এক_শহর_প্রেম?,১৫,১৬,১৭

0
722

#এক_শহর_প্রেম?,১৫,১৬,১৭
লেখনীতেঃ #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_১৫

মারসাদ ও আদিরা স্টুডেন্টের বাড়িতে যাওয়ার সময়ও দুজনের কেউই একটুও কথা বলে নি। মারসাদ গম্ভীর মুডে আছে। আদিরা সেটা লক্ষ্য করে ভাবছে মারসাদ রেগে আছে। টিউশন থেকে ফেরার সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে দুজনে। মারসাদ সামনে এগিয়ে দেখছে রিকশাওয়ালা মামারা কতোটুকু এসেছে। কিছুক্ষণ আগে এক পশলা ঝুম বৃষ্টি হয়ে গেছে। ভাগ্যিস টিউশন শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টি থেমে গেছে। আদিরা ইতস্তত করছে মারসাদের সাথে কথা বলতে কারণ সে ক্ষমা চাইতে চায়। আদিরা ভাবনায় মগ্ন কিভাবে কথাটা তুলবে। এরইমধ্যে আচমকা মারসাদের কন্ঠস্বরে আদিরা চমকে উঠে। আলো আঁধারিতে মারসাদ সেটা দেখতে পেলো না। মারসাদ বলল,

–যে দুইজনের রিকশা করে এসেছিলাম তাদের একজনের রিকশার চাকা নাকি বৃষ্টির মধ্যে কোথাও আটকে গেছে। চাকাতে নাকি প্রবলেম। আর রাত ৯টা বাজে। এখন এখানে খুব একটা রিকশা পাওয়া যায় না জানোই তো। তাছাড়া বৃষ্টির দিন। আমার সাথে এক রিকশায় বসতে তোমার প্রবলেম হবে?

আদিরা কিয়ৎক্ষণ ভাবলো। মারসাদকে আর কষ্ট করতে দিতে চাইলো না। আদিরা বলল,
–ঠিক আছে ভাইয়া।

মারসাদ ও আদিরা দুইজন পাশাপাশি কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে বসে আছে। বর্ষণের কারণে রাস্তা স্যাঁতসেঁতে তাই রিকশার প্যাডেল মন্থর গতিতে চলছে। নিরবতা ভেঙে আদিরা অপরাধী কন্ঠে বলে,

–সরি ভাইয়া। আমার উচিত হয় নি ভর্তার আইটেমগুলোতে এতো ঝাল দেওয়া। আপনি ঝাল খেতে পারেন না তা আমি জানতাম না। প্লিজ ক্ষমা করে দিন।

মারসাদ আদিরার দিকে না তাকিয়েই নিঃশব্দে হাসে কিন্তু অন্ধকারের বুকে তা আদিরার আড়াল রয়ে যায়। আদিরা মারসাদের কাছ থেকে কাঙ্খিত জবাব আশা করছে। আদিরার মেসের কাছে এলে আদিরা রিকশা থেকে নেমে যায়। রিকশা এরপর মারসাদের হোস্টেলের উদ্দেশ্যে চলতে শুরু করলে আদিরা মনখারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ তারপর মেসের ভেতরে চলে যায়। আদিরা মেসের ভেতরে প্রবেশ করার পর মেসেজ টোন টুং করে বেজে উঠে। বিছানায় ব্যাগটা রেখে মোবাইলের মেসেজটা দেখে।

“মুখে আ*গুন লাগিয়েছ তো এখন সেটা নেভানোর দায়িত্বও তোমার। পরে একদিন আবার চেয়ে নিবো। সো স্মাইল প্লিজ!”

আদিরার মুখে অজান্তেই হাসি ফুটে। সব মনখারাপ কর্পূরের ন্যায় উড়ে গেছে তার।

_______

সুমি ও মৌমি মিলে আজ রাত্রির চায়ে একটা ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে দিয়েছে। ক্যান্টিন থেকে সুমি চা আনার সময় পথিমধ্যে মিশিয়ে এনেছে। আধাঘণ্টার মধ্যে রাত্রির ঘুমে চোখ বুজে আসছে। রাত্রি হাই তুলতে তুলতে বলল,

–কীরে ভাই! চা খেয়ে দেখি ঘুম আসছে।

সুমি রাত্রির কথায় তাল মিলিয়ে ঘুমের ভান ধরে বলে,
–আমারও ঘুম আসছে। চা খেলাম রিফ্রেশমেন্টের জন্য কিন্তু এখন ঘুম আসছে। কীরে মৌমি তোর ঘুম আসছে না?

কথাটা বলে মৌমির দিকে একটা চোখ টিপ দেয়। মৌমি হা করে সুমির কথা শুনছিল। কারণ তার তো ঘুম আসছে না। আর ঘুমের ঔষুধ তো শুধু রাত্রিরটাতে মেশানো হয়েছিল। সুমির চোখ টিপ দেখে মৌমি দাঁড়ানো থেকে একটু হেলে পরে। যেমনটা ঘুম আসলে দাঁড়ানো থেকে পরে যাওয়া ধরে তেমন। মৌমি চোখ হাত দিয়ে ডলে বলে,

–আসলেই। তবে কম কম।

রাত্রি হাসতে হাসতে বলল,
–কম কম বলেই তো তুই পরে যাচ্ছিলিস! আজকে জলদি ঘুমাবো চল। তাহলে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল কমবে।

ওরা তিনজন রুমের লাইট নিভিয়ে নিজেদের বেডে শুয়ে পরে। সুমি ও মৌমি ঔষুধ খায় নি তাই তারা ঘুমাবে না। আধাঘণ্টা পার হলে সুমি নিজের বিছানা থেকে উঠে মোবাইলের ফ্লাশলাইট অন করে মৌমিকে ডাক দেয় হাত দিয়ে। মৌমি আচানক ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠে চিৎকার করতে নিবে তার আগেই সুমি হাত দিয়ে ওর মুখ চেপে ধরে। এরপর মুখের উপর থেকে হাত সরিয়ে ফিসফিস করে শা*শানো স্বরে বলল,

–এই তুই ঘুমাস কেন? কাজ করতে হবে ভুলে গেছিস?

মৌমি ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে বলে,
–রুম অন্ধকার আর ফোন তো চালাতে পারতাম না যদি রাত্রি বুঝে যায়! তাই অপেক্ষা করতে করতে তন্দ্রা লেগে গেছিলো।

সুমি হুঁশিয়ার কন্ঠে বলে,
–ঠিক আছে। তুই এবার কিছুটা দূরে লাইট নিয়ে দাঁড়াবি আর আমি রাত্রির মোবাইলের লক খুলতে ওর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিবো। যেমনেই হোক জানতে হবে রাত্রি কার সাথে যোগাযোগ রাখছে।

মৌমি ও সুমি তাদের কাজে লেগে পরে। সুমি রাত্রির ফোনের লক খুলে ফেলল এরপর ফোনটা নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় এসে কল লিস্টে ঢুকে। মৌমি ভীতু স্বরে বলে,

–আচ্ছা রাত্রি বুঝে যাবে নাতো? বুঝে গেলে তো প্রবলেম হয়ে যাবে।

সুমি মৌমির বোকা বোকা কথায় বিরক্ত হয়ে মৌমির মাথায় একটা ঠু*য়া মা*রে তারপর বলে,

–এজন্যই আশিক ভাই তোকে বারেবারে মাথায় ঠু*য়া দেয়। আরে ভাই! রাত্রি বুঝবে কেমনে? আমরা কী ওই ছেলেকে কল করবো নাকি! জাস্ট নাম্বারটা নিবো। আর সুন্দর করে হিস্টোরি ক্লিয়ার করে দিবো। অবশ্য না করলেও হবে। ওর লাস্ট হিস্টোরি কল লিস্টেই ছিল। তুই ভবিষ্যতে একজন ভিপির বউ হবি হোক তখন সেটা প্রাক্তন ভিপি। আর আমাদের বন্ধুও ভিপি হবে। একটু তো সাহসী হ।

মৌমি আর কিছু বলে না। সে বারবার রুমের ভিতরে নজর রাখছে রাত্রি উঠে গেলো কীনা। সুমি রাত্রির ফোন থেকে সবচেয়ে বেশি কল হিস্টোরিওয়ালা নাম্বারটা কালেক্ট করে নেয়। রাত্রির ফোনে সেটা “jaan” লিখে সেভ করা। সুমি সেটা দেখে মুখ বাঁকালো। কাজ শেষ হওয়ার পর আস্তে করে ফোনটা যথাস্থানে রেখে দিলো। এরপর নাম্বারটা মারসাদকে সেন্ড করে দিলো।

সুমি ও মৌমি এখন নিজেদের টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়ছে। প্রায় ঘন্টাখানেক পড়ার পর হঠাৎ রাত্রির ফোনের রিংটোন বেজে উঠলে সুমি ও মৌমি একে অপরের দিকে তাকায়। সুমি গিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে ওই নাম্বার থেকে কল। সুমি মৌমির দিকে তাকিয়ে চোক টিপ দিয়ে দাঁত বের করে হেসে কলটা রিসিভ করে। অপরপাশ থেকে ভেসে আসে,

–আমার রাতপাখিটা কী করে?

সুমির হাসি পেলো। মুখ চেপে ধরে হাসি কন্ট্রোল করে আছে। আবার অপরপাশ থেকে শোনা যায়,
–কী হলো? কথা বলবা না? রাগ করে আছো পাখিটা?

সুমি কন্ঠস্বর চেনার চেষ্টা করছে। কার কন্ঠস্বর হতে পারে? তবে কিছুটা শোনা কন্ঠস্বর লাগছে। ফোনের অপরপাশের ব্যাক্তিটার সন্দেহ হলো। সে সন্দিহান হয়ে বলল,

–তুমি রাত্রি তো?

সুমির মনে হলো লোকটাকে আর প্যাঁচানো ঠিক হবে না। পরে নিজেরা ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। সুমি ব্যাঙ্গ করে বলল,

–না ভাইয়া! আপনার রাতপাখি তো ঘুমোচ্ছে। তার অক্ষিযুগলে নিদ্রাদেবী ভর করেছে যে। তার নামের মতোই সে এখন ঘুমিয়ে রাত্রীবিলাশ করছে যে!

খট করে ফোনটা কেটে দিলো। সুমি ঠোঁট উল্টে ফোনটা সামনে এনে দেখলো। মৌমি উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,

–কে চিনতে পেরেছিস?

সুমি মুখ লটকে বলল,
–না তবে গলার স্বরটা চেনা চেনা লাগছিল। মনে হচ্ছে শুনেছি আর বেশ কয়েকবার শুনেছি। তবে অতোটাও না।

মৌমি ও সুমি দুজনেই হতাশ হলো।

_______

মারসাদ পরেরদিন মোবাইল অপারেটররে সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারলো নাম্বারটা রেজিস্টার করা না। এখন সুমিই ভরসা। সুমি যদি সেই কন্ঠস্বর আবার কোথাও শুনতে পায় তবে জানতে পারা যাবে। এদিকে রাত্রি ক্লাসের পর সুমি ও মৌমিকে জিজ্ঞেসা করে,

–তোরা কালকে ওর ফোন রিসিভ করেছিলি?

মৌমি ঢোক গিলে। সুমি স্বাভাবিক ভাবে বলল,
–হ্যাঁ। তোকে কতোবার ডাকলাম যে তোর ফোন বাজছে কিন্তু তুই কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমাচ্ছিলি। পরে রিংটোন বন্ধ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে ফোনটা রিসিভ করি। তা কে তোর জান? নামটা তো বল? আমাদের থেকে লুকিয়ে জান ফানও বানিয়ে ফেলেছিস? কবে থেকে এসব?

রাত্রি সুমি কৌতুক মিশ্রিত কথায় লজ্জা পেয়ে গেলো। লজ্জায় লাল-নীল হয়ে বলল,

–মাত্র দুই মাস হলো। দুই মাস ধরে ফ্রেন্ডশিপ তারপর একটু একটু ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা। আমাদের ভার্সিটিরই। আর ইয়ারমেট সে। নাম জানাতে পারবো না। সে মানা করেছে।

নাম না বলাতো সুমি চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলল। রাত্রি যে এখন বলবে না তা সে জানে। কাল ফোনটা রিসিভ না করলে এটুকু ইনফরমেশনও জানতে পারতো না। সুমি ও মৌমি রাত্রিকে পিঞ্চ করতে থাকে রিলেশন নিয়ে।

চলবে ইন শা আল্লাহ্,

#এক_শহর_প্রেম?
লেখনীতেঃ #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_১৬
সময়ের পরিক্রমায় পেরিয়ে গেছে দুই মাসেরও বেশি সময়। প্রকৃতিতে এখন শ্রাবণ মাস চলছে। ভার্সিটিতে একটা সেমিস্টার শেষ করে ছুটি পেয়েছে তাই আদিরা তার গ্রামে চলে গেল। টিউশন দুটোর থেকে চার-পাঁচ দিনের মতো ছুটি নিয়েছে। পরে সেটা পুষিয়ে দিবে। সাতক্ষীরাতে পৌঁছে তার মায়ের মুখে অশ্রুসিক্ত হাসি দেখে দৌঁড়ে জড়িয়ে ধরে। আদিরার মা মেয়ের মুখে হাত দিয়ে বললেন,

–কেমন আছিসরে মা? কেমন শুকিয়ে গেছিস তুই? খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করতি না? মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে।

আদিরার মনটা প্রশান্তিতে ভরে যায়। আদিরা ওর মায়ের চোখ মুছিয়ে দিয়ে বলে,

–কেঁদো না তো। অনেকদিন পর দেখছো তাই এমন লাগছে। সেসব বাদ দাও আগে খেতে দাও। সেই কাল রাতের পর কিচ্ছু খাওয়া হয় নি। আর আনাস কই মা? আমার পুচকো দুষ্টুটাকে দেখছি না যে? আজ তো শুক্রবার।

আদিরার মা হেসে চোখের জল মুছে বলেন,
–কার কার আম বাগানে বাঁ*দরের মতো ঘুরছে কে জানে? আশ্বিনী আম বাগানে গেছে মনে হয়। তোর জন্য কাঁচা আম আনতে। তুই হাত-মুখ ধুয়ে আয় আমি ভাত বাড়ছি।

আদিরা ব্যাগ নিয়ে নিজের ঘরে যায়। এরপর ফ্রেশ হয়ে আসলে তার মা তাকে নিজ হাতে খাইয়ে দেন। আদিরার মা বহুদিন পর মেয়েকে নিজ হাতে খাইয়ে অনেক তৃপ্তি পেলো আর আদিরাও মায়ের হাতে খেয়ে।

……..

মারসাদরা পাঁচ জন আজ বান্দরবন যাচ্ছে। গোপনসূত্রে জানা গেছে রাদিব মানে মিলির হাসবেন্ড সপ্তাহখানেক যাবত বান্দরবনে গা ঢাকা দিয়েছে। সে ভারত থেকে মিয়ানমার গিয়েছে তারপর সেখান থেকে টোকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এখন মারসাদরা সেখানে যাচ্ছে। ওরা যে যাচ্ছে তা ওরা পাঁচজন ছাড়া কেউ জানে না এবং ওরা কোনো পরিকল্পনা অফিসার শফিক ছাড়া কারও সাথে করে নি।
কয়েকদিন আগে রাত্রির কার সাথে রিলেশন সেটাও জানতে পেরেছে ওরা। প্রথম পরীক্ষার দিন রবিন রাত্রিকে দেখেছিল একাডেমিক ভবনের উত্তর পাশ দিয়ে একটা ছেলের বাহু জড়িয়ে কোথায় যেনো নিয়ে যাচ্ছিলো। রাত্রি ছেলেটাকে নিয়ে নিরিবিলি জায়গায় বসে ব্যাগ থেকে কী যেনো বের করে খাওয়াচ্ছিল। রবিন আড়াল থেকে লুকিয়ে ছেলেটার চেহারা দেখার চেষ্টা করছিল। দশ মিনিট পর যখন রাত্রি ও ছেলেটা উঠে দাঁড়ায় তখন রবিন ছেলেটার মুখের একপাশ দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ ছেলেটা সাগরের বন্ধু নিলয়। সেদিন সকালেও নিলয়কে একই রঙের শার্টে দেখেছিল আর সাগরদের সাথে কিছু কথা কাটাকাটিও হয়েছিল ওদের ভিপির পদ নিয়ে। মারসাদ ভিপির পদের জন্য দাঁড়াবে তা মারসাদ নিশ্চিত করেছিল। তখন থেকেই মারসাদ, আহনাফ, রাহিন, রবিন, মৃদুল, সুমি ও মৌমি রাত্রির সাথে কিছুই শেয়ার করে না ওদের ব্যাপারে। বান্দরবনোর জন্য রওনা হওয়ার আগে ওরা নিজেদের ব্যাবহার করা রেজিস্টারর্ড সিম কার্ড খুলে রেখেছে। আর ওরা কোনো বাসে করে যাচ্ছে না। যাচ্ছে অফিসার শফিকের অফিশিয়াল মাইক্রোতে করে।

যাত্রা বিরতিতে মারসাদ তন্দ্রাচ্ছন্ন স্বরে আহনাফকে ডেকে বলে,
–এই নতুন সিমগুলো তো তোর কাছে?

আহনাফ ঘুমোয়নি। সে বসেছে ড্রাইভারের পাশে। পকেট থেকে সিমকার্ড গুলো বের করে দেয়। মারসাদ একটা নিজের ফোনে ঢুকিয়ে রেখে দেয়।

সকাল ১০টার দিকে বান্দরবন পৌঁছানোর পর দুপুর বারোটার আগেই মি*লিটারি চেক পোস্ট পার করে। মারসাদকে যে খবর দিয়েছে রাদিব কোথায় আছে সে এটাও বলেছে যে রাদিবকে নাকি মারসাদের কোনো শত্রু নিজের পরিচিত রিসোর্টে লুকিয়ে থাকার ব্যাবস্থা করে দিয়েছে। মারসাদের কেনো যেনো মনে হচ্ছে সেটা সাগর। মারসাদরা শফিকের পরিচিত একটা রিসোর্টে উঠলো। এখন তারা আগে জানবে রাদিব কোন রিসোর্টে আছে। তা জানানোর দায়িত্বও শফিকের।

জার্নির ধকল পোষাতে ওরা সারাদিন ঘুমালো এরপর রাতে চেহারা আড়াল করে বাহিরের রেস্তোরায় খেতে বের হলো। মৃদুল বলে,

–কোথায় যে এই রাদিবের বা*চ্চা? সামনে পেলে সোজা পাহাড়ের পাদদেশে এক নিমিষেই ট্রান্সফার করে দিবো উপর থেকে।

মারসাদ কোনো কথা বলছে না। সে বেখেয়ালি ভাবে খাচ্ছে। আহনাফ মৃদুলকে বলে,
–আমরা কিছু করবো না। জাস্ট আগে রাদিবের ঠিকানা জানতে হবে। বাকিটা অন্যকেউ করবে।

রাফিন খেতে খেতে আশেপাশে দেখছিল। হঠাৎ কাউকে দেখে ওর কাশি উঠে যায়। রবিন দ্রুত ওকে পানি দিলো। রাফিন একদম সাইডের চেয়ারে বসেছিল। সে নিচু হয়ে ফ্লোরে বসে যায়। ব্যাক্তিটি কাশির শব্দে এদিকে তাকিয়ে চারজন মানুষ খাচ্ছে একটা টেবিলে দেখতে পেলো কিন্তু চেহারা দেখলো না। লোকটা সেটার তোয়াক্কা করলো না। সে বিল পরিশোধ করে রেস্তোরার বাহিরে চলে গেলো। লোকটাকে চলে যেতে দেখে রাফিন উঠে দাঁড়িয়ে পানি খেয়ে কোনোমতে ওদের বলে,

–রাদিব ছিলো ওটা। জলদি চল।

ওরা চারজন অবাক হয়ে গেলো। ওরা হুড়মুড় করে খাওয়া ছেড়ে উঠে রেস্তোরার বাহিরে চলে গেলো। বাহিরে এসে রাহিন দূরে একজন হেঁটে যাচ্ছে তা লক্ষ্য করে বলল,

–ওটাই মনে হচ্ছে। সাদা টিশার্ট পড়নে ছিল।

মারসাদ হুট করে মৃদুলকে বলে,
–মৃদুল তুই রাদিবের পেছোনে যা। মুখে মাস্ক আর চোখে চশমা ও মাথায় টুপি লাগানোতে চিনবে না। আর আমাকে ও আহনাফকে চেনার সম্ভাবনা থাকলেও তোদের গেটআপ চেঞ্জে চিনতে পারবে না।

মৃদুল কথাটা শোনামাত্র দৌঁড় দিলো। রাহিন হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
–এরপর কী করবো?

মারসাদ বাঁকা হেসে বলে,
–রিসোর্টের নামটা শফিক ভাইয়ের কাছে জানালে সে আমাদের রাদিবের মুভমেন্ট জানাবে। তারপর সুযোগ বুঝে সব। আমরা কালই ফিরে যাবো একটা কাজ করে। তবে আগে চট্টগ্রাম যাবো।

রাহিন অবাক হয়ে বলে,
–তাহলে কাজ করবে কে?

মারসাদ বাঁকা হেসে বলল,
–দেখতেই পাবি।

………..

আদিরা সকালবেলা ওর ভাইকে নিয়ে একটু বের হয়েছে। পথিমধ্যে চেয়ারম্যানের ছোটো ছেলে দেলোয়ার আদিরার পথ আগলে দাঁড়ায়। দেলোয়ারের দাঁতের ফাঁকে নিমের ডাল। সে আদিরাকে আপাদমস্তক স্ক্যান করে নিমের ডাল চাবানোর পিক ফেলে বলে,

–কীরে পাখি? তোরে মেলাদিন দেখি না। আজ কইলজাডা ঠান্ডা হইয়া গেলো। তা কেমন আছোছ?

আদিরা ওর ভাই আনাসের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে। এই দেলোয়ারের স্বভাব ভালো না। রাস্তাঘাটে আদিরাকে বিশ্রি ভঙ্গিতে বিরক্ত করতো আগে। আদিরার এখান থেকে দূরে যাওয়ার এটাও একটা কারণ। আদিরা আনাসের হাত ধরে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় দেলোয়ার আদিরার ওড়না খপ করে ধরে। আদিরা ভয়ে জড়োসরো হয়ে যায়। চেয়ারম্যানের ছেলে বলে কথা বলাও দায়। আনাস দেলোয়ারের হাত থেকে আদিরার ওড়না ছুটিয়ে চোখ-মুখ কুঁচকে বলে,

–এই বাজে লোক! আপনে আমার আপার ওড়না ধরেন কেন? সাহস তো কম না আপনের।

দেলোয়ার খিটখিটিয়ে হাসে। তারপর আনাসের গাল রুক্ষভাবে টেনে বলে,
–তোর আপারে যেদিন বিয়া করে ঘরে তুলমু সেদিন দেখিস আমার সাহস। তুই তো হবি আমার পুচকে শা*লা।

আদিরা আর এক মূহুর্তও সেখানে দাঁড়ালো না। তার হাত-পা কাঁপছে। দ্রুত পা চালিয়ে বাড়ির দিকে চলে যায়। আনাস তার বোনের সাথে চলতে থাকে। আনাস বাড়িতে গিয়ে তার মাকে ঘটনার বিশদ আলোচনা করলে আদিরার মা ভয় পেয়ে যান। আদিরার বাবা অনেক টাকার কর্জ আছে চেয়ারম্যানের কাছে। এখন যদি চেয়ারম্যান তার ব*খাটে ছেলের জন্য সেই কর্জ পরিশোধ হিসেবে আদিরাকে চায়! তিনি মেয়েকে বুকের সাথে আগলে বসে রইলেন। মেয়েকে বাঁচাতে সে দরকার পরলে মেয়ের থেকে দূরত্ব মেনে নিবেন।

চলবে ইন শা আল্লাহ্,

#এক_শহর_প্রেম?
লেখনীতেঃ #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_১৭
কেওক্রাডং পর্বতশৃঙ্গের চূড়ায় থরথর করে কাঁপছে রাদিব। সূর্য এখন ঠিক মাথার উপরে বরাবর। তপ্ত রোদ্দুরে স্বেদগ্রন্থি থেকে স্বেদকণা নিঃসৃত হওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু একরাশ ভীতি যেনো আরও গ্রাস করে নিয়েছে। রাদিব আবারও শুনতে পায়,

“রাদিব! তোমাকে আমি নিয়ে যেতে এসেছি। চলো আমার সাথে!”

খুব পরিচিত মেয়েলি কন্ঠস্বরটি কিছু ধ্বনি অদূরে পাহাড়ের সাথে ঠেকে প্রতিফলিত হচ্ছে আবার কিছু হচ্ছে না। রাদিব কানে হাত দিয়ে হাপাচ্ছে। পাহাড়ের এক ঢাল নিচে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির মুখে প্রশান্তির হাসি ফুটেছে। রাদিব চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলে,

–প্লিজ আমায় মাফ করে দেও মিলি। কেনো কাল থেকে আমাকে এভাবে ভয় দেখাচ্ছ? চলে যাও।

মারসাদ আবারও রেকর্ডারটা অন করে। রেকর্ড করা ভয়েসটা মিলিরই। মিলির সাথে যখন রাদিবের সম্পর্ক ভালো ছিল তখন হানিমুনে রাদিব ও মিলি বান্দরবানে এসেছিল। মারসাদ ও মাহিও সাথে এসেছিল। মিলি সেদিন পাহাড়ের উপর উঠে উপরোক্ত বাক্যটা চিৎকার করে বলেছিল। বলার উদ্দেশ্য ছিল বিশাল অন্তরিক্ষের হয়ে রাদিবের জন্য। মারসাদ সেটা রেকর্ড করে নিয়েছিল।

মারসাদ গতকাল রাতে কাউকে দিয়ে রাদিবের হোটেল রুমের দরজার নিচের সামান্য ফাঁকা অংশের মাধ্যমে বাহির থেকে এই রেকর্ডারটা অন করিয়েছিল। রাদিব তখনও ঘুমায় নি বলে কন্ঠস্বরটা শুনে খুব ভয় পেয়েছিল। মিলির ভয়েসের সেই রেকর্ডারের সাথে মিলির কান্নার একটা রেকর্ডও জুরে দেওয়া। যা মারসাদ মিলিকে রাগাতে রেকর্ড করেছিল আগে।

মারসাদ নিচে নেমে আহনাফদের কাছে আসে। আহনাফ বলে,
–কাজ হয়েছে?

মারসাদ বাঁকা হেসে বলে,
–রাদিব কাঁদছে। কাঁদুক। আরও মে*ন্টালি ট*র্চার করাবো। আপিলির সাথে তার কিছু ছবিতে র*ক্ত লাগিয়ে ওর কাছে পার্সেল যাবে। সাথে বাচ্চাদের কিছু খেলনা।

রাহিন এক্সসাইটেড হয়ে বলে,
–আরও দুইদিন থেকে যাই না? জা*নো*য়া*রটার করুণ পরিনতি দেখার জন্য চোখদুটি আমার অধীর আগ্রহে আছে।

মৃদুল বলে,
–এরপর কী হবে? এটুকুতে কী সে ট্র*মাতে যাবে?

মারসাদ বলে,
–আপিলি তার হানিমুনে যেসব শাড়ি পড়ে এই বান্দরবান ও পাহাড়ে বেরিয়েছিল তার সব আমি নিয়ে এসেছি। একটু পর একটা মেয়েকে হালকা আকাশি শাড়ি পড়ে চুল খোলা অবস্থায় পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নামতে দেখবে রাদিব। আবার সন্ধ্যায় কালো শাড়ির সাথে চুল খোলা মেয়েকেও দেখবে। ও যা খাবার অর্ডার দিবে তার বদলে ওর কাছে যাবে যা আপিলি তার হানিমুনে এসে খাবারের জন্য অর্ডার করেছিল। ওকে মানসিকভাবে এমনভাবে আঘাত করা হবে যে ও ভাবতে থাকবে ওর আশেপাশে আপিলির আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আপিলির কান্নার রেকর্ডটাও আলাদা করে শোনানো হবে।

রাহিন মিনতি করে বলে,
–থেকে যাই আজ?

মারসাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
–না। ঝামেলা হবে। ঢাকায় গিয়ে রাদিবের বাড়িতেও যাবো। আর দুইদিন পর আপিলির মৃ*ত্যুবার্ষিকী।

ওরা আস্তে আস্তে পাহাড় থেকে নেমে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই অফিসার শফিকের অফিশিয়াল গাড়িতে করে ওরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে।

__________

পরেরদিন সকালে চেয়ারম্যান সাহেব আদিরার বাবাকে তার বাড়িতে ডাকায়। আদিরার বাবা গিয়ে সালাম দিলে চেয়ারম্যান সাহেব পান চিবুতে চিবুতে বলেন,

–তা আলেক ব্যাপারি? তোমার কর্জ জানি কতো বাকি?

আদিরার বাবা মিনমিন স্বরে বলেন,
–দুই লক্ষ টাকা চেয়ারম্যান সাব।

চেয়ারম্যান সাহেবের চোখ চিকচিক করে উঠে। সে ভনিতা করে বলেন,
–তা কবে পরিশোধ করবা? তোমার জন্য তো কর্জের সুদ ধরি নাই। তুমি গরিব মানুষ আর আমার দয়ার দিল! দুই বছর ধইরা এই কর্জ ঝুলতাছে। সুদ ধরলে এর দ্বিগুন দেওন লাগতো তোমার।

আদিরার বাবা গামছা দিয়া কপালের ঘাম মুছেন। চেয়ারম্যান সাহেব এবার নরম স্বরে বলেন,
–তুমি যদি চাও তয় তোমার একটা টাকাও দেওন লাগবো না!

আদিরার বাবা ভিষণ অবাক হলেন। চেয়ারম্যান সাহেব কারও দেনা মাফ করেন না। আর সুদ তো কড়ায়গণ্ডায় বুঝে নেন। তার বেলায় কেনো এর বৈপরীত্য দেখা গেলো তার বুঝে আসলো না। আদিরার বাবার কৌতুহল মিশ্রত চাহনি দেখে চেয়ারম্যান সাহেব পানের পিক ফেলে বলেন,

–তোমার মাইয়ার সাথে আমার সুপুত্র দেলোয়ারের বিয়া দিবা। দেলোয়ার তোমার মাইয়ারে খুবই পছন্দ করে। সেই তো তোমার মাইয়ারে বিয়ার কথা কইলো। এমনেও আমার তোমার মাইয়ারে নিয়া সমস্যা নাই। লক্ষি মাইয়া তোমার। তবে টাকা-পয়সা আসবো না এই একটু।

আদিরার বাবা দ্বিমনায় পরে গেলো। কী করবেন বুঝতে পারছেন না। আদিরার বাবাকে চুপ থাকতে দেখে চেয়ারম্যান সাহেব বললেন,

–কী এমন ভাবো আলেক ব্যাপারি? লাভ কিন্তু তোমারই। মাইয়া তোমার সুখেও থাকবো।

আদিরার বাবা বললেন,
–আমি ওর মায়ের লগে একটু কথা কইয়া লই। তারপর আপনেরে জানামু নে। আইজকা তয় আসি।

চেয়ারম্যান সাহেব সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তার মতে এতো ভালো প্রস্তাবকে হেলাফেলা করাটা পছন্দ হয় নি। চেয়ারম্যান সাহেব বললেন,

–যাও তয়। জলদি জানাইয়ো।

আদিরার বাবা সালাম দিয়ে চলে আসলেন। বাড়িতে এসে সে চিন্তিত হয়ে ঘরের ভিতর বসে রইলেন। আদিরার মা স্বামীর জন্য পানি নিয়ে আসেন। স্বামীকে চিন্তিত দেখে জিজ্ঞাসা করেন,

–কী হইছে আপনের? এতো চিন্তিত লাগতেছে কেন?

আদিরার বাবা পানি ভর্তি গ্লাসটা এক শ্বাসে ফাঁকা করে স্ত্রীর হাতে দিয়ে বলেন,

–চেয়ারম্যান তার পোলার লগে আদিরার বিয়ার প্রস্তাব দিছে। সাথে কইছে আমার দুই লক্ষ টাকার কর্জ মাফ করে দিবো। কী করমু বুঝতেছি না। দুই বছর ধইরা কর্জ পরিশোধ করতে পারতেছি না।

আদিরার মা আঁতকে উঠেন। উনি কাল থেকে যেই ভয়ে ছিলেন তাই সত্য হতে চলেছে। আদিরার মা উৎকণ্ঠা নিয়ে বললেন,

–আপনে কী রাজি হয়ে গেছেন নাকি?

আদিরার বাবা হতাশ স্বরে বলেন,
–না। এখনও হই নাই কিন্তু ভালো প্রস্তাব। চেয়ারম্যান সাহেবের পোলার নিজেরই কাঠের কারবার। পোলা একটু উড়ন স্বভাবের কিন্তু বিয়ার পরে ঠিক হইয়া যাইবো। চেয়ারম্যান সাহেব আমাগো কতো সাহায্য করছে তুমি তো জানোই। সে সুদও ধরে নাই।

আদিরার মায়ের হাত-পা কাঁপতে থাকে। হাত থেকে খালি গ্লাসটা মাটিতে পরে ঝনঝন ঝংকার তুলে। তিনি দৌঁড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে মেয়ের ঘরে যান। আদিরার বাবা জানেন তার স্ত্রী মেয়েকে পড়াতে চান কিন্তু এখন কিছু করার নেই তার হাতে।

আদিরার মা আদিরার ঘরে গিয়ে আদিরাকে শোয়া থেকে তুলে তড়িঘড়ি করে বলেন,
–আজকে রাতেই তুই ঢাকা চলে যাবি। এখানে তুই আসবি না। ব্যাগ গুছা জলদি।

আদিরা কিছু বুঝতে না পেরে অবাক হয়ে তার মাকে জিজ্ঞেস করে,
–কেনো মা? কী হইছে? আমি পরশু যাবো তো। আজই কেনো?

আদিরার মা মেয়ের মুখখানি দুই হাতের আদলে আগলে নিয়ে বললেন,
–চেয়ারম্যান তার ছেলের সাথে তোর বিয়ের প্রস্তাব দিছে তোর বাপের কাছে। তোর বাপের সব কর্জ মাফ করে দিবে বিনিময়ে বলছে। তোর বাপে রাজি হয়ে যাইবোরে মা। তোর জীবনটা নষ্ট হয়ে যাইবো ওই দেলোয়ারের ফাঁদে পরলে। আমি এখনি তোর গনিত স্যারেরে ফোন কইরা কমু যাতে একটা বাসের টিকেট কে*টে রাখে। তুই আজকেই ঢাকা চলে যাবি।

আদিরা হতভম্ব হয়ে যায়। ওই দেলোয়ারকে বিয়ে সে কখনওই করতে চায় না। শেষ পর্যন্ত তার বাবাকে টোপ হিসেবে ব্যাবহার করলো ওই দেলোয়ার! আদিরার চোখে নোনাজলেরা ভীড় করেছে। যেকোনো সময় স্রোতধারা হয়ে গড়িয়ে পরবে। আদিরার মা নিজের কোমড়ের কাছে গুজে রাখা ফোন নিয়ে আদিরার গনিত স্যারকে ফোন করে রাতের বেলার বাসের একটা টিকিট কাটতে বলেন। আদিরা ভীত হরিণির মতো কুঁকড়ে আছে। আসন্ন কি বিপদ আসতে চলেছে তার কিছুটা তার ধারণা আছে। আজকে সে ঢাকা চলে যেতে পারলে এই বিপদ টলানো গেলেও যেতে পারে।

চলবে ইনশাআল্লাহ,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here