You_Are_My_Destiny #Mr_Arrogant_3?,18,19

0
1190

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3?,18,19
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_18

?
বাইক থামিয়ে সোজা কলেজের ভিতর চলে গেল আর্থ। কিন্তু এতো বড় কলেজে কোথায় খুঁজবে ও হায়াতিকে তা বুঝতে পারছে না।

আর্থ পাশেই একটা ছেলেকে জিজ্ঞেস করে ল্য এর স্টুডেন্ডটের ক্লাস কোনটা। ছেলেটি আর্থকে ক্লাস দেখিয়ে দিতেই আর্থ সোজা কলেজের ভিতরে হায়াতির ক্লাস খুঁজতে চলে যায়।‌

মাত্র ক্লাস শেষ করে স্যার বের হয়েছে। হায়াতি ওর বই গুছিয়ে নিচ্ছে। ওর সামনের বেঞ্চেই নিলয় ( যে ছেলেটির সাথে সকালে এসেছিল ) বসে ছিলো। স্যার যেতেই হায়াতির দিকে ফিরে বসে ও।

নিলয়ঃ হায়াতি আজকে আর ক্লাস হবে না চলো মুভি দেখে আসি।

হায়াতিঃ কি মুভি?

নিলয়ঃ তোমার ফেভারিট আরেফিন শুভর মুভি।

হায়াতি কিছু বলবে তার আগেই আর্থ টপকে পরলো ওখানে। তারপর ওদের মাঝে এসে বলতে শুরু করলো।

আর্থঃ ও তোমার সাথে যেতে যেতে পারবে না কারন ও আমার সাথে যাবে।( হায়াতির হাত ধরে )

হঠাৎ আর্থের আগমনে টাস্কি খেয়ে আছে হায়াতি। নিলয় ও বুঝতে পারছে না আর্থ কোথা থেকে টপটাকলো।

নিলয়ঃ তুমি কে আর হায়াতির হাত কেন ধরলে? লিভ হার…

আর্থঃ হায়াতি তোমাকে আমার কথা বলেনি?( অবাক হওয়ার ভান করে )

নিলয়ঃ নাতো কে তুমি?

আর্থঃ আমি আমার হাতি বেবির ওয়ান অ্যান্ড অনলি বয়ফ্রেন্ড – হায়াতির হাত তুলে চুমু দিয়ে।

হায়াতি আর্থের কথায় শক্ড। আর হাতে চুমু খাওয়ায় তো আরও বেশি শক্ড। সাথে সাথে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয় হায়াতি তারপর অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।

হায়াতিঃ বয়ফ্রেন্ড? তাও আপনি? কবে কোথায়
কিভাবে?( চোখ কপালে তুলে )

আর্থঃ বলছি আগে আমার সাথে চলো।

আর্থ এক হাত দিয়ে হায়াতির হাত ধরে আরেক হাত দিয়ে হায়াতির ব্যাগ তুলে ওকে নিয়ে হাঁটা শুরু করে।

নিলয় কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে। তাই ওও হায়াতির পেছনে দৌড় দেয়। কলেজের বাইরে আসতেই হায়াতি আর্থের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়।

হায়াতিঃ কি হচ্ছে এসব? আপনি নিলয়কে মিথ্যা বললেন কেন?

আর্থঃ মিথ্যা কখন বললাম? তুমি তো গার্লফ্রেন্ডই। তোমাকে প্রতিদিন কলেজ থেকে বাসায় দিয়ে আসি আবার বাসা থেকে কলেজে নিয়ে আসি। এটাই তো একটা বয়ফ্রেন্ডের প্রথম কাজ তাই না?

হায়াতিঃ আমি কি বলেছি নাকি এসব করতে? উল্টা আমিতো আপনাকে বারন করেছিলাম আপনিই তো শুনেন নি।

আর্থ হায়াতির ঝগড়ার মাঝেই নিলয় আসে ওখানে।

নিলয়ঃ আমি জানতাম তুমি মিথ্যা বলছো। হায়াতির কোনো বয়ফ্রেন্ডই নেই তা আমি ভালো করেই জানি।

আর্থঃ ভাই তুই আবার এসে পরলি? তোর কি নিজের জানের মায়া নেই?( বিরক্তিকর ভাব নিয়ে )

নিলয়ঃ আমার কাছে হায়াতির থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছুই না নিজের জানও না।

আর্থঃ কি বলছিস ভাই? সত্যিই হায়াতি তোর জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ?( অবাক হওয়ার ভান করে )

নিলয়ঃ হুম…( হায়াতির দিকে মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে )

আর্থঃ ওয়াও! দিস ইজ কল্ড টুরু লাভ – নিলয়ের কাধে হাত রেখে।

আর্থের হঠাৎ বদলে যাওয়া অ্যাটিটিউট দেখে কিছুটা অবাক হয় নিলয় আর হায়াতি।

আর্থ হায়াতিকে সাইড করে নিলয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তারপর ওর জ্যাকেট এর এক সাইট একটু সরিয়ে নেয়। জ্যাকেট সরাতেই আর্থের কোমরে রিভলবার গোঁজানো দেখে চোখ বড় বড় হয়ে যায় নিলয়ের।

সাথে সাথে দূরে ছিটকে দাঁড়ায় নিলয় আর্থ থেকে।

নিলয়ঃ আরেহ ভাই আমিতো মজা করছিলাম। আমি হায়াতিকে তো নিজের বোনের মতো দেখি।

আর্থঃ কিন্তু তুমিই তো বললে তোমার বিশ্বাস হয়না যে আমি ওর বয়ফ্রেন্ড।

নিলয়ঃ কখন বললাম এটা। তুমি তো ওর জন্য পারফেক্ট। তোমার থেকে পারফেক্ট তো কেউ হতেই পারে না ওর জন্য। ( ভয়ে পিছাতে পিছাতে )

আর্থঃ আরেহ ব্রো কোথায় যাচ্ছো মুভি দেখতে যাবে না?

নিলয়ঃ মুভি? কিসের মুভি? আগে পড়া লেখা পরে সব। আমি যাই…বলেই দৌড়।

আর্থঃ ভিতুর ডিম।( হেসে )

আর্থ পেছনে ফিরতেই দেখে হায়াতি কোমরে হাত রেখে কপাল কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আর্থ একটা স্মাইল দিয়ে ডান হাত দিয়ে নিজের মাথা চুলকায়। বিষয়টা কিভাবে হায়াতিকে এক্সপ্লেইন করবে বুঝে উঠতে পারছে না ও।

অফিসে,,,?

মিটিং শেষ হতেই রিশান ওর কেবিনে চলে আসে আর আসার সময় রিক্তকে বলে দেয় ওর জন্য কফি আনতে।

রিক্ত বিরবির করতে করতে কফি বানাতে চলে যায়। পুরো সময় রিক্তকে জ্বালিয়েছে রিশান। একটু পর ফাইল এখান থেকে সেখানে নিয়ে ঘুরিয়েছে ওকে। অফিসের সবাই রিক্তকে চেনে রিক্তর হঠাৎ এখানে এভাবে কাজ করার বিষয়টা কেউই বুঝতে পারছে না।

রিক্ত কফি বানিয়ে রিশানের কেবিনে আসতেই নিলেই পুরোনো পিয়নের সাথে ধাক্কা লেগে যায় ওর আর সব কফি নিচে পরে যায়।

অসাবধানতাবশত বিষয়টা ঘটে গেল যে লোকটা বূঝে উঠতে পারে নি। ভয়ে হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে ওনার কারন উনি ভালো করেই জানেন এটা রিক্ত মেহরাব।

পিয়নঃ ম মাফ করবেন স্যার ভুল হয়ে গেছে।( তাড়াহুড়ো করে নিচ থেকে ভাঙ্গা কাঁচ গুলো তুলতে তুলতে )

রিক্ত এক হাঁটু গেড়ে বসে পিয়নের হাত থেকে ট্রে টা নিয়ে নিজেই কাঁচ গুলো তুলতে শুরু করে। পিয়ন ভাবে হয়তো রিক্ত রেগে আছে উনার উপর তাই নিজে নিজে তুলছে।

পিয়নঃ স্যার সত্যি আমি ইচ্ছা করে করিনি। আপনি আমাকে কাজ থেকে বের করবেন না দয়া করে।( কান্না করে দেবে এমন অবস্থা )

রিক্তঃ আমি কখন বললাম আপনাকে আপনাকে কাজ থেকে বের দিব?( অবাক হয়ে ) আর বার বার স্যরি কেন বলছেন? দোষ দুজনেরই ছিল তাই আপনি স্যরি বলবেন না।( হেসে )

পিয়নঃ তার মানে আপনি রেগে নেই?( অবাক হয়ে )

রিক্তঃ নাতো। আর বার বার স্যার বলতে হবে না বর্তমানে আমাদের পজিশন সেমই আছে তাই আপনি আমাকে নাম ধরেই ডাকতে পারেন তাছাড়া আপনি আমার বড়ও হন।

রিক্তঃ আবার বানাতে হবে।( দাঁড়িয়ে গিয়ে )

পিয়নঃ‌ আপনি যান আমি ফ্লোর পরিষ্কার করে দিব।

রিক্তঃ থ্যাংক ইউ।

রিক্ত আবারো কফি বানাতে চলে গেল। রিশান এতক্ষন দাঁড়িয়ে দেখছিল পুরো ঘটনা। ও আশা করেনি যে রিক্তর‌ ব্যবহার এতোটা নরম হতে পারে। ও ভেবেছিলো হয়তো রিক্ত রেগে উল্টা পাল্টা কিছু করবে বা বলবে কিন্তু রিক্ত রিশানের ভাবনায় পানি ঢেলে দিল। কিন্তু এতে রিশান খুশি হয়েছে যে রিক্ত ওকে ভুল প্রমান করেছে।

শায়েরাঃ ছেলেটা রিশুর জন্য একদম পারফেক্ট।( রিশানের পাশে এসে)

রিশান অবাক হয়ে তাকায় শায়েরার দিকে। শায়েরা হেসে রিশানকে বলে,

শায়েরাঃ আমি সব জানি অবাক হওয়ার কিছু নেই।

রিশানঃ তুমি লুকিয়ে আমাদের কথা শুনেছো?( কপাল কুঁচকে )

শায়েরাঃ ইচ্ছে করে শুনিনি ভুলে শুনে ফেলেছি।( ভয়ে ভয়ে )

রিশান কিছু বলল না চুপচাপ ওর কেবিনে চলে গেল।

শায়েরাঃ‌ রেগে গেল নাতো? ধুর না বললেই পারতাম।( নিজেই নিজেকে বকে )

?

অফিস টাইম শেষ হতেই সবাই বাসায় চলে যায়। শায়েরা রিশানকে আর দেখতে পায়নি হয়তো আগেই বেরিয়ে গেছে ও। মন খারাপ করে ওও বাসায় চলে আসে।

রিক্ত বাসায় এসে সোজা‌ ওর রুমে চলে যায়। রুমে ঢুকেই বেডে চিত হয়ে শুয়ে পরলো ও। সারাদিন কতটা দখল গিয়েছে ওর উপর তা এক মাত্র ও-ই জানে।

আকিব মেহরাব রিক্তর রুমে এসে দেখে রিক্ত ফ্রেশ না হয়েই ঘুমিয়ে পরেছে। রিক্তর পাশে এসে বসে ওর মাথায় হাত রাখেন উনি।

আকিবঃ আমি জানি যে আমি ভুল করেছি কিন্তু সে ভুলের মাসুল আমি তোমাকে দিতে দিব না রিক্ত। ( রিক্তর মাথায় হাত বুলিয়ে ভাবছেন )

আকিব মেহরাব চলে যেতেই রিক্ত চোখ খোলে। এতক্ষন চোখ বন্ধ করে ছিল ও।

?
রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে রিশিকা। ওর মন প্রচুর খারাপ আজকে রিক্তর সাথে কথা না হওয়ায়।

আজ প্রথম এমন হলো যে ও রেগে আছে আর রিক্ত ওকে মানায়নি।

রিশিকাঃ রিক্ত এখন আর আমাকে আগের মতো ভালোবাসে না।( মন খারাপ করে )

রিশান রিশিকার পাশে এসে দাঁড়ায় – মন খারাপ? প্রশ্ন করে রিশান।

রিশানের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে হাসি টেনে উত্তর দেয় রিশিকা।

রিশিকাঃ নাতো ভাইয়া। আমার কেন মন খারাপ হবে।

রিশান রিশিকার মাথায় হাত বুলিয়ে আকাশের দিকে তাকায়।

রিশানঃ অনেক সময় আমরা যাদের ভালোবাসি তাদের খুশির জন্য কিছু সময়ের জন্য হলেও তাদের থেকে দুরত্ব তৈরি করে নেই। কিন্তু তার মানে এটা না যে আমরা তাদের ভালোবাসি না।
যেখানে সত্যি ভালোবাসা থাকে সেখানে সামান্য দুরত্বে কখনো ভালোবাসা কমে না বরং আরও গভীর হয়।

কথা গুলো বলে রিশান রিশিকার দিকে তাকায়। রিশিকা হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিশানের কথা শুনে।

রিশানঃ তুমি আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন রিশু?( হচকিয়ে )

রিশিকাঃ কারন আমার বিশ্বাস হচ্ছে না যে এটা সত্যিই আমার রিশান ভাইয়া। সিরিয়াসলি! ভাইয়া তুমি কবে থেকে এতো সুন্দর করে ভালোবাসার ডেফিনেশন দেওয়া শুরু করলে?( অবাক হয়ে )

রিশানঃ আমি ডেফিনেশন দেই নি জাস্ট আমার মনে যা এসেছে বলেছি।( থতমত খেয়ে )

রিশিকাঃ কিন্তু তোমার মনে এসব কথা আসলো কিভাবে? তুমি প্রেমে টেমে পরলে নাতো?( অবাক হয়ে )

রিশানঃ এমন কিছুই না বেশি কথা বলিস না নাহলে রিক্তর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিব। ( কথা কাটানোর জন্য )

কথাটা বলেই তাড়াতাড়ি রিশান চলে যায়। রিশিকা এখনো অবাক হয়ে আছে যে সত্যিই রিশান ওকে ভালবাসা সম্পর্কে বুঝিয়ে গেল।

রিশান ওর রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। ও নিজেও কনফিউজড হয়ে আছে যে ওর মাথায় এমন কথা কিভাবে আসলো। আগে তো কখনো আসেনি। তাহলে কি রিশিকার কথাটা সত্যি?

কথাটা গুলো ভাবছে আর নিজেই কনফিউজড হচ্ছে রিশান।

To be continued…..

#You_Are_My_Destiny
#Mr_Arrogant_3?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_19

?
এক মাস হতে চলেছে, অথচ রিশানকে কোনো সুযোগ দেয়নি রিক্ত। ও নিজের সর্বস্ব চেষ্টা করছে রিশানের কাছে নিজেকে প্রমান করার। এক মাস হতে আর মাত্র তিন দিন বাকি। রিশিকার সাথে আগের তুলনায় অনেক কম কথা হয় রিক্তর আর দেখা করার তো সুযোগই হয়ে উঠে না। তবুও ওদের ভালোবাসায় এক বিন্দুও দুরত্ব আসেনি। কারন ‌রিশিকা জানে রিক্ত‌ হয়তো যা করছে তা ওর জন্যেই করছে।

এই এক মাসে রিশান আর শায়েরাও অনেকটা কাছে‌ এসেছে অথচ কেউই নিজের মনের কথা বলছে না। শায়েরা আশায় আছে যে রিশান ওকে ভালোবাসার কথা বলবে কিন্তু রিশান তো নিজেই নিজের মনের কথা বুঝতে পারছে না। ও মানতে নারাজ যে ওও কাউকে ভালোবাসতে পারে।

আর্থ হায়াতির সিচুয়েশন তো আরও অদ্ভুত। হায়াতি আর্থকে নিজের বয়ফ্রেন্ড স্বীকার করতে নারাজ কিন্তু আর্থ কি হার মানার পাত্র। ও হায়াতির কোনো কথাই কানে নেয় না। হায়াতিকে কলেজ থেকে বাসা আর বাসা থেকে কলেজে দিয়ে আসা, প্রতি শুক্রবার মুভির দেখতে যাওয়া রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে ওর। ওতো নিলয়কেও হায়াতির পার্সোনাল বডিগার্ড বানিয়ে দিয়েছে। হায়াতি কলেজে কি করছে কার সাথে কথা বলছে সব খবর ও দেয় আর্থকে। বেচারা বয়ফ্রেন্ড হতে চেয়েছিল কিন্তু হয়ে গেল বডিগার্ড। আর্থের কাজ গুলোতে হায়াতি উপর থেকে রাগ দেখালেও ভিতর থেকে ও নিজেও বুঝতে পেরেছে যে আর্থ ওর মনেও জায়গা করে নিয়েছে। এখন হয়তো ও বুঝতে পেরেছে যে ভালোবাসা জিনিসটা আসলেই ভালোবাসাময়।

?
আধা ঘন্টা ধরে ট্রাফিকে আঁটকে আছে রিশান। লম্বা জ্যাম পরেছে আজ। মাথা গরম হয়ে আছে রিশানের এমনিতেই আজকে লেইট হয়ে গেছে তার উপর এই ট্রাফিক জ্যাম।

বাইরে একটা লোক ফুল বিক্রি করছে গাড়িতে গাড়িতে। লোকটি রিশানের গাড়ির কাঁচে শব্দ করতেই রিশান কাঁচ নামিয়ে নেয়।

>> স্যার ফুল – ফুল গুলো এগিয়ে দিয়ে।

ফুল গুলো এগিয়ে দিতেই‌ রিশান কিছুটা পিছিয়ে যায়।

রিশানঃ না লাগবে না।

লোকটি ফুল গুলো নিয়ে চলে যেতে নিলেই রিশান কিছু একটা ভেবে তাকে আঁটকে নেয় আর কিছু ফুল কিনে নেয়।

ফুল গুলো রুমাল দিয়ে ধরে পেছনের সিটে রেখে দেয় রিশান।

রিশানঃ ফুল দিলে‌ শায়েরা রাগ করবে নাতো? ( কনফিউজড হয়ে ) রাগ কেন করবে মেয়েদের তো ফুল পছন্দই।( কনফিডেন্স হয়ে)

জ্যাম কাটতেই রিশান গাড়ি স্টার্ট দেয়। অফিসে পৌঁছে গাড়ির পেছনের সিট থেকে ফুল গুলো নিয়ে নেয়‌ রিশান। রুমাল দিয়ে ধরেছে ও ফুলগুলো আর যথা সম্ভব নিজের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে ও।

রিক্ত অফিসের সবার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। রিশানের গাড়ির শব্দ শুনতেই রিক্ত সহ সবাই তাড়াহুড়ো করে যে যার ডেস্কে চলে এসে কাজ করতে শুরু করে।

অফিসে ফুল নিয়ে ঢুকতেই সবাই হা হয়ে তাকায় রিশানের দিকে। ফুল তাও রিশানের হাতে, কার জন্য এনেছে রিশান ফুলগুলো? সবাই কানাকানি করছে।

মাত্র নিজের কেবিন থেকে বেরিয়েছে শায়েরা। বের হতেই দেখে সবাই এক দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। শায়েরা সবার দৃষ্টি বরাবর তাকাতেই দেখে রিশান আসছে।

রিশানের এক হাতে ফুল আরেক হাত প্যান্টের পকেটে ঢুকানো। শায়েরার চোখে পলক পরছে না রিশানকে।

রিশান এসেই শায়েরার সামনে দাঁড়ায়। অদ্ভুত লাগছে ওর কাছে। সবাই যে ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে ও কোনো এলিয়েন।

রিশানঃ তোমার জন্য – রিশান কিছু না ভেবেই ফুল গুলো শায়েরার হাতে ধরিয়ে দেয়। শায়েরা সহ সবাই অবাক ওর কাজে।

রিশান সবার এমন অবাক চাহনির বিষয়টা বুঝতে পারে না তাই কিছুটা ধমকের স্বরে সবার উদ্দেশ্যে বলে ও।

রিশানঃ এখানে কি মুভি চলছে যে কাজ ফেলে হা করে তাকিয়ে আছে সবাই?

রিশানের এক ধমকে সবাই হন্তদন্ত করে কাজ শুরু করে দেয়।

রিশান আর কিছু না বলে সোজা হেঁটে ওর কেবিনে চলে যায়।

শায়েরাঃ এটা কি সত্যি রিশান?( অবাক হয়ে ) অবশ্যই এটা রিশান আমার রিশান।( ব্লালিং হয়ে )

শায়েরা ফুল গুলোর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।

রিক্তঃ ফাইনালি রিশান রায়জাদা নিজের ফিলিং বুঝতে পেরেছে। – আপেলে কামড় বসিয়ে।

রিক্ত আপেলটা টেবিলে রেখে ওর পেছনে চলে যায়।

রিক্তঃ আমার জন্য কোনো কাজ আছে বসস?( কেবিনে ঢুকে)

রিশানঃ নাহ!( ল্যাপটপে তাকিয়ে )

রিক্তঃ না মানে? ( অবাক হয়ে )

রিশানঃ আজ থেকে তোমার এই কাজ করতে হবে না। তুমি যেতে পারো।

রিক্তঃ তার মানে আমি এক মাসের এক্সামে পাস হয়ে গেছি?( খুশি হয়ে )

রিশানঃ পাস হয়েছো নাকি ফেইল সেটা আমি তোমাকে কালকে বলবো। নাও গোও আমি কাজ করছি।

রিক্তঃ ওকে বস আমি তোকে ডিস্টার্ব করবো না। কালকে রেজাল্টের অপেক্ষায় থাকবো। তোর সাথে কাজ করে অনেক ভালো লাগলো।( বুকে হাত রেখে ঝুঁকে )

রিশানঃ তোমার যখন এতোই ভালো লেগেছে তাহলে তুমি সারাজীবন আমার অফিসে পিয়নের কাজ করতে পারো।( মজা করে )

রিশানের কথা শুনে রিক্তর চোখের রং উড়ে যায়।

রিক্তঃ না না না কোনো দরকার নেই। আমি যাচ্ছি।( দ্রুত চলে গেল )

রিক্তর রিয়েকশন দেখে রিশানের হাসি থামলো না।

রিশানঃ তোমার জন্য অনেক বড় শক উরফে সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে। জাস্ট ওয়েই।( বাঁকা হেসে )

?
আর্থ আর সাব্বির ওদের কেসের বিষয়ে কথা বলছে। কিছু ক্লু পেয়েছে ওরা সেটা নিয়েই ডিসকাশন করছে।

আর্থঃ এবার না এরেন বাঁচবে আর না ওর জাসুস।

সাব্বিরঃ তুই সিউর এই প্লান কাজ করবে?

আর্থঃ আজ পর্যন্ত আমার কোনো প্লান ফ্লপ হয়েছে?

সাব্বিরঃ একদম না।( হাই ফাইভ দিয়ে )

ওদের কথা গুলো লুকিয়ে শুনছে কেউ। দরজার আড়ালে কারও উপস্থিতি টের পেয়ে সেই দিকে গেল আর্থ কিন্তু ও যেতে যেতে মানুষটি পালিয়ে যায়।

আর্থঃ কেউ তো ছিল এখানে। নিশ্চয়ই ওই স্পাইটা ছিল।

আর্থ ফিরে আসতে নিলেই একটা লাইটার পরে থাকতে দেখে। লাইটার টা তুলে নেয় ও।

আর্থঃ চোর চলে গেছে তো কি হয়েছে প্রমান তো রেখে গেছে।( বাঁকা হেসে )

?
রিক্ত অফিস থেকে সোজা রিশিকার কলেজে চলে আসে।

বাইরে পায়চারি করছে রিক্ত। অনেক দিন পর রিশিকার সাথে দেখা করছে ও।

রিশিকা কলেজ থেকে বের হতেই রিক্তকে দেখে অবাক হয়।

রিশিকাকে দেখে রিক্তর ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠে। নিজের হাত বাড়িয়ে দেয় রিক্ত সাথে সাথে রিশিকা ওকে জড়িয়ে ধরে।

রিশিকাঃ আপনি অনেক পঁচা রিক্ত। আমি আপনাকে কতটা মিস করেছি আপনি জানেন?

রিক্তঃ জানি। কিন্তু আমার থেকে বেশি না সেটাও জানি।( রিশিকার মাথায় চুমু দিয়ে )

?
হায়াতি কলেজের বাইরে অপেক্ষা করছে আর্থের কিন্তু আজকে ওর আসার খবর নেই।

হায়াতিঃ উফ্ আর সময় তো আগে থেকেই এসে দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু আজ আসার খবরই নেই।( বিরক্ত হয়ে )

নিলয়ঃ হায়াতি চলো তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দেই। আর্থ স্যার বলেজে আজকে ওনার দরকারি কাজ আছে তাই আসতে পারবেন না। তাই আমাকে বলেছে তোমায় ড্রপ করে আসতে – সামনে এসে।

হায়াতিঃ আসবে না?( মন খারাপ করে )

নিলয় মাথা নাড়িয়ে না করলো। হায়াতির কেন যেন রাগ লাগছে আজ আর্থের না আসায়। মন খারাপ ও হচ্ছে কিন্তু কেন সেটা বুঝতে পারছে না ও।

To be continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here