ভালোবাসা
২৯তম_পর্ব
#মৌসুমি_চৌধুরী
সেই প্রশ্নের জবাবে অরু আমায় অবাক করে দিয়ে বলে উঠলো, মানুষের জীবনে ভালোবাসার চেয়ে বেশি দরকার সম্মান। যে সংসারে নারী তার প্রাপ্য মর্যাদা বুঝে পায় না, সেখানে ভালোবাসা না পাবার আফসোস ও আর থাকে না।
তাহলে কাঁদছিস কেন বল তো?
এ জ্বালা তো বিরহের নয়, অপমানের জ্বালা।
অপমানের বদলা তো তুই নিয়ে এসেছিস না, দাদাকে ডিভোর্স করে…বললো বিজু।
সে বললো, অত সহজেই কি সব চুকেবুকে যায়?
ভুলে যা সেসব, মনে রেখে কষ্ট পেয়ে কি লাভ…
পুরুষ যদি একইসাথে একাধিক নারীকে ভালোবাসার দাবি করে তবে সে হয় প্লেবয়, মানে পাক্কা খেলোয়ার। আর নারী যদি সেই একই কাজ করে তবে তাকে বলা হয় বারোভাতারি। মানে বুঝেছিস তুই, পুরুষ করলে বাদশা আর নারী করলে বেশ্যা।
অরু কেন শুধুশুধু নিজেকে দুঃখ দিচ্ছিস বল তো?
পুরুষের ভালোবাসা শত জনে সমান বন্টন করা যায়। কিন্তু জানিস আমরা মেয়েরা না খুব আবেগী, ভালোবাসি শব্দটা তাই যখন খুশি তখন বলতে পারি না…যাকে একবার বলি তাকে আর কখনোই ভুলতে পারি না।
তুই এসব কি আবোলতাবোল বকছিস বল তো!আমাকেও কি তোর তেমন মনে হয়? আর আমার কথা নাহয় বাদই থাক আজাদকে তো বহুবার দেখেছিস তুই…তাকেও কি চিনতে পারিসনি!
মানুষ চেনা কি অত সহজ রে বিজু, তোর দাদাকেই বা ঠিকভাবে চিনতে পারলাম কোথায়? কি থেকে যে কি হয়ে গেলো তা বুঝতে গিয়ে আর মাথা কাজ করে না আমার।
দেখ সব মেয়ে যেমন ভালো নয়, তেমন সব ছেলেও খারাপ নয়। তুই দু-চারজনকে দিয়ে সবাইকে বিচার করতে পারিস না।
তবুও নারীরাই কেন বেশি প্রতারিত হয় বলতে পারিস তুই?
এই প্রশ্নের জবাব জানা ছিলো না আমার তাই চুপ থাকলাম।
অরু ফের বলতে লাগলো, কারণ আমরা যাকে ভালোবাসি তাকে খুব বিশ্বাস করি…আর সেই সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আমাদের প্রতারণা করা হয়।
ছেলেমেয়ে উভয়ের মধ্যেই ভালো খারাপ আছে। মানুষের ভালো মন্দ স্বভাবের কি কোন লিঙ্গান্তর হয় বল তো?
আরেকটা ব্যাপার হলো আমাদের দেশে বেশিরভাগ নারীই পরনির্ভরশীল, আর তাই শুধুমাত্র স্বামীর মুখ চেয়ে যারা বসে থাকে তাদের সাথে ওরা যা তা করার সাহস পায়।
এটা তুই কি বললি…স্বামী স্ত্রীর জন্যে খরচ করবে না তো কে করবে? স্ত্রীর কি সংসারে কোন ভূমিকা নেই!তার মূল্য কি আদৌ কেউ পরিশোধ করতে পারে।
যত যাই বলিস আত্মনির্ভরশীল হবার সাথেই আত্মসম্মানবোধ প্রতিষ্ঠা পায়। আর তাই আমি ভেবে নিয়েছি যে, যেভাবেই হোক নিজের পায়ে দাঁড়াবোই। এ আমার নিজের সাথেই পণ।
আমি খানিকক্ষণ চুপ থেকে বললাম, আমাকেও পাশে পাবি তোর এ লড়াইয়ে।
অরু হাসিমুখে বললো, তুই যে আমায় বুঝেছিস সেটাই যথেষ্ট।
কিন্তু একটা সমস্যা, মাথা চুলকে নিয়ে খানিকটা ইতস্তত করে বললো বিজু।
কি সমস্যা রে…শরীর খারাপ লাগছে তোর? উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলে উঠলো অরু।
আমি হেসে বললাম, সকাল থেকেই কিছু খাইনি বুঝলি…খুব খিদে পেয়েছে আমার। আর খালি পেটে তো যুদ্ধ করা যায় না।
অরু রাগী স্বরে বললো, সেটা এতক্ষণে জানানোর প্রয়োজন বোধ করলি! তুই কি রে বিজু…একটুও নিজের খেয়াল রাখতে পারিস না তাইনা?
তুই হঠাৎ এলি, ফের ডেকে নিলি আর তারপর কত কিছু…বলতে নিয়ে চেপে গেলাম আমি, সকালের ইনসিডেন্টটা আর মনে করাতে চাইলাম না যেন।
সে আমায় বললো, ওঠ তাড়াতাড়ি কোথাও গিয়ে বসা যাক…
রিকশা ডেকে ঝটপট উঠে পড়লো অরু তারপর আমায় তাড়া দিয়ে বললো, তোকে কি ইনভাইটেশন পাঠাতে হবে?
আমি হাসতে হাসতে লাফ দিয়ে উঠে বললাম, নাহ…বান্দা এমনিতেই অলওয়েজ হাজির।
রেস্টুরেন্টে বসে শুধু আমার জন্যে অর্ডার করছিলো অরু। সেটা দেখে আমি বললাম, তুই কিছু খাবি না আর আমি একা একা খাবো এমনটা ভাবলি কি করে!
জবাবে সে বললো, নাস্তা করে এসেছি বুঝলি…এখন আর খিদে নেই আমার।
তাও কিছু একটা তো নে, হাবিজাবি কত কিছুই তো মেয়েরা খেতে ভালোবাসে।
সেসবের কি আর বয়স আছে? ওসব আহ্লাদের দিন শেষ হয়ে গেছে আমার।
ওরে বাপরে…তা বয়স কত তোর আশি নাকি নব্বুই?
কথা তো এমন বলছিস যাতে মনে হয়, চুল পেকে বুড়ি হয়ে গেছিস!
অরু মৃদু হেসে কফি অর্ডার করলো তার জন্যে।
খেতে খেতে মনে হলো আমায় যেন আজ অরুর রোগে পেয়েছে…এত বেশি কথা বলছিলাম যে একসময় নিজের কাছেই যেন তাজ্জব বনে গেলাম।
অরু আমার থমকে যাওয়া দেখে মুচকি হেসে বললো, তুই আমার মতো হয়ে গেছিস না…
আমি যেন তার কথায় লজ্জা পেয়ে গেলাম। ফের বললাম, আর তাই তুই আমার রোলটা প্লে করে চুপচাপ শুনে যাচ্ছিস?
সে হেসে বললো কিন্তু একটা জিনিস মিসিং…
আমি বললাম, সেটা আবার কিরকম?
হাত নেড়ে নেড়ে বলতাম তো…বলে ঠোট চেপে হাসছিলো অরু।
তুই তো আমার মতো খেতে খেতে বলতিস না…আমি যদি হাত নেড়ে নেড়ে বলতে যাই এখন তবে ঝোল পরোটা সব ছিটকে পড়লে রেস্টুরেন্টওয়ালারা তেড়ে আসবে মারতে।
শুনে অরু খিলখিল করে হাসতে লাগলো…কি অপূর্ব যে লাগছিলো অরুকে, দেখে আমি ফের একবার মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
তারপর সে আমার দিকে তাকাতেই নিজেকে সামলে নিয়ে চোখ নামিয়ে নিলাম।
খাওয়াদাওয়া শেষ হলে বিল দিতে নিলে অরু আমায় কিছুতেই টাকা বের করতে দিলো না। মানিব্যাগসমেত আমার হাত পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে নিজের পার্স থেকে টাকা নিয়ে বিল পে করলো।
আমি কিছু বলতে নিতেই অরু বলে বসলো, আর আপত্তি করিস না…রেঁধে খাওয়াতে না পারি, এইটুকুন তো করতে দে আমায়।
এরপর তো আর কোন কথা থাকে না…আমি তাই মৃদু হেসে সম্মতি জানালাম।
রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই অরু বলে উঠলো, আমি আজ চলিরে বিজু…অনেক দেরি হয়ে গেছে এরপর গেলে স্নান খাওয়া সব সেরে টিউশন দিয়ে হোস্টেলে ফিরে আসতে আসতে আমার রাত হয়ে যাবে।
সাবধানে যাস…বললাম আমি।
সে হাসিমুখে বিদায় জানিয়ে একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়লো।
আমি বাস ধরে বাড়ি ফিরে গিয়ে স্নান সেরে বেরুতেই আজাদের কল। কল ধরতেই সে বললো, কিরে আমায় না বলে হঠাৎ কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছিলি বলতো?
আমি তার কথাটা উড়িয়ে দিয়ে বললাম, তুই কি স্পাই গিরি শুরু করেছিস আমার সাথে?
প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন!!! মানেই ডাল মে কুচ কালা হ্যায়…বললো আজাদ।
আমি হেসে বললাম, কুচ তো গরবর জরুর হ্যায়…দয়া পাতা লাগাও।
ফের আজাদ গম্ভীর স্বরে বললো, তোর বাড়ি গিয়ে একবার ফিরে এসেছি।
আমি অপরাধী কন্ঠে বলে ফেললাম, কেন শুধুশুধু রোজ এভাবে ঝামেলা করিস বল তো!
আজাদ বলে উঠলো, আমার তো বয়েই গেছে তোর জন্যে আসতে…আরে বোন পাতিয়েছিস যার সাথে সে বেচারিরই তো ঘুম হারাম তোর চিন্তায়।
রুখসানা ও এসেছিলো নাকি তোর সাথে? জানতে চাইলাম আমি।
তাকেই বরং জিজ্ঞেস কর না…বলেই আজাদ ফোনটা ধরিয়ে দিলো রুখসানার হাতে।
আমি অপ্রস্তুতবোধ করতে লাগলাম।
হ্যালো বলতেই রুখসানার কন্ঠে মনে হলো যেন অভিমান ঝরে পড়ছিলো…সে বললো, আমরা কি তোমার পর হয়ে গেছি বিজয়দা?
আমি এর জবাবে কি বলবো বুঝতে না পেরে বললাম, তা হতে যাবে কেন!
সে ফের বললো, নইলে না বলে কয়ে এই দুর্বল শরীরে কোথায় চলে গিয়েছিলে বলো তো?
আমি চুপ করে রইলাম, মিথ্যে বলতে কেন জানি মন সায় দিচ্ছিলো না।
তোমার জন্যে ভেবে ভেবে আমরা যে চিন্তায় অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম তা যদি তুমি বুঝতে, কত রকমের দুশ্চিন্তা যে আসছিলো মনে….বলে রুখসানা আর কথাটা শেষ করলো না।
আমি বললাম, sorry for that inconvenience.
সে হেসে বললো…এই কাঠখোট্টা জবাব আমায় দিচ্ছো ঠিক আছে, তবে তোমার বৌ মানে আমাদের ভাবী আসলে কিন্তু এমন ইমোশনলেস রিপ্লাই দিলে তার ভালোবাসা অর্জন করতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হবে তোমায়।
আজাদ আর রুখসানা খাইয়েদাইয়ে যেভাবে পাশে থেকে আমার নিয়মিত খোঁজখবর রাখছিলো তাতে কোন একসময় যে আমি আজাদকে ভালো বন্ধু নয় ভেবেছিলাম, তার জন্যে যেন আমি ভেতরে ভেতরে অপরাধবোধে ভুগতে লাগলাম।
আর তাই ভাবলাম ওদের জন্যে আমার কিছু তো করা উচিত। স্পেশাল কিছু…যেই ভাবা সেই কাজ, ফিরে যাবার আগে বরং একটা হানিমুন প্যাকেজ গিফট করে দেই। কোথায় গেলে খুশি হবে ওরা তা ভেবে পাচ্ছিলাম না! ফের মনে হলো, অরুর সাথে এ ব্যাপারে আলাপ করা যেতে পারে।
তারপর একদিন দেখা হলে পরে অরুকে বলতেই সে বললো, আমায় জিজ্ঞেস করছিস কেন! ওদের হানিমুন ওদেরই জিজ্ঞেস কর।
আমি বলে উঠলাম, আরে বোকা…আমি তো ওদের সারপ্রাইজ গিফট দিতে চাইছি।
তুই কি সরাসরি জিজ্ঞেস করবি নাকি! তাদের কাছে ইনডিরেক্টলিই না জানতে চাইবি রে আমার বুদ্ধুরাম।
আমি হেসে উঠতেই অরু বলে ফেললো, তুই আমায় বোকা বলেছিস তাই তোকে বুদ্ধুরাম বলেছি…এখন হয়ে গেলো শোধবাদ।
আমি মনে মনে বললাম, বুদ্ধুরাম বলিস না হয় গোবরগণেশ বলিস কিছুই যায় আসে না। আমাকে যে তুই আমারর বলেছিস তাতেই আমি খুশি, আমি যাই হই শুধু তোর ব্যাস…আর কিছু ভাবতে চাই না জীবনে।
সে আমার চোখের সামনে হাত নেড়ে বললো, কি অত ভাবছিস বল তো?
আমি তাড়া দিয়ে বললাম, আচ্ছা একটা কিছু সিলেক্ট করে দে না?
সে বলে উঠলো, আমার মত চাইলে বলবো সিকিম কিংবা শিমলা-মানালী…বরফের রাজ্য দেখতে গেলে ওদের ভালো লাগবে আশাকরি।
ওকে তাহলে সেটাই ফাইনাল।
ফের যেদিন রুখসানাকে প্যাকেজটা হাতে দিলাম সেদিন তার খুশির যেন আর ঠিকানা রইলো না। আনন্দের আতিশয্যে সে বলে ফেললো, বিজয়দা থ্যাংক ইউ সো মাচ…ইউ আর দ্যা বেস্ট।
আমি হাসিমুখে তার প্রত্যুত্তরে কিছু বলে আজাদের দিকে ঘাড় ফিরিয়ে তাকাতেই দেখি ওর মুখ থমথম করছে, আমি হেসে বললাম…কিরে বাংলার পাঁচের মতো মুখ করে রেখেছিস কেন বল তো?
সে জবাবে বললো, কেন অত পয়সা খরচা করতে গেলি বল তো? খুব বড়লোক হয়ে গেছিস না!
তোদের কাছ থেকে যে পরিমাণ ভালোবাসা পেয়েছি তার বিনিময়ে এই সামান্য উপহার কি দিতে পারিনা!
তা বলে অত দামী প্যাকেজ দিতে হবে? বিয়েতেও দামী প্রেজেন্ট তাও আবার আমার আর রুখসানার জন্যে আলাদা করে, এখন আবার এসব…তোর এত কষ্টের উপার্জন এভাবে নষ্ট হতে দেখলে আমার খারাপ লাগে।
টাকা দিয়ে যদি প্রিয়জনদের মুখের হাসিই না কিনতে পারি, তবে কিভাবে আর টাকা কামাতে মন চাইবে বল তো?
সে আর কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো।
আমি তার মান ভাঙাতে বললাম, এটা রুখসানার দাদা তাকে গিফট করেছে ভেবে আর অভিমান করে থাকিস না, গাল ফোলালে মেয়েদের দেখতে ভালো লাগে…আর ছেলেদের কেমন লাগে সে তুই ভালোই জানিস।
আজাদ আমায় জড়িয়ে ধরে বললো, থেকে যা নারে ভাই…আরে তুই ফিরে গেলে আমরা কি করে থাকবো বলতো?
আমি সেকথার কোন জবাব দিতে পারলাম না কারণ আবেগে আমারও গলা বুজে আসতে চাইলো।
তারপর আমি পুরোপুরি সুস্থ হতেই আজাদ আর রুখসানাকে হানিমুনে পাঠিয়ে দিয়ে ফের রোজকার নিয়মে অরুর সাথে দেখা করি। অনেক কথা হয় আমাদের মধ্যে। স্কুলের বন্ধু, পুরনো স্মৃতিচারণ, অরুর ক্যারিয়ার প্ল্যান…সব। কিন্তু সেসব কথায় আমার মনের কথা যেন আর উঠে আসে না। আমার ভালোবাসাকে মনের মধ্যে চাপা দিয়ে রেখে আরো একবার আমি অরুর ভালো বন্ধু হয়ে উঠলাম।
তার কবে কোন জব ইন্টারভিউ, কোন টিউশন কখন, আবার কবে বই কিনতে যাবে…সেসবই যেন আমার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে নতুন করে আবার দেখা শুরু করলাম।
তার সাথে সাথে গিয়ে তাকে সাপোর্ট দিতে লাগলাম মানসিকভাবে। সে এখন মনে হয় অনেকটাই হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। আর আমার বন্ধুত্ব সেটাও যেন তার বিশ্বাস অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
একদিন সে আমায় বললো, তোর ছুটি তো শেষের দিকে তাইনা?
আমি হেসে বললাম, আরো দু’দিন সইতে হবে তোর।
দুবাইতে তো সুন্দরী মেয়ের অভাব নেই, ফের এলে বিয়ে করেই ফিরিস তুই…বলে হাসলো অরু।
আমি হঠাৎ মুখ ফসকে বলে ফেললাম, আমার যে বাঙালি নারীই ভালো লাগে…বিদেশী মেম সামনে থাকলেও রুচবে না আমার।
অরু কিছুক্ষণ চুপ থেকে একসময় বললো, চল উঠি।
পরদিন দুপুরে বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে ভাবতে লাগলাম এই অসময়ে কে এলো! উঠে গিয়ে দেখি অরু, হাসিমুখে তাকিয়ে থেকে বললো…একটা খুশির খবর আছে রে বিজু।
আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেই সে বললো, আমার চাকরি হয়েছে।
তারপর আমি কিছু বলার আগেই সে একনাগাড়ে বলে যেতে লাগলো,বড় শহরের হেড অফিসে জয়েন করতে হবে। বেশ ভালো স্যালারি, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানী বুঝলি…আজই রওনা দেবো ভাবছি।
আমি বললাম, যাবার আগে তোকে একটা মোবাইল কিনে দেই? যোগাযোগটা যেন অন্তত থাকে তোর আমার সাথে।
সে হাসতে হাসতে বললো, আরে আমি কিনে নিতে পারবো তো এডভান্স স্যালারি তুলে নিয়ে। তুই কিছু ভাবিস না, তোর নম্বর তো আছেই আমার কাছে। পৌছে কল করে সব জানিয়ে দেবো তোকে, বলেই একছুটে বেরিয়ে গেলো।
আমি ক্ষণিক দাঁড়িয়ে তার গমন পথের দিকে চেয়ে ভাবতে লাগলাম, ফের কবে দেখা হবে কে জানে…
#চলবে
কপি করা নিষেধ, লেখা অন্যত্র ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ।