#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel,31,32
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_31
সবাই এসে শুভ রশনিকে অভিনন্দন জানাচ্ছে,,, সবার আড়ালে শুভ নিজের হাতের ভাজে রশনির হাত নিয়ে নিল,,, রশনি চোখ বড় বড় করে শুভর দিকে তাকালো,,, কিন্তু শুভ এক মনে সবার সাথে কথা বলতে ব্যস্ত,,, রশনি হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই শুভ আরো শক্ত করে হাত ধরে রাখে,,,
রশনি জানে শুভর থেকে হাত ছাড়ানো যাবে না তাই ও হাত ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা বন্ধ করে সবার সাথে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পরে,,,
চারোদিকে কালারফুল লাইট জ্বলছে,,, সফ্ট মিউজিক বাজছে আর অনেকেই কাপল ডান্স করছে,,,
শুভ রশনি সিয়া নিশি রোহিত ধীর আর তিনা সাদ সবাই মজা কথা বলছে আর ফাকে ফাকে সবার নাচ দেখছে,,, হঠাৎ রিয়া এসে রোহিতের সামনে দাঁড়ালো,,,
রিয়াকে দেখেই নিশির চোখ কপালে আর রাগ নাকের ডলায় এসে পরে,,,
রিয়াঃ হায় রোহিত হাও আর ইউ ?
রোহিতঃ আ’ম অলওয়েজ বি ফাইন ইউ ?
রিয়াঃ এতক্ষণ ছিলাম না কিন্তু এখন তোমাকে দেখে ভালো হয়ে গেছি?,,, বায় দ্যা ওয়ে ক্যান ইউ বি মাই ডান্স পার্টনার।( হাত বাড়িয়ে দিয়ে)
রোহিতঃ সিউর,,
রোহিত হাসি দিয়ে রিয়ার হাত ধরে চলে গেল,, রোহিত আর রিয়া অনেক ক্লোজলি ডান্স করছে এতে নিশি রেগে নিজের জামা খামছে ধরে রেখে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে,,,,
তিনা নিশির দিকে তাকিয়ে ব্যপার টা আন্দাজ করতে পারে,,,
তিনাঃ কুছ্ জালনে কি বু আ রাহি হ্যায় ?
নিশি রেগে তিনার দিকে তাকালো,,,
নিশিঃ তোর আর আমার অবস্থা সেম তিনু,, পেছনে ফিরে দেখ,, ?
তিনা নিশির কথা শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ে সাদের সাথে ঘেঁষে ঘেঁষে কথা বলছে,, সাদ বেচারা কিছু বলতেও পারছে আর সরতেও পারছে না,,,
তিনা হনহন করে ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় তারপর সাদের হাত ধরে বলে,,
তিনাঃ এক্সকিউজ মি ম্যাম হি ইজ মাই ফেয়ন্সে,, আপনি যদি একটু দুরত্ত্ব বজায় রাখতেন আমি খুশি হতাম ??
সাদ তো তিনার কথায় অবাক হয়ে যায়,, তিনা ওকে ফেয়ন্সে বলছে আনবিলিভেবল,,,
মেয়েটি মুখ ভেংচি কেটে চলে যায়,,, মেয়েটি চলে যেতেই সাদ তিনাকে নিজের কাছে এনে বলে,,,
সাদঃ এই তুমি মিথ্যা বললে কেন তিনা আমি কবে থেকে তোমার ফেয়ন্সে হলাম,,,
তিনাঃ হন নি তো কি হয়েছে অনেক জলদি হয়ে যাবেন,,, ( তিনা নিজেকে ছাড়িয়ে চলে গেল)
সাদ অবাক হয়ে তিনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,,,
রোহিতঃ রিয়া আমি আসছি,,, রোহিত রিয়াকে বলে চলে আসে,,
রোহিত একটা গিটার এনে শুভর সামনে ধরলো,,
শুভঃ কি করবো?? ?
রোহিতঃ কাম অন শুভ,,, গিটার দিয়ে মানুষ কি করে,,,? রশনির জন্য একটা রোমান্টিক গান গেয়ে শুনা,,,
রশনিঃ শুভ আপনি গান গাইতে পারেন,,, (কিছুটা বিষ্ময় হয়ে)
সাদঃ গাইতে পারে মানে,,, শুভ আমাদের কলেজের রকস্টার ছিল রশনি,,, কত মেয়ে ওর গানের জন্য পাগল ছিল হিসেব নেই তাই না শুভ ?
শুভঃ ? বেশি কথা না বললে তোর ভালো লাগে না,,, আমি গান করতে পারি না,,,
রশনিঃ অন্যদের জন্য গাইতে পারেন অথচ আমার জন্য পারেন না?
শুভ রশনির কথা শুনে রোহিতের হাত থেকে গিটার নিয়ে চলে যায়,,,
হঠাৎ চারোদিকের লাইট অফ হয়ে যায় আর স্টেজের লাইট জ্বলে ওঠে,,,,
একটা রাউন্ড চেয়ারে গিটার নিয়ে বসে আছে শুভ,,, এক পা চেয়ারের নলে ভাজ করা আরেক পা নিচে,,, মুখে মাউথ স্পিকার লাগানো,,, (full Vyom style?)
সবাই শুভর দিকে অধির আগ্ৰহে তাকিয়ে আছে,,
শুভঃ দিস ইজ অনলি ফর ইউ রশনি,,, ( রশনির দিকে তাকিয়ে)
রশনি লজ্জা পেয়ে নিজের চোখ নামিয়ে ব্লাশিং হতে থাকে,,,
সাদ রোহিত ধীর সবাই চিল্লিয়ে শুভকে বলছে,,,
>>>শুভ ইউ রক্,,, কাম অন এবার স্টার্ট কর,,,
শুভ রশনির দিকে তাকিয়ে গিটারে ধুন্ দেয় তারপর গাইতে শুরু করে,,,
“তু গুজার্ রাহাহ্যায় মেরে দিলসে মেরি রুহ্ তাক্”
“তু হি তু সুকু মেরা তু হি হ্যায় জুনুনিয়াত্”
“মেরে হাল্ সেহ্ ভালা কিউ নেহি তু ওয়াকিফ্”
“ইশ্ক কে মোতাবেক ইয়ে নেহি মুনাসিভ্”
“জো ইয়ে দিওয়ানা পান্ হ্যায়”
“তুমসে হি আধা তান্ হ্যায় ”
“তেরে সাঙ্গ লামহা লামহা জি রাহাহু কাতরা সা”
“পেয়ার তুমসে লাখ হ্যায়”
” ধুয়া ধুয়া ইয়া রাখ্ হ্যায়”
“রোজ জ্বাল রাহা হ্যায় মুঝ্মে”
“কুছ্ কাহি জারা সা”
“জায়েজ হ্যায় তুঝ্পে দিওয়ানগি মেরি”
“রাগোও সেহ্ রুহ্ তাক্ হ্যায় রাওয়ানগি তেরি”x2
হো ওওও হো ওওও
অনেকেই নিজের পার্টনার দের নিয়ে নাচছে,,, রশনি এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে শুভর দিকে,,, গানটায় এক ঘোর লাগা কাজ করছে ওর মাঝে। চাইতেও নিজের চোখ ফেরাতে পারছে না রশনি শুভর উপর থেকে।
শুভ গিটার রেখে নেমে যায় তারপর রশনির সামনে এসে নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়,,, রশনি ঘোরের মধ্যেই শুভর হাতে হাত রেখে দেয়,,, শুভ রশনিকে নিজের কাছে টেনে আনে,,,
ধীর বার সাইডে বসে আছে,,, হাতে একটা ওয়াইনের গ্লাস নিয়ে সিয়ার দিকে তাকিয়ে বাকি টুকু গাইতে শুরু করে ও,,,,
ধীরঃ “সাবার কি ইয়ে ইম্তেহা হ্যায় ”
“জানে ক্যায়সা ইম্তেহা হ্যায় ”
“সাভ্ হ্যায় পুরা পার কামি হ্যায় ”
“তু সাথ্ হ্যায় নেহি ভি হ্যায়”
সিয়া ধীরের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,,, ধীর অন্যদিকে ফিরে নিজের চোখের পানি মুছে নেয়,,
রোহিত ধীরের পাশে বসতে বসতে বাকি টুকু বলে,,,
রোহিতঃ “আখ্ জো ইয়ে ভারর্ গায়ি হ্যায়”
“জানে ক্যায়া ইয়ে কার্ রাহি হ্যায়”
“ইয়ে ভি জানতি হ্যায় কে”
“দিলপে ক্যায়া গুজার্ রাহি হ্যায়”
রোহিত নিশির দিকে তাকালো না,,, নিশি ঠিকই বুঝতে পারছে রোহিত ওকেই বলছে,,
ধীরঃ ” ইক্ তুহি বেখাবার হ্যায় মেরে হাল্ সেহ্”
“ওয়াক্ত চাল্ রাহা থা অর ম্যা কাহি ঠেহরা”
“জায়েজ হ্যায় তুঝ্পে দিওয়ানগি মেরি ” “রাগোও সেহ্ রুহ্ তাক্ হ্যায় রাওয়ানগি তেরি”x2
হো ওওওও হো ওওওও
ধীর নিজের চোখের পানি কন্ট্রোল করতে না পেরে উঠে চলে যায়,,, রোহিত একটা গ্লাস ঘুরাচ্ছিল আর কিছু ভাবছিল,,, সামনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মুখ তুলে সামনে তাকাতেই দেখে নিশি সামনের চেয়ারে বসে আছে,,, ওর দিকেই তাকিয়ে আছে নিশি চোখ দুটো ছলছল করছে ওর,,,
রোহিত কিছু না বলে উঠে যেতে নিলেই নিশি ওর হাত ধরে ফেলে,,, রোহিত ভ্রু কুঁচকে নিশির দিকে তাকায়,,,
রোহিতঃ কি??( ভ্রু কুঁচকে)
নিশিঃ রোহিত একবার আমার কথাটা শুনো প্লিজ,,,( কান্না মাখা ফেস নিয়ে)
রোহিত নিশির থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে ওর কাছে গিয়ে দাঁড়ায়,,, নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে নিশির চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বলে,,,
রোহিতঃ হেই নিশি রানী ডোন্ট ক্রাই প্লীজ,,, তোমার চোখের পানি আমার এখানে গিয়ে লাগে,, ( বুকের বা পাশে হাত রেখে)। ডোন্ট ব্লেম ইউর সেল্ফ তুমি আমাকে ভালোবাসো না এটা তোমার দোষ না,,, আমি তোমাকে ভালোবাসি এটা আমার দোষ যার শাস্তি আমি ভোগ করতে রাজি,,, আমার কষ্টের জন্য নিজেকে দায়ী ভেবে কষ্ট পেয়ো না,,, আই প্রমিস আমি কখনো তোমার আর ধীরের মাঝে আসবো না,,, ( সফ্ট ভয়েজে কথা গুলো বলছে রোহিত)
একটু চুপ থেকে রোহিত আবার বলতে শুরু করলো,,,
রোহিতঃ আর জাস্ট কয়দিন আমাকে সহ্য করো,,,শুভ আর রশনির বিয়ের পর আমি আর এক মুহূর্ত ও এখানে থাকবো না চলে যাবো প্রমিস ,,আর কখনো এই রোহিত তোমাকে বিরক্ত করবে না নিশিরানি,,, বলে মুচকি হেসে চলে গেল রোহিত,,, একবারের জন্যও পিছনে ফিরে তাকায় নি ও হয়তো নিজের চোখের পানি নিশিকে দেখাতে চায় নি,,,
এইদিকে,,,
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে ধীর,,, নিজের হাত কয়েকবার দেয়ালে বারি মেরেছে যার কারনে হাত থেকে রক্ত ঝরছে,,,
ধীরঃ হোয়াই কেন হচ্ছে এমন,,, আমি ধীর ডেভিল সেনাপতি ধীর,,, যে কখনো কারো প্রতি দুর্বল হয় নি যে সব সময় যা চেয়েছে তা হাসিল করেছে হয়তো বল দিয়ে নয়তো ছল দিয়ে,,, যে কখনো ভালোবাসা নামক জিনিসে বিশ্বাস করে নি,,, যে ডেভিল রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী ডেভিল,,, সে কিনা একটা মেয়ের জন্য আজ কান্না করছে,,, তাকে নিজের কাছে পাওয়ার জন্য ছটফট করছে,,, তোমার ভালোবাসা আমাকে কি থেকে কি বানিয়ে দিলো সিয়া,,,
আমি চাইলে তোমাকে নিজের শক্তি দিয়ে আপন করতে পারি সিয়া। তোমাকে পেতে আমার সামান্য জাদুই যথেষ্ট,,, কিন্তু ভালবাসা নামক জালে যে ফেসে গেছি আমি,,, তোমার মনের বিরুদ্ধে তোমাকে পেতে চাইনা,,,,
বিশ্বাস করো সেদিন আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি,,, আই ওয়াজ কন্ট্রোললেস,,, আমি শুধু তানভীর কে ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম,,, কিন্তু দুর্ভাগ্য বসত সেদিন ফুল মুন ছিল যার কারনে আমি কন্ট্রোললেস হয়ে গিয়েছিলাম। নিজের মাঝে ছিলাম না আমি,,, আমার শক্তি আমার উপর হাভি হয়ে পরেছিল,,,
যে শক্তি আমার পাওয়ার ছিল তা এখন আমার দুর্বলতা হয়ে দাঁড়িয়েছে,,, কি করবো আমি কিভাবে তোমাকে বুঝাবো কতটা ভালবাসি তোমায়।
ধীর ওখানেই হাটু ভাজ করে বসে পরলো,,,
শুভ রশনিকে সবার আড়ালে ছাদে নিয়ে আসে,,,
রশনিঃ শুভ এখানে আনলেন কেন??
শুভঃ এখানে আনলাম কেন মানে,,, একটু প্রাইভেট টাইম স্পেন্ড করতে জান,,, ?
রশনিঃ ?কিইইই
To be continued….
#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel
#An_lmpossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_32
শুভ রশনিকে সবার আড়ালে ছাদে নিয়ে আসে,,,
রশনিঃ শুভ এখানে আনলেন কেন??
শুভঃ এখানে আনলাম কেন মানে,,, একটু প্রাইভেট টাইম স্পেন্ড করতে জান,,, ?
রশনিঃ ?কিইইই,,, দ দেখেন শুভ সবাই আমাদের নিচে খুঁজবে না পেলে টেনশন করবে চলেন নিচে চলে যাই,,,
রশনি চলে যেতে নিলেই শুভ ওর হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে,,,
শুভ রশনির কপালে পরা চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে দিতে দিতে বলে,,,
শুভঃ তোমাকে সবার আড়ালে এখানে আনলাম আমি,,, আর বিনা নোটিশে চলে যাচ্ছ তুমি দ্যাট্স নট ফেয়ার জান,,,
শুভ রশনকে ঘুরিয়ে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,,, রশনির কাধে থুতনি ঠেকিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে শুভ বলতে শুরু করে,,,
আমি তোর হবো বলে এতো কিছু করি
বার বার ভেঙে ভেঙে নিজেকে গড়ি…
বুঝলি না মন কভু
আশায় থাকি তবু….
স্বপ্নের জ্বালাতনে খুঁজে মরি মরি…
আমি তোর হবো বলে এতো কিছু করি
আমি তোর হবো বলে এতো কিছু করি…
রশনি চোখ বন্ধ করে আছে,,, নিজের সমস্ত ভর শুভর বুকে ছেড়ে দিয়েছে ও,,, শুভ খুব যত্ন সহকারে রশনি কে নিজের বাহুডোরে আগলে রেখেছে,,, রশনির কাছে এই মুহুর্তে শুভর বাহুডোর সবচেয়ে নিরাপদ মনে হচ্ছে,,, চোখ বন্ধ করে শুভকে অনুভব করছে ও,,,
শুভঃ রশনি?? ( আবেগী কন্ঠে)
রশনিঃ হুম,,,( চোখ বন্ধ অবস্থায়)
শুভঃ কখনো ছেড়ে যেও না আমায়,, ভুল করলে সেটা ধরিয়ে দিও নিজের মনের মত শাস্তি দিও তাও ছেড়ে যেও না,, আই কান্ট লিভ উইদআউট ইউ,,, অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়,,, ইউ আর দ্যা রেয় অফ মাই লাইফ,, তোমাকে ছাড়া আমার দুনিয়ে অন্ধকার,,, আই লাভ ইউ রশনি,,, ইউ আর দ্যা এডিকশন অফ মাই লাইফ,,,
রশনি অবাক হয়ে শুভর কথা শুনছে,,, এতক্ষণ তো ভালোই ছিল হঠাৎ এরকম ইমোশনাল হওয়ার কারন খুঁজে পাচ্ছে না ও,,
মাঝে মাঝে শুভকে একটা অসম্পূর্ণ ধাঁধার মত লাগে ওর কাছে,, কখন মুড সুয়িং হয়ে যায় বুঝতে পারে না রশনি,,,
রশনির ধ্যান ভাঙে ঘাড়ে কিছু গরম অনুভব করে,,,
রশনি শুভর দিকে ফিরে দেখে ওর চোখ লাল,,, তারমানে শুভর চোখের পানিই ওর ঘাড়ে পরেছে,, শুভর চোখের পানির কথা ভাবতেই বুকে চিনচিন ব্যথা অনুভব হচ্ছে রশনির,,, কি এমন কারন যে শুভর চোখে পানি এসেছে,,,
রশনি নিজের ডান হাত শুভর গালে আলতো করে রেখে ভাঙা গলায় বলতে শুরু করে,,,
রশনিঃ কি হয়েছে শুভ প্লিজ বলেন আমাকে আপনি এসব কথা কেন বলছেন,, আপনার কাছে কেন মনে হয় যে আমি আপনাকে ছেড়ে চলে যাবো??
শুভ একটা গভীর শ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করে,,,
শুভঃ আছে রশনি কিছু এমন কথা আছে যা তোমার কাছে অজানা,,, মাঝে মধ্যে মনে হয় যদি তুমি সে কথা গুলো যানতে পারো আমার কাছ থেকে দূরে চলে যাবে,, সরিয়ে দেবে আমাকে নিজের কাছ থেকে,,,
যানো প্রতি মুহূর্ত তোমাকে হারানোর ভয় আমাকে কুরে কুরে খায়,,, আমি আগুনের মতো রশনি যেটা নিজের আশেপাশের সব কিছু জ্বালিয়ে রাখ্ করে দেয়,,, যার সংস্পর্শে আসলে সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়,,, ভয় হয় যদি কখনো তোমারও ক্ষতি করে বসি,,, যাকে এতো ভালোবাসি তার ক্ষতি করার কথা ভাবতেও গা শিউরে ওঠে আমার,,,
রশনি শুভর প্রতিটি কথায় বিষম খাচ্ছে,, শুভ কি বলছে কেন বলছে সব ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,,,
রশনি শুভর মুখে ওর ক্ষতি করার কথা শুনে হালকা হাসলো,,, শুভ রশনিকে হাসতে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,,,
শুভঃ হাসছো কেন রশনি,,,??
রশনিঃ আপনার কথা শুনে হাসছি,,, আপনি ক্ষতি করবেন তাও আমার ইম্পসিবল শুভ,,, যানেন আমরা যাকে ভালোবাসি নিজের সর্বস্ব দিয়ে তাকে প্রটেক্ট করার চেষ্টা করি,,, তাকে ক্ষতি করার কথা দুঃস্বপ্নেও আসে না,,, আর আমি বিশ্বাস করি আপনাকে সবার থেকে বেশি,,,, ভালবাসি নিজের থেকেও বেশি,, আপনার দেওয়া কষ্ট ও আমার কাছে আপনার ভালোবাসার অংশ হিসেবে মনে হবে,,, ভালোবাসি আপনাকে ঘৃনা করার তো প্রশ্নই ওঠে না,,, আই প্রমিস যা কিছুই হোক না কেন আই উইল নেভার লিভ ইউ শুভ,,, নেভার এন্ড এবার,,,
শুভ রশনির কথা শুনে ওকে টাইট করে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো,,, রশনিও শুভকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে আছে,,,
শুভঃ আই লাভ ইউ রশনি আই লাভ ইউ ভেরি মাচ,,,
রশনিঃ আই লাভ ইউ টু শুভ,,,
রশনি শুভর বুকে মাথা রেখে ওকে জড়িয়ে ধরে আছে,,, হঠাৎ ওর চোখ আটকে গেল শুভর শার্টের ভেতরের নীল রশ্মির দিকে,,, সাদা শার্ট ভেদ করে একটা নীল রঙের রশ্মি দেখা যাচ্ছে,,,
রশনিঃ এই আলো কিসের??
রশনি শুভর শার্টের উপরের দুটো বোতাম খুলে নেয়,,,
একটা নীল পাথরের লকেট যেটা থেকে নীল রঙের রশ্মি বের হচ্ছে,,,
রশনি নিজের ডান হাত দিয়ে আলতো করে লকেট টা স্পর্শ করলো,,, রশনির স্পর্শে লকেটের আলোটা আরো তীব্র হয়ে গেল,,,
এতক্ষণ চোখ বন্ধ করে রশনিকে নিজের বুকে জড়িয়ে রেখেছিল শুভ,,, হঠাৎ করে বুকে ঝঙ্কার দিয়ে ওঠে ওর,,, হাতের আর ঘাড়ের রগে যেন রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে,,, ভয়ঙ্কর ভাবে নিজের চোখ খুলে ফেলে ও,,,
চোখ দুটো হিংস্রতায় জ্বলজ্বল করছে,,, হঠাৎ শুভ রশনির দুই বাহু ধরে ওকে ধাক্কা মেরে নিজের থেকে দূরে ফেলে দেয়,,,
রশনি টাল সামলাতে না পেরে পেছনের দেয়ালে বারি খায়,,,
রশনিঃ আহহহ্
শুভ রশনির দিকে হিংস্রতা নিয়ে তাকিয়ে আছে,,, যেমন সামনের ব্যাক্তি ওর ভালোবাসা না ওর শত্রু যাকে ওর শেষ করতে হবে,,,
রশনি নিজের মাথার পিছনে হাত রেখে দেখে রক্ত বের হচ্ছে,,, রশনি অবাক চোখে শুভর দিকে তাকালো,,,
শুভ রশনির দিকে এগিয়ে এসে ওর হাত ধরে টেনে উঠায় তারপর পেছনের দোলনার দিকে ছুড়ে মারে,,,
রশনি দোলনার হ্যান্ডেলে গিয়ে পরে আর ব্যথায় চিৎকার দিয়ে উঠে,,,
রশনি শুভর দিকে তাকাতেই দেখে শুভকে কতটা হিংস্র দেখা যাচ্ছে,,, ভয়ে রশনির গলা শুকিয়ে আসছে কথাও বলতে পারছে না ও,,,
রশনিঃ শ শুভ ক কি করছেন,,,কি ভুল করেছি আমি,,,
আর কিছু বলার আগেই শুভ দ্রুত এসে রশনির গলা চেপে ধরে,,, রশনি কথা বলতে পারছে না। শুভর থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও পেরে উঠছে না,,, দম প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে ওর,,, চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পরছে,,, এই বুঝি নিঃশ্বাস টা থেমে যাবে,,
রশনি ভাঙা গলায় বলার চেষ্টা করছে,,,
রশনিঃ শ শুভ আমি আ আপনার রশনি,,, ল লিভ মি আ আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে,,,
রশনি কথা গুলো বলছে আর শুভকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে,,, শুভর কানে কোন কথাই যাচ্ছে না,,, ওর চোখে রশনি ওর শুক্র তাকে ওর শেষ করা লাগবে,,,
রশনির দম প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে,,,চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে,,, হঠাৎ কারো আঘাতে শুভ দূরে ছিটকে পরে,,,
রশনিও পরে যায়,,, শুভর থেকে ছাড়া পেয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে ও,,, গলায় প্রচন্ড ব্যাথা করছে কাশতে শুরু করে ও,,,ফর্সা চেহারা পুরো লাল হয়ে গেছে,,,
রশনি সামনে তাকিয়ে দেখে যে লোকটি শুভকে ছাড়িয়েছে ও সাদ,,, সাদের সাথে নিশিও আছে,, নিশি দৌড়ে এসে রশনিকে ধরে,,, রশনি নিশিকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়,,,
রাগে সাদের চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে,,, শুভ উঠে এসে সাদের দিক এগোতেই ধীর পেছন থেকে শুভর ঘাড়ে স্পর্শ করে সাথে সাথে শুভ জ্ঞান হাড়িয়ে পরে যায়,,,
সাদ আর ধীর শুভর পাশে গিয়ে ওকে ধরে,,,
সাদঃ শুভ তুই ঠিক আছিস,,, শুভ??
ধীরঃ ডোন্ট ওয়ারি সাদ জাস্ট কিছুক্ষনের জন্য অজ্ঞান করেছি,,,
এইদিকে বাড়ির সবাই ছাদে চলে আসে,,, মায়া তাহির নাহার সবাই শুভ রশনিকে এই ভাবে দেখে ঘাবরিয়ে যায়,,, শুভ অজ্ঞান হয়ে পরে আছে আর রশনি রক্তাক্ত অবস্থায় নিশিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে,,, নাহার আর তাহির দৌড়ে এসে রশনির পাশে আসে,,,,
তাহিরঃ এসব কি করে হলো প্রিন্সেস?? তোমার আর শুভর এই অবস্থা কিভাবে,,, কি হয়েছিলো এখানে,,,
রশনি কিছু বলছে না শুধু কেদেই যাচ্ছে,,,
সাদঃ আঙ্কেল আমরা আপনাদের সব বলছি কিন্তু এখন সবার আগে শুভ রশনিকে ভিতরে নিয়ে যেতে হবে,,, ওদের ট্রিটমেন্ট এর প্রয়োজন,,,
সাদ ধীর রোহিত মিলে শুভকে ধরে নিচে নিয়ে আসে,, সবাই ছাদ থেকে নেমে যায়,,, তাহির ড্রইংরুমে এসে সব মেহমানদের তাড়িয়ে থুক্কু বিদায় করে দেয়,,তারপর শুভকে ওই অবস্থাতেই ওদের বাসায় নিয়ে আসে,,,
নিশি রশনির মাথায় এবং ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করে দেয়,,, তাহির তো রেগে ফায়ার কি হয়েছে কিভাবে হয়েছে কেউই কিছু বলছে না। শুভদের বাড়ির ড্রইংরুমে পায়চারি করছে আর বিভিন্ন চিন্তাভাবনা করছে তাহির।
কিছুক্ষন পর,,,
সবাই চুপ করে আছে,,, কারো মুখে কোনো কথা নেই,,,, সাদ শুভর আর রশনির ব্যাপারে সব বলে দিয়েছে তাহির আর নাহার কে,,, ওদের কাছে সব অবিশ্বাস্য লাগছে,,,, রশনিও কথা গুলো তে বিশ্বাস করতে পারছে না পরক্ষনে শুভর ভয়ঙ্কর রুপটার কথা মনে পরে যায় ওর,,, ও বাধ্য হয় সাদের কথা বিশ্বাস করতে,,,
তাহির এবার নিজের মুখ খোলে,,, দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করে ও,,,
তাহিরঃ ক্ষমা করবেন ভাবি আমি শুভ আর রশনির সম্পর্ক টা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো না,,,
তাহিরের কথা শুনে সবাই বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়,,,
মায়াঃ কি বলছো তাহির???
তাহিরঃ হ্যাঁ আপনি যা শুনেছেন তাই,,, শুভ একজন দানব একটা ডেভিল,,, আমি আমার মেয়েকে যেনেশুনে এমন কারো জীবনের সাথে জড়াতে পারবো না,,,
শুভ আমার মেয়েকে শেষ করে দিবে তার প্রমাণ আজকেই আমরা পেয়েছি,,,
সাদঃ এটা হয় না আঙ্কেল,,, রশনির জন্ম শুভর জন্যই হয়েছে,,, ওদের এক হওয়া নিয়তি নির্ধারণ করেছে,,, আপনি কি কেউ ওদের আলাদা করতে পারবেন না,,,
তাহিরঃ তো কি করবো ঠেলে দিবো নিজের মেয়েকে মৃত্যুর মুখে,,, আমি শুধু আমার মেয়ের পরোয়া করি অন্য কারো নয়,,, শুভর সাথে আমার মেয়ে সেফ নয়,,, আমি এ বিয়ে হতে দিব না,, ( রেগে চিৎকার করে)
নিশিঃ আঙ্কেল ভাইয়া ইচ্ছে করে কিছুই করে নি ও তো কিং এর বসে ছিল,,, ও রশনিকে অনেক ভালোবাসে যেনেশুনে কখনোও ও রশনির ক্ষতি করার কথা চিন্তা করতে ও পারে না,,,
তাহির আর কাওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রশনির হাত ধরে দাড় করায়,,,
তাহিরঃ আমার মেয়ের সুরক্ষার দায়িত্ব আমার কাছে,,, আর ওর সেফটি শুভর থেকে দূরে থাকাতেই,,,,
তাহির রশনির হাত ধরে হাটা শুরু করে,,, ওদের পেছনে আজহার আর নাহারও যাচ্ছে,,,
সাদ মায়া হাজার ডাকার সত্যেও তাহির থামছে না,,, ওর একটাই কথা ও শুভকে রশনির কাছে আসতে দিবে না,,, কোন পিতামাতাই চাইবে নিজের সন্তান কে এভাবে বিপদে ঠেলে দিতে,,,,
To be continued…..