#Mr_Arrogant_2 ?
#The_Gangster_Lover,Part_17,18
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_17
রেডি হচ্ছে আভি। আজকে ও ডিসিশন নিয়েছে ওহিকে প্রপোজ করবে। ব্লাক জিন্স হোয়াইট টি শার্ট রেড জ্যাকেট আর স্যুজ পরেছে ও।
আভিঃ OMG Avi you r so handsome….( নিজেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলছে) ওহি কতো লাকি যে তোকে পাবে। হায় আল্লাহ অহংকার দিও না আমাকে। ( লাইক সিরিয়াসলি আভি ? )
হাতে ঘড়ি পরতে নিলেই থেমে যায় ও। বাম হাতে অলরেডি একটা অ্যাক্সপেনসিভ ঘড়ি আছে। গত রাতে আদনান নিজে আভিকে ঘড়িটা পরিয়ে দিয়েছে গিফ্ট হিসেবে। আভি বুঝতে পারছে না হঠাৎ আদনান ওর প্রতি এতো কনসার্ন কেন হলো।
সব ভাবনা বাদ গিয়ে আদনানের ঘড়িটাই পরলো ও। যতই হোক ওর বাবার দেওয়া প্রথম গিফট।
রেডি হয়ে বেরিয়ে যায় আভি। ফ্লাওয়ার স্টোর থেকে লাল গোলাপের তোড়া কিনেছে আভি ওহির জন্য।
???
পার্কে অপেক্ষা করছে ওহি আভির জন্য। ওর ঠোঁটে অদ্ভুত হাসি আজ। আভির জিপ দেখতে পেয়ে দাড়িয়ে যায় ও। আভি মুখে হাসি নিয়ে ওহির কাছে এগিয়ে আসছে।
ওহিঃ তুমি আজকেও লেট,,,( ঘড়ি দেখিয়ে)
আভিঃ আই’ম স্যরি ওহি,,, ( মাথা চুলকে) এটা তোমার জন্য,,,( ফুল গুলো এগিয়ে দিয়ে)
ওহিঃ ওয়াও থ্যাংক ইউ,,,,এখন বলো কেন ডেকেছো আমাকে?
আভিঃ কিছু বলার ছিল যা শোনার জন্য এতো দিন তুমি আমাকে পাগল করে দিচ্ছিলে।
ওহিঃ কি?( অবাক হয়ে)
আভি ওহির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরল তারপর ওর সামনে একটা রিং ধরে বলতে শুরু করলো,,,,
আভিঃ কখনো ভাবিনি কাউকে এ কথা বলবো তাও তোমাকে। কিন্তু আজ আমি বলতে বাধ্য! I love u Ohi will you marry me,,,,
আভি আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে ওহির দিকে। ও জানে ওহি এক ঝটকায় “ হ্যাঁ” বলে দিবে কিন্তু পরিস্থিতি হঠাৎ অন্য রকম হয়ে যায়।
ওহি নিজের হাতের সব গুলো ফুল আভির মুখে ছুড়ে মারে। আভি ” থ ” ওহির কাজে,,,,
আভিঃ এসব কি ওহি,,,( রেগে প্লাস অবাক হয়ে)
ওহিঃ রিভেঞ্জ বেবি।
আভিঃ রিভেঞ্জ!
ওহি আভির চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে বলতে শুরু করে
ওহিঃ একবার আমিও তোমাকে এই লাল গোলাপ দিয়ে সবার সামনে প্রপোজ করেছিলাম মনে আছে? আর তুমি কি করলে? সবার সামনে আমার ইনসাল্ট করলে রিজেক্ট করে দিলে আমায়! সেদিন থেকে একটা জেদ চেপে ধরেছিল মনে তোমাকে সেই অপমান রিটার্ন করার। আর এখন দেখো আই’ম সাক্সেস। ( ঠোঁটে অদ্ভুত হাসি নিয়ে)
আভিঃ তার মানে এতো দিন যা ছিল?( ভাঙা কন্ঠে)
ওহিঃ নাটক ছিল বেবি can’t u understand?
দেখো সেই একই যায়গা একই মানুষ একই পরিবেশ একই আমরা কিন্তু পরিস্থিতি ভিন্ন। সেদিন তোমার জায়গায় আমি ছিলাম তোমার মনে যে পেইন হচ্ছে সেটা তখন আমার ছিল। সুদ সহকারে তোমাকে তোমার পাওনা ফিরিয়ে দিলাম আমি। ( হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে)
ওহি ভেবেছিল আভি হয়তো ভেঙে পরবে কিন্তু আভি নিজেকে সামলে নিয়ে মুখে তাচ্ছিল্য হাসি নিয়ে ওহির মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায় তারপর বলতে শুরু করে।
আভিঃ সিরিয়াসলি ওহি! একটা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এতো কিছু? প্রতিশোধ এমন লেইম কাজ করে নেওয়া হয় না এখানে ( বুকে আঙ্গুল দিয়ে) গুলি করে নেওয়া হয়। তুমি ভেবেছো তোমার এই সামান্য কাজে ভেঙে পরবো আমি? তুমি ভুল! আভি রায়জাদা এতো উইক না ওকে। তুমি যা করেছো না তা ক্ষমার অযোগ্য,,,
আভির চোখ লাল হয়ে গিয়েছে কিন্তু চোখ থেকে পানি পরছে না বাঁধা পরছে কোথাও।
আভিঃ আমাকে পেইন দেওয়া যায় তার জন্য সম্ভব নয়। তুমি আজকে অনেক বড় ভুল করে ফেললে ওহি। তুমি আজকে যা করেছো না! তার জন্য একদিন পচতাতে হবে তোমায়। যখন নিজের ভুল বুঝতে পারবে তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যাবে। অনেক দেরি!
আভি কথা না বাড়িয়ে চলে আসে। ফুলের তোড়া টা পা পিষিয়ে দেয় ও। ওহি অবাক আভির কথায়। ও ভেবেছিল আভি হয়তো ওর উপর চিল্লাবে ওকে বকবে কিন্তু পুরো বিপরীত। আভি শান্ত ভাবে চলে গেল।
আভির কথা গুলো ওহির মনের অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে। ওতো ঘৃনা করে আভিকে যা ছিল সব রিভেঞ্জের পার্ট তাহলে ওর কষ্ট হচ্ছে কেন?
ওহি নিচে তাকিয়ে দেখে রিং টা আভি ফেলে গিয়েছে। নিজের অজান্তেই ও রিং টা তুলে নেয়।
ওহিঃ আমার কেন পেইন হচ্ছে আভির জন্য। আমিতো প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম আর সেটা নেওয়া শেষ তাহলে?
???
রওশন আজকে খুব সকালে অফিসে চলে গিয়েছে। সুবহা নিজের রুমে বসে রওশনের দেওয়া রিং টা দেখে ব্লাশিং হচ্ছে।
টেবিল থেকে রওশনের একটা ছবি নিয়ে সেটার সাথে কথা বলছে ও।
রাতে,,,,??
হঠাৎ গাড়ির হর্নের আওয়াজ শুনতেই ও বুঝে যায় রওশন এসেছে।
সুবহা বাইরে যাওয়ার আগেই রওশন ওর রুমে চলে আসে। সুবহা হুট করে রওশনকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে।
সুবহাঃ রওশন আমি তোমাকে কত মিস করেছি তুমি জানো?( অভিমানী স্বরে)
আচমকা রওশন ধাক্কা দিয়ে সুবহাকে সরিয়ে দেয় নিজের কাছ থেকে। সুবহা টাল সামলাতে না পেরে পিছিয়ে যায় কিন্তু পরে না। সুবহা অবাক দৃষ্টিতে তাকায় রওশনের দিকে।
রওশনকে অদ্ভুত দেখা যাচ্ছে। চুল গুলো উস্কো খুস্কো চেহারা চোখ লাল হয়ে আছে মনে হচ্ছে অনেক ঘাবড়ে প্লাস রেগে আছে ও।
সুবহাঃ রওশন তুমি ঠিক আছো?( নিজেকে সামলে আবার এগিয়ে গিয়ে)
রওশনঃ বেড়িয়ে যাও এ বাড়ি থেকে,,,( কড়া গলায়)
সুবহাঃ মানেহ? কি বলছো তুমি রওশন? কি হয়েছে তোমার আমাকে বলো?( রওশনের গালে হাত রেখে ওকে বুঝাতে বুঝাতে)
রওশন সুবহাকে সরিয়ে কাবার্ড থেকে ওর জিনিস পত্র বের করে প্যাক করতে করতে বলে,,,,
রওশনঃ আমি তোমার সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না। যা ছিল আমাদের মাঝে সব শেষ ভুলে যাও সব চলে যাও আমার লাইফ থেকে।
সুবহাঃ কি বলছো রওশন? তুমি মজা করছো তাই না! তুমি তো ভালোবাসো আমায় কালকেই তো বলছিলে কখনো ছেড়ে যাবে না তাহলে আজকে হঠাৎ কি হলো প্লিজ বলো আমায়।( কান্না করতে করতে রওশনের হাত ধরে)
রওশনঃ আমি এতো কিছু শুনতে চাই না সুবহা আমি সব শেষ করতে চাই দ্যাট্স ইটট,,, আর যেখানে গতকালের কথা! আমি এ সম্পর্ক আজ শেষ করলাম।
রওশন সুবহার আঙ্গুল থেকে আংটিটা খুলে ফেলল। সুবহার নিঃশ্বাস আটকে আসছে রওশনের এমন ব্যবহার নিতে পারছে না ও।
রওশন এক হাতে লাগেজ আরেক হাত দিয়ে সুবহার হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে আসে। সুবহা বারবার বারন করছে তাও শুনছে না ও।
রওশন সুবহাকে দরজার বাইরে বের করে দেয়।
টাইসেল চলে আসে ওদের পিছু। রওশন কিছু একটা ভেবে টাইসেলের গলার বেল্ট ধরে ওকেও বাইরে বের করে দেয়।
রওশনঃ একেও নিয়ে যাও নিজের সাথে। আর কখনো আমার সামনে আসবে না।
দরজা বন্ধ করে দেয় রওশন। সুবহা এখনো থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে। ওর কাছে সব অবিশ্বাস্য লাগছে। কেন করলো রওশন এমন কি এমন হয়েছে ওর। সুবহা নিজের চোখ মুছে কান্না থামানোর বৃথা চেষ্টা করছে।
দরজার মধ্যে লাগাতার বারি দিচ্ছে আর রওশনকে ডাকছে ও। রওশন কোন রেসপন্স করছে না।
সুবহাঃ রওশন প্লিজ বলো কি হয়েছে আমি জানি তুমি এমন না। Please open the door Rowshan……
দরজার ওপাশে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রওশন। ওর চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরছে।
সুবহা হার মেনে চলে যায় ওখান থেকে।
রওশনঃ চলে যাও সুবহা নাহলে খুব খারাপ কিছু হয়ে যাবে তোমার সাথে আমার জন্য তা আমি চাই না।
হঠাৎ কিছু একটা মনে পরতেই রওশন হন্তদন্ত করে পুরো বাড়িতে কিছু খুঁজতে শুরু করে। প্রতিটা কোনা প্রতিটা রুম গার্ডরা চেক করছে সাথে রওশনও।
গার্ডঃ পুরো বাড়ি চেক করেছি স্যার কিন্তু কিছুই পেলাম না।
রওশনের ফোনে কলার টোন আসতেই রওশন তড়িঘড়ি করে ফোন চেক করে। আদনান কল করেছে।
রওশন রিসিভ করতেই আদনান বলতে শুরু করে।
আদনানঃ বাড়িতে খুঁজে লাভ নেই মাই বয়। ওখানে কিছু নেই ডোন্ট ওয়ারি,,
রওশনঃ শেষ করে দিব আপনাকে যদি ওর কোন ক্ষতি হয় আদনান রায়জাদা,,,( রেগে প্লাস চিল্লিয়ে)
আদনানঃ কুল ডাউন রওশন চাচা হই আমি তোমার ভদ্র ভাবে কথা বলো। আর হা তুমি যদি আমার শর্তে রাজি হও তাহলে সে বেঁচে যাবে ডোন্ট ওয়ারি। আমি এতোও নিষ্ঠুর না।
রওশনঃ আমি আপনার সব শর্তে রাজি বাট ওর যেন কিছু না হয় প্লিজ,,,
আদনানঃ কালকে তাহলে আমার স্বপ্ন টা পুরন হতে চলেছে। ( কেটে দিল )
রওশনঃ ডোন্ট ওয়ারি আদনান নিজে শেষ হলে তোকে সাথে নিয়েই শেষ হবো। ( কড়া গলায়) তোর কৃত কর্মের ফল খুব শিঘ্রই পাবি তুই।
???
শহর থেকে প্রায় দূরে একটা খালি জায়গায় জিট দাঁড় করিয়ে সেটার উপর বসে আছে আভি। ওর হাতে ওয়াইনের বোতল। তখন নিজেকে স্ট্রং দেখালেও এখন সম্পূর্ণ একা লাগছে নিজেকে।
আভিঃ ধোঁকা! আবারো বলতে ধোঁকা,,,( রেগে বোতলটা ফেলে দিল ) কেন হয় বারবার আমার সাথে এমন হোয়াই গড হোয়াইইই,,,,
“ তেরে বিন জিনা হ্যায় অ্যায়সে
দিল ধারকা না হো জ্যায়সে
ইয়ে ইস্ক হ্যায় ক্যায়া দুনিয়াকো
হাম সামঝায়ে ক্যায়সে
আ দিলো কি রাহো মে
হাম কুছ অ্যায়সা কার জায়ে
ইক দুজে সে বিছরে তো
সাস লিয়ে বিন মার জায়ে
ও খোদা বাতাদে ক্যায়া লাকিরো মে লিখা
হামনে তো হামনে তো বাস্ ইস্ক হ্যায় কিয়া,,,,,X2
???
নিজের রুমে পায়চারি করছে ওহি। বাসায় ফেরার পর থেকে কিছুই ভালো লাগছে না ওর। বারবার আভির চেহারা ভাসছে।
ওহিঃ কেন খারাপ লাগছে আমার? আমিতো এটাই চেয়েছিলাম তাহলে কেন খুশি হতে পারছি না? কেন বিষন্ন লাগছে সব?
আমি কি আজও আভিকে ভালোবাসি?( ভয়ে ভয়ে) কোন ভুল করে ফেলিনি তো আমি।
???
সুবহা নিজের বাসায় চলে এসেছে। কান্না করতে করতে চোখ ফুলে গেছে ওর তাও কান্না থামছে না।
সুবহাঃ জীবনে এক তোমাকেই তো ভালোবেসেছিলাম রওশন কেন এমন করলে। তোমাকে নিজের দুনিয়া ভাবতাম আমি আর তুমিই আমাকে নিজের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিলে। কেন করলে এমন? হোয়াই?
???
সুবহার রুমে ওর ছবি হাতে নিয়ে বসে আছে রওশন।
রওশনঃ যা করেছি তোমার ভালোর জন্য করেছি জান। আমার জীবন অনিশ্চিত এখন। কালকের পর হয়তো তোমাকে আর দেখতে পারবো না কিন্তু আমি তোমাকেই ভালোবাসি আর ভালোবাসবো।
তুমি হয়তো আজকের পর থেকে ঘৃনা করবে আমায় ভালোবাসা না হোক তোমার ঘৃনা তো আজীবন পাবো। ( ভাঙ্গা গলায়)
রওশন সুবহার ছবি বুকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
“ আজ আপনে রাংগো সে
বিছরি হ্যায় ইয়ে তাসভিরে
হাথো মে কাহি টুট রাহি হ্যায়
মিলকার দো তাকদিরে।
দুনিয়া ইয়ে জিত গায়ি
দিল হার গায়া
নেহি সোচা থা মিলকে
কাভি হোঙ্গে জুদা
ও খোদা বাতাদে ক্যায়া লাকিরো মে লিখা
হামনে তো হামনে তো বাস্ ইস্ক হ্যায় কিয়া,,,,X2
To be continued……….
#Mr_Arrogant_2?
#The_Gangster_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_18
সূর্যের তীক্ষ্ণ আলো চোখে পরতেই নড়েচড়ে উঠলো আভি। কানে লাগাতার একটা শব্দ বাজতেই চলেছে। মাথাটা চেপে ধরে উঠে বসলো ও। রাতে ড্রাঙ্ক হয়ে জীপেই ঘুমিয়ে পরেছিল। আবারো সেই শব্দ কানে আসলো ওর। জীপ থেকে পানির বোতল বের করে মুখে পানির ছিটে দিয়ে ভালো করে চোখ খুলল,,,
আবারো শব্দ টা বাজছে। আভি বিরক্ত হয়ে জীপের সিটে তাকাতেই দেখলো ওর ফোন বাজছে। অর্নব খান কল করেছে। মুখে বিরক্তি নিয়ে কল রিসিভ করলো ও।
আভিঃ হ্যালো…….
ফোনের ওপাশে অর্নবের কথা গুলো শুনে আভির পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গেল।
আভিঃ Whattt! এটা কি বলছেন আপনি। আ আমি আসছি এক্ষুনি,,,,
আভি দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দেয় হেডকোয়ার্টারের উদ্দেশ্যে।
? In Headquarter?
হন্তদন্ত করে পৌঁছালো আভি। ওকে দেখে সব জুনিয়র অফিসার রা দাঁড়িয়ে গেল।
আভিঃ রওশন ভাই কোথায়?
অর্নবঃ ভিতরে,,,
আভি দ্রুত ভিতরে চলে যায়। রওশন একটা টেবিলের সামনে বসে আছে।
আভিঃ এসব কি ভাই?
রওশনঃ কিসের কথা বলছিস?
আভিঃ একদম ড্রামা করবি না। তুই সারেন্ডার করছিস তাও মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে? তোর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে?
রওশনঃ আমার মাথা নষ্ট হয়নি আমি স্ব জ্ঞানেই নিজের ক্রাইম স্বীকার করছি। ( শান্ত ভাবে)
আভিঃ কোন ক্রাইম হা যেটা ওই আদনান রায়জাদা করেছে? ওর দোষ নিজের ঘাড়ে কেন নিচ্ছিস?
রওশনঃ তোর সাথে ফালতু কথা বলতে চাই না আমি। নিজের ডিউটি পুরন কর আর আমাকে অ্যারেস্ট কর দ্যাট্স ইট।
অর্নবঃ তুমি কি ভেবে চিন্তে বলছো রওশন?
রওশনঃ জি,,
আভিঃ কি ভেবে চিন্তে বলবে ও? আমি জানি ও মিথ্যা বলছে নিশ্চয়ই ওই আদনান কিছু একটা করেছে,,,,
অর্নবঃ আভি! ভুলো না তুমি একজন সিবিআই অফিসার তাই আবেগ দিয়ে নয় বিবেক দিয়ে চিন্তা করো। পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফ এক করোনা। রওশন এখন একজন আসামি।
আভিঃ কি বলছেন আপনি,,,
অর্নবঃ শাট আপ আভি,,( আভিকে থামিয়ে)
আভিঃ কিন্তু!
অর্নবঃ হ্যান্ড কাফ পরাও ওকে।
আভিঃ কখনো না। ( জেদ দেখিয়ে)
অর্নবঃ As ur boss I’m ordering u Avi,,,( কড়া ভাবে)
আভিঃ স্যার,,,
অর্নবঃ do it I say
আভিঃ স্যরি মি. অর্নব খান আপনি চাইলে আমাকে জব থেকে রাস্টিগেট করতে পারেন কিন্তু আমি আপনার এই অর্ডার মানতে বাধ্য না।
আভি রেগে চেয়ারে লাথি মেরে চলে গেল। অর্নব অন্য একজন অফিসার কে অর্ডার করলো রওশনকে হ্যান্ড কাফ পরাতে।
???
সুবহা টাইসেলকে ওর ডগ ফুড খেতে দিয়ে কিচেনে নিজের জন্য কফি বানাতে চলে যায়। হঠাৎ টিভির ব্রেকিং নিউজ কানে আসতেই চমকে যায় ও। দ্রুত ড্রইং রুমে এসে টিভির সামনে দাঁড়ায় ও।
ব্রেকিং নিউজে দেখাচ্ছে ডার্ক গ্ৰুপ মাফিয়া লিডার তার সব ক্রাইম স্বীকার করে সারেন্ডার করেছে। তাকে সিবিআই নিজেদের আন্ডারে রেখেছে আজকে কোর্টে তার হেয়ারিং হবে।
সুবহা অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে যায়। ওর মাথায় গত রাত থেকে আজ পর্যন্ত সব ঘটনা ভনভন করছে। কিছু বুঝে উঠতে পারছে না ও।
টাইসেল টিভির সামনে এসে রওশনের ছবি দেখে মুখটা মায়ুস করে রেখেছে।
সুবহাঃ কি হচ্ছে এসব?( অবাক হয়ে) we have to go Tycel,,,
সুবহা হন্তদন্ত করে বের হতে নিলেই হোঁচট খায় টেবিলে হাত বারি খেয়ে তালু ছিলে যায় ওর।
সুবহাঃ আহহ্ ( হাত ঝাড়তে ঝাড়তে)
নিজের ব্যথা উপেক্ষা করে বেরিয়ে পরে ও টাইসেলও ওর পিছনে যায়।
???
>> র রওশন!
দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে রওশন। হঠাৎ পরিচিত কন্ঠ কানে আসতেই ঘুরে দাঁড়ালো ও।
সুবহা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। সুবহার চোখের পানি সহ্য হচ্ছে না ওর। রওশন সুবহার দিকে পিঠ করে নেয়। নিজেকে ওর সামনে দূর্বল দেখাতে চায় না ও।
রওশনঃ কেন এসেছো এখানে? বলেছি না আমার জীবন থেকে দূরে সরে যেতে। চলে যাও এখান থেকে সুবহা।
সুবহাঃ রওশন আমি জানি তুমি কোন কারনেই এমন করছো প্লিজ আমাকে সত্যটা বলো। আই প্রমিস আমি সব ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। প্লিজ রওশন তুমি জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।
রওশনঃ এখন কিছু ঠিক হবে না সুবহা। ভুলে যাও আমায় নতুন করে নিজের জীবন সাজাও।
সুবহাঃ রওশন প্লিজ তাকাও আমার দিকে,, আহহ,,,
সুবহা লকাবে হাত রাখতেই হাতের ব্যথা জায়গায় আবারো ব্যথা অনুভব করে।
সাথে সাথে রওশন ঘুরে দাঁড়ায় সুবহার দিকে। ওর চোখে মুখে চিন্তার ছাপ।
রওশনঃ কি হয়েছে সুবহা?
রওশন সুবহার হাতের দিকে তাকাতেই দেখলো হাত ছিলে গিয়েছে।
রওশনঃ এটা কিভাবে হলো সুবহা? তুমি এতো কেয়ারলেস কেন? কিভাবে হলো জবাব দাও।( সুবহার হাত ধরে চিন্তিত ভাবে )
সুবহাঃ আগে তুমি আমার প্রশ্নের উত্তর দাও কেন করছো এমন কাকে বাঁচানোর জন্য?
রওশন সুবহার কথায় চোখ মুখ শক্ত করে নেয় তারপর রাগি ভাবে বলে।
রওশনঃ শোনো সুবহা পৃথিবীতে এমন অনেক কিছু আছে যা আমাদের পৌঁছের বাইরে চাইলেও সেটা হাসিল করতে পারি না আমরা। হয়তো আমাদের ভালোবাসাও তেমনি। একে অপরের ভাগ্যে নেই আমরা! ( ভাঙ্গা গলায়)
সুবহাঃ প্লিজ রওশন!( কান্না করতে করতে)
রওশনঃ গো সুবহা।
সুবহাঃ র
রওশনঃ আমি বলছি যাওওওও,,( ধমক দিয়ে)
সুবহাঃ তুমি যাই বলো না কেন রওশন আমি আমাদের ভালোবাসাকে এভাবে হারতে দিব না।
সুবহা নিজের চোখ মুছতে মুছতে দৌড়ে বেরিয়ে যায়।
সুবহা চলে যায় কিন্তু টাইসেল এখনো ঠাই বসে আছে রওশনের দিকে তাকিয়ে।
রওশন হালকা হেসে পিছনে ঘুরে তাকায় তারপর বসে টাইসলকে বলতে শুরু করে।
রওশনঃ আমি জানতাম তুই এতো সহজে যাবি না। তোকে একটা দায়িত্ব দিব পুরন করবি কিন্তু।
টাইসেল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রওশনের দিকে।
রওশনঃ টাইসু টেক কেয়ার অফ হার বেবি। ওর দায়িত্ব এখন তোর উপর। ছায়ার মতো পাশে থাকবি ওর। আই লাভ ইউ গো,,,
টাইসেল দাঁড়িয়ে সুবহার পিছনে দৌড় দেয়।
???
হেডকোয়ার্টার এর বাইরে দাঁড়িয়ে পায়চারি করছে আভি। রাগে শরীর কাঁপছে ওর। হাজার বার রওশনকে প্রশ্ন করেছে কিন্তু রওশন কিছুই বলছে না চুপ করে আছে। হঠাৎ টাইসেলের কন্ঠে পেছনে ফিরে ও। সুবহা কাঁদতে কাঁদতে এইদিকেই আসছে।
আভিঃ কিছু বলেছে ও? ( সুবহার সামনে দাঁড়িয়ে)
সুবহা মাথা নাড়িয়ে না বলল। আভি রেগে হাত ঝাড়া দিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে টাইম দেখলো। দুপুর হয়ে গিয়েছে কিছুক্ষণের মধ্যেই কোর্টে হাজির করা হবে রওশনকে। যা করার দ্রুত করতে হবে।
আভিঃ কি করবো এখনননন,,,( রেগে )
ওহিঃ আমার কাছে একটা প্লান আছে,,,
ওহির কথায় আভি আর সুবহা পেছনে ফিরল। ওহিকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নেয় আভি।
আভিঃ তোমার সাহায্যের প্রয়োজন নেই আমার যাও এখান থেকে।
ওহিঃ আভি প্লিজ ঠান্ডা মাথায় ভাবো আমি শুধু হেল্প করতে চাইছি।
আভি কিছু বলতে যাবে তার আগেই সুবহা বলে।
সুবহাঃ প্লানটা কি ওহি?
ওহিঃ রিশব!
আভিঃ রিশব? আদনান রায়জাদার রাইট হ্যান্ড,,,
ওহিঃ হ্যাঁ। ওকে যদি আমরা ধরতে পারি তাহলে আদনান রায়জাদার সব গোপন তথ্য ফাঁস করে দিবে ও। ওর কাছ থেকে কিছু লুকানো না।
সুবহাঃ কিন্তু ওকে পাবো কোথায়?
আভিঃ আমি জানি ও কোথায় আছে জীপে বসো তোমরা।
আভি সুবহা ওহি আর টাইসেল জীপে উঠে বসে। আভি জীপ স্টার্ট দেয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা পৌঁছে যায় রিশবের ফার্ম হাউজে। রিশব দরজা খুলতেই আভিকে দেখে ভয় পেয়ে যায় পালানোর জন্য ছুটতেই আভি ওকে ধরে ফেলে তারপর ইচ্ছে মতো বডি ম্যাসাজ দেয়।
চেয়ারে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে রিশবকে। পুরো শরীর রক্তাক্ত ওর। সামনেই আভি একটা বড় স্টিক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আভিঃ মুখ খুলবি নাকি আরো ধোলাই খাওয়া বাকি আছে?( রেগে)
রিশবঃ আ মি সব বলছি আভি স্যার,,,( অনেক কষ্টে বলল )
আভিঃ Speak uppp,
রিশব সব বলতে শুরু করে আভিকে। যে আদনান রওশনকে ব্লাকমেইল করে এসব করিয়েছে। ওর সব ক্রাইম এর দোষ রওশনকে নিজের উপর নিতে বাধ্য করেছে।
সবাই অবাক ওর কথায়।
আভিঃ কি এমন জিনিস দিয়ে ব্লাকমেইল করছে ও ভাইকে?
রিশবঃ আপনাকে দিয়ে,,,
আভিঃ আ আমি কিন্তু কিভাবে?
রিশবঃ আ আপনার হাতে যে ঘড়ি সেটাতে বম আছে।
আভিঃ বম,,( কয়েক কদম পিছিয়ে যায় ও)
সুবহাঃ ঘ ঘড়িতে বম!( ঘাবড়ে গিয়ে)
ওহি ভয় পেয়ে যায় ওর কথায়।
রিশবঃ আর এক ঘন্টা পর রওশনের সাজা হবে আর এই বম ডিফিউজ হবে। টাইম বসানো ঘড়িতে এক ঘন্টার মধ্যে ডিভিউজ না হলে এটা ব্লাস্ট হয়ে যাবে।
সুবহাঃ আ আভি ঘড়ি খোলো তুমি তাড়াতাড়ি,,,
রিশবঃ ঘড়ি খুলে ফেললে লাভ নেই সময়ের মধ্যে ডিফিউজ না হলে বম ব্লাস্ট হবেই। আর যদি সময়ের আগে ঘড়ি খুলে ফেলে তাহলে সাথে সাথে ব্লাস্ট হবে।
ওহিঃ এ এখন কি করবো আমরা। কোন রাস্তা তো হবে।
আভিঃ যা করার আমাকে করতে হবে। ( শান্ত গলায়)
একটা ভিডিও রেকর্ডার অন ছিল। আভি সেটা সুবহার হাতে দিয়ে বলে,,,
আভিঃ তোমরা এটা নিয়ে কোর্ট পৌছাও। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ফোর্স এসে একে ধরে নিয়ে যাবে। গিয়ে ভাইকে সেভ করো সুবহা।
সুবহাঃ আর তুমি?
আভিঃ আমি সেটাই করবো যা আমার করা উচিত। আমার এক জনের জন্য হাজারো মানুষের ক্ষতি করতে পারবো না আমি। এ বম এখানে ব্লাস্ট হলে অনেক ক্ষতি হবে। আমাকে দূরে কোথাও যেতে হবে।
ওহিঃ আ আভি পাগল হয়ে গিয়েছো তুমি? আমরা হেডকোয়ার্টার যাবো সেখানে অবশ্যই বম ডিভিউজ করতে পারবে তারা।
আভিঃ সময় নেই ওহি!
সুবহাঃ আমি তোমাকে এমনটা করতে দিতে পারবো না আভি। ত তুমি ঘড়ি আমাকে দাও,,,
আভিঃ নো সুবহা দূরে থাকো। ( সরে গিয়ে) আমার কিছু হলে কারো কিছু আসবে যাবে না কিন্তু তুমি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তুমি রওশনের জান সুবহা ও বাঁচবে না তোমাকে ছাড়া। আমি নিজের ভাইয়ের বাঁচার কারন কেড়ে নিতে পারবো না।
ওহিঃ আভি প্লিজ এমন করো না তুমি ওটা আমাকে দাও যা হবার আমার সাথে হবে।
আভিঃ সময় হয়ে যাচ্ছে সুবহা যাও,,,,
ওহিঃ আভিইইই,,, আই লাভ ইউ প্লিজ ক্ষমা করে দাও আমাকে ভুল হয়ে গেছে প্লিজজজ,,, আমি ভুল করেছি মানলাম কিন্তু তার এতো বড় শাস্তি দিও না।( আভিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল )
আভিঃ দূরে থাকতে বলেছি না,,,( ওহিকে সরিয়ে দিয়ে) । সুবহা তুমি যাওওও,,
সুবহাঃ আই কান্ট!
আভিঃ কিছু হবে না আমার ট্রাস্ট মি। তুমি ভাইকে রিলিজ করো আমি ফিরব প্রমিস প্লিজ গো।
আভি আর কিছু না বলে দৌড়ে জীপ নিয়ে বেরিয়ে যায়। সুবহা কোন উপায় না পেয়ে টাইসেলকে নিয়ে কোর্টে চলে যায়। যাই হোক রওশনকে সব জানাতে হবে ওর।
ওহি এখনো ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। একটা ভুলের এতো বড় মাসুল কেন নেওয়া হচ্ছে ওর থেকে ভেবে পাচ্ছে না ও।
? In Court ?
জজ রায় ঘোষণা করছেন এমন সময় সুবহা পৌঁছে যায় ওখানে। রওশন সহ সবাই অবাক হঠাৎ ওর আগমনে।
সুবহা লয়ারকে ভিডিও দিতেই সে ওটা জজকে দেখায়।
রওশনঃ আভি কোথায় সুবহা?
সুবহা মাথা নিচু করে আছে।
???
আভি নিজের জীপ ফুল স্পীডে চালিয়ে শহর থেকে দূরে চলে আসে। আর কয়েক মিনিট বাকি। কিছুদূরেই একটা বড় পাহাড় আর তার নিচেই জলাশয়।
আভি বেশ কিছুক্ষণ ভেবে জীপ পাহাড়ের দিকে ঘুরায়। ফুল স্পীডে জীপ সহ পাহাড় থেকে জলাশয়ে পরে যায় ও কিছু সেকেন্ডের মধ্যেই বিকট শব্দে জলাশয়ের পানি নড়ে উঠে।
To be continued……….??