#তোমাতেই_আমি_মগ্ন ?
#পর্ব_১০,১১
#লেখক_ঈশান_আহমেদ
১০
এভাবে একটা মাস কেটে গেলো।অন্না আবিরের সাথে একপ্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।আবির তাদের বাড়িতে আসলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে বসে থাকে।
অন্না ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে।কুয়াশায় ঢাকা রাত।চারিদকে কুয়াশার কারণে অন্ধকার দেখাচ্ছে।শীত চলে এসেছে।সচারাচর অন্না সন্ধ্যার সময় ছাদে আসে না।তবে আজ কেনো জানি তার মনে হলো ছাদে আসলে হয়তো কিছু না বেটার লাগবে।
অন্না চাদরটা আরো গায়ের সাথে জড়িয়ে নিলো।একটু বেশিই শীত লাগছে।হাঠাৎ করে অনেমা বেগম এসে অন্নার কাঁধে হাত রাখলো।অন্না তাকিয়ে দেখে তার মা দাঁড়িয়ে আছে।
কি হয়েছে আম্মু?(অন্না)
মা আবির নিচে এসে বসে আছে।(অন্নার মা)
আবিরের নামটা শুনতেই অন্নার প্রচুর রাগ হচ্ছে।সে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো,
উনি কেনো এসেছে আম্মু?(অন্না)
তুই নাকি এই এক মাস ওর সাথে ভালো ভাবে কথাই বলছিস না?(অন্নার মা)
আম্মু উনার সাথে কথা বলার আমার কোনো ইচ্ছা নেই।তুমি উনাকে চলে যেতে বলো।(অন্না)
কি হয়েছে মা?আমাকে তো বল।(অন্নার মা)
কিছু কথা বলা অনেক কষ্টকর।আর সেই সকল কথা ভুলে যাওয়াই উচিত আমার মনে হয়।(অন্না)
অনেমা বেগম অন্নার হাত শক্ত করে ধরলো,
তুই কি এখনো ওই ফাহাদের বিষয়টা নিয়ে আপসেট আছিস?(অন্নার মা)
আম্মু আমি এখন নিজেকে অনেকটা শক্ত করে ফেলেছি।ওইসব বিষয় ভেবে আর কষ্ট পাই না।ওটা আমার কপালে লিখা ছিল।(অন্না)
কিন্তু আবিরের সাথে কি হয়েছে?সিলেট থেকে আসার পর থেকে দেখছি তুই আবিরকে ইগনোর করিস।(অন্নার মা)
আমি তো উনাকে সব সময় ইগনোর করি।জাস্ট মাঝখানে কিছুদিন প্রায়োরিটি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম তবে সত্যটা জানার পরে আমার উনার প্রতি বিশ্বাসটাই চলে গেছে।(অন্না)
কি এমন সত্য তুই জানতে পেরেছিস?(অন্নার মা)
আম্মু কিছুদিন যাক আমি সবটা তোমাদের নিজেই বলবো।আচ্ছা চলো উনার সাথে গিয়ে দেখা করি নাহলে তো আর তার বাড়িতে যাবে না।(অন্না)
অন্না ছাদ থেকে নেমে সোজা ড্রয়িং রুমে গেলো।গিয়ে দেখে আবির মঈন সাহেবের সাথে কথা বলছে।অন্না সেখানে যেতেই আবির মুচকি হাসি দিয়ে জিগাসা করলো,
কেমন আছো অনুলতা?(আবির)
অন্না নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো,
জ্বি ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন মি.চৌধুরী?(অন্না)
মি.চৌধুরী ডাকটা শুনে আবিরের মুখ মলিন হয়ে গেলো।অন্না তো তাকে আবির বাবু বলে ডাকতো হঠাৎ কেনো মি.চৌধুরী বলছে?
অনুলতা তুমি আমাকে মি.চৌধুরী বলে ডাকছো কেনো?(আবির)
আমি আপনাকে সম্মানের সাথে আবির বাবু বলে ডাকতাম।তবে একজন মিথ্যাবাদীকে আমার পক্ষে সম্মান দেখানো সম্ভব না।(অন্না কর্কশ গলায় কথাগুলো বললো)
অন্না আবিরের দিকে চোখ গরম দেখিয়ে চলে গেলো।আবিরের এই প্রতিদিনের আসা-যাওয়া অন্নার কাছে বিরক্ত লাগছিল তাই এমন করলো সে।
আবির চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ তার মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হলো।সে বাম হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে অন্নাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো।আবির ড্রাইভ করছে।তবে তার অসহ্য মাথা ব্যাথা করছে।তাই সে সোজা ডাক্তারের চেম্বারে গেলো।ডাক্তার একটা ইনজেকশন দিয়ে তার মাথা ব্যাথা কিছুটা কমালো।তার পরে কিছু টেস্ট করালো।আবির ডাক্তারের চেয়ারের সামনে বসে আছে।
মি.চৌধুরী কালকে এসে রিপোর্টগুলো নিয়ে যাবেন।(ডাক্তার)
আবির হ্যাঁ সূচক সম্মতি জানিয়ে চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসলো।অন্নার কথার মানে সে ভালো করে বুঝতে পারছে।আবির এটা বুঝে গেছে যে নিশান সবটা জানিয়েছে অন্নাকে।নিশানের উপর রাগে সে ফুসছে।কাছে পেলে হয়তো নিশানকে মেরে মাটিতে শুইয়ে ফেলতো।আফসোস! দশদিন আগেই নিশান কানাডায় চলে গেছে।
কানাডা গিয়েছিস তো কি হয়েছে?কিছুদিন পরে তো একবারে দেশে চলে আসবি।যেদিন দেশে আসবি সেদিনই তোর শেষদিন হবে নিশান।(আবির দাঁতে দাঁত চেপে বললো)
–
–
–
ফাহাদ মিমির একটা ছবি নিয়ে বসে আছে।তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।ফাহাদ এখন অনেকটা পাল্টে গেলেও পুরোপুরি পাল্টায়নি।তবে সে মিমির জন্য প্রচন্ড পরিমাণে কষ্ট পাচ্ছে।মিমিকে হারানোর যন্ত্রণাটা দিনদিন তীব্র আকার ধারণ করছে।এই একমাসে মিমিকে অনেক খুঁজেছে তবে পায়নি।মিমির এই দুনিয়াতে কেউ নেই।সে একাই থাকতো তার বাড়িতে।কিন্তু সেই বাড়িতে এখন তালা ঝুলছে।
ফাহাদ একটার পর একটা বিয়ারের বোতল শেষ করছে।আর চোখের জল ফেলছে।সে যে এভাবে কখনো একটা মেয়ের জন্য কষ্ট পাবে সেটা তার কল্পনার বাইরে ছিলো।
/?/
দীর্ঘ একমাস পরে তোমার প্রিয় ছেলের খোঁজ পেয়েছি আম্মু?(ফারাবী)
ফারাবীর কথা শুনে রুমানা বেগমের হাত থেকে কফির কাপটা পড়ে যায়।ফারাবী তার মাকে সেখান থেকে নিয়ে এসে সোফায় বসায়।তারপরে এক গ্লাস পানি এনে দেয়।রুমানা বেগম পানি খেয়ে নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করেন।
ও এখন কেমন আছে?আর ও কোথায় থাকে?ও কি এখন ভালো হয়ে গেছে?(ফারাবীর মা)
ফারাবী তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,
না আম্মু।ও আগে যেমন ছিলো এখনো তেমনই আছে।বলতে পারো আরো বিগড়ে গেছে।ওই যে সবাই ফাহাদ হোসেনের নাম নেয় না!সেটা তোমার ছেলে ফাহাদ খান।ও এখন তোমার টাইটেল লাগিয়ে ফাহাদ হোসেন হয়েছে।এই পর্যন্ত তার নামে দশটা ধর্ষণের অভিযোগ আছে প্লাস সে নাকি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।তার কোম্পানির বিভিন্ন খাবারে সাথে নেশার ঔষধ পাওয়া গেছে।কিন্তু টাকার জোরে তাকে কেউ অ্যারেস্ট করতে পারে না।(ফারাবী)
ফারাবীর চোখ-মুখ লাল হয়ে গেছে।নিজের ভাইয়ের নামে এইসব বলতে তার অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কিছু করার নেই সবটাই নিয়তি!
রুমানা বেগম মুখে আঁচল ঢেকে কাঁদছেন।দরজার আড়ালে এতোক্ষণ ধরে ফারাজ খান দাঁড়িয়ে সবটা শুনেছেন।তিনি ভিতরে এসে বললেন,
যেই ছেলের জন্য আমরা এই ঢাকা ছেড়ে চলে গেছিলাম।তার নাম এই বাড়িতে আমি আর শুনতে চাই না।(ফারাজ খান শক্ত কন্ঠে বললেন)
তারপরে তিনি নিজের রুমের দিকে চলে গেলেন।ফারাবী গিয়ে তার মায়ের পাশে বসে উনাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
আমার গর্ভে এমন পাপী কিভাবে জন্ম নিলো?দুই ভাই।এক মিনিটের ছোট-বড় হবে।বড় ছেলেটা কোথায় আর ছোট ছেলেটা কোথায়!দুজনের মাঝে এতো পার্থক্য কিভাবে হয়?বড় ছেলে বাবা-মার সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে আর ছোট ছেলে কিনা সারাদিন ব্যস্ত থাকে কিভাবে বাবা-মার নাম উজ্জ্বল করা যায় তা নিয়ে!(ফারাবীর মা)
ফারাবী তার মাকে জড়িয়ে ধরলো,
মা এগুলো এখন বাদ দেও।(ফারাবী)
ফারাবী তার মাকে রুমে দিয়ে এসে নিজের রুমে চলে আসলো।ফ্রেশ হয়ে এসে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।
তোমাকে কি কখনো আর আমি খুঁজে পাবো না অনুমা!এতো ছোট্ট একটা শহরে কি-না তোমাকেই খুঁজে পাওয়া যায় নাহ্।যে আমার সবটা জুড়ে আছে,তাকে না পেলে যে বেঁচে থাকা দায় হয়ে যাবে।(ফারাবী)
/?\
অন্না বেলকনিতে বসে কফি খাচ্ছে আর বই পড়ছে।এখন এটাই তার প্রতিদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।কারণ এখন বেশিরভাগ সময় তার রাতে ঘুম আসে না।তাই সে এভাবেই সময় পাড় করে দেয়।সকালে ফজরের নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে ভার্সিটিতে দৌড় দেয়।এভাবেই চলছে তার জীবন।রাতে ঘুম না হওয়ার কারণে তার চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে।
__✨__
আম্মু আমি আজ একটু আমার ভার্সিটিতে যাবো।যেখানে আমি পড়তাম।ওখানে আমার এক ফ্রেন্ড টিচার হিসেবে জয়েন করেছে।তার সাথেই দেখা করতে যাবো।(ফারাবী)
আচ্ছা ঠিক আছে।আর শোন যাওয়ার সময় একটু স্টাইলিশ পোশাক পড়ে যাস।তুই তো শুধু তোর বাবার মতো কোর্ট-প্যান্ট পড়েই ঘুরে বেড়াস।(ফারাবীর মা)
কই আম্মু আমি তো সবই পড়ি।(ফারাবী)
পড়িস তবে খুব কম।(ফারাবীর মা)
আম্মু সব সময় তো অফিসে যেতে হয়।তাই ওগুলোই বেশি পড়া হয়।ওকে তুমি যখন বলেছো তখন আমি স্টাইলিশ পোশাক পড়েই যাবো মাদার বিডি।(ফারাবী)
ফারাবী তুই আমাকে আবার ওই নামে ডাকছিস?(ফারাবীর মা)
ইউ নো আমার তোমাকে এই নামে ডাকতেই ভালো লাগে।(ফারাবী)
ফারাবী মুচকি হেসে তার রুমের দিকে চলে গেলো।রুমানা বেগম দাঁড়িয়ে হাসছেন।
ফারাবী তার রুমে এসে একটা সাদা হাফহাতা গেঞ্জি,ধূসর রঙের জিন্স আর লাল রঙের একটা জ্যাকেট পড়লো।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলগুলো স্পাইক করে নিচে নামলো।
ফারাবী তার মায়ের সামনে গিয়ে বললো,
কেমন লাগছে মাদার বিডি?(ফারাবী)
রুমানা বেগম মৃদু হেসে ফারাবীর কপালে একটা চুমু দিয়ে বললো,
মাশাআল্লাহ।(ফারাবীর মা)
ফারাবী তার মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলো।সে গাড়ি ড্রাইভ করে ভার্সিটির সামনে গেলো।ভার্সিটির গেট দিয়ে ঢুকতে একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেলো।ধাক্কা খাওয়ার সাথে সাথে ফারাবী চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে ফেললো।তার মুখে হাসি ফুটেছে।কারণ তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অন্না।
অন্না হা হয়ে তাকিয়ে আছে।সে বুঝার চেষ্টা করছে এটা ফাহাদ না ফারাবী!অন্না ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে ফারাবীর দিকে।
ফারাবী আস্তে করে বললো,
কি ব্যাপার কেমন আছেন মিস.অনুমা?(ফারাবী)
অন্নার আর বুঝতে বাকি নেই এটা ফারাবী।অন্নার রাগে মুখ লাল হয়ে গেছে।
এই আপনি আমাকে অনুমা বলেন কেনো?(অন্না)
আমার ভালো লাগে।আপনার কোনো সমস্যা আছে?সমস্যা থাকলেও সেটা আমার দেখার বিষয় না।(ফারাবী)
ফারাবী সোজা হেঁটে অফিস রুমের দিকে চলে গেলো।অন্না তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।ফারাবী অফিস রুমে গিয়ে দেখে তার বন্ধু তাজ বসে আছে।
কি রে তাজু কেমন আছিস?(ফারাবী)
তাজ ফারাবীকে দেখে উঠে দাঁড়ালো।কতদিন পরে দুজনের দেখা হলো।তাজ ফারাবীকে জড়িয়ে ধরলো।
কবে এসেছিস ঢাকায়?(তাজ)
এইতো একমাস হয়েছে।এই একমাসে তোকে খুঁজে বের করেছি।(ফারাবী)
দু’জনে বসে পুরনো দিনের গল্প করতে ব্যস্ত।ফারাবী গল্প শেষ হলে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
তোর সাথে দেখা করতে এসে আমার অনেক প্রিয় একজনকে খুঁজে পেয়েছি।থ্যাঙ্কিউ তাজু।(ফারাবী)
ফারাবী ক্যাম্পাস দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।হঠাৎ দেখলো অন্না একটা গাছের নিচে বসে কয়েকটা মেয়ের সাথে গল্প করছে।ফারাবী এক দৃষ্টিতে অন্নার দিকে তাকিয়ে আছে।সাদা আর নীল রাঙা থ্রি-পিসে অন্নাকে অনেক সুন্দর লাগছে।জাস্ট চুলগুলো খোলা।মুখে কোনো প্রকার মেকআপ নেই।একদম সিম্পল।তাতেই সে অতুলনীয়।তবে একটা জিনিস দেখে ফারাবীর মুখটা মলিন হয়ে গেলো।কারণ অন্নার চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।
অন্না তাকিয়প দেখে তার থেকে চার কদম দূরে ফারাবী একভাবে তার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।অন্নার কিছুটা ইতস্তত বোধ করে।অন্না ফারাবীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
আপনি এমন করে তাকিয়ে আছেন কেনো?(অন্না)
রাতে ঘুম হয় না আপনার?(ফারাবী)
ফারাবীর কথায় অন্না কিছুটা অবাক হয়।সে কি জিগাসা করলো আর ফারাবী কি বললো!
আমি আপনাকে কি জিজ্ঞেস করেছি?(অন্না)
আগে আমার প্রশ্নের উত্তর চাই।(ফারাবী)
আপনার এমন আজব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য না।(অন্না)
ফারাবী মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
তাহলে আমি-ও আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য না মিস.অনুমা।(ফারাবী)
ফারাবী অন্নার সামনে দিয়ে হেঁটে চলে গেলো।অন্নার প্রচুর রাগ হচ্ছে।এই ছেলেটা তাকে দেখলেই অনুমা বলে।যা অন্নার একদম ভালো লাগে না।
ফারাবী পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে অন্না বিড়বিড় করছে।ফারাবী মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
হয়তো কোনো কারণে তুমি ভালো নেই।যা আমি তোমার মুখ দেখে বুঝতে পারছি।তবে যেদিন তুমি আমার তবে সেদিন থেকে আর কোনো কষ্ট তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে না।ইহা ফারাবী খানের প্রমিস!(ফারাবী)
চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে ভার্সিটি থেকে বের হয়ে চলে যায় ফারাবী।
#চলবে……..
#তোমাতেই_আমি_মগ্ন ?
#পর্ব_১১
#লেখক_ঈশান_আহমেদ
অন্না বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বসে আছে।তার অনেক রাগ হচ্ছে।ফারাবী তাকে কেনো অনুমা বলে ডাকবে!এটাতেই তার ঘোর আপত্তি।
অনেমা বেগম অন্নার রুমে এসে দেখে অন্না নাক ফুলিয়ে বিছানায় বসে আছে।অনেমা অন্নার চেহারা দেখেই বুঝে গেছেন যে অন্না রেগে আছে।অনেমা বেগম এসে অন্নার পাশে বসলো,
কি রে মা এমন রেগে আছিস কেনো?(অন্নার মা)
আরে আম্মু বলো না!ওই যে ফারাবী খান আছে না মানে চৌধুরী আঙ্কেলে সাথে যারা ডিল করেছিল।(অন্না)
হুম বুঝতে পেরেছি আমি।(অন্নার মা)
ওই লোক খালি আমাকে অনুমা বলে ডাকে।আমার মধ্যে নাকি মা মা ভাব আছে।একদম অসহ্য লাগে আমার।(অন্না)
অন্না মুখ গোমড়া করে বসে আছে।অন্নার কথা শুনে অনেমা বেগম জোরে হেসে দিলো।অন্না তার মায়ের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
তুমি এতো হাসছো কেনো আম্মু?(অন্না)
অনেমা বেগম হাসি থামিয়ে বললো,
আচ্ছা এইসব বাদ দে।আমি তোর সাথে একটা জরুরি কথা বলতে আসছি।(অন্নার মা)
হুম বলো আম্মু।(অন্না)
তোর জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে।(অন্নার মা)
অনেমা বেগমের কথায় অন্না চমকে উঠলো।হা করে তার মায়ের মুখের পানে চেয়ে আছে।অনেমা বেগম বিষয়টা বুঝতে পেরে অন্নার কাছে সরে বসলো।তারপরে অন্নার কাঁধে হাত রাখলো।অন্না চোখ বন্ধ করে তার মাকে জিজ্ঞেস করলো,
কে পাঠিয়েছে?ওই আবির চৌধুরী?(অন্না)
না আবির বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়নি।(অন্নার মা)
অন্না কিছুটা অবাক হয়ে তার মায়ের দিকে তাকালো।
তাহলে কে?(অন্না)
ফারাজ খান তার ছেলে ফারাবীর জন্য তোকে বউ করে নিয়ে যেতে চায়।(অন্নার মা)
ফারাবীর নাম শুনতেই অন্না অবাক হয়ে গেলো।
আম্মু তার মানে ফারাবী খান জানে এই বিষয়ে?(অন্না)
না রে মা।ফারাজ খান প্রস্তাব পাঠিয়েছে।তুই রাজি থাকলে ফারাবীকে জানাবে।(অন্নার মা)
আম্মু সবটা তো তোমরা জানো।ওই ফারাবী খান যদি জানতে পারে আমি একজন ধর্ষিতা।উনি আমাকে কখনো বিয়ে করবে না।আর আমি এখন বিয়ে করতেও চাই না।(অন্না)
অন্না কথাগুলো বলে নিচে চলে গেলো।অনেমা বেগম দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্নার পিছনে গেলো।
/?/
আবির ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছে রিপোর্টের জন্য।ডাক্তার এসে আবিরের সামনে বসলো।ডাক্তারের মুখ মলিন হয়ে আছে।
কি হয়ে ডক্টর?আপনার চোখ-মুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো?(আবির)
আমার বলতেই খারাপ লাগছে।এমন কম বয়সে এই অবস্থা।(ডাক্তার)
আবির অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।ডাক্তার আবিরের দিকে রিপোর্টটা এগিয়ে দিয়ে বললো,
তোমার ব্রেইন টিউমার হয়েছে।একদম লাস্ট পর্যায়ে।দুই-তিন দিনের মধ্যে যদি অপারেশন না করা হয় তাহলে তুমি আর………
ডাক্তার এটুকু বলে থেমে গেলো।নিজেকে সামলে বললো,
Sorry to say,তাহলে তুমি আর বাঁচবে নাহ্।(ডাক্তার)
আবিরের মনে হচ্ছে সবকিছু থমকে গেছে।তার মুখে চিন্তার ভাব।চোখ-লাল হয়ে যাচ্ছে ভয়ে।চোখ থেকে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো।হয়তো এটাই তার পাপের শাস্তি!
আবির নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে মলিন হাসি দিয়ে রিপোর্টটা নিয়ে চলে আসলো।রিপোর্টটা গাড়িতে রেখে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি তো অনেক অন্যায় করেছি।আমি অন্নাকে ভালোবাসতাম ঠিকই তারপরেও আমি মারিয়ার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছি।সম্পর্কে জড়ায়নি শুধু তাকে বিয়েও করেছি।মেয়েটা যখন আমার বাচ্চাকে পৃথিবীতে আনার জন্য লড়াই করেছে তখন তার হাত ছেড়ে দিয়ে তাকে একা রেখে চলে এসেছি শুধুমাত্র অন্নার জন্য।কিন্তু অন্নাকেও তো আমি সত্যিটা বলিনি।আর আমি তো অন্নাকে কখনো মন থেকে ভালোই বাসিনি।খালি আমার জেদটাকে প্রশয় দেওয়ার জন্য এমনটা করেছি।তাকে ভালোবাসার কথা বলে চাপ সৃষ্টি করেছি।ভাগ্যিস নিশান অন্নাকে সবটা জানিয়েছে নাহলে তো অন্না আমার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়তো।না আমি আজকেই অন্নাকে সব বলবো।আর কালকে কানাডা যাবো শেষবারের জন্য মারিয়াকে আর মেয়েটাকে দেখতে।(আবির)
আবির একভাবে কেঁদে চলেছে।সে যে কতো বড় অপরাধ করেছে তা সে এখন বুঝতে পারছে।আবির নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে অন্নার বাড়িতে গেলো।
!?!
অন্না বসে বসে তার বাবা-মার সাথে গল্প করছে।হঠাৎ দরজায় কলিংবেল বেজে উঠলো।অন্না গিয়ে দরজা খুলে দেখে আবির দাঁড়িয়ে আছে।আবিরের চোখ-মুখ ফুলে আছে।দেখে মনে হচ্ছে অনেকক্ষণ যাবৎ কান্না করেছে।
আপনি এখানে কেনো এসেছেন?(অন্না)
আমি তোমাদের সবাইকে কিছু সত্যি কথা বলতে চাই।আমি জানি তোমাকে নিশান সবটা বলেছে তারপরেও তোমার বাবা-মা তো আর জানে না।আমি তাদেরকে জানাতে চাই।(আবির)
অন্না তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো,
যাক ভালো নিজের কুকর্ম গুলো নিজেই বলতে এসেছেন।(অন্না)
অন্না আবিরের সামনে থেকে তার মায়ের পাশে এসে বসলো।আবির এসে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
আবির বসো বাবা।(অন্নার বাবা)
আবির মঈন সাহেবের পাশে বসলো।
কি বলতে চাও তুমি?(অন্নার বাবা)
আঙ্কেল আমি আপনাদের দিনের পর দিন ঠকিয়েছি।বিশেষ করে অন্নাকে সবচেয়ে বেশি।আসলে আমার একটা সমস্যা আছে।যেটা আমার ভালো লাগে সেটা আমার লাগলেই।এই জন্যই আমি অনেক অন্যায় করে ফেলেছি।আসলে আমার সাইকোলজিক্যাল প্রবলেম আছে।আমি অন্নাকে আগে থেকেই ভালোবাসতাম।তবে অন্না আমাকে পছন্দ করতো না।সেই কারণে আমি কানাডায় চলে যাই পড়াশোনা করতে।সেখানে গিয়ে একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়।আমি সেই মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলি।তারপরে তাকে বিয়ে করি।আমি তখন অন্নাকে ভুলেই গেছিলাম প্রায়ই।মারিয়াকে নিয়ে সুখে ছিলাম।দুই বছর পরে যখন পড়াশোনা শেষ হলো।তখন হঠাৎ আমার মাথায় আবার অন্নার ভূত চাপলো।আমার মনে হতে লাগলো অন্নাকে যেকোনো উপায়ে আমার পেতেই হবে।তখন আমি ঠিক করি দেশে চলে আসবো।তখন মারিয়া প্রেগন্যান্ট ছিলো।মারিয়া আমাকে আসতে অনেকবার বারণ করেছিলো।তবে আমি ওর সাথে অনেক বাজে ব্যবহার করে দেশে চলে আসি।জানেন আঙ্কেল আমার একটা মেয়ে হয়েছে।আমি তাদেরকে অনেক ঠকিয়েছি তাই হয়তো আজ আমার এই অবস্থা।আমার ব্রেইন টিউমার হয়েছে।দুইদিনের মধ্যে অপারেশন না করলে আমি আর বাঁচবো না।তবে আমি চাই না বেঁচে থাকতে।আমার মতো পাপীর এই দুনিয়াতে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।আজকে আপনাদের সবটা বলতে পেরে নিজেকে হালকা লাগছে।কালকে কানাডার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করবো।আমার ছোট্ট মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে চাই আর মারিয়ার কোলে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে চাই।(আবির)
নিরবতা বিরাজ করছে অন্নাদের বাড়ির ড্রয়িং রুমে।অন্না এক কোণে নিজেকে শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে।এইসবে এখন সে আর কষ্ট পায় না।
হঠাৎ করে আবির মাথায় হাত দিয়ে জোরে একটা চিৎকার দিয়ে সেন্সলেস হয়ে গেলো।অন্নার বাবা আর ড্রাইভার মিলে আবিরকে গাড়িতে তুলে হসপিটালে নিয়ে গেলো।পথের মাঝে অন্না আকরাম সাহেবকে ফোন করে সবটা জানিয়েছে।হসপিটালে নিতে ডাক্তার বললো,
উনাকে ইমিডিয়েটলি অপারেশন থিয়েটারে নিতে হবে।নাহলে উনাকে বাঁচানো যাবে না।(ডক্টর)
আকরাম সাহেব এসে হাজির হয়েছেন।
যত টাকা লাগে আপনাকে দিবো।আপনি আমাকে ছেলেকে বাঁচিয়ে দিন ডাক্তার।(আবিরের বাবা)
আবিরকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলো।আকরাম সাহেব দাঁড়িয়ে কাঁদছে।আর মঈন সাহেব উনাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।অন্না আর অনেমা বেগম একপাশে দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ করে নিশান হসপিটালে এসে হাজির হলো।সঙ্গে একটা মেয়ে তার কোলে ছোট্ট একটা বাচ্চা।
কি হয়েছে আবিরের?আঙ্কেল আমি আপনাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন জানতে পারলাম আবির নাকি হাসপাতালে।(নিশান)
আকরাম সাহেব কথা বলতে পারছেন না কাঁদার কারণে।মঈন সাহেব নিশানকে সবটা বললো।নিশান সবটা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।যতই হোক আবির তার বেস্টফ্রেন্ড ছিলো।মারিয়া-ও কেঁদে দিয়েছে।
অনেমা বেগম মেয়েটা আর বাচ্চাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
এরা কারা নিশান?(নিশান)
নিশান চোখ মুছে বললো,
আন্টি এ হলো মারিয়া।আবিরের বউ।আর ও হলো আফিয়া।আবিরের মেয়ে।(নিশান)
অনেমা বেগম মারিয়ার কাছে এগিয়ে গেলো।অন্না গিয়ে আফিয়াকে কোলে নিলো।অনেমা বেগম মারিয়াকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
হঠাৎ করে সেখানে ফারাজ খান আর ফারাবী এসে হাজির হলো।
কি শুনছি এইসব?সব নিউজে দেখাচ্ছে বিখ্যাত বিজনেস ম্যান আবির চৌধুরী অনেক অসুস্থ।কি হয়েছে আবিরের?(ফারাবীর বাবা)
আপনি যা শুনেছেন ঠিকই শুনেছেন।আবির চৌধুরীর অপারেশন চলছে।উনার অবস্থা অনেকটা ক্রিটিকাল।(অন্না)
ফারাবী অন্নার দিকে তাকিয়ে দেখে অন্না একদম স্বাভাবিক।একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসে আছে।ফারাবী কিছু না বলে চুপচাপ এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
রাতের বেলা,
ডক্টর এসে বললো,
উনি এখন ঠিক আছেন।ক্যাবিনে দেওয়া হয়েছে।কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান চলে আসবে।আপনারা গিয়ে দেখা করতে পারেন।
আকরাম সাহেব,নিশান আর মারিয়া এগিয়ে গেলো।তারা রুমে গিয়ে দেখে আবিরের জ্ঞান ফিরেছে।আকরাম সাহেব ছেলের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে বের হয়ে আসেন।নিশান আর মারিয়া দাঁড়িয়ে আছে।নিশানের কোলে আফিয়া।নিশান আফিয়াকে মারিয়ার কোলে দিয়ে বললো,
তোমরা দুজনে কথা বলো।আমি বাইরে আছি।(নিশান)
নিশান ক্যাবিন থেকে বের হয়ে গেলো।আবির একভাবে মারিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
মারিয়া আমাকে ক্ষমা করে দেও।আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি।বিশ্বাস করো কখনো আর এমনটা করবো নাহ্।আই এম রেলি সরি।(আবির)
আবির সবকিছু সরি বললেই মিটে যায় না।তবে কি জানো আমি অনেক বেহায়া।এতো অবহেলার পরেও আমি সেই তোমাকেই ভালোবাসি।সো প্লিজ আর আমাদের একা করে দিও না।(মারিয়া কাঁদতে কাঁদতে বললো)
আবির মুচকি হেসে বললো,
আর কখনো তোমাদের ছেড়ে কোথাও যাবো না।(আবির)
আবির আর মারিয়া একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
/✨\
অন্নাকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে ফারাবী গিয়ে অন্নার পাশে বসলো,
কি মিস.অনুমা মন খারাপ নাকি আপনার?(ফারাবী)
আপনি কি বলতে এসেছেন এখানে?(অন্না)
এখানে একজন আরেকজনকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।ধরে নিন আমিও আপনার সান্ত্বনা দিতে এসেছি।(ফারাবী)
ফারাবীর কথায় অন্না মুচকি হাসি দিলো।
হাসলে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগে।(ফারাবী)
অন্না তাকিয়ে দেখে ফারাবী তার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে।অন্না চোখ সরিয়ে বলে,
এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?(অন্না)
এতো মায়াবী চোখ,মুখে মুচকি হাসি,এমন অপলক চাহনি দেখে কেই বা চোখ সরাতে পারে!আপনার এই চোখের মাঝে আমি বারে বারে নিজেকে হারিয়ে ফেলি।আপনার হাসি দেখলে মনে হয় এই হাসিতেই আমার সর্বনাশ লেখা আছে।আপনার সৌন্দর্য দেখে হয়তো ফুলেরা-ও হিংসা করে।(ফারাবী)
অন্না মুগ্ধ নয়নে ফারাবীর দিকে আছে।ফারাবী এতো সুন্দর করে কথা বলতে পারে!
হঠাৎ নিশানের ডাকে ফারাবী আর অন্নার ঘোর কাটলো।
মনে হচ্ছে নতুন লায়লা-মজনুর সৃষ্টি হয়েছে।বাই দ্যা ওয়ে আবির সবাইকে একটু ক্যাবিনে ডাকছে।আপনারা দুজনেও চলেন।(নিশান)
অন্না আর ফারাবী নিশানের সাথে ক্যাবিনে গেলো।আবির অন্নাকে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
অন্না জানি আমি অনেক অন্যায় করেছি।এর জন্যই আমি চাই তোমার জীবন থেকে দূরে সরে যেতে।আমি,বাবা,মারিয়া আর আমার পুচকি মেয়ে মিলে কানাডায় চলে যাবো।আমি চাই তোমার জীবন থেকে আবির নামক তীব্র যন্ত্রণার সমাপ্তি ঘটুক।(আবির)
অন্না চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।এই পরিস্থিতিতে সে কি বলবে জানে না সে!
নিশান তুই কি যাবি আমাদের সাথে?(আবির)
নাহ্।আমি বরং তোদের এখানের কোম্পানি সামলাবো।আমার প্রাণভোমরা কে রেখে আমি কি করে যাবো!(নিশান)
তোর প্রাণভোমরা আবার কে?(আবির)
অবিয়াসলি দিশা।মানে আমার ভীতুরাণী।(নিশান)
নিশানের কথায় ক্যাবিনে উপস্থিত সবাই হেসে দিলো।
#চলবে………..