ভালোবাসায়_বন্দিনী #পর্ব_৩৭

0
2550

#ভালোবাসায়_বন্দিনী
#পর্ব_৩৭
#জান্নাতুল_নাঈমা

কি থেকে কি হয়ে গেলো। সকলের চোখেমুখে ভয়ের সাথে বিস্ময়। মাহের যখন হৈমীকে কোলে করে নিয়ে নয়নার রুমে বসায় রুদ্র তখন নিচে পানি খাচ্ছিলো। নিচ থেকে সে দৃশ্য দেখে এক হাত মুঠ করে নেয় সে।

গ্লাসটা নয়নার দিকে দিয়ে সে উপরে ওঠে যায়। নয়নার তখন হাত,পা কাঁপাকাপি অবস্থা। গ্লাসটা রেখে ভয়ে ভয়ে সেও যায়। মাহেরের কোনদিকে হুশ নেই৷ সে তাঁর মতো এক মনে হৈমীর কপালের রক্ত পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে। হৈমী ব্যাথায় কুকড়াচ্ছে কেমন৷ নয়ন হৈমীকে চেপে ধরে বসে আছে। সূচনাও হৈমীকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।

রুদ্র আর নয়না রুমে আসতেই ও অবস্থা দেখলো। মাহের অতি যত্নে মুখ দিয়ে কপালের দিক ফুঁ দিচ্ছে। নয়না রুমে গিয়ে আতঙ্কিত গলায় বললো,

— এসব কি করে হলো হৈমী।

— এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে তুই তারাতাড়ি ব্যাথা কমার ওষুধ দে প্লিজ৷ হৈমী কেঁদো না প্লিজ সেড়ে যাবে। কেনো এমন করলে বলোতো একটু দেখে চলবে তো।

সূচনা ভয়ে ভয়ে রুদ্রর দিকে তাকালো। রুদ্র নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা৷ বড় বড় পা ফেলে কাছে গিয়ে কঠিন স্বরে বললো,
— এসব কি করে হলো?

মাহের চমকে হৈমীর হাত ছেড়ে দিলো। বসা থেকে ওঠেও পড়ে ৷ কিন্তু সুরভী বেগম আর রুদ্রর দাদির চোখ এড়ালো না দৃশ্য টা। দরজার সামনে আসতেই তাঁরা দেখে ফেললো৷ সুরভী বেগম ভয়ে ভয়ে তাঁর শাশুড়ীমার দিকে তাকালো। তাঁর বড় বড় চোখ দেখেই এক ঢোক গিললেন তিনি৷ এদিকে মাহের সড়ে যতেই রুদ্র হৈমীর পাশে বসলো। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

— আরো কি অঘটন ঘটানোর বাকি আছে তোমার?

হৈমী শব্দ করে কেঁদে ওঠলো। সুরভী বেগম কাছে গিয়ে বললেন,

— এখন রাগারাগি করার সময় না। কতোটুকু কেটেছে ডাক্তার কে ফোন করার প্রয়োজন হলে ডাক্তার কে ফোন কর।

— আন্টি একটু কেটেছে কিন্তু ব্লাড বেশী গেছে গালে একটু ছিলে গেছে, হাতেও লেগেছে। বাসায় ব্যাথার ওষুধ থাকলে খাওয়ালেই হবে। ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি আর সমস্যা হওয়ার কথা না।

রুদ্র রাগে কাঁপছে। হৈমীর দিকে ভয়ংকর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
— রুমে চলো।

নয়না কাছে গিয়ে বললো,
— আমি নিয়ে যাচ্ছি হৈমীকে।

মাহের বললো,
— ওষুধ টা খাওয়া নয়না তারপর না হয়?

নয়না মাহেরের দিকে কঠিন চোখে তাকালো বললো,
— হুম খাওয়িয়ে দেবো৷
.
রুমের দরজা লাগিয়ে রুদ্র হৈমীর কাছাকাছি বসলো৷ কঠিন চোখ মুখে চেয়ে রাগান্বিত গলায় বললো,
— কিভাবে পড়লে? সোজা পথে হাঁটতে গিয়ে তো কেউ পড়ে না৷

— আপনি ওভাবে চেয়ে আছেন কেনো? ধমকই বা দিচ্ছেন কেনো? আমি কি কোন অন্যায় করেছি? দেখুন আমি কতো ব্যাথা পেয়েছি। বলেই কাঁদতে লাগলো।

— জাষ্ট স্যাট আপ। যা জিগ্যেস করছি ঠিক তাই বলবি।

রুদ্রর রাগ দেখে খানিকটা ভয় পেয়ে গেলো হৈমী৷ এক ঢোক গিলে কাঁদতে কাঁদতে বললো,

— কাল থেকে মাহের ভাইয়া আমার সাথে কথা বলেনি। তাই ভাইয়াকে জিগ্যেস করছিলাম কেনো কথা বলেনা৷ মাহের ভাইয়া ছাদ থেকে চলে যায় পিছন পিছন যেতে নিয়ে পা স্লিপ করে পড়ে গেছি।

কথাটা শেষ হতে না হতেই রুদ্র হৈমীর ঘাড় চেপে ধরে মুখোমুখি হয়ে বললো,
— ও কথা না বলুক তাতে তোর কি সমস্যা? না তুই ওর পিছন ছুটতি না তুই পড়ে যেতি আর না তোর গায়ে ওর স্পর্শ লাগতো। কেনো করলি এটা? চিৎকার করে বললো রুদ্র।

হৈমী কেঁপে ওঠলো। গলা শুকিয়ে গেছে তাঁর। রুদ্রর চোখ মুখ অস্বাভাবিক ভয়ংকর লাগছে। এতো রাগ কখনো দেখেনি সে। ভয়ে কান্না করে দিলো। বললো,

— মাহের ভাইয়া তো আমাদের নিজের লোক। সবসময় বিপদে সাহায্য করে৷ নয়ন আর আমাকে কখনোই আলাদা চোখে দেখে না। আপনি কেনো এতো রাগ করছেন আপনিও দাদির মতোন আমাকে সন্দেহ করছেন।

ছেড়ে দিলো রুদ্র। পিছন ঘুরে জোরে জোরে কয়েকদফা শ্বাস ছেড়ে আবারো হৈমীর দিকে ঘুরলো। হৈমী চোখের পানি ফেলেই যাচ্ছে। রুদ্রর দিকে ভয়ে ভয়ে একবার চেয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে কাঁদছে। রুদ্র আবারও একি ভাবে হৈমীকে ধরলো। খুব হিংস্র রূপ বেরিয়ে এসেছে তাঁর। হৈমী ভয়ে তাঁর দিকে চেয়েই ডুকরে কেঁদে ওঠলো। রুদ্রর সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই সে তাঁর রাগ ঝাড়তে ব্যাস্ত।

— মাহের তোকে আর নয়নকে কোনদিন এক চোখে দেখেনি। শুনেছিস তুই? মাহের তোকে ভালোবাসে। ভালোবাসে তোকে৷

হৈমীর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো। কান্না থেমে গেছে তাঁর। ভাঙা আওয়াজে বললো,
— কি বলছেন এসব আপনি?

রুদ্র ছেড়ে দিলো হৈমীকে। ওঠে দাঁড়ালো পিছন ঘুরে কোমড়ে দুহাত রেখে কতোক্ষন শ্বাস নিলো আর ছাড়লো। তারপর বললো,

— আমার সাথে সারাজীবন কাটাতে হবে তোকে। আর তাঁর জন্য কিছু রুলস তোকে মেনে নিতে হবে। যদি না পারিস তাহলে একদম উপরে উঠাই দিবো৷ এ দুনিয়ায় তোর মুখ দেখতে চাইনা আমি।

হৈমী চুপ। সে বিস্ময় কাটিয়ে ওঠতে পারছেনা। রুদ্র কেনো ভুলভাল বকছে বুঝে আসছে না তাঁর। রুদ্র বলতেই থাকলো,

— সব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি মেনে নেবোনা একদম। বাচ্চা না তুই যে যা ইচ্ছে তাই করবি। বউ বউয়ের মতো থাকবি। তোর আঘাতে আমার থেকেও অন্যকারো বেশী ব্যাথা কেনো লাগবে? নিজের চোখে নিজের বউয়ের প্রতি অন্যকারো চোখে এতো ভালোবাসা দেখার বিন্দু মাএ শখ নেই। এতোদিন ভালোবাসা দেখেছি কিন্তু সেই ভালোবাসা বিনা অধিকারে খাটাতে আসবে আর তুই সাদোরে সেগুলো গ্রহণ করবি আমি মেনে নেবো? এই আমি কাপুরুষ? হৈমীর দিকে ঘুরে গাল চেপে ধরে প্রশ্নটা করলো রুদ্র।

হৈমী আবারো কেঁদে ওঠলো। রুদ্র চোখ বন্ধ করে ফেললো। ছেড়ে দিয়ে বাথরুম গিয়ে বেশ শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দিলো।
.
এদিকে মাহের অনেক আগেই বেরিয়ে গেছে এ বাড়ি থেকে। তাকে আজ আর কেউ আটকায়নি। বাড়ির পরিস্থিতি খুবই গরম আছে। তাই সবাই খুব ঠান্ডা হয়ে আছে। উপরের আওয়াজ কিছুটা সকলের কানেও গেছে। দাদি তো বেজায় খুশি৷ তাঁর চোখে, মুখে খুশি যেনো উপচে পড়ছে। মুখ ফসকে সুরভী কে বলেছেনও ‘আগেই বলেছিলাম এই মেয়ের চরিএে গোলমাল আছে’ প্রতিত্তোরে সুরভী বেগম কঠিন চোখে চেয়েছিলেন৷ যার কারনে আর কিছু বলেননি।
.
বেশ অনেকটা সময় নিয়ে শাওয়ার নিলো রুদ্র তারপর ওযূ করে এসে এশার নামাজটা পড়ে নিলো৷ যেভাবেই হোক রাগটা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে নয়তো হৈমীকে আজ কি করে ফেলবে নিজেও জানেনা। নামাজ শেষে জায়নামাজ যথাস্থানে রেখে বেলকনিতে গিয়ে বসে রইলো।

হৈমী বিছানায় চুপচাপ বসে আছে। ব্যাথার ওষুধ খেয়েছে তবুও মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে তাঁর। এদিকে রুদ্রর কথাও কিছু বুঝতে পারছেনা। রুদ্র যা বললো তা যদি সত্যি হয় এ জীবনে আর মাহেরের সম্মুখীন সে হবে না৷ আর যাই হোক মাহেরের প্রতি ভাই,বন্ধু এর বেশী কোন ফিলিংস তাঁর নেই। আর যদি মাহেরের থেকে থাকে তাহলে তাঁকে এভয়েড করে চলাই উচিত। রুদ্র যে মানুষ মনগোড়া কথা সে কখনোই বলবে না৷ তবুও কনফিউশনে রইলো সে।
.
অনেক সময় হয়ে গেলেও রুদ্র রুমে আসেনা৷ হৈমীর ভয় লাগছে খুব কাছে গেলে যদি রেগে যায়? তাই কাছেও যেতে পারছেনা৷ আরো কিছুসময় পর মনে সাহস জুগিয়ে গুটিগুটি পায়ে এগোয় বেলকনির দিকে।

আকাশের দিকে একমনে চেয়ে আছে রুদ্র। তাঁর সে দৃষ্টি অনুসরণ করে হৈমীও তাকালো। রাতের আকাশে চাঁদের আশেপাশে তাঁরা দের মেলা বসেছে যেনো৷ মনটা হঠাৎই স্নিগ্ধতায় ভরে ওঠলো। ‘নিশ্চয়ই রুদ্রর রাগ পড়ে গেছে? এমন স্নিগ্ধ অনুভূতি তে কেউ রেগে থাকতে পারে নাকি’? ভেবেই রুদ্রর পাশের চেয়ারে বসলো৷ রুদ্র টের পেয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। তবুও তাকালো না তাঁর দিকে। দৃষ্টি আকাশপানে চাঁদের দিকে স্থির রেখেই বললো,

— জামা-কাপড় সহ প্রয়োজনীয় সব কিছু গুছিয়ে নিও। আগামীকাল দুপুর দুটায় বাড়ি থেকে বের হবো। চারটার ফ্লাইটে রওনা দেবো কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে সেখানে তিনদিন কাটিয়ে যাবো সেন্ট মার্টিন।

হৈমী বসা থেকে লাফিয়ে ওঠলো। চেঁচিয়ে বললো,

— ওয়াও সত্যি সেন্ট মার্টিন যাবো আমরা? আপনি জানেন সেখানের কিছু দৃশ্য আমি ভিডিওতে দেখেছি। কি মনোমুগ্ধকর সে দৃশ্য। ওসব দেখার পর থেকেই তো শুধু স্বপ্নে চলে যাই সেখানে।

রুদ্র তাকালো হৈমীর দিকে। তাঁর চাহনীতে হৈমীর উৎফুল্লতা কমে গেলো। মুখটা কাচুমাচু করে ফেললো কেমন। তা দেখে রুদ্র মৃদু হেসে ইশারা করলো তাঁর দিকে যেতে। হৈমী কিছুক্ষণ চোখ পিটপিট করে চেয়ে রুদ্রর মনোভাব বোঝার চেষ্টা করে এগিয়ে গেলো। রুদ্র আলতো হাতে তাঁকে টেনে নিয়ে কোলে বসালো। আচমকাই তাঁর বুকে মাথা রেখে চোখ বুজে শান্তির শ্বাস ছাড়লো। বললো,

— এই বুকে যে অসীম ভালোবাসা রয়েছে তা শুধু আমার জন্যই বরাদ্দ।

মুচকি হেসে তাঁর গলা জরিয়ে ধরলো হৈমী। বললো,
— আলাদা করে বলতে হবে কেনো? আমিতো জানি।

রুদ্র নিশ্চুপ হয়ে গেলো। অনেকটা সময় কেউ কোন কথা বললো না। একসময় নীরবতা ভেঙে ওভাবেই রুদ্র বলতে শুরু করলো মাহেরর বিষয়টা। এও বললো সে মাহেরের চোখ, মুখ বিহেভিয়ার দেখেই বুঝেছে সবটা। হৈমী যখন বললো ‘আপনার ভুলও হতে পারে’ রুদ্র তখন কনফিডেন্সের সাথে উত্তর দিলো ‘তোমার প্রতি যে ফিলিংস আমার রয়েছে, তোমার জন্য যে দৃষ্টি আমার রয়েছে একি ফিলিংস একি দৃষ্টি চিনতে আমার ভুল হবে না হৈমী। আর আজ নিজের চোখে দেখেছি তোমার জন্য ওর অস্থিরতা। আমি তোমার মতো ননসেন্স নই ওকে। আমি যা বুঝি তা তোমার বুঝে আসবেনা। এতে আমার জায় আসেনা শুধু কথা মেনে চলো তাতেই হবে’।

কথাটা শোনামাএই হৈমী রুদ্রকে সরিয়ে দিতে নিলো। বিরবির করে বলতে থাকলো ‘বাহ আমার বুকে মাথা গুজে আমাকেই ননসেন্স বলছেন। থাকবোনা আমি চলে যাবো ‘
কিন্তু রুদ্র তাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বললো,

— যাওয়া-যাওয়ি পরে হবে৷ বিকেলে কিছু চেয়েছিলাম এখন সেটা দাও নয়তো আমার মনের ভিতর, মস্তিষ্কের ভিতর যে আগুন জ্বলছে সেটা নিভবে না। আর না আগুন জ্বলতেই থাকলে তখন যা হয়েছে তাঁর থেকেও বেশী কিছু হবে।

— আপনি কি থ্রেট করছেন?

— নাহ জাষ্ট ফিলিংস জানাচ্ছি। ভালো ফিলিংস হলে জানাতাম না করে বোঝাতাম যেহেতু খারাপ ফিলিংস সেহেতু ফিলিংস ভালো করার জন্য আদেশ করছি নাও স্টার্ট।

হৈমীর শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হয়ে এলো। রুদ্র কে ছাড়াতে চেয়েও পারলো না। শক্ত হাতে কোমড় জরিয়ে আছে সে। হৈমী যখন বেশী ছটফট শুরু করে দিলো রুদ্রর মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো এবং ছেড়ে দিলো হৈমীকে। হৈমী চোখ তুলে তাকাতেই রুদ্রর রাগ স্পষ্ট দেখতে পেলো। হাত আলগা করে দেওয়ায় কোল থেকে পড়ে যেতে নিতেই দুহাতে রুদ্রর গলা জরিয়ে ধরলো। বললো,

— আমি পড়ে যাচ্ছিলাম তো৷ পড়ে কোমড় ভাঙলে কাল যেতাম কি করে? ধরুন ভালো করে।

রুদ্র কিছু বললো না। এদিক, ওদিক তাকাতে ব্যাস্ত সে। হৈমী চোখ ছোট করে ভ্রু কুঁচকে চেয়ে রইলো। তবুও রুদ্রর কোন ভাবান্তর হলো না সে তাঁর মুড নিয়ে আছে। তাই হৈমী টোপ করে তাঁর গালে চুমু খেলো। তারপর তাকালো রুদ্রর মুখের দিকে নাহ একি অবস্থা তাই অপর গালেও চুমু খেলো। তারপর কপালে তবুও রুদ্র চুপ। তা দেখে থুতনীতে চুমু দিতে গিয়ে খসখসে দাঁড়ি দেখে আর দিলো না। রুদ্র তাঁর দৃষ্টি এলো মেলো করছে হৈমী এবার সিদ্ধান্ত নিলো টোপ করে ঠোঁটে চুমু দিয়েই দৌড়ে পালাবে। তাই চোখ বুঝে রুদ্রর ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াতেই রুদ্র সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কোমড় জরিয়ে নিজের সাথে চেপে নিলো। এক হাত চুলের ফাঁকে ঘাড়ে ঢুকিয়ে চেপে রাখলো নিজের সাথে আরেক হাতে কোমড়ে চাপ দিলো। হৈমী সড়তে চাইলেও আর পারলো না। অবশেষে হার মেনে সেও সায় দিলো রুদ্রর সাথে। এক পর্যায়ে দুজনের মাঝে যেনো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেলো। হৈমী যখন ক্লান্ত হয়ে গেলো ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডুবালো রুদ্র।
.
পরের দিন বিকেল সাড়ে চারটার ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য রওনা দেয় ওরা। কক্সবাজার তিনদিন কাটানোর পর চতুর্থ দিন জিপে চড়ে টেকনাফ, তারপর টেকনাফ থেকে ট্রলারে চড়ে পৌঁছায় সেন্টমার্টিনে। হৈমীর ইচ্ছেতেই ট্রলারে যাওয়া হয়৷ রুদ্র নিজের কাছে নিজেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে কটা দিন এখানে থাকবে হৈমীর সমস্ত ইচ্ছে পূরণ করবে সে। যদিও সারাজীবনের জন্য সব স্বপ্ন সব ইচ্ছে পূরনের দায়িত্ব নিয়েছে তবুও হানিমুনের এ কটা দিন অন্যরকমই স্পেশাল।
.
রুদ্র হৈমীকে নিয়ে কোরাল ভিউ রিসোর্টে ওঠেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্বাবধানে পরিচালিত কোরাল ভিউ রিসোর্ট। এখান থেকে সরাসরি সাগর দেখার সুযোগ আছে বলেই রুদ্র স্পেশালি এই রিসোর্টেই ওঠেছে৷ সেন্ট মার্টিন জাহাজ ঘাটে অর্থাৎ বামপাশে গ্রহ বিচ সংলগ্ন কোরাল ভিউ রিসোর্টটি গড়ে তোলা হয়েছে। রিসোর্টের সামনে সবুজ ঘাসের মাঠ পেরোলেই সাগর ঘাট থেকে ছেঁড়া দ্বীপ দেখা যায়। চাইলে এই সাগর সৈকতে সময় কাটানোর পাশাপাশি সূর্যদয়,সূর্যস্তও দেখা যাবে। হৈমী রুদ্র কে তাঁর একটা স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলো বিনিময়ে রুদ্র তাঁকে ঠিক কি কি উপহার দেবে তা হৈমীর কল্পনারও বাইরে।

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here