছে বাবা আমাদের আর কিছু করার নেই।
— অনেক কিছু করার আছে মা এখুনি যাবো আমি।
কথার মাঝেই ফোন বেজে ওঠলো নয়নের। নয় ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে আতঙ্কিত গলায় বলে ওঠলো হৈমী ফোন দিয়েছে। সাথে সাথে মাহের ফোনটা ছিনিয়ে নিয়ে রিসিভ করে ব্যাস্ত গলায় বললো,

— হৈমী তুমি চিন্তা করো না আমরা আসছি এখনি পুলিশ নিয়ে ঐ রুদ্র কে শায়েস্তা করবো। কোন ভয় নেই এটা কোন বিয়েই নয়।
— কি বলছো মাহের ভাইয়া পুলিশ নিয়ে আসবে কেনো? ভয়াতুর কন্ঠে বললো হৈমী।
— কেনো মানে রুদ্র তোমাকে জোর করে বিয়ে করার সাহস কোথা থেকে পায়? আমি ওকে ছাড়বো না পুলিশের হাতে তুলে দিবো ওকে আমি। কি ভেবেছে কি তুমি অসহায়? আমি আছি তোমার পাশে।

যদিও বিয়েতে মত ছিলো না হৈমীর তবুও বিয়ে হওয়াতেও তাঁর অসুবিধা হয় নি। কিন্তু কেনো? এই উত্তর জানে না হৈমী৷ মাহের পুলিশের কথা বলাতে তাঁর মনে হলো আটকানো দরকার তাই বললো,

— মাহের ভাইয়া পুলিশ নিয়ে এসো না।
— কেনো হৈমী? তুমি তো এ বিয়েতে রাজি ছিলে না।
— কিন্তু ওনার নামে তিন কবুল আমি বলে ফেলেছি। আমি চাইনা পুলিশ টুলিশ ঝামেলা হোক। তাছাড়া ওনি রাগি গম্ভীর, বদমেজাজি হলেও আমার এই সুখের পরিবারের জন্য অনেক কিছু করছেন ভবিষ্যতেও করবে সেই কৃতজ্ঞতা থেকে হলেও আমি ওনার সাথে এটা করতে পারিনা। ভাগ্য কে আমি মেনে নিতে জানি। আমার জীবনের করুন পরিণতি যখন তেরো বছর বয়স থেকে মোকাবিলা করতে পেরেছি তখন এই রাগি, বদমেজাজি, লোকটার সাথেও মোকাবিলা ঠিক করতে পারবো। ওনাকে জ্বালানোর জন্য আমার মতো এক হৈমীই যথেষ্ট।

— কিন্তু হৈমী,,,
— কোন কিন্তু না ভাইয়া জাষ্ট চিল!নয়ন কোথায় ওকে কাল সকালেই পাঠিয়ে দিবে প্লিজ প্লিজ প্লিজ ওর সাথে আমার অনেক কথা আছে।

থমকে গেলো মাহের। হৈমী এতো সহজে সবটা কি করে মেনে নিতে পারে। রুদ্র ওকে হুমকি দিয়ে সবটা বলায় নি তো? এখনি যাওয়া দরকার ভেবেই নয়নের কাছে ফোন দিলো মাহের। বাসা থেকে তৎক্ষনাৎ বেড়িয়ে গেলো সে। মনিকা বেগম আর নয়ন একে অপরের দিকে চাওয়া চাওয়ি করে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো সোফায়। নয়নের এ মূহুর্তে হৈমীর সাথে কথা বলার মুড নেই তাই ফোন কেটে দিলো।
.
রুদ্র রুমে এসে দেখলো হৈমী বিরবির করে কি যেনো বলছে আর রুম জুরে পাইচারী করছে। হাতে থাকা ছোট্ট শপিং ব্যাগ টা নিয়ে হৈমীর কাঠের পড়ার টেবিলটায় রাখলো। হৈমী রুদ্র কে দেখে চেঁচিয়ে বললো,

— একি আপনি এ ঘরে কেনো?

রুদ্র কথার উত্তর না দিয়ে দরজার সিটকেরী লাগিয়ে দিলো। ভয়ে হৈমীর বুকটা ধক করে ওঠলো।এক ঘরে সিটকেরী লাগানো অবস্থায় কোন ছেলের সাথে সে থাকবে ভাবতেই গা শিউরে ওঠলো৷ দু হাতে দুকান চেপে দিলো এক চিৎকার, — না,,,এ হতে পারে না৷

সাথে সাথে রুদ্র নিচু হয়ে এক হাত হৈমীর পিঠ আরেক হাত হৈমীর মুখ চেপে ধরলো। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
— স্টপ দিস ননসেন্স! আর একটু আওয়াজ করলে তোমার এমন হাল করবো যে সারাজীবন বোবা হয়ে কাটাতে হবে।

রুদ্রর হুমকি শুনে ভয়ে তাঁর শরীর শিউরে ওঠলো।শ্বাস নিতে থাকলো ক্রমাগত যেনো পিছনে বাঘ তাঁকে দৌড় করিয়েছিলো আর সে ছুটতে ছুটতে হাঁপিয়ে গেছে। হৈমীর এমন অবস্থা দেখে সরে গেলো রুদ্র।
উদ্দেশ্য বাথরুম গিয়ে ওযূ করার। হৈমী ছাড় পেয়ে রুমের বাইরে যাওয়ার জন্য পিছন ঘুরেই দ্রুত পা ফেলতে লাগলো৷ রুদ্র হৈমীর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে হেচকা টান দিয়ে একদম নিজের কাছে নিয়ে এলো। হৈমীর মাথা ঠেকলো তাঁর বুকে। হৈমী মিনমিন করে কাঁদতে শুরু করে দিলো।

— আমাকে ছেড়ে দিন আমি আর কথা বলবো না। ছেড়ে দিন আমায় আমি এলার কাছে যাবো, আমি পরীর কাছে যাবো। কালকে আপনাকে আচাড় খাওয়াবো তবুও ছেড়ে দিন আমায়।

— কথা বলবো না বলবো না করেও তো কম বলছো না।এতো কথা বলো কেনো?

— চামড়ার মুখ আমার কথা তো বলবোই আপনার মতো রোবট নাকি যে মুখে কুলু পেতে রাখবো? বলেই জিবে কামড় দিলো হৈমী।

কোমড়ে বেশ শক্ত করে চেপে ধরে শূন্যিতে তুলে মুখোমুখি মুখ করে নিলো রুদ্র। চোখের সামনে এমন ভয়ংকর মুখ দেখে হৈমী নিজের মুখটা কাচুমাচু করে ফেললো।দুহাতে রুদ্রর কাঠের মতো শক্ত হাত গুলো ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো।হৈমীর কয়েকটা চুল এসে রুদ্রর মুখের ওপর পড়তেই ফুঁ দিয়ে সরিয়ে ফেললো।হৈমীর মুখে হাওয়া লাগতেই কেমন কেঁপে ওঠলো তাঁর শরীর রুদ্রর এমন নেশাভরা চাহনী দেখে এমন শক্ত কাঠের ন্যায় তাঁকে জরিয়ে রাখা অনুভব করে মিনমিনে গলায় বললো,

— বিয়ে করেছেন বলে মাথা কিনে নিয়েছেন নাকি?এমন অসভ্যতামো করলে আমি কিন্তু কামড়ে দিবো।
— শুধু মাথা না পুরোটাই কিনে নিয়েছি। তুমি যদি বিড়াল হও আমি হলাম বাঘ তাই আমার থেকে বেশী পারবেনা কিছুই।
— ছিঃ আপনি এতো খারাপ কেনো?
— তোমার ধারনার থেকেও বেশী খারাপ আমি।

হৈমীর খুব ভয় লাগছে সে যতো ছুটতে চাইছে রুদ্র ততো শক্ত করে জরিয়ে নিচ্ছে। কোমড়ে ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে এতোটাই শক্তভাবে জরিয়ে রেখেছে। রুদ্র কিছু বলছে না শুধু কেমন এক চাহনীতে চেয়ে আছে। হৈমী কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,
— দাদু নামাজ পড়তে বলেছিলো আমি নামাজ পড়বো।

সাথে সাথে রুদ্র দম করে ছেড়ে দিলো হৈমী একদম মেঝেতে পড়লো ঠাশ করে।

— অ্যা,,,আপনি আমাকে ফেলে দিলেন? চিল্লিয়ে বললো হৈমী।

— ওযূ করে আসছি রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলে পা কেটে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখবো তাই ল্যাংড়া না হতে চাইলে চুপচাপ বসে থাকবে। বলেই সোজা বাথরুম ঢুকে গেলো রুদ্র। ওযূ করে বেরিয়ে আসতেই দেখলো হৈমী মেঝেতেই বসে আছে আর বিরবির করছে, মুখটা কাঁদো কাঁদো হয়ে আছে তাঁর।

— ওখানে বসে আছো কেনো?
— আপনিই তো বলেছেন বসে থাকতে হুমকি দিয়েছেন পা কাটবেন। আপনি পা কাটা খুনি বলেই রাগে ফুঁসতে লাগলো।

রুদ্র ব্যাকুব হয়ে চেয়ে রইলো। বসে থাকতে বলেছে মানে মেঝেতে বসে থাকতে হবে এমনটাও তো নয়। এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আঙুলের ফাঁকে চুল নিয়ে পিছন দিক নিতে নিতে জিগ্যেস করলো তয়ালে কোথায়?

হৈমী কোমড় ধরে ওঠে দাঁড়িয়ে রাগি চোখে চেয়ে রাগি গলায় বললো,
— আমার তয়ালে আমি আপনাকে দেবো কেনো? পুরুষ পুরুষ গন্ধ করবে দিবো না আমি।

— ওকে ফাইন বলেই রুদ্র ওঠে দাঁড়ালো হৈমী ভয়ে এক পা পিছিয়ে যেতে নিতেই রুদ্র তাঁর লম্বা হাত বাড়িয়ে হৈমীর ওড়না টেনে নিয়ে ওড়না দিয়েই হাত, মুখ মুছতে লাগলো।

রুদ্রর এমন কান্ডে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো হৈমী লজ্জায় পিছন ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়লো। চেঁচিয়ে ওঠে বলতে লাগলো,
— অসভ্য, খাটাশ,বদমাশ কোথাকার আমার ওড়না দিন বলছি৷ বেহায়া পুরুষ দিন বলছি ওড়না ও দাদু তোমার নাতনীর লজ্জার বাপ, মা সব ধ্বংস করে দিলো গো!আমার ওড়নায় পুরুষ পুরুষ গন্ধ মেশাচ্ছে গো!

রুদ্র ধীরে সুস্থে মুখ,মাথা হাত,পা,ওড়না দিয়ে মুছে ওড়না ছুঁড়ে দিলো হৈমীর দিকে। ওড়নাটা সোজা মাথায় পড়লো। হৈমী চমকে গিয়ে ওড়নাটা হাতে নিয়ে সাথে সাথে গায়ে চাপিয়ে ছুটে বাথরুম ঢুকে গেলো। রুদ্র বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে হৈমীর কান্ড দেখে বাঁকা হাসলো।
.
দুজন একসাথেই নামাজ শেষ করলো। রুদ্র আবারো বিছানায় গিয়ে বেশ আয়েশ করে বসে হৈমী কে বললো,

— টেবিলের ওপর শপিং ব্যাগ আছে এদিকে নিয়ে এসে পাশে বসো।

— ভাবসাব তো সুবিধার ঠেকছে না আমার সাথে এক ঘরে ঘুমাবে নাকি? হায় হায় না আমার ইজ্জতের সর্বনাশ করে ছাড়বে এই লোক। ব্যাগটা দিয়েই আমি এক সেকেন্ড এ রুমে দাঁড়াবো না। কি আছে কপালে দেখা যাবে সকালে রাতটা তো বাঁচি,,, ভেবেই ব্যাগটা তারাহুরোয় রুদ্রর হাতে দিয়ে বেশ প্রস্তুতি নিয়েই পিছন ঘুরলো।

এক পা দু পা এগিয়ে দ্রুত পা ফেলে সিটকেরী খুলতে নিতেই হাতের ওপর হাত রাখলো রুদ্র। ভয়ে ভয়ে এক ঢোক চিপে পিছন ঘুরতেই গায়ে থেকে একটানে ওড়না টা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলো রুদ্র। আচমকা এমন কান্ডে হৈমী একদম স্তব্ধ হয়ে গেলো। লজ্জায় পিছন ঘুরে ফেললো আবারো হাত,পায়ে কম্পন ধরে গেলো কেমন। গলা শুকিয়ে গেলো এ মূহুর্তে রুদ্র কে পৃথিবীর সব থেকে জঘন্য লোকদের মাঝে একজন মনে হচ্ছে। সেদিনের স্বপ্নের কথা মনে পড়তেই চোখ দুটো টলমল হয়ে গেলো। অসহায় দৃষ্টিতে দরজার সিটকেরীর দিকে তাকালো। পা দুটো যেনো অবশ হয়ে যাচ্ছে নড়ার শক্তি যেনো পাচ্ছে না। কি হবে এখন রুদ্র তাঁর সাথে কি করবে? স্বামীর অধিকার ফলাতে আসবে না তো ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে রইলো।
এমন ভাবে আবদ্ধ রয়েছে যে পালানোরও উপায় নেই।
মুখ থেকে অল্প আওয়াজে কিছু বলতে নিবে অমনি মুখে ওড়না পেঁচিয়ে পিছন দিক বেঁধে ফেললো রুদ্র। হৈমী উম উমহ শব্দ করে নড়তে নিতেই রুদ্র তাঁর হাত জোরা নিজের হাতের বাঁধনে বেঁধে ধীরে ধীরে বিছানার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগলো।

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here