Mr_Arrogant_2? #The_Gangster_Lover,16,17

0
1981

#Mr_Arrogant_2?
#The_Gangster_Lover,16,17
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_16
.
.
.
.
In Present,,,,,,??

হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় নিজের কল্পনা থেকে বেরিয়ে আসে সুবহা।

ড্রাইভারঃ ম্যাম পৌঁছে গিয়েছি,,,

সুবহা বাইরে তাকিয়ে দেখে রায়জাদা মেনশন পৌঁছে গিয়েছে। সুবহা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে গাড়ি থেকে নেমে যায়। ভিতরে প্রবেশ করে ও। ন্যান্সি কিচেনে কাজ করছে সুবহা ওর সামনে দিয়ে দাঁড়ায়।

সুবহাঃ ন্যান্সি স্যার আসে নি এখনি?

ন্যান্সিঃ নো ম্যাম।

সুবহাঃ ও ওকে।

সুবহা নিজের রুমে চলে আসে। টাইসেল সুবহার পিছু ওর রুমে চলে যায় সুবহা বেডে বসতেই টাইসেল ওর কোলে উঠৈ গুটিসুটি মেরে শুয়ে পরে। সুবহা টাইসেলের শরীরে হাত বুলাতে বুলাতে ওকে বলতে শুরু করে।

সুবহাঃ তুই সব জানতি তাইনা? আমি বাদে সবাই সবটা জানে কিন্তু আমাকে কেউ সত্যিটা বলে নি। কিন্তু তাও তোর উপর আমার কোন অবজেকশন নেই কারণ আজকে তোর জন্যই তো সবটা জানতে পেরেছি।

অবজেকশন তো রওশনের উপর আছে। আজ ফিরুক ও তারপর দেখিস নিজের প্রশ্নের গুলি বর্ষণ করবো ওর উপর হুহ। দেখি কিভাবে সব সামলায়।

টাইসেলের সাথে কথা বলতে বলতে সারাটা বিকেল কাটিয়ে দেয় সুবহা।

সন্ধ্যা সাতটা,,,,

টাইসেল বল নিয়ে খেলা করছে সুবহা সোফায় বসে বই পড়ছে হঠাৎ ন্যান্সির কন্ঠ শুনে সামনে তাকালো ও। ন্যান্সির হাতে একটা হলুদ রঙের প্যাকেট।

ন্যান্সিঃ ম্যাম?

সুবহাঃ হা বলো,,,

ন্যান্সিঃ ম্যাম রওশন স্যার গার্ড কে দিয়ে এটা পাঠিয়েছেন আপনাকে রেডি হতে বলেছেন হয়তো কোথাও নিয়ে যাবেন।

সুবহাঃ কোথায়? আর রওশন আশে নি?( দাঁড়িয়ে)

ন্যান্সিঃ নাহ উনি বলেছেন ড্রাইভার আপনাকে রিসিভ করবে।

সুবহাঃ ওকেই,,,

সুবহা প্যাকেটটা হাতে নেয়।‌ ন্যান্সি চলে যায়। সুবহা উৎসাহ নিয়ে প্যাকেটটা খোলে। একটা সিলভার কালারের গাউন যেটার স্টোনের কাজ করা বর্ডার। গাউনটা অনেক ছড়ানো।

সুবহাঃ হঠাৎ কোথায় যাওয়ার প্লান করলো রওশন? আমাকে তো কিছুই জানায় নি।( মুখ মলিন করে) ওখানে গিয়েই জানতে পারবো।

সুবহা গাউনটা পরে রেডি হয়ে যায়। গাউনের সাথে ম্যাচ করে ইয়ারিং আর ব্রেসলেট পরেছে ও। চুল গুলো স্ট্রেইট করে মাঝ বরাবর সিঁথি করে হালকা মেকআপ।

সুবহা নিচে নেমে আসতেই গার্ড ওকে গাড়িতে বসতে বলে। সুবহা কোন প্রশ্ন না করে গাড়িতে বসে পরে।

কিছুক্ষণ পরে,,,??

গাড়ি একটা বড় রিসোর্টের ভিতরে প্রবেশ করল।সুবহা অবাক হয়ে চারপাশ দেখছে। রিসোর্টের ঠিক সামনে বড় একটা ওয়াটার ফল আর ওয়াটার ফল হচ্ছে একটা সিংহের স্ট্রাকচার থেকে। গাড়ি থামতেই সুবহার হুঁশ ফিরে।

একজন গাড়ির দরজা খুলে দেয় সুবহাকে। সুবহা বেরিয়ে আসে।

গার্ডঃ ম্যাম স্যার সেকেন্ড ফ্লোরে অপেক্ষা করছে।

সুবহা মাথা নাড়িয়ে সামনে এগোয়। সেকেন্ড ফ্লোরে প্রবেশ করতেই হা হয়ে যায় ও। সাদা এবং নীল রঙের লাভ শেপ বেলুন, নীল রঙের পর্দা, স্টারগেজার ফ্লাওয়ার আর ডার্ক ব্লু শেডের লাইট দিয়ে সাজানো পুরো হল।

সুবহা হাঁটছে আর বেলুন গুলো ওর পায়ে বারি খাচ্ছে। সাদা রঙের ধোঁয়া উড়ছে হলে হয়তো ফগ স্প্রে করা হয়েছে।

হঠাৎ ধোঁয়ার মাঝেই কেউ ওর সামনে আসতে শুরু করে। সুবহা বোঝার চেষ্টা করছে কে আসছে ওর দিকে।

ধীরে ধীরে মানুষটিকে চিনতে শুরু করে ও। সিলভার কালারের শার্ট হোয়াট আর সিলভার কম্বিনেশনের স্যুট মুখে আগের মতোই সেই ক্যাট মাস্ক টা।

লোকটি সুবহার মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়। সুবহার হার্টবিট ফাস্ট হচ্ছে তাকে নিজের এতো কাছে দেখে।

সে নিজের হাত তুলে সুবহার গালে আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে লো ভয়েজে বলে,,,

>>> সব সময় এই মাস্কের আড়ালের মানুষটিকে দেখতে চাইতে তাইনা? কে হতে পারে এটা জানতে চাইতে?

সুবহা নিজের মাথা নাড়ালো।

>>> আই নো তুমি সব সত্য যেনে গিয়েছো তাও আজকে আমি তোমাকে নিজের হাতে এই মাস্ক টা উঠানোর সুযোগ দিলাম। যেহেতু তুমি নিজে আমাকে খুঁজে বের করেছে তাই এটা তোমার অধিকার হয়। রওশন সাদিক রায়জাদাকে আনমাস্ক করার অধিকার শুধু তোমারি আছে অন্য কারো না।

সুবহা থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে। কেন জানি ভয়ে হাত কাঁপছে ওর। তখন ভেবেছিল রওশনকে ইচ্ছে মতো বকবে কিন্তু এখন ওর সামনে এসে বোলতি বন্ধ হয়ে গেছে ওর‌।

রওশন নিজের মাথাটা কিছুটা ঝুঁকিয়ে আবারও বলল,,

রওশনঃ Come on Subha remove this mask……

সুবহা নিজের কাঁপা কাঁপা হাতে রওশনের মুখ থেকে মাস্কটা সরিয়ে নেয়।

মাস্ক সরতেই রওশন ঠিক তিন কদম পিছিয়ে দাঁড়ালো সুবহা থেকে তারপর নিজের দু হাত ছড়িয়ে দিয়ে বলতে শুরু করল।

রওশনঃ Look your #Gangster_Lover‌ যাকে তুমি হন্য হয়ে খুঁজতে। যাকে সব সময় নিজের আশেপাশে অনুভব করতে। যে তোমার দূরে থেকেও তোমার কাছে থাকতো। তোমার‌ #Mr_Arrogant……

কথা গুলো বলে থামলো রওশন। সুবহা হা হয়ে শুনছে রওশনের কথা।

আচমকা রওশন সুবহার সামনে এক হাঁটু ভাঁজ করে বসে পরে তারপর নিজের পকেটে থেকে একটা রিং বক্স বের করে খুলে সুবহার সামনে ধরে।

রওশনঃ তুমি জানো আমি তোমাকে ভালবাসি কিন্তু কতটা ভালোবাসি তা জানার জন্য তোমাকে আমার পাশে আমার কাছে থাকতে হবে। কিন্তু তা একমাত্র সম্ভব যদি তুমি মিস সুবহা থেকে মিসেস সুবহা রওশন রায়জাদা হও। I want you forever right here by my side‌…
Will you marry me?( আগ্রহী দৃষ্টিতে)

সুবহার কাছে সব যেন অবিশ্বাস্য লাগছে। মনে হচ্ছে ও কোন স্বপ্ন দেখছে। এখন যদি ও জেগে যায় তাহলে স্বপ্ন টাও ভেঙে যাবে কিন্তু সুবহা চায়না স্বপ্ন টা ভাঙ্গুক কারন এটা ওর লাইফের বেস্ট মোমেন্ট। সুবহার চোখ ছলছল করছে। রওশন সুবহার “ হা ” এর অপেক্ষায় এখনো হাত বাড়িয়ে আছে অধীর আগ্রহে।

রওশনঃ কাম অন সুবহা তোমার চুপ থাকাকে কি আমি “ না ” ভাববো? তুমি ভালোবাসো না আমায়?( ভাঙা কন্ঠে)

সুবহা রওশনের হাতে ধরে ওর মুখোমুখি বসে পরে তারপর বলতে শুরু করে।

সুবহাঃ যদি এটা স্বপ্ন হতো তাহলে ভাবতাম আমার লাইফের বেস্ট স্বপ্ন কারন এমনটা আমার লাইফে হবে তা কল্পনার বাইরে। আমি ছোট থেকে অর্ফানএজে বড় হয়েছি একজন সাধারণ মেয়ে আর আপনি দ্যা রওশন রায়জাদা
যার জন্য সবাই পাগল আপনাকে পাবার স্বল্প দেখাও আমি অ্যাফর্ড করি না। কিন্তু আজকে আমি স্বপ্ন দেখছি না আপনি সত্যি আমার সামনে আছেন আর বলছেন আমাকে ভালোবাসেন!

রওশনঃ হা কারন দ্যা রওশন রায়জাদা এই সাধারণ মেয়েটাকেই অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছে। তো বলেন মিস সুবহা আপনি কি আমার লাইফটাইম জগিং পার্টনার হবেন?( হেসে )

সুবহাঃ কিহ…( রওশনের কথায় হেসে দিল)

রওশন ভ্রু নাচিয়ে উত্তর চাইলো। সুবহা মুচকি হেসে রওশনকে জড়িয়ে ধরলো তারপর বলল,,,

সুবহাঃ সারাজীবন আপনাকে জ্বালাবো দেখেন।

রওশনঃ হুম দেখা যাবে। বাট এখন থেকে তো লাইফটাইম আমি তোমাকে নিজের পিছে ছুটাবো।

সুবহাঃ আপনি অনেক পঁচা,,,

রওশনকে ছেড়ে ওর দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে। রওশন সুবহার গাল টেনে ওর আঙুলে রিং পরিয়ে দিয়ে বলল,,,

রওশনঃ এখন থেকে এই পঁচার সাথেই সারাজীবন কাটাতে হবে তোমার।

সুবহার হাত ধরে দাঁড়িয়ে ওকে দাঁড় করায় রওশন তারপর টেবিলে রাখা কেকের সামনে নিয়ে যায়।

লাভ শেপের রেড ভ্যালভেট কেক। কেকের উপর রওশনে সুবহা লিখা খুব সুন্দর করে।

রওশনঃ cut the cake,,,,

সুবহার হাতে নাইফ ধরিয়ে দিয়ে ওর হাতের উপর হাত রেখে কেক কাটলো রওশন। সুবহাকে কেক খাইয়ে দিয়ে ওর হাত ধরে বারান্দায় নিয়ে আসলো ও।

রওশন পেছন থেকে সুবহার চোখে হাত দিয়ে বলে,,,,

রওশনঃ আমি বললে চোখ খুলবে তার আগে না।

সুবহাঃ কিন্তু কেন?

রওশনঃ হুশ আমি কাউন্ট করছি। There two one,,,, now open ur eyes slowly……

রওশন হাত সরিয়ে নিতেই সুবহা ধীরে ধীরে নিজের চোখ খুলে।

সুবহাঃ কিছুই তো নেই!

রওশনঃ উপরে তাকাও……

রওশনের কথা অনুযায়ী সুবহা আকাশের দিকে তাকালো। সুবহা হা হয়ে তাকিয়ে আছে উপরে।

অনেক গুলো ফানুস উড়ছে আকাশে আর সব গুলো একত্র হয়ে I Love You Subha‌ লিখা হচ্ছে।

সুবহা রওশনের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো।

সুবহাঃ I love you too Rowshan…… this is the best gift ever…… কখনো ছেড়ে যাবে না তো?( ছলছল চোখে তাকিয়ে)

রওশন সুবহার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,,,

রওশনঃ যতদিন নিঃশ্বাস আছে তত দিন না,,,,

রওশন সুবহার চোখের পাতায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয় সুবহা রওশনের শার্ট খামচে ধরে। সুবহার চোখের পাতা আর ঠোঁট অনবরত কাঁপছে। রওশন সুবহার চুলে নিজের হাত ডুবিয়ে ওকে আরো কাছে টেনে নেয় তারপর ওর ঠোট জোড়া নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয়। সুবহা রওশনের পিছনে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে।

দুজনের নিঃশ্বাস গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।

? After Some Time ?

ড্রাইভ করছে রওশন আর ওর পাশেই সুবহা বসে আছে। রওশন শীষ দিয়ে ওর প্রিয় গান “ জাম কোয়ি বাত বিগার জায়ে ”। ওর মুখে আজ তৃপ্তির হাসি ফাইনালি সব বাঁধা পেরিয়ে নিজের ভালোবাসাকে পেয়েছে ও।

To be continued………??

#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangster_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_17

রেডি হচ্ছে আভি। আজকে ও ডিসিশন নিয়েছে ওহিকে প্রপোজ করবে।‌ ব্লাক জিন্স হোয়াইট টি শার্ট রেড জ্যাকেট আর স্যুজ পরেছে ও।

আভিঃ OMG Avi you r so handsome….( নিজেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলছে) ওহি কতো লাকি যে তোকে পাবে। হায় আল্লাহ অহংকার দিও না আমাকে। ( লাইক সিরিয়াসলি আভি ? )

হাতে ঘড়ি পরতে নিলেই থেমে যায় ও। বাম হাতে অলরেডি একটা অ্যাক্সপেনসিভ ঘড়ি আছে। গত রাতে আদনান নিজে আভিকে ঘড়িটা পরিয়ে দিয়েছে গিফ্ট হিসেবে। আভি বুঝতে পারছে না হঠাৎ আদনান ওর প্রতি এতো কনসার্ন কেন হলো।

সব ভাবনা বাদ গিয়ে আদনানের ঘড়িটাই পরলো ও। যতই হোক ওর বাবার দেওয়া প্রথম গিফট।

রেডি হয়ে বেরিয়ে যায় আভি। ফ্লাওয়ার স্টোর থেকে লাল গোলাপের তোড়া কিনেছে আভি ওহির জন্য।

???

পার্কে অপেক্ষা করছে ওহি আভির জন্য। ওর ঠোঁটে অদ্ভুত হাসি আজ। আভির জিপ দেখতে পেয়ে দাড়িয়ে যায় ও। আভি মুখে হাসি নিয়ে ওহির কাছে এগিয়ে আসছে।

ওহিঃ তুমি আজকেও লেট,,,( ঘড়ি দেখিয়ে)

আভিঃ আই’ম স্যরি ওহি,,, ( মাথা চুলকে) এটা তোমার জন্য,,,( ফুল গুলো এগিয়ে দিয়ে)

ওহিঃ ওয়াও থ্যাংক ইউ,,,,এখন বলো কেন ডেকেছো আমাকে?

আভিঃ কিছু বলার ছিল যা শোনার জন্য এতো দিন তুমি আমাকে পাগল করে দিচ্ছিলে।

ওহিঃ কি?( অবাক হয়ে)

আভি ওহির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরল তারপর ওর সামনে একটা রিং ধরে বলতে শুরু করলো,,,,

আভিঃ কখনো ভাবিনি কাউকে এ কথা বলবো তাও তোমাকে। কিন্তু আজ আমি বলতে বাধ্য! I love u Ohi will you marry me,,,,

আভি আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে ওহির দিকে। ও জানে ওহি এক ঝটকায় “ হ্যাঁ” বলে দিবে কিন্তু পরিস্থিতি হঠাৎ অন্য রকম হয়ে যায়।

ওহি নিজের হাতের সব গুলো ফুল আভির মুখে ছুড়ে মারে। আভি ” থ ” ওহির কাজে,,,,

আভিঃ এসব কি ওহি,,,( রেগে প্লাস অবাক হয়ে)

ওহিঃ রিভেঞ্জ বেবি।

আভিঃ‌ রিভেঞ্জ!

ওহি আভির চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে বলতে শুরু করে

ওহিঃ একবার আমিও তোমাকে এই লাল গোলাপ দিয়ে সবার সামনে প্রপোজ করেছিলাম মনে আছে? আর তুমি কি করলে? সবার সামনে আমার ইনসাল্ট করলে রিজেক্ট করে দিলে আমায়! সেদিন থেকে একটা জেদ চেপে ধরেছিল মনে তোমাকে সেই অপমান রিটার্ন করার। আর এখন দেখো আই’ম সাক্সেস। ( ঠোঁটে অদ্ভুত হাসি নিয়ে)

আভিঃ তার মানে এতো দিন যা ছিল?( ভাঙা কন্ঠে)

ওহিঃ নাটক ছিল বেবি can’t u understand?

দেখো সেই একই যায়গা একই মানুষ একই পরিবেশ একই আমরা কিন্তু পরিস্থিতি ভিন্ন। সেদিন তোমার জায়গায় আমি ছিলাম তোমার মনে যে পেইন হচ্ছে সেটা তখন আমার ছিল। সুদ সহকারে তোমাকে তোমার পাওনা ফিরিয়ে দিলাম আমি। ( হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে)

ওহি ভেবেছিল আভি হয়তো ভেঙে পরবে কিন্তু আভি নিজেকে সামলে নিয়ে মুখে তাচ্ছিল্য হাসি নিয়ে ওহির মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায় তারপর বলতে শুরু করে।

আভিঃ সিরিয়াসলি ওহি! একটা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এতো কিছু? প্রতিশোধ এমন লেইম কাজ করে নেওয়া হয় না এখানে ( বুকে আঙ্গুল দিয়ে) গুলি করে নেওয়া হয়। তুমি ভেবেছো তোমার এই সামান্য কাজে ভেঙে পরবো আমি? তুমি ভুল! আভি রায়জাদা এতো উইক না ওকে। তুমি যা করেছো না তা ক্ষমার অযোগ্য,,,

আভির চোখ লাল হয়ে গিয়েছে কিন্তু চোখ থেকে পানি পরছে না বাঁধা পরছে কোথাও।

আভিঃ আমাকে পেইন দেওয়া যায় তার জন্য সম্ভব নয়।‌ তুমি আজকে অনেক বড় ভুল করে ফেললে ওহি। তুমি আজকে যা করেছো না! তার জন্য একদিন পচতাতে হবে তোমায়। যখন নিজের ভুল বুঝতে পারবে তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যাবে। অনেক দেরি!

আভি কথা না বাড়িয়ে চলে আসে। ফুলের তোড়া টা পা পিষিয়ে দেয় ও। ওহি অবাক আভির কথায়। ও ভেবেছিল আভি হয়তো ওর উপর চিল্লাবে ওকে বকবে কিন্তু পুরো বিপরীত। আভি শান্ত ভাবে চলে গেল।

আভির কথা গুলো ওহির মনের অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে। ওতো ঘৃনা করে আভিকে যা ছিল সব রিভেঞ্জের পার্ট তাহলে ওর কষ্ট হচ্ছে কেন?

ওহি নিচে তাকিয়ে দেখে রিং টা আভি ফেলে গিয়েছে। নিজের অজান্তেই ও রিং টা তুলে নেয়।

ওহিঃ আমার কেন পেইন হচ্ছে আভির জন্য। আমিতো প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম আর সেটা নেওয়া শেষ তাহলে?

???

রওশন আজকে খুব সকালে অফিসে চলে গিয়েছে। সুবহা নিজের রুমে বসে রওশনের দেওয়া রিং টা দেখে ব্লাশিং হচ্ছে।

টেবিল থেকে রওশনের একটা ছবি নিয়ে সেটার সাথে কথা বলছে ও।

রাতে,,,,??

হঠাৎ গাড়ির হর্নের আওয়াজ শুনতেই ও বুঝে যায় রওশন এসেছে।

সুবহা বাইরে যাওয়ার আগেই রওশন ওর রুমে চলে আসে। সুবহা হুট করে রওশনকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে।

সুবহাঃ রওশন আমি তোমাকে কত মিস করেছি তুমি জানো?( অভিমানী স্বরে)

আচমকা রওশন ধাক্কা দিয়ে সুবহাকে সরিয়ে দেয় নিজের কাছ থেকে। সুবহা টাল সামলাতে না পেরে পিছিয়ে যায় কিন্তু পরে না। সুবহা অবাক দৃষ্টিতে তাকায় রওশনের দিকে।

রওশনকে অদ্ভুত দেখা যাচ্ছে। চুল গুলো উস্কো খুস্কো চেহারা চোখ লাল হয়ে আছে মনে হচ্ছে অনেক ঘাবড়ে প্লাস রেগে আছে ও।

সুবহাঃ রওশন তুমি ঠিক আছো?( নিজেকে সামলে আবার এগিয়ে গিয়ে)

রওশনঃ বেড়িয়ে যাও এ বাড়ি থেকে,,,( কড়া গলায়)

সুবহাঃ মানেহ? কি বলছো তুমি রওশন? কি হয়েছে তোমার আমাকে বলো?( রওশনের গালে হাত রেখে ওকে বুঝাতে বুঝাতে)

রওশন সুবহাকে সরিয়ে কাবার্ড থেকে ওর জিনিস পত্র বের করে প্যাক করতে করতে বলে,,,,

রওশনঃ আমি তোমার সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না। যা ছিল আমাদের মাঝে সব শেষ ভুলে যাও সব চলে যাও আমার লাইফ থেকে।

সুবহাঃ কি বলছো রওশন? তুমি মজা করছো তাই না! তুমি তো ভালোবাসো আমায় কালকেই তো বলছিলে কখনো ছেড়ে যাবে না তাহলে আজকে হঠাৎ কি হলো প্লিজ বলো আমায়।( কান্না করতে করতে রওশনের হাত ধরে)

রওশনঃ আমি এতো কিছু শুনতে চাই না সুবহা আমি সব শেষ করতে চাই দ্যাট্স ইটট,,, আর যেখানে গতকালের কথা! আমি এ সম্পর্ক আজ শেষ করলাম।

রওশন সুবহার আঙ্গুল থেকে আংটিটা খুলে ফেলল। সুবহার নিঃশ্বাস আটকে আসছে রওশনের এমন ব্যবহার নিতে পারছে না ও।

রওশন এক হাতে লাগেজ আরেক হাত দিয়ে সুবহার হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে আসে। সুবহা বারবার বারন করছে তাও শুনছে না ও।

রওশন সুবহাকে দরজার বাইরে বের করে দেয়।

টাইসেল চলে আসে ওদের পিছু। রওশন কিছু একটা ভেবে টাইসেলের গলার বেল্ট ধরে ওকেও বাইরে বের করে দেয়।

রওশনঃ একেও নিয়ে যাও নিজের সাথে। আর কখনো আমার সামনে আসবে না।

দরজা বন্ধ করে দেয় রওশন। সুবহা এখনো থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে। ওর কাছে সব অবিশ্বাস্য লাগছে। কেন করলো রওশন এমন কি এমন হয়েছে ওর। সুবহা নিজের চোখ মুছে কান্না থামানোর বৃথা চেষ্টা করছে।

দরজার মধ্যে লাগাতার বারি দিচ্ছে আর রওশনকে ডাকছে ও। রওশন কোন রেসপন্স করছে না।

সুবহাঃ রওশন প্লিজ বলো কি হয়েছে আমি জানি তুমি এমন না। Please open the door Rowshan……

দরজার ওপাশে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রওশন। ওর চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরছে।

সুবহা হার মেনে চলে যায় ওখান থেকে।

রওশনঃ চলে যাও সুবহা নাহলে খুব খারাপ কিছু হয়ে যাবে তোমার সাথে আমার জন্য তা আমি চাই না।

হঠাৎ কিছু একটা মনে পরতেই রওশন হন্তদন্ত করে পুরো বাড়িতে কিছু খুঁজতে শুরু করে। প্রতিটা কোনা প্রতিটা রুম গার্ডরা চেক করছে সাথে রওশনও।

গার্ডঃ পুরো বাড়ি চেক করেছি স্যার কিন্তু কিছুই পেলাম না।

রওশনের ফোনে কলার টোন আসতেই রওশন তড়িঘড়ি করে ফোন চেক করে। আদনান কল করেছে।

রওশন রিসিভ করতেই আদনান বলতে শুরু করে।

আদনানঃ বাড়িতে খুঁজে লাভ নেই মাই বয়। ওখানে কিছু নেই ডোন্ট ওয়ারি,,

রওশনঃ শেষ করে দিব আপনাকে যদি ওর কোন ক্ষতি হয় আদনান রায়জাদা,,,( রেগে প্লাস চিল্লিয়ে)

আদনানঃ কুল ডাউন রওশন চাচা হই আমি তোমার ভদ্র ভাবে কথা বলো। আর হা তুমি যদি আমার শর্তে রাজি হও তাহলে সে বেঁচে যাবে ডোন্ট ওয়ারি। আমি এতোও নিষ্ঠুর না।

রওশনঃ আমি আপনার সব শর্তে রাজি বাট ওর যেন কিছু না হয় প্লিজ,,,

আদনানঃ কালকে তাহলে আমার স্বপ্ন টা পুরন হতে চলেছে। ( কেটে দিল )

রওশনঃ ডোন্ট ওয়ারি আদনান নিজে শেষ হলে তোকে সাথে নিয়েই শেষ হবো। ( কড়া গলায়) তোর কৃত কর্মের ফল খুব শিঘ্রই পাবি তুই।

???

শহর থেকে প্রায় দূরে একটা খালি জায়গায় জিট দাঁড় করিয়ে সেটার উপর বসে আছে আভি। ওর হাতে ওয়াইনের বোতল। তখন নিজেকে স্ট্রং দেখালেও এখন সম্পূর্ণ একা লাগছে নিজেকে।

আভিঃ ধোঁকা! আবারো বলতে ধোঁকা,,,( রেগে বোতলটা ফেলে দিল ) কেন হয় বারবার আমার সাথে এমন হোয়াই গড হোয়াইইই,,,,

“ তেরে বিন জিনা হ্যায় অ্যায়সে
দিল ধারকা না হো জ্যায়সে
ইয়ে ইস্ক হ্যায় ক্যায়া দুনিয়াকো
হাম সামঝায়ে ক্যায়সে

আ দিলো কি রাহো মে
হাম কুছ অ্যায়সা কার জায়ে
ইক দুজে সে বিছরে তো
সাস লিয়ে বিন মার জায়ে

ও খোদা বাতাদে ক্যায়া লাকিরো মে লিখা
হামনে তো হামনে তো বাস্ ইস্ক হ্যায় কিয়া,,,,,X2

???

নিজের রুমে পায়চারি করছে ওহি। বাসায় ফেরার পর থেকে কিছুই ভালো লাগছে না ওর। বারবার আভির চেহারা‌ ভাসছে।

ওহিঃ কেন খারাপ লাগছে আমার?‌ আমিতো এটাই চেয়েছিলাম তাহলে কেন খুশি হতে পারছি না? কেন বিষন্ন লাগছে সব?

আমি কি আজও আভিকে ভালোবাসি?( ভয়ে ভয়ে)‌ কোন ভুল করে ফেলিনি তো আমি।

???

সুবহা নিজের বাসায় চলে এসেছে। কান্না করতে করতে চোখ ফুলে গেছে ওর তাও কান্না থামছে না।

সুবহাঃ জীবনে এক তোমাকেই তো ভালোবেসেছিলাম রওশন কেন এমন করলে। তোমাকে নিজের দুনিয়া ভাবতাম আমি আর তুমিই আমাকে নিজের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিলে। কেন করলে এমন? হোয়াই?

???

সুবহার রুমে ওর ছবি হাতে নিয়ে বসে আছে রওশন।

রওশনঃ যা করেছি তোমার ভালোর জন্য করেছি জান। আমার জীবন অনিশ্চিত এখন। কালকের পর হয়তো তোমাকে আর দেখতে পারবো না কিন্তু আমি তোমাকেই ভালোবাসি আর ভালোবাসবো।

তুমি হয়তো আজকের পর থেকে ঘৃনা করবে আমায় ভালোবাসা না হোক তোমার ঘৃনা তো আজীবন পাবো। ( ভাঙ্গা গলায়)

রওশন সুবহার ছবি বুকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।

“ আজ আপনে রাংগো সে
বিছরি হ্যায় ইয়ে তাসভিরে
হাথো মে কাহি টুট রাহি হ্যায়
মিলকার দো তাকদিরে।

দুনিয়া ইয়ে জিত গায়ি
দিল হার গায়া
নেহি সোচা থা মিলকে
কাভি হোঙ্গে জুদা

ও খোদা বাতাদে ক্যায়া লাকিরো মে লিখা
হামনে তো হামনে তো বাস্ ইস্ক হ্যায় কিয়া,,,,X2

To be continued……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here