Mr_Arrogant_2 ? #The_Gangster_Lover,Part_6,7

0
1768

#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangster_Lover,Part_6,7
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_6
.
.
.
.
রওশন ট্রে করে সুবহার জন্য খাবার নিয়ে ওর রুমে প্রবেশ করে। সুবহার রুমে প্রবেশ করতেই রওশন‌ দেখলো সুবহা খাতা কলম নিয়ে বেডে বসে গম্ভীর ভাবে কি যেন হিসাব করছে।

রওশনঃ কি করছো তুমি?

রওশনের কথা শুনে সুবহা মুখ উঠিয়ে ওর দিকে তাকালো।

সুবহাঃ ছত্রিশ ঘণ্টায় কত দিন তা হিসাব করছি। ( শুকনো হেসে )

রওশন খাবার ট্রে টেবিলে রেখে সুবহার পাশে বসে ওর হাত থেকে খাতা কলম নিয়ে নিল। খাতার দিকে তাকাতেই রওশনের হাসি পাচ্ছে। যোগ বিয়োগ গুণ সব করেছে অথচ হিসাব মিলাতে পারে নি সুবহা।

রওশনঃ বার ঘন্টায় কত দিন?

সুবহাঃ হাফ ডে।

রওশনঃ চব্বিশ ঘণ্টায়?

সুবহাঃ একদিন।

রওশনঃ তাহলে ছত্রিশ ঘণ্টায়?

সুবহাঃ দেড় দিন। ( বোকার মতো)

রওশনঃ দেড় দিন?( অবাক হয়ে) হা ঠিক বলেছো দেড় দিন।

রওশনের ইচ্ছা করছে নিজের মাথা নিজে ফাটাতে। কি মেয়ে দিন ও নাকি দেড় দিন হয়। সুবহাকে বুঝাতে গেলে এখন ওরই মাথা নষ্ট হয়ে যাবে তাই রওশন কথাটা আর এগোলো না।

সুবহাঃ কিছু ভাবছেন?( রওশনের সামনে তুড়ি বাজিয়ে)

রওশনঃ আভ হা ভাবছি তুমি তো সব ভুলে গিয়েছো তাই না?

সুবহাঃ হুম।( মন খারাপ করে)

রওশনঃ তোমার তো নিজের নামও মনে নেই তাহলে কি নামে ডাকবো তোমায় সেটা ভাবছি।‌ ( ভাবার অ্যাক্টিং করে ) এক কাজ করি আমিই তোমার জন্য একটা সুন্দর নাম চয়েজ করি ওকে।

সুবহাঃ হুম। ( আল্লাহ জানে কি নাম চুজ করবে এ মাফিয়া আমার জন্য। মনে মনে)

রওশনঃ জরিনা! নামটা কেমন?

সুবহাঃ কিহহহ ছিঃ কেমন নাম। ( সুবহার তো হার্ট অ্যাটাক করার উপক্রম)

রওশনঃ ওও পছন্দ হয়নি? আচ্ছা অন্য কিছু ভাবি,,, জমিলা, রহিমা, সখিনা, মর্জিনা, আর কি নাম রাখা যায়?( ভাবছে রওশন )

সুবহাঃ স্টপপপ। ( কানে হাত দিয়ে)

রওশন অফ হয়ে গেল সুবহার চিৎকারে।

সুবহাঃ আপনার কাছে কি আমাকে কাজের বেটির মতো লাগছে যে এরকম নাম খুঁজছেন?( রেগে)

রওশনঃ নাম গুলো তো সুন্দরই,,,

সুবহাঃ থাক আপনাকে আর কষ্ট করে আমার জন্য নাম খুঁজতে হবে না আমি নিজেই নিজের নাম খুঁজে নিচ্ছি।

রওশনঃ অ্যাজ ইউর উইশ,,,

সুবহাঃ সুবহা! আমাকে সুবহা নামে ডাকবেন ওকে।

রওশনঃ ওয়েট ওয়েট তুমি কি আমার সাথে ম্যাচ করে নিজের নাম রাখার চেষ্টা করছো?( কপাল কুঁচকে)

সুবহাঃ মানে?

রওশনঃ এইযে আমার নাম রওশন তোমার নাম সুবহা অনেকটা ম্যাচিং ম্যাচিং ফিল আসছে।

সুবহাঃ রিয়েলি?

রওশনঃ হুম। আচ্ছা বাদ দাও এখন থেকে তুমি সুবহা। তো সুবহা আমি তোমার জন্য খাবার এনেছি খেয়ে মেডিসিন নিয়ে নাও তারপর একটু রেস্ট করো। ( ট্রে টা সুবহার সামনে রেখে)

খাবার দেখেই সুবহার চোখ কপালে। সেদ্ধ শাক সবজি যাকে উন্নত ভাষায় ভেজিটেবল স্যুপ বলে রওশন সুবহার জন্য নিয়ে এসেছে। আজকাল উন্নত মানের ছাগলরাও এগুলো খায় না আর রওশন নাকি সুবহার জন্য এগুলো এনেছে।

সুবহাঃ এয়াকক এগুলো আমি খাবো?( নাক ছিটকে)

রওশনঃ অসুস্থ মানুষদের জন্য এগুলো বেস্ট খাবার।

সুবহাঃ নো নো প্লিজ আমি এসব খেতে পারবো না। আজকাল ছাগলেরাও এসব খায় না।

রওশনঃ ছাগলেরা খায়না কিন্তু তুমি খাবে‌ কারন তোমার ভিটামিন আর প্রোটিনের প্রয়োজন বেশি তাদের থেকে।

সুবহাঃ আপনি আমাকে ছাগলের সাথে তুলনা দিচ্ছেন?( রেগে)

রওশনঃ অবভিয়াসলি নট,,, কারন ছাগলের ও যতটুকু বুদ্ধি আছে তোমার তার হাফ পার্সেন্ট ও নেই। তাই আমি ছাগলের সাথে তোমার তুলনা করে তাদের অপমান করতে চাইছি না।

সুবহাঃ এতো বড়ড়ড় অপমান,,,,,

রওশনঃ তুমি নিজে খাবে না বুঝেছি আমাকেই খাইয়ে দিতে হবে।

রওশন চামচে করে স্যুপ তুলে সুবহার মুখের সামনে তুলল। সুবহা মুখ ঘুরিয়ে নেয়। রওশন বার বার চামচ তুলছে মুখের সামনে আর সুবহা বার বার মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। রওশন আর না পেরে এক হাত দিয়ে সুবহার মুখ চেপে ধরে ওর মুখে চামচ দিয়ে স্যুপ পুরে দেয়। সুবহা কোন রকমে গিলে ফেলে স্যুপ গুলো। ডিস্গাস্টিং ফুড ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড ভাবছে সুবহা।

রওশন এভাবেই পুরো বাটি স্যুপ সুবহাকে খাইয়ে শেষ করে।

রওশনঃ গুড গার্ল,,,( ট্যিসু দিয়ে সুবহার মুখ মুছে )

সুবহা রাগে ফুঁসছে। মনে মনে হাজারো গালি দিয়ে ফেলেছে সুবহা রওশনকে।

সুবহাঃ আপনাকে ভালো মনে করেছিলাম কিন্তু আপনি একটা বজ্জাত শয়তান ইরিটেটিং লোক। ( রেগে)

রওশনঃ প্রথমত আমাকে ভালো মনে করা তোমার সবচেয়ে বড় ভুল দ্বিতীয়ত এটা আমার রাজ্য সো এখানে শুধু আমার হুকুম চলে তাই আমার কথার অমান্য হলে এখানে থাকতে পারবেনা মিস সুবহা। ( বাঁকা হেসে)

সুবহাঃ আপনি আমাকে খোঁটা দিচ্ছেন?( রেগে )

রওশনঃ লো ইউর ভয়েজ সুবহা। আমি খোঁটা দিচ্ছি না শুধু এ বাড়ির নিয়ম তোমাকে বুঝাচ্ছি।
এ বাড়িতে থাকতে হলে আমার নিয়ম মোতাবেক থাকতে হবে।

সুবহাঃ নিয়ম?

রওশন একটা কাগজ সুবহার হাতে ধরিয়ে দেয়।

রওশনঃ এখানে সব নিয়ম লিখা আছে।

সুবহা পড়তে শুরু করে কাগজটা।

সুবহাঃ সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠতে‌ হবে। সাড়ে ছয়টায় রওশনের সাথে জগিং যেতে হবে ঠিক আটটায় ব্রেকফাস্ট খেতে ডায়নিং এ যেতে হবে এক মিনিট লেইট হলে ব্রেকফাস্ট না করে দুপুর অব্দি থাকতে হবে। খাবার খাওয়ার সময় কোন ধরনের অপ্রয়োজনীয় কথা বলা যাবে না ভদ্র ভাবে চলাফেরার করতে হবে।

সুবহা একে একে সব রুলস পরছে আর এক এক করে ওর মাথায় যেন বাজ ভেঙে পরছে।

সুবহাঃ এটা বাড়ি নাকি হোস্টেল উপ্স স্যরি হোস্টেল বললে ভুল হবে এটা তো জেলখানা। (অবাক হয়ে)

রওশনঃ এটাকে ডিসিপ্লিন বলেন।

সুবহাঃ আপনি কি রোবট? একটা নরমাল মানুষ এমন আজগুবি ডিসিপ্লিন কিভাবে তৈরি করতে পারে?( কাঁদো কাঁদো ভাবে)

রওশনঃ রুল্সে লিখা আছে দশটার মধ্যে ঘুমিয়ে যেতে হবে। ( দাঁড়িয়ে গিয়ে) এখন ন’টা চল্লিশ বাজে (ঘড়ির টাইম দেখে) তুমি বিশ মিনিট আরামসে বসে ভাবো আমি রোবট না মানুষ তারপর ঘুমিয়ে পরো ওকে। ( মুচকি হেসে)

সুবহা হা হয়ে শুধু দেখছে রওশনকে। রওশন দরজা পর্যন্ত গিয়ে আবারও ব্যাক করে আসে সুবহার কাছে তারপর পকেট থেকে একটা ফোন বের করে সুবহার হাতে দিয়ে বলে,,

রওশনঃ এটা তোমার জন্য। সিম কার্ড আর এসডি কার্ড আছে নেটওয়ার্ক কানেকশন ও করে দিয়েছি। গুড নাইট।

কথাটা বলেই রওশন বেরিয়ে গেল আর সুবহা যেন এখনো স্ট্রোকে আছে।

সুবহাঃ রওশন সাহেব আপনি রোবটও না আপনি তো ভিন গ্রহের এলিয়েন। ডিসিপ্লিন ডিসিপ্লিন আরেহ তোর ডিসিপ্লিন এর গুষ্টির সষ্টী। আমার নামও সুবহা যদি এ বাড়ির সব নিয়ম উল্টা পাল্টা করে না দিচ্ছি নিজের নাম বদলে নিব হুহ।

সুবহা ফোনের দিকে তাকাতেই আভির কথা মনে পরে গেল।

সুবহাঃ আভি স্যারকে তো ইনফর্ম ই করা হয়নি উনি চিন্তা করছে হয়তো। যাক ওই অ্যারোগেন্ট রওশন একটা কাজ ভালো করেছে আমাকে ফোন দিয়ে।

সুবহা আভির নাম্বার ডায়াল করতে নিয়েই থেমে যায়,,,

সুবহাঃ আভি স্যারের নাম্বার কি যেন ছিল?( নখ কামড়ে মনে করছে) 0175 উমম তারপর যেন কি ছিল?

ধুরর অ্যাক্টিং করতে করতে সত্যিই স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়ে গিয়েছে আমার। ( ফোন দিয়ে হালকা করে কপালে বারি দিল। )

সুবহাঃ মনে পরে গিয়েছে!( খুশি হয়ে)

সুবহা দ্রুত আভির নাম্বারে কল করে। কল রিঙ্গিং হচ্ছে।

এইদিকে,,,

আইসপ্যাক নিয়ে নিজের চোখে লাগাচ্ছে আভি‌।

আভিঃ আইই ব্যথা করছে! আল্লাহ কালকের মধ্যে এই দাগ গুলো গায়ের করে দাও নাহলে কাউকে মুখ দেখানোর লায়েক থাকবো না। আহ্। ( নিজে নিজে বলছে আর মুখে আইসপ্যাক ঘষছে )

ফোন রিং হচ্ছে অনেকক্ষন ধরে কিন্তু আননোন নাম্বার দেখে আভি রিসিভ করছে না। এবার বেশ বিরক্ত হয়ে ফোন রিসিভ করলো ও।

আভিঃ হ্যালো।

সুবহাঃ হ্যালো আভি স্যার ইট্স মি সুবহা,,,

সুবহার নাম শুনতেই আভির হাত থেকে বরফটা ফ্লোরে পরে গেল। নিজেকে গম্ভীর মুডে নিয়ে আভি বলতে শুরু করল।

আভিঃ কেমন আছো সুবহা আর সব কি প্লান অনুযায়ী চলছে? ( বেডে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ল আভি)

সুবহাঃ হ্যাঁ কিন্তু ( আমতা আমতা করে)

আভিঃ কিন্তু কি অ্যানিথিং রং ?

সুবহা আভিকে রওশনের রুলসের কথা গুলো বলছে আর রওশনকে ঝাড়ছে। আভি বালিশে মুখ গুঁজে নিজের হাসি কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।

সুবহাঃ আপনিই বলেন স্যার এই লোকটা কি মানুষ নাকি এলিয়েন? ( রেগে)

আভিঃ হুম মামলা অনেক গম্ভীর দেখা যাচ্ছে সুবহা। সবার আগে আমাদের খোঁজ করতে হবে রওশন মানুষ নাকি এলিয়েন?

সুবহাঃ আপনিও আভি স্যার,,,, মজা করছেন আমার সাথে?

আভিঃ আচ্ছা স্যরি তুমি বরং এক কাজ করো,,,

সুবহাঃ কি কাজ?

আভিঃ রওশনের বিরুদ্ধে প্রুফ তুমি পরে খুজো আগে ওই রওশনকে সায়েস্তা করো।

সুবহাঃ গুড আইডিয়া স্যার। আমি আগে এই রওশন নামক অ্যারোগেন্ট মাফিয়াকে জ্বালিয়ে এর জীবন ধনিয়া পাতা টু তেজপাতা করবো তারপর একে জেলে ঢুকাবো। ( প্রাউড ফিল করে)

আভিঃ ইয়েস সুবহা দ্যাট্স দ্যা স্পিরিট। আচ্ছা এখন তুমি একটু রেস্ট নাও ওকে।

সুবহাঃ ওকে গুড নাইট স্যার।

আভিঃ গুড নাইট।

কল কেটে দিল সুবহা। আভি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেই নিজেকে বলতে শুরু করে।

আভিঃ তোমার কষ্ট আমার থেকে ভালো কে বুঝবে সুবহা। তুমি তো জাস্ট একদিন হলো ভাইকে চিনেছো আর আমি! আমি পঁচিশ টা বছর ধরে ভাইয়ের ডিসিপ্লিন নামক টর্চার সহ্য করছি। এখন আর যাই হোক অনেক শান্তিতে আছি। আই প্রে তুমি যেন ভাইয়ের সব গুলো রুলস ভেঙে চুরমার করে দাও যেন আমি আবার ওই বাড়িতে গেলে এমন টর্চারে পূর্ণ লাইফ না পাই। ( বাচ্চাদের মতো ফেস করে)

এইদিকে,,,

সুবহাঃ জাস্ট ওয়েট মি. রওশন কালকে থেকে আপনার শ্বাস নেওয়াও হারাম করে দিব আমি। ( শয়তানি হেসে)

To be continued………

#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangster_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_7
.
.
.
.
ঘুমিয়ে আছে সুবহা। হঠাৎ একটা বিচ্ছিরি শব্দ কানে আসতে শুরু করে ওর। কানের যন্ত্র পাতি মনে হচ্ছে ফেটে যাবে এই শব্দে,,,শব্দটার আওয়াজ আরও বেশি কানে বাজতে শুরু করে ওর।

দুই কানে হাত চেপে উঠে বসে জোরে চিল্লিয়ে উঠে সুবহা।

সুবহাঃ স্টটটটটপপপ,,,,

আওয়াজটা তাও থামছে না বেজেই চলেছে। সুবহা কিসের আওয়াজ তা দেখার জন্য আশেপাশে তাকাতেই ওর চোখ কপালে। ওর বেডের পাশের টেবিলে একটা ক্লক রাখা। একটা মিডিয়াম সাইজের গোলাপী রঙের খরগোশ আর তার সাথে জয়েন্ট করা একটা ঢোল। সকাল ছ’টা বাজতেই খরগোশ নামক অ্যালার্ম ক্লকটা ঢোল পিটানো শুরু করেছে।

সুবহা রেগে খরগোশটার মাথায় বারি দেয় আর অ্যালার্ম বন্ধ হয়ে যায়।

সুবহাঃ এটা নিশ্চয়ই ওই অ্যারোগেন্ট মাফিয়ার কাজ। আমার বিউটি স্লিপের তেরটা বাজিয়ে দিল। ( রেগে )

সুবহা আবারও মাথায় বালিশ চেপে শুয়ে পরে হঠাৎ রাতে বলা রওশনের কথা কানে বেজে উঠল ওর।

“ আমার বাড়িতে থাকতে হলে আমার নিয়ম মোতাবেক থাকতে হবে। আমার কথার অমান্য হলে এখানে থাকতে পারবেনা মিস সুবহা।”

ধরফরিয়ে উঠে বসলো সুবহা। কাঁদো কাঁদো ফেস করে নিজেই নিজেকে বলতে শুরু করল ও।

সুবহাঃ কি দিন আসলো বাড়ি থেকে বহিষ্কার হওয়ার ভয়ে নিজের বিউটি স্লিপের বলিদান দিতে হচ্ছে। আমি দেখে নিব আপনাকে ইউ ডেভিল মাফিয়া।

রেগে বালিশ নিচে ছুরে ফেলে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল সুবহা। ফ্রেশ হয়ে এসে বেডে বসে পরে ও।

সুবহাঃ আমি তো কোন ড্রেসই আনি নি তাহলে জগিং কস্টিউম পাবো কোথা থেকে?( ভাবছে ও)

আররেহ বাহ্ আমার ড্রেস নেই তাই আমি রওশনের সাথে যেতে পারবো না। হুররে,,,( খুশি হয়ে )

রওশন সুবহার রুমে প্রবেশ করে দেখে সুবহা কিছু একটা নিয়ে খুব খুশি হচ্ছে আর রেডি না হয়েই বেডে বসে আছে।

রওশনঃ ছয়টা পনেরো বাজে আর তুমি এখনো বসে আছো?

রওশনের কন্ঠ শুনে ঘাবড়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে দরজার দিকে ফিরলো সুবহা। রওশনকে দেখেই চোখ বড় বড় হয়ে গেল ওর।

ব্লাক কালার জগিং স্যুট, পায়ে স্কেট্স সুজ, বাম হাতে কালো রঙের গ্লাভস আঙ্গুল বের হয়ে আছে শুধু হাতের তালুটা ঢাকা। ডান হাতে রাবারের ব্লাক কালার ওয়াচ, চুল গুলো এলো মেলো হয়ে আছে।

সুবহাঃ কালকে তো শুধু ক্রাশ খেয়েছি কিন্তু আজকে,,,, মাফিয়া না হলে নির্ঘাত প্রেমে পরে যেতাম।( মনে মনে) ইই কি ভাবছিস সুবহা এটা তোর শত্রু ভূলে যাস না। আচ্ছা যাই হোক ক্রাশ তো খাওয়াই যায় হোক সেটা শত্রুর উপর।

সুবহা আনমনে কথা গুলো ভাবছে। সুবহার ভাবনার মাঝেই রওশন ওর সামনে এসে দাঁড়ায় কিন্তু সুবহা টেরও পায় নি।

রওশনঃ সুবহাআআআ,,,( জোরে বলল )

রওশনের চিল্লানোতে ভাবনায় ছেদ পড়ল সুবহার। হঠাৎ রওশনকে নিজের এতো কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ঘাবড়ে যায় ও।

সুবহাঃ ক কি??( ভয়ে ভয়ে)

রওশনঃ কি এমন জরুরি কথা ভাবছো যে আমি তোমার সামনে চলে এসেছি তা খেয়ালও করো নি?( চোখ ছোট ছোট করে)

সুবহাঃ কি কিছুনা কিছু না,,,( একটু দূরে সরে দাঁড়িয়ে)

রওশনঃ রেডি হওনি কেন? তোমার জন্য আমার লেট হলে দেখে নিও।

সুবহাঃ আররেহ মি. রওশন আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমি এখানে উড়ে এসে জুড়ে বসেছি ড্রেস আনার সুযোগ ও পাইনি তাহলে চেঞ্জ করবো কিভাবে?( ভ্রু নাচিয়ে)

রওশনঃ নিজের রুমের কাবার্ড একবার চেক করা প্রয়োজন মনে করো নি তাই না?( দাঁতে দাঁত চেপে)

সুবহাঃ নিজের রুম মানে? এটা!

রওশনঃ না হলে কি পাশের বাড়ির আন্টির রুমের কথা বলছি স্টুপিড,,, যাও গিয়ে দেখো কাবার্ড। দশ মিনিটে রেডি হয়ে নিচে আসবে আদার ওয়াইজ আমি তোমাকে রেখেই চলে যাবো তারপর ফিরে এসে তোমায় বাড়ি থেকে বের করে দিব।

সুবহা শুধু রাগে ফুঁসছে। কত বড় সাহস ওকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। ( ভাবছে সুবহা)

রওশন বেরিয়ে যেতেই সুবহা রওশনকে বকতে বকতে কাবার্ড খুলে। কাবার্ড খুলতেই অবাক হয়ে গেল ও। কাবার্ড ভরা ড্রেসে। আরেকটা কাবার্ড খুলতেই দেখে ওটাতে জুতো, ব্যাগ, কসমেটিক রাখা।

সুবহাঃ এগুলো কার জিনিস? রওশনের গার্লফ্রেন্ড টার্লফ্রেন্ডের নাতো? থাক আমার কি দশ মিনিট হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি ভাগ সুবহা।

সুবহা পিঙ্ক কালারের জগিং স্যুট নিয়ে ওয়াশরুমে দৌড় দিল।

সোফায় বসে হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে টাইম গুনছে রওশন। আর এক মিনিট বাকি। রওশন উঠে দাঁড়িয়ে সিঁড়ির দিকে তাকাতেই ওর চোখ আটকে গেল।

সুবহা পিঙ্ক কালার জগিং স্যুট, পিঙ্ক কালার স্কেট্স সুজ আর চুল গুলো উঁচু করে রিবন দিয়ে বেঁধেছে।

সুবহাঃ আই’ম রেডি,,,( হাপিয়ে গিয়ে )

রওশন সুবহাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে এক গাল হেসে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরল। সুবহা বুঝতে পারছে না রওশন কি করতে চাইছে।‌

রওশন সুবহার পা নিজের হাঁটুতে তুলে জুতোর লেস লাগিয়ে দিতে দিতে বলে,,,

রওশনঃ এতো বড় মেয়ে সামান্য জুতোর লেস লাগাতে পারে না। ( হাসতে হাসতে) [ আমি নিজেও পারি না আমার আব্বু লাগিয়ে দেয়]

সুবহার চোখ ভিজে যাচ্ছে রওশনের কাজে। ছোট বেলায় ওর আব্বুও ওর স্কুল সু’র লেস লাগিয়ে দিত। নিজের নাক ঘষে কান্না সংবরন করার চেষ্টা করছে সুবহা।

রওশন দাঁড়িয়ে গিয়ে সুবহার দিকে তাকিয়ে দেখে সুবহার চোখ ভেজা। রওশন নিজের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে সুবহার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,,,

রওশনঃ লেট হচ্ছে,,,

সুবহাঃ হুম,,,

? ? ?

বুকে বালিশ জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে আভি। হঠাৎ ফোন রিং টোন বেজে ওঠে ওর।ঘুম ঘুম চোখে ফোন রিসিভ করে আভি,,,

আভিঃ হ্যালো অফিসার আভি রায়জাদা স্পিকিং,,,

ওহিঃ হ্যালো অফিসার আভি রায়জাদার হবু বউ স্পিকিং,,,

কথাটা শোনা মাত্রই ধরফরিয়ে উঠে বসলো আভি।

আভিঃ ইউউউ ওহি চুরেলললল,,, ( রেগে)

ওহিঃ মাইন্ড ইউ ল্যাঙ্গুয়েজ আভিইইই,,,( রেগে )

ওহির ধমকে আভি চুপসে যায়। ওহির রাগের সামনে ওর রাগ কখনো টিকে না।

ওহিঃ এসব কি ধরনের ভাষা হ্যাঁ?

আভিঃ আভ আমি তো ঘুমে ঘুমে বলে ফেলেছি। (আমতা আমতা করে)

ওহিঃ আচ্ছা যাও মাফ করলাম। ( হেসে) এখন বলো আমাকে ছাড়া ঘুম কেমন হলো বেবি? আমি জানি অনেক কষ্ট হয়েছে তাইনা?

আভিঃ একদম না আমার তো সবসময়ের মতো ফার্স্ট ক্লাস ঘুম হয়েছে,,,( হাই তুলতে তুলতে)

ওহি নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে করতে বললো,,,

ওহিঃ আচ্ছা বেবি আজকে ডিউটি শেষ করে আমার সাথে দেখা করতে পারবে?

আভিঃ স্যরি আজকে আমার ১২৫ নাম্বার গার্লফ্রেন্ড এর সাথে ডেট ফিক্সড আছে।

ওহিঃ আমাকে রাগিও না আভি,,,( দাঁতে দাঁত চেপে)

আভিঃ আচ্ছা রাগাবো না আগে একটা প্রশ্নের উত্তর দাও,,

ওহিঃ বলো!

আভিঃ দিনের আলো ফুটতেই তো চুরেল শাকচুন্নী ডায়েন পেত্মী রাক্ষসী রা বন্দি হয়ে যায় তাহলে তুমি ছাড়া পাও কিভাবে? বুঝেছি তুমি হাই লেভেলের ভুতনি তাই না?

ওহিঃ আভিইইইইইইই,,,( চিল্লিয়ে )

আভিঃ আওয়াজ নিচে,,,( আস্তে বললো)

ওহি রেগে ফোন কেটে দিল আর আভি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।

আভিঃ বাহ্ আজকে ভালোই জব্দ করেছি ওই ডায়েন নামক চুরেলকে। ( হাসতে হাসতে)

আরেকটু ঘুম দেই। ( হামি দিয়ে)

আভি আবার বালিশ জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে।

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here