#I_Love_U
#part_7,8
#sarika_Islam
07
আর মাত্র কয়েকদিন বাকি বিয়ের জন্য,,আজ শপিং এ গেলাম,,আমি রুদ্র আর মাহি,,রুদ্র আমাকে নিয়ে একটা দোকানে গেল সেখানে একেক ধরনের শাড়ি দেখাচ্ছে আমি একটু একটু হাসছি জোর করে,,একদম বিরক্ত লাগছে এইসব,,হঠাৎ রুদ্রর ফোনে ফোন আসলো সে ফোনটা পিক করে কিছুটা দূরে চলে গেল,,আমি আর মাহি দেখতে লাগলাম,,কিছুক্ষন পর রুদ্র মুখটা কালো করে আসলো,,গেল তো হাসি মুখে এখন আবার কি হলো?আল্লাহই জানে আমি আমার চিন্তায় মরে যাই আবার আরেকজনের চিন্তা কিভাবে করবো?
দেখতে দেখতে বিয়ের ডেটও চলে আসলো,,কাল বাদে পরশু বিয়ে আজ বাড়ির সবাই মিলে ছোট একটা পার্টি করবো সব কাজিনরা,,ইয়াংরা বাদে আর কাউদের এলাউ নেই,,আমার সব কাজিনরা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে একেক কথা বলছে আর নিহান ভাইয়া সোফায় বসে হেলান দিয়ে আপনমনে ফোন টিপছে,,কেমন লোক একটুও কি অনুভূতি নেই আমার জন্য নাকি?পুরোই ফাকা হৃদয় সব শুধু আছে ওই নিহার জন্য,, এইসব ভাবছি তখন মাহি হাস্তে হাস্তে আমার উপর পরে গেল,,,আমি বিরক্ত হয়ে ওকে সরালাম,,এত্ত হাসি পায় কই ও?আমার মুখে তো আসেনা?রিমা আপু নিহান ভাইয়াকে আমাদের সাথে নিচে বসালো,নিহান ভাইয়া ফোনটা রাখলো,,কাশ ফোন থেকে বের হলো,,সবাই গান গাইছে হঠাৎ আমি গেয়ে উঠলাম,,
tere ishq ne sathiya
Mera hal kya kardiya,,
নিহান ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে গাইতে লাগলাম,,আমার এই গান শুনে সব কাজিনরাও গানটা গাইতে লাগলো,,
আজ হলুদ,,একটা হলুদ শাড়ি পরিয়ে সাজগুজ করাতে লাগলো,,আমি রোবটের মতো বসে বসে সব দেখে যাচ্ছি,,কি হচ্ছে আমার সাথে!!সাজগোজ শেষ করে সবাই চলে গেল তখন আপু আর মাহি সেজে আমার রুমে ঢুকলো,,আমার চোখে পানি টলমল করছে আপুকে সামনে দেখে চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরলো,,আপু আমার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলল,,
‘এই পাগলী কাদছিস কেন?বিয়ে তো সবারই হয় এতে কান্নার কি আছে?একদিন হলেও তো শ্বশুর বাড়ি যেতেই হতো?’
তখনি আম্মু ঘরে ঢুকলো আমাদের কাদতে দেখে আম্মু আমাদের সামনে এসে বলল,,
‘কিরে তোরা কাদছিস কেন?’
আপু চোখের পানি মুছে হাল্কা হেসে বলল,,
‘এই পাগলী চলে যাবে তাই কাদছে,,’
আম্মুর চোখেও পানি চলে আসলো,,আমার কাছে এসে আমার থুতনিতে হাত দিয়ে উচু করে বলল,,
‘কেন কান্না করছিস?’
এখন কেন কান্না করছি সেইটা তো আর বলতে পারবো না,,,আপু যেইটা বলেছে সেইটা দিয়েই চালিয়ে দিতে হবে,,দুই দুঃখ একসাথেই,,
‘আম্মু তোমাদের ছেরে চলে যাবো তাই কান্না পাচ্ছে,,’
আম্মু আমাকে বুকে জরিয়ে বলল,,
‘আরে পাগলি এইভাবে কাদার কি আছে বোকা মেয়ে,,’
আমিও হাল্কা হাসার চেষ্টা করলাম,,আমি আপুকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম,,মাহিও জরিয়ে ধরলো,,আপু আমাকে থামিয়ে নিচে নিয়ে গেল,,আমাদের বাড়িটা ছোট হলেও খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে,,আমাকে স্টেজে নিয়ে বসালো,,আমিও চুপচাপ বসে পরলাম,,এক এক করে সবাই এসে আমাকে হলুদ লাগাতে লাগলো,,নিহান ভাইয়াও আসলো আমাকে হলুদ লাগাতে,,বরাবরের মতো আজও নিহান ভাইয়ার উপর ক্রাশ খেয়ে বসলাম,,নিহান ভাইয়া আমার গালে হলুদ ছোয়াতেই আমার চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো,,তাও হাসার চেষ্টা করলাম,,হলুদ লাগানোর পর্ব শেষ হলো,,এখন সবাই নাচ গান করবে,,এক এক করে অনেকেই নাচ্ছে কিন্তু আমার একদমিই এইসব ভালো ঠেকছে না,,কেমন জানি অসহ্য লাগছে,,
আমার একেক কাজিনরা একেক ডান্স দিচ্ছে উফফ সব ফালতু লাগছে,,নিহান ভাইয়াকে খুজছি সে এখন কোথায়?কোথায় থাকতে পারে?
নিহানের কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে,,সে নিজেই বুঝে উঠতে পারছে না এই কষ্ট কিসের?নিহান একটা সিগারেট ধরালো,,ঘরের বাহিরে গিয়ে কিছুটা দূরে সিগারেট ফুকাচ্ছে খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে,,তখনি পিছন থেকে কেউ ওর কাধে হাত দিল,,সে হাল্কা হাসলো পরে পিছে ফিরে আবার হাসি গায়েব হয়ে গেল,,তার বাবাকে দেখে,,,নিহান তারাতারি হাতের থেকে সিগারেট ফেলে পা দিয়ে পিষে ফেলল,,তার বাবা নিলয় খান ছেলের কাধে হাত দিয়ে বলল,,
‘কিরে বাবা কি হয়েছে?এখানে কি করছিস?’
‘এভাবেই বাবা,,ভালোলাগছিল না,,’
‘কেন কিছু কি হয়েছে নিহাকে নিয়ে?’
নিহার কথা শুনে নিহানের নিহার কথা মনে পরে গেল,,সে তো নিহাকেই ভালোবাসে আর আজও বাসে তাহলে রাহাকে নিয়ে এত্ত ভাবাভাবির কি আছে?নাহ আর রাহাকে নিয়ে ভাবা যাবে না ও জাস্ট আমার বোন আর কিছুই না,,নিহান এইসব বলে মনকে বুঝিয়ে আবার নিহার দিকে মন ঘুরিয়ে নিল,,বাবাকে নিয়ে ভিতরে গেল নিহান,,
হলুদের অনুষ্ঠান শেষ এখন সবার ঘুমের পালা,,মাহি আর আপু আমার রুমে ঘুমালো,,তারা ঘুমে কাতর সারারাত মজা করেছে তো কিন্তু আমার চোখে এক ফোটাও ঘুম নেই,,আমি উঠে বারান্দায় গেলাম হাল্কা হাল্কা ভোরের আলো ফুটতে লাগছে,,বেশ ভালোই লাগছে,,ভোরের বাতাস একদম পবিত্র একদম বিষাক্তহীন,,একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেরে হাতের মেহেদী দেখতে লাগলাম,,
এই মেহেদী তোমার নামে লেখা হতো নিহান ভাইয়া,,এইখানে রুদ্র না তোমার না লেখা থাকতো,,”নিহান” কিন্তু সেই ভাগ্য হয়ত আমার নেই,,কিছু করার নেই ভাগ্য এখন মেনে নিতেই হবে,,কে বা পাল্টাতে পারবে ভাগ্যের লিখা?এইসব নিজে নিজেই বলতে লাগলাম,,অন্যভাবে না হোক এইসব বলে তো নিজেকে বুঝাতে পারবো,,সবিই ভাগ্যের নির্মম পরিহাস!!ফজরের আজান দিয়ে দিল তখন একটা ঠান্ডা বাতাস আসলো গায়ে,,পুরো ভিতরটা একদম ঠান্ডা হয়ে গেল,,বারান্দা থেকে বের হয়ে ওযু করে নামাজ পরে নিলাম,,,কতক্ষন পর আম্মু আসলো আমার রুমে আমাকে নামাজ পরে উঠতে দেখে বলল,,
‘উঠে গেছিস?’
‘ঘুমুই নেই,,’
‘কেন?’
‘জানি না ঘুম আসেনি,,’
আম্মু আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না,,আব্বুও চলে আসলো,,আমাকে এত সকালে উঠতে দেখে বলল,,
‘আয় আমরা ছাদে যাই,,’
আমি আর আব্বু ছাদে গেলাম,,মাঝে মাঝেই আব্বুর সাথে এমন ফজরে ছাদে আসা হয়,,ছাদে আমার শখের কিছু ফুল গাছ আছে সেগুলো ছুয়ে ছুয়ে দেখতে লাগলাম,,আব্বু আমার কাছে এসে বলল,,
‘তোকে বিয়ে দিয়ে কি বড্ড অপরাধ করছি?’
আমি হাল্কা হেসে বাবার হাতে হাত রেখে বললাম,,
‘বাবা মা কি কখনো সন্তানের খারাপ চাইবে?’
বাবা খুশি হয়ে আমার মাথায় হাত রেখে বলল,,
‘কখনো তোকে অসুখি দেখতে চাইবো না আমরা মনে রাখিস,,বেস্ট টাই চাইবো আমাদের মেয়ের জন্য,, ‘
আমি মাথা ঝাকিয়ে বাবাকে জরিয়ে ধরলাম,,তখন আপু আর আম্মু চা নিয়ে উপরে আসলো,,
‘বাবা মেয়ের খুব মুহাব্বাত হচ্ছে?’
আমি আব্বুকে বললাম,,
‘দেখেছ আব্বু,, আম্মুর মেয়ের জেলেসি হচ্ছে,,’
আপু আব্বুর কাছে এসে বলল,,
‘আম্মুর মেয়ে মানে?আমি তো আব্বুরও মেয়ে,,’
‘হুহ আব্বুর উপর ভাগ নিতে এসেছে দূর হ,,’
আমাদের ঝগরা দেখে আম্মু আব্বু হেসে দিল,,আমরা চারজন মিলে চা খেলাম আর একেক ধরনের কথা বললাম,,,কথা বলতে বলতে আটটা বেজে গেছে,,সবাই নিচে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম,,কিছুক্ষন পর পার্লারের মানুষ আসবে সাজাতে,,মাহি,,আপুও রেডি হয়ে নিল সাজার জন্য,,পার্লারের আপুরা এসে সাজাতে লাগলো আমাদের,,লাল একটা লেহেঙ্গা পরেছি বউয়ের সাজ বেশ সুন্দরই লাগছে,,আপু আর মাহিকেও অনেক সুন্দর লাগছে,,তখন রুমে আম্মু আর নিলা আন্টি এসে আমাদের সাজুগুজুতে দেখে নিলা আন্টি বলল,,
‘মাসাল্লাহ আমার বাচ্চাকে তো অনেক সুন্দর লাগছে,,,’
বলেই নজর কারা করলো,,আম্মুকে অভিমানি স্বরে বলল,,
‘কলি ভাবি এইটা কিন্তু ঠিক করেননি,,আর কিছু দিন পর দিতেন বিয়ে তাহলে আমার নিহানের জন্য নিতাম ওকে,,,এইটা একদম খারাপ করেছেন,,’
আম্মু হাল্কা হেসে বলল,,
‘আরে ভাবী তাহলে এখনি নিয়ে যান,,’
বলেই দুইজন হেসে দিল,,আমার বুকটা মচোর দিয়ে উঠলো,,তাহলে আমার ভাগ্যে আর কয়েকদিন পরই বিয়ে ঠিক হতো?এত্ত যলদি হওয়ার কি ছিল?মনটা খারাপ হয়ে গেল,,
চলবে,,,
(কেউ হাউপার হইয়েন না আগেই বইলা দিলাম?নেক্সট পার্টের জন্য একটু অপেক্ষা করুন?ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?)
#I_Love_U
#part_8
#sarika_Islam
দুই হাত লম্বা ঘোমটা টেনে নিহান ভাইয়ার রুমে বউ সেজে বসে আছি,,কখনো ভাবিনি ভাইয়ার রুমে বউ সেজে বসে ভাইয়ার জন্যই অপেক্ষা করতে হবে,,হঠাৎ কিছুক্ষন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে পরে গেল,,
যখন বিয়ের সাজ সেজে স্টেজে বসে আছি বরের অপেক্ষায় কাজী সাহেব ও এসে পরেছিল বাড়ি ভর্তি মেহমান ছিল কিন্তু বরের আসার কোন খবর নেই,,আম্মু আব্বু সবাই অনেক টেনশনে পরে গেল বর কি আদো আসবে কি না?কতক্ষন পর বরের বাবা মা আর কিছু আত্মিয় আসলো,,আব্বু আম্মু কিছুটা স্বস্তি পেল,,আম্মু রুদ্রের বাবাকে গিয়ে বলল,,,
‘ভাইজান এত লেট হলো যে?’
আংকেল কি বলবে আমতা আমতা করছে,,নিশ্চই কোন সমস্যা হয়েছে,,আম্মু আংকেলের পরিস্থিতি বুঝে বলল,,
‘কোন কি সমস্যা হয়েছে?’
তখন সামনে নিলা আন্টি,,নিলয় আংকেল আর নিহান ভাইয়া ছিল,,রুদ্রের আম্মু কিছুটা হচকচিয়ে বলল,,
‘আসলে ভাইজান রুদ্রকে সকাল থেকে পাচ্ছি না,,,কাল আমাদের বলেছিল ও নাকি এই বিয়ে করবে না আমরা কোনমতে ওকে বুঝিয়েছি কিন্তু আজ পাচ্ছি না হয়ত সায়মার সাথে পালিয়ে গেছে,,,’
এই কথা শুনে উপস্থিত সবাই শকড হয়ে গেল,,এ কি বলছে তারা হুশ গেয়ান আছে নাকি?নিলয় আংকেল চেতে গিয়ে বলল,,
‘তাহলে আপনারা বিয়ের ডেট ফিক্সড করার আগেই বলতে পারতেন এইসব,,’
রুদ্রের আব্বু বলল,,
‘আমরা তখন জানতাম না,,’
বলেই মাথা নিচু করে ফেলল,,তারপর বলল,,
‘এই বিয়ে হবে না,,’
বলেই তারা সেখান থেকে চলে গেল,,আম্মু আব্বু দুইজনের মাথায় হাত এখন কি হবে?এত্ত মেহমান এসেছে কিভাবে মুখ দেখাবে তাদের?আব্বুর তো নাক কাটা যাবে,,সেখানে তাদের একসাথে দেখে আমি স্টেজ থেকে নেমে তাদের কাছে গিয়ে বললাম,,
‘আম্মু আব্বু কি হয়েছে?তারা আবার চলে গেল কেন?’
নিহান ভাইয়া সরাসরি বলে দিল,,
‘ছেলে তার গার্লফ্রেন্ড এর সাথে পালিয়েছে বিয়ে হবে না,,’
বিয়ে হবে না শুনে খুশি হবো নাকি আম্মু আব্বুর চেহারা দেখে দুঃখ পোষাবো?আম্মু আব্বু আমার কাছে এসে বলল,,
‘এখন কি হবে আমাদের?আমার ইজ্জত তো একদম গেল,,সবার সামনে মুখ দেখাবো কিভাবে?’
আব্বুর চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো,,আব্বুর চোখে পানি দেখে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে ওই রুদ্রকে পেলে একদম মেরে ফেলতাম আমার আব্বুর চোখে পানি এনেছে,,নিলয় আংকেল আব্বুর কাধে হাত রেখে বলল,,
‘আমার বন্ধুর নাক কাটা হবে এমনটা আমি কখনোই হতে দিব না,,আমার নিহানের সাথে দিব বিয়ে,,’
আংকেলের এমন কথা শুনে নিলা আন্টিও বলল,,,
‘হ্যা ভাইজান রাহাকে আমি আমার ঘরের বউ করে নিতে চাই,,দিবেন কি?’
আব্বু নিলয় আংকেলকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিল,,
‘বন্ধু তুই না থাকলে এখন যে আমার কত কথা শুনতে হতো?তুই আমার মান সম্মান রেখেছিস এই ঋণ আমি কখনোই ভুলবো না,,’
নিহান এই কথা শুনে সবার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,তার থেকে কেউ একবারও জিজ্ঞেস করা কি ঠিক মনে করলো না?তারাই ডিসিশন নিয়ে নিল?আমার মানের কোন মুল্য নেই নাকি?নিহানও আর কিছু বলল না বাবা মার ডিসিশনই নিজের ডিসিশন হিসেবে মেনে নিলাম আর করে নিলাম রাহাকে বিয়ে,,
বিয়ে শেষ হয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি রওনা হলাম,,অপ্রত্যাশিত ভাবেই বিয়েটা হয়ে গেল কিন্তু হয়েছে তো আমার মনের মানুষেরই সাথে,,কিন্তু সে কি আদোও আমাকে মেনে নিতে পারবে মন থেকে?
দরজা খোলার আওয়াজে আমি ভাবনা থেকে বের হলাম,,ভাইয়া এসেছে,, আমি উঠে ভাইয়াকে সালাম করতে গেলে ভাইয়া গম্ভীর স্বরে বলে উঠে,,
‘এইসব দিখাবার কোন দরকার নেই,,আমার কাছ থেকে তুই কখনোই স্ত্রীর অধিকার পাবিনা বলে দিলাম,কখনো আশাও করিস না,,আর যত পারবি দূরে দূরে থাকবি,,’
বলেই বিছানার এক কোনে শুয়ে পরলো,,আমি কি ইচ্ছে করে করেছি নাকি?আমি কি রুদ্রকে পালাতে হেল্প করেছি নাকি যে সব দোশ আমাকেই দিয়ে দিল ভাইয়া?আর আমি কখনোই তার পাশেও যাবো না যতদিন সে আমার পাশে আস্তে না চাইবে,,এইসব ভেবেই আমিও বিছানার আরেক কোনে গিয়ে শুয়ে পরলাম,,এইগুলো খোলার কোন ইচ্ছে হচ্ছে না একদম আলসেমি লাগছে,,,
সুর্যের কড়ারোদ আমার চোখে এসে পরলো,,কপাল খানিকটা কুচকে ফেললাম,,আস্তে আস্তে আড়মোড়া নিতে নিতে চোখ খুললাম,,নিজের শরিরটা অনেক ভারী ভারী লাগছে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম কালকের সেই বউয়ের সাজেই আছি,, চট করে মনে পরলো আমি তো এখন বিবাহিত,, নিহান ভাইয়ার বউ,,,নিহান ভাইয়ার বউ মনে পরতেই লজ্জা পেয়ে গেলাম,,পাশে ফিরে নিহান ভাইয়াকে দেখবো কিন্তু সেকি?সেতো নেই এইখানে?তাহলে কোথায়?হয়ত ওয়াশ্রুমে কিন্তু পানির তো শব্দ পাচ্ছি না,,,খুব চিন্তায় পরে গেলাম তখন রুমে মাহি প্রবেশ করলো,,মাহি আমাকে চিন্তিত দেখে বলল,,
‘তোর বর অফিসে তাকে এত খুজে লাভ নেই,,’
বলেই আমার পাশে বসলো,,আমি কিছুটা লজ্জা ভাবে বললাম,,
‘সকালে উঠেই ভেবেছিলাম তার মিষ্টি মুখখানা দেখবো,,কিন্তু কপালে জুটলো না,,’
মাহি বলল,,
‘বলেছিলাম না ভাগ্যে যা আছে তা হবেই?দেখেছিস কি আছে?’
আমি মাথা ঝাকালাম,,মাহি আমাকে উঠিয়ে ফ্রেশ হতে পাঠালো,,আমি ওয়াশ্রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসলাম,,তখন আন্টি একটা শাড়ি নিয়ে রুমে ঢুকলো,,আন্টিকে দেখে সালাম দিলাম,,
‘বাচ্চার ঘুম ভেংগেছে? ‘
আমি কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেলাম,,আজ প্রথম দিন তাও আজ লেট হলো ধুর,,নিলা আন্টি আমার কাছে শাড়িটা এগিয়ে দিয়ে বলল,,
‘নে এইটা পরে আয়,,আজ আমার আত্মিয়রা বউ দেখতে আসবে,,’
আমি শাড়ি হাতে নিয়ে ঠোঁট উল্টিয়ে বললাম,,
‘কিন্তু আমি তো শাড়ি পরতে পারি না,,’
‘আচ্ছা আমি পরিয়ে দিব নে,,’
আমি তারাতারি শাওয়ার নিতে চলে গেলাম,,কিছুক্ষন পর ব্লাউজ আর পেটিকোট পরে বের হলাম,,পিছে ফিরে ব্লাউজের ফিতা লাগানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না আর এখন আন্টিও আসছে না আর না মাহি,,কি একটা বিপদে পরলাম রে বাবা,,তখনি দরজা খোলার শব্দ পেলাম ভাবলাম হয়ত মাহি এসেছে,,আমি তারাতারি করে বললাম,,
‘এই মাহু তারাতারি ফিতাটা লাগিয়ে দেতো,,’
নিহান কিছু ইম্পর্ট্যান্ট ফাইল নিতে আবার বাসায় এসেছে,,নিজের রুমের দরজা খুলে রাহাকে এভাবে দারিয়ে থাকতে দেখে কিছুক্ষনের জন্য থমকে গিয়েছিল,,সাদা শরিরে লাল ব্লাউজ একদম ফুটে আছে লালা পেটিকোট একদম লাল ফুলের মতো লাগছে,,চুলগুলো এক সাইডে রাখা,ঘারের তিলটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে,,,কোমড়টা বের করানো,,নিহানের কোমরের দিকে কিছুক্ষনের জন্য চোখ আটকে গিয়েছিল,,পরক্ষনের রাহার কথা শুনে হুশে ফিরলো,,ধীরে ধীরে পায়ের কদম ফেলে রাহার পিছনে দারালো,,ফিতাটা নিয়ে বেধে দিল,,,
ফিতাটা বাধার সময় আমার পিঠে হাতের ছোয়া লাগছে কেমন শরিরে শিহরন তৈরি করছে,,আমি আবেশে চোখ বুঝে নিলাম,,কিন্তু মাহি ধরলে এমন কেন হবে?আমি সাইডে ড্রেসিংটেবিলের আয়না দিয়ে নিহান ভাইয়াকে আমার পিছে দেখে তারাতারি সোজা হয়ে গেলাম,,বিছানা থেকে শাড়ি নিয়ে গায়ে পেচিয়ে ধরলাম,,আর কিছুটা রেগে বললাম,,,
‘আপনি এখানে কি করছেন?’
ভাইয়া ভাবলেশহীন ভাবে উত্তর দিল,,
‘আমার বেডরুম আমি থাকবো না তাহলে কি অন্য কেউ থাকবে?’
বলেই আমার সাইড কাটিয়ে বিছানার পাশের ড্রয়ারে কি যেন খুজছে,,আমি বললাম,,
‘বুঝলাম বেডরুম আপনার কিন্তু এভাবে আমার ফিতা বাধার কি হলো?আমি মাহিকে ডেকেছি আপনাকে নয়,আমাকে ছোয়ার বাহানা খুজছিলেন,,’
‘কি জমানা এসে পরলো ভালো জিনিসের ভাত নেই,,’
বলেই উঠে দারালো,,ভাইয়া হঠাৎ আমার খুব কাছে চলে আসলো,,
‘আর শুন তোকে ধরা বা ছোয়ার আমার কোন ইচ্ছে নেই ওকেহ?মাইন্ড ইট,,’
বলেই ড্রেসিংটেবিলের ডয়ার থেকে একটা ফাইল বের করে চলে গেল,,হুহহ আমার তো ইচ্ছে নেই কোন এই নিরামিষটাকে ধরার,,তখনি মাহি রুমে ঢুকলো,,নিহান ভাইয়াকে রুম থেকে বের হতে দেখে এসে বলল,,,
‘কিরে ভাইয়া কি করলো রে?’
আমার এভাবেই মিজাজ বিগরে আছে তারউপর এমন ফাজিলমার্কা কথা,,মাহির হাতে একটা চাপর মেরে বললাম,,
‘অসভ্য কোথাকার,,আমার কাজের সময় কই হারায় যাস?’
‘আরে তোদের ফ্রি ইস্পেস দিলাম কিছুটা বুঝে না বোকা মেয়ে,,’
‘ইস্পেস?দারা,,’
বলেই মারার জন্য ওর পিছু ছুটবো তখন নিলা আন্টির আগমন,,,আমি আর মাহি থেমে গেলাম,,আমাকে সুন্দরভাবে শাড়ি পরিয়ে বাহিরে চলে গেল,,আমি নিচে গিয়ে নাস্তা করলাম,,,
বিকেলের দিক দিয়ে আন্টির সব আত্মিয় আসা শুরু করলো,,আমি তাদের চা নাস্তা দিলাম,,কতগুলো মুরুব্বি আমাকে তাদেরমাঝে বসিয়ে আমার থুতনি ধরে বলল,,
‘বাহ নিলা বউটা খুব সুন্দর পেয়েছিস,,’
সবার দেখা শেষ হলে সন্ধ্যার দিকে চলে যায়,,উফফ এতক্ষন বেশ টায়ার্ড লাগছিল এখন একটু আরাম করে আমি আর মাহি সোফায় বসলাম,,মাথার ঘুমটা ফেলে বললাম,,
‘মাহি রে বইন শারিতে যা অসহ্য লাগে না একদম বলার বাইরে,,’
তখনি দরজায় কেউ বেল বাজালো,,খালা গিয়ে দরজা খুলে দিল,,আন্টি রান্নাঘর থেকে আসলো কে এসেছে দেখার জন্য দেখলো নিহান ভাইয়া আর তার বেস্ট ফ্রেন্ড,,তারা সোফার মধ্যে এসে বসলো,, আমি আর,মাহি তাদের দেখে উঠে পরলাম,,আন্টির কাছে রান্নাঘরে চলে গেলাম,,আন্টি আমার হাতে জুসের ট্রে দিয়ে বলল,,
‘যা ওদের দিয়ে আয়,,সাদ প্রায় প্রায়ই আসে,,’
আমিও চুপচাপ দিতে চলে গেলাম,,মাথায় ঘুমটা টেনে,,সাদ ভাইয়া আমাকে দেখে বেশ অবাক হলো,,সাদ ভাইয়া তো নিহান ভাইয়াকে জিজ্ঞেসই করে বসলো,,
‘কিরে নিহান এইটা কে?মাহিকে ছাড়া তো আর কাউকে কখনো দেখিনি?’
নিহান ভাইয়া একবার আমার দিকে তাকালো একবার সাদ ভাইয়ার দিকে বুঝা যাচ্ছে নিহান ভাইয়া খুব কনফিউশনে আছে কি বলবে,,আমি সেখান থেকে চলে এসে দূরে দারিয়ে দেখতে লাগলাম ভাইয়া আমাকে কি বলে পরিচয় করায়,,
চলবে,,,
(ইয়েএএএএ ওদের বিয়ে হয়েই গেল?ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?)