জীবনতরী #পর্ব৬

0
599

#জীবনতরী
#পর্ব৬
Hasin Rehana – হাসিন রেহেনা

এ কয়দিনে নিজেকে অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছে সাদিয়া। শত প্রতিকূলতার মাঝেও এগিয়ে যেতে হবে, এই চিন্তাটাই ওকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস যোগাচ্ছে। কোচিংয়ের টিঊটোরিয়ালগুলো এখনো যে খুব ভাল হচ্ছে এমন না। তবে ভুলগুলো থেকে শিখছে ও।

“কেমন দিলি রে আজকের টিউটোরিয়াল?”, নাফিসা জিজ্ঞাসা করল।
“মোটামুটি। তুই?”, পালটা প্রশ্ন করল সাদিয়া।

“তুই সারাদিন পড়ে মোটামুটি দিলে আমি আর কেমন দিতে পারি বল? পাতলাপাতলি!”, হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল নাফিসা।

ছোঁয়াচে হাসি ছড়িয়ে পড়ল সাদিয়ার মধ্যেও।

এমন সময় মার্কার আর একটা বই হাতে ক্লাসে ঢুকল তমাল। পরীক্ষার জন্য এতদিন কোচিংয়ে ক্লাস নিতে আসেনি তমাল। আজকেই প্রথম সাদিয়াদের ক্লাসে আসল ও। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বেশ কয়েকবার চোখাচোখি হল। ক্লাসে আসার আগে সাদিয়ার টিউটোরিয়ালের মার্ক দেখে এসেছে তমাল। এখন পর্যন্ত, বেশ হতাশাজনক। এভাবে চলতে থাকলে ডিএমসি কেন, অন্য কোথাওই চান্স হবে না। স্যার কত আশা করে মেয়েকে রেখে গেছে ঢাকা।

তমাল ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতেই টুং করে ম্যাসেজ আসল সাদিয়ার ফোনে। সাইল্যান্ট করতে ভুলে গেছে আজ, ভাগ্যিস ক্লাসের মাঝে বেজে ওঠে নি।

“অফিসরুমে দেখা কর, পিচ্চি।”

ম্যাসেজটা দেখেই মেজাজ খারাপ হল সাদিয়ার। আর তাছাড়া তমালের সাথে এমনও পরিচয় নেই যে বলা নেই কওয়া নেই পিচ্চি বলবে। তুই তুই করবে। পরক্ষনেই মনে হয়, নিশ্চয় বকা দিবে।

“এই নাফিসা, তুই চলে যা, আমার একটু কাজ আছে।”

“কি কাজ? আমার তাড়া নাই তো।”

“দেরি হবে। তখন তুই আবার ফোস ফোস করবি। যা না ভাই।”

“আচ্ছা। গেলাম তাহলে।”

কিছুক্ষণ পরে অফিসে গেল সাদিয়া। তমাল একটা বইয়ে মুখ গুজে বসে আছে। ড্যান ব্রাউনের “ইনফার্ণো”।

“তমাল ভাইয়া…”

“ও পিচ্চি… আসছিস?”

“ভাইয়া, আমি মোটেও পিচ্চি না।”

“ও আচ্ছা। মনে থাকবে।”

“তা মার্কস এত খারাপ কেন, বুড়ি? স্যার জিজ্ঞাসা করলে কি বলব?”

এবার আর কোনও প্রতিবাদ করল না সাদিয়া।

“মাথা নিচু করে থাকলেই হবে?”

“উহু…”

“কি?”

“কি করব বলেন? আমি তো চেষ্টা করতেছি। কাজ হচ্ছে না।”

“কি সমস্যা হচ্ছে বল?”

“সেটাই তো বুঝিনা।”

“এভাবে চললে চান্স হবে?”

“না।”

“তাহলে কি করতে হবে?”

“আরো পড়তে হবে।”

“জি না।”

তমালের কথা শুনে মুখ তুলে তাকালো সাদিয়া।

“তাহলে?”

“স্মার্টলি পড়তে হবে। এক কাজ কর, কাল থেকে সপ্তাহে তিন দিন আমি তোকে পড়াবো। এখানে তো হবে না, অন্য যায়গা খুঁজা লাগবে। আমি জানাবো তোকে।”

“আচ্ছা ভাইয়া। যাবো?”

“না তো কি করবি? আমার ক্লাস আছে আবার।”

সাদিয়া চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে আসলো।

“আবার কি?”

“থ্যাঙ্কিউ ভাইয়া।“

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here