অস্তিত্বের খোজে,পর্বঃ ১৮

0
2818

অস্তিত্বের খোজে,পর্বঃ ১৮
নাফিসা মুনতাহা পরী



– পরী জানেই না শুভ্র ওকে নিতে এসেছে। পরী ছেলেটির কাছে গিয়ে একটা হাঁসি দিয়ে বলল মৃদুল!
– yes mam I am mridul……
– অহ…. তোহ কেমন আছো?
– ভাল…… অনেক সুন্দর তুমি পরী। ছবির থেকেও।
-ধন্যবাদ মৃদুল।
– আমরা কোথাও বসি?
– ওকে বলেই ভার্সিটির কাছেই যে পার্ক আছে ওখানে ২ জনেই ঢুকল। শুভ্র ব্যাপার গুলো দেখে রাগে কষ্টে বাসায় চলে আসল।




– অনিতা শুভ্রকে বলল তুই আজ এত জলদি বাসায় এলি যে?
– এমনি বলেই ওর রুমে আসে। পরীকে অন্য ছেলের সাথে দেখে নিজের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আজ ও বাসায় আসুক ওকে সত্যই নিজের জিবন থেকে মুক্ত করে দিব………. ও পাইছেটা কি! ফোন
সাইলেন্ট করে শুয়ে পড়ল। চোখে ছল ছল করছে।




– একটা বেঞ্চিতে পরী বসল…. একটু ফাঁক রেখে মৃদুল ও বসল। তাদের মধ্য অনেক কথা হল। শেষে মৃদুল বলল পরী আমার সাথে যাবে…… বিশ্বাস কর খুব ভালবাসব সাড়া জিবন। কখনও কষ্ট দিবনা বলেই হাটু গেরে বসে প্রপোজ করল মৃদুল।


– আমি মৃদুলের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বললাম উঠ এখানে বস। আমরা ধীরে সুস্থে কথা বলি!
– ওকে বলে মৃদুল এসে পাশে বসল।




– আমার বিষয়ে দেখছি সব কিছু জানো। তা এই কাজ করার জন্য মৃদুল তোমাকে কত টাকা দিছে?


– ছেলেটি হচকিয়ে উঠে বলল কি বলছ! আমিই তো মৃদুল।


– Just shut up এক থাপ্পড়ে সব দাঁত ফেলে দিব। এই তুমি আমাকে চিনো?


– পরী এসব কি অসভ্যতামি করছো সবার সামনে……..


– জলদি জলদি স্বীকার করেন মৃদুল কই। আমার হাতে টাইম নাই।


– এভাবে প্রায় ১ ঘন্টা ২ জনের মধ্য তর্ক বিতর্ক হয়।


– শেষে ছেলেটিকে বললাম আপনি এখান থেকে এক্ষুনি যাবেন আর মৃদুলকে বলবেন ও না আসা অবদি আমি এখান থেকে যাবনা…………


– তুমি ভুল করছ পরী আমিই মৃদুল।


– এবার কিন্তু সবার সামনে চড় খাবেন যান এখান থেকে বলেই একটা ধমক দিলাম। ধমক খেয়ে ছেলেটি চলে যায়।


“পরী বসেই আছে। সন্ধা গড়িয়ে রাত হয়ে গেল। সবাই তাককিয়ে আছে ওর দিকে। শেষে ফোন বের করে বার বার কল দিচ্ছে কিন্তু নাম্বার অফ। কয়েকটা মাসেজ দিল এবং কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল।




– অনিতা এসে বলল শুভ্র রাত ৯ টা বাজতে চলেছে এখনও পরী আসেনি ওর কোন বিপদ হলনাতো?
– ও ঠিক আছে চিন্তা করনা এসে যাবে বলে শুভ্র পাশ ফিরে শুইল।



– রাত ১১ টার দিকে আবার অনিতা এসে দেখে শুভ্র ঘুমাচ্ছিল। এই শুভ্র….. শুভ্র……… শুভ্র ওঠ বলছি মেয়েটা বাসায় ফেরেনি আর তুই ঘুমাচ্ছিস। আমি টেনশনে শেষ হচ্ছি আর ও সুখের ঘুম দিচ্ছে।



– শুভ্র ওর মায়ের ঝাকুনিতে জেগে উঠে বলল মা কিছু হয়েছে? এভাবে কেউ কাউকে ডাকে…… মাথা ব্যাথা করবে তো!


– নিকুচি করেছি তোর মাথা বাথ্যার বলে অনিতা শুভ্রের দিকে তাকাল।
– কি হয়েছে বলবাতো! ঘুমটা কেন ভাঙ্গালা।


– শুভ্র পরী এখনও আসেনি বাবা ওর নিশ্চয় কোন বিপদ হয়েছেরে। তোর দাদু বার বার ওর কথা বলছিল
আমি মিথ্যা বলে ওদেন থামিয়ে দিয়েছি। যানা বাবা দেখনা। ফোনও ওর অফ দেখাচ্ছে।


– শুভ্র এবার ধরপর করে উঠে বসে। ঘড়িতে দেখে ১১ পার হয়ে গেছে। মা আগে ডাকবানা বলেই ঐ অবস্থায় শুভ্র ফোনটা নিয়ে বের হয়ে এল বাসা থেকে।



পরীকে কয়েকবার ফোন দিল দেখল সুইচ অফ। বার বার কল দিচ্ছে বন্ধ দেখাচ্ছে।
– শুভ্রর এবার টেনশন শুরু হয়ে গেল। লাষ্ট পার্কে দেখেছিল। ওখানে আছে? না মৃদুলের সাথে চলে গেল। নানান টেনশনে পার্কে এসে গাড়ি ব্রেক করল। ১২ পার হয়ে গেছে। গাড়িতে এসি থাকার পরও গা ঘেমে একাকার শুভ্রের। কতটা টেনশনে এই পর্যন্ত এসেছে ও শুধু জানে।




– পার্কের মধ্য ডুকে দেখে বেঞ্চি তে একজন বসে আছে আর পাশে ৩ জন মানুষ দাড়িয়ে গল্প করছে। গড ওটা যেন পরী হয় বলেই দৌড়ে এসে দেখে হুম এটা পরী।


‘”
– শুভ্রর যেন বুকে যেন পানি এল। একটা স্বস্তিকর শ্বাস ফেলে পরী কাছে এসে সামনে দাড়িয়ে বলল এখনও এখানে বসে থাকবি? আসছিলি তো নাগরের সাথে দেখা করতে কি দেখা হলো? তোর নাগর কই দেখছিনা যে!



– লোকগুলো বলল বাবা তুমি একে চিনো?
– শুভ্র শুধু বলল হুম চিনি।


– এই মেয়েটাকে নিয়ে যাওতো বাবা। আমরা কাজ রেখে ওকে পাহারা দিচ্ছি। সেই কখন থেকে বলছি বাসা কই কিছু বলেনা। শুধু বলছে একজন আসবে। তুমিই কি সেই! আর ঝুপ ঝুপ করে বসে থেকে কাঁদছে এসব দেখা যায় বল? এমনি দিনকাল খারাপ তার উপর সুন্দরী মেয়ে মানুষ একে রেখে ও কোথাও যেতে পারছিনা।




– শুভ্র সব শুনে পরী কে বলল আরও নাটক করা তোর বাকি আছে?
– সবাইকে জ্বালাইতে তো খুব এক্সপার্ট। মা যে বাসায় চিন্তা চিন্তায় অবস্থা খারাপ করে ফেলছে সেদিকে তো তোর ভাবনা। মনে হচ্ছে কষে ২ থাপ্পড় লাগাই। মানুষজন আছে বলে বেঁচে গেলি।




– কে হও ওর তুমি বাবা বলে ওরা শুভ্রের দিকে তাকাল।


– ওর অধম স্বামী। বউ প্রেম করতে আসছে আর আমাকে তাকে নিতে আসতে হল। প্রেমিক আসেনি হয়ত তাই দুঃখে কাঁদছে। আমার কি চেহারা খারাপ না স্ট্যাটাস নেই না আমি ওর অযোগ্য তাও আমাকে দিয়ে তার হয়না। তার পরপুরুষ চাই। নিজের সম্মান যাবে তাই নিতে এলাম।




– লোকগুলো শুভ্রর কথা শুনে অবাক হয়ে গেল। সামনে ছেলেটি একটা থ্রী কোয়াটার প্যান্ট আর মিনি গেন্জী পরে আছে। দেখেই বোঝা যাাচ্ছে ঘুম থেকে উঠে আসছে। এমন একটা হ্যান্ডসাম ছেলেকে রেখে কিনা মেয়েটা পরকিয়া করছে। আচ্ছা বদজ্জাত মেয়েতো!



– কিরে উঠবি? না বসেই থাকবি বলে শুভ্র পরীর হাত ধরতেই পরী হাত জোড়ে ঝিটকানি দিয়ে ফেলে দিল এবং ওভাবে বসে কাঁদতে কাঁদতে বলল আমি যাবোনা। তুমি কেন এসছো……… এখান থেকে যাও। আমি ডিসিশন নিয়ে ফেলেছি আর বাসায় যাব না।



“একে তো চুরি তার উপর সীনা চুরি……..
– শুভ্রকে আর পায় কে লোকগুলোর সামনে ফটাফট কয়েকটা চড় বসিয়ে দিয়ে হাত ধরে হিরহির করে টেনে এনে গাড়িতে বসিয়েই গাড়ী স্টার্ট দিল।



– লোকগুলো বলল ছেলেটা ভাল বলে ওকে নিতে এসেছে অন্য কেউ হলে খুন করতো। মেয়েটাকে আরোও ২ টা চড় দেওয়া উচিত ছিল। আমাদের এমন হলে যে কি করতাম। দিনকাল বড়ই খারাপ হয়ে গেছে……. শেষ জামানায় আর কত কি দেখব আল্লাহ্ ভাল জানে।




– শুভ্র ড্রাইভ করছে আর পরী কেঁদেই চলছে ফিকরে ফিকরে……….
-শুভ্ররও চোখে পানি টলটল করছে। কি নেই ওর মধ্য যে ওকে ছেড়ে অন্য ছেলের চিন্তা করে। এমন সময় পরী শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে।



“শুভ্রও কেঁদে ফেলে এবং বলে ওঠে মৃদুল কে পাসনি বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিস। তোর মত বেহায়া মেয়ে আমি জিবনে ও আর একটি দেখিনি বলেই গাড়ী ব্রেক করল।




– পরী ওকে জড়িয়েই ধরে আছে। শুভ্র ওকে এক টানে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল আমি ভালর ভাল খারাপের মহা খারাপ। তাই আমাকে চটাস না। রাগে এমন কিছু করে ফেলব যেটা কখনও শুধরানো যাবেনা। একদম ন্যাকামি করবি না আমার সাথে বলে জোড়ে ধমক দিয়ে বলল বাসায় চল তোর ব্যবস্হা করছি। বলিনি আবার মৃদুলের সাথে কথা বললে কি করব……… দেখ কি করি। শুভ্রর রাগে চোখ মুখ লাল করে বলল কথা গুলো। আমার সম্মান নিয়ে টানা হিচড়া করা! আমাকে তোর মানুষ মনে হয়না……. বেহায়ার মত তোর পিছে শুধু ঘোড়ব? তুই যা চেয়েছিস আজ অবদি সব পুরুন করেছি আর তার ফলাফল এটা।




– এবার পরী শুভ্রকে আরও জোরে জড়িয়ে ধরে বুকে কয়েকটা কিস করে♥♥♥♥

-শুভ্র ছাড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু পরী ছাড়ার নাম নেই। তাই বাধ্য হয়ে চুপ করে বসে রইল। দুর্বলতা এমন একটা ভাইরাস যেটা রাগ নামক শক্তিশালী সফটওয়ার কেও এক নিমিষেই ভ্যানিস করে দেয়। কিছুক্ষন শুভ্র চুপ করে থেকে বলল ছাড়ো আমার ড্রাইভ করতে প্রবলেম হবে……..



– পরী চোখ মুছে চুপ করে রইল। শুভ্র আবার ড্রাইভ করতে লাগল।
– বাসায় পৌছাতে ১ টা পার হয়ে গেল। ওরা বাসায় আসতেই অনিতা চাপা গলায় বলল কিরে কই ছিলি। পরী কোন কথা না বলে উপরে এসে শুভ্রর রুমে ঢুকে কি যেন রেখে ওর রুমে চলে যায়।



– অনিতা শুভ্রকে বলল ওকে কি মেরেছিস?
– মারার কাজ করলে কি না মেরে আদর করব!
– কাল কথা হবে মা তুমি ঘুমিয়ে পড় বলেই শুভ্র উপরে উঠে ওর রুমে চলে গেল। অনিতা কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে গেল।




– শুভ্র আজ প্রচন্ড ক্ষেপে গেছে। গাড়ির চাবি টেবিলে রাখতেই একটা গিফট্ পেপারে মোড়ানো একটা কিছু দেখতে পেল। ওটা হাতে নিয়ে বলল এটা কে দিল আবার। পেপার খুলে দেখে একটি ডায়েরী।
– উপরে লেখা প্লিজ আমাকে পড়। এটাতো পরীর লেখা। ও এটা কখন রেখে দিল বলেই ডায়েরী নিয়ে পড়তে বসল।



০০/০০/০০০০/ তারিখ সময় বছর সব উল্লেখ করা…….

– আজ নীলস্বপ্ন নামে একটা আইডি থেকে রিকুয়েস্ট এসেছে। পুরোটা দেখলাম। আমার কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছে এটা শুভ্র।


“০০/০০/০০০০
– ছেলেটির নাম নাকি মৃদুল। ব্যাটা মিথ্যা কথা বলছে। এটা আমার মনে হচ্ছে এটা শুভ্র হবে।



০০/০০/০০০০
সন্দেহটা দুর হল হুম এটা শুভ্র। আজ আমার সাথে ভয়েস চেন্জ করে কথা বলেছে। ভেবেছে আমি বুঝতে পারবনা। কিন্তু ও জানেনা পরীর কাছে ধরা পড়ে গেছে। দেখি কত দুর জল গড়ায়। ১ হাজারের বেশি আমায় কিস করছে ফোনে। পাগল করে দিবে।



০০/০০/০০০০
আমি মনে হয় মৃদুলের অফ স্যরি মৃদুল রুপী শুভ্রর প্রেমে পরে গেছি। খুব মিস করছি ওকে। ইনশাল্লাহ ওকে আমার করে ছাড়বই।


– ০০/০০/০০০০
আজ শুভ্রকে বার বার বলতে ইচ্ছা করছে শুভ্র আমার হাত ধরে হাটবা? তুমি যেখানেই নিয়ে যাবা সেখানেই যাবো। বিস্বাস কর একবারও জিঙ্গাসা করবো না তুমি কোথায় নিয়ে যাচ্ছো।


০০/০০/০০০০
আজ আমাকে নিয়ে নিতুকে দেখতে গিয়েছিল। আমার বুঝি কষ্ট হয় না।


০০/০০/০০০০
অর্পিতার জন্য সেদিন নিদ্রা আপুর হাতে চড় খেয়েছিলাম। আমি যখন কাঁদতে কাঁদতে মৃদুল মানে শুভ্রকে বললাম তখন ও গম্ভীর হয়ে যায়।


০০/০০/০০০০
নিতু আর শুভ্রের আশীর্বাদ আজ। কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে। আল্লাহ্ সাহার্য্য কর আমায় ধর্য্য ধরার জন্য।


০০/০০/০০০০
শুভ্র নেশা করে আমার সাথে কথা বলছে। জানি একটু পর ছাদে আসবে। আমার সাথে ঝগড়াও করবে। হুম করেছে। আমায় খুব জ্বালাইছে।


০০/০০/০০০০
আজ আমার আর শুভ্রর বিয়ে হল। এটা আমার জন্য আল্লাহর দেওয়া সব থেকে বড় নেয়ামত। অবশেষে আমি আমার অস্তিত্বের খোজ পেয়েই গেলাম।


০০/০০/০০০০
শুভ্র আমার সাথে কেন অভিনয় করছে। ওকে আমিও অভিনয় চালিয়ে যেতে পারি। শুভ্র আমিও তোমার বউ। আমাকেও পার্টিসিপেট করতে হবে না? তাইতো এমন মৃদুল হেসেছে……..একই চোখেতে সে ধরা পড়েছে।♥♥♥♥


০০/০০/০০০০
শুভ্রকে জ্বালাইতে খুব ভাল লাগে। আমি ওর থেকে এক ধাপ এগিয়ে। কাল শেষ পরীক্ষা দেখি ও মৃদুল সেজে কাকে আমার সামনে দাড় করায়। না ও নিজে আসে। আমিতো শুধু শুভ্রের পরী। আর তো কারো না। মৃদুল নামের কোন অস্তিত্ব নেই শুধু শুভ্রের অস্তিত্ব আছে পরীর বুকে। I Love You শুভ্র♥♥♥♥

এ রকম আরো অনেক লেখা ডায়রী তে। শুভ্র চট করে ফোন হাতে নিয়ে দেখে অসংখ্য বার কল। ১০০ র উপর। যে ছেলেটিকে পাঠানো হয়েছিল তার নাম সবুজ। পরীও অনেকবার কল দিয়েছে।


– sir! mam কিন্তু প্রমিস করেছে আপনি না গেলে উনি আসবে না। এরকম অনেক মাসেজ সবুজ শুভ্রকে দিয়েছে। ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমাইছিল শুভ্র।



– পরীর মাসেজ ও এসেছিল। শুভ্র সন্ধা হয়ে যাচ্ছে আমাকে নিতে আসবা না!
আমার ভয় করছে। সবাই কেমন জানি করে তাকিয়ে আছে। ফোন ধরছোনা কেন। তুমি না আসলে কিন্তু আমি কিছুতেই বাসায় যাব না।
এরকম ১০/১২ টা মাসেজ।




– শুভ্রর মুখে এবার তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। ধরা পরে গেছে যে সে অনেক আগেই। অযথা রাগ করে ওরে শাস্তি দিয়ে এসেছে কিন্তু ও একবারও প্রতিবাদ করেনি কিংবা বুঝতেও দেয়নি ও সব জেনে গেছে।



– শুভ্র আর দেরি না করে পরীর রুমে গিয়ে দেখে দরজা বন্ধ। এই রাতে ডাকতেও সাহস পাচ্ছেনা শুভ্র। যদি কেউ জেগে যায়। তারপরও কয়েক বার নক করে। না খুলছেনা। ফোন অফ। শেষে শুভ্র একটু ধীরে বলল পরী দরজা খোল বলছি…….. না হলে আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাব কিন্তু এই রাতে। আর তুমি জানো আমি কি করতে পারি।



কথা গুলো বলতে দেরী দরজা খুলতে দেরী হয়নি। তারমানে ও দরজার সামনেই ছিল। কাঁন্না করে চোখমুখ ফুলিয়ে তুলেছে। ফর্সা গাল লাল হয়ে গেছে। শুভ্র কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে রুমে ঢুকে ছিটকি লাগিয়ে দেয়।




– পরী খাটে গিয়ে মাথা নিচু করে চুপ করে বসে আছে।
-পরী…….!
——————!
-কি কথা বলবানা তো!
—————————–?
“”””””””””””””
ওকে না বল বলে শুভ্র বেলকুনিতে এসে দাড়িয়ে যায়।
“”””””””””””
এভাবে প্রায় আধা ঘন্টা সময় কাটিয়ে যায়…….শুভ্র বেলকুনিতে ও ভাবেই দাড়িয়ে আছে।

“””””””””””””””””””””””
এর পর পরী আস্তে আস্তে করে শুভ্রর কাছে গিয়ে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে বলে খুব ভালবাসি♥♥♥♥ শুভ্র তোমায়।



♥♥♥♥
♥♥♥♥
শুভ্র I need you বলেই একটা কিস করে পিঠে।
শুভ্র I want you বলেই হাতটা ঠিক শুভ্রর বুকে উপর রাখল।
শুভ I miss you বলেই ২ হাতই বুকে রাখল।
শুভ্র I Love you বলেই পরী হাতটা ঠিক শুভ্রের বুকের বাম পাশে রেখে একটু উচু হয়ে দাড়িয়ে শুভ্রের কানের পিঠে কিস করল।
♥♥♥♥
♥♥♥♥



– শুভ্রের চোখ দিয়ে পানি পরে যাচ্ছিল। এটা কষ্ট না আনন্দের সেটা বুঝতে বাকি রইলনা শুভ্রের।

Sorry বউ তোমাকে এত্ত miss করার জন্য
তোমাকে নিজের মনে করার জন্য
তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার জন্য
তোমাকে প্রচুর বিরক্ত করার জন্য
তোমাকে প্রচুর থাপ্পড় মারার জন্য
তোমাকে প্রচুর ভালবাসার জন্য এবং
পরীকে প্রচুর কিস করার জন্য বলেই শুভ্র পিছন ফিরেই পরীকে একটানে বুকের ভিতর নিয়ে আসে। আর একমুহুত্ব বিলম্ব না করে ১ জোড়া ঠোট একে অপরকে আলিঙ্গন করে। শুভ্রকে আর পায় কে পাগলের মত কিস করতে থাকে পরীকে একের পর এক। পরী আটকাতে চাচ্ছে কিন্তু শুভ্রর সাথে পেরে উঠছে না।




– শেষে পরী বলেই উঠল শুভ্র আমার না খুব খুদা লেগেছে। পুরো দিন কিছু খাইনি। শুভ্র ঐ অবস্থায় বলে উঠল আমাকে খাবা! ওকে খাও। তা পরী কোথা থেকে খাওয়া শুরু করবে? হাত, পা না মাথা থেকে হুম হুম হুম…….
– শুভ্র সত্যি আমার খুদা লাগছে ছাড় আমায়।
– এবার শুভ্র থেমে গিয়ে বলল দিলেতো মোড টা নষ্ট করে। এত্ত পেটুক কেন তুমি! কোন সময় কি কথা বলতে হয় তুমি বুঝনা?




– সত্যি আমার খুদা লাগছে শুভ্র । চলনা খাবার খেয়ে আসি।
– শুভ্র পরীর দিকে তাকিয়ে বলল ওকে তুমি ওয়েট কর আমি আনছি বলেই শুভ্র চলে গেল।
– উফ্ বড্ড বাচা বেঁচে গেছি তানা হলে সব শেষ করে ছাড়ত যে তেতে গেছে ও♥♥♥♥




– শুভ্র ১০ মিনিট পর খাবার গরম করে রুমে নিয়ে আসে।
– শুভ্র!
“”””””””””’
– উমমম….
“”””””””‘”””””
– আমাকে একটু খাইয়ে দিবা?
“”””””””””””””””
– কেন তুমি কি ছোট্ট খুকি যে তোমায় খাইয়ে দিতে হবে?
“””””””””””””””””””
– আমি ঠোট ফুলিয়ে বললাম লাগবে না….
“”””””””””””””””””””’
– পরী! আমাকে একটা কিস করবে?♥♥♥♥
“”””””””””””””””””’
– পাব্বোনা হুমহ্…….
“”””””””””””””””””
– তাহলে তুমি কেমনে আশা কর আমি তোমাকে খাওয়াইয়ে দিব? বলেই শুভ্র খেতে শুরু করল।
“”””””””””””””””””
– বললাম তো লাগবে না……
“””””””””””””””””””””
– উমমমম আমি জানিতো তোমার খাওয়ার দরকার নেই তুমি আমাকে সরানোর জন্য বাহনা করেছিলে।
“””””””””””””””””””””
– আমি টপ করে শুভ্রর গালে কিস করে ওর কাছে গিয়ে বসে পড়লাম। তুমি একা খাচ্ছো….. আমাকেও একটু দাওনা……..
“”””””””””””

– পরী! অন্যর খাবারের দিকে নজর দিতে নেই বলেই আমার মুখের সামনে খাবার তুলে ধরল।
– আমি চট করে মুখে নিয়ে বললাম এটা দাও ওটা নাও আর একটু বেশি ভাত নাও। এভাবে না আর একটু কম নাও বলে জ্বালাতে লাগলাম। শুভ্রতো হয়রান হয়ে গেল আমার কাজে। আর আমি মজা নিচ্ছি। পুরো দিনের রাগ ঝাড়ছি ওর উপর।


– এবার শুভ্র যা করল মুখে প্রকাশ করার না। আমি খাচ্ছিলাম ঐ অবস্থায় এক হাতদিয়ে আমার গাল শক্ত করে ধরে ওর ঠোট দিয়ে আমার ঠোট ধরে আলতো করে কামড় দিয়ে বলল আর জ্বালাবা আমায়……!
– আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম না না আর জ্বালাব না।
– আর একবার যদি বিরক্ত কর তাহলে কিন্তু আজ তোমার খবর আছে কথাটা মাথায় রাখ। যা দিচ্ছি যেভাবে দিচ্ছি খেয়ে নাও আর আমাকেও খেতে দাও। কারন পুরো দিন আমারও খাবার পেটে পড়ে নি।




– আমাদের দিনগুলো এভাবে খুব চমৎকার যাচ্ছিলো। একদিন আমি চুল ছেড়ে দিয়ে সুইমিং পুলের পানিতে পা দিয়ে বসে আছি…….অর্পিতা আর নিদ্রা আপু সাঁতার কাটছিল। আমাকে বার বার পানিতে নামতে বলছে ওরা কিন্তু আমি নামতে চাইনি কারন আমি সাঁতার জানিনা।



– নিদ্রা আপু উঠে গেল একটু পর। এমন সময় শুভ্র এসে কখন যে আমার পাশে দাড়িয়েছে আমি জানিই না।

– কি mam আমার সাথে পানির নিচে ডুব দিবা?

– আমি পিছনে তাকাতে গিয়েও তাকাতে পারছিনা চুলে লাগছে। কারন শুভ্র আমার চুলের উপর পা দিয়ে দাড়িয়ে আছে। অ ও হয়ত বুঝতে পারেনি ব্যাপারটা।

– শুভ্র সরো তুমি আমার চুলের উপর দাড়িয়ে আছো…

শুভ্র কিছু বোঝার আগেই আমি জোড়ে ওর পা সরাতেই ও ঝপ করে পানির মধ্য পরে যায়।

– আমি তো জ্বীভে কামড় দিয়েই দাড়িয়ে যাই। আজ আমার আর রক্ষা নাই……..
চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here