You_Are_My_Destiny #Mr_Arrogant_3 ?,04,05

0
1503

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3 ?,04,05
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_4

রিশিকাঃ আব্বি আমার চোখের পট্টি তো খুলে দাও।( ধীরে ধীরে হেঁটে)

রওশনঃ‌ আরেকটু ধৈর্য্য প্রিন্সেস পৌঁছে গেছি আমরা।( রিশিকার হাত ধরে এগিয়ে)

রওশন আর সুবহা গাড়ি থেকে রিশিকার চোখে একটা কালো কাপড় বেঁধে দিয়েছে। গাড়ি থেকে হল পর্যন্ত ওকে চোখে পট্টি বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে ওরা সারপ্রাইজ এর জন্য।

হলের ভিতরে প্রবেশ করে রিশিকাকে একদম মিডলে দাঁড় করায় রওশন তারপর ওর চোখের কাপড় খুলে দেয়। রিশিকা চোখ খুলে সামনে তাকাতেই “হা” হয়ে যায়। সবাই একসাথে হ্যাপি বার্থডে বলতে শুরু করেছে রিশিকাকে।

ড্রিম নাইট রিজর্ডকে একদম ড্রিমের মতোই সাজানো হয়েছে। রিশিকার ফ্রেন্ডস, ওদের চেনা জানা এবং অনেক অজানা মানুষও আছে এখানে। হলের সবচেয়ে উঁচুতে রুফে রিশিকার নাম লেখা হয়েছে।

রিশিকাঃ ওয়াও! এটা আমার লাইফের বেস্ট বার্থডে! ( হাস্যজ্জল মুখ করে) কিন্তু যারা এসব কিছু করেছে তারা কোথায়? রিশ ভাই আর্থ ভাই…( আশেপাশে খুঁজে)

হঠাৎ বেলুন ফোটার অনেক শব্দ হয় রিশিকা সেই দিকে তাকাতেই দেখে আর্থ আর রিশান দু দিকে দাঁড়িয়ে আছে মাঝখানে একটা ট্যুল যেটায় বড় একটা সিনড্রেলার শেপের কেক আর সেটার সামনেই টাফি বসে আছে।

রিশান ব্লাক স্কিনি প্যান্ট হোয়াইট শার্ট আর ব্লাক ব্লেজার আর ব্লাক সুজ পরেছে। চুল গুলো ঝাঁকড়ার মতো খাড়া হয়ে আছে। আর্থ স্কাই কালার স্কিনি প্যান্ট হোয়াইট শার্ট স্কাই কালার জ্যাকেট আর হোয়াইট সুজ পরেছে। চুল‌ গুলো পাফ স্টাইল করা। টাফির গলায় রয়েল টাই পরানো একদম শাহি স্টাইলেই বসে আছে ও।

রিশানঃ সারপ্রাইজ কেমন হয়েছে?

রিশিকাঃ বেস্ট!( দৌড়ে রিশানকে জড়িয়ে ধরে) আমার লাইফের বেস্ট বার্থডে এটা থ্যাংক ইউ ভাইয়া।

আর্থঃ সব ভালোবাসা রিশ ভাইয়ের জন্য বাহ্! আমার কথা তো কারও মনেই নেই।( মুখ ফুলিয়ে)

রিশিকাঃ আমার এতো কিউট একটা ভাইটুকে কী আমি ভুলতে পারি হুম?( আর্থের সামনে গিয়ে) তাছাড়া তোমাকে ছাড়া থোরি না রিশ ভাই এতো কিছু একা করতে পারতো।

আর্থঃ অবভিয়াসলি!( ভাব নিয়ে) আমাকে ছাড়া কারও কাজ চলে না আফটার অল আমি দ্যা গ্ৰেইট আর্থ রায়জাদা।( জ্যাকেটের কলার ঝাঁকিয়ে)

রিশান রিশিকাকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলো। রিশিকা স্কাই ব্লু কালার লং গাউন পরেছে। ড্রেসটা দেখে রিশান আর্থকে উদ্দেশ্য করে বলল…

রিশানঃ আর্থ এটা তো সে ড্রেস না যেটা আমরা এনেছিলাম।

আর্থঃ হুম তাই তো! রিশু তুই আমাদের গিফট করা ড্রেসটা পরিস নি কেন? তুই জানিস আমরা ড্রেসটা তোর জন্য স্পেশালি অর্ডার করেছিলাম।

রিশিকাঃ আমি তো গিফটের প্যাকেট থেকে যেটা পেয়েছি সেটাই পরেছি।( মুখ গোমড়া করে)

আর্থঃ কিন্তু আমরা এটা তোর জন্য আনি নি তাহলে এটা গিফটের সাথে আসলো কিভাবে?( অবাক হয়ে) হয়তো উনারা ভুল করে দিয়ে দিয়েছে।

রিশানঃ ভুল করে দিয়ে দিয়েছে নাকি কেউ পার্পোজলি করেছে।( সন্দেহের ভঙ্গিতে)

রিশিকাঃ আমাকে কী এটায় ভালো দেখাচ্ছে না ভাইয়া?

আর্থঃ আরেহ কে বলল ভালো দেখাচ্ছে না? আমি গ্যারেন্টি দিয়ে বলতে পারবো এই পুরো পার্টিতে আমার বোনের থেকে সুন্দর আর কাউকে দেখাচ্ছে না।

রিশিকাঃ রিয়েলি?( খুশি হয়ে)

রিশানঃ হুম। আর প্রিন্সেসরা যা-ই পরুক না কেন তাদের প্রিন্সেস-ই লাগে।

আর্থঃ যেমন আমাদের রিশু বেবি।

ওদের কথার মাঝেই রওশন ওদের ডাক পাঠালো।

রওশনঃ রিশান আর্থ রিশু এইদিকে আসো…( ডেকে )

রওশন ওর কিছু বিজনেস পার্টনারদের সাথে কথা বলছে সাথে আদিল-ও আছে।

রওশন ওদের তিন জনকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।

আর্থঃ বড় আব্বু আমি একটা কল অ্যাটেন্ট করে আসছি।

রওশনঃ ওকে।

রিশিকাঃ বাবাই আমি আমার ফ্রেন্ডদের কাছে যাচ্ছি বাই।( চলে গেল )

ওরা দু’জন চলে যেতেই আদিল রিশানকে বলতে শুরু করে।

আদিলঃ রিশান!

রিশানঃ জি আঙ্কেল।

আদিলঃ তুমি একটু আমার সাথে চলো কিছু কথা আছে।

রিশানঃ জি।

আদিল আর রিশান পাশাপাশি হাঁটছে। কিছুটা দূরে যেতেই আদিল বলতে শুরু করে।

আদিলঃ সকালে বলেছিলাম না তোমায় যে একটা ইম্পর্টেন্ট আর স্পেশাল কিছু আছে তোমার জন্য।

রিশানঃ হ্যাঁ কিন্তু কী সেটা বলেন নি।

আদিলঃ তুমি তো জানো আমি বিজনেস এর সব দায়িত্ব তোমার উপর দিয়ে দিয়েছি‌। আর আমি জানি তুমি তোমার দায়িত্ব অনেক ভালো করেই পালন করছো। কিন্তু আজকে তোমাকে আমি আরেকটা দায়িত্ব দিতে চাচ্ছি।

রিশানঃ আমি বুঝতে পারছি না আপনি কী বলতে চাচ্ছেন।

আদিলঃ তুমিতো জানোই যে আমার ছোট ভাই আর ওর ওয়াইফ কয়েক বছর আগে একটা দূর্ঘটনার স্বীকার হয়। ওদের বাঁচাতে পারি নি আমি। ওর অ্যাক্সিডেন্টের পর ওর মেয়ের দায়িত্ব আমি পালন করি। ওকে লন্ডনে পাঠিয়ে দেই কিছু কারনে। কিন্তু এখন ওর জেদ যে ও আমাদের বিজনেস জয়েন করবে। আর রিশান আমি আমার ভাতিজিকে অনেক ভালোবাসি তাই না বলতে সাহস হয়নি আমার।

রিশানঃ এটা তো অনেক ভালো কথা আঙ্কেল। ও যদি জয়েন করে তাহলে আই’ম সিউর এটা আমাদের বিজনেস এর জন্য ভালোই হবে‌। তাছাড়া ওর-ও ততোটাই অধিকার আছে এটায় যতটা আমার।

আদিলঃ হ্যাঁ কিন্তু! রিশান ওর সাথে কোঅপারেট করা এতোটা সহজ না। তুমি ওর সাথে একবার দেখা করলেই বুঝতে পারবে বিষয়টা।

রিশানঃ ডোন্ট ওয়ারি আঙ্কেল আমি ম্যানেজ করে নিব।

আদিলঃ থ্যাংক ইউ রিশান। আমি এতক্ষন এই ভয়েই ছিলাম যে তুমি কী বলবে। কিন্তু এখন যখন তুমি রাজি হয়েই গিয়েছো আই ফিল পীস। আমার বিশ্বাস তুমি ওকে অনেক ভালো করে সামলাবে।

রিশানঃ কিন্তু আঙ্কেল আপনি যার কথা বলছেন তার নাম-ই তো এখনো বললেন না।

আদিলঃ শায়েরা!

নামটা শুনেই বড়সর শক্ড খায় রিশান। এটা ও এক্সপেক্ট করেনি।

রিশানঃ শায়েরা?( অবাক হয়ে) তবে কী ওই সকালের মেয়েটা…( মনে মনে)

আদিলঃ ওরা দুজন তো এখানেই ছিল হঠাৎ কোথায় হাওয়া হয়ে গেল?( আশেপাশে খুঁজে)

রিশানঃ দুজন?

আদিলঃ শায়েরা আর হায়াতি। একবার দেখা করেছিলে তুমি ওর সাথে।

রিশানঃ আভ হ্যাঁ।

?

আর্থ বাইরে বেরিয়ে কথা বলছিল কেসের বিষয়ে কারও সাথে। কথা বলা শেষ হতেই আর্থ হলে ফেরার জন্য পা বাড়ায় তখনই ও খেয়াল করে একটা মেয়ে চুরি চুরি লুকিয়ে রিজর্ডের ভিতরে প্রবেশ করছে। মেয়েটাকে দেখে আর্থের মনে খটকা লাগে।

আর্থঃ মেয়েটা এমন লুকিয়ে আসছে কেন? হাহ চোর টোর নয় তো আবার?( অবাক হয়ে) স্টপ দেয়ার….

মেয়েটা ভিতরে প্রবেশ করার আগেই আর্থ ওকে পেছন থেকে ডাক দেয় আর মেয়েটি থেমে যায়।

আর্থঃ কে আপনি আর এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে যাচ্ছেন কেন?

আর্থের কন্ঠ শুনতেই মেয়েটির হার্ট স্ট্রোক করার অবস্থা কারন এটা হায়াতি।

হায়াতিঃ ওহ নো এটা তো সকালের পুলিশওয়ালা। যদি আমাকে চিনে ফেলে তাহলে?( মনে মনে ভীত হয়ে)

মেয়েটিকে চুপ থাকতে দেখে আর্থ আবারো বলতে শুরু করে – কিছু জিজ্ঞেস করছি আপনাকে আন্সার মি!

হায়াতিঃ আল্লাহ প্লিজ সেভ মি।

হায়াতি দৌড় দিতে নিলেই আর্থ ওর হাত ধরে ফেলে আর হাতে টান লাগার ফলে হায়াতি ব্যালেন্স করতে পারে না আর সোজা আর্থে বুকে গিয়ে পড়ে।

হঠাৎ এমন হওয়ায় আর্থ সহ হচকিয়ে যায়। ওর চোখ বড় বড় হয়ে গেছে কারন হায়াতির কপাল আর নাক আর্থের বুকের লেগে আছে যার ফলে হায়াতির নিঃশ্বাস ওর বুকে বারি খাচ্ছে।

আর্থ তাড়াতাড়ি হায়াতিকে সরিয়ে দেয় নিজের উপর থেকে।

হায়াতি মাথা নিচু করে আছে যার ফলে ওর চেহারা দেখতে পারছে না আর্থ।

আর্থঃ আপনি কী শুনতে পাননি আমি কী বলছি? হু আর ইউ আর এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে কেন যাচ্ছেন ভিতরে? চুরি টুরি করছিলেন নাতো?

হায়াতিঃ কী করি কী করি…( ভাবতে ভাবতে ) যদি আমার কন্ঠ শুনে আমাকে চিনে ফেলে?( মনে মনে)

আর্থ আবারও কিছু বলবে তার আগেই হায়াতি ওর মুখ তুলে তাকায় আর্থের দিকে সাথে সাথে আর্থ নির্বাক হয়ে যায়। হায়াতি ছলছল চোখ, আর একদম বাচ্চাদের মতো ঠোঁট চোখা করে করে আছে।

আর্থের রক্ত যেন মিনিটেই শীতল হয়ে যাচ্ছে। সাথে সাথে হায়াতির থেকে চোখ সরিয়ে গলা পরিষ্কার করে নেয় তারপর বলে।

আর্থঃ আপনি কী বোবা কথা বলতে পারেন না? কখন থেকে একটা কথাই জিজ্ঞেস করছি অথচ চুপ করে আছেন।

আর্থের কথা শুনে হায়াতি মাথা নাড়ল ধীর গতিতে।

আর্থ কিছুটা অবাক স্বরে বলে- আ আপনি সত্যি কথা বলতে পারেন না?

হায়াতি ছলছল চোখে আবারো মাথা নাড়িয়ে “হ্যাঁ” বলল। আর্থ এমনিতেই সফ্ট হার্টেট অল্পতেই ওর মন গলে যায়।

আর্থঃ আই’ম সো স্যরি আমি জানতাম না।( গিল্টি ফিল করে) আমি হার্ট করতে চাই নি আপনাকে।( সফ্ট ভয়েজে )

হায়াতি নিজের ফোনের নোটে কিছু টাইপ করে আর্থের হাতে দেয়। আর্থ হায়াতির থেকে চোখ সরিয়ে ফোনে তাকায়।

“ আমি আমার আব্বুকে না বলে বেরিয়ে এসেছিলাম তাই যেন উনি না দেখেন এজন্যই লুকিয়ে লুকিয়ে আবার প্রবেশ করছিলাম। আমি চোর না সত্যি…!”

আর্থ লিখাটা পড়ে অপরাধবোধ অনুভব করছে। নিজের অজান্তেই কাউকে হার্ট করে ফেলেছে ও।

আর্থঃ আই’ম রিয়েলি স্যরি।

হায়াতি চোখ দিয়ে ইশারা করে “ ইট্স ওকে” বলে।

আর্থঃ এতো সহজে ক্ষমা করে দিলেন? ( অবাক হয়ে) আমি হলে করতাম না হলে।

হায়াতি আর্থের হাত থেকে ফোন নিয়ে নেয় তারপর হাত দিয়ে “বাই” বলে ভিতরে চলে যায়।

আর্থঃ স্ট্রেঞ্জ! কিন্তু আমার মেয়েটাকে ওভাবে চোর বলা ঠিক হয়নি!

হায়াতিঃ বেঁচে গেছি আর জীবনেও এর সামনে পড়বো না…( যেতে যেতে ভাবছে )

?

আদিলঃ কোথায় হাওয়া হয়ে গেল দু’টো?( আশেপাশে খুঁজে) রিশান আমি গিয়ে দেখে আসি ওরা কোথায়।

রিশানঃ জি।

রিশান আশেপাশে তাকিয়ে ডেকোরেশেন চেক করছে হঠাৎ ও খেয়াল করে একটা মেয়ে ট্যুলের উপর দাঁড়িয়ে টানানো বোর্ডটা সোজা করার চেষ্টা করছে কারন ওটা একটু বাঁকা হয়ে আছে। কিন্তু বোর্ডটা ভারি হওয়ায় মেয়েটা সেটা মেইনটেইন করতে পারছে তার ফলে ওর ব্যালেন্স ট্যুল থেকে সরে যাচ্ছে। বোর্ড সহ মেয়েটা পরে যেতে নিলেই রিশান এক প্রকার দৌড়ে এক হাত দিয়ে বোর্ডটা আটকিয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে মেয়েটাকে পরে যাওয়া থেকে বাঁচায়। মেয়েটা দু হাত দিয়ে রিশানের গলা জড়িয়ে ধরে নিজেকে সেফ করার জন্য আর রিশান ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে আছে।

রিশানঃ তুমি?( মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে)

শায়েরাঃ আপনি?( অবাক হয়ে)

রিশানঃ তুমি কী যেখানেই যাও সেখানেই গন্ডগোল বাঁধাও?

শায়েরাঃ আরেহ আমি আবার কী করলাম আমি তো জাস্ট এটা ঠিক করছিলাম।

রিশানঃ এটা কী তোমার কাজ যে তুমি ঠিক করছিলে? নিজের কাজে কাজ রাখতে পারো না।

শায়েরা এখনো রিশানের গলা জড়িয়ে আছে। এই অবস্থাতেই দুটো তর্ক করছে। আর্থ এখানে আসতেই ওদের এ অবস্থায় দেখে টাস্কি খায়।

আর্থঃ এটাতো সকালের মেয়েটাই ও ভাইয়ের সাথে কেন?

আর্থ খেয়াল করে যে রিশান এক হাতে বোর্ড আটকিয়ে রেখেছে যেন ওটা না পড়ে। বিষয়টা ক্লিয়ার হয় আর্থের কাছে।

আর্থঃ তো এই ব্যপার। রিশ ভাই নিজের সুপার হিরো ওয়ালা ইমেজ ক্রিয়েট করছেন। কিন্তু যাই হোক সিনটা অনেক রোমান্টিক এটাকে ক্যামেরায় বন্দী না করলে ক্যামেরা আবিষ্কার বৃথা যাবে।

যেই ভাবা সেই কাজ আর্থ নিজের ফোন বের করে রিশান আর শায়েরার অনেক গুলো ছবি তুলে ফেলল।

আর্থঃ এখন গিয়ে হেল্প করি নাহলে দুটোই বোর্ডের নিচে পরে আহত নিহত বিক্ষপ্ত হয়ে যাবে।( ফোন পকেটে রাখতে রাখতে)

রিশানঃ তোমার নাম শায়েরা না সুনামি রাখা উচিত ছিল। যেখানেই যাও সেখানেই প্রলয় করো।( দাঁতে দাঁত চেপে)

শায়েরাঃ এক্সকিউজ মি! আপনার মনে হচ্ছে না যে আপনি একটু বেশিই বলে ফেলছেন?( চোখ ছোট ছোট করে)

রিশানঃ জি না আমার মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে আপনার জন্য আমিও এই বোর্ডের নিচে চাপা পরতে চলেছি।

শায়েরার এতক্ষণে খেয়াল হয় বোর্ডের বিষয়ে। মিনিটেই সব সাহস উধাও হয়ে যায় ওর। বোর্ডটা আরেকটু নিচে ফসকাতেই শায়েরা ভয় পেয়ে রিশানের বুকে মুখ গুঁজে দেয়। রিশান বেকুব বনে যায় শায়েরার কাজে। ওর নিজেরই হাত কাঁপতে শুরু করেছে এখন।

বোর্ডটা আরো ফসকে যেতে নিলেই আর্থ ধরে ফেলে ওটা।

আর্থঃ ব্রো সাইড হ।

রিশান শায়েরাকে নিয়ে সরে যায় আর আর্থ বোর্ডটা উপরে ঠিক মতো ফিট করে দেয়।

রিশানঃ বোর্ড সরে গেছে ইউ ক্যান লিভ মি নাও!( শায়েরাকে বলল )

রিশানের কথা শুনে শায়েরা মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে আর্থ বোর্ড ঠিক করছে। রিশানের দিকে খেয়াল করতেই ও নিজেকে রিশানের অনেক কাছে পায় সাথে সাথে রিশানের থেকে দূরে সরে দাঁড়ায় ও।

শায়েরাঃ স্যরি!( মাথা নিচু করে)

আর্থঃ ঠিক আছো তোমরা?

শায়েরা মাথা নাড়িয়ে “হ্যাঁ” বলল,,, রিশান আড়চোখে শায়েরার দিকে তাকিয়ে আর্থকে উদ্দেশ্য করে বলল…

রিশানঃ আমার কাজ আছে আমি যাচ্ছি তুই-ও আয়।

রিশান চলে যেতেই শায়েরি ওর ওকে দেখে মুখ বাঁকিয়ে বললো…

শায়েরাঃ অ্যারোগেন্ট লোক।

আর্থঃ সকালে সফ্ট হার্টেট বলছিলে না?

শায়েরাঃ ভুল মানুষের-ই হয় এলিয়েনের না। আর আমি এলিয়েন না মানুষ।

আদিলঃ শায়েরা তুমি কোথায় ছিলে? আমি কখন থেকে খুঁজছি তোমায়?

শায়েরাঃ আমি তো এখানেই ছিলাম আঙ্কেল।

আর্থঃ হ্যালো আঙ্কেল‌।

আদিলঃ আরেহ আর্থ কেমন আছো?

আর্থঃ ভালো‌। এটা আপনার মেয়ে যার কথা বলেছিলেন?

আদিনঃ না ও আমার ভাতিজি শায়েরা আমার মেয়ে ওইযে ওখানে…( ইশারায় দেখিয়ে)

আর্থ আদিলের ইশারা অনুযায়ী তাকাতেই হায়াতিকে দেখতে পায়।

আর্থঃ ওই মেয়েটা?

আদিলঃ হুম। হায়াতি ওর নাম!

আদিলের কথায় শক্ড হয় আর্থ। একবার হায়াতির দিকে তাকাচ্ছে তো একবার আদিলের দিকে।

আর্থঃ তাহলে কী সকালের মেয়েটা এটাই?( অবাক হয়ে) একটু আগে মিথ্যা বলল আমায় যে ও কথা বলতে পারে না?( রেগে )

হায়াতি এই দিকে ফিরতেই আদিলের পাশে আর্থকে দেখে চমকে যায়। ওর গলা শুকিয়ে যায় আর্থের রাগ মিশ্রিত চেহারা দেখে। হায়াতি দু হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে দৌড় দেয় অন্য দিকে।

আর্থঃ যতই মুখ ঢাকো নিজেকে আর আড়াল করতে পারবে না মিস হাতি। তুমি একবার না দুই দুই বার আমাকে বোকা বানিয়েছো এতো সহজে ছাড়ছি না তোমায়।( মনে মনে ডেভিল স্মাইল দিয়ে)

To be continued……

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3 ?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_5

শায়েরা আর হায়াতি আদিলের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। সামনেই আর্থ পকেটে দু হাত গুঁজে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হায়াতির দিকে। হায়াতি কাঁপা কাঁপা দৃষ্টিতে আর্থের দিকে তাকায় আবার চোখ নামিয়ে নেয় ভয়ে। শায়েরার পিছনে দাঁড়িয়ে নিজেকে আর্থের দৃষ্টির আড়াল করার ব্যর্থ চেষ্টা করছে হায়াতি।

রিশিকা ওর ফ্রেন্ডদের সাথে গল্প করছে আর রিশান কেট্রিঙে কথা বলতে গিয়েছে।

সবাই-ই নিজেদের মাঝে ব্যস্ত তখনই অনেক গুলো মিউজিক ব্যান্ডের লোক স্টেজে উঠে নিজেদের সেটআপ লাগাতে শুরু করে।

রিশিকা সহ সবাই-ই এক্সাইটেড হয়ে দেখছে তাদের। আর্থ কিছুটা অবাক হয় কারন ওরা মিউজিক অ্যারেঞ্জ করেনি।

আর্থঃ এদের তো আমি আসতে বলি নি তাহলে কি রিশ ভাই বলেছে?

হায়াতিঃ সো কুল! এখন এখানে কনসার্ট ও হবে? কিন্তু কার?

আর্থ হায়তির দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকাতেই হায়াতি আবারও শায়েরার পেছনে লুকায়।

শায়েরাঃ উফ্ হায়াতি কী শুরু করে দিয়েছিস? (বিরক্ত হয়ে) এভাবে লুকোচুরি খেলছিস কেন?( ধমক দিয়ে)

হায়াতিঃ আপি অ্যানাকন্ডা!( কাঁদো কাঁদো ভাবে)

শায়েরাঃ অ্যানাকন্ডা?( অবাক হয়ে) কীসব হাবিজাবি বলছিস সোজা হয়ে দাঁড়া।( হায়াতির হাত ধরে বরাবর টেনে )

রিশান কথা বলা শেষ করে আসতেই দেখে স্টেজে সেটআপ লাগানো হচ্ছে।

রিশানঃ তুই কনসার্ট প্লান করেছিস আর্থ?

— আমি? – আর্থ কনফিউজড হয়ে তাকায় রিশান এর দিকে।

রিশানঃ ভালো‌ করেছিস রিশুর অনেক পছন্দ হয়েছে‌।

আর্থঃ রিশ ভাই-ও করেনি আমিও করিনি তাহলে কনসার্ট এর আয়োজন করলো কে?( মনে মনে) বলবো রিশ ভাইকে যে এটা আমি অর্গিনাইজ করি নি?( কনফিউজড হয়ে)

রিশানঃ কী ভাবছিস?

আর্থঃ আসলে রিশ ভ…

আর্থ কিছু বলার আগেই লাইট অফ হয়ে যায় হলের আর স্টেজে বল লাইট জ্বলে উঠে। চারো দিকে ব্লুয়ার ইফেক্ট ছড়াচ্ছে আর ডিম ডিম ফ্লাশ লাইট অফ অন হচ্ছে।

আগ্ৰহ নিয়ে সবাই তাকিয়ে আছে স্টেজের দিকে। মিউজিশিয়ান গুলো সবাই নিজেদের পজিশনে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ গিটারের রিধমে সবাই সেদিকে তাকায়‌। মানুষটির উপর স্পটলাইট পরতেই সবাই অবাক হয়ে যায়।

হোয়াইট শার্ট ব্লাক কালার ফুল স্যুট ব্লাক টাই মুখে মাউথ স্পীকার আর গিটার হাতে এগিয়ে আসছে রিক্ত।

রিশিকার মুখ হা হয়ে গেছে রিক্তকে দেখে। রিক্ত বাঁকা হেসে ‌রিশিকার চোখে চোখ রেখে গাইতে গাইতে ওর দিকে এগিয়ে আসছে।

মেরে রাং মে রাংনেভালি
পারি হো ইয়া হো পারিও কি রানি
ইয়া হো মেরি প্রেম কাহানী
মেরে সাভালো কা জাভাব দো
দো না…

রিক্ত রিশিকার সামনে এসে ওর ডান হাত নিজের হাতের মুঠোয় নেয়। আড়চোখে রিশানকে একবার দেখে নেয় ও। রিশানের মুখ লাল হয়ে গেছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে প্রচুর পরিমাণে রেগে আছে ও‌। রিক্ত রিশানের থেকে চোখ সরিয়ে রিশিকার হাতের উল্টো পিঠে চুমু এঁকে দিয়ে পেছনে ঘুরে যায়। রিশান রেগে রিক্তর দিকে এগোতে নেয় কিন্তু আর্থ ওকে আটকিয়ে দেয় কারন চারো পাশে মেহমান।

বোলো না কিউ ইয়ে চান্দ সিতারে
তাকতে হেয় ইউ মুখরে কো তুমহারে…x2
ছুকে বাদান কো হাভা কিউ মেহকি
রাত ভি হেয় বেহকি বেহকি

মেরে সাভালো কা জাভাব দো
দো না….. ( রিক্ত রিশিকার চারপাশে ঘুরে লিরিক্স গুলো গেয়ে আবারও স্টেজে উঠে পরলো )

কিউ হো তুম শারমায়ি হুয়ি সি
লাগতি হো কুছ ঘাবড়ায়ি হুয়ি সি….x2
ঢাকা হুয়া সা আচাল কিউ হ্যায়
ইয়ে মেরে দিল মেয় হালচাল কিউ হ্যায়
মেরে সাভালো কা জাভাব দো
দো না….

মেরে রাং মে রাংনেভালি
পারি হো ইয়া হো পারিও কি রানি
ইয়া হো মেরি প্রেম কাহানী
মেরে সাভালো কা জাভাব দো
দো না…

গান শেষ হতেই খুব জোরে জোরে সবাই তালি দিতে শুরু করে। রিক্ত বুকে হাত রেখে ঝুঁকে সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে রিশিকার দিকে তাকিয়ে চোখ মারে। রিশিকা চোখ বড় বড় করে নিজের আশেপাশে দেখে কেউ দেখলো কি না।

রিক্ত স্টেজ থেকে নেমে রিশিকার সামনে এগোতেই রিশান এসে ওর সামনে দাঁড়িয়ে ওর পথ আটকায়।

রিশানঃ What the hell r u doing here?( দাঁতে দাঁত চেপে)

রিক্তঃ কী করছি মানে কী? বার্থডে সিলেব্রেট করতে এসেছি।( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

রিশানঃ বেসরম দেখেছি কিন্তু তোমার মতো দেখিনি। বিনা ইনভাইটে কারো প্রাইভেট সেরিমনিতে আসা ভদ্র ঘরের ছেলেদের মানায় না।

রিক্তঃ কে বলেছে আমি বিনা ইনভাইটে এসেছি? এই যে ইনভিটেশন…( ফোন বের করে মেইল দেখালো রিক্ত ) রওশন আঙ্কেল মি. মেহরাবকে ইনভাইট করেছেন আর ওনার ছেলে হিসেবে আমাকেও তো আসতেই হতো তাই না….( পিঞ্চ মেরে)

রিশান নাক ফুলিয়ে রিক্তর কথা শুনছে। রিক্ত চলে যেতে নিয়ে আবারো ঘুরে বলে…

রিক্তঃ আর হ্যাঁ আরেকটা কথা ডিয়ার ব্রাদার ইন-ল্য; একটু বেসরম না হলে তোমার মতো হিটলারের বোনকে পটাবো কী করে?

রিশানঃ ইউউ… ( রেগে )

রিক্তঃ ব্রো অ্যাট লিস্ট আজকের দিনে নিজের এই গোমড়া অ্যাটিটিউট টা কন্ট্রোলে রাখ।

রিশান কটমট দৃষ্টিতে রিক্তর দিকে তাকিয়ে চলে গেল ওখান থেকে।

রিক্তঃ গড!( হাফ ছেড়ে ) আমার পিছন পরা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই ওর? আর যাই হোক মাই ডিয়ার ব্রাদার ইন-ল্য তুমি আমাকে আমার লাভ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে না দ্যাট্স মাই প্রমিস টু ইউ….( বাঁকা হেসে)

রিশান গিয়ে রিশিকার পাশে দাঁড়ায় কিন্তু ওর চোখ রিক্তর উপরেই।

ওয়েটার কেক নিয়ে আসতেই সবাই জড়ো হয়ে হ্যাপি বার্থডে বলতে শুরু করে। আর্থ নিজের ফোনের ক্যামেরায় শ্যুট করছে যদিও ফটোগ্রাফার আছে ভিডিও করার জন্য। কেক কাটা শেষ হতেই রিশিকা একে একে সবাইকে কেক খাইয়ে দেয়।

রিশিকা আশেপাশে চোখ বুলিয়েও রিক্তকে দেখতে পেলো না ওখানে। সবার আড়ালে রিশিকা একটা কেকের পিস নিয়ে সরে আসে‌।

ছাদের এক কোনে পকেটে দু হাত গুঁজে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে রিক্ত। পেছনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মুচকি হাসে ও।

রিক্তঃ আমি জানতাম তুমি অবশ্যই আসবে।( ঘুরে দাঁড়িয়ে )

রিশিকাঃ আপনি কিভাবে বুঝলে যে এটা আমি?
অন্য কেউ-ও তো হতে পারতো।

রিক্তঃ তোমার ফুটস্টেপ দূর থেকেও বুঝে উঠতে পারি আমি। ( রিশিকার সামনে এগিয়ে)

রিক্ত এক কদম এগোতেই রিশিকা দু কদম পিছিয়ে যায় সাথে সাথে রিক্ত ওর হাত ধরে টেনে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। রিশিকা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রিক্তর দিকে।

রিশিকা কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিক্ত ওর ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়।

রিক্তঃ হুঁশ! এটা আমার জন্য?( হাতের কেকের দিকে ইশারা করে)

রিশিকাঃ হুম।

রিক্তঃ তাহলে অপেক্ষা কার করছো খাইয়ে দাও।( হা করে)

রিশিকাঃ এভাবে জড়িয়ে ধরে রাখলে খাইয়ে দিব কিভাবে?

রিক্তঃ আমি থোরি না তোমার হাত ধরে আছি… তাড়াতাড়ি করো নাহলে তোমার হিটলার ভাই চলে আসবে আর এই রোমান্টিক ওয়েদারকে যুদ্ধের ময়দানে পরিনত করবে।

রিশিকা হালকা হাসলো রিক্তর কথায় তারপর কেক এগিয়ে দিল রিক্তর মুখের সামনে।

রিক্ত রিশিকার হাত থেকে কেক নিয়ে ওকে খাইয়ে দেয় আর বাকি টুকু নিজের মুখে পুরে নেয়।

রিশিকাঃ আচ্ছা রিক্ত একটা প্রশ্ন করি?

রিক্তঃ হাজারটা করো মাই লাভ।

রিশিকাঃ এই ড্রেসটা আপনি এক্সচেঞ্জ করেছেন তাই না?( চোখ ছোট ছোট করে)

রিক্তঃ অফকোর্স আমি ছাড়া আর কে হবে?( চোখ মেরে)

রিশিকাঃ রিক্ত আপনি এটা একদম ঠিক করেন নি। রিশ ভাই যদি জানে তাহলে কত বড় প্রবলেম হবে বুঝতে পারছেন আপনি?

রিক্তঃ কি আর হবে তোমার রিশ ভাই হকিস্টিক নিয়ে আমাকে পিটাতে আসবে যেমনটা গতবার করেছিল।( হেসে )

রিশিকাঃ আপনার কাছে মজা মনে হচ্ছে সব কিছু?

রিক্তঃ এমদম না। তোমাকে নিয়ে সব কিছু আমি সিরিয়াসলি নেই।

রিশিকা কিছু বলবে তখনই কারো পায়ের শব্দ পেয়ে ঘাবড়ে যায়।

রিশিকাঃ ওহ নো রিশ‌ ভাই?( ঘাবড়ে ) রিক্ত আপনি লুকান প্লিজ।

রিক্তঃ আমি কেন লুকাতে যাব? আসছে আসুক। ( ঠাই দাঁড়িয়ে থেকে )

রিশিকাঃ নো নো প্লিজ প্লিজ রিক্ত আমি চাই না এবারও কোনো ঝামেলা হোক প্লিজ।

রিক্তঃ কিন্তু… রিশিকা রিক্তর হাত ধরে টেনে গেটের আড়ালে দাঁড় করিয়ে দিয়ে ঘুরতেই রিশানের সাথে ধাক্কা খায়।

রিশানঃ আস্তে রিশু এতো তাড়াহুড়ো করছিস কেন?

রিশিকাঃ না মানে ভাইয়া আমি নিচেই আসছিলাম।( চুল ঠিক করতে করতে)

রিশানঃ কিন্তু তুই একা এখানে কেন এসেছিলি?( আশেপাশে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে)

রিশিকাঃ আমি ডেকোরেশন দেখতে দেখতে উপরে চলে এসেছিলাম খেয়াল করি নি।

রিশানঃ ওহ! এই প্লেট কিসের?( হাতের প্লেটের দিকে তাকিয়ে)

রিক্তঃ জাসুস কোথাকার কত প্রশ্ন করে।( মনে মনে)

রিশিকাঃ উফ্ ভাইয়া তুমি এতো প্রশ্ন করছো কেন? সবাই অপেক্ষা করছে চলো।( রিশানের হাত ধরে টেনে )

রিশানঃ কিন্তু রিশু… রিশিকা রিশানকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওকে নিয়ে চলে যায়।

ওরা চলে যেতেই রিক্ত দরজার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে।

রিক্তঃ তুই সবসময় আমার লাভ লাইফে ভিলেনগিড়ি করতে হাজির হয়ে যাস আই প্রে যেন তোর লাভ লাইফে এর থেকেও বড় ভিলেন আসে।

রিক্ত নিজে নিজে বকবক করতে করতে নিচে নেমে আসে।‌

রিশান পুরো সময় রিশিকার পাশে থেকেছে যার ফলে রিক্ত রিশিকার কাছে যাওয়া তো দূরে থাক ওর সাথে কথা বলার ও সুযোগ পায়নি। হায়াতির তাড়াহুড়োয় আদিল শায়েরা আর হায়াতিকে নিয়ে আগেই চলে যায়।

কিছুক্ষণের মধ্যে সব মেহমানদের বিদায় দিয়ে রিশান সহ সবাই বাড়ির জন্য বেরিয়ে যায়।

বাসায়,,,

রিশিকা নিজের রুমে বসে সব গুলো গিফটের র‌্যাপ খুলে খুলে দেখছে। আর্থ টাফিকে খাবার দিয়ে নিজের রুমে চলে যায় আর রিশান নিজের রুমে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে পরে। নতুন প্রজেক্টের সব ফাইল কপি করে আলাদা করছে ও যেন শায়েরার সুবিধা হয় সে গুলো বুঝতে।

সকালে…..

? HayArth ?

আর্থ সকাল সকাল বাইক নিয়ে হায়াতিদের বাসার সামনে হাজির হয়ে যায়। গেইটের সামনে বাইক দাঁড় করিয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ও। এই টাইমেই হায়াতি বাসা থেকে বের হয় কলেজের জন্য তাই আর্থ সময়ের আগেই চলে এসেছে যেন হায়াতি লুকানোর সুযোগ না পায়।

ফোন স্ক্রল করতে করতে বাসা থেকে বের হতেই আর্থকে দেখে উল্টো পায়ে ভিতরে দৌড় দেয় ও।

আর্থঃ স্টপ দেয়ার! – আর্থের ধমক নামক ডাক শুনে থেমে যায় হায়াতি। অসহায় ফেস করে ঘুরে দাঁড়ায় আর্থের দিকে।

হায়াতিঃ সকাল সকাল এই অ্যানাকন্ডা আমার বাসার সামনে কী করছে?( মিনমিন করে)

আর্থঃ গুড মর্নিং মিস হাতি। ( ডেভিল স্মাইল দিয়ে )

হায়াতিঃ মর্নিং ( হাসার চেষ্টা করে ) গুড মর্নিং না ব্যাড মর্নিং। কেন যেন নেগেটিভ ফিলিং আসছে এই অ্যানাকন্ডা আবার আমাকে অ্যারেস্ট করতে আসে নি তো? এখন কী করবো আমি? ( মনে মনে )

আর্থঃ যত যাই করো মিস হাতি পালাতে আর পারবে না। কারন পালানোর কোনো স্কুপ আমি রাখি নি তোমার জন্য।( মনে মনে )

?RikShika ?

রিশিকা মুখ ফুলিয়ে গাড়িতে বসে আছে। ফুরফুরে মেজাজে কলেজে যাচ্ছিল ও কিন্তু নিশান ওর ফুরফুরে মেজাজের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। রিশিকার জন্য চারজন বডিগার্ড হায়ার করেছে ও যারা রিশিকাকে গার্ড দিবে যখন ও বাসার বাইরে যাবে।

রিশানকে বলেও কাজ হয়নি কারন রিশান একবার যা বলে সবার সেটা মানতেই হয় রিশিকার ক্ষেত্রেও তাই। তিন জন বডিগার্ড পেছনের গাড়ি দিয়ে আসছে আর একজন ড্রাইভারের সাথে বসেছে। এক কথায় বলতে গেলে রিশানের কাছে নজর বন্দি রিশিকা।

রিশিকাঃ এটা কেমন কথা? আমার কী স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই? দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে অথচ আমার মতো নিষ্পাপ মেয়েকে নজর বন্দি করে রাখা হচ্ছে। সব ওই রিক্তর দোষ হুহ।( রাগে ফুঁসছে আর বকছে রিশিকা )

কলেজের সামনে গাড়ি থামতেই রিশিকা নেমে যায় আর ওর পিছনে তো চারজন‌ আছেই।

রিশিকার অনেক বিরক্ত লাগছে কারন আসেপাশে সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মাথা নিচু করে বড় বড় ফুটস্টেপ ফেলে হাঁটছে ও কোনো রকমে ক্লাসে ঢুকে পরতে পারলেই যেন বাঁচে।

গাড়িতে বসে রিক্ত রিশিকাকে দেখছিল এতক্ষন। গার্ড গুলোর জন্য রিশিকার সামনে আসে নি ও কারন ও চায়না কোনো সীন ক্রিয়েট হোক কলেজে।

রিক্তঃ ওয়াও ব্রাদার ইন-ল্য আমার জন্য এতো ব্যবস্থা থ্যাংক ইউ সো মাচ্‌। ( বিরক্ত হয়ে ) কিন্তু তুমি হয়তো আমাকে ভালো করে চিনো নি। এদের সাথে ডিল করা আমার বা হাতের কাজ। জাস্ট ওয়েইট অ্যান্ড ওয়াচ।( বাঁকা হেসে)

To be continued……?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here