সুখের_নেশায়,১৮,১৯

0
823

#সুখের_নেশায়,১৮,১৯
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___১৮

হসপিটালের লম্বা করিডোর পেরিয়ে বড় বড় পা ফেলে চৈত্রিকার বাবার কেবিনের কাছাকাছি এলো সাফারাত। বা দিকে তাকাতেই দেখে ফাহমিদা মিম কে বুকে নিয়ে কাঁদছেন। ক্ষণে ক্ষণে মায়ের বুকে ফুঁপিয়ে উঠছে মিম। কিন্তু চৈত্রিকা নেই। কোথায় গেল মেয়েটা?সাফারাতের বুকে চিনচিনে ব্যথা শুরু হলো। সাফারাত তো মায়ের ভালোবাসা পেয়েও মা’র হারানোর যন্ত্রণা টা আজও সহ্য করতে পারে নি। অন্যদিকে চৈত্রিকা সর্বদা বাবার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কাঙ্গাল ছিল। হয়ত আজও কাঙ্গাল রয়ে গেল মেয়েটা।

সাফারাতের ইচ্ছে করছে না ফাহমিদা,মিম কে সান্ত্বনা দিতে। এই মুহুর্তে তাদের কান্নাটায় সঠিক। প্রিয় মানুষ হারিয়ে গেলে কে না কাঁদে?না চাইতেও অশ্রু ঝরে পড়ে চক্ষু কোটর হতে। কেবিনের দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করে সাফারাত। নিরবতায় আচ্ছন্ন কেবিনটায় চৈত্রিকা বসে আছে স্থির। নির্নিমেষ,গভীর দৃষ্টিতে চেয়ে আছে সাদা কাপড়ে আবৃত বাবার নিথর দেহের পানে। চোখের পলকও যেন ফেলছে না মেয়েটা। সাফারাত ধীর পায়ে পাশে গিয়ে দাঁড়াল। কোলের উপর পড়ে থাকা চৈত্রিকার হাত টা ধরল আলতো করে। তৎক্ষনাৎ দৃষ্টি সরিয়ে সাফারাতের দিক নিক্ষেপ করল চৈত্রিকা। ছোট্ট করে বললো,

” আপনি এসেছেন? ”

কি আশ্চর্য! মেয়েটার চোখে জলের ছিটেফোঁটা নেই। কন্ঠ নরম,শান্ত। সাফারাত হকচকালো । এক ঝাঁক ভয় জেঁকে ধরল তার মনটাকে। এই মুহুর্তে চৈত্রিকার পাগলের মতো কাঁদার কথা ছিল। কাঁদছে না কেন মেয়েটা?কেন কাঁদছে না?চৈত্রিকা কি তবে অতি শোকে পাথর হয়ে গেল!সবকিছু এলোমেলো লাগছে তার। চৈত্রিকাকে টেনে উঠিয়ে দুই বাহুতে হাত রাখে আলতো করে। লহু স্বরে বলে উঠল,

” আপনাকে অসুস্থ দেখাচ্ছে চৈত্র। বাহিরে চলুন। ”

চৈত্রিকা চোখ বুঁজল। সাফারাতের এক হাতে হাত রাখল। বাঁধন বেশ নড়বড়ে। নিষ্প্রভ স্বরে বললো,

” বাবাকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন প্লিজ। বাবা বলেছে উনার দেহ টা যেন উনার জন্মস্থানে সমাহিত করা হয়। ”

কতটা সহজে কথাগুলো বলছে মেয়েটা!সাফারাতের ভিতরটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। চৈত্রিকাকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিতে পারলে হয়ত শান্তি পেত।

” আপনি একটু নরমাল হন প্লিজ। আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলছি এখনই। একটাই অনুরোধ নিজের ভিতরের কষ্টগুলো বাহির মুক্ত করে দিন। ”

চৈত্রিকা সাফারাতের আকুতিভরা কন্ঠ শুনে মাথা নাড়ালো। তৎপরে বাবার লাশের দিকে তাকিয়ে রইল নিষ্পলক,অনিমেষ। ফোন বের করে দিহানকে কল দিল সাফারাত। কারণ ফাহমিদা, মিম কে সামলাতে হলে আরো একজনের প্রয়োজন। চৈত্রিকা কে বসিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে এল। মিম দাঁড়িয়ে ছিল কেবিনের অভিমুখে। সাফারাতকে দেখে মেয়েটা হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। হতবিহ্বল হয়ে পড়ল সাফারাত। ঠোঁট চেপে মিমের মাথায় হাত রাখে শুধু। ওদের কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সে। দ্রুত বেগে স্থান ত্যাগ করে রিসিপশনে এলো। রিসিপশনের মেয়েটা একগাল হাসল তাকে দেখে। তাকিয়ে রইল স্থির। মেজাজ খিটখিটে হয়ে উঠল সাফারাতের। গম্ভীরভাবে সকল ফর্মালিটি পূরণ করে লাশ নেওয়ার ব্যবস্থা করে ফেলে। ইতিমধ্যে দিহানও এসে পড়েছে। ওয়ার্ড বয়দের বলা হলো লাশ এম্বুল্যান্সে তুলে দিতে। হার্ট এট্যাকে মারা গিয়েছেন আহমেদ সাহেব।

এম্বুলেন্সে উঠেছেন ফাহমিদা, দিহান। চৈত্রিকা ও মিম কে উঠতে দেয় নি সাফারাত। ফাহমিদা সাফারাত ও দিহানকে এক দেখায় চিনতে পারলেও কিছু জিজ্ঞেস করলেন না। এই মুহুর্তে একটা শব্দও উচ্চারণ করার ক্ষমতা নেই উনার। চুপচাপ বসে আছেন। সাফারাত চৈত্রিকাকে নিয়ে গাড়িতে উঠবে তখনই তাহাফ,তাহাফের বাবা-মা হাজির হয়। সাফারাতের হাতে চৈত্রিকার হাত দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তাহাফ। এগিয়ে এসে চৈত্রিকার হাত ছাড়িয়ে নিতে উদ্যত হলে সাফারাত টেনে এক হাতে চৈত্রিকাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। তাহাফের চোখ দুটো জ্বলে উঠে। কিন্তু তা যেন সাফারাতের রক্তিম চক্ষুদ্বয় হতে নিতান্তই তুচ্ছ, নিরর্থক। কপালের শিরাগুলো দৃশ্যমান সাফারাতের। চোয়াল শক্ত হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কন্ঠে নম্রতা এঁটে বলে উঠল,

” চৈত্রর অবস্থা ভালো না। আর এখন সিন ক্রিয়েট করার সময় নই। আপনি কে আমি জানিনা তবে পরে রাগ,ক্রোধ দেখাবেন। এখন না। ”

মিম পাশ থেকে বললো,

” ভাইয়া ইনি আপুর বাগদত্তা। ”

সাফারাতের রাগ টা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল সঙ্গে সঙ্গে। তাহাফ ক্রুদ্ধ কন্ঠে বললো,

” চৈত্র আমার সাথে যাবে। আর আপনিই বা কে হোন চৈত্রর?আমার বাগদত্তাকে আপনি কোন অধিকারে ছুঁয়েছেন?”

চৈত্রিকার এতক্ষণ নিবিড়তা ভেঙ্গে গেল। কন্ঠে গভীর আর্তবিষাদের ছাপ।

” আমি আপনার সাথে যাবো না। সাফারাতের সাথে যাবো আমি। সাফারাতের পরিচয় আপনার জানতে হবে না। শুধু এতটুকু জেনে রাখবেন আমার একমাত্র ভরসার স্থান সাফারাত। যদি পারেন অমানুষের মুখোশ খুলে মানুষ হবেন। আমার বাবার নিথর দেহ পড়ে আছে অথচ আপনার মধ্যে নূন্যতম মানবিকতা নেই। আমার চোখের সামনে আসবেন না আপনি। একদম আসবেন না। ”

সাফারাত, তাহাফ দু’জনের চোখ নিবদ্ধ চৈত্রিকার কঠোর মুখশ্রীতে। ভিতরে ভিতরে ফুঁসছে তাহাফ। চৈত্রিকাকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে তার। চৈত্রিকার দেহে অন্য পুরুষের স্পর্শ তার সহ্য হচ্ছে না। না এটা ভালোবাসা না। তাহাফ শুধু একান্ত ভাবে নিজের নিকৃষ্ট ছোঁয়া আঁকতে চায় চৈত্রিকার দেহের সর্বাঙ্গে। তাহাফের বাবা-মা কিছু বলতে পারছেন না। পরে এসব নিয়ে কথা হবে বলে তাহাফ কে টেনে নিয়ে যান উনারা। চৈত্রিকা কারো অপেক্ষা না করে মিম কে নিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে। সাফারাত বসে তার পাশে। ধূসর রঙের চক্ষু দুটি সারা রাস্তা শুধু চৈত্রিকার দিকে তাকিয়ে পার করে। অপেক্ষা তার কখন চৈত্রিকার নেত্রযুগল হতে বেয়ে যাবে এক ফোঁটা জল। জলে ভিজিয়ে দিবে সাদা শার্ট,প্রশস্ত বক্ষস্থল।
________________

সন্ধ্যে গড়িয়ে রাতের আঁধারে ঢেকে গেছে ধরিত্রী। ঘরের ভেতর মানুষের শোরগোল। পাড়া-প্রতিবেশীদের আগমন ঘটেছে সান্ত্বনা দেবার লক্ষ্যে। কিন্তু চৈত্রিকার যে কোনো ধরনের সান্ত্বনা চাই না। তার স্রেফ বাবাকে চায়। হসপিটালে নিয়ে যাবার সময় গাড়িতে বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দেবার দৃশ্য টা পুনরায় চায়। বাবা তো তার হাত টা ধরেই শেষ বার নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিল। তখন থেকে চৈত্রিকার চোখের জল শুকিয়ে গেছে। ভিজে উঠে না চোখের কোল। আজ চারপাশে মানুষের উচ্চআওয়াজ,ফিসফিস করা শব্দের শেষ নেই। শেষ হয়ে গেছে বাবার সেই ক্রোধ মিশ্রিত ধমক,মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। টলমল পায়ে পুকুর ঘাটে এসে বসল চৈত্রিকা। ওদের বাড়িটা তো আহমেদ বিক্রি করে দিয়েছে। এখন যেখানে আছে সেটা আহমেদের চাচাতো ভাইয়ের বাড়ি। বিকেলের দিকে শেষ হয়েছে উনার দাফনের কাজ। ভেজা মাটির গন্ধ আসছে। পিচ্ছিল হয়ে আছে পুকুর ঘাট। শেষ বিকেলে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়ত চেয়েছে চৈত্রিকাদের জীবনের সকল কষ্ট ধুয়ে মুছে নিতে কিন্তু বরাবরই ব্যর্থ হলো। নতুন এক কষ্টের যে সূচনা হয়েছে মাত্র।

কারো পদধ্বনি পেয়ে চৈত্রিকা ঘাড় বাকিয়ে চাইল। তাহাফ দাঁড়িয়ে আছে ঠাই। বাড়ির উঠোন থেকে আসা আবছা আলোর ছটায় চৈত্রিকা তাকে দেখেও দেখে নি এমন ভান করে সামনে তাকিয়ে রইল অনঢ়। চোখ মুখ শক্ত করে গটগট পায়ে স্থান ত্যাগ করে তাহাফ। পরক্ষণেই আবারো পায়ের শব্দে চৈত্রিকা নড়েচড়ে বসল। বিরস স্বরে পিছনে না তাকিয়েই প্রশ্ন করে,

” কোথায় ছিলেন?”

সাফারাত পাশে দাঁড়িয়ে চৈত্রিকার দৃষ্টি লক্ষ্য করে সুদূরে রাখল। অন্ধকার ব্যতীত কিছুই নেই। এদিকটায় তমসার ভিড়। চাঁদের আলো নেই। আকাশে মেঘ গর্জন করে উঠছে ক্ষণে,ক্ষণে। চৈত্রিকা পুনরায় প্রশ্ন করল,

” ঢাকা ফিরে যাবেন?”

” উঁহু। আপনি বোধ হয় ভুলে গেলেন সিলেটে বাড়ি আছে আমাদের। এখান থেকে কিছু দূরে। ”

” ভুলি নি। তবে আট বছরের দূরত্বে মস্তিষ্ক থেকে অনেক কিছুই বেরিয়ে গেছে। নয়ত চাপা পড়ে গেছে। পুরোনো হয়নি শুধু আপনার সাথে কাটানো সময়গুলো। ”

সাফারাতের হৃদপিণ্ডে কথাটা গিয়ে তীরের মতো বিঁধল। চৈত্রিকার হাত টা আঁকড়ে ধরে শরীরের অনেকখানি শক্তি ব্যয় করে।

” মিম,আন্টি,আপনি আমার সাথে চলেন আমাদের বাড়িতে। কয়েকটা দিন তো থাকবেন সিলেটে। এখানে আপনাদের প্রবলেম হবে। তাছাড়া তাহাফ আছে এখানে। আমি পারব না ওকে এখানে সহ্য করতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি কথা বলব আন্টির সাথে। আপনাকে ছাড়া এক দন্ডও চলবে না আর আমার। ”

চৈত্রিকার কোনো হেলেদুল হলো না। নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে। তার তো খুশি হবার কথা,আনন্দে চোখে পানি আসার কথা। এতো বছর ধরে যাকে ভালোবেসে এলো একপাক্ষিক ভাবে,সে ভালোবাসে কি-না না জেনে। আজ সেই মানুষ টা হাতটা মুঠোয় বেঁধে বলছে তাকে ছাড়া থাকতে পারবে না! তবুও চৈত্রিকা নির্বাক। সাফারাত এবার বাধ্য হলো নিষ্ঠুর হতে। চৈত্রিকা এমন রোবটের মতো থাকলে তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যদি কষ্ট পায় পাবে। তবুও এই মেয়েকে কাঁদাবে সাফারাত। টেনে নিজের বুকে নিয়ে এলো। কোমর জরিয়ে নিজের সাথে চেপে ধরল কঠোরভাবে। বিদ্যুৎ চলে গিয়ে নিকষ কালোতে ডুবিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি। প্রগাঢ় অন্ধকারে চৈত্রিকা হাতড়ে সাফারাতের শার্ট আঁকড়ে ধরে। মিনমিন করে বললো,

” বাবার কাছে যাবো। ”

সাফারাত গভীরভাবে ডেকে উঠল,

” চৈত্র! ”

চৈত্রিকার গলার স্বর,আর্তনাদ বেড়ে গেল হুট করে। ভালোবাসার, অতি শান্তির স্থানে মুখ গুঁজে সারাদিন চেপে রাখা কষ্ট মুক্ত করে দিল। বাঁধ ভাঙা অশ্রু গড়িয়ে যাচ্ছে। পাগলের মতো প্রলাপ করতে লাগল চৈত্রিকা। সাফারাতের গলায়,বুকে খামচে ধরে,আঁচড় কেটে ক্রমাগত বলতে লাগল– ‘ আমি বাবার কাছে যাবো। আমায় নিয়ে চলুন। ‘

সাফারাতের বুকটা হাহাকার করে উঠল। চৈত্রিকাকে মিশিয়ে নিল বুকে। যদি পারত তাহলে মেয়েটার সব কষ্টে নিজের জমায়িত কষ্টের সাথে যোগ করে নিত সাফারাত। এই মেয়ের কান্নার শব্দ, ফোঁপানো হৃদয়ের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিচ্ছে। চৈত্রিকা কাঁদছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছে মেয়েটা। নিঃসাড় হয়ে আসছে সমস্ত দেহ। বাবা নামক মানুষটা যে নেই। কেন পারল না সে বাবার রাজকন্যা হতে?কেন?সাফারাতের বুকে মুখ গুঁজে নিস্তব্ধ, নিশ্চুপ হয়ে গেল একটাসময়। সাফারাত অবাক হয়ে চৈত্রিকা কে বুক থেকে সরালো কিছুটা। দেহ ছেড়ে দিয়েছে। পড়ে যেতে নিলে পাঁজা কোলা করে তড়িৎ গতিতে ঘরে নিয়ে এলো। মানুষজনের দিকে ফিরেও তাকালো না। মিম,ফাহমিদা আরো কয়েকজন ছুটে আসতেই জানালো চৈত্রিকা জ্ঞান হারিয়েছে। কেউ কেউ তীররেখা নজরে চাইছে ওদের দিকে। পাড়ার কয়েকজন মহিলা ফিসফিস করছেন। সাফারাত বাহিরের টিউবওয়েল থেকে পানি এনে চৈত্রিকার চোখে মুখে ছিটিয়ে দিল। মিম কে বলল মাথায় পানি দিতে। ফাহমিদা মিমের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন সাফারাত চৈত্রিকার খুব ভালো ফ্রেন্ড। তিনি আর কিছু জিজ্ঞেস করেন নি। মেয়ের উপর অগাধ বিশ্বাস আছে। চৈত্রিকার শরীর মুহূর্তেই গরম হয়ে যাচ্ছে। জ্বরে পুরো দেহ কাঁপছে তার। সাফারাত হন্তদন্ত হয়ে বাহিরে এলো। দিহানকে বললো বাজারে ডাক্তার আছে জলদি যেন ডাক্তার নিয়ে আসে।

এই সমাজ,সমাজের মানুষের কারোই তোয়াক্কা করল না সাফারাত। সারারাত বসে রইল চৈত্রিকার শিয়রে। চৈত্রিকার অবস্থা খুব একটা ভালো না। শারীরিকের চেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সে। ফাহমিদা অসুস্থ হয়ে পড়ায় উনাকে অন্য ঘরে নিয়ে গেলেন। মিম বসে রইল বোনের পাশে। দিহান অনেকবার এসেছে, সাফারাত কে বুঝিয়েছে বাহিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সাফারাতের ত্যাড়ামি,জেদের কাছে কেউই টিকতে পারে নি। চৈত্রিকা অচেতন অবস্থায়ও সাফারাতের হাত টা ধরে আছে। ঘুমে থেকেও মেয়েটা আঁকড়ে ধরে রেখেছে বিশস্ত হাত টুকু।
________________

সাতটা দিন পেরিয়ে গেছে। চৈত্রিকার সুস্থ হতে অনেকটা সময়ই লেগে গিয়েছে। এই সাতদিন সাফারাত চৈত্রিকার খেয়াল রেখেছে। চোখে হারিয়েছে চৈত্রিকাকে। তাহাফ ও তার পরিবার দু’দিনের মাথায় চলে গিয়েছে ঢাকা। দিহানের মা একা বিধায় তাকেও চলে যেতে হয়েছে। সাফারাত নিজের বাড়িতে রাত কাটিয়ে সকালে সূর্যের রশ্মি চারদিকে না ছড়াতেই হাজির হয়ে যায় চৈত্রিকার সামনে। রাতটুকুর জন্য যেতে চাইত না। চৈত্রিকার কথায় বাধ্য হয়ে যেত। শুধুমাত্র বন্ধুত্বে মেয়ের প্রতি কোনো ছেলের এতো পাগলামি, উম্মাদনা,চিন্তা ফাহমিদাকে ভাবিয়ে তুলল। চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়লেন তিনি। তাহাফের মা ফোন করেছিলেন কিয়ৎক্ষণ পূর্বে। তাহাফ খুব শীগ্রই চৈত্রিকার দায়িত্ব নিতে চায়।

#চলবে,,,,!
( ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

#সুখের_নেশায়
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___১৯

মন্থরগতিতে পা ফেলে মায়ের রুমে ঢুকল চৈত্রিকা। ক্ষীণ শব্দ কর্ণধারে পৌঁছাতেই ফাহমিদা চোখ তুলে তাকালেন। চৈত্রিকার রোগা,ফ্যাকাসে চেহারাটা অবলোকন করে তৎক্ষনাৎ মনে ব্যাথাতুর যন্ত্রণা ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কয়েক পল চেয়ে থাকলেন মেয়ের রক্তশূণ্য মুখশ্রী পানে। তিনি জানেন, আহমেদ সাহেবের চিরতরে চলে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে চৈত্রিকা। মা হয়ে শত আদরে মেয়েকে ভরিয়ে দিলেও বাবার আদর তো তিনি দিতে পারবেন না। চৈত্রিকার জীবনের এই অভাবটুকু পূর্ণ করার সাধ্য যে কারো নেই। হয়ত তাহাফের মাধ্যমে চৈত্রিকার বিষাক্ত জীবনে সুখ আসবে। তা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। চৈত্রিকা মায়ের দিকে চেয়ে আনতস্বরে বলে উঠল,

” ডেকেছিলে আম্মু?”

ফাহমিদা এগিয়ে এসে চৈত্রিকার মাথায় হাত রাখলেন। বিয়ের বিষয় নিয়ে বলতে গিয়ে বললেন না। সবকিছুর একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। এবং তা স্থান,কাল বুঝে বলা উচিত। এই বিষয়টা দমিয়ে আদুরে কন্ঠে বলে উঠলেন,

” আমরা কিন্তু একটু পর বেরিয়ে যাবো। ট্রেনের টিকিট তো কাটা হলো না। ”

চৈত্রিকা একটু ইতস্তত বোধ করে বললো,

” সাফারাতের গাড়ি করে যাবো আমরা। ”

ফাহমিদা চমৎকৃত নয়নে চেয়ে রইলেন চৈত্রিকার দিকে নির্নিমেষ। মস্তিষ্কে পুরোনো একটা কথা হানা দিতেই বলে উঠলেন,

” সাফারাতই কি সেই ছেলেটা যার কথা তুই কলেজে থাকতে বলেছিলি?”

” হুম আম্মু। ”

ফাহমিদা বেশ অবাক হলেন। চৈত্রিকা মায়ের সাথে প্রায় অনেক কথা শেয়ার করে ছোট থেকেই। তেমনি কলেজ জীবনে সাফারাতের সাথে বন্ধুত্বের বিষয়টা শেয়ার করে। চৈত্রিকা সর্বদা মায়ের নিকট সাফারাতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে থাকত। সাফারাত কে ফাহমিদা দিহানের প্রস্তাব নিয়ে আসার আগে কখনো দেখেন নি। ফাহমিদা একটু চুপ থেকে বললেন,

” ঠিক আছে রেডি হয়ে নে। ”

চৈত্রিকা মায়ের রুম থেকে বেরিয়ে মিম কে বলল রেডি হয়ে নিতে। নিজে রেডি হয়ে ছোট্ট বাটন ফোনটা বের করে জানালার কাছ ঘেঁষে দাঁড়াল। সাফারাতের নাম্বারে ডায়াল করতেই রিসিভ হয়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে। ওপাশ থেকে ভেসে এলো মোহনীয় কন্ঠস্বর। শ্রবণগ্রন্থিতে মাদকতাময় গাম্ভীর্য সেই স্বর প্রবেশ করতেই চৈত্রিকার বুকে তোলপাড় করা মিহি সুরের ঘন্টা বেজে উঠল। যা বলতে ফোন দিয়েছিল তা গুলিয়ে ফেলছে। আজকাল সাফারাতের সান্নিধ্য,সন্নিকটে, কন্ঠস্বর চৈত্রিকাকে গভীর নেশায় ডুবিয়ে দেয়। এই এক সপ্তাহ সাফারাত নিজের কথা ভুলে দিন-রাত যেভাবে পাশে থেকেছে তাতে সাফারাতের প্রতি চৈত্রিকার সম্মান, ভালোবাসা বেড়ে গিয়েছে। চৈত্রিকার এখন মনে হয় সে নয়,তার চেয়েও বেশি ভালোবাসে সাফারাত তাকে। কিন্তু! এই ভালোবাসার সূচনা কবে থেকে?চৈত্রিকার কোনো রেসপন্স না পেয়ে সাফারাত গলা খাঁকারি দিয়ে ডেকে উঠল,

” চৈত্র কথা বলবেন না?”

আমতাআমতা করল চৈত্রিকা। ধরা গলায় বললো,

” যাওয়ার আগে বাবার কবরটা আরেকবার দেখে যেতে চাই। নিয়ে যাবেন?”

” রাস্তার ধারে আছি। চলে আসুন। ”

চৈত্রিকা এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে নিল ওড়না সমেত। উঠান পেরিয়ে রাস্তার ধারে এলো। সাফারাত উল্টো ঘুরে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে নিষ্পলক। পড়নে তার একটা কালো পাঞ্জাবি। এই প্রথম তাকে পাঞ্জাবি তে দেখল চৈত্রিকা। হৃদপিণ্ডের নিয়ন্ত্রণ গতিহারা। অস্বাভাবিক হৃদযন্ত্রের স্পন্দন। ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। চৈত্রিকা বুকের দুরুদুরু নিয়ে নিঃশব্দে কিছুটা দূরত্ব রেখে দাঁড়াল। সাথে সাথে সাফারাত দৃষ্টি সরিয়ে এনে পাশে রাখে। চেহারায় মলিনতা। চোখ দুটো ডেবে গেছে চৈত্রিকার। ঠোঁট কামড়ে ধরে সূক্ষ্ম একটা নিঃশ্বাস ফেলে সাফারাত। মৌনতা বজায় রেখে দু’জনে পাশাপাশি হেঁটে কবরস্থানের কাছে এলো। চৈত্রিকা দূর থেকে নতুন কবরটায় তাকিয়ে থাকে। বাবা কতটা নিরবে, শান্তিতে শুয়ে আছে এখানে। চৈত্রিকা পাথরের মতো স্তব্ধ, স্থবির। কয়েক মুহুর্ত কেটে যেতেই নিষ্প্রাণ স্বরে বললো,

” আপনার কি বাবার কথা মনে পড়ে সাফারাত? আপনার বাবা-মা’র ব্যাপারে কিছু বললেন না। ”

প্রশ্নটা কর্ণপাত হওয়া মাত্র সাফারাতের হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে এলো। চোয়াল শক্ত। চৈত্রিকা পাশ ফিরে সাফারাতের এহেন রূপে বিস্মিত,হতভম্ব। ঘাবড়ে গিয়ে বললো,

” কি হয়েছে? ”

সাফারাত নিজেকে যথাসাধ্য শান্ত রাখল। গাম্ভীর্যের সহিত বলে উঠল,

” আমি নিজ থেকে কিছু না বললে কখনও আমার ব্যাপারে কিছু জানার জন্য ফোর্স করবেন না চৈত্র। এটা আমার আদেশ,রাগ যা-ই মনে করেন করতে পারেন। বাট ডোন্ট ফোর্স মি। আই হেট দিস। ”

চৈত্রিকার মুখের ভাব পরিবর্তন হয়ে গেল নিমেষে। বিমূঢ়তায় নির্বাকহারা ও। সাফারাতের রাগান্বিত স্বরে অন্তস্থল কেঁপে উঠেছে। অভিমানে ভার হয়ে এলো মন। তবুও তা চেপে রাখল। দেখাবে না সাফারাত কে। ভালোবাসার মানুষের অতীত সম্পর্কে, বর্তমান অবস্থা জানার অধিকার নিশ্চয়ই আছে। সাফারাত কেন তাকে বঞ্চিত করছে অধিকার থেকে। চৈত্রিকা নিজেকে সংযত করে নেয়। হতে পারে সাফারাত সময় হলে নিজ থেকেই বলবে।

উল্টো ঘুরে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করে দু’জনে। চৈত্রিকা সাফারাতের কাছ থেকে শুনেছিল সাফারাতের দাদি ও চাচাতো বোন এখানে। অত্যন্ত নরম স্বরে জিজ্ঞেস করে,

” আপনার দাদি, বোন চলে গিয়েছে? ”
” হুম। গতকাল। ”
“ওহ্। ”

অতঃপর দু’জনের মাঝে নিরবতা। আকস্মিক হাত ধরে আঁটকে দিল সাফারাত। চৈত্রিকা থমকালো। অবিন্যস্ত,শঙ্কিত দৃষ্টি ফেলল চারপাশে। এইদিকে মানুষের চলাচল খুব বেশি নয়। অধিক প্রয়োজন ব্যতীত এই পথ ধরে হাঁটে না কেউ। চৈত্রিকার দৃষ্টি প্রশ্নসূচক,জিজ্ঞাসু। সাফারাত দূরত্ব ঘুচিয়ে সামান্য ঘনিষ্ঠ হলো। মুহুর্তেই হৃদযন্ত্রের স্পন্দন থমকে গেল চৈত্রিকার। কিছু বলবে তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। বক্ষে রণঢাক বাজছে। ভালোবাসার পরম সুখ এঁকে দিল সাফারাত কপালে। ছুঁয়ে দিল নরম, আর্দ্র ওষ্ঠদ্বয়। চৈত্রিকার নত চিবুকে আঙুল রেখে উপরে উঠিয়ে তাকিয়ে রইল লুব্ধনেত্রে। গভীর স্বরে আওড়ালো,

” খুব শীগ্রই আমরা এক হবো চৈত্র। ”

শরীর কাটা দিয়ে উঠল চৈত্রিকার। দেহের প্রত্যেক ভাঁজে ভাঁজে কম্পন। সাফারাত নিজের মাঝে আগলে নেয় চৈত্রিকাকে। চৈত্রিকা লজ্জা পেল। অনুভব করল নিজের গালদুটোর তাপমাত্রা। কত নিঃসংকোচে নির্লজ্জ একটা বাক্য উচ্চারণ করল সাফারাত! চৈত্রিকা ঠাহর করতে পারছে সাফারাতের সঙ্গ তাকে কাঁপিয়ে মারবে। সিলেটের ছোট্ট একটা গ্রামে দাঁড়িয়ে মাউন্ট এভারেস্টের হিম শীতল হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মতো সাফারাতের স্পর্শ কাঁপাচ্ছে তাকে প্রকটভাবে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে জাগিয়ে তুলছে অদ্ভুত এক শিহরণ।
__________________

বৃষ্টিতে ভিজে চৈত্রিকার অবস্থা বেগতিক। দু’দিন আগেই তো জ্বর সাড়ল এখন আবার বৃষ্টিতে ভিজে জুবুথুবু অবস্থা। দ্রুত বেগে সিঁড়ি বেয়ে দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। কলিং বেল চেপে অপেক্ষা করছে দরজা খোলার। গতকাল ঢাকা ফিরে এসেছে ওরা। আজ টিউশনিতে যাবার মতোন মন মানসিকতা ছিল না। তবুও যেতে হয়েছে। স্টুডেন্টের এক্সাম। আজ অভিভাবক ফোন দিয়ে বলেছে আজকে পড়াতে না গেলে যেন আর পড়াতে না যায়। অথচ তারা বুঝতে চায় নি সদ্য পিতৃহারা চৈত্রিকার মনের অনুভূতি। কথাটা মনে হতেই চৈত্রিকার ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠে।

মিম দরজা মেলে সামনে তাকিয়ে হতবাক। তড়িঘড়ি করে উচ্চআওয়াজে বলে উঠল,

” এমন কাকভেজা হয়ে ফিরলে কেন আপু?দু’দিন আগেই তো সুস্থ হলে। সাফারাত ভাই জানলে আবার পাগলামো করবে। ”

মিমের শেষ কথাটায় উপহাসের রেশ স্পষ্ট। চোখ রাঙাল চৈত্রিকা। মিম কে ঠেলে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। পা টিপে টিপে নিজের রুমে এসে মোবাইলটা খুঁজতে লাগল। কোথাও পেল না। টিউশনিতে যাবার সময় ভুলবশত মোবাইলটা বাসায় রেখে চলে গিয়েছিল। এখন দুপুর দু’টো বাজে। নিশ্চয়ই সাফারাত কল দিয়েছে। সকালে বলেছিল দুপুরে কল দিবে। মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে আর কল দেওয়া সম্ভব হবে না। চৈত্রিকা মিমের রুমে ছুটে এলো। বড় বড় শ্বাস ফেলে বললো,

” আমার মোবাইল টা দেখেছিস?”

” হু। টেবিলের উপর। ভাইয়া অনেকবার কল দিয়েছিল। প্রায় ঊনত্রিশ বার। ত্রিশ বার পূর্ণ হতে দেই নি আমি। তার আগেই টুপ করে রিসিভ করে ফেলেছি। ”

মিমের কথা শুনে চৈত্রিকা হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। তবে সাফারাত যে আজ তাকে রাগে ভস্ম করে দিবে দিব্যি কল্পনা করতে পারছে। মোবাইলটা হাতে নিতে নিতে শঙ্কাভরা গলায় প্রশ্ন ছুঁড়ে মিমের দিক।

” কি বলেছেন?”
” আমাকে কেমন আছি এটাই জিজ্ঞেস করল। আর,,!”
” আর?”
ভ্রুঁ কুঞ্চিত করে তাকালো চৈত্রিকা। কপালে চিন্তার ভাঁজ। মিম মুখে সিরিয়াস ভাব এনে বললো,

” আর উনি আসছেন আমাদের বাসায়। ”

চৈত্রিকার আঁখিদ্বয়ে আতঙ্ক দেখা দিল মুহুর্তেই। মিমের হাত ঝাঁকিয়ে রাগ প্রকাশ করে মৃদু স্বরে আওড়ালো,

” তুই কি সাফারাতকে সব বলে দিয়েছিস মিমু?”

” হ্যাঁ। ”

চৈত্রিকার হাতের বাঁধন শিথিল হয়ে আসল। ভীত কন্ঠে বলে উঠল,

” কি করলি এটা?আমি তো মা’কে বুঝাতাম। ”

” কখন?কখন বুঝাতে তুমি আপু?একটু পরে তোমার আকদ তাহাফ ভাইয়ার সাথে। আর কখন বুঝাতে তুমি?তাহাফ ভাইয়ার নিকৃষ্ট চেহারাটা পর্যন্ত উন্মোচন করলে না আম্মুর সামনে। উল্টোদিকে আম্মু তোমার সুখ নিয়ে ভাবছে। বাবার মানসম্মান নিয়ে ভাবছে। কেবল আমিই জানি তোমার আসল সুখ সাফারাত ভাইয়ার মধ্যে নিহিত। সাফারাত ভাইয়া পারবে আম্মুকে ম্যানেজ করতে। তোমার মতো লুকিয়ে রাখা সম্ভব না আমার দ্বারা। ”

চৈত্রিকা চিন্তায় পড়ে গেল। আজ সকালেই ফাহমিদা অকস্মাৎ জানিয়েছেন তার ও তাহাফের আকদের কথা। স্তম্ভিত হয়ে পড়ে চৈত্রিকা। স্বামী হারিয়ে ফাহমিদার অবস্থাও শোচনীয় নয়। তার মধ্যে তাহাফের ব্যাপারটা কিভাবে খুলে বলবে,বিয়েতে নাকচ করবে বুঝে উঠতে পারছিল না। সাফারাতকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও পারল না জানাতে। মাত্র কয়েকদিনই তো গড়িয়েছে প্রণয়ের। সাফারাতকে বিয়ের কথা বলা বা বিয়ে নামক ভেজাল চাপিয়ে দেওয়া যায় না। তাই সিদ্ধান্ত নেয় নিজ থেকে সবটুকু সমাধান করার এবং তাহাফকে উচিত শিক্ষা দেবার৷ কিন্তু এখন তো সাফারাত সব জেনে গেল। না জানি তার আগমনে কেমন ঝড়ের সৃষ্টি হবে!

#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here