?#The_Vampire_King?,07,08
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Fahmida_Shabnam
#Part_7
শবনমঃ হ্যালোওওওওও সবাই কি বয়রা হয়ে গেছে,,,, ( রেগে)
শবনম রাগে দুঃখে মাটিতে জোরে পা দিয়ে বারি বসিয়ে দেয় বাট আফসোস মাটির কিছুই হলো না বেচারি পায়ে ব্যাথা পেয়ে পা তুলে লাফাতে শুরু করে।
শবনমঃ আহহহহ্ আম্মিইই,,, ? তনুকি বাচ্চিইই আমি জানি তুই ইচ্ছে করে আমাকে এরকম টাস্ক দিয়েছিস। দেখে নিব তোকে আমি,,, একবার এখান থেকে বেরই তারপর তোকে বুঝাবো শবনম কি চিজ্ হুহহ ?
শবনম সাইড ধরে উঠার চেষ্টা করছে কিন্তু বারবার স্লিপ খেয়ে পরে যাচ্ছে। হঠাৎ উপরে উঠতে গিয়ে ও স্লিপ খেয়ে নিচে পরে যায়। নিচে পরে যেতেই হাতে ধারালো কিছু লেগে হাত কেটে যায় ওর। কপালের এক সাইডে হালকা ছিলে গেছে।
শবনমঃ আআআহ
শবনম হাত ধরে উঠে বসে। হাতের কনুই আর তালু ছিলে গিয়েছে। ফোঁটা ফোঁটা রক্ত বের হচ্ছে সেখান থেকে। অন্ধকারের কারনে কতটুকু কেটেছে তা বুঝা যাচ্ছে না।
হাত ধরেই দাঁড়িয়ে যায় ও তারপর আবার সবাইকে ডাকতে শুরু করে।
শবনমঃ ধ্রুবববব আশিশশশ,,,,
হঠাৎ কারো পায়ের শব্দ শুনতে পেল ও।
শবনমঃ হ্যালোওওওওও এক্সকিউজ মিইই,,,,, দেখেন আমি নিচে পরে গিয়েছি প্লিজ আমাকে তুলুনননন,,,
পায়ের শব্দ গর্তটার সামনে এসে থামে। শবনম কারো অবয়ব দেখতে পেলো উপরে । কেউ উপরে দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো লোকটি শুনতে পেরেছে যে শবনম নিচে পরে গিয়েছে তাই তাকে তোলার জন্য এসেছে।
শবনমঃ হ্যালোওওওওও এক্সকিউজ মিইই,,, দেখেন আমি এখানে,,,
উপরের লোকটিকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে না ও। কিন্তু লোকটি হুডি টাইপ পোষাক পরেছে তা বুঝতে পারছে ও।
শবনমঃ দেখেন প্লিজ আমার হেল্প করুন। আমি উঠতে পারছি না নিজে নিজে…..
শবনম আর কিছু বলার আগেই ওর উপর কিছু একটা পরলো।
শবনমঃ আআআআ সাপ সাপ সাপ সাপ,,,,,
জিনিসটাকে সাপ ভেবে শবনম ভয়ে লাফাতে শুরু করে। হঠাৎ জিনিসটির দিকে নজর যেতেই ওর লাফানো বন্ধ হয়ে যায়। কারন এটা সাপ না একটা দড়ি।
শবনম উপরের দিকে তাকিয়ে দেখে লোকটি দু হাত ভাজ করে ওর কান্ড দেখছে। শবনম নিজের মাথায় চর দিয়ে দড়িটা ধরলো। ও দড়িটা ধরতেই লোকটি দড়ি ধরে ওকে তুলতে শুরু করল। অনেক কষ্টে শবনম দড়ি ধরে উপরের দিকে উঠলো। উপরে আসতেই লোকটি নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো শবনমের দিকে। শবনম লোকটির হাতে হাত রাখতেই একটানে ওকে উপরে টেনে আনলো লোকটি। শবনম টাল সামলাতে না পেরে আগন্তুক এর বুকে গিয়ে পরে।
শবনম লোকটির বুকে আর লোকটির এক হাত ওর পিঠে। স্পর্শটা ওর অনেক চেনা চেনা লাগছে। হঠাৎ শবনমের সেই কফিনের কথাটা মনে পরে যায়। তারপর দুপুরে ঘটে যাওয়া ঘটনা। একি স্পর্শ যেটা তখন অনুভব করছিল আর এখন অনুভব করছে। ধ্রুবর আওয়াজ কানে আসতেই শবনম লোকটিকে ছেড়ে পেছনে ফিরে।
সবাই দৌড়ে ওর দিকেই আসছে। শবনম লোকটিকে কিছু বলার জন্য পিছনে ফিরতেই দেখে লোকটি নেই। আশেপাশে কোথাও নেই লোকটি।
শবনমঃ কোথায় গেল এখানেই তো ছিল,,,, ( অবাক হয়ে)
ধ্রুবঃ শবনম তুমি ঠিক আছো। তোমার চিৎকার শুনতে পেয়ে কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। থ্যাংস টু আল্লাহ তুমি ঠিক আছো। ( ভয়ার্ত কন্ঠে)
ধ্রুবর কথায় শবনমের কোন খেয়ালই নেই ওর চোখতো আশেপাশে শুধু আগন্তুক টাকে খুঁজছে।
আয়রাঃ তুই কথা বলছিস না কেন তোকে আমরা কিছু জিজ্ঞেস করছি,,,
শবনমঃ হ্যাঁ হ্যাঁ আমি ঠিক আছি তো। ( আশেপাশে দেখতে দেখতে)
হঠাৎ ধ্রুবর চোখ শবনমের কপালের দিকে যায়।
ধ্রুবঃ এটা কিভাবে হলো শবনম?? কতখানি কেটে গিয়েছে।
শবনমঃ পরে গিয়েছিলাম,,,
আয়রাঃ কিন্তু কীভাবে,,, আর…
ধ্রুবঃ সব কথা পরে হবে আগে টেন্টে চলো। এই মুহুর্তে এখানে থাকা রিস্কি কাম গাইজ,,,
সবাই ধ্রুবর কথা মতো টেন্টে চলে আসে। আয়রা শবনমের ঘায়ে ফার্স্ট এইড করছে আর শবনম সবাইকে বলছে ওখানে কি হয়েছিল। কিন্তু আগন্তুকটির কথা ও বলে নি,,,
ধ্রুব শবনমের কথা গুলো মনোযোগ সহকারে শুনছে কিছু একটা খটকা লাগছে ওর কাছে।
ধ্রুবঃ কিছু একটা আছে যেটা আমার অজানা। আই ক্যান ফিল ওরা আমাদের আশেপাশে আছে।
নাহ হয়তো এটা আমার মনের ভুল। ওরা যদি আশেপাশে থাকতো তাহলে আমাদের উপর হামলা অবশ্যই করতো। শবনম মানুষ তাছাড়া ও এতক্ষন একা ছিল সেখানে যদি ওরা আশেপাশে থাকতো শবনমের ব্লাডের স্মেল পেয়ে ওর উপর ও আ্যটাক করতে পারতো।
নেই ওরা এখানে নেই,,, নিজের মনকে অনেক করে বুঝিয়ে নেয় ধ্রুব।
রাত গভীর হতেই সবাই তাদের নির্ধারিত টেন্টে ঘুমিয়ে পরে। শবনম আয়রা আর দু’টো মেয়ে এক সাথে ঘুমিয়েছে। টেন্ট গুলোর বাইরে আগুন জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে যেন কোন বন্য প্রানী এ্যাটেক না করে। আর তিন জন লোককে টেন্টের বাইরে পাহারায় রাখা হয়েছে।
সব গুলো টেন্টের এক সাইডে ইলেকট্রিক হারিকেন জ্বালানো। হারিকেন এর আলোতে টেন্টের ভিতরে আবছা আলো ছড়াচ্ছে।
আঁধার সবার আড়ালে টেন্টের ভিতরে ঢুকে পরে। এক পাশ ফিরে ঘুমে বিভোর শবনম। ধীর পায়ে শবনমের পাশে চলে গেল আঁধার।
শবনমের পাশে বসে ওর দিকে কিছুটা ঝুকে বসলো ও। শবনমের দড়িকে সাপ ভেবে লাফানোর দৃশ্যটা আঁধারের চোখে ভেসে উঠতেই ঠোঁটে অটোমেটিককি হাসি চলে আসলো ওর। এই হাসিটার মধ্যে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা আছে আঁধারের।
শবনমের কপালের ক্ষত এর দিকে চোখ যেতেই হাসিটা নিমিষেই বিমর্ষ মুখে পরিণত হয় ওর। আঁধার আরেকটু ঝুঁকে শবনমের কপালের সাইডে ঘা টায় ঠোঁট ছোয়ালো সাথে সাথে কপালের ক্ষত গায়েব হয়ে যায়। শবনমের হাত আলতো করে তুলে ওর কনুইয়ের স্লাইড করতেই সেখানের ক্ষত গায়েব হয়ে যায়। আঁধার শবনমের হাতের তালুতে আলতো করে নিজের হাতের তালু দিয়ে ঘষে দেয় আর এই ক্ষত ও গায়েব হয়ে যায়।
শবনমের কপালে পরা চুল গুলো ওর কানের পেছনে গুঁজে দিতে দিতে বলল আঁধার।
আঁধারঃ সময় চলে এসেছে। নিজেকে প্রস্তুত করো কারন এখন থেকে তোমার জীবনে যতটা ঘটনা ঘটবে সব কিছুই তোমার কাছে ধোয়াশা। তোমাদের লাইফে আমার আগমনের সময় চলে এসেছে। তোমার এই আননোন এখন তোমার চোখের সামনে থাকবে প্রতি মুহূর্ত। এখন দেখা যাক তুমি আমাকে চিনতে পারো নাকি। আমি আছি ছিলাম থাকবো সবসময় তোমার আশেপাশে,,, হয়তো আননোন হয়ে নাহয় কাছের কেউ হয়ে।
আঁধার কথা গুলো বলেই উঠে দাঁড়ায়। তারপর শবনমের দিকে এক পলক তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে বাঁকা হেসে বেড়িয়ে যায় টেন্ট থেকে।
To be continued….
#The_Vampire_King
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_8
সকাল আটটা,,,
সবাই প্যাকিং করছে ফিরে যাওয়ার জন্য এবং সবার জিনিসপত্র গুছিয়ে বাসে তুলে রাখছে,, কিন্তু তনু এখনো টেন্ট থেকে বের হয় নি। ওকে আলাদা ভাবে প্রাইভেট টেন্ট দেওয়া হয়েছে কারন ও শেয়ার করতে রাজি হয়নি।
শবনম আশিশ আর আয়রা এক সাইডে একটা বড় গাছের ভাঙা ডালে বসে গল্প করছে। তিন জনের মুখেই শয়তানি হাসি,,,
আশিশঃ উফফ এই তনু এখনো টেন্ট থেকে বের হচ্ছে না কেন?? ও বের না হলে সার্কাস শুরু হবে কিভাবে?
আয়রাঃ শবনম যদি কেউ আমাদের উপর সন্দেহ করে,,, আই মিন বুঝে যায় তনুর সাথে এই প্র্যাঙ্ক আমরা করেছি,, তখন! ( ভয়ে ভয়ে)
শবনমঃ উফফ ভীতুর ডিম চুপ কর তো,,, তোর জন্য একদিন ঠিকই আমরা ফেসে যাবো। আর হ্যাঁ কেউ বুঝুক আর না বুঝুক আই ডোন্ট কেয়ার। ওই তনু কালকে ইচ্ছে করে প্লান বানিয়ে আমাকে জঙ্গলে পাঠিয়ে ফাসিয়েছে সেটার সোধ তো তুলতেই হয়,,, আর আ’ম সিউর আজকের পর থেকে ও আমার সাথে এরকম ডার্টি গেইম খেলার আগে হাজার বার ভাববে,,,
জাস্ট ওয়েইট অ্যান্ড ওয়াচ্ কি হয়,,,( ডেভিল স্মাইল দিয়ে)
তনু হামি দিতে দিতে টেন্ট থেকে বের হলো। ওকে দেখেই সবাই ভূত দেখার মতো চমকে গেল। শবনম আশিশ আর আয়রা দাঁড়িয়ে মুখ টিপে টিপে হাসছে।
সবাইকে এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে তনু কপাল কুঁচকে বলল,,
তনুঃ হোয়াট?? সবাই আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?? আই নো মর্নিং এয়ারে আমাকে একটু বেশিই সুন্দর লাগে,,,, এজন্য নিজেদের কাজ ফেলে রেখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। ( ভাব নিয়ে)
তনুর কথা শেষ না হতেই সবাই হো হো করে হেসে দিল,,, সাথে শবনম আশিশ আর আয়রা ও। সবাই কন্ট্রোললেস ভাবে হাসছে তনুর দিকে তাকিয়ে।
সবাইকে নিজের দিকে তাকিয়ে হাসতে দেখে তনুর কেমন যেন আনকমফরটেবন লাগছে। ও বুঝতে পারছে না সবার হাসির কারন।
শবনম হাতে একটা ছোট মিরর গ্লাস নিয়ে এগিয়ে এসে তনুকে বলল,,,
শবনমঃ মিস ইউনিভার্স তোমাকে কতটা সুন্দর লাগছে সেটা নাহয় তুমি আয়নায় একবার দেখে নাও,,, ( হাসি কন্ট্রোল করতে করতে মিরর এগিয়ে দিয়ে)
তনু চোখ কুঁচকে মুখ বাঁকিয়ে শবনমের হাত থেকে মিরর টা নিল,,, মিররে নিজেকে দেখে চোখ বড় বড় হয়ে যায় তনুর।
তনুঃ আআআআআ ( চিৎকার দিয়ে মিরর ফেলে দেয় ও)
নিজেকে দেখছে নাকি কোন জোকারকে দেখছে বুঝতে পারছে না তনু,,, সবাই আবারো হো হো করে হেসে দেয় সাথে শবনমও,,,
[ শবনম রাতের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ভোরের দিকে তনুর টেন্টে যায়। তারপর নিজের মেকআপ বক্স দিয়ে তনুকে জোকারের মতো সাজিয়ে দেয়। তনু ঘুমের ঘোরে আলাপও পায়নি। আর টেন্টে কোন পার্টনার না থাকায় শবনমের অনেক সুবিধা হয় লুকিয়ে তনুর ফেসের এসব করার।]
তনু রাগী লুক নিয়ে শবনমের দিকে তাকিয়ে বলে,,
তনুঃ এসব তুমি করেছে আমি জানি,,, আই ওয়োন্ট স্পেয়ার ইউউ শবনম,,,
শবনমঃ আমি??( না জানার ভান করে) আমি কখন করলাম তনু তুমি আমাকে দোষ দিচ্ছ কেন?? তোমার মেকআপ অনেক পছন্দ তাই হয়তো ঘুমের ঘোরে নিজেই নিজের মেকওভার করেছে ( হাসতে হাসতে)
তনুঃ একদম না,,, আমার এই অবস্থা তুমি করেছো কালকের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য,,,
শবনমঃ আমিতো এখানে সবার সাথেই ছিলাম তুমি সবাইকে জিজ্ঞেস করে দেখো।
ধ্রুবঃ হ্যাঁ তনু শবনম এখানেই ছিল আমাদের সাথে। তোমার টেন্টের আশেপাশেও ও যায়নি,,,
তনুঃ ও মিথ্যা বলছে,,,
স্যারঃ কি হচ্ছে এখানে,, ( ধমক দিয়ে)
স্যারের ধমকে তনু চুপ করে যায়। সাথে সবাই হাসা বন্ধ করে সাইলেন্ট হয়ে যায়।
স্যারঃ ঝগড়া না করে গিয়ে এসব ধূয়ে আসো। আমাদের বেড়োতে হবে কিছুক্ষন পর। আর কে করেছে না করেছে সেটা পরে ডিসাইড হবে কলেজে। এখন কোন ধরনের ঝগড়া আমি শুনতে চাই না। গোও,,,
তনুঃ জি স্যার,,, ( দাতেদাত চেঁপে)
তনু শবনমের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে মনে মনে বলতে শুরু করে,,,
তনুঃ ইউ হ্যাভ টু পে ফর দিস্ শবনম। তোমার জন্য আমাকে সবার সামনে হিউমিলেট হতে হয়েছে এর রিভেন্জ আমি নিবই,,, ( রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে)
কিছুক্ষণ পর,,,
সবাই শেষ বারের মতো ফরেস্ট টা ঘুরে দেখছে,,, ধ্রুব যেহেতু ক্যাপ্টেন তাই ও সবাইকে রাস্তা গাইড করছে,,,
সবাই যার যার ক্যামেরা দিয়ে যায়গাটার ফটোশুট করছে,, শবনমও ওর ক্যামেরায় ইনট্রেস্টিং লাগার মতো গাছ পাখি ও বিভিন্ন ইনসেক্টস্ এর ছবি তুলছে,,,
ওরা কিছু দূর যেতে একটা ছোট পুকুর দেখতে পেল,,, সবাই সেখানে ঘুরে অন্য সাইডে ব্যাক করে। শবনম যেতেই নেয় তখনই ওর চোখ যায় কিছুটা দূরে ফুটে থাকা একটা পদ্ম ফুলের দিকে। শবনম বরাবরই ফুলের প্রতি অনেক দূর্বল। ফুলটা দেখেই ওর ভালো লেগে যায়। সাত পাঁচ না ভেবেই শবনম পুকুরের ধারে চলে যায়। ফুলটা অনেকটা দূরে তাই ও হাত বাড়িয়ে নিতে পারছে না।
শবনমঃ এটাতো কত দূর,, তার উপরে এটার গায়ে কত কাঁটা যদি হাতে ফুঁটে?? যেভাবেই হোক ফুলটা আমার চাইইইই,,, আশেপাশে দেখি কিছু পাই কি না,,,
শবনম আশেপাশে কিছু একটা খুঁজছে ফুলটা সামনে আনার জন্য। কিছুটা দূরে ওর চোখ যায় একটা বড় ভাঙা ডালের উপর। শবনম দৌঁড়ে ডালটা তুলে নেয় তারপর ওটা দিয়ে ফুলটা সামনে আনার চেষ্টা করতে থাকে।
হঠাৎ করেই পেছন থেকে কেউ শবনমকে ধাক্কা মেরে দেয় আর শবনম পুকুরে পরে যায়। শবনম সাঁতার জানে না তাই পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে ও,,,
শবনমঃ হ হ্যা হ্যাল্প ( অনেক কষ্টে উঠার চেষ্টা করতে করতে)
একবার পানির অতলে ডুবে যাচ্ছে শবনম আবার কোন রকমে উঠে নিঃশ্বাস নিচ্ছে,,, সবাই অনেক দূরে চলে গিয়েছে তাই ওর ডাক কারো কানে যাচ্ছে না,,, পানির অতলে হারিয়ে যাচ্ছে ও,,,
পুকুরের অপর পাশ দিয়ে কেউ পুকুরে নেমে পরে,,, হঠাৎ শবনম নিজের হাতে কারো হাতের স্পর্শ পেল,,, কেউ নিজের দিকে টেনে নিয়েছে ওকে,,, চোখ খোলা অবস্থায় শবনম তাকে দেখার চেষ্টা করছে,,, সবুজ ঘোলাটে পানিতে তাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু তার স্পর্শ শবনম ঠিকই চিনে ফেলেছে,,, সে শবনমকে নিজের দিকে টেনে বুকের মাঝে জড়িয়ে নেয়,,,, শবনম তার কলারের সাইড টাইট করে ধরে ফেলে,,,
উপরের দিকে উঠছে সে শবনমকে নিয়ে। তার দৃষ্টি শবনমের দিকেই। এই দৃষ্টির মাঝে কি আছে বুঝতে পারছে না শবনম বারবার প্রতিটি বিপদে এই দৃষ্টির মানুষটিই ওর ঢাল হয়ে আসে,,,
ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করে ফেলে শবনম,,, কিন্তু বন্ধ চোখেই ও নিজের মুখে সূর্যের কিরণ অনুভব করে,,,
চোখ এখনো ঝাপসা হয়ে খোলার চেষ্টা করছে শবনম,, চোখে সূর্যের আলো পরছে,,, হঠাৎ ই সূর্যের আলো আড়াল করে ফেলে কেউ,,,
কেউ ঝুঁকে আছে শবনমের দিকে তাই সূর্য তার আড়াল হয়ে গেছে। তার চুল বেয়ে নেমে আসা পানি তার মুখে এসে সেটা শবনমের মুখের উপর পরছে। শবনম কোন রকমে হাত তুলে তাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছে,,, শবনমের হাত সেই লোকটির গালে স্পর্শ করে। লোকটি শবনমের হাতের উপর নিজের হাত রাখে,,,
ভাঙা ভাঙা কন্ঠে শবনম বলে উঠে,,,,
শবনমঃ হ হু আর ই ইউউ,,,
সে মুচকি হেসে মুখটা শবনমের কানের কাছে নিয়ে বলে,,,
সেঃ আমি কে সেটা তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে,,, ফিলহাল আমার একটাই পরিচয় তোমার কাছে I’m your #A_Unknown_Lover (বাকা হেসে)
এই ঝাপসা চাহনি বন্ধ করে ফেলে শবনম,,, সে লোকটি এখনো শবনমের দিকেই অপলক তাকিয়ে আছে তার মুখের পানি বেয়ে শবনমের মুখে পরছে,,,,
না চাইতেও শবনমের মোহে পরে যাচ্ছে সে,,, শবনমের নিঃশ্বাস এর গতিবিধি তার দুনিয়া উলট পালট করে দিচ্ছে,,,,
চোখের ভেজা পাপড়ির পলক পরছেই না তার,,, ইচ্ছে করছে সময়টা এখানেই থেমে যাক,,,,
To be continued…..