#মৃগতৃষ্ণা-৮
#লেখিকা-মেহরুমা নূর
★দিন গড়ায় আপন গতিতে। মাসের পরিবর্তনে গ্রীষ্মকে বিদায় জানিয়ে প্রকৃতিতে নামে আষাঢ় মাস। বর্ষা কাল এখন।কখনো ঝুম বৃষ্টি তো কখনো ঝড়ো হাওয়ায় পরিবেশ কে অনেক টা শীতল করেছে। খাল বিল ভরে উঠেছে। পানি ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষেত খামারেও। চারিদিকে এখন শুধুই থইথই পানি।লেখিকা-মেহরুমা নূর। আম কাঁঠালের পাঁকা ঘ্রাণে মউমউ হচ্ছে পরিবেশ। আম কাঁঠালের পরপ খাওয়াতে জামাইদের দাওয়াতের ধুম পড়েছে। ঘরে ঘরে চলছে জামাইদের আপ্যায়ন। চেয়ারম্যান বাড়িতেও তার ব্যাতিক্রম নয়। পঙ্খির সব ফুফু শাশুড়ীদের পরিবার এবং তাদের মেয়ে জামাইদের আম পরপের জন্য দাওয়াত দিয়ে আনা হয়েছে।এজন্য বাড়িতে এখন খুবই ব্যাস্ত সময় কাটছে তার।
অতিবাহিত এই এক মাসে তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি পঙ্খির জীবনে। সবই চলছিল স্বাভাবিক রুপেই। সেদিনের ব্যবহারের জন্য ইন্ধন পঙ্খির কাছে লজ্জিত হয়েছে। পঙ্খিও সেটা নিয়ে আর কথা বাড়ায়নি।মাঝে মধ্যেই পঙ্খিকে পড়া বুঝিয়ে দিতো ইন্ধন। পঙ্খিও খুব সহজে ইন্ধনের পড়া বুঝে নিতো। সবই ঠিক ঠাকই চলছিল। তবে হঠাৎই একদিন কেমন সব বদলে গেল। ঠিক গুলো কেমন বেঠিক হয়ে গেল। কিন্তু পঙ্খি কিছু বুঝে উঠতে পারলোনা।
দিনটা ছিল শনিবার। পঙ্খির এক্সাম শুরু হয়েছে। প্রভাতকালে উঠে তড়িঘড়ি করে সব কাজ শেষ করে পরিক্ষার জন্য রওয়ানা হয় সে। সামছুল মজুমদার তার জন্য একটা রিজার্ভ সিএনজি ঠিক করে রেখেছে। সেটাতে করেই যায় সে। সিএনজিতে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে পঙ্খি। কলেজে যাওয়ার রাস্তায় তার গ্রামটা পড়ে। নিজের আপনজন কাওকে দেখার আশায় বাইরে তাকিয়ে থাকে সে। যদিও তার আপনজন বলতে কেই বা আছে। তবুও বাবা, ভাই যেমনই হোক তবুও তার আপনজন বলতে এরাই। রাস্তায় মাঝেমধ্যে কাওকে দেখতে পেলে সিএনজি টা দাঁড় করিয়ে একটু কথা বলে নেয় তাদের সাথে। আজও সে আশায় বাইরে তাকিয়ে আছে পঙ্খি। হঠাৎ কিছু একটা দেখে চমকে গেল সে। তড়িঘড়ি করে সিএনজি ওয়ালাকে থামাতে বললো। সিএনজি থামতেই গাড়ি থেকে নেমে সামনে তাকালো পঙ্খি। নাহ সে ভুল দেখছে না। ইন্ধন যে ওর বড়ো ভায়ের কলার ধরে ঝাঁকাচ্ছে সেটা সে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে।
পঙ্খি দ্রুত এগিয়ে গেল ওদের কাছে। ইন্ধনের হাত সরিয়ে দেওয়ান চেষ্টা করে সে বললো।
–আরে আরে আপনি আমার ভাইকে কেন মারছেন? কি করেছে সে? ছাড়ুন বলছি।
পঙ্খির কথা ইন্ধনের কর্ণপাত হতেই তার হাত থমকে গেল। বিস্ফোরিত চোখে তাকালো সে পঙ্খির পানে। বোরখা পড়ায় পঙ্খির মুখ ঢাকা। ইন্ধন বিস্মিত কন্ঠে বললো।
–ভাই মানে? তুমি কি সত্যিই ওর বোন?
–হ্যাঁ, উনি আমার বড়ো ভাই। কিন্তু আপনি তাকে মারছেন কেন?
ইন্ধনের চোখে মুখে যেন অসীম অস্থিরতা ছেয়ে গেল। চোখের সাদা পরদে ছেয়ে গেল লাল লালিমা। সে কিছুক্ষণ থমকে তাকিয়ে থেকে শুকনো ঢোক গিলে বলে উঠলো।
–তো তোমার নাম কি?
–আরে ভাইয়া আমাকে চিনছেন না? আমি পঙ্খি।
পঙ্খি মুখের নেকাব টা উঁচু করে নিজের মুখটা দেখালো। মুহূর্তেই যেন বজ্রপাতের ন্যায় দগ্ধ হয়ে গেল ইন্ধনের মুখশ্রী। শরীরের ব্যালেন্স হারিয়ে দুকদম পিছিয়ে গেল সে। দুই হাতে নিজের চুল টেনে ধরে অশান্ত চোখে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। তারপর হঠাৎ কিছু না বলে দ্রুত পায়ে ওখান থেকে চলে গেল। পঙ্খি ইন্ধনের এমন অদ্ভুত আচরণের হেতু খুঁজে পেল না। সে তার ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললো।
–কি হয়েছে ভাই? উনি আপনাকে মারছিল কেন?
পঙ্খির ভাইয়ের মুখাবয়ব ও কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। সে জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করে বললো।
–আরে কি জ্যানি? টেহা আলা মানুষ জন উনাগেরে মনমতলব ক্যাবা হইরা কমু? বলা নাই কওয়া নাই আইসাই মারা শুরু করলো। আমিতো কিছুই হরিনাই।
পঙ্খির বিষয় টায় যথেষ্ট খটকা লাগলো। এভাবে শুধু শুধু তো উনি এমন করবেন না। কিছু একটা তো অবশ্যই হয়েছে। পরিক্ষার সময় চলে যাচ্ছে। তাই আপাতত সে আবারও কলেজের দিকে রওয়ানা হলো
___
পুকুর পাড়ে বসে মোবাইল দেখছিলো ছায়া।লেখিকা-মেহরুমা নূর। আজ সে আরও কয়েক টা বিনোদন মূলক ভিডিও আপলোড করেছে। সবগুলোই গ্রামের সব মজাদার কাজকর্মের। কয়দিনেই তার চ্যানেলে অনেক ফলোয়ার হয়ে গেছে। সবাই তার ভিডিওতে অনেক লাইক কমেন্ট করছে। নিজের মাঝে একটা জনপ্রিয়তার ভাব এসে গেছে তার। বসে বসে কমেন্টের রিপ্লাই করছে সে। তখনই হঠাৎ পাশ থেকে পুরুষালী কন্ঠে কেউ বলে উঠলো।
–ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট।
চকিত হয়ে মাথা তুলে তাকালো ছায়া। ওর সম্মুখে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের পোশাক পরিহিত শাকিলকে দেখে মুখ কুঁচকালো সে। ঝাঁঝাল সুরে বললো।
–আপনি?? এখানে কি করছেন? আর কি বলছেন এসব আবোল তাবোল? কি ভেবেছেন পুলিশ হয়েছেন দেখে কি ভয় পেয়ে যাবো আমি? আজাইরা ঢং দেখাতে আইছে।
শাকিল ওর হাতে থাকা পুলিশের লাঠিটা আরেক হাতে হালকা বাড়ি দিতে দিতে বলল,
–ঢং দেখাচ্ছি নাকি সত্যি সত্যিই তোকে জেলে ভরতে এসেছি তা এক্ষুনি দেখতে পাবি। জেলে বসে যখন চাক্কি পিসিং,এন্ড পিসিং,এন্ড পিসিং করতে করতে বুড়ী হয়ে যাবি তখন দেখবি কে ঢং কাকে বলে। জেলে বসে বসে গান গাইবি,♬ আমি বন্দী কারাগারে, আমি বন্দী কারাগারে। তখন আমি তোকে দেখতেও আসবোনা।
–উঁউঁহ বললেই হলো? আমি করেছিটা কি? আমার অপরাধ কি?
–অপরাধ কি তাইনা? এইযে বিনা অনুমতিতে মানুষের ভিডিও বানিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় আপলোডাচ্ছিস, জানিস এটা কতবড় আইনত অপরাধ?? এ্যাটেম টু মার্ডার এর চেয়েও বড়ো ক্রাইম। কমছে কম চৌদ্দ বছরের জেলতো পাক্কা। তারওপর আবার ফাঁসি টাসিও দিতে পারে বলা যায় না।
বেচারি ছায়া সত্যি সত্যিই ভয় পেয়ে গেল। ভয়ে কলিজা শুঁকিয়ে এলো তার। সেকি সত্যি সত্যিই জেলে যাবে? না না আমি জেলে যেতে চাইনা। ছায়া ঢোক গিলে শাকিলের দিকে তাকিয়ে ভীতু স্বরে বললো।
–দে দেখুন আমার ভুল হয়ে গেছে। এবারের মতো মাফ করে দিন না? আপনি আমার ভাইয়ের মতো তাইনা??
–চুপপ!! ভাই হইবো তোর মায়ের পোলা। আরেকবার ভাই কবিতো এক্কেরে ফাঁসিতে লটকাইয়া দিমু। শোন মার্ডার করলে তাও তোরে বাঁচাইতে পারমু। তবে আমারে ভাই কইলে তোরে আমি নিজে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাই দিমু। গর্দভ একটা।
–বলছিলাম কি আমরা আমরাইতো। কিছু নিয়ে দিয়ে মামলা রফাদফা করলে হয়না??
–কিহহ?? তুই একটা ইমানদার পুলিশ অফিসারকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করছিস?? এখন তো জেল পাক্কা।
–না না দয়া করে জেলে নিয়েন না। এবারের মতো মাফ করে দেন। আপনি যা বলবেন তাই করবো।
শাকিল বাঁকা হেসে বললো।
–হুমম ঠক আছে। যেহেতু এতো অনুনয় বিনয় করছিস তাই একটা সুযোগ দিচ্ছি তোকে। আমি যা বলবো তাই শুনবি তো?
–হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন না? আমি সব মানবো।
–ঠিক আছে। আজ থেকে রোজ বিকেল চারটায় নদীর ঘাটে আসবি।
–কেন?
–কেন আবার? হাজিরা দিতে। কেসটা যেহেতু আমি পার্সোনালি রফাদফা করছি। তাই পুলিশ স্টেশনে না এসে তুই নদীর ঘাটে আমার সাথে দেখা করে হাজিরা দিবি। হাজার হলেও আমরা একই শরিকের লোক। তাই তোর জন্য নাহয় একটু কষ্ট করলাম। যদিও এরজন্য আমি আমার চাকরির সাথে গাদ্দারি করছি। তবুও তোর জন্য নাহয় এই অপরাধের বোঝাও বয়ে বেড়াবো।
সহজ সরল ছায়ার মনে শাকিলের জন্য সহমর্মিতা জেগে উঠলো।আহারে বেচারা ওর জন্য এতো বড়ো রিস্ক নিচ্ছে। আর শাকিল মনে মনে হেঁসে কুটিকুটি হচ্ছে। এই গর্দভ টাকে বোকা বানানো তো রুটি বানানোয় চেয়েও সহজ।
ওদের কথার মাঝেই হঠাৎ পেছন থেকে কেউ ভারী গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো।
–শাকিল?? তুমি এখানে কি করছ এখন??
পাশে তাকিয়ে সাদা পাঞ্জাবি পড়া সামছুল মজুমদারকে দেখে দুজনেই একটু ভীতিতে পড়ে গেল। শাকিল আমতাআমতা করে বললো।
–আসলে চাচা আমি ইন্ধনের কাছে এসেছিলাম।ওকে দেখছিলাম না তাই ছায়ার কাছে ওর কথা জিজ্ঞেস করছিলাম।
–হ্যাঁ তো ফোন করতে। তাহলেই তো জানতে পারতে। যাইহোক ইন্ধন এখন বাড়িতে নেই। আর শোন এরপর থেকে ইন্ধনের সাথে দেখা করার দরকার হলে বাইরে দেখা করবে। বাড়ির অন্দরে বউ-ঝি রা থাকে। তাই এভাবে হুট করে বাড়ির ভেতরে ঢোকা শোভাদায়ক না। আশা করি বুঝতে পারছো।
–জ্বি চাচা বুঝতে পেরেছি। আমি সামনে থেকে খেয়াল রাখবো। এখন আসি আসসালামু আলাইকুম।
কথাটা বলেই শাকিল দ্রুত ওখান থেকে প্রস্থান করলো। সাথে সাথে ছায়াও দ্রুত বাড়ির ভেতরে চলে গেল। সামছুল মজুমদারের মাথায় শঙ্কা ঢুকছে। এই ছেলেটাকে বাড়ির ভেতরে কিছুতেই আসতে দেওয়া যাবে না। পুলিশের লোক সে, কখন না আবার মাটি খুঁড়ে গোপন রহস্য উদঘাটন করে ফেলে।
___
দিবাভাগের আলোকে বিদায় জানিয়ে কৃষ্ণকায় আঁধারে নিমজ্জিত হয়েছে ধরণী।লেখিকা-মেহরুমা নূর।পঙ্খির রুমে আজ ওর ফুপু শাশুড়ীর মেয়েরা এসে শুয়ে আছে। বেচারি পঙ্খি নিজের শোবার জয়গাটাই খুঁজে পাচ্ছে না। তাই বই খুলে বসে থাকলেও তাতেও মনোনিবেশ করতে ব্যার্থ হচ্ছে পঙ্খি। মস্তিষ্কের মাঝে চলছে শুধু তখনকার সেই কথা। উনি কেন ভাইকে মারছিল? উনি কি ভাইকে আগে থেকে চিনেন? প্রশ্নের বেড়াজাল থাকলেও জবাব পাবে কোথা? ইন্ধন এখনো বাড়ি ফেরেনি। নাহলে উনাকেই জিজ্ঞেস করতো পঙ্খি। কিন্তু আজ এত রাত হয়ে গেছে তবুও উনি বাড়ি ফেরেননি। রাবেয়া চাচী তখন বারবার উনার কথা বলে চিন্তিত হচ্ছিলেন। উনি নাকি কারোর ফোনও ধরছে না। হঠাৎ করে উনার হলোটা কি? দিনদিন কেমন যেন লোকটা রহস্যজনক হয়ে উঠছে।
সময় তখন হয়তো এগারো কি সাড়ে এগারো। ঠাস করে কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে একটু হকচকিয়ে উঠলো পঙ্খি। পাশে ফিরে দেখলো সবগুলো ঘুমে কাঁদা হয়ে আছে। বাড়ির সবাই হয়তো এতক্ষণে ঘুমিয়ে পড়েছে। তাহলে শব্দ কিসের হলো? রান্নাঘরে বিড়াল ঢুকলো নাতো? ভাবনা টা মাথায় আসতেই তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে অগ্রসর হলো সে। করিডরে আসতেই দেখলো ইন্ধন পড়ে আছে। পঙ্খি একটু ঘাবড়ে গেল। সামনে এগুতে নিলে তার আগেই ইন্ধন নিজের প্রচেষ্টাতেই উঠে দাঁড়াল। সামনে পঙ্খিকে দেখে ঢুলুঢুলু এলোমেলো পায়ে ওর পানে এগিয়ে যেতে লাগলো। পঙ্খি অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। ইন্ধনকে দেখে কেমন বিধ্বস্ত লাগছে। হয়েছে টা কি উনার? ইন্ধন এগিয়ে আসতে আসতে আবারও পড়ে যেতে নিলে পঙ্খি ওকে ধরে ফেললো। সাথে সাথে একটা তিব্র দুর্গন্ধ এসে লাগলো ওর নাকে। পঙ্খি ইন্ধনকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বললো।
–আপনি নেশা করেছেন??
ইন্ধন কোন জবাব দিলোনা। লাল হয়ে ওঠা চোখে তাকিয়ে থেকে পূর্বের ন্যায় সে অগ্রসর হচ্ছে। ইন্ধনকে এভাবে এগিয়ে আসতে দেখে পঙ্খি আরও ঘাবড়ে গেল। ধীরে ধীরে সে পেছাতে লাগলো। একসময় দেয়ালের সাথে লেগে গেল সে। ইন্ধন পঙ্খির সামনে এসে দুই হাত পঙ্খির দুই পাশে দেয়ালে রেখে তাকে আটকে ফেললো। ইন্ধনের এহেন কার্যে পঙ্খি চরম অস্বস্তিতে পড়ে গেল। সংকুচিত হয়ে বললো।
–কি করছেন আপনি??দে দেখুন, আপনার এখন হুঁশ নেই। রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ুন। আমরা বরং কাল কথা বলবো।
তাচ্ছিল্যপূর্ণ হাসি দিল ইন্ধন। মূহুর্তেই তার মুখশ্রী কঠিন আকার ধারণ করলো। চোয়াল শক্ত করে সে বললো।
–দেখছিলাম সর্বনাশীদের চোখের ভাষা কেমন হয়। আর কি বললে তোমার সাথে কথা? হাঁহ, তোমার এই কুৎসিত চেহারাটও এখন আমার জন্য বিষাক্ত বিষ। কথা তো দূরের কথা, তোমার চেহারাও আমি দেখতে চাইনা। জাস্ট গেট লস্ট…
কথাটা বলেই ইন্ধন পঙ্খিকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল। মেয়েটা যে পড়ে গিয়ে হাতের কনুইয়ে ব্যাথা পেল সেটা একবার ফিরে তাকিয়েও দেখলো না। পঙ্খি হতবিহ্বল হয়ে গেল।শত ভেবেও সে ইন্ধন এই আচরণের হেতু উদ্ধার করতে পারলোনা। না পারলো মেনে নিতে। বিনা অপরাধে তাকে এভাবে শাস্তি দেওয়া টা সে কিছুতেই মানতে পারছেনা। ইচ্ছে করছে এখুনি গিয়ে লোকটার কাছে এই দুর্ব্যবহারের জবাবদিহি চাইতে। তবে উনার এখন হুঁশ নেই। এখন কিছু বলতে গেলে হিতে বিপরীত হবে। তাই পঙ্খি উঠে দাঁড়িয়ে হাতের কনুই ডলতে ডলতে নিজের রুমে প্রবেশ করলো। তবে মাথার ভেতর থেকে কিছুতেই এই ভাবনা দূর করতে পারছে না। হঠাৎ করে উনি এমন আচরণ কেন করলো আমার সাথে? আর তখন সর্বনাশী কেন বললেন আমাকে? কি এমন করলাম আমি?
চলবে……..