You_Are_My_Destiny #Mr_Arrogant_3?,12,13

0
1210

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3?,12,13
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_12

?
রিশিকা ক্লাস শেষ করে কলেজ থেকে বের হয়ে আসে।‌ আজকে গাড়ি আনেনি ও কারন হায়াতির সাথে এসেছিল।

কোনো রিকশা না পাওয়ায় রাস্তার এক পাশে হাঁটছে রিশিকা। হঠাৎ একটা গাড়ি ওর পাশে এসে দাঁড়ায় আর ভেতর থেকে কেউ হাত টান দিয়ে ওকে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।

রিশিকা চিৎকার দিবে তার আগেই পাশের মানুষটিকে দেখে চুপ হয়ে যায়।

রিশিকাঃ রিক্ত আপনি?( রেগে ) এমন কেউ করে আমি কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

রিক্তঃ ভয় পাওয়ার কি আছে আর আমি ছাড়া কার সাহস হবে তোমাকে স্পর্শ করার।

রিশিকাঃ তাই বলে এভাবে গুন্ডাদের মতো গাড়িতে বসাবেন।

রিক্তঃ আরেহ রিশু বেবি রাগ করছো কেন আমি তো জাস্ট একটু প্র্যাঙ্ক করতে চেয়েছিলাম।

রিশিকা রেগে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে জানালার বাইরে তাকায়।

রিক্তঃ ওকে ফাইন স্যরি। এইযে কান ধরছি।( কান ধরে ) আর কখনো এ ধরনের প্র্যাঙ্ক করবো না।

রিশিকা আড়ি চোখে রিক্তর দিকে তাকায়। রিক্ত কান ধরে বাচ্চাদের মতো ফেস করে আছে। রিশিকার রাগ বেশিক্ষন টিকলো না রিক্তর কাছে। ফিক করে হেসে দিল রিশিকা তারপর রিক্তর হাত ওর কান থেকে সরিয়ে দিয়ে বলে।

রিশিকাঃ হয়েছে আজকের জন্য ক্ষমা করলাম।( গম্ভীর মুখ করে ) কিন্তু কোথায় যাচ্ছি আমরা।

রিক্তঃ সবার আগে রেস্টুরেন্ট থেকে লাঞ্চ করবো তারপর একটা লং ড্রাইভে যাব।( গাড়ী স্টার্ট দিতে দিতে বলল )

Green Leaf Restaurant ?

রিশানঃ এটা রিশুর ফেভারিট রেস্টুরেন্টে। এখানের চাইনিজ ফুড ওর অনেক পছন্দের – রেস্টুরেন্টে ঢুকতে ঢুকতে।

শায়েরা জায়গাটাকে ঘুরে ঘুরে দেখছে। চারিদিক সবুজ গাছ দিয়ে ঘেরা রেস্টুরেন্টটার। প্রতিটা টেবিলে একটা করে ভাজ আর কার্ডও রাখা।

শায়েরাঃ জায়গাটা সত্যিই অনেক সুন্দর। একদম নেচার নেচার ফিলিং আসছে।

কিছুটা দূরেই একটা বড় আর্টিফিশিয়াল‌ গাছ আছে যেটাতে অগুনিত ছোট ছোট কাগজের টুকরা আটকানো যে গুলোতে হয়তো কিছু লিখা।

শায়েরাঃ রিশান এটা কি?

রিশানঃ উইশিং ট্রি। বোকাদের মতো কাগজে নিজের ইচ্ছা লিখে ওটাতে লাগায় সবাই। ভাবে হয়তো তাদের ইচ্ছা পূরণ হয়ে যাবে।

শায়েরাঃ সত্যিই কি উইশ পুরন হয়?

রিশানঃ আমি কখনো ট্রাই করিনি কিন্তু আর্থ আর রিশু প্রত্যেকবার লিখে। চলো তোমাকে দেখাই।

রিশান শায়েরার হাত ধরে ওকে উইশিং ট্রির সামনে নিয়ে আসে।

আর্থ আর রিশিকার সাইন করা অনেক গুলো কাগজ আটকানো গাছটায়। শায়েরা সব গুলো পড়তে শুরু করে।

> আই উইশ ফ্রাইড রাইসের সাথে যেন অনেক গুলো চিকেন বল আসে এবার আমার প্লেটে। ( আর্থ )

শায়েরাঃ এটা কেমন উইশ?( হচকিয়ে )

> আমাকে যেন ট্যুরে যাওয়ার পার্মিশন দেয় ভাইয়া ( রিশিকা)

শায়েরাঃ কোন ট্যুর?

রিশানঃ কলেজ ট্যুর। আমি আর আব্বু রাজি ছিলাম না ওকে একা যেতে দেওয়ার জন্য তাই এখানে লিখে উইশ চেয়েছিল।

শায়েরাঃ তারপর? ওকে যেতে দিয়েছিলে ট্যুরে?

রিশানঃ আমার একমাত্র বোন ওকে কি না করা যায়। কিন্তু সাথে গার্ড পাঠিয়েছিলাম এজন্য অনেক রেগে ছিল।

শায়েরাঃ রাগ করাটাই স্বাভাবিক।

রিশানঃ আমি যা করি ওর সেফটির জন্যেই করি।

শায়েরাঃ ওভারপ্রটেক্টিভ!( বিরবির করে )

রিশানঃ কিছু বললে?( কপাল কুঁচকে )

শায়েরাঃ বললাম আমিও নিজের উইশ লিখবো।

রিশানঃ‌ তুমি কি ছোট?

শায়েরাঃ তোমার থেকে তো ছোটই।

রিশানের কথা এভয়েড করে শায়েরা একটা কাগজ তুলে ওর উইশ লিখা শুরু করে। লিখা শেষ করে পিন দিয়ে বাকি গুলোর মতো গাছটায় আটকিয়ে দেয় ও।

রিশানঃ দেখি তুমি কি লিখেছো।

শায়েরা সাইড হতেই রিশান পড়তে শুরু করে।

> আই উইশ আজকে যেন বৃষ্টি হয় আর আমি ভিজতে পারি। ( শায়েরা )

শায়েরা চিটটা পড়ে বাইরে তাকায়। বাইরে তীব্র রোদ। দেখতেই বুঝা যাচ্ছে বৃষ্টি আসার কোনো সুযোগই নেই।

রিশানঃ ইম্পসিবল!

শায়েরাঃ আশা রাখা ভালো।

রিশানঃ তুমি আশায় থাকো আমি না করবো না।

রিশান ওদের জন্য একটা টেবিল সিলেক্ট করে নেয়।

?
রিক্ত আর রিশিকা রেস্টুরেন্টে এসে কর্নারের একটা টেবিল বুক করে নেয় ওদের জন্য।

কিছুক্ষণের মধ্যেই ওদের খাবার দিয়ে যায় ওয়েটার।

রিশিকাঃ এখানকার খাবারের তুলনা হয়না।( খেতে খেতে )

রিক্তঃ ধীরে সুস্থ্যে খাও রিশু গলায় খাবার আঁটকে যাবে।

রিশিকাঃ ভাইয়ার মতো কথা বলবে না বলে দিলাম।

রিক্তঃ রিশু বেবি প্লিজ তোমার হিটলার ভাইয়ের নাম নিও না। দেখা যাবে এখানেও চলে আসবে আমার ডেটের বারোটা বাজাতে।( মুখ গোমড়া করে )

রিশিকঃ আমার ভাইয়াকে নিয়ে একটাও উল্টা পাল্টা কথা বলবে না বলে দিলাম – কাটা চামচ রিক্তর মুখের উপর তুলে।

রিক্তঃ আরেহ রিশু কি করছো লেগে যাবে।( হাত থেকে চামচটা নামিয়ে) বলবো না কিছু তোমার ভাইয়ের নামে খুশি?

রিশিকাঃ হুম…. হঠাৎ রিশিকার চোখ যায় কিছুদূর বসে থাকা রিশানের দিকে। সাথে সাথে ওর চোখ বড় বড় হয়ে যায়।‌ রিশান ভাইয়া!( অবাক হয়ে )

রিক্তঃ রিশু এখন কিন্তু তুমি ওর নাম নিচ্ছ।

রিশিকাঃ আরেহ রিশান ভাইয়া পেছনে।( টেবিলের নিচে ঝুঁকে )

রিক্তঃ কিহ? সাথে সাথে পেছনে ফিরে তাকায় রিক্ত। রিশানকে দেখে চারশো চল্লিশ ভোল্টের ঝাটকা খায় ও। ম্যাগাজিন দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে নেয় ও।

রিশিকাঃ ভাইয়া এখানে এখন কি করবো?

রিক্তঃ যেখানেই যাই সেখানেই টপকে আসে।( বিরবির করে )

রিশান ফোন স্ক্রল করছে আর খাচ্ছে। শায়েরা খাওয়ার মাঝেই রিশানের দিকে তাকায়। রিশানের গালে খাবার লেগে আছে। কোনো কিছু না ভেবেই শায়েরা নিজের হাত দিয়ে রিশানের গাল পরিষ্কার করে দেয়।

আচমকা এমন করায় রিশানের গলায় খাবার আঁটকে যায় কাঁশতে শুরু করে ও। শায়েরা সাথে সাথে পানি খাইয়ে দেয় ওকে।

শায়েরাঃ স্যরি! আমিতো শুধু লেগে থাকা খাবারটুকু সাফ করছিলাম।

রিশান এখনো থ মেরে বসে আছে কিছু বলার নেই ওর।

দূর থেকে অবাক হয়ে ওদেরকে দেখছে রিক্ত। নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস হচ্ছে না ওর।

রিক্তঃ এই ভিলেনের লাইফে হিরোইনের এন্ট্রি কবে হলো? ( অবাক হয়ে )

রিশিকাঃ কি বিরবির করছেন রিক্ত? আমাদের এখনি যেতে হবে।( ধীরে ধীরে বলছে।)

রিক্তঃ রিশু তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো আমি বিল দিয়ে এখনি আসছি – পকেট থেকে গাড়ির চাবি বের করে রিশিকাকে দিল।

রিশিকাঃ তাড়াতাড়ি আসবেন।

রিশিকা চলে যেতেই রিক্ত ম্যাগেজিন দিয়ে মুখ ঢেকে রিশানের আরও কাছের টেবিলে এসে বসে ওদের কথা শুনার জন্য।

এইদিকে,,,?

রোলিং চেয়ারে বসে একবার সামনে একবার পেছন হচ্ছে আর কিছু ভাবছে আর্থ।

>> কি ভাবছিস বসে বসে?( ইমরান )

আর্থঃ ক্রিমিনালটা অনেক চালাক কোনো ক্লু ফেলে যায়নি দেখ।( ভিডিও দেখিয়ে )

ইমরানঃ কেসটা অনেক পেঁচানো। তুই সিউর যে তুই একা ম্যানেজ করতে পারবি?

আর্থঃ অফকোর্স। পারবোনা শব্দটা আমার ডিক্সিনারিতে নেই। ( উঠে দাঁড়িয়ে )

ইমরানঃ কোথায় যাচ্ছিস?

আর্থঃ ক্লু খুঁজতে।

আর্থ অফিস থেকে বেরিয়ে আসে। আর্থ বেরিয়ে যেতেই ওর পেছনে একটা গাড়ি যায়।

To be continued…..

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_13

?
বাইক চালাচ্ছে আর্থ এর মাঝেই ও খেয়াল করলো একটা কালো রঙের গাড়ি বেশ কিছুক্ষণ ধরেই ওকে ফলো করছে।

আর্থ বিষয়টা ক্লিয়ার করে বুঝার জন্য ইচ্ছে করে ওর বাইক অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেয় আর গাড়িটিও সাথে সাথে ঘুরিয়ে নেওয়া হয়। আর্থ যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে গাড়িটিও সেখান দিয়ে যাচ্ছে। এখন আর্থ ভালো করেই বুঝতে পারছে যে গাড়িটি ওকেই ফলো করছে।

আর্থঃ আমাকে ফলো করা হচ্ছে তাইনা? দেখাচ্ছি মজা।

আর্থ ওর বাইক ঘু্রিয়ে নেয় আর শপিং মলের সামনে থামায়।

গাড়িটিও কিছুটা দূরত্বে থেমে যায়। আর্থ বাইক পার্ক করে মলে ঢুকে যায়। গাড়িটি থেকে কয়েকজন লোক বেরিয়ে আর্থের পিছু নেয়।

আর্থ ইচ্ছে করেই পুরো মল ঘুরছে আর ওর পিছু লোক গুলোও। মনে হচ্ছে লোক গুলোকে নিজের ইশারায় ঘুরাচ্ছে ও।

আর্থঃ এগুলো কারা হতে পারে? এরেনের‌ লোকেরা নাতো?( মনে মনে ) খোঁজ নিতে হবে। কিন্তু তার আগে এদের চোখের আড়াল হতে হবে আমায়।

আর্থ লোক গুলোর চোখকে ফাঁকি দিয়ে আড়ালে লুকিয়ে পরে। হঠাৎ আর্থ গায়েব হয়ে যাওয়ায় পিছু নেওয়া লোক গুলো দিশেহারা হয়ে পড়ে। সবাই আলাদা আলাদা ভাবে ওকে খুঁজতে শুরু করে।

আর্থ এই ফাঁকে ইমরানকে ম্যাসেজ করে দেয়। ম্যাসেজ করে ফোনটা পকেটে ভরে ঘুরতেই কারো সাথে ধাক্কা লেগে যায় ওর।

আর্থঃ স্য রি…. তুমি?( সামনে অবাক চোখে তাকিয়ে )

হায়াতিঃ চোখ নাকি রিমোটের বাটন? ( নিচ থেকে ওর শপিং ব্যাগ গুলো তুলে।)

আর্থঃ তুমি নিজেই চেক করে নাও। ( মুখ সামনে এগিয়ে দিয়ে )

হায়াতিঃ আপনি এখানে কি করেছেন?

আর্থঃ ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে এসেছি।

হায়াতিঃ শপিং মলে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কে আসে?( বোকার মত)

আর্থঃ স্টুপিড!যেহেতু এটা শপিং মল তাহলে অবশ্যই শপিং করতে এসেছি।

হায়াতিঃ ওহ। কিন্তু আপনার হাত তো খালি।

আর্থঃ আমার হাত খালি হোক কি ভরা এতে তোমার কি? পুলিশের মতো ইনকোয়ারি করা বন্ধ করো। ( কথা কাটানোর জন্য)

আর্থ হায়াতির‌ পেছনে খেয়াল করতেই দেখে লোক গুলো ওর পেছনে খোঁজা খুঁজি করছে। লোক গুলো ওর দিকে তাকাতে নিলেই আর্থ হায়াতির হাত ধরে ওকে টান দিয়ে একটা স্টোরে ঢুকে পরে।

?
শায়েরা আর রিশানের মাঝে নিরবতা বিরাজ করছে। কেউই কিছু বলছে না যে যার মতো খাবার খাচ্ছে।

রিক্তঃ এতক্ষণ তো ভালোই কথা বলছিল আমি আসায় সাইলেন্ট মোডে চলে গেল কেন?(বিরবির করে )

আকাশে মেঘ ডাকছে। কিছু সময়ের মধ্যেই পরিষ্কার আকাশ মেঘলা হয়ে চারোদিক অন্ধকার হয়ে এসেছে। শায়েরা বাইরে তাকাতেই দেখে বাইরে বৃষ্টির ভাব হচ্ছে।

শায়েরাঃ আমার ইচ্ছা পূরণ হয়ে গেছে।( খুশি হয়ে চেঁচিয়ে )

রিশান খাওয়া বন্ধ করে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকায় শায়েরার দিকে।

শায়েরাঃ বৃষ্টি হবে।( বাইরে ইশারা করে )

রিশানঃ একটু আগেই তো কড়া রোদ ছিল তাহলে হঠাৎ বৃষ্টি কিভাবে?( কিছুটা অবাক হয়ে )

শায়েরাঃ আকাশটা কত সুন্দর দেখাচ্ছে।( মুগ্ধ হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে )

রিশানঃ আমাদের উঠা উচিত বৃষ্টি নেমে গেলে অসুবিধা হবে।

রিশানের কথা শুনে রিক্ত ধীরে ধীরে উঠে ওদের আগে বেরিয়ে যায়।

রিশিকা আগে থেকেই গাড়িতে বসে ছিল। রিক্ত গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দেয়।

রিক্তঃ তাড়াতাড়ি কেটে পরতে হবে জমরাজ চলে আসছে।

রিশিকাঃ এতক্ষণ কোথায় ছিলেন রিক্ত?

রিক্তঃ বলছি, আগে এখান থেকে বের হই।

?
লিফটের এক পাশে আর্থ অন্য পাশে হায়াতি দাঁড়িয়ে। লোক গুলো থেকে বাঁচতে বাঁচতে লিফটে উঠেছে ও। হায়াতি পুরো কনফিউজড হয়ে আছে যে আসলে লোক গুলো কারা।

হায়াতিঃ লোক গুলো কারা ছিল?

আর্থঃ আমি কিভাবে বলব? কোনো ক্রিমিনাল হবে হয়ত।

হায়াতিঃ আমি বুঝতে পারি না যে বিপদ আপনার পিছু পিছু ঘুরে নাকি আপনি বিপদের।

আর্থঃ দু’টো একই কথা। তাছাড়া আমাদের কাজই এমন‌।

হায়াতিঃ হুহ। কবে যেন আপনার জন্য আমার জান নিয়ে টানাটানি হয়।( বিরবির করে )

আর্থঃ কি বললে?

হায়াতিঃ বলছি যে, আমি এতদিন ভাবতাম যে পুলিশ ক্রিমিনালের পেছনে দৌড়ায় কিন্তু আজকে প্রথমবার দেখলাম যে ক্রিমিনাল পুলিশের পেছনে। আপনি আসলেই আমার ধারনা ভুল প্রমাণ করে দিলেন।

আর্থঃ কথাটাকে আমি কমপ্লিমেন্ট হিসেবে নিলাম।

হায়াতিঃ হুহ।

আর্থঃ তোমাকে এসবে জড়াতে চাইছি না তাই যতক্ষন তুমি আমার সাথে আছো সাবধানে থাকতে হবে আমায়। আর যত দ্রুত সম্ভব তোমাকে এখান থেকে পাঠাতে হবে। ( মনে মনে )

লিফট সেকেন্ড ফ্লোরে খুলতেই আর্থ লোক গুলোকে আবার দেখতে পায়। আর্থ সাথে সাথে হায়াতির বরাবর দরজার দিকে পিঠ করে দাঁড়ায়। হঠাৎ এমন হওয়ায় ঘাবড়ে যায় হায়াতি।

হায়াতিঃ আপনি…..

আর্থঃ হুশ… চোখ দিয়ে ইশারায় চুপ থাকতে বলল।

হায়াতি শান্ত হয়ে যায়। বাইরে থেকে ওদের দেখতে অন্য কিছুই বুঝা যাচ্ছে। কয়েকজন লিফটে উঠতে গিয়েও ওদের দেখে উঠলো না। আর্থ হায়াতির এতো কাছে প্রথমবার এসেছে। অস্বাভাবিক একটা অনুভুতি হচ্ছে ওর। কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়তে শুরু করেছে। দরজা লেগে যেতেই আর্থ সরে দাঁড়ায়। আর্থের এতো কাছে থাকায় হায়াতির যেন শ্বাস আঁটকে যাচ্ছিল। আর্থ হায়াতির অবস্থা দেখে ওর স্কার্ফ দিয়েই ওর ঘাম মুছে দেয়।

আর্থঃ তুমি যেভাবে ঘামছো মনে হচ্ছে যেন আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে উল্টা পাল্টা কিছু….( টিজ করে )

হায়াতি রাগি চোখে আর্থের দিকে তাকাতেই আর্থ হেসে অন্য দিকে ফিরে যায়।

হায়াতিঃ ইচ্ছা করছে মুখে টেপ লাগিয়ে দেই।( মনে মনে )

?
রিক্তঃ রিশু মেয়েটি কে ছিল? তুমি কি চিনো?( ড্রাইভ করতে করতে )

রিশিকাঃ কোন মেয়ে?

রিক্তঃ আরেহ তোমার ভাইয়ের সাথে যে মেয়েটি ছিল সে।

রিশিকাঃ ওহ! ও শায়েরা ভাইয়ার সাথে কাজ করে আঙ্কেলের ভাতিজি।

রিক্তঃ তোমার মনে হয় না ওদের দুজনের মধ্যে কাজ বাদেও অন্য কোনো ধরনের রিলেশন আছে।( কথা ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে বলার চেষ্টা করছে )

রিশিকাঃ মানে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড টাইপ?( অবাক হয়ে ) ইমপসিবল!

রিক্তঃ যদি এই ইমপসিবল শব্দটাকে আমরা পসিবল করে দেই।

রিশিকাঃ আপনি কি বলতে চাইছেন স্পষ্ট ভাবে বলেন রিক্ত।

রিক্তঃ আমি বলতে চাইছি যে, শায়েরাকে দিয়ে তোমার ফিলিংলেস, ভাইয়ের মধ্যে ফিলিংস তৈরি করতে পারি আমরা। আর হয়তো এতে রিশান আমাদের ভালোবাসাটাকেও বুঝতে পারবে।

রিশিকাঃ সব বুঝলাম কিন্তু আমার ভাইয়ে মোটেও ফিলিংলেস না। রিশভাই আমাকে আর্থ ভাইয়াকে আর আমাদের পুরো ফ্যামিলিকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে।

রিক্তঃ হ্যাঁ জানি তোমার ভাই তোমাদের অনেক ভালোবাসে কিন্তু আমার বেলাতে এই ভালোবাসা বেড়াতে চলে যায়।( বিরবির করে )

?
রিশান গাড়ি চালাচ্ছে আর শায়েরা গ্লাস খুলে বাইরের বৃষ্টি দেখছে। এতক্ষন ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়লেও এখন মুষলধারে নেমেছে। বৃষ্টির ছিটে ফোঁটা সব রিশান আর শায়েরার গায়ে পরছে। শায়েরা মুহূর্তটাকে ইন্জয় করলেও রিশানের কাছে বিরক্ত লাগছে।

রিশানঃ‌ শায়েরা গ্লাসটা ক্লোজ করে দাও শরীরে বৃষ্টি লাগছে পরে ঠান্ডা লেগে যাবে।

শায়েরাঃ আমার বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা লাগে না। বরং আমারতো বৃষ্টিতে ভিজতে অনেক ভালো লাগে। ( বাইরে মনোযোগ দিয়ে )

রিশানঃ তোমার ঠান্ডা না লাগলেও আমার ঠিকই লেগে যাবে।( মনে মনে )

রিশান হঠাৎ ব্রেক করে দেয় সাথে সাথে শায়েরা ঝাঁকি খেয়ে সামনে ঝুঁকে যায়।

শায়েরাঃ এভাবে কেউ গাড়ি থামায়?( রেগে )

রিশানঃ তোমার বাসা চলে এসেছে।( শায়েরার দিকে ঘুরে)

শায়েরাঃ ওহ্! স্যরি।

শায়েরা নামতে নিলে রিশান ওর হাত ধরে থামিয়ে নেয়। শায়েরা প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকায় রিশানের দিকে।

রিশানঃ দাঁড়াও।

রিশান গাড়ির পেছন থেকে ছাতা বের করে আগে নিজে নামে তারপর শায়েরার সাইডে গিয়ে ডোর ওপেন করে। শায়েরা সাবধানে নেমে যায় যেন না ভিজে।

রিশানঃ ধরো এটা।( ছাতা হাতে দিয়ে )

শায়েরাঃ তুমি তো ভিজে যাবে।

রিশানঃ আমার চিন্তা করতে হবে না তুমি যাও।

রিশান ভিজেই আবার গাড়িতে গিয়ে বসে। শায়েরা এখনো দাঁড়িয়ে রিশানের দিকে তাকিয়ে আছে। রিশান চোখ দিয়ে ইশারা করে ওকে যেতে বলে।

শায়েরাঃ থ্যাংক ইউ – কথাটা বলে ও গেইটের ভিতরে ঢুকে যায়।

নিজের অজান্তেই শায়েরার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসে রিশান।

এতক্ষন হালকা ভিজলেও এখন পুরো ভিজে গেছে ও। নাক লাল হয়ে গেছে বুঝাই যাচ্ছে ঠান্ডা লেগে গেছে ওর।

রিশানঃ হাচ্ছুউউ… শুরু হয়ে গেলো।( নিজেই নিজেকে বলছে।)

রিশান আঙ্গুল দিয়ে বারবার নাক ঘষছে আর হাঁচি দিচ্ছে।

?
আর্থ হায়াতিকে নিয়ে মল থেকে বেরিয়ে আসে।

আর্থঃ তুমি বাসায় যাও।

হায়াতিঃ আর আপনি?

আর্থঃ কেন চিন্তা হচ্ছে আমার জন্য মিস হাতি?( হায়াতি রং দিকে ঝুঁকে)

হায়াতিঃ একদম না।( দূরে সরে )

আর্থ হায়াতির গাড়ির দরজা খুলে ওকে বসিয়ে দেয় তারপর ড্রাইভারের সামনে গিয়ে বলে,

আর্থঃ কেয়ারফুলি ড্রাইভ করবেন।

ড্রাইভার “হ্যাঁ ” বলে গাড়ি স্টার্ট দেয়।

আর্থঃ সি ইউ মিস হাতি, বায়।( হাত দেখিয়ে )

হায়াতিঃ সাবধানে থাকবেন।

হায়াতির চোখে স্পষ্ট আর্থের জন্য চিন্তা দেখা যাচ্ছে। ওর যদিও আর্থকে একা রেখে যেতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু কি বলে থাকবে এখানে।

হায়াতি চলে যেতেই আর্থ ওর ব্যাক সাইড থেকে ওর রিভলবার বের করে নেয়।

আর্থঃ লুকোচুরি খেলা শেষ করার সময় চলে এসেছে।

আর্থ দেয়ালের পেছনে লুকিয়ে পরে। দলের দু’জন লোক আর্থকে খুঁজতে খুঁজতে নিচে চলে আসে। একজন আর্থের সামনে দিয়ে আসতেই আর্থ লোকটির মাথায় রিভলবার দিয়ে বারি দেয় আর লোকটি পরে যায়। আরেকজন ফোনে কাউকে কল করছে। আর্থ গিয়ে পেছন থেকে তার মাথায় গান তাক করে ধরে আর লোকটি ভয়ে দু হাত তুলে নেয়।

আর্থঃ গেম ওভার ব্রো।

ইমরান সহ আরো অফিসাররা মল থেকে বাকি লোকদের ধরে নিয়ে আসে।

ইমরানঃ সব প্লান অনুযায়ী হয়েছে।

আর্থঃ এখন এদের শশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়া হোক।

আর্থ আর ইমরান সব গুলোকে জীপে ভরে নেয়।

ইমরানঃ এখন এদের কাছ থেকে এরেনের সব ইনফরমেশন বের করতে পারবো।

আর্থঃ হুম কাজটা এই গাধারা আরও সহজ করে দিল।

To be continued…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here