তুই_একমাত্র_আমার_অধিকার,16,17

0
1803

তুই_একমাত্র_আমার_অধিকার,16,17
ছোহা_চৌধুরী
#পর্ব১৬

সেপারেশন কথাটা শুনে আমি যেনো সবকিছু ঝাপসা দেখছি।আর কিছু মনে নেই।

জ্ঞান ফিরেছে পরে দেখি শুভ্র ল্যাপটপে কাজ করছে।আমি উঠে বসলাম।শরীর নিস্তেজ লাগছে হয়তো সারাদিন না খাওয়ার কারনে।আর আজকে বাড়ি থেকে কেউ আসেনি। হয়তো শুভ্র জানায়নি। না জানানো কারণে ভালোই হয়েছে।আমি ওর সাথে খোলামেলা কথা বলতে পারবো।কারন এই মুহূর্তে কথা বলাটা খুবই দরকার।

শুভ্রকে দেখে আরেক দফা অবাক হলাম।মুখটা কেমন যেনো মলিন হয়ে গিয়েছে।চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে।নেভিব্লু কালার শার্ট পরা।এসি ওন থাকার পরও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম।ওকে এরকম আপসেট আমি কখনো দেখিনি।আমার জ্ঞান ফিরেছে দেখে শুভ্র সোফা ছেড়ে বিছানায় এসে বসলো।আর আমাকে জিজ্ঞেস করল, এখন এখন কেমন ফিল করছো?
আমি যেনো এই প্রশ্নের অপেক্ষাতেই ছিলাম।প্রশ্নটা করার সাথে সাথে আমি শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলাম।কিন্তু এবার শুভ্র হাত ছাড়িয়ে দিল না।বরং আগলে নিল।আর বললো, নিরাপাখি কান্না থামাও।নয়তো শরীর খারাপ করবে।কিন্তু আমার কান্না যেন থামছেই না।অনেক কষ্টে কান্না থামালাম।
তারপর শুভ্রকে বললাম,আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।
শুভ্র বললো আগে খেয়ে নাও।তারপর উত্তর দিবো।
আমি ভদ্র মেয়ের মতো খেয়ে নিলাম।তারপর শুভ্র আমার সামনে এসে বসলো।বসে বললো, তো বলো কি বলবে?
আমি বললাম,আমি কাকে কি বলেছি তুমি বলো।
শুভ্র কিছুক্ষন নিরব থেকে বললো,আচ্ছা নিরা তুমি কি কখনো আমাকে ভালোবাসোনি!নাকি সবটা অভিনয় ছিল।কেন আমার সাথে মিথ্যে নাটক করলে? কেন আমার ফিলিংস নিয়ে খেললে?

আমার চোখে পানি চিকচিক করছে। তাও নিজেকে শক্ত রেখে বললাম,আমার কাছে ভালোবাসা মানেই তুমি।আমার হ্যাপিনেস মানেই শুভ্র। শুভ্র নামের মানুষটাকে চাইলেও আমার লাইফ থেকে আলাদা করা যাবে না।আমার জীবন বদলানোর মূলে শুভ্র। আমার অস্তিত্তে মিশে আছো তুমি। তুমি পাশে নাই মানে আমার অস্তিত্ব নেই। তোমাকে ছাড়া আমি কখনো নিজেতে কল্পনা করিনা।
শুভ্র ঠান্ডা মাথায় বললো,তাহলে যুথিকে এগুলো কি বলেছো?আর এই ছবিগুলোর মানে কি?
আমি ছবি গুলো হাতে নিয়ে তো পুরো অবাক। অয়নের সাথে ঘনিষ্ঠ কিছু ছবি।বাট এমন কিছুই আমি করিনি।আমি কেন যে আমার অতীত থেকে বের হতে পারছি না!আর কি বলেছে যুথি আপু?
যুথি বলেছে,ওর সাথে তো তোমার সম্পর্ক মোটামুটি ভালোই।তুমি নাকি বলেছো,আমাকে তুমি বাধ্য হয়ে বিয়ে করেছো।এখনো নাকি অয়নকেই ভালোবাসো। তুমি নাকি অয়নের বিয়ে ভাঙতে গিয়েছিল।কারন তুমি নাকি অয়নকে অন্য কারো হতে দেখতে পারবে না।আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি।কিন্তু পরে দেখি তুমি সত্যিই গিয়েছো।আর ছবিগুলো দেখে আমি আরো কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম।আমার কাছে এই চেনা পৃথিবী অচেনা মনে হচ্ছিল। আমি নাকি তোমার ভালোবাসার যোগ্যই না।
কিন্তু আমি তো এজন্য দেখা করতে যায়নি।আমি গিয়েছিলাম নয়নার বিয়ে ভাঙতে। কারণ নয়না বিয়ে করে রাজি না।ইভেন আমি জানতাম ও না যে নয়নার অয়নের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে। আর কি বলেছে?
আর বলেছে,তুমি নাকি বাধ্য হয়ে আমার সংসার করছো।আমি সিংগাপুর গেলে তুমি অয়নের কাছে ফিরে যাবে।তুমি নাকি আমাকে কখনো ভালোই বাসোনি।কারন অয়নকে নাকি তুমি কখনোই ভুলতে পারবে না।
আমার অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো।শুভ্রের কাছে আমাকে এতোটা ছোট করতে পারলো।তাই অভিমানী সুরে বললাম,আর তুমি এজন্য আমাকে অবিশ্বাস করলে।ডিভোর্স দিতে চাইলে!এই তোমার ভালোবাসা!আমাকে একবার জিজ্ঞেস করতে তো পারতে!
শুভ্র আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,সত্যি আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি।কিন্তু দেখা করতে যাওয়া, আর ছবিগুলো দেখে বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম।আর তোমার থেকে সেপারেশন চেয়েছিলাম, কারন আমি চেয়েছিলাম তুমি হ্যাপি থাকো।তোমার হ্যাপিনেসই আমার কাছে সবকিছু। হয়তো আমি তোমাকে হ্যাপি করতে পারিনি যেটা অয়ন পারবে।তাই আরকি!

আমি বললাম,থাক আর বলতে হবেনা।কখনো কখনো নিজের জিনিস জোর করে আদায় করতে হয়।নয়তো হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে দেখো সেদিন যদি তুমি আমাকে জোর করে বিয়ে না করতে তাহলে আমাকে হয়তো বা হারাতে হতো তোমার।তাই কিছু কিছু জিনিস জোর করে আদায় করতে হয় ।কথা দাও আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না কখনো না।

শুভ্র হেসে বললো,কখনো যাবো না।এখনতো দুপুর হয়ে গেছে । আর তুমিও অসুস্থ। জাস্ট কালকে সকালটা হতে দাও।যুথির ব্যবস্থা করবো আমি।ওকে বুঝাবো শুভ্র কি জিনিস!আর আই প্রমিস যুথি যদি যুথি জেনে শোনে মিথ্যে বলে থাকে তাহলে ওর জন্য আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না।আমি ভুলে যাব যে ও আমার মামাতো বোন।কারন ওর জন্য আমার নিরাপাখিকে আমি কষ্ট দিয়েছি।আমার নিরাপাখি ওর জন্য শুধু কেঁদেছে। আর তোমার প্রতিটা চোখের পানি ফোটা যেনো আমার বুকে এসে তীরের মতো লাগছে।আমি ছাড়বো না ওকে।আমি আমার নিরাপাখির জন্য কতটা ভয়ংকর হতে পারি সেটা ও জানে না। বাই দা ওয়ে তুমি এখন সুস্থ না!
হঠাৎ এমন প্রশ্নে আমি কিছুটা অবাক।তাও বললাম,হুম সুস্থ।
শুভ্র শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,গেট রেডি ফর নাইট মিসেস শুভ্র নীল আহমেদ।
_____________ _________________

অয়নের ফোনে রিং বেজে উঠতেই দেখলো স্কিনে অচেনা নাম্বার। অয়ন ফোন রিসিভ করলো।
আসসালামু আলাইকুম, দিস ইজ অয়ন চৌধুরী।
নয়না গলা ঝেড়ে বললো,ওয়ালাইকুম আসসালাম।আমি নয়না।
অয়ন হেসে বললো,ওহ আসলে নাম্বার সেভ নেই তো তাই আরকি।তো বলুন কি বলবেন?
কেমন আছেন আপনি?
এইতো ভালো।আপনি?
ভালো।আসলে আপনি আমার থেকে বয়সে বড়।তাই তুমি করেই বলতে পারেন।
ওহ ওকে।তো কি করছো তুমি?
নয়না বললো,এইযে আপনার সাথে কথা বলছি।
অয়ন কিছুটা সংকোচ নিয়েই বললো,বিয়ের আগে কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলে নেয়া ভালো।তুমি যদি পারমিশন দাও তাহলে প্রশ্নগুলো তোমাকে করব।
নয়না হেসে বলল,আরে বলুন সমস্যা নেই।
আচ্ছা তুমি কি কখনো রিলেশন করেছো?বা কাউকে ভালোবাসো!যদি ভালোবাসো তো আমাকে বলতে পারো।আমি প্রয়োজনে তোমাকে সাহায্য করব।
নয়না বললো,আরে না না।আমাকে দিয়ে ওইসব প্রেম ভালোবাসা হয়না।আর রিলেশন তো দুরের বিষয়। আপনি?
আসলে আমি আরো ৫ বছর আগে একজনের সাথে রিলেশন করেছিলাম মজা করে।বাট পরে বাহিরে চলে যাই।পরে বুঝতে পারি যে আমি ওই মেয়েকে ভালোবেসে ফেলেছি।কিন্তু পরে মেয়েটার বিয়ে হয়ে যায়।কিন্তু এখন আর আমি ওকে ভালোবাসি না।চিন্তা করছি বিয়ের পর বউকে ভালোবাসবো যে কখনো হারিয়ে যাবে না।আর এই কথাগুলো যদি আগে তোমাকে না জানাই তাহলে তুমি নিজ থেকে জানলে বেশি কষ্ট পাবে।তাই জানিয়ে দিলাম।
প্রথম কথাগুলো শুনে নয়নার খারাপ লাগলেও পরের কথাগুলো শুনে নয়নার মন ভালো হয়ে গেল।নয়না কিছুটা আগ্রহ নিয়ে বললো জানেন,আমার না বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু যখন শুনলাম আপনি নিরা আর শুভ্র ভাইয়ার ফুফাতো ভাই তখন আর না করতে পারলাম না।জানেন নিরানা অনেক লাকি যে শুভ্র ভাইয়ার মতো একজন মানুষকে লাইফ পার্টনার হিসেবে পেয়েছে।আমারও খুব ইচ্ছে ছিল যে শুভ্র ভাইয়ার মতো একজন মানুষ আসুক যে আমার এতো কেয়ার করবে,ভালোবাসবে।আর যেহেতু আপনি শুভ্র ভাইয়ার কাজিন। তাই ১০০% শুভ্র ভাইয়ার মতো না হলেও ৭০% তো হবেন।
অয়ন কিছুটা কেঁশে বললো,আমার ও বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না।কিন্তু তোমাকে দেখার পর আমি না করতে পারলাম না।সত্যি তুমি অনেক কিউট।বাই দা ওয়ে শুভ্রের চেয়েও যদি তোমার বর তোমাকে বেশি ভালোবাসে তাহলে কি হবে হুহ!

________________ _________________

ডিনার করে ঘুমাতে এসে দেখি শুভ্র বসে আছে।রুমে ফেয়ারি লাইট জালানো।আমি রুমে আসতেই শুভ্র ঠাস করে দরজাটা লাগিয়ে দিল।
কি ব্যাপার,তোমার আচার আচরন তো আমার কাছে সুবিধাজনক লাগছে না।দেখো আর এগোবে না।
আমার পা থেকো মাথা পর্যন্ত একনজর দেখে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো আমি তো দেখছিই।আর কিভাবে দেখবো?
আমি কিছুটা রেগে বললাম,আমি জানতাম যে ছেলেরা কম লজ্জা পায়।কিন্তু ছেলেরা যে নিলজ্জ হয় তা তোমাকে না দেখলে জানতামই না।এতো লাগামহীন কথাবার্তা তুমি কিভাবে বলো?আর তোমার মতো লুচ্চু, ক্যারেক্টার লেস মানুষ আমি জীবনেও দেখি নাই।নিজের বউকে এমন কথা বলতে লজ্জা করে না!
শুভ্র বাঁকা হাসি দিয়ে বললো,নিজের বউকে বলবো না তো কি অন্য কাউকে বলবো?আর আমি লুচ্চু, ক্যারেক্টার লেস মানুষ!তাহলে তো আমার সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার করা উচিত। তাই না মিসেস শুভ্র!
আমি এখন তোমার সাথে তর্কাতর্কি করতে চাই না।বাদ দাও এই টপিক।
শুভ্র বললো, আজকে আমি তোমাকে আমার মতো করে ভালোবাসতে চাই।দিবে আমাকে সেই অধিকার?
আমি লজ্জায় লাল হয়ে শুভ্রকে বললো,অনেক আগেই তোমাকে সেই অধিকার দিয়ে দিয়েছি।
তারপর দুজনে পাড়ি দিলো ভালোবাসার রাজ্যে।

(আরকি হুহ!যান নিজেদের কাজে যান)

সকালে চোখ খোলে…………..

চলব…….

তুই_একমাত্র_আমার_অধিকার
ছোহা_চৌধুরী
#পর্ব১৭
সকালে চোখ খোলেই দেখলাম আমি একদম শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে একদম ওর সাথে মিশে শুয়ে আছি।আর শুভ্র জেগে আছে।আর ওকে দেখে মনে হচ্ছে অনেকক্ষন যাবতই মনে হয় জেগে আছে।আমি তাই ওকে প্রশ্ন করেই বসলাম।
গুড মনিং মিস্টার নির্লজ্জ
শুভ্র হেসে বললো,গুড মর্নিং সুইটহার্ট।
তুমি কখন ঘুম থেকে জাগলে?
শুভ্র বললো, প্রায় এক ঘন্টার মতো হবে।
আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম,এক ঘন্টা আগে!বাট এখনো বিছানা থেকে উঠোনি যে?
কি করে উঠবো বলো!একে তো তোমাকে রেখে উঠতেই ইচ্ছে করেনা।আর তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছো।আমি তাহলে কিভাবে উঠবো?
আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম, কিভাবে মানে!আমাকে ছাড়িয়ে পরে উঠবে।
আমি যদি উঠে যেতাম তোমাকে ছাড়িয়ে তাহলে তোমার ঘুমের ডিস্টার্ব হতো।আর আমার কাছে অন্য কাজ থেকে তুমি বেশি ইম্পরট্যান্ট। তাই তোমাকে ডিস্টার্ব করিনি।আর আমার সজাক শুয়ে থাকতে মোটেও খারাপ লাগছিলো না।তোমার ঘুমন্ত মুখ দেখতে আরো ভালো লাগছিল।
হয়েছে হয়েছে। এবার উঠে ফ্রেশ হও।ফ্রেশ হয়ে অফিস যাও।বাই দা ওয়ে তুমি কি সত্যি সিংগাপুর যাবে?
সে বিষয়ে রাতে এসে কথা বলি!আমাকে এখন ফ্রেশ হয়ে বের হতে হবে।অনেক বুঝাপড়া বাকি আছে।অনেক হিসাব নেয়া বাকি যেগুলো আমি সুদে আসলে উঠাবো।তুমি ব্রেকফাস্ট করে নাও শুভ্র বললো।
আমি ওর কথার ধাঁচে বুঝতে পারলাম,শুভ্র অনেক রেগে আছে যুথি আপুকে নিয়ে।আমার সামনে খুব কষ্ট করে নিজের রাগ কনট্রোল করছে। তাই বললাম,কিন্তু শুভ্র…
ফ্রেস হয়ে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করো বললাম তো।শুভ্র কিছুটা জুড়েই কথাগুলো বলেছে।

তাই আমি কথা না করে বাড়িয়ে নিজের কাজে চলে আসলাম।কাল থেকে ভার্সিটিতে যেতে হবে। তাই আস্তে আস্তে নিজেকে আজকে প্রস্তুত করতে হবে।তাই নিজের কাজে লেগে পড়লাম।

____________ _______________
যুথি,যুথি
শুভ্র তুই!এতো সকালে যে?কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি?মামি বললো।
মামি যুথি কোথায়?
কেন রে বাবা!
তোমার মেয়ে কোথায় ওইটা বলো আগে।
যুথি ওর রুমেই আছে।তুই যা আমি তোর জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।

মে আই কাম ইন মিস যুথি।
আরে শুভ্র ভাইয়া তুমি, এতো সকালে যে?
কি করবো বল।বাই দা ওয়ে নিচে আয় তুই।
কেন ভাইয়া?বিয়ের কথা বলবে বুঝি?
তুই নিচে আয় আগে। তুই নিজের চোখে দেখতে আর নিজের কানে শুনতেই পারবি যে আমি কি বলি,বলে শুভ্র নিচে চলে গিয়ে সোফায় ওয়েট করতে লাগলো।

_____________ _____________
হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো।ফোনে মাই স্টুপিড হাজবেন্ড লিখা দেখে তাড়াতাড়ি করে ফোন রিসিভ করি।
হ্যালো শুভ্র,
গুড মর্নিং নিরাপাখি, ব্রেকফাস্ট করেছো?
হুম।তুমি?
আমার চিন্তা বাদ দাও।আমি তোমাকে একটা এড্রেস সেন্ট করে দিচ্ছি। ইমিডিয়েটলি এই এড্রেস এ চলে আসো।
কোথায় আসবো?
মামার বাসায়।
বাট কেন?দেখ শুভ্র আমি কোনো ঝামেলা চাই না।শুধু তোমাকে নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই।
আমি সেটা জানি ম্যাম।আপনাকে আসতে বলছি আপনি আসবেন।আমি ড্রাইবারকে বলে দিচ্ছি।
ওকে।

_______ _________
কি হয়েছে কি শুভ্র? আর কার জন্য ওয়েট করছিস?
আসলেই দেখতে পারবে মামি,শুভ্র বলল
মে আই কাম ইন?আমি দরজায় দাড়িয়ে বললাম।
ইয়েস।তোমার জন্যই ওয়েট করছিলাম,শুভ্র বলল।
আমি মামিকে সালাম দিয়ে গিয়ে শুভ্রের পাশে বসলাম।
মামি তুমি কি ওকে চিনো?শুভ্র প্রশ্ন করলো।
মামি হেসে বললো,চিনবো না কেন?ও হচ্ছে নিরা।তোর ওয়াইফ।
আচ্ছা মামি আমার লাইফে নিরাপাখি ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা কি তুমি জানো?
আজব আজব প্রশ্ন করছিস কেন তুই?কি হয়েছে খোলে বলতো মামি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললো।
মামি তুমি আগে উত্তর দাও।ওর গুরুত্বটা কি তুমি জানো?
আমি ঠিক যতটুকু জানি যে নিরা হচ্ছে তোর লাইফলাইন।তোর বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেন প্রয়োজন তেমন নিরাকে ও তোর প্রয়োজন।
ও আচ্ছা। তো তোমার মেয়ে কি কথাগুলো জানে?
জানবে না কেন? যুথি এখন যথেষ্ট বড় হয়েছে।
আর আমার রাগ সম্পর্ক কি যুথি জানে?আমি আমার নিরাপাখি কে কেউ আঘাত করলে কি কি করতে পারি সেটা কি জানে?
মামি চোখ রাঙিয়ে যুথি আপু কে বললো,কি করছিস তুই?শুভ্র তো এমনি এমনি রেগে যাওয়ার ছেলে না!
থাক আগে এই রেকর্ড টা শোনো।বলে শুভ্র যুথি আপুর সাথে শুভ্রের কনভারসেশন টার রেকর্ড ছেড়ে দিলো।
হয়তো বা যুথি আপু চিন্তাই করতে পারেনি এমন কিছু হবে।পুরো রেকর্ডটা শুনে মামির মুখ রাগে লাল হয়ে গেছে। মামি উঠে গিয়ে ঠাস ঠাস করে যুথি আপুর গালে থাপ্পর লাগিয়ে দিলো।আমি তো পুরো অবাক।আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে মামি কে আটকালাম।বললাম,আপু হয়তো বুঝতে পারেনি।আমি বুঝিয়ে বলছি বলে যুথি আপু কে বলে আপুকে আপুর রুমে নিয়ে গেলাম।

____________ _____________

কি ব্যাপার শুভ্র এতো বিজি যে তুমি?
একটু বিজিই।সিংগাপুর যাওয়ার জন্য সবকিছু রেডি করছি তো সব তাই আরকি।
তুমি কি সত্যি যাচ্ছো?
হুম।তুমিই তো বললা যে যেতে।
তা কবে যাচ্ছো?
এই তো ১২ তারিখের দিকে।
ও আচ্ছা।
হুম।তুমি তোমার আর আমার ব্যাগ গুছিয়ে রেখো কিন্তু।
বাট আমার ব্যাগ কেনো? আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম।
কেন আবার সিংগাপুর যাবো তাই
মানে?তুমি সিংগাপুর যাবা আমি কোথায় যাবো?
তুমি ও সিংগাপুর যাবা।
হুয়াট?আমি যাবো মানে?আর আমার পাসপোর্ট তুমি কোথায় পেয়েছো?
আলমারির ড্রয়ারে ছিল।
বাট তুমি তো আগে বলোনি একথা?তুমি তো বলেছো যে শুধু তুমি যাবে!
হুম।বাট আমি তো এটা বলিনি যে আমি একা যাবো!তুমি তো জানোই যে আমার বেবিগার্লকে ছাড়া আমি ঘুমাতে পারিনা।আর প্রথমে ৬ মাস থাকার কথা ছিল।বাট পরে ঠিক হয়েছে ১ বছর।এক বছর মানে ১২ মাস।মানে ৫২ সপ্তাহ মানে ৩৬৫ দিন মানে ৮৭৬০ ঘন্টা মানে ৫২৫৬০০ মিনিট মানে ৩১৫৩৬০০০ সেকেন্ড। যেখানে এক সেকেন্ডই না দেখলে সব কিছু অসহ্য লাগে সেখানে ৩১৫৩৬০০০ সেকেন্ড কীভাবে থাকবো বলো?
স্টপ। তুমি জানো যে আমি গনিতে কাঁচা। আর তোমাকে হিসেব করতে হবে না।এতটুকু শুনেই মাথা ঘুরছে।
তাই নাকি?চল ডক্টর এর কাছে যাই
আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,কেনো?
কেন আবার,তুমি না বললে মাথা ঘুরছে! তাই গিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাবো বলে শুভ্র দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগলো।
আমি রাগে,দুঃখে জায়গা ত্যাগ করলাম।এমন নির্লজ্জ, বেয়ারা, মানুষের সামনে এখন বসে থাকলে বাকি মান সম্মান টুকু ও যাবে।

_________ ____________

বড়িতে গেলাম অনেক দিন পর।………

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here