The_Vampire_King ♠️,33,34

0
1690

♠️ #The_Vampire_King ♠️,33,34
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_33
.
.
.
.
ইয়ান আর মিম‌ নিজেদের জায়গায় বসে পরল। সবাই যার যার মত করে ব্যস্ত। কিন্তু সবার‌ মাঝে আসিফ গায়েব। ইয়ান বিষয়টা খেয়াল করে সবার আড়ালে উঠে আসে মিমের পাশ থেকে।

আসিফ‌ নিজের সন্দেহ সত্য কিনা যাচাই করতে পুরো বাড়ি তালাশি করছে। আসিফ যেতে যেতে ‌উপরের সবচেয়ে শেষের রুমটার সামনে চলে যায়। রুমটার দরজা খুলতেই অবাক হয়ে যায় আসিফ। হন্তদন্ত করে ভিতরে‌‌ ঢুকে ও। রুমটার ভিতরে কয়েকটা কফিন রাখা‌‌। রুমে এতো ঠান্ডা মনে হচ্ছে যেন বরফ রেখে দেওয়া হয়েছে। রুমের দেয়ালে ড্রাকুলার শেপের আকৃতিতে ছবি আঁকা। এখানে ওখানে রক্তের ছাপ দেখে আঁতকে উঠে আসিফ।

আসিফঃ তাহলে আমার সন্দেহ সঠিক ছিল। দে আর ভ্যাম্পায়ারস্ ( কাঁপা কন্ঠে)‌ আমি এ বিয়ে হতে দিব না।তারা মানুষনা তারা মানুষ রূপি পিশাচ। আই হ্যাভ টু টেল দ্যাম অল।

আসিফ বের হওয়ার জন্য পা বাড়াতেই দেখলো দরজার‌ সামনে ইয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আসিফকে এখানে দেখে ওর চেহারার রং পাল্টে গেছে।

ইয়ানঃ আ আঙ্কেল আমি…

আসিফঃ কিচ্ছু শুনতে চাই না আমি। ইউউউ লায়ার চিটার। আমাদের ধোঁকা দিয়েছো তোমরা। কোন সাহসে ভ্যাম্পায়ার হওয়া সত্ত্বেও মিমকে বিয়ে করতে চেয়েছো তুমি। আজকে তোমাদের আসল রূপ আমি সবার‌ সামনে আনবো। আই উইশ এক্সপোজ ইউউ অলল( রেগে)

ইয়ানঃ আমার কথাটা একবার শোনেন মি. চৌধুরী। প্লিজ শান্ত হয়ে আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করুন।( করুন স্বরে)

আসিফঃ কিচ্ছু শুনতে চাই না আমি। সরে দাঁড়াও আমার পথ থেকে।

আসিফ রেগে ইয়ানকে সরিয়ে ‌বের হতে নিলেই ইয়ানের কথা শুনে থমকে যায়।

ইমানঃ আপনার মেয়ে আমার কাছে মি. চৌধুরী।

আসিফ কাঁপা কাঁপা শরীরে ইয়ানের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। ওর চোখ ছলছল করছে। হাত পা কাঁপছে।

আসিফঃ ত তুমি কি বলতে চাচ্ছো?

ইয়ানঃ‌ এটাই যে এতো বছর ধরে যে মেয়ে কে আপনারা মৃত‌‌ ভেবেছেন সে জীবিত আছে সুরক্ষিত আছে আমার কাছে আছে।

আসিফ এবার নিজেকে সামলাতে পারলেন না। ছুটে গিয়ে ইয়ানকে কাঁধ ধরে ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগলো।

আসিফঃ আ আমার মেয়ে তোমার কাছে?‌ কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব। সেদিন আমার সামনে‌ ওরা আমার মেয়েকে মারার জন্য তুলে নিয়ে গিয়েছিল হাজার খুঁজেও তাদের পাইনি আমি।

ইয়ানঃ আপনি শান্ত হন আমি আপনাকে সব বুঝিয়ে বলছি প্লিজ কাম ডাউন।

ইয়ান আসিফকে পাশে থাকা একটা চেয়ারে বসিয়ে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরল তারপর ওকে ঘটে যাওয়া সব কথা আস্তে আস্তে বলতে শুরু করল।

ইয়ানের কথা গুলো শুনে আসিফ যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে।

আসিফঃ কোয়েল আমার মেয়ে?( কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)

ইয়ানঃ হুম‌।‌ সেদিন ওদের থেকে আমি কোয়েলকে বাঁচিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসি। আমার মনে ভয় কাজ করছিল যদি কোয়েলকে ফিরে পেয়ে আপনারা শবনমের দায়িত্ব ভালো করে পালন না করেন তাই আমি ওকে নিজের কাছে রেখে দেই। নিজের বোনের মত আদর ভালোবাসা দিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে ওকে বড় করি।

আসিফ শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইয়ানের দিকে। ইয়ান আবারো বলতে শুরু করে।

ইয়ানঃ আপনি যে কারণে আমাদের এতো ঘৃনা করেন সে অপরাধ আমরা করিই নি। হ্যাঁ মানছি ওরাও ভ্যাম্পায়ার জাতি কিন্তু ওদের সাথে আমাদের মিল নেই। ওরা Level_E আর আমরা Pure Blooded. উই আর ডিফারেন্ট ফ্রম ইচ আদার। আমি সত্যিই মিমকে খুব ভালোবাসি। ও জানে আমার অস্তিত্ব সম্পর্কে তাও আমাকে ভালোবাসে ও। প্লিজ ওকে আমার কাছ থেকে দূরে করবেন না প্লিজজ। ( করুন স্বরে)

আসিফ কিছু না বলেই বেরিয়ে যায় রুম থেকে। ইয়ান আহত চোখে তাকিয়ে আছে আসিফের যাওয়ার দিকে। আজ‌ হয়তো পেয়েও হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছে ও নিজের ভালোবাসাকে।

আসিফ সোজা নিচে নেমে আসে। সব পরিষ্কার হয়ে গেছে ওর কাছে আজ। কোন প্রশ্ন কোন দ্বিধা নেই মনে। আসিফ নামতেই কোয়েলকে দেখতে পেলো। সবার সাথে হাসাহাসি করছে ও। আসিফ কোয়েলের দিকে তাকিয়ে ভাবছে “ নিজের মেয়েকে এতো কাছ থেকেও চিনতে পারল না ও”।

♠️♠️♠️

শবনম গিয়ে আঁধারের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে ওকে বলতে শুরু করল।

শবনমঃ মি. খারুস শয়তান রেজওয়ান আপনি কি নিজের চ্যালেঞ্জ এর কথা ভূলে গেছেন? ও বুঝেছি হয়তো হার মেনে গেছেন তাইনা?( পিঞ্চ মেরে বলল)

আঁধার‌ বাঁকা হেসে শবনমের দিকে‌‌ তাকিয়ে বলতে শুরু করে।

আঁধারঃ তোমার গায়ে জড়ানো ড্রেসটা কিন্তু আমারই দেওয়া যেটা ওই হলুদ প্যাকেটে ছিল।‌ সিরিয়াসলি শবনম তুমি এতো বোকা? এইটুকু বুঝলে না যে তোমার উপর হঠাৎ ওয়াইন পরলো কোত্থেকে আর কোয়েলের রুমে গিয়ে কিভাবে রেডিমেড ড্রেস পেয়ে গেলে।

শবনম হা হয়ে গেছে আঁধারের কথায়। ওর কাছে এখন‌ সব কিছু স্পষ্ট হচ্ছে। কোয়েল এই শয়তান রেজওয়ান এর সাথে মিলে ওকে গোল খাওয়ালো ভাবতেই রাগ লাগছে ওর।

শবনমঃ কোয়েলল কি বাচ্চিই নতুন যুগের মিল জাফর সেজে আমার মত নিষ্পাপ সিরাজদৌলার সাথে বেঈমানি করতে পারলি। আর আপনিইই‌‌ দ্যা শয়তান খবিস রেজোয়ান আমি দেখে নিব আপনাকে। ( রেগে )

আঁধার শবনমের দিকে‌‌ ঝুঁকে ওর কপালের চুল গুলো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে বলল।

আঁধারঃ আ’ম অল ইউরস্ যত খুশি দেখো। ( বাঁকা হেসে)

শবনম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে উল্টা পায়ে দৌড় দেয়। আঁধার‌ হাসছে শবনমের ভিতু ফেস নিয়ে দৌড়ানো দেখে।

শবনম আঁধারকে বিরবির করে বকতে বকতে হাঁটছে। সামনে আসিফকে ‌আনমনা দেখে শবনম ওর কাছে চলে যায়।

শবনমঃ আব্বি ফাংশন তো শেষ এখন চলো না বাসায় যাই আমার ভালো লাগছে না এখানে। ( আঁধারের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে)

আসিফঃ শবনম তুমি মায়ার কাছে যাও আমি পরে আসছি।

শবনমঃ পরে কেন এখন চলো,,, (জেদ করে)

শবনম আসিফের হাত ধরে‌ টান দিতেই আসিফ ওকে ধমক দিয়ে উঠে,,

আসিফঃ একবার বললে কথা বুঝো না তুমি আই পেইড গোও।

শবনম কিছুটা কেঁপে উঠে ধমক শুনে কারন কখনো আসিফ উচ্চ স্বরে কথা বলে নি কিন্তু আজ ওকে ধমক দিল। শবনম মাথা নিচু করে কান্না করতে করতে চলে যায়।

দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল আঁধার শবনম আর আসিফকে। রাগ লাগছে অনেক ওর।

আঁধারঃ আগে থেকেই জানতাম এমনটাই হবে। সত্য তো এটাই যে মানুষ জাতিই এমন আপনকে পেলে পরকে ভূলে যায়। চিন্তা নেই মি. আসিফ খুব শীঘ্রই ওকে আপনাদের থেকে নিয়ে আসবো‌ আমি। আমার আমানত আমার কাছে ফিরিয়ে আনবো। ( মনে মনে

শবনম বাড়ির ছাদে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কান্না করছে আর হিচকি তুলছে। হঠাৎ ওর সামনে কেউ রুমাল এগিয়ে দেয়। শবনম অবাক হয়ে পাশে তাকাতেই দেখলো ‌আঁধার ওর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে আর ওর দিকে রুমাল এগিয়ে দিয়েছে। আঁধারকে দেখে শবনমের এবার অনেক রাগ লাগছে। নিশ্চয়ই ওর কান্না দেখে মজা নিতে এসেছে।

শবনমঃ আপনার অনেক খুশি লাগছে তাই না আমার কান্না দেখে। আপনার মনে তো লাড্ডু ফুটছে।‌ আপনি অনেক পঁচা সেদিনও আপনার জন্য আমার আব্বি আমাকে ধমক দিয়েছে আর আজও সব আপনার দোষ। ইউ আর দ্যা ডেভিল অফ মাই লাইফ।

শবনম কথা গুলো আঁধারকে বলে চলে যেতে নিলেই আঁধার ওর হাত ধরে আটকিয়ে দেয়। শবনম অবাক চোখে তাকালো আঁধারের দিকে।

আঁধার এক ঝটকায় শবনমকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। শবনম ছাড়া পাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করতেই আঁধার‌ ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করল।

আঁধারঃ ছুটাছুটি করার চেষ্টা করলে এমন কিছু করে বসবো যেটা তোমার পছন্দ হবে না। সো শান্ত হয়ে আমার কথা গুলো শুনো।

আঁধারের কথা গুলো শুনে শবনমের ছুটাছুটি বন্ধ হয়ে গেল। আঁধার শবনমের দু কাধে হাত রেখে ওর দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করল।

আঁধারঃ কিভাবে নিজের মনের অনুভূতি প্রকাশ করতে হয় জানা নেই আমার। কিভাবে শুরু করবো কিভাবে শেষ করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।‌ কিন্তু এতো টুকু বলবো শবনম‌ এখন যা বলব সত্য বলব। নিজের অনুভূতি গুলো আর লুকিয়ে রাখতে চাই না আমার ভয় হয় তোমাকে হারানোর।‌ জানো‌ সব সময় নিজেকে তোমার থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যতটা দূরে সরতে চেয়েছি মনের অজান্তেই ততটাই তোমার কাছে চলে গিয়েছি।

তোমার স্টুপিডিটি কথা, রাগী ভাব, আমাকে বাদামী চোখ ওয়ালা শয়তান রেজওয়ান বলা, আমাকে জব্দ করার জন্য উল্টা পাল্টা কাজ করা, তোমার হাসি কান্না সব আমার মন ছুঁয়ে যায়।

আই হ্যাভ দ্যাট ফিলিং ফর ইউ…দ্যা ফিলিং অফ লাভ,,

শবনম হা হয়ে আঁধারের দিকে তাকিয়ে আছে। শবনমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আঁধার বলে উঠে।

আঁধারঃ কিছু তো বলো?

শবনম নিজের হাতের উল্টা পিঠ আঁধারের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,,,

শবনমঃ ‌একটা পিঞ্চ করেন তো।

আঁধারঃ হোয়াটট!আমি তোমাকে চিমটি কাটবো কেন?(অবাক হয়ে)

শবনমঃ চেক করব আমি তখনের মত ড্রিম ডান্স থেকে এখন ড্রিম প্রপোজে চলে গেলাম কিনা।

আঁধার শবনমের কথায় হেসে দেয় তারপর ওর হাতে চিমটি কেটে দেয়।

শবনমঃ দ্যাট মিন্স আ’ম নট ড্রিমিং। দ্যা শয়তান রেজওয়ান আমাকে প্রপোজ করছে আই লাভ ইউ বলছে ও মাই গডডড( খুশি প্লাস অবাক হয়ে)

আঁধারঃ ইউ আর নট ড্রিমিং শবনম কিন্তু তুমি চাইলে আমি তোমাকে নিয়ে আমাদের ড্রিম ল্যান্ড সাজাতে পারি। যেখানে সবকিছু স্বপ্নের মতো হবে। প্রতিটা দিন প্রতিটা রাত নতুন মনে হবে তোমার। উইল ইউ বি মাই ফরেভার এন্ড এভার। ( মায়াবী চোখে)

শবনম আঁধারের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো‌।

শবনমঃ আমিও অনেক ভালোবাসি আমার বাদামী চোখ ওয়ালা শয়তান রেজওয়ানকে। আপনার বাদামী চোখে আমি সব সময় নিজেকে খোঁজার চেষ্টা করতাম। যে ফিলিংস আমার মনে আছে আপনার জন্য সেটা আপনার মনে আছে কিনা বোঝার জন্য কত বকা শুনেছি আপনার কাছ থেকে আপনি জানেন? এখন থেকে যদি কখনো আমাকে বকা দিবেন তাহলে দেখেন সোজা ব্রেকআপ করে নিব হুহ

আঁধারঃ তুমি আমাকে হুমকি দিচ্ছো?(কপাল কুঁচকে)

শবনমঃ আপনি যদি এটাকে হুমকি ভাবেন তাহলে সেটাই। ( বলে হেসে দিল)

আঁধারও হেসে দিল ওর কথায়। আঁধার শবনমকে আকাশের দিকে ইশারা করে। শবনম সেদিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় কারন অনেক গুলো ফানুস উড়ছে উপরে। সব গুলো এক শেপের হয়ে লাভ আঁকারের হয়ে যায়।

শবনমঃ ওয়াওও।

আঁধারঃ একটা প্রমিস করবে শবনম?

শবনম আঁধারের হাতে হাত রেখে বলে,,

শবনমঃ প্রমিসস,,

আঁধারঃ আগে শুনো আমি কি বলি তারপর নাহয় প্রমিস বলো।

শবনমঃ ‌ওকে বলেন কি প্রমিস,,

আঁধারঃ যত যাই হোক না কেন আমাকে কখনো নিজের থেকে দূর করবে না। নেভার লিভ মি,,,( ছলছল চোখে)

শবনমঃ এটা আবার প্রমিস করা লাগে আমি এমনিতেও আপনার পিছ ছাড়বো না মরার পরেও ভূত হয়ে পাশে থাকবো কারন আপনাকে বিরক্ত না করলে তো আমার দিনই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ( হেসে )

আঁধারঃ আমার সত্য জানার পরেও কি এই প্রমিসটা তোমার মনে থাকবে শবনম?( মনে মনে)

শবনমঃ কোথায় হারিয়ে গেলেন?( তুড়ি বাজিয়ে)

আঁধারঃ কোথাও না। চলো নিচে যাই সবাই খুঁজছে তাছাড়া কালকে তো অনেক কাজ সবাইকে গিয়ে রেস্ট নিতে হবে। ( কথা ঘুরিয়ে)

শবনমঃ আপনি কি কিছু লুকাচ্ছেন আঁধার?

আঁধারঃ সময় হলে অবশ্যই জানতে পারবে। এখন চলো।

♠️♠️♠️

ইয়ান‌ এসে মিমের পাশে দাঁড়িয়েছে। আসিফ ইয়ানকে কথা দিয়েছে যে ওর সত্য সবার থেকে লুকিয়ে রাখবে তাই ইয়ান এখন নিশ্চিত যে ওর আর মিমের মাঝে কোন বাধা আসবে না।

কিন্তু ওর মনে একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে এখন কি আসিফ কোয়েলকে নিয়ে যাবে। কোয়েলকে অনেক ভালোবাসে ইয়ান। যদি কোয়েল জানতে পারে ইয়ান ওর ভাই না তাহলে কি কোয়েল ওর থেকে দূরে সরে যাবে?

সবাই চলে যায়। কালকে ইয়ান আর মিমের হলুদের ফাংশন তাই বাড়ি ভর্তি লোক এখনো কাজ করছে।

আঁধার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল ইয়ান ওর পাশে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল।

ইয়ানঃ আমি কিছু ভূল করিনিতো ভাই?

আঁধারঃ সত্য বেশিদিন ঢাকা থাকে না ইয়ান। এখন দেখা যাক আসিফ চৌধুরী ব্যাপারটা কিভাবে নেয়। ( ইয়ানের দিকে তাকিয়ে)

To be continued….

♠️ #The_Vampire_King ♠️
#A_Unknown_Lover
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_34
.
.
.
.
আসিফ নিজের রুমে বসে ভাবছে কি করা যায়। হঠাৎ ওর চোখ যায় টেবিলে রাখা একটা ট্রফির দিকে। আসিফ গিয়ে ট্রফিটা নিজের হাতে তুলে আনমনে হেঁসে দেয়। এটা শবনম ওকে দিয়েছিল। যখন ও একটা প্রজেক্ট এর জন্য বেস্ট বিজনেসম্যান আওয়ার্ড পেয়েছিল। শবনম নিজের পকেট মানি জমিয়ে ওর জন্য এই ট্রফিটা নিয়ে এসেছিল। ট্রফিতে লিখা বেস্ট ফাদার ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড।

ট্রফিটা দেখে পুরোনো দিন গুলো মনে করছে ও। ও জানে শবনমের লাইফে ওর কতটা গুরুত্ব আছে। হঠাৎ আসিফের মনে পরে যায় ও শবনমের সাথে তখন কতটা রুড বিহেভ করে ফেলেছিল। আসিফের মনটা খারাপ হয়ে যায়। ও ট্রফিটা রেখে শবনমের রুমের দিকে পা বাড়ায়।

♠️♠️♠️

শবনম মিমের রুমে বসে আছে সাথে। মিম ইয়ানের সাথে কথা বলছে।‌ শবনম ভেবেছিল আঁধার‌ও‌ ওকে ফোন‌ করবে ইয়ানের মত। কিন্তু শয়তান রেজওয়ান কি কখনো ভালো কাজ করতে পারে? একটা ফোন তো দূরের কথা ম্যাসেজ ও দেয় নি। শবনম গাল ফুলিয়ে সোফায় বসে আছে আর মিম ইয়ানের কথা শুনছে। হঠাৎ ফোনের রিং টোন বাজতেই তড়িঘড়ি করে ও চেক করে। আঁধারের ম্যাসেজ এসেছে। শবনমের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো।

নাহ শয়তান রেজওয়ান কে যতটা শয়তান ভাবে ততটা শয়তান ও না। ( মনে মনে)

শবনম ম্যাসেজ ওপেন করে দেখে লিখা: নিচে অপেক্ষা করছি কাম ফাস্ট,,

শবনমঃ আপি আমার ঘুম পাচ্ছে গুড নাইট। ( বলেই দৌড়)

মিম হা হয়ে তাকিয়ে আছে শবনমের যাওয়ার দিকে। এতক্ষন কত চেষ্টা করল রুমে পাঠানোর কিন্তু তখন যায়নি আর এখন হঠাৎ দৌড় দিল।

শবনম ধীর পায়ে বেড়িয়ে যায় ঘর থেকে। আসিফ শবনমের রুমের সামনে এসে দেখে দরজা লাগানো। আসিফ ভাবল যে শবনম হয়তো ঘুমিয়ে গেছে তাই আর ওকে ডিস্টার্ব না করে ফিরে আসে ও নিজের রুমে।

♠️♠️♠️

কোয়েলদের বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে ধ্রুব। ছাদের উপরে ইয়ান হাঁটছে আর‌ মিমের সাথে কথা বলছে। ধ্রুব বাড়ির গার্ডদের ফাঁকি দিয়ে বাগানের সাইডে চলে যায়। একটা মোটা পাইপ ছাদ অবদি উঠেছে আর তার পাশ দিয়েই কোয়েলের রুমের জানালা। ধ্রুব কিছু না ভেবেই পাইপ বেয়ে উপরে উঠতে শুরু করে।

হঠাৎ ইয়ানের মনে হলো নিচ থেকে কেউ উপরে উঠছে। ইয়ান ব্যাপারটা বুঝার জন্য নিচে তাকাতেই দেখলো কেউ নেই। ইয়ান নিজের মনের ভ্রম ভেবে সরে যায় আবার।

ইয়ানকে ঝুঁকতে দেখে ধ্রুব আড়াল হয়ে গিয়েছিল তাই ইয়ান ওকে দেখতে পায়নি। ইয়ান চলে যেতেই ধ্রুব জানালা দিয়ে রুমে ঢুকে পরে।

সবেমাত্র কাবার্ড লাগিয়ে পিছনে ঘুরল কোয়েল সাথে সাথে কারো সাথে ধাক্কা লাগে ওর। কোয়েল ধ্রুবকে দেখে চমকে যায়।

কোয়েলঃ তুমিইইই এখানে?( চিৎকার দিয়ে)

ধ্রুব সাথে সাথে কোয়েলের মুখ চেপে ধরে তারপর বলে।

ধ্রুবঃ আরেহহ আমিই তো কোন ভুত তো আর না চিল্লাচ্ছো কেন? ইয়ান স্যার শুনে ফেললে এইখানেই আমার রেজাল্ট বের করে দিবে। আর রেজাল্ট কার্ডে লাল কালি দিয়ে বড় বড় করে লিখা থাকবে ফেইলল।( ভীতু ফেস করে)

কোয়েল চোখ দিয়ে ইশারা করে বলল ওর মুখ থেকে হাত সরাতে। ধ্রুব নিজের হাত সরাতেই কোয়েল বলতে শুরু করল।

কোয়েলঃ তুমিই এখানে কেন আর কিভাবে আসলে? এতো রাতে তাও আমার রুমে যদি কেউ দেখে কি হবে কোন আইডিয়া আছে তোমার?( এক নিঃশ্বাসে বলল)

ধ্রুবঃ কুল বেবি কুলল। এতো প্রশ্নের উত্তর তো একসাথে
আমি এক্সাম হলেও লিখতে পারি না।

কোয়েলঃ চুপপ ফালতু কথা না বলে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। ( কিছুটা রেগে)

ধ্রুবঃ ওকে ওকে। প্রথমত আমাকে কেউ দেখেনি আসার সময়। সেকেন্ড আমি পাইপ বেয়ে তোমার রুমে এসেছি থার্ড আমি এখানে আমার ওয়ান অ্যান্ড অনলি উডবি ওয়াইফ কে দেখতে এসেছি ইজ দ্যাট ক্লিয়ার। ( হাসি দিয়ে)
তোমাকে কখন থেকে কল করছিলাম কিন্তু তুমি রিসিভ করছিলে না তাই চলে আসলাম।

কোয়েল চোখ গরম করে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে আছে। ধ্রুব ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে কোয়েলের বেডের উপর শুয়ে পরল আর কোয়েল হা হয়ে গেল।

ধ্রুবঃ বাহ্ তোমার বেড তো অনেক সফ্ট। আরামসে ঘুমানো যাবে। ( শুয়ে)

কোয়েলঃ ঘুমানো যাবে মানে কি নামো আমার বেড থেকে। এখনি ইয়ান ভাই চলে আসবে ধ্রুব যাও।

ধ্রুবঃ আমি আমার শশুর বাড়ি এসেছি এভাবে তাড়াচ্ছো কেন? ( বালিশ জড়িয়ে বসে পরে)

কোয়েলঃ দেখো ধ্রুব তুমিতো আমাকে দেখতে এসেছিলে বলো? এখন তো দেখা শেষ এবার চলে যাও প্লিজজ। ( করুন চোখে)

ধ্রুব কোয়েলের হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে নিজের উপর ফেলে দেয়। কোয়েল ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে। ধ্রুব কোয়েলের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলতে শুরু করে।

ধ্রুবঃ ভাবছি হানিমুনটা এখুনি করে ফেলি কি বলো?

কোয়েল চোখ বড় বড় করে ধরফরিয়ে সরে যায় ধ্রুব থেকে। কোয়েলের ফেসের অবস্থা দেখে ধ্রুব হেসে দেয় জোরে জোরে।

♠️♠️♠️

শবনম নিচে নেমে দেখে আঁধার দাঁড়িয়ে আছে আর ঠোঁটে সেই কিলার স্মাইল। আজকে আঁধারকে দেখে প্রথমবার শবনমের অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। আর সময় ‌রাগ লাগতো জব্দ করার প্লান করতো মনে মনে আঁধারকে। কিন্তু আজকে ওকে দেখে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে। আঁধার শবনমের দিকে‌‌ এগিয়ে আচমকা ওকে জড়িয়ে ধরল।‌ শবনম হা হয়ে গেল আঁধারের কাজে। আঁধার‌ বুঝল কিভাবে ওর মনের কথা ভাবছে শবনম।

আঁধার শবনমকে ছেড়ে ওর দু কাঁধে হাত রেখে লো ভয়েজে বলতে শুরু করে।

আঁধারঃ তোমার মনের কথা আমি না বুঝলে কে বুঝবে মেরি জান। ইউ নো হোয়াট? আর সময় তোমার চোখে দুষ্টুমির ভাব দেখতাম কিন্তু আজ লজ্জার আভা দেখছি। নাও টেল মি এই লজ্জার কারন কি আমি?( ভ্রু উঁচু করে)

শবনমঃ মোটেও না,, কেন আসতে বলেছিলেন সেটা বলেন?( কথা ঘুরিয়ে)

আঁধার মুচকি হেঁসে নিজের পকেট থেকে একটা লকেট বের করল।‌ লকেটটা অনেক অদ্ভুত ধরনের। ছোট একটা লাল পাথর কিন্তু তার চারপাশে কালচে রং। আর লাল পাথরটা মনে হচ্ছে সত্যিকারের রক্ত দিয়ে তৈরি।

আঁধার লকেটটা শবনমের গলায় পরিয়ে দিল। শবনম প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকালো আঁধারের দিকে।

আঁধারঃ এটা কখনো নিজের থেকে দূরে সরাবে না। এটা যতক্ষণ তোমার সাথে থাকবে ভেবে নিও আমিও তোমার সাথেই আছি।

শবনম বোকার মত মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল। আঁধার খেয়াল করল শবনমের ঘাড়ের চিহ্ন টা আগের থেকে অনেক কালচে হয়ে গেছে। আঁধার এর কারনটা বুঝতে পারছে না।

আঁধারঃ আমি তো কফিন থেকে মুক্ত হয়ে গেছি তাহলে এখনো এই চিহ্ন গায়েব হচ্ছে না কেন?‌ আর এটার রং পাল্টে যাওয়ারই বা কি কারন? সামথিং ইজ নট রাইট। আমার জানতে হবে।( মনে মনে ) নিজের চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে ও বলল।

আঁধারঃ এইটা দেওয়ার জন্যই ডেকেছিলাম যাও এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পর।

শবনমের মুখ মলিন হয়ে গেল চলে যাওয়ার কথা শুনে।

শবনমঃ এখনই চলে যাবেন?

আঁধারঃ বাহ্ একদিনে এতো ভালোবেসে ফেললে আমায় যে আমার যাওয়ার কথা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল?( মজা করে )

শবনম রেগে গিয়ে বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে বলল।

শবনমঃ একটুও ভালোবাসি না হুহ যেখানে ইচ্ছা সেখানে যান।

আঁধারঃ যেখানে ইচ্ছা সেখানে গেলেও তোমাকে সাথে নিয়ে যাবো। ( জোরে বলল যেন শবনম শুনতে পায়।)

শবনম এক দৌড়ে বাড়িতে ঢুকে পরল। আঁধার ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

শবনমকে বাইরে থেকে আসতে দেখে ফেলে আসিফ। আসিফ দ্রুত বারান্দায় গিয়ে দেখে আঁধার দাঁড়িয়ে আছে। বারান্দায় চোখ যেতেই আঁধার আসিফকে দেখতে পেলো। আঁধার তাচ্ছিল্য হেসে নিজের ফোন বের করে আসিফকে একটা ম্যাসেজ দিল তারপর ওখানে থেকে চলে গেল। আসিফ নিজের ফোন বের করে ম্যাসেজটা দেখে ভয় পেয়ে যায়। ম্যাসেজে লিখা: খুব শীঘ্রই নিজের আমানত নিজের কাছে নিয়ে আসবো মি আসিফ চৌধুরী। আপনার আর ওকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। নিজের ফ্যামিলি নিয়ে ভালো থাকবেন।

আসিফ ম্যাসেজটা পড়ে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল তারপর নিজে নিজে বলতে শুরু করল।

আসিফঃ আমি কি সত্যিই একজন ভালো বাবা হতে পারিনি।

কোয়েল অনেক কষ্ট করে ধ্রুবকে বুঝিয়ে পাঠিয়েছে।

কোয়েলঃ এই ছেলেটা আপলেই পাগল।

♠️♠️ Next Day ♠️♠️

আজকে হলুদ আর মেহেদী ফাংশন। ওয়েডিং স্টুডিও তে ইয়ান আর মিমের একসাথে হলুদ আর মেহেদী ফাংশন হবে।

To be continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here