You_Are_My_Destiny #Mr_Arrogant_3?,08,09

0
1228

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3?,08,09
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_8

HayArth?

আনিতাঃ কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারছি না যে ও এখানে কার জন্য অপেক্ষা করছে? ওহ নো! ওর গার্লফ্রেন্ড নাতো?( অবাক হয়ে )

হায়াতিঃ গার্লফ্রেন্ড! পাগল তুই?( রেগে )

আনিতাঃ তুই এভাবে রিয়েক্ট করছিস কেন? মনে হচ্ছে যেন আমি তোকে বলেছি।

হায়াতিঃ আ আমাকে বলবি কেন?( হচকিয়ে) আমিতো এজন্য বললাম কারন কার মাথা নষ্ট হয়েছে যে ওর গার্লফ্রেন্ড হতে যাবে। হয়তো এমনিতেই দাঁড়িয়ে আছে।

আনিতাঃ যাই হোক আমি যাচ্ছি ওর সাথে কথা বলতে।

আনিতা যেতে নিলেই হায়াতি ওর হাত ধরে আঁটকে নেয়।

হায়াতিঃ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক কোনো প্রয়োজন নেই যাওয়ার।

আনিতাঃ কিন্তু কেন?

হায়াতিঃ কারন আমি বলছি তাই।

আনিতাঃ আমি তোর কথা শুনতে বাধ্য নই আমিতো যাবই।

হায়াতিঃ না তুই যাবি আর না আমি।

>> কোথায় যাবে না মিস হাতি?- পেছন থেকে।

হায়াতিঃ ওর খারুসের কাছে।

>> খারুসটা কে?

হায়াতিঃ আরেহ ওই আর্থথথথথ- পেছনে ঘুরতেই চুপ হয়ে গেল কারন সয়ং আর্থ দাঁড়িয়ে আছে।

আর্থঃ আমি খারুস? আমি তো জানতামই না যে মানুষ আমার বিষয়ে এমনও ভাবে।( শান্ত কন্ঠে )

আনিতাঃ আমি ভাবিনা, ও ভাবে।( তড়িঘড়ি করে)

আর্থ প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকায় আনিতার দিকে।

আনিতাঃ ওহ স্যরি আমি আগে নিজেকে পরিচিত করি। মাই সেল্ফ আনিতা অনার্স সেকেন্ড ইয়ার।

আর্থঃ নাইস টু মিট ইউ। আমার কিছু কথা আছে তোমার সাথে।( হায়াতিকে উদ্দেশ্য করে )

হায়াতিঃ কি কথা? তাড়াতাড়ি বলেন আমার দেড়ি হচ্ছে বাসায় যাব।

আর্থঃ এই নাও।( পাস এগিয়ে দিয়ে)

হায়াতিঃ হিলস্ ক্লাবের পাস?( অবাক হয়ে ) আমার জন্য?

আর্থঃ নিজেকে এতো ইম্পর্টেন্স দিও না মিস হাতি। এটা তোমার জন্য নয় শায়েরার জন্য। ওকে রাতে পার্টিতে আনা তোমার দায়িত্ব।

হায়াতিঃ শায়েরার জন্য?( কপাল কুঁচকে) ওর জন্য হলে ওকেই দাও আমাকে কেন দিচ্ছ।

আর্থঃ কারন আছে তোমাকে বলা যাবেনা। যা বলছি সেটা করো।

হায়াতিঃ পারবনা।( মুখের উপর না করে দিল )

আর্থঃ ওকে ফাইন তাহলে আমি…. আর্থ হাতকড়া বের করে হায়াতির সামনে ঘুরাতেই হায়াতির চোখ বড় বড় হয়ে যায়।

হায়াতিঃ পারব পারব একশ বার পারব ডোন্ট ওয়ারি।( মুখে মিথ্যা হাসি টেনে)

আর্থঃ গুড গার্ল। আচ্ছা আমি যাচ্ছি সি ইউ টুনাইট।

আর্থ ওর বাইকে উঠে চলে গেল‌। হায়াতি রাগে ক্ষোভে ফুঁসছে।

আনিতাঃ তুই মিথ্যা বললি কেন যে তুই ওকে চিনিস না?( রাগ দেখিয়ে)

হায়াতিঃ চুপ থাকবি তুই?

আনিতাঃ আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু শোন না আমাকেও নিয়ে যাস তোদের সাথে।

হায়াতি চোখ গরম করে তাকায় আনিতার দিকে আর ও চুপসে যায়।

আনিতাঃ ওকে ফাইন আমাকে নেয়া লাগবে না।

বাসায়,,,

রিশিকাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে রিক্ত চলে যায় বাসায়‌‌।

>> রিশু!- রিশিকা গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে নিজের রুমে যাচ্ছিল তখনই রিশানের ডাক শুনে থেমে যায়।

রিশিকাঃ ভাইয়া?( পেছনে ফিরে ) তুমি আজকে এতো তাড়াতাড়ি বাসায়?

রিশানঃ হুম কাজ নেই তাই চলে এলাম। তুমি বলো, সারাদিন কোথায় ছিলে?

রিশিকাঃ আ আমি? আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে ছিলাম।

রিশানঃ গার্ডদের ফাঁকি দিয়ে তুমি তোমার ফ্রেন্ডদের সাথে গিয়েছিলে?

রিশিকাঃ হ্যাঁ ভাইয়া। ভাইয়া সব জায়গায় গার্ডদের নিয়ে গেলে আমার অনেক অকওয়ার্ড লাগে। গার্ডরা আশেপাশে থাকলে আমার কলেজের অনেক গুলো স্টুডেন্ট আছে যারা নানা কমেন্ট করে ইভেন এটাও বলে যে আমার আম্মি আব্বি আমাকে ট্রাস্ট করে না তাই গার্ডদের পাঠায় আমার‌ সাথে।( ইমোশনাল ভাবে )

রিশানঃ কে বলে শুধু নাম টুকু বল আমায়।( রেগে )

রিশিকাঃ হ্যাঁ তোমাকে বলব আর তুমি গিয়ে ওদেরকে পিটাও। প্রয়োজন নেই। তুমি ব্যস আমার সাথে কোনো গার্ড দিও না প্লিজ। আমি নিজের খেয়াল নিজে রাখতে পারব।

রিশানঃ আর ইউ সিউর?

রিশিকাঃ হাড্রেট পার্সেন্ট।

রিশিকাঃ ওকেই কালকে থেকে তুমি একা যাবে। খুশি?

রিশিকাঃ আনেককক। থ্যাংক ইউ ভাইয়া। ইউ আর দ্যা বেস্ট ব্রাদার ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড আই লাভ ইউ।( রিশানকে জড়িয়ে ধরে )

রিশানঃ ইউ আর দ্যা বেস্ট সিস্টার ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড। ( রিশিকার মাথায় চুমু দিয়ে)

রিশিকাঃ আই’ম স্যরি ভাইয়া আমি মিথ্যা বলেছি‌ তোমায়।( মনে মনে )

রাত দশটা….

রিশান বারান্দায় বসে অফিসের কিছু কাজ করছে তখনই আর্থ আসে।

আর্থঃ ব্রোও!

রিশানঃ হুম বল।( কাজে মনোযোগ দিয়ে)

আর্থঃ ব্রো তোকে আমার সাথে যেতে হবে।

রিশানঃ কোথায়?

আর্থঃ হিলস্ ক্লাব। এই দেখ ভ্যালেনটাইন পাস। কিন্তু এটা কাপল পাস আর তুই তো জানিস আমি পিউর সিঙ্গেল। যদি একা যাই তাহলে একটা পাস ওয়েইস্ট হবে আর আমি অপচয় পছন্দ করি না ইউ নো।

রিশানঃ কাজ আছে আমার।‌ তাছাড়া আমি তোর গার্লফ্রেন্ড না যে তোর সাথে ভ্যালেনটাইন পার্টিতে যাব অন্য কাউকে নিয়ে যা।

আর্থঃ তুই আমার গার্লফ্রেন্ড কেন হবি তুইতো আমার গার্লফ্রেন্ডের থেকেও বেশি আমার এক মাত্র ভাই তাও বড়। এখন ভাব কম খা আর গিয়ে রেডি হ‌ তাড়াতাড়ি।

রিশানঃ আর্থ তুই…

আর্থঃ কোনো কথা শুনবো না আমি উঠ তুই।

আর্থ রিশানকে এক প্রকার টেনে তুলে রুমে নিয়ে যায়।

Hill’s Club…?

ক্লাবের নিড়িবিলি জায়গায় বসে আছে শায়েরা আর হায়াতি। হায়াতি সাদা রঙের অফ শোল্ডার গাউন পরেছে আর শায়েরা সাদা রঙের হাফ স্লিভ গাউন।

শায়েরাঃ সবাই নিজেদের বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে আসে ভ্যালেনটাইন পার্টিতে আর তুই আমাকে নিয়ে এসেছিস হাও ফানি!

হায়াতিঃ এখানে ফানির কি হলো আপি? ভালোবাসা দিবস শুধু বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড এর জন্য না সবার জন্যই হয়।

শায়েরাঃ আচ্ছা বুঝলাম কিন্তু তুই এই পাস পেলি কোথা থেকে।

হায়াতিঃ অবশ্যই রাস্তা থেকে তো আর কুড়িয়ে পাই নি আমার এক ফ্রেন্ড দিয়েছে।

শায়েরাঃ ওহ।

এইদিকে,,,

আর্থ নিজের বাইক থেকে আর‌ রিশান ওর গাড়ি
থেকে নেমে আসে। হোয়াইট আর পিঙ্ক কম্বিনেশনের স্যুট পরেছে রিশান আর হোয়াইট জ্যাকেট স্কিনি জিন্স পরেছে আর্থ। দেখতেই বুঝা যায় দু’জনের চয়েজ দূর দূরান্তেও মিলে না একে অপরের সাথে।

রিশানঃ আগেই বলে রাখছি বেশি সময় থাকব না আমি।

আর্থঃ তুই যে এসেছিস এটাই অনেক। চল ভিতরে যাই।

আর্থ আর রিশান ভিতরে চলে যায়। চারদিকে হৈচৈ সবাই নিজেদের মাঝে ব্যস্ত। আর্থ আর রিশান প্রবেশ করতেই আর্থের কলিগরা এগিয়ে আসে ওদের সাথে কথা বলতে।

RikShika?

রায়জাদা মেনশনের চারদিকে গার্ড। বাসার বাইরে কিছুটা দূরেই রিক্তর গাড়ি দাঁড় করা। অনেক কষ্টে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ করেছে ও। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে উপরে উঠবে কিভাবে। রিশিকার রুম উপরের ফ্লোরে আর মেইন ডোর দিয়েতো আর প্রবেশ করা সম্ভব না যদি কেউ দেখে ফেলে।

রিক্ত বাগানের দিকে গিয়ে উপরে উঠার পথ খুঁজছে। হঠাৎ ও একটা পাইপ দেখতে পায় যেটা রিশানের রুমের পাশ দিয়ে উঠেছে।

রিক্তঃ পথ তো পেলাম কিন্তু সেটা বাঘের গুহার। গডড! ( অসহায় ফেস করে ) ওয়েইট, রিশানতো আর্থের সাথে বাইরে গিয়েছে তার মানে তো ওর রুম ফাঁকা।‌ এক কাজ করি ওর রুম থেকে উঠে রিশিকার রুমে যাব‌। হুম।

রিক্ত দীর্ঘ শ্বাস ফেলে পাইপ বেয়ে উপরে উঠতে শুরু করে। কয়েক মিনিটেই বিনা বাধায় বারান্দায় উঠে যায় ও।

বারান্দা থেকে রুমে উঁকি দিয়ে দেখে রিক্ত কেউ আছে কিনা।

রিক্তঃ থ্যাংক গড কেউ নেই। থাকলেই কি আমি কি ভয় পাই নাকি?( ভাব নিয়ে)

রিক্ত নিজের হিরো অ্যাটিটিউট ভাব নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। আগে ঘুরে ঘুরে রুমটা দেখে ও। বেড সাইডের দেয়ালে বড় একটা ফ্রেমে ফ্যামিলি ফটো টানানো।

রিক্তঃ খুব শিঘ্রই এই ফ্যামিলি ফটোতে আমিও অ্যাড হবো। ( হেসে )

হঠাৎ একটা অদ্ভুত ফিল হয় রিক্তর। হাঁচি আসছে নাকও লাল হয়ে যাচ্ছে। দুই তিন বার হাঁচি দিয়েও ফেলেছে ও এই মুহূর্তে।

রিক্তঃ হঠাৎ হাচ্ছুহ এমন হাচ্ছু হাঁচি আসছে কেন?( রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে আছে তাও হাঁচি শেষ হচ্ছে না।)

সোফার দিকে চোখ যেতেই আঁতকে উঠে রিক্ত এক লাফে ছয় সাত কদম পিছিয়ে যায় ও।

রিক্তঃ টাফি!( অসহায় ভাবে)

রিক্তর অ্যালার্জি কুকুরে। কুকুর যেখানে থাকে রিক্ত সেখানে স্বপ্নেও থাকে না। ছোট থেকেই এই সমস্যা ওর। কুকুরের গায়ের লোম আশেপাশে থাকলে ওর হাঁচি শুরু হয়ে যায়। আর এখানে তো আস্ত টাফি শুয়ে আছে।

রিক্তঃ টাফি বেইবি এতো বড় বাড়িতে এই একটা রুমই কি ছিল ঘুমানোর হাচ্ছু জন্য?( আহত কন্ঠে )

রিশানের রুম থেকে অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায় রিশিকা তাই দেখার জন্য রুমে চলে আসে ও। রুমের দরজা খুলতেই রিক্তকে দেখে অবাক ও।

রিশিকাঃ রিক্ত আপনি?( অবাক হয়ে)

রিক্তঃ হ্য হাচ্ছু হ্যাঁ।

রিশিকা তাড়াতাড়ি রুমের দরজা বন্ধ করে রিক্তর কাছে যায়।

রিক্তঃ রিশু হা হাচ্ছু।

রিশিকাঃ আস্তে কেউ এসে পরবে‌। আর আপনি এখানে এই সময় কেন এসেছেন।

রিক্ত কথা বলতে পারছে না। রিশিকার চোখ যায় সোফায় শুয়ে থাকা টাফির দিকে। এতক্ষনে বিষয়টা ক্লিয়ার হয় ওর কাছে।

রিশিকা নিজের হাসি থামাতে না পেরে হেসেই দেয়।

রিশিকাঃ এতো বড় বড় গুন্ডারা যাকে হাতের নাগালেও পায় না এতো টুকু পাপ্পি তার অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে আল্লাহ!( হাসতে হাসতে )

To be continued……

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_9

?
রিক্ত রিশিকার বেডে বসে চুল মুচছে আর নাক টানছে। ফর্সা মুখ পুরো গোলাপী হয়ে গেছে ওর। রিশিকার রুমে এসে শাওয়ার নিয়ে আর্থের ট্রাউজার আর টিশার্ট পরে নিয়েছে রিক্ত।

রিশিকা কিছুটা দূরে কর্নারে দাঁড়িয়ে দেখছে রিক্তকে। রিক্তর লাল হয়ে যাওয়া নাকের দিকে চোখ পড়তেই হেসে দেয় ও।

রিশিকাঃ অসুস্থ অবস্থাতেও কাউকে এতো সুন্দর লাগতে পারে রিক্তকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। ( মনে মনে ব্লাশিং হয়ে ) এভাবে কেউ চুল মুছে? দিন আমার কাছে।

রিশিকা রিক্তর হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে ওর পিছনে গিয়ে চুল মুছে দিতে শুরু করে।

রিক্তঃ যদি আগে জানতাম অসুস্থ হওয়ার এতো সুবিধা তাহলে অনেক আগেই অসুস্থ হয়ে যেতাম।( হেসে )

রিশিকাঃ তাহলে গিয়ে টাফিকে আবার এ রুমে নিয়ে আসি?( মজা করে )

টাফির নাম শুনে যেন রিক্ত ৪৪০ ভোল্টের শক খেয়েছে এমন রিয়েকশন দেয়।

রিক্তঃ এহ না না টাফি কেন? ওকে আনতে হবে না রিশু, আমিতো মজা করছিলাম।

রিশিকাঃ হুঁ ( হেসে )

রিক্ত আর কোনো কথা না বলে চোখ বন্ধ করে মুহূর্তটাকে অনুভব করছে।

Hill’s Club?

রিশান আর আর্থ ওদের টেবিল সিটে বসে আছে। রিশান ফোন নিয়ে ব্যস্ত আর আর্থ আশেপাশে হায়াতি আর শায়েরাকে খুঁজতে ব্যস্ত।

আর্থঃ এই হাতি কি শায়েরাকে নিয়ে আসে নি এখনো? যদি না আসে আই সোয়্যার কালকে সত্যিই ওকে লকাবে ঢুকাবো আমি।( মনে মনে )

হঠাৎ কিছু দূরে চোখ যেতেই ওদের দেখতে পায় আর্থ।

আর্থঃ নাহ যতটা ইউজলেস ভেবেছিলাম ততটাও না।

রিশানঃ কিছু বললি?

আর্থঃ আভ হ্যাঁ, বলছি যে আমি গিয়ে ড্রিংক নিয়ে আসি তুই বস এখানে। আসছি।( তাড়াতাড়ি উঠে গিয়ে )

রিশানঃ ওর আবার কি হলো?

আর্থ সোজা শায়রা আর হায়াতির সামনে এসে দাঁড়ায়।

আর্থঃ হোয়াট আ কোইনসিডেন্স! তোমরা এখানে?( ওদের সামনে দাঁড়িয়ে )

শায়েরাঃ‌ হ্যাঁ।

হায়াতিঃ কোইনসিডেন্স?( আর্থের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে)

আর্থ হায়াতির দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে ওকে সাইড করে শায়েরার পাশে চলে যায়।

আর্থঃ যদি জানতাম যে তোমরাও আসবে তাহলে আমি নিজেই তোমাদের পিক করতাম।

হায়াতিঃ হুঁহ কত বড় ড্রামাবাজ।( মনে মনে )

শায়েরাঃ আসলে আমার আসার কোনো প্লান ছিল না হায়াতি জেদ করছিল তাই।

আর্থঃ হাতির‌ মাথায় ও তাহলে বুদ্ধি আছে দেখা যায়।

হায়াতিঃ আমার নাম হায়াতি, আরেকবার হাতি বললে তোমার খবর আছে বলে দিলাম। ( রেগে )

আর্থঃ কয়টার খবর?

হায়াতিঃ তুমিই…( আঙুল তুলে)

আর্থঃ রিশ‌ ভাই-ও এসেছে আজকে। অনেক কষ্টে মানিয়ে এনেছি। ( হায়াতির কথা কাটিয়ে )

শায়েরাঃ রিশানও এসেছে?

আর্থঃ হুম, ওইযে। ( দেখিয়ে দিয়ে )

শায়েরা সাইডে তাকাতেই দেখে রিশান একা বসে আছে।

শায়েরাঃ মিস্টার ক্রোকোডাইলও এসেছে, গুড।( মনে মনে )

আর্থঃ তোমরা যাও আমি ড্রিংক নিয়ে আসছি।

হায়াতি শায়েরার সাথে যেতে নিলেই আর্থ ওর হাত ধরে আটকিয়ে নেয়।

আর্থঃ তুমি কোথায় যাচ্ছ? ওদের একা থাকতে দাও তুমি আমার সাথে আসো।

হায়াতিঃ কিন্তু কেন?

আর্থঃ উফ্ তুমি এতো প্রশ্ন করছো কেন চলো তো।

আর্থ হায়াতির হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে যায়। শায়েরা টিপ টিপ পায়ে রিশানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।

সামনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে চোখ তুলে তাকায় রিশান। সামনেই‌ শায়েরাকে দেখে কিছুটা অবাক হয় ও।

রিশানঃ তুমি এখানে?( অবাক হয়ে )

শায়েরাঃ কেন আসতে পারি না?( রিশানের পাশে বসে )

রিশানঃ অবশ্যই আসতে পারো।

শায়েরাঃ বাই দ্যা ওয়ে, আপনি একা বসে আছেন কেন? না মানে কোনো গার্লফ্রেন্ড…

রিশানঃ আমার কারো প্রয়োজন নেই।( শায়েরাকে থামিয়ে )

শায়েরাঃ তার মানে রাস্তা ক্লিয়ার কোনো কাঁটা পাথর নেই।( বিরবির করে )

রিশানঃ কিছু বললে?

শায়েরাঃ নাতো কিছুনা।

এইদিকে,,,

হায়াতিঃ আরেহ হাত ছাড়েন আমার – ঝাড়ি দিয়ে আর্থের থেকে হাত ছাড়িয়ে।

আর্থঃ যেভাবে রিয়েক্ট করছো যেন আমি তোমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাচ্ছি, আজব!

হায়াতিঃ আর আপনি যেভাবে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন মনে হচ্ছে আমি কোনো আসামি। আজব টু! ( মুখ ঘুরিয়ে )

আর্থঃ অবভিয়াসলি তুমি আসামি। বাই দ্যা ওয়ে নিজের ক্রাইম কী ভুলে গেছ মিস হাতি? যদি ভুলে যাও তাহলে আমি মনে করিয়ে দিতে পারি।

হায়াতিঃ না না প্রয়োজন নেই। আপনি আমাকে কেন এখানে আসতে বলেছেন সেটা বলেন।

আর্থঃ ও হ্যালো মিস হাতি নিজেকে এতো ইম্পর্টেন্স দেওয়া দরকার নেই কারন আমি তোমাকে শায়েরার জন্য আসতে বলেছিলাম‌ ওকে। তুমি না আসলে অবশ্যই শায়েরাও আসতো না। আর রিশ ভাই আর শায়েরাকে ক্লোজ আনার আজকে অনেক সুন্দর একটা ওকেশন যা আমি মিস করতে চাই নি।

হায়াতিঃ আপনি কি পুলিশের চাকরি ছেড়ে ম্যাচ মেকারের চাকরি নিয়ে নিয়েছেন নাকি?

আর্থঃ আমি আমার ভাইয়ের জন্য ম্যাচ মেকার হতেও রাজি। তোমার মত না সেল্ফ অবজেস্ট।( বিরবির করে )

হায়াতিঃ কি বললেন আমায়?( রেগে )

আর্থঃ আর্থ এক কথা দুইবার রিপিট করে না।( ভাব নিয়ে )

হায়াতি কিছু বলার জন্য মুখ খোলার‌ আগেই আর্থ নিজের পকেট থেকে একটা ক্যান্ডি বের করে হায়াতির মুখে ভরে দেয়। আচমকা মুখে চকলেট দেওয়ায় চুপ করে যায় হায়াতি।

আর্থঃ ক্যান্ডি খাও আমার মগজ না।

হায়াতি কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। আর্থ‌ আরেকটা ক্যান্ডি নিজের মুখে দিয়ে টেবিল থেকে চারজনের জন্য জুস নিয়ে হাঁটা ধরে আর ওর পেছনে হায়াতি।

হায়াতিঃ ক্যান্ডিটা আসলেই অনেক টেস্টি, পাইনাপেল ফ্লেভার ( মনে মনে )। আপনি এতো বড় হয়ে গেছেন তাও এখনো ক্যান্ডি খান?( কিছুটা অবাক ভঙ্গিতে )

আর্থঃ ক্যান্ডি খাওয়ার জন্য বয়স লাগে নাকি? স্টুপিড প্রশ্ন- বিরবির করে।

আর্থ ওদের টেবিলের সামনে এসে দেখে শায়েরা আর রিশান দু’জনেই সাইলেন্ট হয়ে বসে আছে।

আর্থঃ জুস!

আর্থ শায়েরা আর রিশানকে জুস দিয়ে ওদের পাশে বসে পরল।

?
অন্ধকারের মধ্যে টিপ টিপ পায়ে নিচে নেমে কিচেনে যাচ্ছে রিশিকা। রিক্তর নাকি ক্ষিধে পেয়েছে তাই লুকিয়ে ফ্রিজ থেকে খাবার আনতে যাচ্ছে ও।

রিশিকাঃ কি দিন আসল আমার, নিজের বাড়িতেই‌ চোরের মত লুকিয়ে খাবার চুরি করতে হচ্ছে।( বিরবির করে )

বিরবির করতে করতে ধীর পায়ে গিয়ে ফ্রিজ খুলল রিশিকা। ফ্রিজ খুলতেই চমকে যায় ও। ফ্রিজে পিজ্জা রাখা। নিশ্চয়ই আর্থ এনে রেখেছে ওর জন্য।

রিশিকাঃ আর্থ ভাইয়া বেস্ট।

পিজ্জা বের করে ধীরে দরজা লাগিয়ে দিল ফ্রিজের। তারপর ধীর পায়ে আবারও নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায় ও।

রিশিকার রুমে ঘুরে ঘুরে দেখছে রিক্ত। রিশানের রুমের মতো এই রুমেও ওদের তিন ভাই বোনের বড় ছবির ফ্রেম। রিক্তর হিংসে হচ্ছে আজ রিশান আর আর্থের উপর।

রিক্তঃ‌ ছবিটা অনেক সুন্দর কিন্তু একটা জিনিস মিসিং আছে।

রিশিকাঃ কি জিনিস?( রুমে ঢুকতে ঢুকতে )

রিক্তঃ তোমার একমাত্র হবু বর রিক্ত মেহরাব। কিন্তু নো টেনশন আমাদের বিয়ের পর আমিও এই ফ্রেমে অ্যাড হয়ে যাব।

রিশিকাঃ হবু বর! কিন্তু আমি কবে বললাম যে আমি তোমায় বিয়ে করব?( না জানার ভান করে )

রিক্তঃ বলা লাগবে না আমি তোমার মনের কথা ফিল করতে পারি।( বুকে হাত রেখে )

হঠাৎ রিক্তর চোখ যায় রিশিকার হাতের পিজ্জা বক্সে।

রিক্তঃ ওয়াও পিজ্জা! থ্যাংক ইউ রিশু বেবি- রিশিকার হাত থেকে নিয়ে বেডে বসে পরল রিক্ত।

রিশিকাঃ তাড়াতাড়ি খেয়ে বিদায় হও।

রিক্তঃ বিদায় কেন হব আজকে তো আমি এখানে তোমার সাথে থাকার প্লান করেছি। ( খেতে খেতে)

রিশিকাঃ কিহ! তুমি….

রিক্ত রিশিকাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওর হাত ধরে বসিয়ে দেয় তারপর ওর মুখে পিজ্জা ভরে ওকে চুপ করিয়ে দেয়।

ক্লাবে….?

ক্লাবের এক কোনের টেবিলে বসে আছে ওরা। কিন্তু বাকি বেশির ভাগ মানুষই ফ্লোরে নিজেদের কাপলদের সাথে ডান্স করছে। আর্থ শায়েরা আর হায়াতি সবার নাচ উপভোগ করলেও রিশানের কাছে বিরক্তিকর লাগছে।

রিশান আশেপাশে তাকাতেই দেখে বার সাইডের একটা ছেলে ওদের টেবিলের দিকেই তাকিয়ে আছে। রিশান বুঝতে পারে যে ছেলেটা শায়েরার দিকে তাকিয়ে আছে।

রিশানঃ লেট হচ্ছে আর্থ বাসায় যেতে হবে।(দাঁড়িয়ে )

হঠাৎ রিশানের দাঁড়িয়ে যাওয়ায় আর্থ সহ সবাই চমকে যায়।

আর্থঃ এতো তাড়াতাড়ি? আর একটু থাকিনা ব্রো।

রিশানঃ কালকে অফিস আছে তাছাড়া আমি তোকে আগে থেকেই বলে রেখেছিলাম যে বেশি লেইট করব না।

আর্থঃ অফিস তো সবসময়ই থাকে তোর অ্যাট লিস্ট আজকে তো একটু ব্রেক নে। তাছাড়া শায়েরা প্রথমবারের মতো এখানে এসেছে ওকে একটু ইন্জয় তো করতে দে। কি বলো শায়েরা?

শায়েরাঃ আভ হ্যাঁ আরেকটু থাকি।

রিশানঃ তাহলে তুমি থাক আমার সমস্যা নেই, কিন্তু মনে থাকে যেন কালকের প্রেজেন্টেশনে যদি লেইট হও তখন….( চোখ রাঙিয়ে )

রিশানকে এই প্রথম এমন রাগি ভয়েজে কথা বলতে শুনছে শায়েরা তারউপর আবার ওর চোখ রাঙানো দেখে নিজেই ভয়ে হচকিয়ে যায় ও।

শায়েরাঃ না না বাসায় যাব।( দাঁড়িয়ে )

হায়াতিঃ আমারও ঘুম পাচ্ছে।( হামি দিয়ে )

আর্থ হায়াতির দিকে চোখ গরম তাকাতেই হায়াতি মুখ ভেংচি কেটে দেয়। আর্থের মুখ হা হয়ে গেছে। মেয়েটা ওকে ভয় পাওয়ার বদলে ওকে ভেংচি কাটছে।

আর্থকে এখনো বসে থাকতে দেখে রিশান ওর উদ্দেশ্যে বলে,

রিশানঃ তোকে কি আলাদা ভাবে ইনভিটেশন কার্ড পাঠাতে হবে?

আর্থঃ প্রয়োজন নেই তোমরা আগে যাও আমি বিল দিয়ে আসছি।( মুখ গোমড়া করে)

রিশানঃ বিল আমি দিয়ে আসছি।

আর্থঃ হুম।

আর্থ শায়েরা আর হায়াতিকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। রিশান হাতে একটা ওয়াইনের গ্লাস নিয়ে ছেলেটার পাশে গিয়ে দাঁড়ায় । ছেলেটার খেয়াল অন্যদিকে। হঠাৎ রিশান ওর গ্লাসের পুরোটা ওয়াইন ছেলেটার উপর ফেলে দেয়। আচমকা এমন হওয়ায় চমকে দাঁড়িয়ে যায় ছেলেটা।

ছেলেটাঃ পাগল নাকি!

রিশানঃ আসলে আমার নজর অন্য দিকে ছিল তাই খেয়াল করি নি। নজর সামলে না রাখলে এমনই দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে ডোন্ট মাইন্ড।

ছেলেটা কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে আছে রিশানের দিকে।

রিশান আর কিছু না বলে চলে গেল। ছেলেটা রিশানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রেগে বলতে শুরু করে,

ছেলেটাঃ পাগল নাকি? দোষ করেও স্যরি না বলে চলে গেল।

রিশান বাইরে আসতেই দেখে আর্থ শায়েরা আর হায়াতি দাঁড়িয়ে আছে।

আর্থঃ ব্রো তুই কি ডিসকাউন্ট এর জন্য ঝগড়া করছিলি যে দেড়ি হলো?

আর্থের কথা শুনে শায়েরা ঠিক করে হেসে দিল। রিশান শায়েরার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নেয় তারপর আর্থকে বলে।

রিশানঃ তোর থেকেই শিখেছি। মনে আছে ছোট বেলায় যখন দোকান থেকে চকলেট কিনতি একটার সাথে আরেকটা ফ্রি না দিলে সেখানেই বসে কান্না শুরু করতি।

হায়াতিঃ একটার সাথে কি আবার আরেকটা চকলেট ফ্রি দেয় নাকি?

আর্থ চোখ বড় বড় করে আছে যেন এখনি ওর চোখ দুটো বের হয়ে যাবে।

আর্থঃ ভাই কিসব বলছিস?

রিশানঃ তারপর ওই ফ্রি চকলেটের টাকা আমাকে দিতে হতো।

রিশানের কথা শুনে হায়াতি আর শায়েরা মীখ চেপে হাসছে।

আর্থঃ হয়েছে তোর? আর কিছু বলিস না প্লীজ।

রিশান কিছু বলল না শুধু মুচকি হাসল।

রিশানঃ তোমরা যেতে পারবে নাকি আর্থ দিয়ে আসবে।

শায়েরাঃ নাহ যেতে পারব। কালকে দেখা হবে আসি।

আর্থঃ গুড নাইট শায়েরা। গুড নাইট মিস হাতি।

হায়াতিঃ হায়াতি ( রেগে )

শায়েরা আর হায়াতি ওদের গাড়িতে উঠে চলে গেল।

আর্থঃ ভাই ঠিক করলি না কাজটা।( বাইকে উঠতে উঠতে ) আমারও দিন আসবে।

রিশানঃ দিন সবারই আসে কিন্তু সবাই তা কাজে লাগাতে পারে না লিটল ব্রাদার।( চোখ মেরে)

To be continued……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here