The_Beauty_Of_Love,17,18

0
1770

#The_Beauty_Of_Love,17,18
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_17

মাহির আজ অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছে,,,,বাড়ি ফিরেই আবার কোথায় যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে,,,তখনি পিছন থেকে জেরিন এসে জড়িয়ে ধরে,, মাহির এক ঝটকায় সরিয়ে বলে,,,

“হাউ ডেয়ার টু টাচ মি,,,, ভুলে যেও না তোমাকে কিসের জন্যে এখানে রাখা হয়েছে,, আমার কাছে আসার আর একবার চেষ্টা করলে আমি তোমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিবো,,,,,(রেগে বললো কথা গুলা)

“কেনো এমন করছো মাহির আমি তোমাকে ভালোবাসি,,,আর কতো দিন তুমি এমন একা থাকবে,,, যাকে খুঁজছো সে আর আসবে না এতো দিনে মরে……..(আর কিছু বলতে পারলো না জেরিন সজোরে একটা থাপ্পড় দিলো মাহির)

“যা বলেছো বলেছো আর একবার আমার জান পাখি র ব্যাপারে বললে তুমি আর বলার লায়েক থাকবে না,,,,,(রেগে বলে বের হয়ে গেলো রুম থেকে মাহির)

জেরিন মাহিরের রুমে বড়ো মিহুর ছবি টাঙানোর দিকে রেগে তাকিয়ে বললো,,,

“তুই মরেও মাহিরের মনে রাজ করছিস,,আর আমি কাছেই যেতে পারি না,,, কি আছে তোর মধ্যে যা আমার মধ্যে নেই মাহির আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না,,,,,,,,,,,

মাহির গাড়ি নিয়ে অনেক যোরে গাড়ি চালিয়ে একটা ব্রীজ এর ওপরে গাড়ি থামায়,,,গাড়ি থেকে বের হয়ে ব্রীজ এর পাসে গিয়ে দাঁড়াই,,,নিচে পানি অনেক,,,পানির দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে মাহির,,,মাহিরের চোঁখ থেকে এক ফোঁটা পানি পড়ে নেই পানি তে মিশে গেলো,,,,,,

“এমন কেনো হলো জান পাখি তুমি তো আমার কাছে থাকতেও পারতে,,,আজ যদি তুমি আমার কাছে থাকতে জীবন টা কতো সুন্দর ই না হতো,,,,ফিরে এসো না আমার কাছে,, তোমার চৌধূরী সাহেব যে ভালো নেই তোমায় ছাড়া,,,,,তুমি না আমার কাছে বেবি নিবো বলেছিলে,, তাহলে কেনো চলে গেলে ,,,,,(মাহির মিহুর সঙ্গে কাটানো কিছু অতীতে চলে যায়,,)

“চৌধুরী সাহেব ও চৌধূরী সাহেব শুনছেন আপনি,,,,(মাহির ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছিল সোফায় বসে তখন মিহু মাহিরের পাসে বসে বলে)

“আমি তোমার মতো বইরা না শুনতে পায় সব বলো কি বলবে?

মিহু মাহিরের কাছ থেকে ল্যাপটপ টা নিয়ে পাসে রেখে মাহিরের কোলে উঠে বসে,,,,আর বলে,,

“চৌধুরী সাহেব আমার না একটা বেবি লাগবে,,মামনির সঙ্গে শপিং এ গেছিলাম তখন দেখলাম একটা মেয়ে তার বেবি কে নিয়ে শপিং করছে,,জানেন চৌধূরী সাহেব বেবি টা কতো কিউট,,আমারও ওমন বেবি চায় চৌধূরী সাহেব,,,,(মাহিরের গলা জড়িয়ে কপালে কিস করে বলে)

মাহির মিহুর কথা শুনে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে আছে,,,মাহির বলে,,

“তুমি নিজেই বাচ্চা আর তোমার বাচ্চা লাগবে? সামলাতে পারবে,,,,,(মিহু কে আরো একটু কাছে টেনে)

“আমি বাচ্চা না আঠারো প্লাস হুহ আর কইদিন পর উন্নিষ হবে বুঝলেন,,,,আর আমার বে……(মিহু আর কিছু বলতে পারলো না মাহির তার মুখ বন্ধ করে দিলো,,,,পাঁচ মিনিট পর ছেরে দিলো মাহির)

“আআআআআ এটা কি করলেন এমন টা কথা ছিলো না কিন্তু,,আমি বেবি চায়ছি আর আপনি কি করলেন,,,,,,

মাহির যোরে হোহোহো করে হেসে উঠলো,,,

“সামান্য কিসে এই অবস্থা জানু তুমি যানো বেবি নিতে হলে কি করতে হয়,,, হাহাহাহাহাহা,,,,,(মাহিরের কথা শুনে মিহু রেগে উঠে চলে গেলো)

বর্তমানে,,,

মিহুর কান্ড কারখানা মনে করে মাহির আবার হেসে উঠলো,,, কতোই পাগলী ছিলো তার জান পাখি,,,,,কিছু খন নিজে নিজে হেসেই আমার মুখটা মলিন হয়ে গেল মাহিরের,,,সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বারের দিকে রওনা দিলো মাহির,,,,

।।

নয়ন আজ কাজের জন্যে বাইরে এসেছে যদিও এখন তার বাইরে থাকতে পছন্দ না সব সময় তার প্রিয়সির কাছে থাকতে ভালো লাগে,,,কিন্তু কাজের চাপ এতো বেশি যে আসতেই হয়েছে নয়ন কে,,,,,,,,, নয়ন একটা রেস্টরেন্টে বসে মিটিং করছিলো তখনি নয়নের ফোন বেজে উঠলো,,,ফোন রিসিভ করেই শুনতে পেলো,,,,,

“স্যার প্লিজ তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসুন ম্যাম এর জ্ঞান ফিরেছে,,, অনেক পাগলামি করছে রুমের সব জিনিস ভেঙে ফেলছে প্লিজ তাড়াতাড়ি আসুন আমরা আটকাতে পারছি না,,,,,

নার্স এর কথা শুনে নয়ন সব কিছু ফেলে সেখান থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এসে গাড়ি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে,,, নয়নের খুশির সীমা নেই আজ,,তার প্রেয়সি সুস্থ্য হয়ে গেছে,,এখন নয়ন এর সঙ্গে কথা বলবে ,,,, নয়ন তাড়াতাড়ি আহমেদ বাড়িতে চলে আসে,,,গাড়ি পার্ক করে দৌড়ে ভিতরে যায়,,,ওপরে উঠে রুমের বাইরে দেখে বাড়ির সব কাজের লোক দাড়িয়ে আছে,, রুমের ভিতর থেকে জিনিস পাত্র ভাঙার শব্দ আসছে,,আর নার্স এরও কথা সোনা যাচ্ছে,,”শান্ত হন ম্যাম কি করছেন,,” নয়নের যেনো পা নড়ছে না,,রুমের ভিতরে যাওয়ার সুক্তি টুকু ও সে পাচ্ছে না,,, এটা কি খুশি তে নাকি ভয়ে সেটা বুঝতে পারছে না নয়ন,,,,,নিজের মনে সাহস জুটিয়ে এক পা এক পা করে এগিয়ে যায় নয়ন,,,,,,,ভিতরে যেতেই অবাক একি অবস্থা রুমের মনে হচ্ছে ছোটো খাটো কোনো তুফান হয়েছে,,,,,নার্স নয়ন কে দেখতে পেয়ে দৌড়ে আসে নয়নের কাছে এসে বলে,,,

“স্যার দেখুন না সেই কখন থেকে আটকানোর চেষ্টা করছি পারছি ই না,,, হঠাৎ করেই মাহির বলে চিৎকার করে উঠে,,, ওনার জ্ঞান ফিরেছে বলে খুশিতে ওনাকে কিছু জিজ্ঞেস করতেই যাবো তার আগেই এমন পাগলামি শুরু করেছে,, (নার্স কে থামিয়ে চলে যেতে বলে নয়ন,,নার্স ও চলে যায় রুম থেকে)

।।

মেয়েটা একটা ফুলদানি হাতে নিয়ে যোরে ছুড়ে মারতে নিলে নয়ন গিয়ে হাত ধরে ফেলে,,, নয়ন তার হাত ধরায় মেয়েটা নয়নের দিকে শান্ত দৃষ্টি তে তাকায়,,,,,,,,,

কিছুক্ষন আগের কাহিনী,,,

“জান পাখি কই তুমি ,, কোথায় হারিয়ে গেলে ফিরে এসো না জান পাখি,, ওকে তোমাকে আসতে হবে না আমি ই তোমার কাছে চলে আসছি,,,,(এই বলে মাহির উঁচু বিল্ডিং থেকে লাফ মারে,,,)

“মাহিরররররর!!!!!!! (মাহিরের নাম নিয়ে চিৎকার করে উঠে বসলাম,, চারি দিকে তাকিয়ে দেখি একটা রুম আমি বেডে শুয়ে ছিলাম,,তার মানে আমার মাহিরের কিছু হয়নি স্বপ্ন দেখছিলাম আমি এটা,,,তখনি একটা নার্স আমার কাছে আসে আর বলে)

“ম্যাম আপনি ঠিক হয়ে গেছেন,, কেমন লাগছে এখন,, নয়ন স্যার শুনলে খুশিতে পাগল হয়ে যাবে,,,

নার্স এর কথা আমি কিছুই বুঝলাম না কি বলছেন উনি,, আমার কি হবে আর এই নয়ন স্যার কে,,,,তখনি আমার মনে পড়লো আমাদের অ্যাকসিডেন্ট এর কথা,, অ্যাকসিডেন্ট এর কথা মনে পরতেই যেনো আমার মাথা ব্যাথা করতে লাগলো,,আর মাহিরের চিন্তা হতে লাগলো,,মাহির কই আমার মাহির কই ঠিক আছে তো মাহির,,,,মাথায় হাত দিয়ে যোরে চিৎকার করে উঠলাম,,

“মাহির কই আমার মাহির কই? এনে দাও মাহির কে,, মাহির ঠিক আছে তো,,ওর কিছু হোয়নী তো,, তোমরা কারা আমি এখানে কি করছি? এটা তো আমার রুম না,, ,,

আমার কোথায় কেও উত্তর দিচ্ছে না ,,রেগে রুমের সব জিনিস ভাঙতে লাগলাম নার্স মেয়েটা আমাকে আটকানোর চেষ্টা করছে কিন্তু আমি যেনো নিজের মধ্যে নেই,,,রুমের সব জিনিস ভাঙতে ইচ্ছা করছে,, সব কিছু ভেঙে ফেলছি,,,একটা ফুলদানি হাতে নিয়ে ছুড়ে মারতে যাবো তখনি কে যেনো আমার হাত টা ধরে ফেললো,,, আমি তার দিকে একটু শান্ত দৃষ্টিতে তাকালাম,,,, মুখে চাপ দাড়ি,,ফর্সা,,হাইট ৬ তো হবেই,,গায়ে ফর্ম্যাল ড্রেস আপ,,, চোখে একটা সাদা চশমা ,,, হাতে ঘড়ি,, অনেক হ্যান্ডসাম দেখেই সব মেয়ে ক্রাশ খেতে বাধ্য,,,,কিন্তু আমার কাছে আমার মাহির ই বেস্ট,,,,,উনি আমার হাত ধরেছে দেখে রাগ উঠে গেলো এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিলাম আর বলে উঠলাম,,,,

“কে আপনি আমাকে টাচ করার সাহস কথা থেকে পেলেন?,,, আমি মাহিরের কাছে যাবো ,,মাহির কোথায়? আর আমি কোথায় আছি ?

“কুল তুমি একটু শান্ত হও প্লিজ,,আমি তোমাকে তোমাকে সব বলছি,,,তার আগে তুমি বসো,,(নয়ন শান্ত হয়ে বললো,, নয়নের এখন এটাই করার আছে প্রেয়সী কে শান্ত মেজাজে কথা বলতে হবে,,কিন্তু নয়ন এটা বুঝছে না এই মাহির কে বার বার কেনো নাম নিচ্ছে এই মাহিরের)

ওনার কথা শুনে আমি বেডে বসলাম,,উনি একটা মেয়েকে ডেকে পানি আনতে বললো,, মেয়েটাও দেরি না করে পানি এনে দিলো,, লোক টা আমাকে পানি দিলে আমি ঢকঢক করে খেয়ে ফেলি,,,তারপর উনি আমার থেকে একটু দূরত্ব বজায় রেখে বসলেন আর বললেন,,,,,

“আজ তিন মাস আগে আমি তোমাকে মেইন রোডের মধ্যে পরে থাকতে দেখি,,, আমি গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম হঠাৎ সামনে একটা আহত তোমাকে রাস্তার মাঝে পড়ে থাকতে দেখে সেখানে যায়,,গিয়ে দেখি এখনও বেঁচে আছে,,আমি তাড়াতাড়ি তোমাকে নিয়ে হসপিটালে আসি,,,পরে খবর নিয়ে দেখি,, ওখানে কোনো অ্যাকসিডেন্ট ই হয় নি তুমি কি করে ওখানে এলে আমি জানি না,, তবে এই তিন মাস তুমি আমার কাছে আমার বাড়িতে আছো এতো দিন কোমায় ছিলে,,,,,

ওনার কথা শুনে আমি তো অবাক,, গত তিন মাস ধরে আমি এখানে আছি তাহলে মাহির ? মাহির কোথায় ,,আর গাড়ি তে তো আমরা দুজন ছিলাম তাহলে এই লোক আমাকে একা মাঝ রাস্তায় কি করে পেলো,,, আর আমার যতো দুর মনে আছে আমি গাড়ি থেকে ছিটকে বাইরে একটা কিছুর সঙ্গে মাথায় বাড়ি লেগে একটা ঝারির মধ্যে চলে যায়,,তাহলে আমি মেইন রাস্তার মাঝে গেলাম কি করে? লোক টাকে প্রশ্ন করি,,

“আমাকে একা পেয়েছেন আপনি,, কি করে সম্ভব আমি তো আমার হাসব্যান্ড এর সঙ্গে গাড়ি তে আসছিলাম,,,আমাদের গাড়ির ব্রেক ফেল হয়ে যায় আর অ্যাকসিডেন্ট হয়,,,তাহলে আমার হাসব্যান্ড কোথায় মাহির কই?(কান্না করে)

“হাসব্যান্ড? ( নয়ন এটা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না,, তার বুকের মধ্যে কেও যেনো তির ছুড়ে মেরেছে,,এতো টা কষ্ট লাগছে নয়নের,,তবুও নিজেকে সামলিয়ে রেখেছে)

“হ্যাঁ আমার হাসব্যান্ড,, ইন্ডিয়ার টপ বিজনেস ম্যান দের মধ্যে একজন মাহির চৌধূরী আমার হাসব্যান্ড,,,

“কি মাহির চৌধূরী তোমার হাসব্যান্ড তুমি মিসেস সামায়রা মিহু চৌধুরী,,,, কিন্তু মাহির চৌধূরী র বউ তো অ্যাকসিডেন্ট এ মারা গেছে শুনেছি,,, ওহহ নো তার মানে,, সেই অ্যাকসিডেন্ট তোমাদের সঙ্গেই হয়েছিল,,, কিন্তু আমি যতো দুর খোঁজ নিয়ে দেখেছি,,, মাহির চৌধুরীর গাড়ির অ্যাকসিডেন্ট আরো অনেক দূরে হয়েছিল তাহলে তুমি এতো দূর থেকে আমি যেখানে পেয়েছি তোমাকে সেখানে কি করে এলে,,,,???

“কিছু জানি না আমি,, কি হয়েছে না হয়েছে কিছু জানি না,, আপনি আমাকে মাহিরের কাছে নিয়ে চলুন প্লিজ আমি মাহিরের কাছে যাবো,,, আমি মারা যায় নি আমার চৌধূরী সাহেব এর বউ মারা যায় নি,,,,,(এই বলে কান্না করতে করতে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম)

নয়ন মিহু কে তাড়াতাড়ি ভালো করে শুয়ে দিয়ে ডক্টর কে কল করে,, কিছুক্ষন এর মধ্যে ডক্টর এসে দেখে বলে,,,,

“মিস্টার নয়ন,,,, ম্যাম এখন একদম ঠিক আছেন,, বেশি চাপ নেওয়ার ফলে জ্ঞান হারিছে,,আমি ঘুমানোর ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছি,,,কাল সকাল ছাড়া ঘুম ভাঙ্গবে না ওনার,,,,,(এই বলে ডক্টর চলে গেলেন)

নয়ন মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো মিহুর পাসে,,, নয়নের এখন কি করা উচিৎ বুঝতে পারছে,,, তার প্রেয়সী যে বিবাহিতা হবে স্বপ্নেও ভাবে নি,,, কিন্তু এখন তো নয়নের কিছু করার নেই,,,,, নয়ন ভাবে,,সে মিহু কে তার হাসব্যান্ড এর কাছে তুলে দিবে,,, কোথাও তো লেখা নেই সব ভালোবাসার মিল হতেই হবে,,, নয়ন না হয় তার প্রেয়সী কে দুর থেকেই ভালোবেসে যাবে,,, তার প্রেয়সী জানবেও না কেও একজন পাগলের মতো ভালোবাসে তাকে,,,,,,,

চলবে?

#The_Beauty_Of_Love
#Samayra_Mihu(Nafisa)
#Part_18
.
.
.
নয়ন মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো মিহুর পাসে,,, নয়নের এখন কি করা উচিৎ বুঝতে পারছে,,, তার প্রেয়সী যে বিবাহিতা হবে স্বপ্নেও ভাবে নি,,, কিন্তু এখন তো নয়নের কিছু করার নেই,,,,, নয়ন ভাবে,,সে মিহু কে তার হাসব্যান্ড এর কাছে তুলে দিবে,,, কোথাও তো লেখা নেই সব ভালোবাসার মিল হতেই হবে,,, নয়ন না হয় তার প্রেয়সী কে দুর থেকেই ভালোবেসে যাবে,,, তার প্রেয়সী জানবেও না কেও একজন পাগলের মতো ভালোবাসে তাকে,,,,,,,

নয়ন উঠে বাইরে গিয়ে বলে রুম টা পরিষ্কার করতে,,বাড়ির কাজের লোক গুলা সব পরিষ্কার করে দেই,,,,,

।।

এই দিকে মাহির একটা বারে বসে একের পর এক ড্রিঙ্কস করেই যাচ্ছে,,, আসে পাসে কি হচ্ছে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই সে ড্রিংক করতে ব্যাস্ত,,, হঠাৎ তার পাশের চেয়ারে একটা লোক বসলো,, বসে বসে সেও ড্রিংকস করতে লাগলো,,, মাহিরের কেনো যানি লোক টা কে চেনা চেনা লাগছে বাট বুঝতে পারছে না কে,,,, মাহিরের এখনও নেশা ধরেনি তাই সে ভাবছে কে লোক টা,,,,কোথাও যেনো দেখেছে,,, মাহির মনে করতে করতে একসময় মনে পরে যায় এটা তো নিলাদ্র,,, যার সঙ্গে আলিশার বিয়ে ঠিক হয়ে ছিলো,,,,,আলিশা হচ্ছে সেই মেয়ে যার জন্যে মাহিরের বেস্ট ফ্রেন্ড নিবিড় সুইসাইড করেছিল,,, ,, নিবিড়ের ফোন নিয়ে মাহির নিবিড়ের হোয়াৎসাপ এ ঢুকেছিল সেখানে আলিশার নম্বর থেকে আলিশার কিছু আর এই ছেলেটার পিক ও পেয়েছিল,,,,, তাই মাহিরের চিনতে অসুবিধা হলো না ,,,, মাহিরের রাগ যেনো মাথায় উঠে যায়,,, রেগে উঠে নিলাদ্রর কলার চেপে ধরে,,,, ধরেই মারা শুরু করে,, এমনিতেই মিহুর জন্য তার মাথা খারাপ,, আর তারপর এই ছেলে সামনে এসেছে,,,, নিলাদ্র কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মেরেই যাচ্ছে,,,বারের সবাই মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে কেও আটকাতে আসছে না যে আসছে তাকেও মারছে,,,, নিলাদ্র বার বার বলছে ,,

“করছেন কি আপনি আমাকে মারছেন কেনো,, কি করেছি আমি,,

তবুও শুনছে না মাহির,, নিলাদ্র এতো বলার পরও যখন মাহির থামছে না তখন নিলাদ্র রেগে মাহির কে এক ঘুসি দেই,,মুখে মাহির একটু দূরে গিয়ে পড়ে,,,ঠোঁট কেটে রক্ত পরছে মাহিরের,,মাহির রেগে আবার মারতে যাবে তার আগেই নিলাদ্র বলে,,,

” সমস্যা কি আপনার এভাবে মারছেন কেনো,,কি করেছি আমি,,,

“কি করিস নি সেটা বল তোর জন্য আমার ভাই এর মতো বেস্ট ফ্রেন্ড কে আমি হারিয়েছি শুধু মাত্র তোর জন্য,,(যোরে চিৎকার করে বললো মাহির)

মাহিরের কথা কিছুই বুঝলো না নিলাদ্র কি বলছে মাহির,,,

“কি বলছেন এসব কি আপনি আর আমার জন্য কাকে হারিয়েছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না,,,

“আলিশা কোথায়? তুই আমার কাছে আলিশা কে এনে দে সব বুঝা পরা ওর সঙ্গে আমার,,,

“আলিশা,?(নাম টা শুনে নিলাদ্রর বুকের ভিতর মুছরে উঠলো,,)

“বল আলিশা কোথায় এখনি নিয়ে চল আমাকে আলিশার কাছে,, তুই বিয়ে করেছিস তো, নিশ্চয় তোর বাড়িতেই থাকবে,,,আলিশার সঙ্গে কথা আছে আমার,,,,

“নেই আলিশা কোথায় পাবো আমি আলিশা কে যে তিন বছর আগে আমাদের সবাই কে ছেরে চলে গেছে,,(চিৎকার করে বললো নিলাদ্র)

“মানে কি এসবের আলিশা কই যাবে? নাকি আরো টাকা ওলা ছেলের সঙ্গে পালিয়েছে তোমাকে ছেড়ে,,,,,

এই কথা শুনে নিলাদ্র রেগে আবার এক ঘুসি দেই মাহির কে,, মাহির রেগে তেড়ে আসে নিলাদ্রর দিকে মারার জন্য,,,, তার আগেই নিলাদ্র মাহিরের হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসে,,, এসে নিজের গাড়িতে উঠিয়ে কোথায় যেনো নিয়ে যায়,,মাহির চুপ চাপ দেখছে,,,,কিছুক্ষন যাওয়ার পর একটা বড়ো বাড়িতে ঢুকলো নিলাদ্র মাহির কে নিয়ে,,, গাড়ি থেকে মেনে নিলাদ্র মাহির কে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়,,,, নিলাদ্র বাড়ির ভিতরে গিয়ে চিৎকার করে কাকে যেনো ডাকে,,,

“মায়া মায়া কোথায় তুমি,,,,(নিলাদ্রর চিৎকারে মায়া সহ বাড়ির কিছু লোক ও চলে আসে)

মাহির অবাক হয়ে দেখছে শুধু,,, নিলাদ্র আবার বলে উঠে,,

“এটা হচ্ছে মায়া আমার ওয়াইফ,,,(একটা সুন্দরী মেয়ে কে দেখিয়ে বলে নিলাদ্র)

“এটা তোমার বউ হলে আলিশা কোথায়?(মাহির অবাক হয়ে বললো)

“আলিশার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিলো কিন্তু বিয়ে হয়নি,,,আমি আলিশা কে ভালবাসতাম কিন্তু আলিশা অন্য একটা ছেলে কে ভালোবাসতো এটা আমি জানতাম না,, আমি আলিশার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় আর আলিশার আব্বু আম্মু ও রাজি হয়ে যায়,,আমিও ভেবেছি আলিশা ও এই বিয়েতে রাজি,,,কিন্তু আলিশা একজন কেই ভালোবাসতো সেটা হচ্ছে নিবিড়,,,, বিয়ের দিন আলিশা সুইসাইড করে,,সুইসাইড নোটে লেখা ছিলো,,,আমি নিবিড় কে ছাড়া কাওকে মেনে নিতে পারবো না,,চলে যাচ্ছি আমি ভালো থেকো সবাই,,,,এটা দেখে আমি ভেঙে পড়েছিলাম নিজের ওপর ঘৃণা করতে শুরু করেছিলাম,, আমি কেনো বিয়ে ঠিক হওয়ার আগে একবার আলিশার মত জানতে চায় নি,, সেদিন যদি আমি এই ভুল টা না করতাম তাহলে আজ আলিশা বেঁচে থাকতো,,,, কিন্তু এমন টা হয় নি,,সেই তিন বছর থেকে নিজেকে দোষ দিয়ে আসছি আলিশার মৃত্যুর জন্যে আমি দায়ী আর কেও না,,,,, এই ঘটনার এক বছর পরে মায়ার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়,,,,,,,(এক নাগাড়ে কথা গুলা বলে থাকলো নিলাদ্র)

মাহির কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না একটা মেয়ে কি করে এতো ভালোবাসতে পারে একজন কে,, যে তাকে পাবে না বলে সুইসাইড করলো,,, মাহির এতো দিন সব মেয়েকে এক ভেবে খারাপ ভেবে কতোই না বড় ভুল করেছে টা আজ হারে হারে টের পাচ্ছে মাহির,,,তার থেকে বেশি কষ্ট লাগছে মিহু কে কতটা ইগনোর করেছিল সে,,,আজ তার আম্মুর কথা টা খুব মনে পড়ছে,,,”মিহু একটা হীরার টুকরা মেয়ে সময় থাকতে তার দাম দে হারিয়ে গেলে খুঁজেও পাবি না”” মাহির খুব করে বুঝতে পারছে আজ তার থেকে কি হারিয়েছে,,, মিহু তো মাহির কে ভালোবাসতো মাহিরের সঙ্গে বাঁচতে চেয়েছিল তাহলে মাহির কেনো বাঁচাতে পারলো না তার জান পাখি কে,,,,,,,,,মাহির নিলাদ্র কে সরি বলে সেখান থেকে চলে আসে,,অন্ধকার রাস্তার মধ্যে হেঁটে যাচ্ছে মাহির,,, আজ নিজেকে অনেক অসহায় লাগছে,,,মাহির যে ভুল করেছে সব কিছু না জেনে তিন টা বছর রাগ পুসে রাখছে আলিশার ওপর আর বাকি মেয়েদের ওপর,,, সবার থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছে মিহু,, বিয়ের প্রথম রাতে ইচ্ছা করে মাহির মিহু কে ধাক্কা মারে ফেলে দিয়েছিল,,, অনেক কষ্ট পেয়েছিল মিহু সেদিন ফ্লোর থেকে উঠতেও পারে নি,,,,,,মাহিরের সব কিছু ভেবে অনেক কান্না পাচ্ছে তার,,,,,,,,

।।

এখন রাত তিন টা বাজে নয়ন বারান্দায় দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,,,পাসে থাকা গিটার টা হাতে নিয়ে বাজাতে লাগে,, কেনো জানি আজ তার গান গাইতে ইচ্ছা করছে,,,,,,

??

পূর্ণিমাসন্ধ্যায় তোমার রজনীগন্ধায়
রূপসাগরের পারের পানে উদাসী মন ধায়।(২)

তোমার প্রজাপতির পাখা
আমার আকাশ-চাওয়া মুগ্ধ চোখের রঙিন-স্বপন-মাখা।(২)

তোমার চাঁদের আলোয়
মিলায় আমার দুঃখসুখের সকল অবসান॥

ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান–
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান–
আমার আপনহারা প্রাণ আমার বাঁধন-ছেড়া প্রাণ॥
?
,?

যদি কেও কথা না কই, ওরে ও রে ওহহ বাঘা কেও কথা না কই,,
যদি সবাই থাকে মুক্তি রায়ে, সবাই করে ভয়,,(২)

বুঝি গো রাত পোহালে, বুঝি ওই রবির আলো, আকাশে দেখা দিলো গগন পারে,,(২)

সমুখের ওই হেরি পথ(৩,) তোমার কি রথ পৌঁছবে না আমার মোর দয়ারে,ভেঙে মোর ঘোরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে,, ওহহ বন্ধু আমার, ভেঙে মোর ঘোরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে,,,,????

(নয়ন অনেক সুন্দর করে গান শেষ করলো,, মধুর মতো মিষ্টি গলায় গান টা যেনো আরো বেশি ভালো লাগছে শুনতে,,,)

মিহু ঘুমাচ্ছিল হঠাৎ গানের শব্দে ঘুম ভেংগে যায় তার,,, চুপ করে উঠে গানের শব্দ অনুসরণ করতে করতে একটা রুমে ঢুকে যায়,, সেখানে দেখে সেই ছেলেটা গান গাইছে,,,অনেক সুন্দর তার গানের কথা,,প্রাণ টাই যেনো জুড়িয়ে গেলো,,,,এই ছেলে কে মিহুর দেখে এমন মনে হয় নি,, স্মার্ট ছেলে এমন গান পারে ভাবতেই অবাক লাগছে মিহুর,,,তবে অনেক সুন্দর হয়েছে গান টা,,,,,,, নয়ন গান শেষ করে আমার আকাশের দিকে তাকায়,,মন টা তার অনেক তাই হালকা লাগছে,,, সকাল প্রায় হতেই আসবে নয়ন ঘুমায়নি এখনও,,, নয়ন ঘুমাবে বলে রুমে এসে তার সামনে মিহু কে দেখে অবাক হয়,,,,,,

“গান অনেক সুন্দর ছিলো,,অনেক ভালো গান গাইতে পারেন আপনি,,(মুচকি হেসে বললো মিহু)

“ধন্যবাদ,, তো তুমি এখন কেমন আছো? আর এতো ভরে ঘুম ভাঙলো যে,,,

“কি করবো এতো মিষ্টি একটা গান শুনে আর কি ঘুম হয়,,

“তাহলে তো আমি তোমার ঘুম ভাঙিয়ে দিলাম,,সো সরি,,,

“না না ভর ভর এতো সুন্দর একটা গান শুনতে পেলাম অনেক ভালো লাগছে,,,,,,আচ্ছা আমাকে মাহিরের কাছে কখন নিয়ে যাবেন?(শেষের কথা টা মন খারাপ করে বললো)

“খুব জলদি ই নিয়ে যাবো,,,,আচ্ছা আমরা ফ্রেন্ড হতে পারি?,,,(মৃদু হেসে)

“অবশ্যই,, আমি মিহু আর আপনি?(মুচকি হেসে)

“নয়ন,,ফ্রেন্ড যখন হয়েছি তাহলে আমাকে তুমি করে বলতে হবে,,,

“ঠিক আছে,, (তার পর আরো অনেক কথা বলে দুজনে,, অনেক তাই ফ্রি হয়ে যায় মিহু নয়নের সঙ্গে)

“ওকে এখন যাও একটু ঘুমিয়ে নাউ এখনি সকাল হয়ে যাবে,,,(নয়নের কোথায় মিহু ও চলে গেলো)

মিহু নয়নের রুম থেকে চলে যায়,, তার অনেক খুশি লাগছে সে তার চৌধূরী সাহেব এর কাছে যাবে এই ভেবে,,,সকালে উঠে মিহু ফ্রেস হয়ে নিচে যায়,,বাড়িটা ঘুরে দেখতে লাগে অনেক সুন্দর বড়ো বাড়ি,, বাড়ি টাই তেমন লোক নেই,,,কিছু কাজের লোক আছে এখন দেখতে পাচ্ছি,,,,,কিছুক্ষন পরে আরিফ আহমেদ আসেন নাস্তা করতে,, মিহু আরিফ আহমেদ কে চিনে না তাই কোথাও বললো না ,, মিহুর একটু কেমন লাগছে নতুন বাড়ি কাওকে তেমন চিনে না নয়ন ছাড়া,,,কিছুক্ষন পরে নয়ন ও চলে আসে,, মিহুর আর অন্য রকম লাগে না,, নাস্তা করে নেই,,,

“বিকেলে তুমি রেডি হয়ে থেকো,, আমি কাজ শেষ করে এসেই তোমাকে নিয়ে যাবো,,(নয়ন মিহু কে বলে,, মিহু ও হুম বলে)

নয়ন চলে যায় অফিসে,, মিহু আবার তার রুমে চলে যায়,,,,,,,,,,,,,,এই দিকে মাহির স্বপ্নে দেখে মিহু তার কাছে ফিরে এসেছে,,”চৌধূরী সাহেব আমি এসে গেছি “এই বলে জড়িয়ে ধরেছে,,কিন্তু ঘুম ভাঙতেই আবার চলে যায় মিহু,,, এমন স্বপ্ন রোজ দেখে মাহির কিন্তু কোনদিন সত্যি হয়না,, কিন্তু আজ কেনো জানি মাহিরের অন্য রকম লাগছে,, মনে হচ্ছে মিহু তার কাছে ফিরে আসবে,, আবার তার জান পাখি কে দেখতে পাবে সে,,, কেনো এমন মনে হচ্ছে মাহিরের,, গত তিন মাসে এমন ই মনে হতো মাহিরের কিন্তু আজ একটু বেশি ই মনে হচ্ছে,,আর বিশ্বাস জাগছে মিহু তার কাছে ফিরবে,,,,,,,এসব চিন্তা ভাবনা করতে করতে মাহির চলে গেলো ফ্রেস হতে,,,,,,,

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here