The_Beauty_Of_Love,Part_1

0
3918

#The_Beauty_Of_Love,Part_1
#Samayra_Mihu (Nafisa)

ছাড়ুন আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন ছাড়ুন বলছি,,,আর কে আপনি আমাকে এভাবে টেনে ভিতরে নিয়ে যাচ্ছেন কেনো আমার হাতে ব্যাথা করছে ছাড়ুন আমায় প্লিজ এখনি রোহান আসবে আজ ওর সঙ্গে আমার বিয়ে হবে আপনি কেনো আমাকে নিয়ে যাচ্ছেন ছাড়ুন না,,,(কান্না করে)

আমি অনেক কান্না করে কথা গুলা বলি ছেলেটা কে কিন্তু সে কোনো কোথায় শুনছে না আমাকে টেনে হিচড়ে কাজী অফিসে র ভিতরে নিয়ে যাচ্ছে,,,কাজী অফিসে র ভিতরে গিয়ে একটা লোক কে কাগজ ঠিক করতে বলে আর ছেলে টা সাইন করে দেই,, ছেলেটা সাইন করার সময় আমি নাম টা দেখি মাহির চৌধুরী এবার আমার সাইন করার পালা চোখের ইশারায় সাইন করতে বলে আমাকে উনি কিন্তু আমি করবো না বলে দি,,,উনি ধমক দিয়ে উঠে,, ওনার ধমকে কেপে উঠি আমি,,,তবুও বলি,,,

::; আমি সাইন করবো না আর কিসের পেপার এটা ?

তখন মাহির বলে উঠে,,,

“আমাদের বিয়ের তোমার আর আমার বিয়ে এখনি এই মুহূর্তে,,দেখো আমার কাছে বেশি সময় নেই জলদি এখানে সাইন করো,,,

ওনার কথা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়লাম কি বলছে কি লোকটা বিয়ে কি ছেলে খেলা যে চিনি না জানি হুট করে এসে বিয়ের কথা বলে,,,,,আমি কান্না করে আবার বলে উঠলাম,,

“আমি আপনাকে বিয়ে করবো না আর কে আপনি হা যে আপনাকে বিয়ে করবো আমি রোহানের জন্য ওয়াইট করে আছি ও এখনি চলে আসবে আমরা বিয়ে করবো আজ,,,

আমি এসব বলতেই সজোরে থাপ্পড় পরলো আমার গালে ,,, হ্যাঁ মাহির মেরেছে,,,মাহির এবার চিৎকার করে বলে,,

“সাইন কর এখানে নইতো এখনি গুলি করে মেরে ফেলবো,,,(পকেট থেকে একটা গান বার করে আমার মাথায় ঠেকিয়ে)

এসবে ভয় পেয়ে সাইন করে দেয় আমি,,,,সাইন করে পেপার টা মাহির হাতে নিয়ে দেখে সেখানে সামায়রা মিহু আহমেদ লিখা,,,মাহির একটু মুচকি হাসে পেপার টা হাতে নিয়ে তারপর আমার হাত ধরে আবার টেনে নিয়ে যাই বাইরে গাড়ি তে বসিয়ে বেরিয়ে পড়ে ওনার অফিসে র উদ্দেশে,,, আমি কান্না করেই যাচ্ছি,,কিছু ক্ষণের মধ্যেই আমার সঙ্গে কি হলো আমি নিজেই বুঝতে পারছি না বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিলাম রোহান কে বিয়ে করবো বলে কিন্তু এই লোক আমাকে জর করে বিয়ে করে নিলো,,কে এই লোক আমি তো কখনো দেখি ই নি এই লোক কে,, হঠাৎ দেখাই বিয়ে করে নিলো,,,,,

২ ঘণ্টা আগে কথা,,,,,

কাজী অফিসের সামনে বরো একটা গাড়ি এসে থামলো,,একটা গার্ড এসে গাড়ির দরজা খুলে দিলে সেখান থেকে মাহির চৌধুরী বের হলো,,কালো প্যান্ট কালো শার্ট আর কালো কোট পরে চোখে সান গ্লাস,,হাতে দামী ঘড়ি পুরো হিরো সব মেয়ের ক্রাশ মাহির চৌধুরী,,, ইন্ডিয়ার টপ সেরা বিজনেস ম্যান দের মধ্যে একজন,,নিজের যোগ্যতাই এতো দুর এসেছে আজ মাহির চৌধূরী,,ছোটো বেলায় আব্বু মারা গেছে মাহিরের এখন দুনিয়া বলতে তার আম্মু,,,, আর দু চোখে দেখতে পারে না কোনো মেয়েকে,, আর বিয়ে মাহির বিয়ে তে বিশ্বাস ই করে না কিন্তু আজ তাকে বিয়ে করতেই হবে নইতো তার অনেক কষ্টে গড়ানো বিজনেস কোম্পানি সম্পত্তি সব সরকারের কাছে চলে যাবে কিছু পাবে না মাহির,,তাই তাকে বিয়ে করতেই হবে,,,,ইচ্ছা না থাকার সর্টেও একটা মেয়ে ঠিক করে ১বছরের জন্য বিয়ে করবে বলে,,,,তাই সে এখন কাজী অফিসের সামনে দাড়িয়ে আছে,,,,,

মাহির প্রায় ৩০ মিনিট মতো দাড়িয়ে থাকে কিন্তু মেয়েটা আসে না,, রেগে তার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কে বলে উঠে,,,

“রনি জেরিন কই?(যার সঙ্গে বিয়ে হয়ার কথা তার নাম জেরিন)

রনি ভয় ভয় বলে “জেরিন কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না স্যার,,,

রনির কথা শুনে মাহির অনেক রেগে যায় সে কি করবে বুঝতে পারছে না এখনি তার বিয়ে করা লাগবে নয়তো তার সব কিছু নিলামে চলে যাবে,,সব গার্ড দের বলে যে করেই হোক যত টাকা ই লাগুক তার জন্য একটা মেয়ে আনতে,,,মাহির অনেক রাগ প্লাস টেনশনে পরে যাই হাতে মাত্র কিছু ঘণ্টা সময় আছে,,,

এই দিকে আমি অনেক ক্ষন থেকে বসে আছি কাজী অফিসের কাছে বউ সেজে বসে আছি,, আর বউ সেজে থাকবোই না কেনো আজ যে আমার বিয়ে রোহানের সঙ্গে কিন্তু সাজ টা যে আমাকে জর করে সাজিয়েছে আমার মামী,,,,(বুঝছেন না তো আচ্ছা আমি বুঝিয়ে বলছি)

এবার আমি ইন্টার ২ন্ড ইয়ার এর ছাত্রী,,, রোহান নামের একটা ছেলে কে ভালোবাসি আমি,,,কিছু দিন আগে রোহানের সঙ্গে ঘুরার সময় দেখে ফেলে আমার মামি,,,, আমার আব্বু আম্মু কেও নেই ছোটো বেলায় মারা গেছে ছোটো থেকেই মামা মামীর কাছে বরো হয়েছি কিন্তু মামা ভালোবাসলেও কখনো মামী ভালোবাসেনি দু চোখে দেখতে পারে না আমাকে মামী,,,রোহানের সঙ্গে ঘুরার সময় আমাকে মামী ই দেখে ফেলে,,,তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় কাল ই আমার বিয়ে দিয়ে দিবে,,, এই ছেলের সঙ্গে উল্টা পাল্টা করলে পরে তাদের ই দুর্নাম হবে সমাজে এটাই ভাবে আমার মামী,,,

আমি বাড়ি যেতেই অনেক মারে আমাকে মামী আর বলে কাল ই তোর বিয়ে দিয়ে দিবো আমি অনেক কান্না করি আর বলি যে আমি এখন বিয়ে করবো না কিন্তু শুনে না রুমে বন্দ করে রাখে আমাকে সারারাত,,,পরের দিন সকালে আমাকে রুম থেকে বার করানো হয় জর করে গোসল করিয়ে পাড়ার কিছু মেয়ে বউ সাজাতে লাগে আমাকে,, আমি অনেক কান্না করছি আমি এই বিয়ে করব না,, বউ সাজিয়ে মেয়েগুলা চলে যাই রুম থেকে,,,, তাড়াতাড়ি ফোন টা নিয়ে রোহান কে ফোন দেই আর সব কিছু খুলে বলি,, রোহান এটা বলে যে তুমি যে করেই হোক বাড়ি থেকে পালিয়ে কাজী অফিসে চলে এসো,,, আমি ও তাই করি বাড়ি থেকে পালিয়ে কাজী অফিসে চলে আসি,,,এসে সেই এক ঘণ্টা থেকে বসে আছি তবুও রোহান আসে না আর না রোহানের ফোন লাগছে,,যত বার ফোন লাগিয়েছি ওই পাস থেকে একটা কোথায় আসছে, “আপনি যেই নাম্বারে কল করেছেন সেটা এখন সুইচ অফ আছে দোয়া করে কিছু ক্ষন পর আবার চেষ্টা করুন” আমি অনেক টেনশনে পরে যাই রোহান আসছে না কেনো আর তার ফোন ই বা কেনো লাগছে না,,,,,

মাহির রেগে এদিক সেদিক দেখছিল তখনি তার চোখে পড়ে একটা মেয়ে বউ সেজে বসে আছে আর আসে পাশে কেও নেই মাহির আর কিছু না ভেবে আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগে,,, তার পরে তো আপনারা জানেন ই,,,,,,,

আমি এইসব ভাবছিলাম আর কান্না করছিলাম,, উনি আমার পাশে বসে আছে আমি যে কান্না করছি তাতে তার বিন্দু মাত্র ক্রু খেপ নেই উল্টো বিরক্ত হচ্ছে,,,গাড়ি গিয়ে থাকলো একটা অনেক বরো বিল্ডিং এর সামনে,,মনে হয় এটা ওনার অফিস হবে,,আমাকে একা গাড়ি তে বসিয়ে রেখে মাহির চলে গেলো ভিতরে,,এই দিকে বেচারি আমি কান্না করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে পরী গাড়িতেই,,,,,,মাহির অফিনের সব কাজ শেষ করে বাড়ি যাওয়ার জন্য নিচে এসে গাড়িতে উঠে ,,,উঠে দেখে আমি ঘুমিয়ে আছি,,, ড্রাইভার কে গাড়ি চালাতে বলে মাহির,,,

মাহির এবার ভালো করে আমার দিকে তাকিয়ে দেখে পরনে লাল শাড়ি আর মাথায় বিয়ের একটা অর্না দেখে অনেক পিচ্ছি মনে হচ্ছে মুখে তেমন সাজ নেই আর কান্না করে চোখ মুখ ফুলিয়ে দিয়েছে,,,মাহির ভাবছে ,,একে দেখে তো ওতো বরো লাগে না পিচ্ছি একটা মেয়ে তাহলে বিয়ে করতে কেনো এলো তাও একা,,, এটা ভেবে মাহির রনি কে ফোন দেই আর বলে,,,

“রনি মিস ওহ সরি মিসেস সামায়রা মিহু আহমেদ এর পুরো ডিটেস আমার চায়, আর ও যে রোহানের নাম বলছিলো তার ও সব খবর আমার চায়,,,,,

“ওকে স্যার ১ঘণ্টার মধ্যে সব খবর দিচ্ছি,,(রনি এই বলতেই মাহির ফোন টা কেটে দেয়)

আস্তে আস্তে চোখ খুলে চারি দিকে তাকিয়ে দেখছি,,এটা আমি কোথায় আছি ,, অনেক বরো একটা রুম এতো বরো রুম এই রুমে তো আমার মামীর পুরো বাড়ি তার সমান,,আমি নরে চড়ে উঠে বসতে লাগী তখনি পাস থেকে একটা ভদ্র মহিলা বলে উঠে,,,

“আরে বউমা তোমার ঘুম এতো খনে ভাঙলো,,

ভদ্র মহিলার কথা শুনে আমি কিছু বুঝলাম না আমাকে বউমা কেনো বলছেন,, পরক্ষণে সব কিছু মনে পরে গেলো,,,আমি কান্না করে বলি,,

“আমি কোথায় আছি?

“তুই তোর স্বামীর বাড়িতে আছিস মা এটা মাহিরের বাড়ি এখন থেকে তোর ও আমি মাহিরের আম্মু,,,আচ্ছা তোকে তুই করে বলে ফেললাম কিছু মনে করিস নি তো, জানিস আমার একটা মেয়ের খুব সখ ছিল,,মাহির কে কতো বলেছি বিয়ে কর বিয়ে কর সে তো শুনছিলই না অবশেষে একটা মিষ্টি মেয়েকে নিয়ে এলো বিয়ে করে,, তোকে পছন্দ করে আমাকে আগে বললেই হতো আমি কি না করতাম নাকি কতো ধুমধাম করে বিয়ে দিতাম,,,আচ্ছা তুই আমাকে মামনি বলে ডাকবি ঠিক আছে,,,

একনাগাড়ে কথা গুলা বললো ভদ্র মহিলা যে এখন আমার শাশুড়ি আমি আর কিছু না বলে ,,মাথা নাড়ালাম অর্থাৎ ঠিক আছে,,,

তখন মামনি আবার বলে উঠে,,,

” এই নে এটা পরে নে আমি তোর জন্য খাবার নিয়ে আসছি,, (আমার হাতে একটা শাড়ি ধরিয়ে দিয়ে)

আমি সাড়ি পড়তে পারি না তাই করুন চোখে মামনির দিকে তাকালাম উনি মনে হয় বুঝে গেছে তাই মুচকি হেসে বলে উঠে,,,

“আচ্ছা তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি পরিয়ে দিচ্ছি,,

আমিও কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে এলাম মামনি আমাকে সাড়ি পরিয়ে দিলো খুব সুন্দর করে,,আমাকে সাড়ি পরিয়ে দিয়ে উনি নিচে চলে গেলো আর আমি আবার ভাবতে শুরু করলাম আমার সঙ্গে কি হলো,,উনি আমাকে যোর করে কেনো বিয়ে করলো আজ তো আমার রোহানের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল কিন্তু রোহান কোথায় আর ওকে কেনো ফোন করেও পাচ্ছিলাম না আমি কাজী অফিসে আসতে বলে নিজেই কেনো এলো না ,,এমন হাজারো চিন্তা ভাবনা মাথায় ঘুরছে,,,,

এইদিকে মাহির,,,

“রনি আমি তোমাকে যা কাজ দিয়েছিলাম সেগুলার কি খবর?

“স্যার আমি সব খবর নিয়ে এসেছি,,, ম্যাম মানে সামায়রা মিহু আহমেদ ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী,, বয়স ১৮,, বাবা মা ছোট বেলায় মারা গেছে ছোটো থেকেই মামা মামীর কাছে বরো হয়েছে,, রোহান নামের একটা ছেলের সঙ্গে রেলেশন ছিল সেটা তার মামী জেনে যাই তাই আজ যোর করে বিয়ে দিতে চায় ছিলো ম্যাম এর এলাকার এক মাস্তান এর সঙ্গে যে দিনে দুপুরে মেয়েদের টিস করে ম্যাম কেও অনেক বিরক্ত করতো অবশেষে ম্যাম এর মামী কে টাকা দিয়ে বিয়ে করছিলো ম্যাম কে,,, ম্যাম এটা রোহান কে বলায় রোহান ম্যাম কে বাড়ি থেকে পালিয়ে কাজী অফিসে আসতে বলে কিন্তু রোহান আসে নি কাজী অফিসে,,,খবর নিয়ে যানি রোহান ছেলে টা ভালো না আরো অনেক মেয়ের সঙ্গে রিলেশন আছে,,কিন্তু ম্যাম কে কাজী অফিসে কেনো ডাকলো আর নিজে কেনো এলো না এটার খবর এখনও পায়নি স্যার,,,,

একনাগাড়ে কথা গুলা বলে থাকলো রনি,,তখন মাহির বলে উঠে,,

“রোহানের বাকি খবর টাও যেনে বলো আমায় আর খুব জলদি,,,

এই বলেই মাহির চলে যায় সেখান থেকে,,,,,

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here