অস্তিত্বের খোজে,পর্বঃ ১৯

0
2722

অস্তিত্বের খোজে,পর্বঃ ১৯
নাফিসা মুনতাহা পরী

– আমি দাড়িয়েই দৌড়…… জানি আমার সাথে কি হতে চলছে। শুভ্রও সুইমিং পুল হতে উঠেই পরীর পিছে পিছে দৌড় দিল।
– আমি কোন দিশা না পেয়ে বাগানের দিকে দৌড়াতে লাগলাম কিন্তু বেশিক্ষণ দৌড়াতে পপারলামনা ও এসে আমাকে ধরে ফেলল এবং জাপটে ধরে পুলের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। এই তুমি ওমন করে দৌড়াচ্ছো কেন? আমি কি তোমাকে রেপ করব নাকি হুমম…….
– এই ছাড়….. আমি আর জিবনে এরকম করবনা বলতেই শুভ্র আমাকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দিল। নাকে মুখে পানি গিয়ে আমারতো বিষম উঠে গেল।




– পলা দুর থেকে এই দৃশ্য দেখে বাসার ভিতর গিয়ে অনিতাকে বলল বৌদি দিন দিন শুভ্র বেয়াদপ হয়ে যাচ্ছে। পরীকে নিয়ে কেন ওভাবে বলেই…….. সব খুলে বলল।
– অনিতা কিছু না বলে বাহিরে চলে আসল।




– অর্পিতা যাতো ২ টা টাওয়াল নিয়ে আয় বলে ওকে সরিয়ে দিল শুভ্র। আমি আর ও সুইমিং পুলে। আমি ওর গলা ধরে আছি। আমি সাঁতার জানিনা তাই ওভাবে জড়িয়েই বললাম আমায় উপরে তুলে দাও না।



– কেন আমাকে ফেলে দেওয়ার সময় মনে ছিল না এর পরিনিতি কি হতে পারে বলেই আমাকে নিয়ে একসাথে ডুব দিল পানির নিচে। আমার ছোট বেলা থেকে পানিতে ভয়। মনে হয় কেউ পা টেনে নিয়ে যাবে যদিও সচ্ছ পানি ছিল তবুও।
– আমি পানির ভিতর ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
– শুভ্র আবার পরীকে নিয়ে পানির উপরে উঠল ভেসে।
– আমায় ছেড়ে দিন আমার কেমন জানি লাগছে।
– আরে কিছু হবে না বলেই আ…প করে আবার ডুব।
– পানির মধ্যই আমি ছটপটাতে লাগলাম। সাধারনত সুইমিং পুলের পানি হাই হলে গলা অবদি হয় কিন্তু এটাতে আমি থাও পাচ্ছিনা। মনে হয় একটু ডিপ বেশিই।




– শুভ্র আবার পরীকে নিয়ে পানিতে ভেসে ওঠে।
– আমি হাঁপিয়ে উঠলাম। কাঁদো কাঁদো হয়ে বললাম শুভ্র আমায় ছেড়ে দাওনা আমার কষ্ট হচ্ছেতো।
– হোক ছেড়ে দেওয়ার জন্য ধরিনি। এত্ত পানি ভয় পাও কেন বলেই আমাকে নিয়ে মধ্য চলে আসল।
– আমি ওকে জড়িয়েই ধরে বললাম আমার ভয় করছে শুভ্র!
– তোমার ভয় ভাঙ্গানোর জন্যই এই ব্যবস্হা বলে কিস করতে যাবে এমন সময় অনিতা এসে শুভ্র বলে কঠিন গলায় ধমক দেয়।



– আমরা ২ জনেই চমকে উঠি। আমার ওড়না কই গেছে আল্লাহ্ জানে বলেই শুভ্রকে ছেড়ে দেই।
– শুভ্রও আর কিছু বলেনা লজ্জায়…. মা কই থেকে এলো। পিছনে পলাকে দেখে রাগী দৃষ্টিতে শুভ্র পলার দিতে তাকায়। পলাও ভয়ে অনিতার আড়ালে চলে যায়। যত্তসব নাটের গুরু এই মহিলা।




– আমি শুভ্র কে ছেড়ে দিয়ে পাড়ে আসতে গিয়েই ডুবতে শুরু করলাম। নিজেকে ভাসিয়ে রাখতে পারছিনা। পানি খেয়ে একাকার।
– অনিতা চিল্লায় বলল শুভ্র পরীকে ধর ও তো ডুবে যাচ্ছে……
– শুভ্র পরীর দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই পরী নাকানিচুবানি খাচ্ছে। শুভ্র জলদি পরীকে ধরে পাড়ে এনে উপরে ওঠে। এতক্ষন যে কত পানি খাইছে ঠিক নাই।
– আমি পাড়ে বসে কাঁশি দিতে শুরু করলাম এবং বিষম উঠে গেছে। শুভ্রর সেদিকে খেয়াল নেই আগে ওড়না দিয়ে আমাকে ঢেকে দিল তারপর আমার দিকে তাকালো।




– অনিতা এসে শুভ্রকে অনেক গুলো বকা দেয়। থ্রেডও দেয় পরীর আসপাশ যেন ওকে না দেখে।
পলাতো মহা খুশি। পলা পরীর ভাল চায় কিন্তু ও তো জানেনা এরা ২ জন ২ জনকে এভাবেই চায়।
– পরী তুমি সাতার জানো না? (শুভ্র)
– আমি চুপ করে মাথা নেড়ে না বললাম।
– শুভ্র আর কিছু না বলে বাসার ভিতরে চলে গেল।



– অর্পিতা টাওয়াল এনে বলল এমা পরী দিদি তোমার কি হয়েছে?
– কিছুনা বলে অনিতা পরীকে নিয়ে ভিতরে গেল।
– অনিতা কড়া নির্দেশ দিল পলাকে যখনই দেখবি পরীর আসপাশে শুভ্র গেছে সাথে সাথে আমায় বলবি। লও ঠেলা কিহতে কি হয়ে গেল। পলা দায়িত্ব পেয়েতো মহা খুশি।




– আমি রুমে এসে সাওয়ার নিয়ে ড্রেস চেন্জ করতেই শুভ্রের কল।
– আমি রিসিভ করতেই বলল বেলকুনিতে আস।
– আমার আর ড্রেস চেন্জ করা হলনা। ওভাবেই বেলকুনিতে গেলাম। গিয়ে দেখলাম ও দাড়িয়ে আছে আর ফোন দিয়ে আমার সাথে কথা বলছে।
– পরী তুমি সাঁতার জানোনা আমাকে আগে বলবে তো?
– বলে কি হত?
– কি আর হত তোমাকে মাঝ খানেতে ছেড়ে দিতাম আর তুমি বার বার আমাকে এসে ভয় পেয়ে জড়িয়ে ধরতে। উফ্ কি শান্তি যখন বার বার এসে আমাকে জড়িয়ে ধরছিলে। পাগল করে দিচ্ছিলে। কিন্তু বজ্জাত পলাটা সব শেষ করে দিল।
– ধ্যাত ফাজিল কোথাকার বলেই ওর দিকে তাকালাম। ও আমাকে কয়েকটা ফ্লাইং কিস♥ করে বলল তুমি জানো পরী……..!
“””””””””””
-কি?
-পলা নতুন জব পেয়েছে । যদি আমি তোমার কাছে যাই বা আসপাশে থাকি…. তো সাথে সাথে মাকে জানিয়ে দিবে। তাই সাবধান। আমরা এভাবেই এখানে কথা বলব কেমন?
– আমি একটু অবাক হয়ে বললাম পলা আন্টি?
– হুম।
– ওকে কি আর করা চুরি করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য প্রেম করতে হবে।
– পরী তোমার পিছনে কে যানি…..
– আমি ভয়ে চট করে পিছনে তাকেতেই টাওয়াল খানিকটা খুলে গেল। আমি ঝট করে বুকে উঠিয়ে শুভ্রর দিকে কঠিন চোখে তাকাতেই ও উচ্চস্বরে হেঁসে উঠল এবং কল কেটে দিয়ে রুমে চলে গেল।
– আমিও ফাজিল বলে চলে আসলাম। এই বাসাটা পুরো বাউন্ডারি দিয়ে ঘেরা। প্রায় দেড় বিঘার উপর জায়গা নিয়ে এই বাসাটি। তাই আশে পাশে অন্য বাসা দেখার সুযোগ নাই। চোখ যেদিকে যায় বাউন্ডারির শেষ সীমানা অবদি সবুজ বাগান।




– আমি রুমে ড্রেস চেন্জ করে বসে ফোন ঘাটছি এমন সময় শুভ্র ফেসবুকে আমাকে নক করল।
– পরী কি করছো?
– ছেলেদের লগে চ্যাট করি।
– শুভ্র সাথে সাথে ভিডিও কল দিল। আমি একটু হেঁসে রিসিভ করে বললাম বিরক্ত করেন কিয়ের লায়।
– এই তুমি আচ্ছা তো এমন একটা হ্যান্ডসাম বর পেয়েও অন্য ছেলেদের নাম মুখে নাও।
– কি আর করতাম সোয়ামি আপনাকে যে কাছে পাইনা তাই এই ব্যবস্হা।
– ও হাত উচিয়ে করে বলে মাইর দিব কিন্তু।
– আমিও সাথে সাথে গালটা এগিয়ে দিয়ে বললাম দাও দাও জলদি……. তোমার মাইর খাইতে আমার না হেব্বি জোস্ লাগে বর মশাই।
– যেদিন দিব সেদিন বুঝবা মারের কত জ্বালা।
– হুম যেটা দিতে পারনা সেটা নিয়ে এত্ত বড়াই করা উচিত না…..
– এই দাড়াও আমি আসতেছি…….
– এই এই ভয় দেখাও কেন? আর বলবনা স্যরি মাফ করে দাও।
– ওকে মনে থাকে যেন। আর ফেসবুকে এত্ত ঢোক কেন? মাকে বেশি টাইম দাও। কাজে দিবে। ফেসবুক ডিএক্টিভ করে দাও।
– ওকে আমার কলিজা বলে কয়েকটা কিস♥ করে কল কেটে দিয়ে নিচে নামলাম।




– আন্টি কি করেন?
– অনিতা পরীর দিকে তাকিয়ে বলল এই তো মা রান্না করছি। কিছু বলবে?
– না আন্টি আমি কি আপনাকে সাহার্য্য করতে পারি?
– না না দরকার নেই।
– ওকে আপনি রান্না করেন আমি দাড়িয়ে থেকে আপনার কাছ থেকে রান্নাগুলো শিখি। আপনি দারুন রান্না করেন করেন।
– ও এখানে কেন! বলেই বিমলা রান্না রুমে এসে রেগে পরীর দিকে তাকাল।
– তোমার বকা খেতে এসেছি দিদুন……… তোমার বকার যা টেষ্ট…. আহ্ কি স্বাদ। সেটার স্বাদ কয়েকদিন ধরে পাইনি তো সেটাই নিতে এসেছি আরকি! নাও শুরু করে দাও।
-বিমলা পরীর কথা শুনে থমথম করে চলে যেতেই পরী বলল দিদুন আমাকে নিয়ে তোমার এত্ত ভয় কেন হুম আমি কি তোমার বর কে নিয়ে ভেগে যাব…………
– বিমলা থেমে বলল ঐ ছুড়ি আমার কর্তার কাছে এবার আসিস তোরে ঝেটিয়ে বিদায় করব।
– ঐ এক কাজ ছাড়া আর তুমি কি পার বলেই জ্বিভে কামড় দিলাম। আল্লাহ্ আমি কি বলে ফেললাম।
– ঐ তুই কি বললি! আর একবার বল।
– স্যরি দিদুন কানে ধরছি বলেই কানে হাত দিয়ে বললাম উঠবস করতে হবে বলে সেটাও করলাম ২ বার।
– পরীর কান্ড দেখে অনিতা তোহ হেঁসেই যাচ্ছে।
– উনি ব্যাপক রেগে গেছেন দেখে ওনার কাছে গিয়ে টুপ করে ওনার গালে একটা কিস করে বললাম আমি ছেলে হলে বিমলা সুন্দরী…………. তোমাকেই বিয়ে করতাম। আহাহা কি ঐ রুপ। ঐ রুপে বার বার মরে যেতে মন চায়। কথাটি বলে জলদি ওখান থেকে চলে এলাম। কখন কি হয় বলা যায়না তো?




– বৌমা এই ছুড়ি এমন কেন?
– ওর কথায় কিছু মনে করেন না মা। বাচ্চা মেয়ে( অনিতা)




– সন্ধার পর ড্রয়িংরুমে চিৎকারের শব্দে আমি রুম থেকে বের হয়ে দেখি নিচে নিতু দাড়িয়ে চিৎকার করছে। নিতুকে দেখে আমার কলিজাতে মোচড় দিয়ে উঠল। ও এখানে কেন?



– আন্টি সেদিন মাথা গরম করে আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি……. আমার ভূল হয়ে গেছে আন্টি। বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েন না প্লিজ। আমি শুভ্রকে খুব ভালবাসি। ওকে ছাড়া থাকতে পারবনা। আমাকে যেভাবে রাখবেন আমি সেভাবেই থাকব। প্রয়োজনে কাজের মেয়ের মত থাকব তবুও বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েন না।(নিতু)




– নিতুর কথা শুনে বাসার সবাই ড্রয়িংরুমে চলে আসে। শুভ্র এখনও বাসায় ফেরেনি। নিতুর কান্নাকাটিতে পুরো বাসার মানুষ থ হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। আর আমার হাত পা কাঁপছে ওর কথা শুনে। বাসার সবাই যদি রাজি হয়ে যায়?



– নিতু সেদিন মাকে ওভাবে অপমান করতে তোমার বাধছিলনা আর আজ মাফ চাইছো? আচ্ছা মেয়েতো তুমি। শুভ্রর জিবন…… ও সেটা কিভাবে কাটাবে ওর ব্যাপার এর ভিতর আমাদের টানছো কেন? (নিতু)


– বৌদি প্লিজ অমন ভাবে বলেন না আমি খুব লজ্জিত।(নিতু)
– আবার যে এমন কাজ করবেনা তার কোন গ্যারান্টি আছে নিতু!(কৌশিক)
– নিতু এবার নিতাই সেন এর পায়ে গিয়ে পড়ল। দাদু প্লিজ শুভ্রকে একটু বুঝান। আমার কোন দিক থেকে যোগ্যতার অভাব আছে বলেন। ও কেন বিয়ে করতে পারবেনা আমায় প্লিজ একটু বলেন।




– বাসার মানুষগুলোও বেশ চিন্তিতো যে ছেলে বিয়ে করার জন্য মত দিল সে হঠাৎ আশীর্বাদের পর কেন বিয়ে ভেঙ্গে দিচ্ছে। আশীর্বাদের পর বিয়ে ভাঙ্গার কোন প্রশ্নই উঠেনা।



– এভাবে নিতুর কাহিনী চলতেই লাগল। নিদ্রা আপু শুধু রাজি না তাছাড়া সবার মন গলতে শুরু করে দিছে। একটু পর শুভ্র বাসায় ঢোকার সাথে সাথেই নিতু গিয়ে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
প্লিজ শুভ্র এমনটা করনা। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবনা। শুভ্র চমকে যায় হঠাৎ নিতু এভাবে জড়িয়ে ধরাতে।।



– শুভ্রর চোখ উপরে যেতেই পরীকে দেখে ও কাঁদছে। নাও এবার বউকে সামলাতে ওর জিবন শেষ হবে। মাঝ থেকে এক উটকো ঝামেলা এসে বাধল। আমি মরি আমার জ্বালায় আর এ মরা কান্না শুরু করে দিছে।


শুভ্র নিতুকে এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিয়ে বলল এই তোমার সাহস কিকরে হয় এতগুলো মানুষের সামনে জড়িয়ে ধরা। আর তোমাকে তো আমি আমার ডিসিশন জানিয়ে দিছি তাহলে এখানে কেন নাটক করতে এসেছো?



– শুভ্র আমি কিন্তু সুইসাইড করব? (নিতু)
– কর…… তোমার মত মেয়ের ওটা করার কথা আরও ২ বছর আগে ভাবা উচিত ছিল বলেই শুভ্র উপরে উঠে গেল।



– নিতুর কথা শুনে অনিল বলল নিতু তুমি বাসায় যাও আমরা সবাই মিলে আলোচনা করে দেখি এর কিছু একটা সমাধান বের করতে পারি কিনা।
– নিতু আস্বাস পেয়ে চোখের পানি মুছেই উপরে তাকিয়ে দেখল পরী শুভ্রর রুমে ঢুকছে। নিতু রাগে বাসা থেকে বের হয়ে এলো। এই মেয়ে যতদিন থাকবে আমি শুভ্রকে কোনদিন কাছে পাবনা……. এর একটা ব্যবস্হা করতে হবে।



– শুভ্র কেবল শার্টটা খুলছে শরীর থেকে আর পরী ওকে টেনে ওয়াসরুমে নিয়ে গিয়ে সাওয়ার এর নিচে দাড় করিয়ে সাওয়ার চালু করে দিল। শুভ্র বুঝতে পারল ও কেন এরকম করছে তাই কিছু না বলে চুপ করে রইল।
– পরী বডি ওয়াস বের করে নিতু যেখানে যেখানে শুভ্রকে ছুয়েছে সেখানে সেখানে লাগিয়ে ঘষছে আর কেঁদেই চলছে।



– পরী কি করছো! এরকম করার কোন মানে হয়!

-এত্ত জোড়ে জোড়ে ঘষলে তো চামড়া উঠে যাবে।


– পরী এবার শক্ত করে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে বলল আমি কিন্তু তোমাকে ছাড়া মরে যাব…….. পাগল হয়ে যাব। একটুও নিস্বাস নিতে পারিনা তোমায় ছাড়া । আমার অস্তিত্ব কে কেরে নিও না শুভ্র বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পরল পরী।



– পরী রিলাক্স রিলাক্স…. তোমার কি মনে হয় আমি নিতুকে বিয়ে করব?
– যদি বাসার সবাই রাজি হয়ে যায়?(পরী)
– ধ্যাত বোকা মেয়ে কিচ্ছু হবেনা। আমার তো আমার পরীকে চাই। আমার এই বউ ই চাই চাই♥



– জানিনা আমি…… কিছু শুনতে চাইনা বলেই জোড়ে কেঁদে উঠল পরী…….. নিতুর সাহস কিরে হয় আমার শুভ্রকে ছোয়ার♥



– অনিতা এসে শুভ্রকে ডাক দিল এমন সময়।


– শুভ্র ওর মায়ের ডাক শুনে পরীকে বলল পরী চুপ … চুপ কর একটু মা আসছে।
– কে কার কথা শোনে……..পরী ফিকরেই যাচ্ছে।


– শুভ্র তুই কি ওয়াসরুমে?


– পরীর কান্নার আওয়াজ যেন বেড়েই গেল। আজ মনে হয় ও সবাইকে জানিয়েই ছাড়বে শুভ্র ওর শুধু ♥
……..শুভ্রর উপর শুধু ওর ই অধিকার আছে।



– শুভ্র ফটাফট ব্যাক ছাইটের বাকি সাওয়ার গুলো অন করল। যতগুলো পানির লাইন ছিল সব একসাথে। যাতে পানির শব্দে কিছু শোনা না যায়। তাও পরীর কান্নার আওয়াজ যেন দরজা ভেঁদ করে বের হয়ে যাবে।


– মা আমি সাওয়ার নিচ্ছি বলেই পরীর ঠোট দুটি ওর ঠোট দিয়ে চিপে ধরল। এটা করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই।

অনিতা বলল আচ্ছা আমি দাড়িয়েই আছি।


– মহা ঝামেলা তো মা আবার কেন দাড়াতে গেল।
আজ বুঝি ধরাই পরে যাই। শুভ্র পরীর কান্না থামানোর জন্য ওর গালে কয়েকটা কিস♥ করে ফিসফিসিয়ে বলল পরী আমার কাছ থেকে আদর নিবা আগে বললেই হতো এভাবে কান্নার কোন দরকার ছিলনা বলেই কিস♥ করতে লাগল। কারন শুভ্র ভাল করে জানে বউয়ের যদি স্বামীর উপর থেকে আস্থা একটু কমে যায় তাহলে তাকে আরও বেশি ভালবাসতে হয় তাহলে সে বুঝে নিবে যে তার স্বামী তাকেই শুধু চায়।

– লক্ষী বউ আমার আর কাঁদেনা…….. মা বাহিরে দাড়িয়ে আছে….. আমরা ২ জনেই ধরা পরে যাব সোনা। একটু রিলাক্স হও। আমার বউ আছে তো আবার কয়টা বিয়ে করব তাই…….



– শুভ্র আর কতক্ষণ বাবা! আমার কাজ আছে।


– মা তুমি যাও আমি একটু পর তোমার কাছে যাচ্ছি।


– অনিতা বাধ্য হয়ে চলে গেল।

– পরী মা আছে তাই চুপ……. ওকে?
– পরী অনেকটা ঠান্ডা হয়ে গেছে। তাই মাথা নাড়াল শুধু।
– এই তো good girl বলেই একটা কিস♥ করে বলল তুমি এখানে থাক। আমি না বলা অবদি বাহিরে আসবেনা কেমন! শুভ্র সব পানির লাইন বন্ধ করে দিয়ে ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে আসে।


– ওর মাকে দেখতে না পেয়ে দরজা নক করে দিয়ে একটা টাওয়াল নিয়ে ওয়াস রুমে এসে বলে টাওয়াল পরে বাহিরে আস পরী………



– শুভ্র আলমারি থেকে আর একটা টাওয়াল বের করে শরীর মুছতেই পরী এসে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে।
– শুভ্র একটু হেঁসে বলল বাহ্ আমার পরীটা যে এত্ত এত্ত রুমান্টিক আগে যানতাম না। আমিতো জানতাম আমার বউ একটা শিকারী বাঘিনী যে শুধু আচড়াতে আর কামড়াতেই জানে……..



– আমি শুভ্রর পিঠে মুখ ঘষতে ঘষতে বললাম মানে……! আমি কবে তোমায় আচড়িয়েছি বা খামচি দিছি যে আমার বিরুদ্ধে এত্ত বড় অভিযোগ করছো?
– শুভ্র শুধু হেঁসেই গেল আর কিছু বলল না।



– ছাড়ো পরী মা ডাকছে…….. বলেই শুভ্র একটা ট্রী শার্ট পড়ে নিল।
– আমি আবার ওকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
– এত্ত ফিলিং দেখাতে নেই বাবা সবসময়……অসময়ে কোন কিছুই সুন্দর না বুঝছো?????
– আর শোন! তোমার অনেক আগে থেকে আমি তোমাকে ভালবাসি তাই আমার ভালবাসা নিয়ে যেন কখনও তোমার মনে সন্দেহ না দেখি।
– আমি বাহিরে যাচ্ছি তুমি একটু পর রুমে যেও বলে বাকিটা চেন্জ করেই শুভ্র বের হয়ে যায়।



– মা ডেকেছিলে!(শুভ্র)
– হুম……….. নিতু যে ধমকি দিয়ে গেল সেটা যদি করে ফেলে তাহলে মহা বিপদে পড়বতো আমারা।
– শুভ্র ওর মায়ের কোলে মাথা রেখে সুয়ে বলল ছাড় তো ওর কথা। বিয়াদপ একটা মেয়ে……. ওকে আমি হারে হারে চিনি।
– তাহলে কি বিয়েটা ভেঙ্গে দিবি…… মেয়েটার আশীর্বাদ হয়ে গেছে এখন যদি বিয়ে ভেঙ্গে যায় তাহলে ওরা মুখ দেখাবে কেমন করে সমাজে…..!(অনিতা)
– মা আমাদের ফ্রেন্ড উপলের কথা মনে আছে তোমার?
– যে ছেলেটা সুইসাইড করেছিল ২ বছর আগে একটা মেয়ের জন্য?
– হুম…………… সেই মেয়েটা নিতু ছিল।
– নিতু?
– হুম……. তাহলে বোঝ ও কেমন। সৌন্দর্য, আভিজাত্য,স্টাটাস্, সব কিছু আমার আছে তাই লোভ সামলাবে কিভাবে বল!
– সাংঘাতিক মেয়েতো……
– এমনি আর স্বাধে বলছি মা…… ওকে বিয়ে করা যাবে না।
– ঠিক ডিসেশন নিছিস।
– হুম



– আমি ওর ভিজা কাপড় আর আমার কাপড় নিজ হাতে ধুয়ে দিলাম। এবং ড্রাই মেশিন এ দিয়ে ওয়েট করলাম শুখানোর জন্য। কিছুক্ষন পর কাপড় বের করে পরে নিয়ে শুভ্রর রুম থেকে বের হলাম। কিন্তু আমাকে নিদ্রা আপু দেখে ফেলে।



– পরী তুমি শুভ্রর রুমে কেন গিয়েছিলা?
– আমি থতমত খেয়ে যাই। কি বলবো ওনাকে! আমার কিছু জিনিস লাগত আপু তাই ওকে বলতে গিয়েছিলাম কিন্তু ও তো রুমে নাই বলেই আমার রুমের ভিতর ঢুকতে পারলে বাঁচি।
– নিদ্রা পরীর কথা বিস্বাস করলনা কারন পরীর ২ চোখ অসম্ভব রকম লাল ছিল আর পুরো চেহারা ফোলা ফোলা। দেখে মনে হল প্রচুর কেঁদেছে।




– ঠিক একসপ্তাহ পর একদিন দুপুরের পর সবাই খাওয়া কমপ্লিট করে যে যার রুমে চলে গেছে। শুভ্রও অফিস থেকে এসেছে লাঞ্চ করার জন্য। এখন রেগুলার আসে। শুভ্র ওর রুমে বসে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে। আর পরী ওর রুমে ঘুমিয়ে আছে। এমন সময় বাসায় নিতু আসে। পলা কাজ করছিল। পলা নিতুকে দেখে বলল তুমি এখানে?
– হুম আসতে কি মানা আছে?
– না না মানা থাকবে কেন? তুমি বস আমি নাস্তা নিয়ে আসছি।
– হুম…… বলে বসে পড়ল।


” পলা চলে যেতেই নিতু সুযোগ বুঝে উপরে চলে আসল। আজ সব রেডী করেই নিয়ে আসছে।
ধীরে ধীরে পরীর রুমে গেল। দরজা খোলাই ছিল তাই ঢুকতে অসুবিধা হলো না। দরজার ছিটকি লাগিয়ে দিয়ে পরীর সামনে এসে বলল আমিতো শুভ্রকে কোনদিন পাবো না তাহলে তোকে কেমনে সুখে থাকতে দেই বলেই একটা বালিশ নিয়ে ঘুমন্ত পরীর মুখে চেপে ধরে……………..
চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here