The_Love_A_Devil_And_Angel,33,34

0
1765

#The_Love_A_Devil_And_Angel,33,34
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_33

তাহির রশনির হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ রশনির কানে শুভর বলা সে কথা গুলো বেজে উঠলো।

” কখনো ছেড়ে যেও না আমায়,, ইউ আর দ্যা রেয় অফ মাই লাইফ মরে যাবো তোমাকে ছাড়া”

থেমে গেল রশনির কদম,,,, রশনিকে থেমে যেতে দেখে তাহির অবাক চোখে রশনির দিকে তাকালো।

তাহিরঃ কি হয়েছে প্রিন্সেস চলো,,, থেমে গেলে কেন??

রশনি তাহিরের দিকে করুন চোখে তাকিয়ে বলতে শুরু করল,,,

রশনিঃ আই লাভ হিম বাবাই,,, আমি শুভকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না। ?

তাহিরঃ কি বলছো রশনি। তুমি শুনতে পাও নি ওরা কি বললো,, হি ইজ আ ডেভিল তুমি এর অর্থ বুঝতে পারছো। ও তোমাকে শেষ করে দিবে ওর ভিতরে ইমোশন বলতে কিছু নেই।

রশনিঃ আছে বাবাই আছে। শুভ ওর মা আর বোনের সেফটির জন্য তাদের থেকে দুরে থেকেছে,, নিজেকে সবার থেকে গুটিয়ে রেখেছে শুধু মাত্র তাদের সুরক্ষার জন্য এটা প্রমান যে শুভ ইমোশনলেস না। শুভ আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে এটা তার প্রমাণ যে শুভর মধ্যে ইমোশন আছে।

ও কখনো কারো ক্ষতি করতে পারে না। শুভর শরীরে যে রক্ত ব‌‌ইছে তা হয়তো ডেভিলের কিন্তু শিক্ষা!! শিক্ষা তো মায়া আন্টি আর মাহিব আঙ্কেলের,,,

তাহিরঃ ওর জন্য আজ তোমার এই অবস্থা রশনি। ও যদি তোমার কোন ক্ষতি করে। তুমি আমাদের একমাত্র মেয়ে তোমার কিছু হলে আমরা কি নিয়ে বাঁচবো।

রশনিঃ বাবাই আমার কিচ্ছু হবে আই প্রমিস। আমি শুভকে ওই অন্ধকার রাজ্যে হারিয়ে যেতে দিতে পারি না। প্লিজ বাবাই অনেক বেশি ভালোবাসি ওকে,,, ( করুন স্বরে)

রশনির চোখে শুভর জন্য পাগলামি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে তাহির। উনি জানেন এখন হাজার বুঝালেও রশনি মানবে না। তাই তিনি রশনির কথা মানতে বাধ্য হলেন,।

তাহির রশনির হাত ছেড়ে দিলেন। তারপর ওর মাথায় হাত রেখে বলেন,,

তাহিরঃ আমার প্রিন্সেস এর যেন কিছু না হয়। প্রমিস করো নিজের খেয়াল রাখবে।

রশনি তাহিরের হাতে হাত রেখে প্রমিস করলো আর মাথা নাড়ালো।

রশনি পেছন ফিরে দৌড়ে শুভর রুমের দিকে চলে যায়।

শুভ এখনো অচেতন অবস্থায় আছে। রশনি নিজের চোখ মুখ মুছে আলতো পায়ে রুমে প্রবেশ করলো।

রশনি শুভর পাশে গিয়ে বসে পরলো। কি থেকে কি হয়ে গেল শুভর দিকে তাকিয়ে ভাবছে রশনি। কতটা নিষ্পাপ লাগছে শুভকে এই মুহুর্তে তা শুধু রশনি বলতে পারবে। রশনি আলতো করে শুভর গালে তার পর চেহারায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

রশনিঃ আমি আমার কথা রাখবো শুভ। কখনো কোন পরিস্থিতিতে আপনাকে একা ফেলে যাবো না। ভালোবাসি আপনাকে নিজের জীবন দিয়ে হলেও আপনাকে প্রটেক্ট করবো।

রশনি এগিয়ে গিয়ে শুভর কপালে আলতো করে চুমু এঁকে দিল।

রশনি সরে আসতে নিলেই সেই লকেটটা আবারো ওর চোখে পরে।

রশনিঃ এটা আগে কখনো শুভর গলায় দেখি নি। আর এটা থেকে আলো বের হচ্ছে কেন??

রশনি লকেটটা ছোঁয়ার জন্য হাত বাড়াতেই কেউ ওর হাত ধরে ফেলল। রশনি চমকে দিয়ে পেছনে ফিরে দেখে সাদ ওর হাত ধরে আটকিয়েছে।

সাদ মাথা নাড়িয়ে ইশারায় বলে লকেটটা না ছুঁতে। রশনি সরে এসে দাঁড়িয়ে যায়।

সাদ শুভর দিকে এক পলক তাকিয়ে রশনির হাত ধরে বলে,,।

সাদঃ রশনি চলো আমার সাথে কথা এখনো অসম্পূর্ণ।

সাদ রশনির হাত ধরে রুম থেকে বের করে নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে শুভর রুম বাইরে দিয়ে লক করে দেয় যেন ও বের হতে না পারে।

এইদিকে,,,

খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছে সিয়া। সব কথা এখন ওর কাছে স্পষ্ট। ধীর একজন ডেভিল আর সেদিন ওই তানভীরকে মেরেছিলো।

সিয়াঃ হাও ক্যান ইউ ডু দিস ধীর। আপনি আমাকে ধোঁকা দিলেন। আপনি আমাকে ভালোবাসেন না। এখানে নিজের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য এসেছিলেন আপনি। আপনি একজন খুনি ধীর আই হেইট ইউ আই জাস্ট হেইট ইউ। ?

” সিয়া!! ”

পেছনে ধীরের ডাক শুনে ফিরে তাকালো সিয়া। পেছনে ফিরে অবাক হয়ে যায় ও। ধীর হাটু গেড়ে মাথা নিচু করে বসে আছে। সিয়া ধীরের দিকে ফিরতেই ধীর ওর হাত নিজের হাতের ভাজে নিয়ে বলতে শুরু করে,,,

ধীরঃ প্লিজ সিয়া ক্ষমা করে দাও আমায়। আমি অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে। তোমার ভালোবাসা আমাকে সম্পুর্ন রুপে বদলিয়ে দিয়েছে।

আমি জানি আমি যা করেছি তা ক্ষমার অযোগ্য তাও বলছি প্লিজ আমাকে নিজের থেকে আলাদা করো না।?

সিয়া এক ঝটকায় নিজের হাত সরিয়ে নেয় ধীর থেকে তারপর চিৎকার করে বলতে শুরু করে।

সিয়াঃ ক্ষমা তাও আপনাকে কক্ষনো না ধীর নেভার। আপনি একজন খুনি ধীর খুনি। না জানে কত নির্দোষ মানুষের জান নিয়েছেন আপনি। আপনি শুধু রক্তে ডেভিল না কর্মেও ডেভিল। আই হেইট ইউ ঘৃনা করি আমি আপনাকে।

ধীর সিয়ার কথা শুনে দাঁড়িয়ে যায় তারপর বলে।

ধীরঃ আমি ডেভিল এটা কি আমার দোষ সিয়া? আমার মধ্যে পাওয়ার আছে এটা কি আমার দোষ। তাহলে কেন এর শাস্তি আমি পাচ্ছি হোয়াই??

সিয়াঃ আপনি ডেভিল এটা আপনার দোষ না ধীর। আপনার মধ্যে পাওয়ার আছে সেটাও আপনার দোষ না,,, দোষ এটা যে আপনি আপনার শক্তির অপব্যবহার করেছেন। নিজের শক্তির প্রয়োগ করে অন্যের ক্ষতি করেছেন তাদের জান নিয়েছেন। আপনি তানভীরকে ও মেরে ফেলেছেন।

তানভীরের নাম শুনে ধীর সিয়ার সামনে গিয়ে ওর হাত ধরে।

ধীরঃ আ আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি সিয়া। আমি শুধু ওকে থ্রেড দিতে গিয়েছিলাম যেন ও তোমার কাছ থেকে দূরে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বসত সেদিন ফুল মুন ছিল যার কারনে আমি কন্ট্রোললেস হয়ে গিয়েছিলাম। প্রত্যেক ডেভিল এই রাতে কিছুক্ষনের জন্য কন্ট্রোললেস হয়ে পরে নিজের রাগ জেদ পাওয়ার কন্ট্রোল করতে পারে না। সেটাই আমার ক্ষেত্রে হয়েছিল। আমি আমার মাঝে ছিলাম না সিয়া।

আমি নিজেকে বদলিয়ে ফেলেছি শুধু তোমার জন্য। প্লিজ ক্ষমা করে দাও আমাকে ?

সিয়াঃ আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না। আপনি আগেও মিথ্যা বলেছিলেন আর এখনো বলছেন।

সিয়া কথা গুলো বলে চলে যেতে নেয় হঠাৎ ধীরের বলা কথাটা শুনে থেমে যায়।

ধীরঃ ঠিক আছে সিয়া তুমি চাওতো আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাই তোমার জীবন থেকে সরে যাই। তাহলে এটাই হবে। কিন্তু বেঁচে থাকতে আমি তোমাকে ছাড়তে পারবো না এজন্য নিজেকে শেষ করে নাহয় তোমাকে মুক্তি দিয়ে দেই। ( তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে) আই লাভ ইউ সিয়া,,, মাই লাভ ইজ ফরেভার ফর ইউ।

সিয়া ধীরের কথায় ভয় পেয়ে পেছন ফিরে। ধীর নিজের হাত বাড়াতেই হাতে একটা লাল রঙের তলোয়ার এসে পরে,,,

ধীরঃ এটা দিয়ে আমি হাজারো মানুষের জান নিয়েছি আর আজ এটা দিয়েই নিজেকে শেষ করে দেবো। এই জমন না হোক আগামী সব জনমে তুমি যেন আমার হ‌ও। আগামী জনমে আমি যেন ডেভিল না একজন মানুষ হয়ে জন্মাই।

সিয়া ধীরের হাতে তলোয়ার দেখে ভয়ে জমে গেছে। যত‌ই মুখে বলুক ও ধীরকে হেইট করে সত্যি তো এটাই যে ও ধীরকে এখনো অনেক বেশি ভালোবাসে।

ধীর চোখ বন্ধ করে তলোয়ার টা নিজের বুকে ঢুকানোর আগেই সিয়া দৌড়ে গিয়ে ওকে আটকে দেয়। ধীরের হাত থেকে তলোয়ার টা নিয়ে দুরে ছুরে মারে। ধীর চোখ খুলে ফেলে সিয়া হুট করে ধীরের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে আর কান্না করতে করতে বলে।

সিয়াঃ আপনি অনেক খারাপ ধীর। আমাকে ফেলে যাওয়ার কথা ভাবলেন কি করে। আমি বলেছি তাই এরকম করবেন। আপনি খুব পচা খুব খুব বেশি পঁচা।

ধীর আরো শক্ত করে সিয়াকে জড়িয়ে ধরে। সিয়াও টাইট করে ধীরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলতে শুরু করে,,,

সিয়াঃ আই লাভ ইউ ধীর।

ধীরঃ আই লাভ ইউ টু সিয়া। ফাইনালি তুমি আমার হলে।

সাদ রশনিকে একটা রুমে নিয়ে আসে। রুমে নিশি রোহিত তিনাও ছিল।

রশনিঃ সাদ তুমি আমাকে আটকাতে কেন লকেট ছুঁতে?

সাদঃ কারন ওই লকেট‌ই সব ফসাদের মূল।

সবাই একসাথেঃ মানে??

সাদঃ ওটা কোন সাধারণ লকেট না ডেভিল কিং আবরার এর মায়াজাল। যা শুভকে বস করে ফেলেছে। ওই লকেটটা ছোঁয়ার কারনেই শুভর এই ভয়ঙ্কর রূপ বেরিয়ে এসেছে। ও তোমাকে আঘাত করেছে কারন ও এখন কিং এর বসে।

রোহিতঃ কি?? তাহলে আমাদের লকেটটা খুলে ফেলা উচিত।

নিশিঃ এটা আমরা খুলতে পারবো না এটা শুধু শুভ ভাইয়া খুলতে পারবে। কিন্তু ভাইয়া ওই লকেট দেখতে পাবে না তাই খুলে ফেলার কোন ওয়ে নেই,,,

রশনিঃ দেখতে পাবে না মানে??

নিশি সবাইকে বলতে শুরু করে কিভাবে লকেট ছুলে শুভ ডেভিল রুপে আসে।

নিশির কথা শেষ হতেই রশনি মাথায় হাত দিয়ে বসে পরে।

রশনিঃ এখন কি করবো আমরা? কিভাবে শুভকে দিয়ে লকেট খুলাবো।

সাদঃ এটা আমার জানা নেই রশনি।

নিশিঃ আমারো!!

ধীরঃ আমার জানা আছে।

ধীরের কন্ঠ শুনে সবাই দরজার দিকে তাকায়। সিয়া আর ধীর ভিতরে চলে আসে।

সাদঃ তুই জানিস বাট হাও??

ধীরঃ ভুলিস না সাদ আমি এখনো ডেভিল সেনাপতি। কিং এর পরে সবচেয়ে বেশি পাওয়ার আমার কাছে। আর এতো বছর কিং এর সাথে থেকে উনার সব রহস্য যেনেছি আমি।

রোহিতঃ আমি ডেভিল সেনাপতি হুহ? আমরা জানি তুই ডেভিল সো চাপা পরে ছাড় এখন উপায় বল শুভকে ঠিক করার। ?

ধীর রোহিতের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে নিজের পকেট থেকে একটা প্যাকেট বের করে। প্যাকেটে সাদা রঙের পাউডার।

রোহিতঃ হ ধীর তুই ড্র্যাগ্স নিস?। ছিঃ আমি তোকে কত ভালো ভেবেছিলাম আর তুই ড্র্যাগ খোর বের হলি। সিরিয়াসলি!! এখন ডেভিলরাও ড্র্যাগ নেয় স্ট্রেন্জ! আর কত কিছু দেখার বাকি আছে আল্লাহ জানে ?

রোহিতের কথা শুনে সবাই চোখ গরম করে রোহিতের দিকে তাকায় আর রোহিত নিজের মুখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝায় ও আর কিছু বলবে না।

সাদঃ এটা কি ধীর?

ধীরঃ এটা ড্রাগ না এটা আমাদের সমস্যার সমাধান ( রোহিতের দিকে তাকিয়ে)

রোহিতঃ?? এখনো মুখে আঙ্গুল দিয়ে আছে।

রশনিঃ মানে?

ধীরঃ মানে এটা,,,,

হঠাৎ বিকট একটা আওয়াজ হয় আর সবাই ভয় পেয়ে যায়।

সাদঃ আওয়াজটাতো শুভর রুম থেকে আসছে।

সবাই আর দেরি না করে দৌড়ে শুভর রুমে চলে আসে। শুভর রুম খোলা কিন্তু সাদ যাওয়ার আগে রুম লক করেছিল। ভেতরে গিয়ে সবাই অবাক হয়ে যায়।

To be continued…..

#The_Love_Of_A_Devil_And_Angel
#An_Impossible_Love_Story
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_34

সবাই ভেতরে ঢুকতেই দেখলো পুরো রুম তছনছ হয়ে আছে। আসবাব সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আর শুভ রুমের কোথাও নেই পুরো রুম ফাঁকা।

রশনিঃ শুভ!!

সাদঃ শুভ কোয়ায় তুই?

সবাই ‌শুভকে ডাকছে কিন্তু ওর কোন সাড়াশব্দ নেই।

ধীরঃ শুভ কি তাহলে ডেভিল রাজ্যে চলে গেছে?

সবাই একসাথেঃ হোয়াট!!

রশনিঃ শুভ ও ওখানে কিভাবে যাবে?

সাদঃ ওখানে যাওয়া এত সহজ না তাছাড়া শুভ সে জায়গা সম্পর্কে কিছুই জানে না তাহলে?

ধীরঃ শুভ নিজের ইচ্ছায় যায় নি,,,

সবাইঃ মানে?

ধীরঃ শুভ এখন কিং এর বসে আছে কিং ওর মাইন্ড কন্ট্রোল করছে,,, আর উনিই শুভকে ওখানে নিয়ে গেছেন।

রোহিতঃ তাহলে এখন আমরা শুভকে এখানে কিভাবে আনবো??

সাদঃ ওকে এখানে আনবো না আমরা ওখানে যাবো।

নিশিঃ ইউ মিন আমরা ডেভিল রাজ্যে গিয়ে শুভ ভাইয়াকে ফিরিয়ে আনবো।

সাদঃ ইয়েস। আমি ধীর রশনি নিশি আর রোহিত যাবো শুভকে আনতে।

তিনা সাদের দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে আর সিয়া ধীরের দিকে। ভয় হচ্ছে ওদের যদি নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে ফেলে।

তিনাঃ আমার ভয় করছে সাদ,,, আপনার যদি কিছু হয়ে যায় আমি বাঁচবো না।

তিনা কাঁদতে কাঁদতে সাদকে জড়িয়ে ধরে আর সাদ‌ও খুব যত্ন সহকারে তিনাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়।

সাদঃ কিচ্ছু হবে না তিনু,,, আমার উপর কি তোমার একটুও বিশ্বাস নেই। আমি এঞ্জেল কিং আমাকে শেষ করা এতো সহজ নয় বুঝলে।

সাদের কথা শুনে তিনা ওকে আরো জোরে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করে,,,

তিনাঃ আমার এমনিতেই ভয় করছে আর আপনি এসব নেগেটিভ কথা বলছেন। ?

সাদ তিনাকে ছাড়িয়ে ওর চোখ মুছে দিতে দিতে বলে,,,

সাদঃ আমি খুব শীঘ্রই তোমার কাছে ফিরে আসবো তারপর তোমাকে নিজের কুইন বানাবো।

সিয়া ঠাই দাঁড়িয়ে আছে ওর‌ও ভয় করছে কিন্তু কাওকে বুঝতে দিচ্ছে না। মাথা নিচু করে নীরবে চোখের পানি ফেলছে ও। ধীর গিয়ে সিয়ার কাছে দাঁড়ায়। ধীরকে সামনে দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারলো না সিয়া ঝাপটে ধরলো ধীরকে,,

সিয়াঃ আই লাভ ইউ ধীর ?

ধীর সিয়ার মাথায় চুমু দিয়ে বলে।

ধীরঃ আই লাভ ইউ টু সিয়া।

সিয়াঃ শুভ ভাইয়া কে নিয়ে তাড়াতাড়ি চলে আসবা। দেরী করলে কিন্তু আমি অন্য কাওকে বিয়ে করে ফেলবো তারপর নিজের ডেভিল গিরি দেখাতে শুরু করো না।

ধীর কিছু বলল না শুধু হালকা হেসে সিয়াকে জড়িয়ে ধরে রাখলো।

ধীরঃ তুমি শুধু আমার সিয়া। এতো সাধনার পর তোমাকে পেয়েছি এতো সহজে হারাবো না।

এইদিকে রোহিত সিয়া ধীরকে দেখে অবাক হচ্ছে।

রোহিতঃ এদের লাভ স্টোরি আবার কবে থেকে শুরু হলো। আর ধীর হিরো সিয়া হিরোইন হলে নিশানি কি? ( নিশির দিকে তাকিয়ে) আ’ম কনফিউজ্ড। ( মনে মনে)

সাদ আর ধীর আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে কিছু পরতে শুরু করে। আয়নার মধ্যে থেকে একটা নীল রঙের রশ্মি বের হচ্ছে।

সাদঃ চলো রশনি,,,

সাদ আয়নার ভেতরে ঢুকে গেল যেটা দেখে সবাই অবাক। ধীর সাদের পেছনে ঢুকে পরো।

নিশিঃ কাম রশনি,,

রশনির ভয় করছে যেটা দেখে নিশি রশনির হাত ধরে সামনে এগিয়ে গেল।

রোহিতঃ ওয়েট ওয়েট আমিও আসছি।

সাদ ধীর নিশি রশনি আর রোহিত আয়না দিয়ে প্রবেশ করলো আর একটা জঙ্গলে চলে আসলো।

জঙ্গলটা পুরো অন্ধকার আর ঘন চারো দিকে নিস্তব্ধতা শুনশান কোন কাক পক্ষী ও দেখা যাচ্ছে না। এতো ভয়ঙ্কর যে গায়ে কাঁটা দিয়ে দেয়।

রোহিত তো ভয়ে শেষ কিন্তু কাউকে বুঝতে দিচ্ছে না।

রোহিতঃ দেখলেই বোঝা যায় এটা ডেভিল রাজ্য। সব কিছুই ভয়ঙ্কর এজন্য এই রাজ্যের ডেভিল গুলোও ভয়ঙ্কর ( নিশি আর ধীরের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে মনে মনে)

রশনিঃ এটাতো জঙ্গল!

ধীরঃ হুম এখান থেকে বাকিটা পথ আমাদের হেটে যেতে হবে।

রোহিতঃ হোয়াট হেটে যাবো বাট হোয়াই? আয়না দিয়েই যখন ল্যান্ড করলি তাহলে সোজা মহলেই ল্যান্ড করতি এই জঙ্গলে কেন করলি? ?

ধীরঃ কারন ওখানে অনেক পাহারা থাকে যদি কেউ দেখে ফেলতো তাহলে আর শুভকে খোঁজা হতো না বুঝেছেন ?

রোহিতঃ ইয়াহ! আগে বললেই পারতি ?

সাদঃ গাইজ অফ জা ইয়ার। এখন ফাইট করার সময় না সো চুপচাপ সামনে এগো।

এইদিকে,,,

কিং এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে শুভ। কালো হুডি নীল বর্ণ চোখ চোখে হিংস্রতা পুরো ডেভিল রুপ।

শুভ নিজের মধ্যে নেই ও যেন আবরারের হাতের পুতুল হয়ে গেছে। একদম স্স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ও। আবরার এতো খুশি যা বলার বাইরে।

আবরারঃ এতো সাধনার পর ফাইনালি আমার ছেলে তার রাজ্যে ফিরে এসেছে। আমার রাজ্যের কুমার আমাদের ভবিষ্যত কিং আমার উত্তরাধিকারী আমার শুভ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এখন আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না। আমি এঞ্জেল রাজ্য আর মানব রাজ্যে আধিপত্য বিস্তার করবো। আমি আবরার দ্যা ডেভিল কিং সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে যাবো।

>> তোমার এই ইচ্ছে কখনো পুরন হবে না কিং( সাদ)

সাদের কথা শুনে আবরারের হাসি মুখ নিমিষেই বিমর্ষ হয়ে উঠে। চমকে পেছনে তাকিয়ে দেখে সাদ ধীর রোহিত রশনি আর নিশি দাঁড়িয়ে আছে।

সাদকে না দেখেও ধীর আর নিশিকে দেখে রেগে ফায়ার হয়ে গেলেন উনি।

আবরারঃ ধীর নিশি!! শেষমেষ তোমরাও বেইমান বিশ্বাসঘাতক বের হলে। ডেভিড হয়ে ডেভিল কিং এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিভাবে করতে পারলে?? একজন সেনাপতি আর প্রিন্সেস কিং এর বিরুদ্ধে চলে গেছে হাস্যকর বিষয়।

নিশিঃ আপনি যা করছেন তা ভুল বাবা। এসব খারাপের পথ ছেড়ে দিন প্লিজ। আমরা চাই না আপনার কোন ক্ষতি হোক প্লিজ বাবা শুভ ভাইয়াকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে দিন।

আবরার গর্জিয়ে উঠে।

আবরারঃ কখনো না। শুভ আমার হাতিয়ার তাছাড়া ও এখন আমার বসে ওকে আমি কিছুতেই যেতে দেব না। আর তুমি আমাকে বাবা বলবে না আমি তোমার মতো মেয়ের বাবা হতে চাই না।

এজন্যই তোমাকে দুরে রাখতাম কারন তুমি শুধু শক্তির দিকেই মানুষ না মনের দিকেও মানুষ। এখন মনে হচ্ছে কেন তোমাকে মানব দুনিয়ায় পাঠিয়ে বাঁচিয়ে রাখলাম তারচেয়ে বরং তোমাকে মেরে ফেললে আজ আমার এই দিন দেখতে হতো না।

আবরারের কথা গুলো নিশির হৃদয় ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে।

আবরারঃ তোমরা এখানে এসেছো ভালো কথা কিন্তু এখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারবে না।

আবরার সৈন্যদের হুকুম দেয় ওদের উপর আক্রমণ করতে ওরা সামনে এগিয়ে আসতেই ধীর ওদের সামনে এসে পরে আর ওরা ভয়ে পিছিয়ে যায়। ওরা ভালো করেই জানে সবাই একসাথে মিলে লড়লেও ধীরকে হারাতে পারবে না উল্টো ওরা নিজেদের প্রান হারবে ধীরের কাছে।

সৈন্যদের থেমে যেতে দেখে আবরার রেগে হুঙ্কার দিয়ে ওদের আবার বলে।

আবরারঃ আমি বলছি ওদের শেষ করো এক্ষুণি।

আবরারের ভয়ে সবাই সামনে তেরে যায়।

সাদ আর ধীর জমিয়ে লড়াই করছে আর সবাইকে শেষ করছে।

কয়েকটা ডেভিল রোহিতের কাছে চলে আসে বাট রোহিতের হাতে কোন অস্ত্র নেই।

একটা ডেভিল তলোয়ার দিয়ে রোহিতকে আঘাত করতে নিলেই ও চেঁচিয়ে উঠে।

রোহিতঃ হেই ব্রো স্টপ স্টপ ?

ডেভিলটা থেমে গেল,,,

রোহিতঃ ওয়াও হোয়াট আ চাকু ম্যান?( তলোয়ার টা দেখিয়ে)

ডেভিলঃ এটা চাকু না তলোয়ার ?

রোহিতঃ হোয়াট তলোয়ার ইউ নো হোয়াট আমি এরকম চাকু থুক্কু তলোয়ার কখনো দেখি নি ?

ডেভিলঃ এগুলো তোমাদের পৃথিবীতে পাওয়া যায় না এগুলো শুধু ডেভিল আর এঞ্জেলদের কাছে থাকে,,, এগুলো রিয়েল ?

রোহিতঃ সিরিয়াসলি ? আচ্ছা একটু দিন তো দেখি এটা কোন কম্পানির মাল ?

( গাধা ডেভিল দিস না ?)

ডেভিলটা বত্রিশ দাঁত বের করে রোহিতের হাতে তলয়ার টা দিয়ে দিল।

ডেভিলঃ দেখেন দেখেন একদম রিয়েল ?

রোহিত তলোয়ারটা হাতে নিয়েই একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল,,,

রোহিতঃ আব তেরা কেয়া হোগা কালিয়া থুক্কু গাধা ডেভিল ?

( আগেই বলছিলাম দিস না এখন ল‌‌ও ঠেলা ?)

ডেভিলটা ভয় পেয়ে গেল ডেভিল টা জাদু করার আগেই রোহিত ওকে আঘাত করে ফেলল আর ওর খেল খাতাম।

রোহিত ধীর আর সাদ মিলে সবাইকে শেষ করে দিচ্ছে এটা দেখে আবরার অনেক ভয় পেয়ে গেছে।

আবরারঃ এমন হলে তো ওরা সবাইকে শেষ করে ফেলবে আমার কিছু একটা করতে হবে।

রশনি কিছুটা দূর শুভকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।

রশনিঃ শুভ!

রশনি ভীর ঠেলে শুভর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

আবরার রশনিকে শুভর কাছে আসতে দেখে ও আগেই শুভর কাছে চলে আসে।

আবরারঃ শুভ ও তোমার শত্রু শেষ করে দাও ওকে। ( রশনিকে দেখিয়ে)

শুভ রশনির দিকে তাকিয়ে দেখে ও ওর দিকেই আসছে। হাতের তলয়োয়ারটা শক্ত করে মুঠো করে নেয় শুভ। চোখে মুখে হিংস্রতার ছাপ। শুভ রশনির কাছে এগিয়ে যাচ্ছে ওকে মারতে আর রশনি শুভর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ওকে বাঁচাতে।
এখন দেখা যাক ভালোবাসা জিতে নাকি ঘৃনা।

To be continued

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here