#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel,08,09
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_8
শুভ হাতের ঘড়ির বেল্ট লাগাতে লাগাতে সাদ আর রোহিতের পাশে এসে দাঁড়ায়। শুভ খেয়াল করে দেখলো রোহিত মুখ ফুলিয়ে আছে।
শুভঃ কিরে তুই এমন বেলুনের মত ফুলে আছিস কেন?? তোকে দেখে এমন মনে হচ্ছে যেন আমি তোর প্রিয় খাবারে ভাগ বসিয়েছি। ?( রোহিতকে উদ্দেশ্য করে বলল)
শুভর কথা শুনে সাদ ফিক করে হেসে দিলো। রোহিত সাদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেই সাদ ঠোঁটে আঙ্গুল চেপে হাসি কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।
শুভঃ হোয়াটট??
সাদঃ ব্রো তুই ওর প্রিয় খাবারে না ওর প্রিয় হবির উপর ভাগ বসিয়েছি। ( বলে সাদ জোরে জোরে হাসতে শুরু করে)
শুভঃ প্রিয় হবি মানে????
সাদঃ মেয়ে পটানো ??
let me explain,,, এতক্ষণ যে মেয়েরা এই গোট উরফে ডঙ্কি উরফে রেড মাঙ্কির দিকে তাকিয়ে ছিলো তুই আসতেই তাদের নজর তোর উপর ডিভাইড হয়ে গেছে। নিজের আশেপাশে দেখ?
সাদের কথা শুনে শুভ ভ্রু কুঁচকে আশেপাশে তাকালো। সত্যিই সব মেয়েরা ওর দিকে তাকিয়ে আছে আর ফিসফিস করে কিছু বলছে।
শুভঃ Actually Shuvo is a brand ? তাই মেয়েরা নিজে থেকেই শুভর উপর ফিদাহ হয়ে যায়।( ভাব নিয়ে) But I don’t have much time for west on them এজন্যই ওদের জন্য রোহিতের মতো রামছাগলকে রেখে দিয়েছি যাতে যত ইচ্ছে ক্রাশ খেতে পারে। ?
শুভর সব কথা বুঝলেও রামছাগল এর মানেটা বুঝলো না রোহিত।
রোহিতঃ What is this রামছাগল ব্রো? I know ভালো কিছুই হবে। ?
সাদঃ হ্যাঁ হ্যাঁ ভালো মানে অনেক ভালো কিছু ?
রামছাগল মিন্স গড অফ ডঙ্কি উরফে ছাগল?।( শুভ আর সাদ হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে সাদের মিনিং শুনে)
রোহিতঃ ?? হেসে নে হেসে নে আমারো দিন আসবে ?
রোহিতের কথায় শুভ আর সাদ আরো জোরে হাসতে লাগল।
রোহিতঃ ?তোদের কপালে বউ জুটবে না আর জুটলেও আফ্রিকানদের মতো ব্লাক এন্ড হোয়াইট জুটবে দেখে নিস। ??
সাদঃ দেখা যাবে কার কপালে কি জোটে। কিন্তু তোর কপালে যদি সকালের ওই চুরেল টাইপ মেয়েটা জোটে তাহলে তোর কি হবে ভাব।?
শুভঃ বেচারার জীবনটা চুরেলময় হয়ে উঠবে ?
রোহিতঃ এই চুরেলটা আবার কি ?such a weird word ?
সাদঃ চুরেল মিন্স Witch?
রোহিতঃ Lady witch urfe চুরেল ?
শুভঃ কিরে সকালের মেয়েটার কথা মনে পরছে ?
রোহিতঃ মনে পরছে না ও তো আমার চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে God save me ??
সাদঃ কোথায়??
রোহিত দরজার দিকে ইশারায় দেখায়।
শুভ আর সাদ পিছনে দরজার দিকে ফিরতেই থ হয়ে যায়।
রশনি মায়াকে জড়িয়ে ধরে কথা বলছে। রশনির দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে শুভ।
হোয়াইট গাউন , চুলগুলো একসাইড করে ক্লিপ দিয়ে বাধা, হালকা মেকআপ। রশনি মায়ার সাথে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে বাচ্চাদের মতো হাসছে আর কথা বলছে এতে কানের দুল গুলো নরছে । একদম একটা বাচ্চা পরীর মতো লাগছে ওকে। অনেক মায়াবী লাগছে শুভর কাছে রশনিকে।
তিনা চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে দেখছে।আর ভাবছে অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে বাড়িটাকে। ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসিটা সাদের বুকে গিয়ে লাগছে। অদ্ভুত একটা ভালোলাগা কাজ করছে সাদের মাঝে। রেড গাউন, স্ট্রেইট চুল গুলো খোলা, হালকা করে মেকআপ সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে তিনাকে।
নিশিকেও কম লাগছে না। নেভি ব্লু কালারের গাউন চুল গুলো কার্ল করে খোপা করা হালকা মেকআপ চেহারায় একটা এটিটিউট । ওর সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় হচ্ছে ওর নীল চোখ। যা ওকে সবার থেকে আলাদা করে।
❤❤❤
মায়াঃ আমার কথা তো তোর মনেই পরে না তাইনা। এতো দিন পরে আমার সাথে দেখা করতে আসলি তাও আমার ডাকার পর ( রাগ করে)
রশনিঃ ওফফো কিউটি তুমিতো জানোই আমার এক্সাম ছিল তাই আসতে পারি নি বাট নাও আ’ম টোটালি ফ্রি তাই এখন থেকে প্রতিদিন তোমাকে জ্বালাতে আসবো ( দুষ্টু হেসে)
মায়াঃ আমিতো তোকে সারাজীবন আমার কাছে রাখার ব্যবস্থা করছি। ( নাহারের দিকে তাকিয়ে)
রশনিঃ মানে?? ?
নাহারঃ রশনি তিনা আর নিশি তোমরা গিয়ে পার্টি ইঞ্জয় করো আমার কথা আছে তোমার আন্টির সাথে।
রশনিঃ ওকেই চল তিনা।
রশনি তিনা আর নিশি এক সাইডে চলে আসে।
নিশির চোখ বারবার কাউকে খুঁজছে রশনি বুঝতে পেরে নিশিকে জিজ্ঞেস করে।
রশনিঃ কিরে তোর রেড মাঙ্কিকে খুজছিস ? দেখ দেখ পাশ কিনা ( বলে হাসতে লাগল)
নিশিঃ আমি কেন ওই স্টুপিড টাকে খুঁজবো আজব ?
তিনাঃ Nishi something sometime ??
নিশিঃ নাথিংং ওকেই ?
>> Excuse me
আওয়াজ শুনে পিছনে ফিরে তাকায় ওরা। শুভকে দেখে চমকে যায় রশনি। শুভকে এভাবে এখানে দেখবে ভাবতেও পারেনি সে।
রশনিঃ আপনিইই এখানে ?
>> ইনিই তো আমার ভাইয়া রশনি দি নাম শুভ।
পেছন থেকে সিয়া বলে উঠলো।
রশনিঃ ইনি তোর ভাই ?
সিয়াঃ হ্যাঁ। ( রশনির পাশে এসে দাঁড়িয়ে) আর ভাইয়া এই হচ্ছে রশনি দি তাহির আঙ্কেলের মেয়ে।
শুভঃ Nice to meet you miss Roshni ?
রশনিঃ সেম হেয়ার ?
শুভ নিশির দিকে তাকিয়ে দেখে নিশি এক অদ্ভুত চাহনিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নিশির চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। শুভর কাছে নিশিকে অনেক আপন কেউ মনে হচ্ছে। একটা অদ্ভুত টান আর মায়া অনুভব করছে ও নিশির প্রতি।
রোহিতের কথায় ধ্যান ভাঙ্গে শুভর।
রোহিতঃ ব্রো এই Lady witch urfe চুরেল তোর দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন। ( শুভর কানে ফিসফিসিয়ে)
শুভঃ Don’t know yaar but একটা টান অনুভব হচ্ছে ওর প্রতি।
রোহিতঃ হয়তো পুনর জনমে তোরা ভাই বোন ছিলি দেখ তোদের দুজনের চোখই নীল রঙের স্ট্রেঞ্জ না।?
রোহিতের কথায় শুভ খেয়াল করে দেখলো সত্যিই ওদের দুজনের চোখ এক রকম।
শুভঃ সবার নাম তো জানলাম কিন্তু আপনার নাম জানা হলো না Miss angry princess. ( নিশিকে উদ্দ্যেশ্য করে )
নিশিঃ আ’ম নিশানি আবরার। ?সবাই নিশি বলে ডাকে।
রোহিতঃ আপনার নাম নিশানি না witch হওয়া উচিত ছিল মিস নিশিরানি ?
নিশিঃ ইট্স নিশানি নট নিশিরানি ওকে ?
রোহিতঃ ওই একি নিশানি নিশিরানি?বাট আপনাকে নিশিরানি তে বেশি স্যুট করে। ??
নিশিঃ ইউউউউ ( রেগে রোহিতের দিকে এগিয়ে যেতে নেয়)
রোহিত শুভর পিছনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,,,
রোহিতঃ Look bro how dangerous this lady is!!! ??
শুভঃ কুল ডাউন গাইজ ঝগড়া বন্ধ কর।(ধমকের স্বরে)
শুভর ধমকে রোহিত আর নিশি চুপ হয়ে যায়।
সাদকে দেখে ভয়ে তিনা রশনির আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে। সাদ বুঝতে পারছে যে তিনা ওকে ভয় পায় বাট কেন এটা বুঝতে পারছে না।
রোহিতঃ গাইজ তোরা সবাই কথা বল আমি আসছি।?
রোহিত সামনে মেয়েদের ওখানে চলে গেল।
রোহিতঃ হায় আ’ম রোহিত ফ্রম স্কটল্যান্ড নাম তো সুনা হি হোগা ?।বায় দ্যা ওয়ে ইউ লুকিং গর্জিয়াস ?( মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে)
সাদঃ শুরু হয়ে গেল ওর ফ্লার্টিং ?
নিশি নাক ফুলিয়ে রাগী দৃষ্টিতে রোহিতের ফ্লার্টিং দেখছে। ওর শরীরে কেউ যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এমন লাগছে ওর কাছে।
নিশিঃ আমি একটু আসছি বাবা কল করছে ( বলে নিশি চলে যায়)
সিয়াঃ তোমরা কথা বলো আমি আসছি। সিয়াও চলে যায়।
হঠাৎ পেছন থেকে কারো ধাক্কা লাগায় রশনি শুভর বুকে গিয়ে পরে। শুভও রশনিকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে। শুভর প্রত্যেকটা হার্ট বিট ফিল করতে পারছে রশনি। অনেক জোরে জোরে বিট করছে শুভর হার্ট। নিজের অজান্তেই চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে রশনি।
রশনি পরে যেতে নিলেই শুভ ভয় পেয়ে ওকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। রশনিকে জড়িয়ে ধরায় একটা অদ্ভুত ফিলিং হচ্ছে শুভর মাঝে। হার্ট বিট যেন আরো ফাস্ট থেকে ফাস্ট হচ্ছে। সারাক্ষণ এভাবেই জড়িয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে ওর রশনিকে।
রশনিকে ছোঁয়ার সাথে সাথে শুভর পিঠের টেটু টা জ্বলে উঠে যা পোষাকের কারনে বুঝা যাচ্ছে না। শুভর স্পর্শে রশনির কানের পেছনের টেটু টিও জ্বলে উঠে। এটা আর কেউ লক্ষ না করলেও দূর থেকে ধীর ঠিকই লক্ষ করছে।
>> উহুম উহুম।
কারো গলা পরিষ্কার করার আওয়াজে ধ্যান ভাঙ্গলো ওদের।
রশনি ধরফরিয়ে সরে এলো শুভ থেকে।
সাদঃ Are you guys alright ??
রশনি এমনেই লজ্জা পাচ্ছিলো সাদের কথায় বেচারী আরো লজ্জা বেড়ে গেল।
রশনিঃ আ মাম্মাম ডাকছে আমি আসি বলেই দৌড়ে পালিয়ে গেল।
সাদঃ যাক বাবা পালিয়ে গেল আচ্ছা শুভ তুইই বল Did you feel something ??
শুভঃ Maybe ( ব্লাশিং হয়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে) আমি আসছি বলে চলে গেল শুভ।
এখন শুধু তিনা আর সাদ দাঁড়িয়ে আছে। তিনা আড়চোখে ভয়ে ভয়ে সাদের দিকে তাকালো সাদ ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
তিনাঃ বেঁচে থাকতে চাইলে কেটে পর এখান থেকে তিনা? ( মনে মনে)
তিনা যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই সাদ ওর হাত চেপে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়। তিনা সাদের অনেক কাছাকাছি চলে এসেছে। ভয়ে কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলল তিনা।
তিনাঃ আব তেরা কেয়া হোগা তিনা ?মনে মনে
সাদঃ কি ভেবেছিলেন পালিয়ে যাবেন। যেখানেই পালান না কেন আমি আপনাকে ঠিকই খুঁজে নিবো। ?
তিনা করুন চোখে সাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
সাদঃ by the way Miss Tina আপনি কি সবাই কে এভাবে ভয় পান নাকি শুধু আমাকেই। এতো দূরে ভাগেন কেন আমার থেকে সবসময়। আমিকি এলিয়েন যে আপনাকে খেয়ে ফেলবো। ?
আর আমার জানা মতে আমি দেখতে এতোও খারাপ না যে মেয়েরা আমাকে দেখে পালিয়ে ফিরবে ??
তিনাঃ না মানে আসলে ( ভয়ে ভয়ে বলল)
সাদঃ কি না মানে শুরু করেছেন উত্তর দেন। ?
সাদের ধমকে তিনা কেঁদে দেয়
তিনাঃ প্লিজ লিভ মি আমি আর কখনো আপনার সামনে আসবো না প্রমিস ?
সাদঃ Shut up ?
সাদ একটা ধমক দিতেই তিনা চুপ করে যায়।
সাদঃ যেতে দিবো এক শর্তে।
তিনাঃ কি?? ?
সাদঃ আপনার ফোন দেন।
তিনা বাধ্য মেয়ের মতো সাদের হাতে ফোন দিয়ে দিলো।
সাদ তিনার ফোনে কিছু একটা করে ওর দিকে ফোন এগিয়ে দেয়।
সাদঃ কল করলে ধরবা। বলে এগিয়ে চলে যায়।
তিনা ফোন হাতে নিয়ে দেখে সাদের নাম্বার সেভ করা তাও #Love দিয়ে।
তিনা অবাক চোখে সাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। সাদ পিছন ঘুরে তিনাকে চোখ টিপ মেরে চলে যায়।
তিনাঃ ??
To be continued…….
#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_9
নিশি ফোনে কথা বলা শেষ করে পিছনে ফিরতেই কারো সাথে ধাক্কা খায়। নিশি বিরক্তিকর ভাব সামনে তাকিয়ে দেখে রোহিত টেডি স্মাইল দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
রোহিতঃ হ্যালো মিস নিশিরানি হোয়াট্স আপ।?
নিশিঃ উফফ প্যারা ?
নিশি মুখ বাঁকিয়ে পিছন ফিরে চলে যেতে নিলেই রোহিতের কথা শুনে থমকে যায়।
রোহিতঃ Miss Devil Princess কোথায় যাও।
নিশি রোহিতের কথায় চমকে পিছনে ফিরে তাকায়।
নিশির চাহনি দেখে রোহিত ওর কাছে এসে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,,
রোহিতঃ তুমি দেখতে পুরো প্রিন্সেস এর মতো তাই তোমাকে প্রিন্সেস বললাম ?
কিন্তু তোমার কাজ আর কথা পুরো witch এর মতো ডেভিল টাইপ? এজন্য তোমাকে ডেভিল প্রিন্সেস ডাকলাম কি নাইস না ??।মিস ডেভিল প্রিন্সেস?
রোহিত নিশির কানের কাছে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিচ্ছে এতে নিশি কেঁপে কেঁপে উঠছে। ওর হার্ট বিট যেন দ্বিগুণ স্পীডে বাড়ছে। এক অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে নিশির মাঝে যা আগে কখনো হয় নি।
রোহিত নিশির থেকে সরে আসতেই নিশি যেন হাফ ছেড়ে বাচঁলো। রেগে কিছু বলার জন্য রোহিতের দিকে তাকাতেই রোহিতের চোখে ওর চোখ আটকে যায়। রোহিতের চাহনি একদম নিষ্পাপ যেন কোন বাচ্চা যার মনে না আছে কোন পাপ না কোন বিদ্বেষ। রোহিতের চাহনিতে ওর বাচ্চামি গুলো স্পষ্ট বুঝতে পারছে নিশি।
প্রথম দিন থেকেই রোহিতের নিষ্পাপ চাহনি ওর কথা বলার স্টাইল ওর বাচ্চামি মাঝে মধ্যে ভয় পাওয়া আর বোকা বোকা কথা বলা সব যেন নিশির মনে অন্য রকম অনুভূতি সৃষ্টি করেছিলো কিন্তু নিশি এই অনুভূতির জালে ফাসতে চায়না।
নিশিকে এভাবে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রোহিত নিশির সামনে তুরি বাজায় সাথে সাথে নিশি নিজের ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসে।
নিশি কাছুটা ইতস্তত বোধ করছে রোহিতের দিকে তাকাতে। রোহিত ব্যাপার টা বুঝতে পেরে মুচকি হেসে নিশির দিকে কিছুটা ঝুকে বলল,,,,
রোহিতঃ এভাবে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকো না প্রেমে পড়ে যাবে হারিয়ে যাবে আমার মনের গভীরে। পরে কিন্তু বলতে পারবে না যে সব রোহিতের দোষ। ??
রোহিত কথাটা বলে পকেটে হাত রেখে শিষ বাজাতে বাজাতে চলে যায়।
নিশিঃ নিশানি কখনো কারো মায়ায় হারাবে না। আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা কোনটাই নিশানির মাঝে নেই। আমি শুধু নিজের লক্ষ পুরণ করতে এসেছি কারো মায়ায় নিজেকে হারাতে নয়। ( মুখ শক্ত করে রোহিতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলল)
❤❤❤
সিয়া উপরে যেতে নিলে কেউ ওর হাত টান দিয়ে একটা খালি রুমে নিয়ে আসে। সিয়া ভয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে। কিছুক্ষন পর সিয়া চোখ খুলে দেখে সামনের মানুষটি আর কেউ নয় বরং ধীর। ধীরের চোখ ভয়ঙ্কর রকম লাল হয়ে আছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে ও রেগে আছে। ধীর সিয়াকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে আছে। সিয়া ভয়ে ভয়ে ধীরকে প্রশ্ন করলো,,
সিয়াঃ ধ ধীর ভাইয়া আ পনি আমাকে এভাবে কেন আনলেন। ( ভয়ে কথা বলতে তোতলিয়ে যাচ্ছে সিয়া)
ধীর এমনেই রেগে ছিলো সিয়ার মুখে ভাইয়া ডাক শুনে আরো রেগে সিয়াকে বলল,,,
ধীরঃ What do you mean by vaiya? আমি তোমার কোন জনমের ভাই হই হুম। ( রেগে দাঁতে দাঁত চেপে)
সিয়াঃ এই জনমের ?( বলেই জিভে কামর দিল)
না মানে শুভ ভাইয়া তো আপনার বন্ধু আর বন্ধু তো ভাইয়ের মতো তাহলে ভাইয়ের বোন তো বোনই হয় সেই হিসেবে আপনি আমার ভাইয়া ( এক দমে কথা গুলো বলে জোর করে হাসার চেষ্টা করলো সিয়া)
সিয়ার কথা শুনে ধীর ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। ও হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না।
নিজেকে সামলে ধীর বলতে শুরু করল,,,
ধীরঃ যেটা আস্ক করবো সত্যি সত্যি জবাব দিবা।
সিয়া মাথা নারালো।
ধীরঃ তখনকার ছেলেটা কে ছিল যার সাথে হেসে হেসে কথা বলছিলে। ( রেগে দাঁতে দাঁত চেপে)
সিয়াঃ আ আমার কলেজ ফ্রেন্ড তানভীর।
ধীরঃ শুধু ফ্রেন্ড নাকি অন্য কিছু ( চোখ ছোট করে ভ্রু কুঁচকে)
সিয়াঃ না না না না শুধু ফ্রেন্ড অন্য কিছু না সত্যি ( ভয় পেয়ে এক দমে বলে ফেলল)
সিয়ার চেহারা দেখে ধীরের অনেক হাসি পাচ্ছে নিজেকে কন্ট্রোল করে ধীর বলল,,
ধীরঃ নেক্সট টাইম যেন ওর সাথে এমন হাসাহাসি করতে না দেখি শুধু ওর সাথে কেন কোন ছেলেকে যেন তোমার আশেপাশে না দেখি। ( কড়া গলায়)
ধীরের কথায় সিয়া নিজের জন্য কিছু একটা অনুভব করতে পারছে কিন্তু সেটা কি ও বুঝতে পারছে না।
সিয়া মায়াভরা চোখে ধীরের দিকে তাকিয়ে ওকে জিঙ্গেস করলো,,,
সিয়াঃ কেন???
সিয়ার প্রশ্নে ধীর কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরে। ধীর নিজেও বুঝতে পারছে না কেন ও সিয়াকে নিয়ে এতো পসেসিভ ফিল করছে। কেন ওকে হারানোর ভয় ধীরকে ঘিরে ধরেছে।
ধীর সিয়ার আরেকটু কাছে এসে ওর কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেশা ভরা ভয়েজে বলল,,
ধীরঃ এর উত্তর আমারো জানা নেই। যখন উত্তর পেয়ে যাবো সবার আগে তোমাকে জানাবো।
ধীর কথাটা বলে বের হয়ে যায় রুম থেকে। সিয়া এখনো দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
❤❤❤
নিশি আর তিনাকে খুঁজতে খুঁজতে রশনি হয়রান হয়ে গেছে। ওদের কোথাও না দেখে রশনি ছাদে চলে আসে। ছাদে চারোদিকে অন্ধকার কেউ নেই।
রশনিঃ ওফফো কোথায় গেল এরা সিয়াকেও খুঁজে পাচ্ছি না। আমাকে একা ফেলে নিজেরা মজা করছে নিশ্চয়ই। কি হারামী বজ্জাত ফ্রেন্ডস আমার এখন আমি এদের কোথায় খুঁজবো? ( ন্যাকা কান্না করতে করতে)
রশনি ছাদ থেকে নামতে নিলে কিছুর আওয়াজ শুনে থেমে যায়।
রশনিঃ এই অন্ধকারে ছাদে কে হতে পারে। ওহ নো চোর টোর এলো না তো ?
রশনি ধীর পায়ে ছাদের আরেকটু ভিতরে চলে আসে কারো গানের আওয়াজ স্পষ্ট শুনতে পারছে। কাওকে দেখা যাচ্ছে তবে অন্ধকারে তাকে চিনতে পারছে না।
রশনি একটু সামনে এগিয়ে যেতেই দেখে শুভ ছাদের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে গান গাইছে।
Dil diya gallan sab tu jane….
Phir kyu na jaane peerh meri…..
Dil diya gallan sab tu jane…..
Phir kyu na jaane peerh meri….
Hasse tere sohniye…
kanna vich vajjde ne….
Akkhan nu talab ae deed di…
Hunn aaja na jind ve….
Hasse tere sohniye…
kanna vich vajjde ne….
Akkhan nu talab ae deed di…
Hunn aaja na jind ve….
Dil diya gallan sab tu jane…..
Phir kyu na jane peerh meri…… ( পার্ল এর সং ??)
শুভর কন্ঠে অনেক বেশী ব্যথা অনুভব করছে রশনি। নিজের বুকে জমানো কষ্ট গুলো এই গানের মাধ্যমে হয়তো বুঝাতে চাইছে। শুভর ব্যথাটা যেন রশনি অনুভব করছে। রশনির ইচ্ছে করছে শুভকে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে হয়তো এতে কিছুটা হলেও নিজের ব্যথা ভুলতে পারবে শুভ।
রশনি ধীর পায়ে শুভর পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো। নিজের পেছনে কারো অস্তিত্ব টের পেয়ে শুভ পিছনে ফিরলো।
শুভর চোখের কোনে পানি জমে আছে। রশনি এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে সেই ছলছল চোখের দিকে।
শুভ রশনিকে এই সময় এখানে আশা করেনি। শুভ কখনো নিজের দূর্বলতা অন্যের সামনে প্রকাশ করে না। তাই যখনই ওর মন খারাপ হয় এমন অন্ধকারের মাঝে চলে আসে।
অন্ধকার এমন একটা জিনিস যেখানে কেউ আসতে চায়না। যার থেকে সবাই দূরে সরে থাকে। শুভও নিজেকে সবার থেকে দূরে রাখতে চায় এজন্য অন্ধকার ওর প্রিয়।
শুভঃ রশনি আপনি এ সময় এখানে কি করছেন? আপনার তো নিজের ফ্রেন্ডসদের সাথে থাকার কথা। ( ঠোঁটে মিথ্যা হাসি টেনে বলল শুভ)
শুভর কথায় রশনির ঘোর কেটে যায়। নিজের চোখ নামিয়ে দুইটা ঘন নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,,,
রশনিঃ কিছুনা।
কথাটা বলে রশনি চলে যেতে নেয় তখনই হাতে টান অনুভব করে ও। পিছনে ফিরে দেখে শুভ ওর হাত ধরে আছে।
শুভঃ এসে যখন পরেছেন কিছুক্ষণ কি আমার সাথে বসতে পারবেন। ( অনুনয় চোখে বলল)
শুভর কথায় রশনির ঠোঁটে হাসি চলে আসে। এটাই তো ও চেয়েছিলো কিছু একান্ত মুহূর্ত শুভর সাথে।
রশনিঃ আপনার প্রবলেন না হলে অবশ্যই বসতে পারি ( মুচকি হেসে বলল)
রশনির এই মুচকি হাসিটা মারাত্মক লাগে শুভর কাছে। হৃদয়ের গভীরে গিয়ে বিধে এই হাসি।
ছাদে পাশাপাশি বসে আছে শুভ আর রশনি। রশনি আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে আর শুভ ওর পাশে বসা চাঁদের দিকে। কেউ কোন কথা বলছে না এক অদ্ভুত নীরবতা কাজ করছে দুজনের মাঝে।
নীরবতা ভেঙে রশনি বলল,
রশনিঃ নিচে এতো মানুষ থাকতে আপনি একা এই অন্ধকার ছাদে কি করছিলেন?? ( শুভর দিকে তাকিয়ে)
শুভঃ আমার একাকিত্ত্ব আর অন্ধকার পছন্দ। তাছাড়া এই কোলাহলপূর্ণ ভিড়েও আমি একাই ছিলাম। কাছের মানুষ থেকেও না থাকায় মতো আমার কাছে ( আকাশের দিকে তাকিয়ে)
শুভর কথায় অভিমান আর কষ্ট দুটোই উপলব্ধি করতে পারছে রশনি।
রশনিঃ নিজের আশেপাশের মানুষদের আপন ভাবতে শুরু করেন একাকিত্ত্ব আপনাআপনি ঘোচে যাবে। You know what আল্লাহ প্রত্যেক মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একটা কারন দিয়ে দেন যে কারনটা আকড়ে ধরে মানুষ বেঁচে থাকে। প্রত্যেকটা মানুষের জন্ম একটা উদ্দেশ্যে হয় আর এই উদ্দ্যেশ্যটাই তার বেঁচে থাকার কারন। নিজের জীবনের উদ্দেশ্য খোজার চেষ্টা করেন বেঁচে থাকার কারন নিজে নিজেই পেয়ে যাবেন।
রশনির কথায় ওর দিকে ফিরে তাকায় শুভ। রশনির চোখে নিজের বেঁচে থাকার কারন খুঁজে পাচ্ছে ও। রশনিও শুভর দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে।
অন্ধকার হওয়ার পরেও চাঁদের আলোতে একে অপরের চেহারা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
রশনি ভাবছে কেন সে শুভর প্রতি এতো টান অনুভব করে। শুভ কাছে আসলে কেন এই অদ্ভুত অনুভূতি টা হয়।
শুভ ভাবছে কেন সে রশনির মায়ায় নিজেকে হারিয়ে ফেলছে। কি আছে রশনির মাঝে যা ওকে বারবার দূর্বল করে তোলে। কেন রশনিকে দেখলে সেই অদ্ভুত অনুভূতি অনুভব করে ও।
শুভ ধীরে ধীরে রশনির অনেক কাছে এসে পরেছে। শুভর নিঃশ্বাস রশনির মুখে আছড়ে পরছে। শুভ রশনির গালে নিজের এক হাত রাখে রশনি সাথে সাথে নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে।
শুভ রশনিকে স্পর্শ করতেই ওর পিঠের চিহ্নটা জ্বলে উঠে আর রশনির কানের পেছনের টেটু টি ও জ্বলে উঠে।
শুভ রশনির যত কাছে আসছে রশনির হৃদ স্পন্দন যেন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। রশনি শুভর আরেক হাত খামচে ধরে। শুভ একটা ঘোরের মাঝে চলে গেছে। শুভ রশনির কাছে এসে ওর চেহারার দিক একধ্যানে তাকিয়ে আছে। রশনির উপরের ঠোঁটে একটা ছোট হালকা তিল। শুভ কতক্ষণ তিলটার দিকে তাকিয়ে থেকে হালকা করে ওখানে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়। রশনি কেঁপে উঠে আরো শক্ত করে শুভর হাত খামচে ধরে। শুভ এবার গভীর ভাবে রশনির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
In Devil Kingdom,,,,,
আবরারের সিংহাসনে হঠাৎ দাউদাউ করে আগুন জ্বলে উঠে। পুরো সিংহাসন পুরে ছাই হয়ে যাচ্ছে। সেনারা অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই আগুন নিভছে না। আবরার অগ্নি দৃষ্টিতে নিজের জলন্ত সিংহাসনের দিকে তাকিয়ে আছে।
আবরারঃ এটা কিভাবে সম্ভব। হঠাৎ এভাবে আগুন জ্বলে উঠলো কেন।আশেপাশে আগুনের চিহ্ন মাত্রাও নেই যেখান থেকে আগুন জ্বলবে বা আশেপাশে এমন কিছু নেই যেটা দ্বারা আগুন জ্বলতে পারে। তাহলে হঠাৎ এই আগুন লাগলো কি করে। ভাবছে আবরার।
To be continued…..